এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • জ্যামিতি: পর্ব ২

    Swarnendu Sil লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ মার্চ ২০১৭ | ১৯২৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • http://bigyan.org.in/ ওয়েবসাইটে জ্যামিতির বনিয়াদ নিয়ে আমার এই লেখাটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে...
    এখানে লেখাটা একই ভাবেই দিলাম... আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ, আমার লেখাটা না পোষালেও ওয়েবসাইট টায় ঘুরে আসতে ভুলবেন না...

    আজ দ্বিতীয় পর্ব, যা ২৮শে জানুয়ারী, ২০১৫ ( ইংরাজি সন) এ প্রকাশিত হয়েছিল...
    http://bigyan.org.in/2015/01/28/elements-of-geometry-part-2/

    জ্যামিতির গোড়ার কথা : ইউক্লিড থেকে রীমান ( দ্বিতীয় পর্ব )

    (প্রথম অংশের পর)

    ৩ নম্বর স্বতঃসিদ্ধ বলছে – একটি বিন্দু ও একটি দূরত্ব দেওয়া থাকলে ওই বিন্দুকে কেন্দ্র করে ওই দূরত্বের সমান ব্যাসার্ধের বৃত্ত আঁকা যায়। এখানে যা বলা হল সেটা বুঝতে এমনিতে কোন অসুবিধে নেই| কিন্তু ঠিক সেইজন্যেই এখানে যে আদৌ কিছু একটা ‘দেওয়া হল’ সেটা খেয়াল করা একটু মুশকিল। এখানে আসলে যেটা দেওয়া হল সেটা হল একটা স্কেল বা রুলার! মানে দূরত্ব মাপার একটা কিছু।

    ৪ নম্বর স্বতঃসিদ্ধ ভয়ানক গোলমেলে। এটা বলছে – সমস্ত সমকোণ পরস্পরের সমান। কিন্তু এর মানে কি? গোলমেলে ব্যাপারটায় যাচ্ছি, তবে তার আগে আরেকটা জিনিস খেয়াল করব| ৩ নম্বর স্বতঃসিদ্ধ যেমন দূরত্ম মাপার একটা কিছু দেয়, এখানে কোণ মাপার কিছু একটা লাগবে আমাদের। কিন্তু তাও বাকিটা পরিষ্কার নয়। সেটা পরিষ্কার করতে আমরা প্রথমে সমকোণের সংজ্ঞা খুঁজব। সেটা হলো এইরকম:

    ‘দুইটি সরলরেখা পরস্পরকে লম্বভাবে ছেদ করলে তাদের মধ্যবর্তী কোণ এক সমকোণ।’

    এইবার বোধহয় খানিক পরিষ্কার হল ব্যাপারটা, তাই না? মানে ৪ নম্বর আসলে বলছে – যেকোনো দুইটি সরলরেখা পরস্পরকে লম্বভাবে ছেদ করলে তাদের উৎপন্ন কোণ সমান।

    এখানে মনে হতে পারে যে আমরা একটা শব্দের বদলে আর একটা শব্দ বসালাম যার একই মানে। লম্বভাবে ছেদ করা কথাটার মানে কি? এর উত্তরে বলা যেতে পারে: দুটি সরলরেখা যখন পরস্পরকে ছেদ করে ও তাদের উৎপন্ন কোণের মান এক সমকোণ হয়, তখন ওই দুই সরলরেখাকে পরস্পরের উপর লম্ব (বা পরস্পরকে লম্বভাবে ছেদ করেছে) বলা হয়। তবে এই উত্তর দিলে আমাদের যুক্তিটা শুধুই গোল গোল ঘুরতে থাকবে। ‘লম্বভাবে ছেদ করা’ ব্যাপারটাকে অন্যভাবে বলতে হবে।

    এই ফাঁকে সংজ্ঞা নিয়েও খানিক আলোচনা করে নেওয়া যাক। এতক্ষণ অবধি কোন সংজ্ঞা না বলেই আমরা কাজ চালাচ্ছিলাম। তার কারণ হলো – ইউক্লিডের এলিমেন্টস এ সংজ্ঞা আছে প্রথমেই, কিন্তু সারা বইতে কোথাও সেই সংজ্ঞাগুলোর কথা আর কখনো সেভাবে আসেনি।১ তাছাড়া বেশিরভাগ সংজ্ঞাই খুব গোলমেলে, যেভাবে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সেইভাবেই বাকি বইতে সবসময় ব্যবহার হয়েছে তাও নয়।

    আর একটা ব্যাপার হল, সংজ্ঞারা কিন্তু জ্যামিতিতে দেওয়া থাকা জিনিসগুলোর মধ্যে নয় ঠিক। ভালো সংজ্ঞা তৈরী করতে হলে, কোন জিনিসগুলো আগে সংজ্ঞায়িত করব, আর কোনগুলোর জন্য আগে সংজ্ঞায়িত জিনিসগুলোর সাহায্য নেব, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত খুবই জরুরী। কাজের অনেক সুবিধে হয় তাতে, বুঝতেও। অবশ্য জ্যামিতির অনেক জিনিসেরই নিখুঁত সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভব না। যেমন বিন্দু। বিন্দুর এমন কোন সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভবই না যেটা থেকে বিন্দু কি এইটা কোন গোলমাল ছাড়া বোঝা যাবে। অথচ বিন্দু কি সে তো আমরা জানি একরকম। এই একরকম জানি অথচ সংজ্ঞা দেওয়া যায় না, এমন জিনিসগুলোকে অঙ্কে বলা হয় primitives বা primitive notions| আমরা বলব অসংজ্ঞায়িত প্রাথমিক ধারণা।২

    তা মোদ্দা কথাটা হল যে সংজ্ঞাই হোক কি অসংজ্ঞায়িত প্রাথমিক ধারণাই হোক, এগুলো জ্যামিতিতে দেওয়া থাকা জিনিস নয়, এগুলো আমরা বেছে নিতে পারি। হিলবার্ট ১৮৯৯ সালে৩ জ্যামিতিকে অন্যভাবে সাজালেন । এই প্রসঙ্গেই হিলবার্টের মন্তব্য – “আমরা বিন্দু, সরলরেখার জায়গায় চেয়ার, টেবিল, বীয়ারের মগ এইসব দিয়েও জ্যামিতি শুরু করতে পারতাম।” এর অর্থ হলো: কি দিয়ে শুরু করব তা সুবিধার জন্যে খুব জরুরী জিনিস, কিন্তু নীতিগতভাবে জরুরী নয়।

    কিন্তু, স্বতঃসিদ্ধগুলো এই অসংজ্ঞায়িত প্রাথমিক ধারণাগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক| অর্থাৎ, সেগুলো একদমই দেওয়া থাকা জিনিস| সেগুলো আলাদা হলে যে জ্যামিতি আমরা পাব তা বেশ আলাদা হবে, ভীষণভাবেই আলাদা।৪

    যাই হোক, ১,২, ৩ আর ৪ নম্বর স্বতঃসিদ্ধ কি বলছে আমরা দেখলাম। এও দেখলাম সংজ্ঞা ব্যাপারটা জ্যামিতিতে ভারী গোলমেলে। কিন্তু সংজ্ঞা না দিই, কাজ চালানো গোছের কিছু একটা তো বলতে হয়। সেটা আমরা বলব, কিন্তু তার আগে আমাদের অন্য একটা জিনিস একটু বুঝে নিতে হবে। অঙ্কে এটা একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ- জ্যামিতির বীজগাণিতিকরণ। ঘাবড়ে যাওয়ার কিচ্ছু নেই, জিনিসটা আমাদের বেশ পরিচিত – স্থানাঙ্ক জ্যামিতি (coordinate geometry)। আর একটুখানি ভেক্টর বীজগণিত।



    বোঝার সুবিধের জন্য ধরুন, আমরা আছি তে, মানে ত্রিমাত্রিক ইউক্লিডীয় স্থানে। এই স্থানে যেকোনো একটা বিন্দুর অবস্থান আমরা তিনটে বাস্তব সংখ্যা দিয়ে বলতে পারব, যেখানে প্রথমটা x কো-অর্ডিনেট, দ্বিতীয়টা y আর তৃতীয়টা z। ওপরের ছবিতে এরকম তিনটে বিন্দু দেখছি আমরা, A, B আর C। আচ্ছা, OA সরলরেখার দৈর্ঘ্য কত? উত্তর আমরা জানি,



    একই ভাবে,





    আর


    আমরা আগে এই ফর্মুলাটাকে সুন্দরভাবে লিখে ফেলি। n দিয়ে লিখব কারণ n এর জন্যেও একই ফর্মুলা,



    এইটাই আমাদের ৩ নম্বর স্বতঃসিদ্ধের আলোচনায় বলা স্কেল। এর নাম ইউক্লিডিয়ান দূরত্ব অপেক্ষক (euclidean distance function)। এর বেশ কিছু মজার প্রপার্টি আছে:

    ১)



    আর



    একমাত্র তখনই হবে যদি a=b হয়।

    ২)



    ৩)



    , এইটার নাম ত্রিভুজ অসমতা বা triangle inequality.৫

    স্থানাঙ্ক জ্যামিতির ভাষায় স্কেল কি, তা আমরা বুঝলাম। কিন্তু চাঁদা? আমাদের অনেকেরই মনে পড়বে ফিজিক্সে পড়া ডট প্রডাক্টের কথা।

    a আর b এই দুই ভেক্টরের ডট প্রডাক্ট বা স্কেলার প্রডাক্ট বা ইনার প্রডাক্ট (inner product) হল:



    a ও b এর পরস্পরের লম্ব হওয়া (যার মানে OA আর OB সরলরেখাদ্বয়ের পরস্পরের লম্ব হওয়া) আর (a,b) = 0, এই দুটো কথা একদমই তুল্যমূল্য (equivalent)। আরও কিছু জিনিস সত্যি এই আপাত অদ্ভুত প্রডাক্টটার ক্ষেত্রে:

    ১)



    দ্বিতীয় সমতাটিকে শুধু লেখার সুবিধার্থে করা নামকরণ ভাবতে পারেন। অথবা ভাবতে পারেন,ওটা a ভেক্টরের দৈর্ঘ্য বা মান। অঙ্কের ভাষায় যাকে বলে a এর নর্ম (norm of a)।

    ২)



    , যেখানে থীটা ওই দুই ভেক্টরের মধ্যে উৎপন্ন কোণ।

    ৩)



    এই শেষেরটা খুব জরুরী, কারণ ওইটা বলছে কোণ মাপার চাঁদাটা দিয়ে দিলেই দূরত্ম মাপার স্কেলটাও পেয়ে যেতাম। তার আগেরটা অবশ্যই বলছে যে এই চাঁদাটা পুরোদস্তুর চাঁদা, যেকোনো কোণই মাপতে পারে, শুধু সমকোণ নয়।

    তাহলে এখনো অবধি কি দাঁড়ালো? ইউক্লিডের প্রথম ৪ টে স্বতঃসিদ্ধ আমাদের দিল ইউক্লিডিয়ান স্পেস আর এই ইনার প্রডাক্টটা? ঠিক তাই !!

    বিশ্বাস না হলে কষে দেখতে পারেন: দ্বিমাত্রিক ইউক্লিডীয় সমতলে, মানে -তে, শুধুমাত্র ইনার প্রডাক্টের ফর্মুলাটা ধরে নিলেই স্কুলে করা দ্বিসামতলীয় জ্যামিতিটা (plane geometry) সব উপপাদ্য-রাইডার সমেত শুধু হিসেব কষায় দাঁড়িয়েছে| আর কিচ্ছু লাগবেনা।

    পরের অংশে আমরা যাব সবচেয়ে ধাঁধালো স্বতঃসিদ্ধটায়।

    ----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

    ১] বইয়ের প্রথমে ওই সংজ্ঞাগুলো সে কারণে অনেকেই মনে করেন যে ইউক্লিডের নিজের দেওয়া নয়, হেরন নামে আর একজন গণিতজ্ঞ বা তার কোন ছাত্রছাত্রী পরে এলিমেন্টস এ ওইগুলো জুড়ে দেন, তবে এ মত বিতর্কিত।

    ২] ১৮৮২ সালে প্রকাশিত হয় পাশ ( Moritz Pasch ) এর বই Vorlesungen über neuere Geometrie( বইয়ের নামের ইংরাজি তর্জমা lectures on modern geometry )। পাশ এই বইতে ইউক্লিডের জ্যামিতিকে সঠিক যৌক্তিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করালেন, primitives এর ধারণাও ওনারই দেওয়া। এই বইটির প্রভাব কত ব্যাপক আজকের ম্যাথেমেটিক্সে সেটা বোধহয় শুধু এইটুকু বললেই বোঝা যাবে যে এই বই পিয়ানোর ( Giuseppe Peano ) কাজকে প্রভাবিত করেছিল – শুধু জ্যামিতি নয়, গোটা অঙ্কশাস্ত্রের যৌক্তিক ভিত্তির দিকে প্রথম পদক্ষেপ এই বই।

    ৩] ১৮৯৯ সালে প্রকাশিত হিলবার্টের ( David Hilbert ) বই grundlagen der geometrie ( বইয়ের নামের ইংরাজি তর্জমা foundations of geometry ) অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলা সাড়াজাগানো একটি বই।

    ৪] হিলবার্টের grundlagen der geometrie বই তে হিলবার্ট এই স্বতঃসিদ্ধগুলোকেও ঢেলে সাজিয়েছিলেন, এবং আরও অনেকেই এ কাজ করেছেন প্রায় কাছাকাছি বা পরবর্তী সময়ে, যেমন Mario Pieri, G.D. Birkhoff, Oswald Veblen, Alfred Tarski এবং আরো অনেকে। কিন্তু এই কাজগুলো সবই ইউক্লিডের জ্যামিতি বা তার অংশবিশেষ পাওয়ার জন্যে লেখা axiomatic system. আলাদা স্বতঃসিদ্ধ হলে আলাদা জ্যামিতির আলোচনায় আমরা ফিরে আসব।

    ৫] এইটা Elements এ একটা উপপাদ্য আসলে: ত্রিভুজের দুটি বাহুর যোগফল তৃতীয় বাহু অপেক্ষা বৃহত্তর।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ মার্চ ২০১৭ | ১৯২৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বয়স - Swarnendu Sil
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ২৩ মার্চ ২০১৭ ০৭:৪২60767
  • এভাবে পড়তে হয়ত অসুবিধেই হবে খানিক... তবু যেটুকু করা যায়। মামুর কল-এ অঙ্ক রেন্ডার করার অন্য কোন পদ্ধতি নেই। :(
  • রৌহিন | 113.214.139.253 (*) | ২৬ মার্চ ২০১৭ ১১:০৮60770
  • প্রশ্ন করব বলেছিলাম - কিন্তু অনেক কিছু নিজেই ভুলে গেছি - অনেকগুলো পরীক্ষায় আসবে না বলে পড়িনি :P
    একটা প্রশ্নই আপাততঃ - লম্বভাবে ছেদ করা অথবা সমকোণ উৎপন্ন করা - এর বাইরে গিয়ে দুটো খাড়াখাড়ি রেখাকে কিভাবে বোঝানো যাবে? (তৃতীয় পর্ব এখনো পড়িনি - সেখানে লেখা থাকলে আর এখানে না বোঝালেও চলবে)
  • sswarnendu | 198.154.74.31 (*) | ২৬ মার্চ ২০১৭ ১১:৩৬60771
  • ইউক্লিডীয় স্থানে... লম্বভাবে ছেদ করা, সমকোণ উৎপন্ন করা, দুটো রেখা খাড়াখাড়ি --- এগুলো সবকটাই একই কথা... এবং এদের বাইরে খুব বোঝানো যাবেও না, দরকারও নেই।

    কিন্তু এই তিনটে জিনিসের মধ্যে ইমপ্লিসিটলি কি বলা হল সেইটা নিয়েই প্রশ্নটা।

    "সমস্ত সমকোণ পরস্পরের সমান" --- এইটা ইউক্লিডের ৪ নং স্বতঃসিদ্ধ। গোলমেলে নয়? মানে সমকোণ মানে যদি ভাবি ৯০ ডিগ্রী, তাহলে এইটা স্বতঃসিদ্ধ কেন? তারা তো সমান বাই ডেফিনিশন, তাহলে হঠাৎ আলাদা করে স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে বলার দরকারটা কি?

    সেই দরকারটা নিয়েই লেখার ওই অংশটা। সমকোণ আদৌ ৯০ ডিগ্রী দিয়ে ডিফাইনড নয়।

    দুটো লম্বভাবে ছেদ করা সরলরেখার মধ্যের কোন এক সমকোণ, এইভাবে সংজ্ঞাটা।

    এইবার তাহলে দুটো সরলরেখা পরস্পর লম্ব ( বা 'খাড়াখাড়ি দুটো রেখা' ) এই কথাটার একটা মানে দিতে হবে, যেটা সমকোণ দিয়ে নয়।
    মানে সমকোণ এর সংজ্ঞা বললাম দুটো লম্ব সরলরেখার মধ্যের কোণ, আবার লম্ব সরলরেখার সংজ্ঞা বললাম যাদের মধ্যের কোণ এক সমকোণ, তাহলে লজিকটা সার্কুলার হয়ে যেত।

    ইউক্লিড লম্ব সরলরেখার সঠিক সংজ্ঞা আদৌ দেননি। কিন্তু ওনার প্রতিভার এই অসামান্য দূরদর্শিতা ছিল এইটুকু আঁচ করতে পারার মত, যে ওই ব্যাপারটা একটা 'আলাদা কিছু'।

    সেই আলাদা কিছুটাই আসলে ইনার প্রোডাক্ট। ফিজিক্সের ডট প্রোডাক্ট বা স্কেলার প্রোডাক্ট। a.b = 0 মানে ভেক্টর a আর ভেক্টর b বরাবর সরলরেখাদুটো পরস্পর লম্ব। এইবারে উল্টো দিক থেকে ভাবুন। আপনাকে যদি কেউ এইটা বলত লম্বভাবে ছেদ করার সংজ্ঞা হিসেবে ( সঙ্গে ইনার প্রোডাক্ট এর এক্সপ্রেশনটা দিয়ে ) তাহলে কি এইটা আদৌ পরিষ্কার যে এরকম হলেই তাদের মধ্যে উৎপন্ন কোণগুলো সবক্ষেত্রে সমান? a.b = 0 র মত একটা অ্যালজেব্রাইক ইক্যুয়েশন এর সাথে কোণ এর আদৌ কোন সম্পর্ক আছে তাইই পরিষ্কার নয়।
    সেইজন্যেই এইটা একটা স্বতঃসিদ্ধ - এইটা এই বিশেষ ইনার প্রোডাক্টটার একটা বৈশিষ্ট্য বলে। অর্থাৎ এই স্বতঃসিদ্ধটা ধরে নেওয়া মানে আসলে ইমপ্লিসিটলি ইউক্লিডীয়ান ইনার প্রোডাক্টটা ধরে নেওয়া।
    সেইটাই বোঝাতে চেয়েছিলুম, উৎরোয়নি। :(
  • রৌহিন | 113.214.139.31 (*) | ২৭ মার্চ ২০১৭ ০২:২৫60772
  • এবারে উৎরে গেছে মনে হয় - মানে মোটামুটি ধরতে পেরিচি আর কি। যদিও কী ধরিচি তা জানতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না।
  • sswarnendu | 138.178.69.138 (*) | ২৮ মার্চ ২০১৭ ১০:৩৬60773
  • :)
    না না সিরিয়াসলি... যা যা বোঝা যাচ্ছে না এখানে লিখলে খুবই ভাল লাগবে এবং বোঝানোর চেষ্টা করব সানন্দে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন