এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিশ্বকাপের গল্পসল্প

    রৌহিন লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৭ জুন ২০১৮ | ১৫৬৬ বার পঠিত
  • দোরগোড়ায় বিশ্বকাপ। অনেকের মতই আমিও বেশ উত্তেজিত। Swati Moitraর পোস্ট দেখে কিছু পুরনো কথা মনে পড়ে গেল - ওই পোস্টে লিখেও আবার নিজের দেওয়ালেও লেখার ইচ্ছা হল।

    ১৯৮২ র বিশ্বকাপের সময় আমার বয়স নয় – তখন ফুটবল খেলতাম শুধু, কিন্তু বিশ্বকাপ কাহাকে বলে, কে ব্রাজিল, কে ইতালি, কে জার্মান, এসব কিছুই জানতাম না। সেই না জানার ফাঁকেই কখন জিকো সক্রেটিস ম্যাথাউজ রুমেনিগেদের আঙুল চুষিয়ে পাওলো রোসির ইতালি বিশ্বকাপ নিয়ে চলে গেছিল সে গপ্প আমার জানা নেই ভাল। কাগজে পড়তাম এসব খবর – কেমন ভিনগ্রহের বার্তার মত। বিশ্বকাপ বোধ হয় তখন রেডিওতেও রিলে হত না – টিভি তো আমার পরিচিত সার্কেলে কেউ চোখেই দেখেনি। ইস্টবেঙ্গল বড় ম্যাচ জিতলে (তখনো “ডার্বি” কি, খায় না মাথায় দেয় কেউই তা জানেনা) আমার ঠাকুর্দা জোড়া ইলিশ কিনে নিয়ে চলে আসতেন ভর সন্ধেবেলা। জামশিদ নাসিরি আর মজিদ বাসকারই বিশ্ব ফুটবলের প্রতিনিধি তখন আমাদের কাছে।

    ১৯৮৬ – মাত্র চার বছর পরে কিন্তু ছবিটা অনেক অন্যরকম হয়ে গেছিল। আমরা তখন মালবাজারে থাকি। টেলিভিশন ব্যপারটা দু-একবার আমিও দেখে ফেলেছি বড়লোক আত্মীয়ের ড্রয়িং রুমে, হোটেলের লবিতে। এবং বিশ্ব ফুটবলের সাথেও একটু একটু করে পরিচিতি হতে শুরু করেছে। কলকাতায় তখন কৃশানু-বিকাশের পাশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন চিমা ওকোরি, আর ওদিকে কাগজে পড়ছি কে এক মারাদোনা নাকি একা একাই নাপোলি বলে একটা ক্লাবকে ইতালিয়ান লীগ জিতিয়ে দিয়েছেন (এটায় ক্রনোলজিকাল এরর থাকতে পারে – নাপোলির সিরি আ জেতাটা বিশ্বকাপের আগে না পরে একজ্যাকটলি মনে নেই এখন আর), কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগের এটাই শেষ বিশ্বকাপ, জিকো অবসর নিয়েছেন, মিশেল প্লাতিনি তুঙ্গে উঠেছেন। হেন পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে কাগজের পাতা থেকে যখন আমাদের গায়েও লেগে গেছে জ্বরের আঁচ, এক বিকালে বাবা হঠাৎ রিক্সায় করে একটা সাদা-কালো টিভি নিয়ে চলে এলেন। কী কান্ড!!

    পুরো পিএনটি কোয়ার্টার্স সহ আশেপাশের দু-তিনটে পাড়ায় ওই একমাত্র টিভি (দয়া করে মনে রাখবেন এটা মালবাজার, কলকাতা তো নয়ই, এমন কি শিলিগুড়িও না)। সে এক হই হই রই রই মার মার কাট কাট ব্যপার। অস্কার এর পোর্টেবল টিভি (এই টিভিটা এরপরে আমাদের ১৯৯৪ অবধি সঙ্গ দেবে), সঙ্গে অ্যান্টেনা, বুস্টার, ভোল্টেজ অ্যামপ্লিফায়ার। প্রায় ১৮-২০ ফিট লম্বা একটা বাঁশের মাথায় অ্যান্টেনা বেঁধে ছাদের ট্যাঙ্কির ওপর উঠে সেই অ্যান্টেনা লাগানো হল। শুধু লাগালেই তো হবে না – তারপর তাকে অ্যাডজাস্ট করাটাও একটা কাজ বটে। ট্যাঙ্কের ওপর থেকে প্রণবকাকু বাঁশ ধরে মোচড় মারছেন আর বলছেন – “বেটার”? আর বাবা নীচে থেকে বলছে “আরেকটু স্লাইট” – বুস্টার বাড়ানো কমানো হচ্ছে – তারপরে “এসেছে – এসেছে” – করে আর্কিমিডিসীয় চিৎকার। যদিও সে আসা নেহাৎই সাময়িক – মাঝে মাঝেই আমাদের কাউকে না কাউকে ছাদে উঠে অ্যান্টেনা ঘোরাতে হত। ঝড় বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। তবে বিটিভি ধরার জন্য আলাদা অ্যান্টেনা ছিল, সে অত উঁচুতে লাগানোর দরকার হতনা – ছবিও বুস্টার ছাড়াই দিব্যি পরিষ্কার আসত। কিন্তু না, এটা টিভির গপ্প না – বিশ্বকাপের গপ্প।

    তো ৮৬ সালে চাক্ষুস করলাম (যদিও ঝিরিঝিরি) মারাদোনার জাদু। সেই সংগে চিনলাম বাতিস্তুতা, বুরুচাগাদেরও। আর ব্রাজিলের ফালকাও, কারেকা! গোল করে কারেকার পাখীর মত উড়ে যাওয়া। রুমেনিগের জার্মানি, যারা ফাইনালে প্রায় জিতে গেছিল। পরপর দুটো ম্যাচে (বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড) ছজনকে কাটিয়ে মারাদোনার গোল। এবং সেই ভগবানের হাত (সেটা অবশ্য ঝিরিঝিরি টিভির কল্যানে কিছুই বুঝিনি তখন – পরে কাগজে পড়ে জেনেছিলাম বেশী)। তখন আমরা পট্যাটো চিপস প্রসাদ বানিয়ে কৃশানুর পুজো করি – সেই প্রথম দেখলাম ফুটবলটা এমন করেও খেলা যায় যে কৃশানুকেও সাধারণ মনে হয়। সেই দেখলাম, বিশ্বকাপ ফাইনালে দু গোলে পিছিয়ে পড়েও একটা দল কিভাবে ফিরে আসে, শেষ বাঁশী বাজার আগে খেলা শেষ হয় না – এই আপ্তবাক্যের ডেমো দিতে। প্লাতিনিকেও সেই বিশ্বকাপেই প্রথম স্বচক্ষে (পড়ুন ক্যামেরার চক্ষে) দেখা।

    এত অবধি লিখে মনে হল এটা বোধ হয় ঠিক বিশ্বকাপের গপ্পও নয়। এটা আদতে আমার ছোটবেলার বিশ্বকাপের গপ্প। কারণ তারপরে আরও সাত সাতটা বিশ্বকাপ হয়ে গেছে, এখন তো ইউরো, কনফেডারেশন বা এশিয়া কাপও দেখি। ইপিএল নিয়মিত না দেখলেও মাঝে মধ্যে, সিরি আ ও তাই – বুন্দেশলিগাও। আর লা লিগা তো নিয়মিত। ইস্ট-মোহন ডার্বিও দেখি, যদিও আজকাল আর জোড়া ইলিশ তো দূর, একটা ইলিশ আনারও রেস্তঁ জোগাড় করা মুশকিল হয়ে পড়ে। এখন আমরা সুনীল ছেত্রীদের সঙ্গে মেসি-রোনাল্ডোদের তফাৎটা এবং তার কারণ – সবই জানি। তবু সেই ছোটবেলার বিশ্বকাপের উন্মাদনা, বা বলা ভাল তার স্মৃতি এখনো কেমন নস্টালজিক করে দেয়। তাই সেটাতেই ফিরে যাই।

    ৮৬ বিশ্বকাপের সময়েই নতুন টিভির দৌলতে নতুন সোফা ভেঙেছিল আমাদের। এই সোফাটাও ভাঙা অবস্থাতেই আমাদের ভার বহন করেছে ৯৪ সাল অবধি – অর্থাৎ সে-ও দেখে ফেলেছে আরো দুটো বিশ্বকাপ। এবং মাঝখানে দুটো ক্রিকেট বিশ্বকাপও বটে। সেই অত্যাচার সহ্য করার জন্যই তাকে নিয়ে আঙ্কল টম’স কেবিন এর মত একটা ক্লাসিক নামিয়ে দেওয়া যায় (মানে আমার সে ক্ষমতা নেই তাই লেখা হয়নি আর কি)। গোটা পাড়া আসত খেলা দেখতে – ঘর ভর্তি, জানলায়, ব্যালকনিতে সর্বত্র ভীড় হয়ে থাকত। আর চলত হাজারো মশকরা, সিরিয়াস গবেষণা – “আরে এই স্কটল্যান্ড খালি গগনে গগনে খেলে” কিম্বা “এই সব রুমেনিগে ফিগে বুড়ো হয়ে গেছে”, “এরা ট্যাকল করতে পারে না” “আরে খেলাটা উইং এ নে – এগুলো কী রে” – ইত্যাকার মন্তব্যে চারিদিক ম ম করত। এবং আমরা তখন সত্যিই ভাবতাম যে এরা সবাই খেলাটা ভারী বোঝে বটে। কারণ পরদিনের কাগজে দেখতাম অমল দত্ত বা পিকে ব্যানার্জীও নিজের কলমে অনেকটা একই কথা লিখেছেন। বা অন্ততঃ ১৯৮১ কলকাতা লীগে এই ধরণের পরিস্থিতিতে তারা মনোরঞ্জনকে কিভাবে ওপরে তুলে এনে গোল করিয়েছিলেন, বিদেশ বসু কেমন কারেকার থেকেও ভাল উইং থেকে গোল করতে পারতেন এসব পড়ে ভীষণ ভীষণ উত্তেজিত বোধ করতাম। মনে আছে তখন একটা বল নিয়ে একা একা ফুটবল খেলতাম আমাদের উঠোনে – আর সেখানে ভারতীয় টীম যখন তখন আর্জেন্টিনা বা জার্মানি বা ইতালিকে হারিয়ে দিত, আর তাতে এক দুটো আমার নিজের করা গোলও থাকত। কখনো বা আমি মারাদোনাকে মার্কিং করার দায়ীত্ব নিয়ে নিতাম কারণ সুদীপ চ্যাটার্জীর হাঁটুতে চোট – সেই ম্যাচে আর আমার গোল করা হত না – কৃশানু একটা আর বিশ্বজিত ভট্টাচার্য হয়তো পরিবর্ত নেমে আরেকটা গোল করে দিল, কোনমতে কাজ চলল আর কি।

    তারপর আর কি? টাইম অ্যান্ড টাইড ওয়েটস ফর নান, নেভার ফর প্রীস্টস। সুতরাং গড়িয়ে গেল দিন, টিভি পুরনো হল। বুনিয়াদও একদিন শেষ হল, রামায়ণ শুরু হয়ে গেল। কোথা হইতে কী হইয়া গেল, আমরা বড় হইয়া গেলাম। ৯০ এর বিশ্বকাপেই বুড়ো মারাদোনা প্রথম ম্যাচে হেরেও একার কাঁধে দলটাকে ফাইনালে নিয়ে গেল। সেই বিশ্বকাপেই দেখা গেল রজার মিল্লার উত্থান। তার আগে জানাই ছিল না যে ক্যামেরুন বলে একটা দেশ আছে, সেটা আফ্রিকায়। কিন্তু ততদিনে টিভি আমাদের পুরনো হয়েছে (যদিও বহাল তবিয়তে রাজত্ব করছে), সোফাও। বিশ্বকাপ ঘিরে, ফুটবল ঘিরে, খেলা দেখা ঘিরে আরো অনেক নতুন নতুন গপ্প তৈরী হয়েছে। কিন্তু তারা অন্য গপ্প। আজকের গপ্প এখানেই শেষ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৭ জুন ২০১৮ | ১৫৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • রৌহিন | 2345.110.015612.89 (*) | ০৭ জুন ২০১৮ ০৭:০০63426
  • খুব ভালো লাগলো।
  • রৌহিন | 342323.223.234512.194 (*) | ০৭ জুন ২০১৮ ০৭:০৭63427
  • এই "ভালো লাগলো"টা আমার কমেন্ট নয় - যতদূর সম্ভব সঞ্জয় ভট্টাচার্যের - আবার যে কী করে আমার নাম দেখাচ্ছে ছাতার মাথা
  • ভ্যাব্বাভ্যাবাচাকা | 2345.110.783412.244 (*) | ০৭ জুন ২০১৮ ০৮:০২63428
  • আমার তরফ থেকে......
    এই 'যা তা' (১)
    আর এই 'যা তা' (২)
    ;) ;)
  • π | 4512.139.122323.129 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৩:১৬63429
  • ফুটবলরসে বন্চিত হলেও ফুটবলহুজুগ থেকে তো আর নয়, বিশেষ করে, ছোটবেলাগুলো একই রকম তো প্রায়। পড়তে খাসা লাগল!

    এখন পাড়ায় সব বাড়ি ফ্ল্যাটেই টিভি। একসাথে খেলা দেখা হয় আর?
  • রৌহিন | 7845.15.121212.182 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৪:১০63430
  • স্মৃতির সরণি বেয়ে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল।
  • debu | 5678.80.1290012.128 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৪:৫২63431
  • রজার মিল্লার সেই নাচ !
  • h | 230123.142.34900.21 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৫:১২63434
  • সুন্দর। মারাদোনা ভগবান। ১৯১৭, ১৯৪৭, ১৯৪৯, ১৯৫৯, ১৯৬২, ১৯৬৮, ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৭৭, ১৯৭৯, ১৯৮৬ এগুলো পৃথিবীর ভালো বছর।
  • aka | 4523.214.900.230 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৭:২০63435
  • ৮৬ য়েঅর বাতিস্তুতা ছিল না, জিকো ফ্রান্সের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করেছিল, যদ্দুর মনে পড়ে সক্রেটিসও ছিল কয়েকটা ম্যাচে, ৮২ র ছায়া হয়ে। সের ম্যাচ রইল-ফ্রান্স।

    মারদোনার স্বপ্নের গোল, আঅরোন ডেনিসে ডিনামাইট।

    আজি ছিল, ভালদেরামা ছিল।
  • i | 452312.149.562312.78 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ০৮:২৩63432
  • আমারও মনে পড়ে গেল-বিশ্বকাপের অনুপ্রেরণায় প্রচুর ফুটবল খেলেছি স্কুলে, বাগানে , স্বপ্নে। সদ্য চুণকাম হওয়া ফাঁকা ঘর-নাইলনের দড়ি আর কাঠের তক্তা দিয়ে একটা দোলনা বাঁধা ছিল- ছুটির দিনে ছোট্টো আমি, খুদে বোনটি সেই দোলনায় চড়ে ' জুলে রিমে ' জয় করে ফিরছি-একবার এই দেওয়ালে কালো কালো পায়ের ছাপ তো পরক্ষণেই উল্টো দেওয়ালে-তার সঙ্গে গলা খুলে স্বরচিত গান-প্রভু দয়াময়ের সুরে আমি গান বেঁধেছি বিশ্বকাপ জয়ী মোরা বিশ্বকাপ জয়ী...

    আরো আছে-
    পরে কোনদিন।
  • + | 895612.125.341212.198 (*) | ০৮ জুন ২০১৮ ১২:৩৬63433
  • দারুণ লেখা

    *খালি একটা জিনিস ... ৮৬তে বাতিস্তুতা!!!
  • i | 452312.149.562312.78 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০২:০৮63436
  • ৭৮ এর ফাইনাল টিভিতে দেখেছি, লাইভ টেলিকাস্ট নয়, একদিন পরে দেখানো হয়েছিল সম্ভবতঃ। সাদা কালো টিভি-জার্সির রং জানা ছিল না-মারিও কেম্পেসের গোলটা এখনও চোখে ভাসে। মনে আছে, মাঠ জুড়ে কাগজের কুচি ( কি বলে তাকে তখন জানতাম না), ড্যানিয়েল পাসারেলার হাতে কাপ, পিঁড়িতে বসে ঠাকুমা বলছে অগো মাঠগুলি অন্যরকম।
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.236712.110 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০২:২৮63437
  • "ট্যাঙ্কের ওপর থেকে প্রণবকাকু বাঁশ ধরে মোচড় মারছেন আর বলছেন – “বেটার”? আর বাবা নীচে থেকে বলছে “আরেকটু স্লাইট” – বুস্টার বাড়ানো কমানো হচ্ছে – তারপরে “এসেছে – এসেছে” – করে আর্কিমিডিসীয় চিৎকার। "

    হা হা হা! :)

    সে সব আমাদের ঢাকারও চিত্র ছিল। হাই স্কুলে পড়তাম। রাত জেগে বিশ্বকাপ দেখে হুলুস্থুল! ম্যারডোনার গোল দেওয়া মহিমা দেখে সেই প্রথম জানলাম-- রেইনবো শট! :পি
  • | 670112.210.125612.31 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০৩:৪৪63438
  • ৮৬র বিশ্বকাপে জিকো খেলেছিল তো। আহত অবস্থায় পেনাল্টি মিস করে, ওটাই লাস্ট বিশ্বকাপ। আর বাতিস্তুতা ছিল না, আকা যা বলল।

    আমার প্রথম বিশ্বকাপ ৮২। ৮০তে টিভি এলো, ৮২, সাদাকালো গ্রুপ্লীগের ম্যচ দেখা যেত না।
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০৪:২০63439
  • ফুটবল বিশ্বকাপ বললেই আমার জীবনের সব খুশির দিনগুলো মনে পরে যায়। অনেক অনেক লিখতে হবে, তাই কাটিয়ে দিলাম।
  • h | 230123.142.34900.21 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০৪:৩৯63440
  • ভেবে দেখছি নিজের বা মা বাবার বাড়িতে বিশ্বকাপ আমি ২০০৭ স্র আগে দেখি ই নি। ৯২ ৯৩ জখন টিভি বাড়িতে এসেচে রদ্দিনে আমি বাড়ির বাইরে। মেস, ভাড়া বাড়ি , অ্যাপারটমেন্টে কোথাও টিভি ছিল না, বা থাকলেও খেলা দেখার জন্য সাবস্ক্রিপশন ছিল না, প্রবাসে টিভি ছিল, তবে পাবে বা অফিসে, মূলত অন্যের পয়সায় টিভি দেখেছি বলেই এত ভালো লেগেছে , এই বারে এতোদিনে বুঝ্লমঃ-)))))))
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০৬:১৩63447
  • ১৯৮৬ সাল। বয়স তখন খুবই কম; আমি তখন শিশু টাইপ অবস্থা। পাড়ায় অল্প সল্প ফুটবল খেলি। কোলকাতায় থাকতামও না তখন। রোজ রাত্রে দেখি আমার তুতো দাদা আর পাড়াতুতো দাদারা রাত জেগে টিভি দেখে। অমি তো ঘুমিয়ে পড়ি। শুধু ফাইনালের রাত্রে কেউ ঘুমাতে দিলোনা। বললো আজকে খেলা দেখতে হবে। দেখলাম। দুয়েকটা জিনিস এখনো মনে আছে। মারাদোনাকে ফাউল করে ফেলে দিতে চট করে হাত দিয়ে বলটা কেড়ে নিলো। সবাই বললো - তাহলে ওর অভ্যাস আছে বলে হাত দেওয়ার। আরেকবার জার্মানীর গোলকিপারের সঙ্গে হাত মেলালো। সবাই বললো একই ক্লাবে খেলে নাকি দুজনে (?)। আর গোল গুলো মনে আছে। সেই মারাদোনা আর আর্জেন্টিনার ভক্ত হয়ে গেলাম। এখনো আছি। ফুটবল বলতে মারাদোনাই বুঝি এখনো। স্বপ্নের ফুটবল খেলতো।

    ১৯৯০ সালে কোলকাতা। তখন প্রচুর ফুটবল খেলছি। বাড়ি থেকে কিছুতেই সাইয়ের ট্রেনিঙ্গ ক্যাম্পে জেতে দিচ্ছে না। বাড়ির দেওয়ালে সব কাটিঙ্গ সেঁটে লাগিয়ে রাখছি। তখনো উইকিপিডিয়া হয়নি, তাই ডাইরিতে লিখে রাখতাম খেলার ডিটেলস। ফাইনালে হারলো আর্জেন্টিনা; আমি কাঁদলাম মারাদোনার সাথে। জার্মানি জিতেছিলো পেনাল্টিতে। ফাইনালের আগেরদিন টিভিতে দেখলাম মারাদোনা পায়ের পাতার পাশ দিয়ে বলটা পিক করলো। বিকেলে খেলতে গিয়ে সবাই সেটাই প্র্যাকটিস করলাম।

    এর পরে ১৯৯৪ সালে স্বপ্নভঙ্গ। ১৯৯৮ সালে কলেজে। সবকটা ম্যাচ পুরো দেখেছিলাম। জানতাম এটাই শেষ বিশ্বকাপ যেটা শান্তিতে পুরো দেখছি। ঠিকই ভেবেছিলাম। কেবল টিভি আসার আগে অবধি রাত জেগে ক্লাব ফুটবল দেখতাম। সেসব এখন গেছে। জানিই না কি হচ্ছে। অথচ একসময় প্রফেশনাল ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।
  • π | 4512.139.122323.129 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ০৯:৫৬63441
  • আচ্ছা, এ প্রশ্ন অনেকদিনের। কে কোন দলের সমর্থক হবে, ছোট থেকেই কী দেখে বুঝে বা কেমন ক'রে সিদ্ধান্ত নেয়? বিশেষ করে ফুটবলে, যেখানে বাই ডিফল্ট নিজের দেশকে সমর্থনের ব্যাপার নেই। প্রবল সমর্থক না হলে তো মজাও আসেনা তেমন বোধহয়। দেশ বলেই না বিদেশি ক্লাবের সমর্থন নিয়েও প্রশ্ন।

    ছোটবেলায় উরুগুয়ে প্যারাগিয়ে নিকারাগুয়া গুয়াতেমামালা সবার খেলাপত্তর দেখে, খেলার শৈলীর পার্থক্য বুঝে নিজের মনমত দল এ হবেনা বা ও হবে ঠিক করা হয়? নাকি মূলত স্টার ভ্যালু? মারাদোনা মেসি রোনাল্ডো ভক্ত থেকে সেই দেশ বা ক্লাব?
    বা, বাম বাংআলির লাতিনাঅমেরিকাপ্রীতি? তো সেখানে আর্জেন্তিনা ব্রাজিল ভাগ কি মারাদোনা মেসি দিয়ে?

    চিলি মেক্সিকো কলম্বিয়ার ফ্যান ট্যান তেমন শুনিনা কেন?
  • উদ্ধব | 232312.172.6778.232 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ১০:১৮63442
  • আমি তো ক্রিকেট ফুটবল কিছু বুঝিওনা দেখিওনা। তো ১৯৯৮ সালে বন্ধুর বাড়ি বিশ্বকাপ দেখার আসর, আমি মূলত মদ খেতে গেছি, কার খেলা কি ব্যাপার কিছুই জানিনা। সবাই দেখি ব্রাজিলের সমর্থক। কিন্তু আমার মনে হলো অ্যাস্পিরান্ট আঁতেল হিসেবে ছবির দেশ কবিতার দেশ হিসেবে ফ্রান্সের প্রতি আমার একটা দায়িত্ব থাকা উচিত, তো সেই হিসেবে ফ্রান্সকে সমর্থন করলাম।

    খেলার শেষে লোকজন ধরে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়ার জোগাড়।
  • dc | 7823.62.45900.38 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ১০:৪১63443
  • আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার হয়েছিলাম বাবা কাকা মামাদের দেখে।
  • dc | 7823.62.45900.38 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ১০:৫৯63444
  • আমি বিরাশির বিশ্বকাপ দেখিনি, একেবারেই ছোট ছিলাম। ছিয়াশিও যে খুব ভালো মনে আছে তা বলতে পারিনা, তবে মারাদোনার সেই দৌড় যখন শুরু হয়েছিল, আর যখন শেষ হয়েছিল সেই মুহূর্তগুলো আবছা মনে আছে। ঘরশুদ্ধ লোক একেবারে ফেটে পড়েছিল, কে কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না।

    আমি প্রথম বন্ধুদের সাথে মজা করে দেখেছিলাম ২০০২ এর বিশ্বকাপ। রোনাল্ডো আর রিভাল্ডোর সেই কম্বিনেশান গোল কখনো ভুলবো না।

    পরে অবশ্য শুনেছিলাম বিরাশির ব্রাজিল দলই নাকি ফুটবলের সেরা দলগুলোর মধ্যে একটা। য়ুটুবে দেখেওছি, জোগো বোনিতো।

    তবে আমার পার্সোনাল ফেভারিট ছিল গোল মেশিন রোনাল্ডো। রোনাল্ডো বার বার ইন্জিওর্ড না হলে বোধায় পেলের পরেই দ্বিতীয় সেরা ফুটবলার হতে পারতো।
  • h | 230123.142.34900.21 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ১১:৪৭63445
  • ঃ-))))))))))))
  • প্রসূন | 781212.227.12900.116 (*) | ০৯ জুন ২০১৮ ১২:০৭63446
  • সব ছোটবেলা গুলোই কি অনেকটা একরকম ...খুব ভালো লাগলো ।
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ০১:০৮63449
  • আমাকে ক্যামেরুনের একটি বন্ধু বলেছিলো যে রজার মিল্লার আসল বয়স তখন আরো বেশি।
  • sm | 2345.110.894512.142 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ০১:৪৭63450
  • আমার ভবিষ্যতবাণী। চারটে দেশ সেমি ফাইনাল খেলবে। ব্রাজিল, আর্জেনটিনা, পর্তুগাল আর জার্মানী।
    ফাইনাল আর্জেন্টিনা ভার্সাস পর্তুগাল।
    রেজাল্ট; আর্জেন্টিনা ৩--১ গোলে জিতবে।
    মেসি দুটো গোল করবে আর রোনাল্ডো একটা।
  • aka | 2390012.69.3489.248 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ০৪:৫৩63451
  • হল্যাণ্ডের রিনাস মিশেল বা ক্রুয়েফের টোটাল ফুটবল ১৯৭৪/৭৮, ব্রাজিলের জোগা বোনিতো বাই জিকো, সক্রেটিস, জুনিয়ারের ফুটবল যা শেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮২ তে, তারপরই স্পেনের টিকিটাকা, এর মাঝে মারাদোনা, মেসি, রোনাল্ডো (পর্তুগাল), জিদান, হাজি, ভালদেরামারা হল ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স।

    এরই মাঝে ছিল ফ্র্যান্কো বারেসি, পৃথিবীর প্রথম সুইপার ব্যাক যে কিনা আবার সুপারস্টার, তারপরে এল মালদিনি, আর রবার্তো কার্লোস।

    ওদিকে আশিতে তখন ময়দান কাঁপাচ্ছে বিকাশ পাঁজি আর কৃশাণু, মোহনবাগানের শিশির ঘোষ, মহমেড্ডানের চিমা ওকোরি, মইদুল ইসলাম, আর আমাদের হুনো মানে সুদীপ ব্যানার্জ্জী। গোলে ভাস্কর, শিবাজী, অতনু, আর ব্রহ্মানন্দ।

    ত্রিশ ত্রিশ বছর গেল পেরিয়ে।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ১০:৫০63452
  • এই বিশ্বকাপের বাজারে আমি কিঞ্চিৎ সুনীলে মজে, এমন স্ট্রাইকার ভারতে খুবই কম এসেছে।

    ভাল লাগছে সকলের লেখা
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ১১:২০63453
  • ইস্টবেঙ্গলের একজন গোলকীপার ছিলেন (নাম মনে পড়ছে না) যিনি সেই বছর পুরো কোলকাতা লীগে একটাও গোল খান নি। আমার দেখা সেরা গোলকিপিঙ্গ পারফর্মেন্স। তখন রেডিওতে শুনতাম। ম্যাচের পর ম্যাচ গোল না খেয়ে জিততো ইস্টবেঙ্গল। মহামেডান টিমটা তখন কোলকাতার বড় দল। পরে অগ্রগামী কয়েকদিনের জন্য হয়েছিলো। একদিন দেখি কৃশানু দে আমার অটোর সামনে বসলেন; অবাক হয়ে গেছিলাম যে এতো বড় একজন ফুটবলার গাড়ি ছাড়া যাতায়াত করছেন।
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ১১:২৮63454
  • জিকোর পেনাল্টি মীস করার কথা তো আমারা মাঠে খেলার সময় বলে বেড়াতাম। পরে বাজ্জিও মীস করেছিলো পেনাল্টি শুটাউটে ১৯৯৪এ। ১৯৯৪ সালে ছিলো বেবেতো আর রোমারিওর যুগলবন্দী; মারাদোনা সেই বিশ্বকাপে নির্বাসিত হলেন। ১৯৯৮ সালে জিদান ম্যাজিক।

    পাগলা হিগুহেতার কথা মনে পড়ে। উনার স্কর্পিওন কীকের ভিডিও আমি এখনো মাঝে মাঝে ইউটিউব খুলে দেখি।
  • প্রসূন | 781212.227.561212.169 (*) | ১০ জুন ২০১৮ ১২:২৮63448
  • #ফিরে_দেখা_বিশ্বকাপ_ফুটবল #রজার_মিল্লা

    মেরে কেটে আর ১০০ ঘণ্টা পরেই শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ কুড়ি- আঠারো । এই বিশ্বকাপ নিয়ে যতটা আপ টু ডেট থাকার দরকার ততটা বোধ হয় হয়ে উঠতে পারি নি । তবুও তো খেলা দেখবো । ভীষণ ভাবেই চাইবো আর্জেন্টিনার হাতেই যাতে কাপ ওঠে । ফুটবল বিশ্বকাপের পুরো প্যাকেজটার সাথেই এমন কিছু স্মৃতির রেশ জড়িয়ে আছে যা বেড়ে ওঠার সময়ের এক অন্য ধারাপাত । বেশ কিছু নাম , আরও অনেক মুহুর্ত , ঘটনার সলতে গুলো এখনও উর্বর।

    ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা হলেও ঐ বছর জয়ী আসলে হয়েছিলেন মারাদোনা । তখন আমার হাফ প্যান্ট বয়স । বাড়িতে টি ভি ছিল না । আমাদের গলিতে একটাই টি ভি ছিল – সুমনদের বাড়িতে । ওখানেই রাত জেগে কিন্তু ঢুলু ঢুলু চোখে খেলা দেখেছি । ওই বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনা যদি না জিততো বা মারাদোনাকে নিয়ে ‘এই ছেলেটা পেলে কে ছাড়িয়ে যাবে’ জাতীয় বড়দের কমেন্ট গুলো না গিলতাম , তাহলে আর্জেন্টিনা প্রীতি থুড়ি মারাদোনা প্রীতি এতটা হতো কিনা সেটা গুঁফো আলোচনার বিষয় । সে যাই হোক ১৯৮৬ নমো নমো করে পার হয়ে গেলেও , তখন উন্মাদনার আঁচে ততটা ছেঁকা না খেলেও একটা অন্যরকমের ব্যাপার তো ঘটেই গিয়েছিল । বড়দের সাথে একসাথে বসে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা , মাঝে মাঝে আগেরদিনের আজকাল পত্রিকায় পড়া কিছু খবরকে নিয়ে এক্সপার্ট কমেন্ট করে দেওয়ার মত মাতব্বরির হাতেখরি তো তখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল ।

    অনেক উন্মাদনা , প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হল ১৯৯০ এর বিশ্বকাপ । ততদিনে অনেকটাই বড় হয়ে যাবার সাথে সাথে আর্জেন্টিনার জব্বর ফ্যান তকমাটা গায়ে ভালো ভাবে সেঁটে গেছে । আমার এক ফুটবলার বন্ধুর কল্যাণে বেশ কিছু ট্যাকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে যথেষ্ট পাকামো করার স্পর্ধাও তৈরি হয়ে গেছে । ১৯৮৬ এর পুনরাবৃত্তি হবেই ধরে নিয়েছিলাম – কিন্তু ১৯৯০ এর বিশ্বকাপ সত্যিই এক মন খারাপের বিশ্বকাপ । তবুও কিছু অন্য ধরনের প্রাপ্তি তো ছিলই ।

    প্রথম ম্যাচই ছিল আর্জেন্টিনার সাথে ক্যামেরুনের । বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আরব আমিরশাহী যেমন দল , সেইরকমই ভেবেছিলাম ক্যামেরুনকে । এই নামে আফ্রিকায় একটা দেশ যে আছে সেটা সেই সময়ই বোধহয় জানতে পারি । প্রথম ম্যাচ থেকেই মারাদোনা জাদু আরও ফাইন টিউনিং হয়ে দেখা যাবে সেটাই প্রত্যাশা ছিল– সেই আশা পূরণ হয় নি । যে ক্যামেরুনকে হেলায় উড়িয়ে দিয়ে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু করবে বলে আশা ছিল , সেই ক্যামেরুন খেলার ৬৭ মিনিটে ফ্রাংকোইস অমামের করা গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দিল । মারাদোনাও জ্বলে উঠতে পারেন নি সেই খেলায় । রাফ ফুটবল ? সেটা তো অবশ্যই খেলেছিল ক্যামেরুন । সেই ম্যাচেই ৮১ মিনিটে ক্যামেরুনের হয়ে বদলী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন রজার মিল্লা – কে জানতো , এই বিশ্বকাপ অনেকটাই এই বুড়ো পায়ের ভেল্কিতে কাত হয়ে যাবে । তখন মিল্লার বয়স ৩৮ ।

    ১৯৯০ এর বিশ্বকাপ অবাক হয়ে দেখেছিল অনামী একটা ফুটবল খেলিয়ে দেশের এক বুড়ো খেলোয়াড় , যিনি নাকি নব্বই মিনিট খেলার সামর্থ্য রাখেন না কিন্তু পর পর গোল করে দলটিকে কিভাবে কোয়ার্টার ফাইন্যালে পৌঁছে দিয়েছিলেন ।ওই বিশ্বকাপের পরে আর কোন বিশ্বকাপে ক্যামেরুন জ্বলে উঠতে পারে নি কিন্তু রজার মিল্লা ইতিহাস হয়ে গেলেন সেই বিশ্বকাপ থেকেই । অবসর নিয়ে নিয়েছিলেন ১৯৯০ এর বিশ্বকাপের আগেই । কিন্তু সেদেশের রাষ্ট্রপতির অনুরোধে জাতীয় দলে যোগ দেন এবং এরপর তো এক লম্বা দৌড়ের কাহিনী । ইংলন্ডের কাছে কোয়ার্টা্র ফাইন্যালে হেরে না গেলে , হয়ত ইতিহাসের পৃষ্ঠা অন্যরকম ভাবেই লেখা হতো । বিশ্বকাপের অলি গলি গুলো যে সমস্ত বিখ্যাত ফুটবলারদের দক্ষতা , অনুভব , আবেগকে বূকে চেপে ধরে রেখেছে , সেই সিন্দুকে কিন্তু মিল্লা থাকবেনই ।১৯৯০ এর বিশ্বকাপের কোন পর্যায়সারণীই মিল্লাকে বাদ দিয়ে তৈরি করা সম্ভব নয় । গোল করার পরেই কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে দৌড়ে গিয়ে দর্শকদের দিকে মুখ করে কোমর ঘুরিয়ে এক অদ্ভুত ভাবে নাচা – ভালবাসতেই হয় । ১৯৯০ এর বিশ্বকাপে মিল্লা গোল করেছিলেন চারটি । বিশ্বকাপ ফুটবলে সবথেকে বেশী বয়সে গোল করার কৃতিত্বও অর্জন করেন । ১৯৯৪ এর বিশ্বকাপে ক্যামেরুনের সেই যাদু ছিল না । ৪২ বছরের মিল্লা তখনও দলে ছিলেন । রাশিয়ার সাথে খেলায় গোলও করেন একটি , ভাঙ্গেন আগের বিশ্বকাপে নিজেরই গড়া সবথেকে বেশী বয়সে গোল করার রেকর্ড। যে বয়সে কোন ফুটবলার খেলা ছেড়ে দেন বা কোচিং ক্যারিয়ার গড়ার দিকে হাঁটতে শুরু করেই সেই বয়সেই বিশ্বকাপ মাতিয়েছিলেন রজার মিল্লা । একটি প্রায় অনামি দেশকে সমীহ করার মত জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছিলেন । খেলার শুরু থেকে বেশীরভাগ ম্যাচেই খেলেন নি । যা কৃতিত্ব সেই বদলী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমে । ফুটবল বিশ্বকাপের স্মৃতিতে নয় নাম্বার সবুজ জার্সির রজার মিল্লার করা গোল - নাচ অবশ্যই এক ট্রেড মার্ক এভারগ্রিন এনটিটি ।
  • S | 458912.167.23.96 (*) | ১১ জুন ২০১৮ ০৫:০৬63460
  • হ্যাঁ গান্ধীর এই মোহনবাগান ব্যাপারটা ছাড়া সব ভালো।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন