এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অন্য যৌনতা

  • এ আমির অন্তরালে .....বীভৎস বিবর

    তিস্তা দাশ লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্য যৌনতা | ১৯ অক্টোবর ২০০৯ | ৮৯৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পৃথিবীতে এক একজন মানুষ থাকেন যাঁদের অতি দূরত্বেও থাকেনা কোনো পরিত্রাণকারী। সময়ের উপর্যুপরি প্রহারে যখন পিঠ ঠেকে যায় অন্তিম দেওয়ালে, তখন স্রেফ অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই তাকে তার মত করে ফুঁসে উঠতে হয়। বিস্ফোরণের মত ফেটে পড়তে হয় প্রহারকের ওপর। সে প্রহারক ব্যক্তিবিশেষই হোক বা সমাজ!

    আমি মাঝে মাঝেই থই হারিয়ে ফেলি যখন দেখি মনুষ্যত্ব নয়, ব্যক্তির দৈহিক লিঙ্গ-পরিচয়টাই একমাত্র বিষয় হয়ে ওঠে অতিমাত্রায় সামাজিক জীবদের কাছে। আমি বড় লজ্জিত হই, একই সঙ্গে আতঙ্কিতও। এই গ্রহের সময়-সচেতন, মননশীল বাসিন্দা হিসেবে আজও আমাদের একমাত্র পরিচয় যদি শুধু "নারী' বা "পুরুষ' হিসেবেই থেকে যায়, যদি আমরা আজও না পারি মনুষ্যত্বে উন্নীত না হতে তবে ধিক্‌ সেই সভ্যতাকে।

    "ছক্কা', "মওগা', "ধুরানী' শব্দগুলো শোভনতো নয়ই, এমনকি বৈজ্ঞানিকও নয়। কোনো আত্ম-সচেতন মানুষের কাছেই শব্দগুলো সম্মানীয় নয়। যদিও এটা নিতান্তই আমার অভিমত যে কোনো নিরপরাধ জীবকে শাস্তি বা যন্ত্রনা দেওয়াটা অন্যায়; তবুও কিছু মানুষকে তাদের অন্যরকম প্রকৃতির জন্য প্রতি মুহুর্তে চিহ্নিত করা হয় এই সব অস্বাস্থ্যকর, অশোভন শব্দ দিয়ে। এটাই আমাদের সামাজিক প্রাণীদের বাস্তব চরিত্র। এটা করে এক ধরণের জয়ের আনন্দ অনুভব করেন সামাজিকেরা। "খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার' (হয়তো ততটাও বেশি বলা হয়ে গেলো) এইটুকুই যাদের পৃথিবীর সীমারেখা, "ছক্কা', "মওগা' শব্দগুলো তাদেরই বিকারপ্রসূত। তারা ভাবতেই রাজী নয় প্রকৃতিতে এমন কিছু মানুষ অস্তিত্বশীল যাদের শরীর ও মনের লিঙ্গ-পরিচয়ে থাকে বিস্তর ব্যবধান। যে ব্যবধান প্রকৃতিদত্ত,স্ব-নির্মিত মোটেই নয়। এই ইন্টারনেট এর যুগেও ভারতীয় সাহিত্যে বা ইতিহাসের কোথাও "লিঙ্গান্তরকামী' শব্দটি লেখা নেই। সমস্ত জায়গাতেই ব্যবহৃত হয়েছে "ছক্কা', "মওগা', "হিজড়ে' এই বিজাতীয় শব্দগুলোই। ইন্টারনেটে "ভারতবর্ষে লিঙ্গান্তরকামিতার ইতিহাস' ( Transexuals in Indian history ) খোঁজ করলে কম্পিউটার পর্দা নির্দিষ্ট করে দেয় যে গোষ্ঠীকে, তাদের সামাজিক তকমা হিজড়া। ভারতের ইতিহাসে এ শব্দটি মোটেই সাম্প্রতিক নয়, বরং বড় বেশি মাত্রায় সাম্প্রদায়িক ও পেশাগত।

    বিভাজনের উস্কানিমূলক বিতর্কে না গিয়ে চেষ্টা করলাম বৈজ্ঞানিক তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলবার। "লিঙ্গ-পরিচয়' ও "লিঙ্গান্তরকামিতা' র নেপথ্যে "লিঙ্গ' শব্দটা এখনও পর্যন্ত পুরুষ-বাচক শব্দই। এটি আজও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষাঙ্গের সমার্থক হিসেবেই চিহ্নিত। শব্দটি বারবারই কেন পুরুষাঙ্গের সমার্থক হয়ে ওঠে জ্ঞানে-অজ্ঞানে, সে তর্ক আপাতত থাক। বরং এটা বলা যাক যে "লিঙ্গ' ( Penis ) এবং "লিঙ্গ-পরিচয় ( আমি এর সঠিক ইংরেজী প্রতিশব্দ খুঁজে পেলামনা। যদি বলি 'sexual identity' তাহলে ঠিক বলা হবে না, আবার যদি বলি 'gender identity’ তাহলেও বৃহত্তর ভাবে সঠিক হবে না। বরং 'oriental identity' বললে তবু অনেকটা কাছাকাছি যেতে পারে ব্যাপারটা। ) দুটি বিষয় মোটেই সমার্থক নয়।

    খোলা চোখে এখনও পর্যন্ত ব্যক্তির লিঙ্গ-পরিচয়ের একমাত্র মাপকাঠি তার যৌনাঙ্গ (external genitalia) । বাইরে থেকে আপাতদৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়েই চিকিৎসক একটি শিশুকে চিহ্নিত করেন "পুরুষ' বা "স্ত্রী' শিশু হিসেবে। শুধু চিকিৎসকই নন, এই রীতিতেই দীক্ষিত এই সমাজের আপামর জনসাধারণ। জবরদখলের নীতিতে যে সমাজের নাগরিকেরা অভ্যস্ত তাদের পক্ষে কখনোই এটা বুঝতে পারা বা মানতে পারা সম্ভব নয় যে, শিশুটি ত্রুটিহীণ একটি যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্মালেও পরবর্তীতে তার ব্যক্তিগত অনুভব, মননের কাছে এই যৌনাঙ্গটি নিতান্তই অনাকাঙ্খিত মনে হতে পারে। মনে হতেই পারে -- ""এ শরীর (বিশেষত যৌনাঙ্গ)টি তো আমি একেবারেই চাইনি! যে শরীর আমার চিন্তার সমান্তরালে হাঁটতে পারে, এ শরীর তো সে শরীর নয়!'' এই অসম্ভব গতিময়তার যুগে কারই বা এত দায় পড়েছে মুখোশের নীচে ঢাকা মুখের বিধ্বস্ত আকূতি বুঝবার!

    আমার বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠদের আমি দশ বছর আগেও বলতে শুনেছি --""এগুলো আসলে সব ওর শয়তানি।'' অনেকে আবার একথা বলতেও ছাড়তো না -- ""মেয়েদের সাথে বদামো করার জন্যই ও এরকম মাইয়ালী ঢং করে, বোঝ না!'' আমি বড় আশ্চর্য্য হতাম। মেয়েদের সাথে "কু-কাজ' করার জন্য তো আমার অনেক বেশি "পুরুষালী' হয়ে ওঠার দরকার ছিলো! কারণ আমি যে সময়কার সামাজিক পরিস্থিতির কথা বলছি তখন সমস্ত বিসমকামী মেয়েদের কাছেই যৌন সঙ্গী হিসেবে একটি ম্যাচো ম্যানই ছিলো কাঙ্খিত। কোন পুরোদস্তুর "মাগীপন পোলা'র ( যে কিনা আবার যৌনসঙ্গী হিসেবে একজন বিসমকামী ম্যাচো ম্যানকেই আকাঙ্খা করে) তো তাদের যৌন চাহিদা মেটাতে পারার কথা নয়! কে জানে, তারা হয়তো এমনটাই ভাবতো যে "মাগীপনা' করে বুঝি ছদ্মবেশে মেয়েদের থেকে যৌনতৃপ্তি নিতাম। ঐ যে বললাম -- "৫+৫ = ১০' এই সমীকরণটি ভাবনার পক্ষে অনেক সহজ, অনায়াসসাধ্য। কিন্তু সমীকরণটি যদি "২+১+৪+৩ =১০' এই প্রক্রিয়ার ঘটে তবে তা শুধু অতি বাধ্য সামাজিকদের (""ভদ্র মোরা শান্ত বড়, পোষমানা এ প্রাণ/ বোতাম আঁটা জামার নীচে শান্তিতে শয়ান'') শুধু দীর্ঘই নয়, ক্ষেত্র বিশেষে বেশ ক্লান্তিকরও ঠেকে। যারা প্রথম পদ্ধতিতেই ১০ এ পৌঁছতে অভ্যস্ত, স্বচ্ছন্দ, তাদের পক্ষে দ্বিতীয় বিভাজনটি বিরক্তিকর তো লাগবেই! সেই কারণেই তো সামাজিকদের মনে হয় -- ""ওর দু ঠ্যাঙের মাঝে "বাঁড়া-বিচি' (হ্যাঁ পাঠক বন্ধুরা, আমাকে এভাবেই শোনানো হতো যত্রতত্র) সবই ঠিকঠাক আছে, তাহলে কেন শালা ওইটা মাগীপনা করে বল তো?''। আমি হৃদয় খুলে দেখাতে পারিনি কাউকে। কিছুতেই সামাজিক-মূর্খদের বোঝাতে পারিনি কিভাবে আমি মেয়েদের "সখী' হয়ে উঠেছিলাম। কিভাবে নারী মননের গভীর সোপানে পৌঁছে আমার সেদিনের "ভুল-শরীর' দুপায়ের মাঝে পুরুষাঙ্গ, শুক্রাশয় নিয়েও মেয়ে হিসেবেই মেয়েদের সাথে একই পংক্তিতে আসন পেতে বসেছিলো।

    সে এক অপরূপ মমত্ব, নিজের উপলব্ধির প্রতি, যা আমার সাধ্যের অতীত (আমার তখন এমনটাই মনে হত বার বার) সেই গহীনের প্রতি। কিন্তু কেন ঘটে এমনতর বিচিত্র (! ) ব্যাপার স্যাপার? সম্ভাব্য কারণগুলো (যেগুলো কোনো রাজনৈতিক নেতা, ধর্মযাজক, তান্ত্রিক দর্শায়নি, দেখিয়েছেন বৈজ্ঞানিকরাই) বিশ্লেষণ করলে বলা যায় আজও বিজ্ঞানীদের পক্ষে এর কোনো সঠিক কারণ বলে দেওয়া সম্ভব হয়নি যার ওপর দাঁড়িয়ে কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে। তবে তুলনামূলক ভাবে এখন পর্যন্ত অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য বলা যায় সাম্প্রতিক কালের কিছু মস্তিষ্ক গবেষকের গবেষণাকে। তাঁদের বড় একাংশের বক্তব্য অনুযায়ী -- এমন ঘটনা ঘটাবার পেছনে কলকাঠি নাড়ে সেক্স-হর্মোন। ভ্রূণ বৃদ্ধির একটি জটিল পর্যায়ে এই সেক্স-হর্মোনের বেঠিক কার্যকারিতাই এত কিছু বিপত্তি ডেকে আনে। আরো খোলসা করে বললে এভাবে বলতে হয় -- পুরুষ ভ্রূণ (যে ভ্রূণের সেক্স ক্রোমোজমের গঠনে "XY' এই ক্রোমোজোম দুটি উপস্থিত) ও স্ত্রী ভ্রূণ (যে ভ্রূণের সেক্স ক্রোমোজোম জুটিতে দুটিই "XX' ) উভয় ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে একটি বিশেষ অংশের (Bed Nucleus of the Stria Terminalis) গঠন মেয়েদের মতই থাকে। এমনকি গর্ভাবস্থার সাত থেকে আট সপ্তাহ পর্যন্ত উভয় ভ্রূণের যৌনাঙ্গের গঠন মেয়েদের মত হয়। বৃদ্ধির পরবর্তী পর্য্যায়ে "XY' ভ্রূণের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হর্মোনের প্রভাবে ঐ অংশটির গঠন- প্রকৃতি পুরুষের মত হয়ে ওঠে ও পুং-জননাঙ্গ পরিপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে "XX' ভ্রূণটির ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হর্মোনের প্রভাবে স্ত্রী-জননাঙ্গের পূর্ণ বিকাশ ঘটে। এটাই প্রকৃতির প্রথাগত ধারাবাহিকতা।

    কিন্তু সুধী পাঠক, প্রকৃতি কখনো সখনো তার প্রথাগত প্রবাহের গতিপথ বদলাবেনা এ মাথার দিব্যি তো কেউ তাকে দেয়নি! তাই আউট অফ ট্র্যাক হয়ে যখন প্রকৃতি এমনটা ঘটায় যেখানে "XY' ক্রোমোজোমের ভ্রূণটির মস্তিষ্কের ঐ বিশেষ অংশটিতে টেস্টোস্টেরন কোনোভাবেই কাজ করতে পারেনা। ফলে অংশটি বরাবরের জন্য মেয়েদের মতই থেকে যায়। অথচ তার যৌনাঙ্গে ও শরীরের অন্য অংশের পুরুষালী বৃদ্ধির জন্য টেস্টোস্টেরন পুরোমাত্রায় কাজ করে ও ভ্রূণটির পুং-জননতন্ত্রের ও জননাঙ্গের পূর্ণ বিকাশ ঘটে। এমনকি বয়:সন্ধিকালে তার পুরুষালী বাহ্যিক শারীরিক লক্ষণগুলোই প্রকাশ পায়।

    ওদিকে আবার "XX' ক্রোমোজোমের ভ্রূণটির ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ঐ অঞ্চলে যদি টেস্টোস্টেরন ঢুকে প'ড়ে করিশ্‌মা দেখায় তাহলে সেই অংশটি বেড়ে ওঠে পুরুষের মত। অথচ ইস্ট্রোজেনের প্রভাবে স্ত্রী-জননাঙ্গ সহ তার অন্যান্য শারীরিক বিকাশ পরিণতি পায় "মেয়ে' হিসেবেই।

    এহেন দুর্যোগের আবশ্যিক ফলাফল হিসেবে শিশুটি জন্মের পর থেকে যতই পরিণত বয়স্কতা ও পরিণত মনস্কতার দিকে এগোয় ততই তার শরীর ও মনের লিঙ্গ বৈষম্য আরো বেশি প্রকট হয়ে উঠতে থাকে। ততই ব্যক্তি মানুষটির পক্ষে তার যৌনাঙ্গ ও বাহ্যিক যৌন লক্ষণগুলি চরম বিড়ম্বনার কারণ হয়ে ওঠে (যে দু:সহ জ্বালা অবর্ণনীয়)।

    আমাদের সামাজিক সভ্যরা (! ) কোনো দায়িত্ব অনুভব করেন না সেই বিপন্নতা, যন্ত্রনায় উপশমের প্রলেপ দিতে। তাঁরা শুধু দায়িত্বশীল "ছক্কা', "মওগা', "হিজড়া' ইত্যাদি নৃশংস চিহ্নিতকরণে। তাঁরা দায়িত্বশীল পরিস্থিতির শিকার কিছু মানুষকে যেনতেন প্রকারে কোণঠাসা করতে, প্রতি মূহুর্তে অসম্মান করতে, ব্যঙ্গ করে অপার সুখ পেতে। প্রকৃত সমঝদার কিছু মানুষজনকে বাদ দিলে সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকেরই আমার কাছে দুটি প্রশ্ন থাকে। এক হলো -- ""সবকিছুই যখন ঠিকঠাক ছিলো তাহলে কেন তুমি সেক্স চেঞ্জ করলে?'' প্রিয় পাঠক, মনে রাখবেন ঐ ""সবকিছুই''টা কিন্তু তাঁদের কাছে জননাঙ্গ ও বাহ্যিক যৌন-লক্ষণ। আমার নারীত্বে ভরপুর হৃদয়বৃত্তি নয়। এমনকি আমার প্রতি (মানে আমার এখনকার নারী শরীরের প্রতি) ফিদা পুরুষরাও সেই তালিকার বাইরে নন।

    দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি না করলে (সে প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ভব্যতার লেশ নেই। সে প্রশ্ন অবিশ্বাস জড়িত কৌতুকের) তাঁদের পেটের খাবার হজম হয়না সেটা হ'ল -- ""তোমার ঐ জায়গাটা একদম মেয়েদের মতো হয়ে গেছে? তুমি একটা মেয়ের মত পুরুষের সাথে সেক্স করতে পারবে?'' অথচ তাঁরা কেউ আমাকে আজ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করেননি কতটা রক্তক্ষরণ, কতটা আয়ুক্ষয় করে আমায় শারীরিক নারীত্বে পৌঁছতে হয়েছে। কতটা সামাজিক অবমাননার পর আমার থই মিলেছে। বা কতবার কত কায়দায় ধর্ষিত হতে হয়েছে "নারীত্ব লালনের' অপরাধে।

    আমায় কেউ কখনো জিজ্ঞেস করেননি আমি পুরুষ-শরীর নিয়ে জন্মাতে চেয়েছিলাম কিনা। কিংবা আদৌ কি আমি জন্ম নিতে চেয়েছিলাম? পৃথিবীর কোনো শিশুই তার নিজের ইচ্ছেয় জন্ম নেয় না, এমনকি সে কোন লিঙ্গের শরীরে জন্ম নেবে তারও নিয়ন্ত্রক সে নয়। তাহলে পাঠক, যে জন্মের জন্য কোনভাবেই সে দায়ী নয় সে অসম্পূর্ণ জন্মের জন্য কেন তাকে আমৃত্যু শাস্তি পেতে হবে? আমি তো ডলফিন হয়েও জন্মাতে পারতাম কিম্বা প্রজাপতি, কিংবা চড়াই। তাদের সমাজে তো জেন্ডার আইডেন্টিটি নিয়ে মনুষ্য সমাজের মত বাল ঠাকরে মার্কা আচরণ নেই! তারা এমনকি যৌনসঙ্গী/ সঙ্গিনীটিও নির্বাচন করে নিজস্ব ইচ্ছায়। কোন রাষ্ট্র তো সেখানে তাদের ব্যক্তিগত যৌন জীবনে ৩৭৭ ধারা জারি করেনা। তাহলে কি মানুষ হয়ে মানুষের গর্ভে জন্ম নেওয়াটাই অপরাধের?!!

    (প্রথম পর্ব। পরবর্তী পর্বে সমাপ্য)

    (লেখাটি স্বীকৃতি নামক একটি পত্রিকায় পূর্বপ্রকাশিত। মুদ্রিত অবস্থা থেকে ইন্টারনেটে প্রকাশযোগ্য অবস্থায় নিয়ে এসেছেন কৃষ্ণকলি রায়।)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অন্য যৌনতা | ১৯ অক্টোবর ২০০৯ | ৮৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন