এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ডাক্তারি পড়ুয়াদের বর্তমান আন্দোলন ২০১৯ – দিগন্ত ছাড়িয়ে নতুন ভূমিতে

    ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৫ জুন ২০১৯ | ৩১৮১ বার পঠিত
  • ঘটনা শুরু হয়েছিলো, সবাই জানেন, ২০১৯-এর জুন মাসের ১০ তারিখে ৮৫ বছরের এক শ্বাসকষ্টের বৃদ্ধকে মরণাপন্ন অবস্থায় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের ইমার্জেন্সিতে এনে ভর্তি করা দিয়ে। বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে ডাক্তারি নিয়ম মেনে জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন দেবার অল্পসময় পরে রোগীটি দুর্ভাগ্যজনকভাবে মারা যান। যদিও বয়সটা খেয়াল রাখবেন – ৮৫ বছর। এরপরের ঘটনাই পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষে চিকিৎসাক্ষেত্রে আন্দোলনের অভিমুখ ঘুরিয়ে দিল। এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের হয়তো সূচনা হল এ রাজ্যকে কেন্দ্র করে। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমিও একইরকম চিকিৎসা করতাম খুব সম্ভবত। রোগীটি আমার ‘হাতেও’ মারা যেতে পারতো।

    কি সেই পরের ঘটনা? “ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন” থেকে সমস্ত স্থানীয় এবং জাতীয় চ্যানেল, স্থানীয় সংবাদপত্র থেকে জাতীয়স্তরের প্রায় সব বড়ো, নামী এবং প্রচুর সার্কুলেশনের সংবাদপত্রে, বিভিন্ন পোর্টাল বাহিত হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এ খবর। বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে স্বাভাবিকভাবেই বেদনাহত রোগীর আত্মীয়পরিজন বর্তমান সময়ে বিরাজমান মানসিকতা নিয়ে (যা আমরা বিশেষত গত ৫-৬ বছর ধরে দেখছি) ডিউটিতে থাকা ইন্টার্নদের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আক্রমণ করার আগে তারা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিলো। ট্যাংরা অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে আঘাত করার বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ২০০ জন মানুষ (সংখ্যা আর কে মাথা গুনে হিসেব করতে গেছে?) ঝাঁপিয়ে পড়ে ইন্টার্নদের ওপরে সরাসরি আক্রমণ করার জন্য। এদের কি সাধারণ মানুষ বলা যাবে? সাধারণ মানুষ কি সংগঠিতভাবে এরকম আচরণ করে? আমরা এধরণের মনুষ্য সন্তানদের লুম্পেন বলেই জানি। আলোর বৃত্তের বাইরে থাকা অন্ধকারের জগতের বাসিন্দা যারা বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাজে লাগে। এ নিয়ে একটু পরে কথা বলছি। 

    [এ প্রসঙ্গে একটা কথা স্বীকার করতে কোন দ্বিধা থাকার কথা নয় যে, ওয়ার্ডগুলোতে ক্রমাগত মৃত্যু দেখে দেখে বেশ খানিকটা dehumanized হয়ে যাই আমরা। আমাদের মৃত্যু সম্পর্কে desensitization হয়। আমাদের কাছে রোগী হয়ে ওঠে একটি কেস নম্বর। কিন্তু রোগীর পরিজনের কাছে তা হল একজন মানুষের হারিয়ে যাওয়া, স্মৃতির মাঝে বেঁচে থাকা। মেডিসিনের সাথে সাধারণ মানুষের বোধের এই পার্থক্য ও টানাপড়েন সবসময়ই চলে। শুধু তাই নয় আমাদের সমগ্র শিক্ষাক্রমের মধ্যে সবার অলক্ষ্যে একটি লুকনো পাঠ্যসূচী (hidden curriculum) যা ক্রমাগত আমাদের সমস্ত শুভবোধ এবং রোগীর পাশে মমতা নিয়ে দাঁড়ানোর আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার মাঝে ক্ষত তৈরি করে। New England Journal of Medicine-এ সেপ্টেম্বর ২৯, ২০০৫-এ প্রকাশিত সুসান ডি ব্লকের একটি প্রবন্ধ “Learning from the Dying”-এ মন্তব্য করা হয়েছিল – “Unfortunately, the “hidden curriculum” of contemporary medicine — especially the hurried, disease-centered, impersonal, high-throughput clinical years — still tends to undermine the best intentions of students and faculty members and the best interests of patients and families.”। পাঠ্যক্রমের এ চেহারা আমাদের কাছে সবসময় দৃশ্যমানও হয়না। আজকের সংকটের বিচারে এগুলো আমরা মাথায় রাখবো।] 

    পরিবহ কি অপরাধ করেছিলো? বয়সের বিচারে ও তো আমার সন্তানসম। আক্রান্ত হবার পরে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিল। পরিণতিতে ইঁট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হল। শুরু হল মৃত্যুর সাথে মরণপন লড়াই। শেষ অবধি আধুনিক চিকিৎসা হয়তো জয়লাভ করবে। এই আধুনিক চিকিৎসাই তো আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা পৌঁছে দিতে চায় একজন আর্ত মানুষের কাছে। একজন মরণাপন্ন মানুষের কাছে? পারে কি? যেখানে জিডিপি-র হিসেবে স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় ১%-এর আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে, যেখানে মাথাভারী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে হয়, যেখানে ব্লাড ব্যাংক রক্তশূণ্য অবস্থায় থাকে, যেখানে ১৩০০ রোগী পিছু ১ জন ডাক্তার সেখানে কিভাবে এই জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের সমস্ত সদিচ্ছা সত্ত্বেও চিকিৎসার কাম্য সুবিধে পৌঁছে দেবে পিলপিল করে আঊটডোরে আসা রোগীদের কাছে? সমস্ত রোগী কলকাতার বা অন্য শহরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এভাবে ভিড় করবে কেন? প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার খাঁচা পড়ে রয়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। সেখানে সংকটজনক রোগীর চিকিৎসা প্রায় নেই বললেই চলে। কিছু নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীর হার-না-মানা জেদের জন্য অদ্ভুতভাবে কিছু রোগী আবার হাসিমুখে প্রাণ ফিরে পায়। কিন্তু সেটা সাধারণ চিত্র নয়। ভারতের মতো উপেক্ষিত প্রাইমারি কেয়ার বা প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পৃথিবীর কম দেশেই আছে। এমনকি শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড বা বাংলাদেশের মতো দেশেও প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা-র হাল ভারতের চেয়ে ভালো। প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গেচুরে আছে বলে সমস্ত দরিদ্র মানুষের ঘটিবাটি বন্ধক রেখেও গন্তব্য মেডিক্যাল কলেজগুলি। ফল? এক অসম্ভব চাপ সামলাতে হয় ডাক্তারদের। এমনকি সরকারি হাসপাতালের চর্মরোগের অধ্যাপককেও প্রায় ৩০০ রোগীও একদিনে দেখতে হয়। একজন মানুষের পক্ষে সম্ভব? বুকে হাত রেখে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, সততার সাথে উত্তর দিন। 

    গ্রীন করিডর দিয়ে হার্ট বা কিডনি বিশেষ বিমানে বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়ে এসে তা প্রতিস্থাপন করা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ‘মিরাকল’ বা আউটস্ট্যান্ডিং স্টেট অব আর্ট – সাধারণ চিত্র নয়। একে কুর্ণিশ করি। সেরকমই কুর্ণিশ করি সেসব ডাক্তারদের যারা সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে এবং আউটডোরে প্রতিদিন শয়ে শয়ে ক্রনিক এবং acute রোগের মরণাপন্ন রোগীদের দেখেন এবং বেশিরভাগ রোগীকেই বাঁচিয়ে তোলেন। এই ধন্বন্তরিদের সিংহভাগ হচ্ছে আমাদের আক্রান্ত এবং আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। এরা আজ জীবন, নিরাপত্তা বাজি রেখে আন্দোলন করছে। কেন? কাজের জায়গায় নিরাপত্তা নেই। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার মতো অবস্থায় আক্রান্ত হতে পারে। পুলিশ দর্শক। প্রশাসন নির্বিকার, অ-সংবেদী, হৃদয়হীন। কেন?

    রাষ্ট্রের অতিরাষ্ট্রের হয়ে ওঠার চারিত্র্যলক্ষণের মধ্যে আছে ক্রমশ ঘৃণাকে সামাজিক-সাংস্কৃতিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া – শব্দে, চিত্রকল্পে, প্রাত্যহিক সংলাপে। হিংসাকে আকর্ষণীয় প্রদর্শনী করে তুলতে হবে (spectacularized violence)। ধীরে ধীরে এগুলোকে সহনীয় করে তোলা। নিজের নিয়মেই সহনীয় হয়েও যায়। যাকে পছন্দ করিনা তাকে ‘দানব’ বানিয়ে দাও (demonization), শিক্ষা থেকে থেকে সরিয়ে দাও প্রশ্ন করার সাহস, উৎসাহ এবং পরিসর। শিক্ষকেরা হয়ে যাক educational managers, ছাত্রের মাঝে “কেন?”-র প্রবাহ তৈরি করার কোন জ্ঞানভিক্ষু নয়। একটি সংস্কৃতির জন্ম হবে যার ভিত্তি হবে কেবল তাৎক্ষণিকতা-নির্ভর, শুধুমাত্র বর্তমানকে চিনি বুঝি যাপন করি, অন্য কিছু নয়। অতীতের এবং ইতিহাসের পুনর্নিমাণ হবে। সমাজের অন্ধকার জগৎ  (যাদেরকে চালু ভাষায় লুম্পেন বলা হয়) আলোয় আসার, রাজপথের দখল নেবার, ক্ষমতার বৃত্তের সাথে সংস্থাপিত থাকার গৌরব অর্জন করবে। এর হিংসা আর শক্তি প্রদর্শনের extra-judiciary, extra-state হাতিয়ার হয়। এরা “নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে”-র সৌম্যকান্তি পাগল চরিত্রটির মতো দুর্বোধ্য “গ্যাৎচরেৎশালা” উচ্চারণ করেনা। এরা স্পষ্ট ভাষায় হিংসা-ঘৃণা-হিংস্রতা-পেশির ভাষা উচ্চারণ করে। ভাষার চিহ্ন এঁকে দেয় “অপরের” শরীরে। পার্টি এবং রাষ্ট্রের ভেদরেখা মুছে যেতে থাকে। আমাদের বোঝা রাজনীতির চেনা ছকে ঠিক এই গল্পগুলো তৈরি হচ্ছেনা। এখানে রাষ্ট্র শুধু অতিরাষ্ট্রের আচরণ করছে তাই নয়। সমস্ত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে পাশ কাটিয়ে (extra-judiciary, extra-democratic) লুম্পেনদের হাতে সেই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হচ্ছে যেখানে রুনু গুহনিয়োগীর প্রয়োজন পড়েনা। কারণ তাকেও তো একটা নামকাওয়াস্তে বিচারের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এখানে সেসবের বালাই নেই। পার্টি এবং এদের লালিত extra-judiciary and -democratic institutions-এর বাইরে বেঁচে থাকা লুম্পেনরাজ ঘোষিতভাবে সমাজের চলন, নীতি, নৈতিকতা, ব্যক্তি জীবনের প্রতিটি পরিসর - সবকিছু নির্ধারণ করবে। পুলিশকে কম লাঠিচার্জ করতে হবে। পুলিশের চেয়েও সফল্ভাবে এরা সেই কাজ করে দিচ্ছে। রাষ্ট্র তার ‘গণতান্ত্রিক’ চেহারা নিয়েই থাকতে পারবে। ফলে পার্টি-রাষ্ট্র যখন পরস্পরের স্থান বদল করে তখন এই অন্ধকারের জীবেরা পার্টি ও রাষ্ট্রের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। 

    বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট

    একসময়ে কিশোর-যুবকদের স্বপ্নে ঘুরতো ‘একটি স্ফুলিংগ দাবানলের সৃষ্টি করতে পারে’। এবারের জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন খানিকটা সেরকম ব্যঞ্জনা নিয়ে এলো। গত ৫-৬ বছর খোদ কলকাতা, মুম্বই, দিল্লি, পুণা সহ সমস্ত বড়ো শহরে ডাক্তারেরা আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে সিনিয়র ডাক্তাররাও ছিলেন। শুধু জুনিয়র নয়। আরেকবার বলি, যেকোন চিন্তাশীল মানুষ বুঝবেন প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা বা primary care অতি দুর্বল জায়গায় এবং নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে বলে সামান্য জটিল পরিস্থিতিতে রোগীরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রায় ব্যতিক্রমহীনভাবে tertiary centre-এ রেফারড হয় (অবশ্য জোরালো “ক্যাচ” থাকলে পরিস্থিতি অবশ্যই অন্যরকম হয়)। এর ফলে tertiary centre-এ যেমন মুনাফা হয় (প্রাইভেট হাসপাতাল বা নার্সিং হোমের ক্ষেত্রে) তেমনি সরকারি হাসপাতালগুলোতে এক অসম্ভব চাপ তৈরী হয়। যথেষ্ট সংখ্যক ডাক্তার না থাকাও এর একটা বড়ো কারণ হয়ে ওঠে। পরিণতিতে একজন ডাক্তারের পক্ষে – সে জেনারাল ফিজিসিয়ানই হোক বা সুপার-স্পেশালিস্ট হোক – এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। গড়ে রোগী পিছু দু-এক মিনিট করে সময় দেওয়াও কার্যত অসম্ভব হয়ে ওঠে। এর শিকার হয় ডাক্তার এবং রোগী উভয়েই। রোগীর মনে বাস্তবসঙ্গত কারণেই এমন ধারণা তৈরী হয়ে যে সে উপযুক্ত নজর ও গুরুত্ব পাচ্ছেনা, একটি কেস নম্বর ছাড়া এরকম স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সে আর কিছু নয়। ডাক্তারের ভাবমূর্তি তৈরী হয় মানুষ-বিচ্যুত, রোগী সম্পর্কে উদাসীন এবং উদ্ধত (অনেক ক্ষেত্রেই সত্যিও বটে) এক না-মানুষ সত্তা। জীবন-মরণকে ঘিরে গড়ে ওঠা এক অতি সংবেদনশীল, নিতান্ত আবশ্যক, ঐতিহাসিক সম্পর্কের করুণ পরিণতির আলেখ্য রচনা হতে থাকে। 

    এখানে আরেকটি গূহ্যতর সত্যকে সংবেদী মানুষকে বুঝতে হবে। সমাজতত্ত্ব, রাজনৈতিক-অর্থনীতি বা পোলিটিক্যাল সায়ান্সের সামান্য পাঠও আমাদের অবহিত করে যে সামাজিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক সুরক্ষা বা চাকরির সম্ভাবনাহীনতা যখন প্রাধান্যকারী জায়গায় থাকে তখন একদিকে জনমোহিনী রাজনীতির সামান্য অনুদানও জনসমাজ খড়কুটোর মতো আঁকড়ে ধরতে চায়, আবার অন্যদিকে শূণ্যদিশা জনসমাজের প্রবল ক্ষোভ এবং অপূর্ণতা mob violence বা গণহিংসার চেহারা নিয়ে আছড়ে পড়ে। স্মরণ করতে পারি সত্যজিতের “জনঅরণ্য”, মৃণালের একাধিক ছবি, শ্যাম বেনেগাল বা গোবিন্দ নিহালনি-র বিভিন্ন চলচ্চিত্রের কথা। আমরা দেখেছি নিস্ফলা ক্রোধ এবং আক্রোশ কিভাবে জনসমাজে প্রতিবিম্বিত হয়। এখানে ডাক্তারকে স্থাপন করলে দেখবো সে একজন সফল, ঈর্ষণীয়ভাবে স্বচ্ছল এবং ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ। এর বিপরীতে রোগীটি আর্ত, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপযুক্ত সম্বলহীন এবং ক্ষমতাকেন্দ্র থেকে দূরে থাকা একজন ব্যক্তি মানুষ। একদিক থেকে দেখলে এ দ্বন্দ্ব ক্ষমতা এবং ক্ষমতাহীনতার মধ্যেকার দ্বন্দ্বও বটে। কিন্তু ক্ষমতাসম্পন্ন হলেও একজন আমলা বা পুলিস বা শিল্পপতি বা রাজনৈতিক নেতার সাথে ডাক্তারের পার্থক্য হল একজন আমলা বা পুলিস বা রাজনৈতিক নেতা সরাসরি ক্ষমতাকেন্দ্রের অংশীদার, এর উপাদান। একজন শিল্পপতি বহুলাংশে এদের নিয়ন্ত্রক। কিন্তু একজন ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মী ক্ষমতাকেন্দ্রের সাথে যুক্ত নয়। এবং এ অর্থে “ক্ষমতাচ্যূত”, ফলে এরা জনরোষের ক্ষেত্রে একটি soft target যাকে সহজেই আক্রমণ করা যায়, নিজেদের প্রবল ক্ষোভকে সহজে উগড়ে দেওয়া যায় এদের ওপরে। একটি সহজ উদাহরণ হল একজন জনপ্রতিনিধি এয়ারলাইন্সের একজন অফিসারকে আক্ষরিক অর্থে পিটিয়েও দিব্যি মেজাজে ঘুরে বেড়াতে পারেন। কোন আইন নেই একে শাস্তি দেবার বা সাধারণ মানুষের সাধ্যি নেই একে ছোঁবার। কোন Parliamentary Act তৈরী হয়না একে স্পর্শ করার জন্য। বিপরীত চিত্রটি কলকাতায় ঘটে। করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী বৃদ্ধ ডঃ আগরওয়ালকে গণপ্রহারে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারতে গণপ্রহারে নবীন ডাক্তারের মৃত্যুও ঘটে। 

    আরেকটু তলিয়ে দেখলে চোখে পড়বে, বয়স এবং লিঙ্গ নিরপেক্ষভাবে একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে এলে চিকিৎসা পাবে এটা সবার কাছে এতোই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং এতোই স্বাভাবিকভাবে আমাদের আকাঙ্খা ও মর্যাদাবোধের মধ্যে পড়ে যে এর কোন ব্যত্যয় হলে আমরা আহত বোধ করি, উত্তেজিত হয়ে পড়ি। অথচ কলেজ বা স্কুলে ভর্তি হতে গিয়ে অসফল হলে এমন কোন বোধ জন্ম নেয়না। ওটাকে মেধার ঘাটতি বলে মেনে নিই। অর্থাৎ স্বাস্থ্যের অন্তর্লীন বোধের সাথে অন্য বিষয়গুলোর মূলগত পার্থক্য আছে। স্বাস্থ্য আমাদের কাছে একটি মূল্যবোধ বলে মনে হয়, এখনো জনমানসে সেভাবেই প্রতিভাত হয়। চিকিৎসক বা ডাক্তারকে গণ্য করা হয় এই মূল্যবোধের ধারক বা ব্যক্তরূপ হিসেবে। কিন্তু বিশেষ করে বিগত শতকের ৮০-র দশকের মাঝামাঝি থেকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ক্ষেত্রে value বা মূল্যবোধ সূক্ষ্মভাবে রূপান্তরিত হতে শুরু করলো বাজারের মূল্যমানে, যাকে বিভিন্ন স্তরের মূল্য দিয়ে ক্রয় করা যায়। এই রূপান্তরের এক সুদীর্ঘ কাহিনী রয়েছে যা এখানে আলোচনা করা সম্ভব নয়, বর্তমান পরিসরে খুব প্রয়োজনীয়ও নয়। শুধু এটুকু প্রাসঙ্গিকভাবে বলা যায় যে নোবেল প্রাইজ পাওয়া অর্থনীতিবিদ ফ্রেডেরিখ অস্টিন হায়েক ১৯৬০ সালে তাঁর The Constitution of Liberty গ্রন্থে প্রথম হেলথ সার্ভিস বা স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মুক্ত বাজারের হাতে তুলে দেবার সুপারিশ করেন। (The Constitution of Liberty, পৃঃ ২৯৭-৩০০) এর তিনবছর পরে ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত হল কেনেথ অ্যারো-র সমধিক বিখ্যাত গবেষণা প্রবন্ধ – “Uncertainty and the Welfare Economics of Medical Care”। এখানেও ভিন্ন যুক্তিতে মুক্ত বাজারের হাতে চিকিৎসাকে প্রায় পূর্ণত ছেড়ে দেবার কথা অত্যন্ত জোর দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হল – বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য মিলবেনা, চাই ইন্সিউরেন্স। মূল্যবোধ যখন মূল্যমানে রূপান্তরিত হয় তখন রোগী হয়ে ওঠে একজন economic man তথা consumer বা ভোক্তা। হাসপাতাল বা নার্সিং হোম এর বিক্রয়কেন্দ্র আর চিকিৎসকেরা এর provider বা সরবরাহকারী। 

    এবিজেডিএফ-এর আন্দোলন - ১৯৮৩

    আজকের আন্দোলন বোঝার জন্য একটু পেছিয়ে যাই। ১৯৮৩ সালে শুরু হয়েছিলো সম্পূর্ণত ভিন্ন চরিত্রের আন্দোলন দীর্ঘকালীন প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে। সহজ করে বললে কয়েকটি প্রধান দাবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত ও বিস্তৃত হয়েছিলো এই ঐতিহাসিক আন্দোলন। সেগুলো এরকম – (১) স্বাস্থ্য আমার অধিকার, স্বাস্থ্য কোন ভিক্ষা নয়, (২) ২৪ ঘন্টা ব্লাড ব্যাংকে রক্ত সরবারহ রাখতে হবে, (৩) ২৪ ঘন্টা জরুরী এক্সরের মতো জরুরী পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, এবং (৪) নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে হবে। একটু ভেবে দেখলে বুঝবো এ দাবীগুলো মূলত রোগী-কেন্দ্রিক দাবী। এটা ঐতিহাসিক। ডাক্তারদের স্টাইপেন্ড বাড়ানোর দাবী পেছনে ছিলো। 

    এরও পেছনে রয়েছে আরেক ইতিহাস। ১৯৭৮-এ প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে ঐতিহাসিক আলমা-আটা কনফারেন্স শেষ হয়েছে। এর অভিঘাত বিশ্ব জুড়ে পড়েছে। ভারতও এ সিদ্ধান্তের অন্যতম স্বাক্ষরকারী ছিলো। ১৯৮৩-র আন্দোলনের নেতৃস্থানীয়রা আলমা-আটায় গৃহীত প্রস্তাবগুলো বিশেষভাবে প্রাণিত হয়েছিলেন।

    ১৯৭৮-এর আলমা-আটা সনদের ১০ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল – পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য মানের স্বাস্থ্য ২০০০ সালের মধ্যে অর্জিত হতে পারে, যদি পৃথিবীর সম্পদকে পরিপূর্ণ চেহারায় আরো ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়। এ সম্পদের এক বড়ো অংশ এখন ব্যয় করা হয় সমরসম্ভার গড়ে তুলতে এবং যুদ্ধের জন্য। আন্তরিকভাবে স্বাধীনতা, শান্তি, দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া (détente) এবং নিরস্ত্রীকরণের নীতি প্রণয়ন অতিরিক্ত সম্পদ উৎপাদনের রাস্তা উন্মুক্ত করবে। এ সম্পদসম্ভারকে ব্যবহার করা সম্ভব আর করা উচিৎও শান্তির লক্ষ্যে এবং বিশেষ করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য, যার মধ্যে একটি আবশ্যিক অংশ হিসেবে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে এর অংশ দিতে হবে।”

    মূল কথা, পৃথিবীর দূরতম প্রান্তের স্বাস্থ্যের সুযোগহীন মানুষটির জন্যও প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে হবে এবং এজন্য স্বাধীনতা, শান্তি, দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা এবং নিরস্ত্রীকরণের নীতি গ্রহণ করতে হবে যার মধ্য দিয়ে একটি দেশের সুষম বিকাশের জন্য আরো বেশি মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে। এবার বর্তমান যুদ্ধোন্মত্ততার পরিস্থিতিতে কিভাবে তৈরি হবে মানব সম্পদ? কিভাবে নির্মিত হবে স্থানীয় সম্পদ, পারস্পরিক বিশ্বাস, যূথ চেতনার উপর ভিত্তি করে জনস্বাস্থ্যের চেহারা? জনস্বাস্থ্যের চেহারা তো কোন প্রাতিষ্ঠানিক কিছু নয়, বড়ো বড়ো বিল্ডিং-ও নয়, নয় হোমরা চোমরা কেউকেটা আমলা এবং কর্তাদের দল। এখানে প্রয়োজন একেবারে প্রান্তিক স্তরে জনতার অংশগ্রহণ এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যের বনিয়াদ তৈরি করা। আলমা-আটা সনদের ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছিল – “প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার এবং দায়িত্ব রয়েছে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে নিজেদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা বা পরিষেবার (health care) পরিকল্পনা তৈরিতে এবং একে কার্যকরী করার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করার।” এখানে জোর পড়লো সমাজের একেবারে  তলার দিকে থাকা মানুষগুলোর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ওপরে – কেবলমাত্র দর্শক হয়ে থাকা নয়। আমাদের এখানে স্বাস্থ্যের যে ধারণা এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা বিরাজমান তা প্রধানত ভার্টিকাল – পিরামিডের গঠনের মতো। ওপরে সব মাথাভারী প্রশাসনিক কর্তারা বসে রয়েছে, তাদের ভার বহন করছে নীচের তলার সম্পদহীন, অধিকারহীন (entitlement), সম্বলহীন প্রায় ৯০ কোটি বা তার বেশি ভারতবাসী। 

    ১৯৫০-৭০-র দশক জুড়ে বিশ্বরাজনীতিতে দ্বিমেরু বিশ্বের জীবন্ত উপস্থিতি ছিল। প্রবল পরাক্রান্ত, আগ্রাসী ও মুক্ত পুঁজি এবং সাম্রাজ্যবাদের মুখোমুখি দাঁড়ানোর মতো ভিন্ন একটি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অস্তিত্ব – সমাজতান্ত্রিক বলে যার উপস্থিতি ছিল জনমানসে। দ্বিমেরু বিশ্বের উপস্থিতির জন্য রাজনৈতিক এবং সামাজিক একটি পরিসর তৈরি হয়েছিল যাকে বলতে পারি “তৃতীয় পরিসর”। বিশ্বের মানুষের স্বাভাবিক আশা-আকাঞ্খা এবং দাবী নিয়ে দর কষাকষির ক্ষমতা বেশি ছিল। পরবর্তীতে একমেরু বিশ্বের উদ্ভব এসবকিছুকে পরিপূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দেয় – আজকের ভারত এর একটি প্রোজ্জ্বলন্ত উদাহরণ। এ সময়েই পৃথিবী জুড়ে শ্লোগান উঠেছিল – স্বাস্থ্য আমার অধিকার।

    ভারতের মতো দেশে এরকম বিপুলভাবে বিষম এক আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক আবহে যেখানে মুক্ত বাজারের হাতে সমর্পিত হচ্ছে স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যখন এমন নতুন সিলেবাস তৈরির প্রস্তাব আসছে খোদ মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে যেখানে ফ্যামিলি মেডিসিন, সাধারণ (বিশেষজ্ঞ নয়) প্র্যাক্টিশনার কিংবা ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান বা পারিবারিক চিকিৎসক ইত্যাদি শব্দের নামোচ্চারণও করা হয়না, যেখানে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার পরিবর্তে ইন্সিউরেন্সের হাঙ্গর সদৃশ বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রবেশ করে, সেখানে Comprehensive Primary Health Care (CPHC) কার্যকরী হবে কিভাবে? ভারতবর্ষের প্রায় ১৩০ কোটি মানুষের কাছে আজ এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আর আমাদের মতো শিক্ষিত বা ভয়ঙ্করী অল্পবিদ্যার আকরদের কাছে নৈতিক এবং দার্শনিকভাবে ভেবে দেখার মতো ঐতিহাসিক মুহূর্ত। 

    এবারের (২০১৯) আন্দোলন

    এবারের আন্দোলন ১৯৮৩-র আন্দোলনের অনুসারী নয়। যারা আজকের আন্দোলন করছে তাদের জন্মই হয়তো হয়নি সেসময়ে। সেসময়ের আন্দোলনের বার্তাও এদের কাছে সেভাবে নেই ধরে নেওয়া যেতে পারে। এর মাঝে ১৯৮০-র দশকের শেষ থেকে মুক্ত বাজারের অর্থনীতি, কর্পোরতন্ত্র, রাজনৈতিক লুম্পেনিকরণ এমন একটা আগ্রাসী সামাজিক মানসিকতার জন্ম দিয়েছে যে সামাজিকভাবে হিংসা বপন করা হচ্ছে। এর প্রতিঘাত পড়ছে ডাক্তারদের ওপরে – একেতো সফট টার্গেট, তায় এমন একটা পেশায় আছে যেখানে আর্ত রোগীর জীবন-মৃত্যু একটি অদৃশ্য সূতোর উপরে ঝুলছে। ফলে খুব সহজে পরিবাহদের ‘ঘাতক’ বানিয়ে দেওয়া যায়। 

    কিন্তু ইতিহাস এখানে শেষ হয়না। ব্যপ্তিতে স্ফুলিংগ দাবানল হবার মতো এদের আন্দোলন ভারতের সর্বত্র ছড়িয়েছে, পশ্চিমাবাংলার প্রতিটি কোণে পৌঁছে গেছে, শিক্ষকরা কর্মবিরতি শুধু পালন করেননি সংহতি জানাতে mass resignation দিয়েছেন। ১০,০০০-এর বেশি চিকিৎসক এবং সমাজের প্রায় সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে অভূতপূর্ব মিছিল হয়েছে। এরকম ঘটনা বাংলার ইতিহাসে এর আগে কখনো ঘটেনি। ঘাঁটি আগলে পড়ে থেকেছে এনআরএস-এর জুনিয়র ডাক্তাররা। সমস্ত ভয়, শাসানি, প্রলোভনকে উপেক্ষা করে। স্বীকৃতি আর সমর্থন অর্জন করেছে বিদেশের চিকিৎসকদের কাছ থেকে – ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকা, পাকিস্তান থেকে জাপান সর্বত্র প্রসারিত হয়েছে সংহতির বার্তা।

    জুনিয়র ডাক্তাররা শ্লোগান তুলেছে – ‘বাঁচতে চাই, বাঁচাতে চাই’। আমরা এই বীরদের পাশে। পাশে সাধারণ মানুষও। মাথা উঁচু করে বাঁচার আরেক চিহ্ন জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন ২০১৯!! 

    আমাদের গলায় যতটুকু আওয়াজ জন্ম নিতে পারে সেটুকু দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে, রাষ্ট্রকে বলার সময় সমাগত – 

    • আমাদের সুরক্ষা চাই, চাই নিরাপত্তা, চাই আতঙ্কহীন কাজের পরিবেশ 
    • সংহত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিকল্প অন্যকিছুতেই আমাদের কোন প্রয়োজন নেই 
    • স্বাস্থ্যকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিতে হবে 
    • স্বাস্থ্যের দায়িত্ব রাষ্ট্রের, কোন ইন্সিউরেন্স কোম্পানির নয় 
    • আমাদের স্বাস্থ্যের প্রয়োজন, স্বাস্থ্য পরিষেবার নয়

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৫ জুন ২০১৯ | ৩১৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Du | 7845.184.90045.227 (*) | ১৬ জুন ২০১৯ ০১:৪৮78794
  • এই রোগীমৃত্যুতে ভাংচুর বর্তমান সময়ে সংগঠিত একটি শিল্পই। সরকারীতে হাত পাকানো আর বেসরকারীতে রেভিনিউ।
  • pi | 785612.51.1267.150 (*) | ১৬ জুন ২০১৯ ১০:৩৫78792
  • এই বেসিক সমস্যাগুলি আন্দোলনে এবার জোরগলায় বলা হবেনা? সেই ডাক্তার বনাম রোগীর বাইনারি বানিয়ে সিস্টেমের এই মূল রোগ আবার ধামাচাপা পড়ে গেলে একেক সময়ে একেক উপসর্গ ফুটে উঠে বেরতে থাকবেই।
    "মূল কথা, পৃথিবীর দূরতম প্রান্তের স্বাস্থ্যের সুযোগহীন মানুষটির জন্যও প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে হবে এবং এজন্য স্বাধীনতা, শান্তি, দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা এবং নিরস্ত্রীকরণের নীতি গ্রহণ করতে হবে যার মধ্য দিয়ে একটি দেশের সুষম বিকাশের জন্য আরো বেশি মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে। " -৭৮ এর আলমা আটা সনদের কথাগুলো, আবারো স্বাস্থ্য আন্দোলনের দাবি হবে?
  • Prativa Sarker | 238912.66.9007812.236 (*) | ১৬ জুন ২০১৯ ১১:২৮78793
  • এ লেখা অবশ্যই একটি সনদ। একটি কী দুটি তুচ্ছ প্রশ্ন তবু থেকেই যায়। বয়স এবং লিঙ্গ নিরপেক্ষ চিকিৎসাই যদি লক্ষ্য হবে তাহলে একেবারে শুরুতে ৮৫ বছরের জোরালো উল্লেখ কেন ? কেন সর্বত্র ঐ বয়সটার ওপর অসম্ভব জোর দেওয়া হচ্ছে ! বিভ্রম হয় যেন ঐ বয়সের মানুষ মরে যাবে এইটাই ধরে নিয়ে চিকিৎসা শুরুই স্বাভাবিক। নিকটাত্মীয়রা এইরকম ধরে নিতে না পারা তবে কি তাদেরই অপারগতা ? ইঞ্জেকশনে এলার্জি এবং হঠাৎ মৃত্যু যতো দূর তো জানি সর্বজনীন।
  • pi | 785612.51.3434.54 (*) | ১৭ জুন ২০১৯ ১২:০৯78795
  • মিটিং চলছে।বেসিক পরিকাঠামো উন্নত করার কথা আসছে শুনলাম, আশা করি আরো এসেছে আগে।

    হাস্পাতালে গ্রিভান্স সেলেরকথা হল
  • রঞ্জন | 238912.69.560112.249 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০১:৩৫78797
  • এই এন অ্যার এস হাসপাতালের হস্টেলেই দু'তিন বছর আগে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন লোককে কথিত মবাইল চুরির অপরাধে আটকে রেখে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল না ? সেই কেসটার 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' হয়েছিল কি ?
    জানতে চাইছি।

    এতে পরিবহ'র উপর আক্রমণের গুরুত্বকে খাটো করছি না । দুটোই সমান অন্যায়।
  • PT | 891212.185.456712.146 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০২:১৫78798
  • রঞ্জনদা, তাপসী মালিকের ক্ষেত্রে "উই ওয়ান্ট জাস্টিস" প্রযোজ্য হবেনা?
  • জয়ন্তভট্টাচার্য | 7845.11.673412.208 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০২:২৩78799
  • আমি এরকম মানসিকতার বিরুদ্ধে। রোগীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা যায়না। একজন আর্ত মানুষ আমাদের কাছে আসে। তার পিঠে হাত রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সবসময় পারিনা।

    তবে পেশেন্টের আত্মীয়রা চোখ রাঙ্গালে সেটাকে আত্মসম্মানহানীকর বলে বিশ্বাস করি।

    কোরপান শাহ-র ঘটনার মতো নৃশংস ঘটনা কম ঘটেছে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে ঘাতক ডাক্তারি ছাত্ররা ছাড় পেয়ে গেছে। কোরপানের পরিবারের পাশে আরো অনেকের মতো আমিও দাঁড়িয়েছিলাম।

    ডাক্তারিতে আর্ট অব হিলিং কে যদি মাথায় না রেখে শুধু কিউর এর কথা ভাবে তাহলে ডাক্তারদের ভবিষ্যৎ খুব সুখের নয়।
  • PT | 891212.185.456712.146 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০৩:২৪78800
  • এ সবই তো বারংবার প্রমাণ করছে যে আইনের শাসনকে পব থেকে কুলোর বাতাস দিয়ে বিদায় করা হয়েছে।
  • dc | 232312.174.892323.46 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০৩:২৮78801
  • ওরম হয়।
  • PT | 891212.185.456712.146 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০৩:৩৮78802
  • রবীন্দ্রভারতীতে মুলো ছাত্র সংসদের কাণ্ড দেখুন। ডাক্তার ঠ্যাঙানোর থেকে কম কিছু কদর্য নয়।
  • S R | 340123.110.234523.8 (*) | ১৮ জুন ২০১৯ ০৮:৪৯78796
  • জয়ন্ত বাবু, একটা অন্য ভার্শন ঘুরছে। যে ২০০ জন লোক আক্রমণ করতে প্রিপ্ল্যান করে যায় নি। পরিবহদের প্রতিরোধের চেষ্টা একটু বেশিই ছিল, যে তারা নাকি মূল গেটের বাইরে রোগীপক্ষকে তাড়া করে নিয়ে গিয়েছিল। পরিবহকে আহত অবস্থায় ভেতরে ঢোকানোর ছবি সংবাদ মাধ্যম দেখিয়েছে। তেমনি, রোগীর দিকের একজনকে মাটিতে ফেলে ডাক্তারদের মারও আমরা দেখেছি।
    রোগীর বাড়ির লোকের কথা, ইন্টারভিউ যে মুষ্টিমেয় মিডিয়া দেখাচ্ছে, তা হয়ত আপনার চোখ এড়ায় নি। কিন্তু তাকে আমরা বিশ্বাস করি না, তাই তো? কারণ তারা ডাক্তার নয়, বস্তিবাসী, তাদের ক্ষমতা নেই সারা রাজ্য অচল করার। মুখ্যমন্ত্রীও করেন না, তাই বললেন দেশের ভবিষ্যৎ এই ডাক্তাররা, তাঁদের ওপর কেস টেস হবে না । অথচ উল্টোদিকের লোক বারবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে বলছেন।

    আপনি ডাক্তার, বডি আটকে রেখে ক্ষমা চাওয়ার হুমকি আপনি কী চোখে দেখেন?
  • রঞ্জন | 238912.69.560112.249 (*) | ১৯ জুন ২০১৯ ০১:০১78807
  • ঞ্জয়ন্তবাবুর শেষ পোস্টটি ভালো লাগল।
  • কল্লোল | 342323.191.90056.182 (*) | ১৯ জুন ২০১৯ ০১:০৩78808
  • Caesar Misra

    এনআরএস এবং কিছু প্রশ্ন

    (পলিটিক্যালি কারেক্ট হতে পারলাম না,CCTV ফুটেজ অনুযায়ী পরিবহ ট্রাম লাইনের ওখানে থাকাকালীন ওর মাথা ফাটে)

    এনআরএস এ যে ঘটনা ঘটে গেল সেই বিষয়ে নাগরিক সমাজ যে দু ভাগে বিভক্ত তা পুনরায় বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এমন অপ্রতিকর ঘটনা ঘটল কেন সেটা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন থেকেই যায়। আমার মেন স্ট্রীম মিডিয়ার উপর ২০১১ সাল থেকেই খুব একটা বিশ্বাস নেই। সে বার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের MCDSA (Medical College Democratic Students’ Association) নামক ডাক্তারদের একটি সংগঠন কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যে অনশন আন্দোলন করেছিল, সেই নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকাতে ভেতরের পেজে ছোট্ট যে প্রতিবেদন ছাপান হয়েছিল, তা অর্ধ সত্য ছিল; যা মিথ্যার থেকেও প্রচন্ড ভয়ংকর। সে সময় আমিও পড়ুয়াদের সেই আন্দোলনকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম। যাই হোক প্রায় ৯ বছর পার করে সোমবার রাতে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রথমে এনআরএস কাণ্ডের যখন খবর দেখলাম, দুঃখ হয়েছিল রুগীর পরিবারের অমন গুন্ডাগিরির বলি পরিবহের মাথার খুলির ছবি দেখে। ১৪ই জুন ডাক্তাররা যে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন সেখানে গিয়েছিলাম, সাধারন বহু মানুষও সেই র্যা লিতে যোগ দিয়েছিল। বেশ ২০১৫ এর পরে কোন প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম নিজ ইচ্ছায়। এনআরএস এর ডাক্তাররা যে রাজনৈতিক কোন বং লাগতে দেয়নি আন্দোলনে সেটা দেখেও ভাল লেগেছিল। কিন্তু রাতে ফেসবুকে একটা ভিডিও দেখে আন্দোলনের উপর থেকে ভক্তি চলে গেল। তার সাথে যোগ হয়েছিল কিছু পোস্ট, যা মেনে নেও্যা কোন ভাবেই যায় না। যাই হোক ভিডিও র কথায় আশা যাক।

    “Hothat Jodi Uthlo Kotha / হঠাৎ যদি উঠল কথা” নামে ফেসবুকে একটি পেজ আছে, আশা করি আপ্নারা অনেকেই দেখেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক বিষয় নিয়ে ইনারা ভিডিও বানিয়ে থাকেন, কোন পক্ষের হয়ে কথা না বলে। উনারা এনআরএস গিয়ে যে ভিওডিওটি করেছেন তা ভাল ভাবে দেখে নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করলে অনেক প্রশ্ন সামনে চলে আসে। আমি সেই ভিডিওর থেকে ডাঃ নিলাভ্র দাস এবং ডাঃ সৃজনী সেনের কিছু কিছু কথা এখানে তুলে ধরছি-
    ১) বিকেল ৫টা ৪০ মিঃ নাগাদ একজন কো-ইন্টার্ন (ডাঃ সুভময় জানা) রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেটা ডিক্লিয়ার করতে আসে।
    ২) ডাঃ সুভময় জানা এবং ডাঃ সায়ন্তিকা এই দুজনের সাথে রোগীর পরিবার এবং আরো কিছু রোগীর পরিবারের লোকের (জনা ১৫) সাথে ধাক্কাধাক্কি হয়, এর পরে সুভময় জানা অন্যান্য বন্ধুদের ফোন করে আসতে বলে, তারপরে নিলাভ্র দাসেরা ওখানে পৌছায়, উনারা জনা ৪০ জন ছিল।
    ৩) এরপরেরই পুলিশ চলে আসে এবং সেই ১৫ জন লোকদের “সেফলি” বাইরে বেড় করে দেয়।
    ৪) ডাঃ সৃজনী সেনের কথা অনুযায়ী দুজন পুলিশ আগে থেকেই ছিল সেখানে যখন ১০ জন ডাক্তারদের ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে, ডাক্তাররা ফাঁড়িতে ফন করে পুলিশ পাঠাতে বলে, কিন্তু সময় মত পুলিশ আসেনি। কিন্তু পুলিশ চলে এসেছে বলে উনাদের জানান হয়েছিল।
    ৫) ডাঃ যারা ছিলেন তাঁরা পুলিশকে বলেছিলেন যে ৩/৪ (পয়েন্ট করে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছিল) জন ডাঃদের সাথে বাজে ব্যাবহার করেছে তাদের এসে ক্ষমা চাইতে হবে লিখিত ভাবে তাহলেই ডেড বডি ছেড়ে দেওয়া হবে, কিন্তু পুলিশ ওদের উপরে আসতে দেয়নি।***
    ৬) রাত ১১টা নাগাদ লরি লরি করে লোক এসেছিল (১০০/১২০ জন তিন লরি কড়ে)।
    ৭) উপরে ডাক্তারদের সংখ্যা ছিল ২০০/৩০০।***
    ৮) ডাক্তাররা লরি করে যারা এসেছিল তাদেরকে পুস করছিল, তারা ডাক্তারদের সংখ্যাটা দেখে রাস্তা দিয়ে পালাতে থাকে। ডাক্তাররা যখন এগিয়ে গেল, লরি করে আশা গুন্ডারা যখন পিছিয়ে গেল, তখন পুলিশ ডাক্তারদের মারে। নিলাভ্রের কথায় পুলিশ ভেবেছিল আমরাই পেশেন্ট পার্টি।
    ৯) ডাঃ নিলাভ্র এবং আরো কিছু ডাক্তার সামনে এগিয়ে গিয়েছিল চার্জ করতে করতে।***
    ১০) চার্জ করতে করতে ডাঃ নিলাভ্ররা গেতের বাইরে চলে যায়। উনি এটাকে মিস্টেকই মনে করেন। নিলাভ্রর সাথে ৩/৪ জন ছিল, যেমন পরিবহ-প্রীতম।*** নিলাভ্রকে বাইরে ফেলে মারা হচ্ছিল, পরিবহ ছড়িয়ে নিলাভ্রকে তুলতে গেলে ইট ছোড়া হয়, যেটা পরিবহর মাথায় লাগে।

    ২/৭ মিনিট থেকে ১২/৫৪ মিনিট ... কমেন্টে লিঙ্ক দেয়া আছে।

    এবার আমার কিছু প্রশ্ন আছে-
    ১) ১৫ জন যখন ঘিরে ধরে হাতাহাতি করে, গালিগালাজ করে তখন পুলিশ এসে বাইরে তাদের বেড় করে দেওয়ার পরেও কেন ৬ ঘণ্টার উপর ডেড বডি আটকে রাখা হল?
    ২) পুলিশ সাহায্য না করে থাকলে সেটা কলেজের সুপার বা অন্য আধিকারিকদের কেন জানানো হল না তখন? উল্টে হোস্টেল থেকে বিশাল সংখ্যায় অফ ডিউটি ডাক্তারদের ডেকে নিয়ে আসা কি আইনত অপরাধ নয়? এতে করে হাসপাতালের কাজে অসুবিধে হয় না? ***
    ৩) ২০০/৩০০ জন ডাক্তার যে ওয়ি উত্তেজিত জায়গায় এসে উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল , তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাস্থা নেওয়া হল না কেন?
    ৪) লিখিত ভাবে সরি না বললে বডি ছাড়া হবে না, এটা কোন আইনের মধ্য পরে? এই অপরাধের সাজা কি?
    ৫) ডাক্তাররা সমস্যাকে প্রশমন করার বদলে যে ভাবে আরো বেশি করে উত্তেজনা সৃষ্টি করল, তাতে করে এদের শিক্ষিত বলা যায় কি?
    ৬) গেটের বাইরে “চার্জ” করতে করতে ডাক্তার হয়ে যেতে পারে কি?
    ৭) গেটের বাইরে নিজ ইচ্ছায় মারামারি করতে গেলে, তারপর মাথা ফাটলে সে দায় কার? ***

    যা ঘটেছে, তা ঠিক হয় নি; কিন্তু কেন এমন ভয়ংকর পরিস্থিতি হল সাথে করে কেন একজন জীবন মত্যুর মধ্যে দিয়ে গেল, এ নিয়ে ঠিক ভাবে না ভাবলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করে আছে।

    আরো অনেক কিছু দিক নিয়ে লিখব ভেবেছিলাম, কিন্তু এটা বড় হয়ে যাওয়ায় আপাতত থাক। দ্বিতীয় লেখা কিছু দিনের মধ্যেই দেব।
  • কল্লোল | 232312.163.5667.207 (*) | ১৯ জুন ২০১৯ ০৪:৫২78803
  • লেখাটায় মৃতদেহ আটকে রেখে দেওয়ার কথাটা উল্লেখ নেই। ক্ষমা না চাইলে মৃতদেহ ছাড়া হবে না - এমন কথাও হয়েছে। তারও উল্লেখ নেই।
    নিশ্চই মৃতের পরিজনেরা ডাক্তার বাবুদের এমন কিছু বলেছিলেন যাতে ডাক্তারবাবুরা অপমানিত বোধ করেছেন। ফলে ক্ষমা চাইতে বলার মধ্যে কোন আপত্তিকর কিছু নেই। কিন্তু ক্ষমা না চাইলে মৃতদেহ ছাড়া হবে না - এটা সমর্থন করতে পারছি না।
    কোন অবস্থাতেই ডাক্তার পেটানো অন্যায়। তাই নিয়ে আন্দোলনও সমর্থন করি। কিন্তু এটাও ঠিক যে পশ্চিম বাংলায় সরকারী এমনকি বেসরকারী হাসপাতালেও বেশ কিছু ডাক্তারদের ব্যবহার ভালো নয়। রোগ নিয়ে প্রশ্ন অনেকেই পছন্দ করেন না। এটা কিন্তু দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে দেখিনি।
  • S R | 340123.110.234523.15 (*) | ১৯ জুন ২০১৯ ১০:২৯78805
  • লিং খুলছে না- দুঃখিত, এই সামগ্রীটি এই মুহূর্তে উপলব্ধ নয়

    পেস্ট করুন।
  • রঞ্জন | 238912.69.560112.249 (*) | ১৯ জুন ২০১৯ ১২:৫৯78806
  • পিটি,
    অবশ্যই। তাপসী মালিকের, কমঃ সুদীপ্ত গুপ্তের , অনীতা দেওয়ানের, বাপি সেনের এবং আরও অনেকের (অসংখ্যের) জন্যেও 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'।
    যেহেতু এই অন্যায় সমাজে প্রতিদিন অসংখ্য অন্যায় ঘটছে তাই কোন টইয়ে কার কথা উল্লেখ করব সেটার প্রেক্ষিত খেয়াল রাখা দরকার মনে হয়।
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 7845.11.2334.156 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৩:২৪78815
  • সিজার মিশ্র এবং পরবর্তীতে অন্য সবার পোস্ট আমাকে বিচলিত করেছে।
    Capillaries of power দিয়ে ডাক্তারদের স্বর বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রোগীর স্বর চাপা। কিন্তু মাথায় রাখবো শক্তিশালী স্বর মানে বিজয়ীর স্বর। যেমনটা রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ঘটে। কিন্তু শক্তিশালী মানে ঠিক নয়। যদিও এমনটাই আমরা বুঝি।

    এবারের আন্দোলনে কিন্তু নিরাপত্তার বাইরে অন্য বিষয় শুধু ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে, কিছুই প্রায় আলোচনায় আসেনি। রাষ্ট্র, মানুষ, সমাজ, রোগী, রাজনীতির খেলা ইত্যাদি কোন বিষয়ই ডাক্তারদের আলোচনায় বা ধারণায় আসেনি।

    ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যের হাল যে তিমিরে থাকার সে তিমিরেই থাকবে। সে তিমিরেই থাকবে ডাক্তাররাও।

    ফলে আবার আক্রান্ত হবে। তখন সমর্থন আজকের মতো পাবেনা। এক ইতিহাসের সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটবে।
  • PT | 561212.187.4545.232 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৪:৫২78810
  • হ্যাঁ, অবশ্যই। তবে পারসেপশন দিয়ে নয়। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে।
    মরিচঝাঁপিও আমার তালিকায় আছে।
  • S R | 340123.110.234523.8 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৫:১১78811
  • কিঞ্চিৎ সময় থাকলে এই ভিডিও সাক্ষাৎকারটা শুনে ফেলতে পারেন।
    https://www.facebook.com/mdnajmus.sahadat.12/posts/629566990896946?hc_location=ufi

    তবে এদের আমরা বিশ্বাস করিনা। মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্মীছেলে তো এঁরা নন।
  • sei | 456712.100.235612.63 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৫:২৮78812
  • বড়োই দুঃসময়।ছাগু প্রোপাগান্ডা দিয়ে ডাক্তার পেটানো জাস্টিফাই করতে হচ্ছে।
  • S R | 340123.110.234523.8 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৫:৩৭78813
  • ডাক্তার পেটানোর একটি ছাগু ভিডিও-ও রইল তাহলেঃ
    https://www.facebook.com/ZimNawaz/videos/1598371530297454/

    শিকার যখন শিকারি!
  • S R | 340123.110.234523.8 (*) | ২০ জুন ২০১৯ ০৫:৩৯78814
  • লাল গেঞ্জি পড়া নেড়া মাথা ছেলেটিকে (শেষ কয়েক সেকেন্ডে যাকে দেখা যাচ্ছে) অন্য একটি বহুল প্রচারিত ভিডিওয় কীভাবে রুগির বাড়ি তাঁকে হেনস্থা করেছিল বলতে দেখা যায়।
  • PT | 561212.187.4545.185 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:১৪78816
  • "এই আন্দোলনের সব চাইতে তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নয়। তেমন মুহূর্ত দু’টি। একটাতে নির্মল মাজিকে ঘিরে ধরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা, পুলিশ তাঁকে গাড়িতে তুলে দেওয়ার পরও গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। অন্যটায় আর এক চিকিৎসক-নেতা শান্তনু সেনের প্রতি আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারদের স্লোগান, ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ, ফিরে যাও ফিরে যাও।’"
    https://www.anandabazar.com/editorial/bengal-doctors-strike-a-discussion-on-the-movement-and-mamata-banerjee-s-role-to-solve-the-issue-1.1007635
  • কল্লোল | 236712.158.015612.93 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:২০78817
  • এই ব্যাপারটা মারাত্মক। আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে নীরব।
  • sei | 456712.100.235612.63 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:৩৯78818
  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পরিকাঠামো ইত্যাদি উন্নত করে তোলা জুনিয়র ডাক্তারদের কাজ নয়।প্রশাসনের কাজ।জল ঘুলিয়ে দিয়ে প্রশাসনের দোষ ঢাকার চেষ্টা না করাই ভালো।
  • PT | 561212.187.4545.185 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:৪২78819
  • স্বাস্থ্য ব্যবস্থা? সেটা আবার কি?
    একটি বেসরকারি হাসপাতাল পুনরায় খোলার অনুমতি পেতে নাকি ৪৫০ কোটি টাকা পার্টির তহবিলে দান করতে হয়েছে। এরকম নাকি আরো উদাহরণ আছে। তো এই পরিমাণ টাকা ফের তুলে নিতে হলে তো পারমানেন্ট অব্যব্স্থা জারি থাকা দরকার!!

    "Globally, at least 2 billion people use a drinking water source contaminated with faeces."

    "Some 829 000 people are estimated to die each year from diarrhoea as a result of unsafe drinking-water, sanitation, and hand hygiene."

    এইসব তো শুরুর শুরু যা এখনো এদেশে কেউ ভাবছে বলে মনে হয়না। যে দেশে বিশুদ্ধ পানীয় জলই স্বপ্নাতীত, সেখানে ডাক্তারদের এপ্রন ধরে অগে টানাটানি করা কেন?
  • কল্লোল | 236712.158.015612.63 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:৫৩78820
  • সরকারী স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি না হলে সাধারণ মানুষের সাথে সাথে ডাক্তারবাবুদেরও মুস্কিল।
    সেখানে পরিকাঠামো উন্নত করার কথা বলবে না আন্দোলনকারীরা?
  • dc | 236712.158.015612.93 (*) | ২১ জুন ২০১৯ ০৫:৫৩78821
  • আগে নাকি টোডিরা সিপিএম পাট্টি ফান্ডে চাঁদা দিয়ে হাসপাতাল চালাতো। তাহলে এখন শুরুর মাঝামাঝি।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন