এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আব্বাস! সাব্বাস!

    Bagchi P লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৬ মার্চ ২০২১ | ১২৬২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • আব্বাস! সাব্বাস! : সংযুক্তা মিত্র

    ছিল রুমাল হয়ে গেল বেড়াল। মাত্র এক সপ্তাহ আগেও যেখানে ইসু ছিল বিজেপির সোনার বাংলা বা তৃণমূলের ঘরের মেয়ে হঠাৎ সেখানে উড়ে এসে জুড়ে বসল ‘ভাইজান’ আব্বাস সিদ্দিকি। এমনকি এখন গ্যাস ও তেলের লাগামছাড়া দাম বাড়ানোর মতো ইসুও কিছুটা ব্যাকফুটে। উপলক্ষ, সবাই জানেন, ২৮ ফেব্রুয়ারির বাম কংগ্রেস জোটের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশ --- যেখানে খানিকটা ‘ভিনি ভিডি ভিসি’-র মতো তিনি টেনে নিলেন মঞ্চের আলো, তাঁকে জামাই আদরে আপ্যায়িত করা হল মঞ্চে, তার নামে জয়ধ্বনি উঠল। বাংলার বামফ্রন্টের পিতামহ বিমানবাবু সেই দৃশ্য দেখলেন, হয়তো কিছুটা ঢোকও গিললেন। তাঁর দলের বাঘা বাঘা নেতারা যেভাবে আলিঙ্গনে আটকে রইলেন এই চৌত্রিশ বছরের যুবকটির সঙ্গে তাতে মনে হল অনেকদিন বাংলার টিভি চ্যানেল ও সাংবাদিকরা এমন ইসু পাননি। পরের দিন থেকেই উপচে পড়ছে নানা সংবাদ ও বিসংবাদ। কেউ বলছেন তাল কেটে গেল, কেউ বলছেন সব্বোনাশ! বাম কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতা কি তাহলে বাবরি মসজিদের মতোই এবার ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়া হল !

    ব্যাপারটাকে খোলা মনে দেখা ভাল। এটা হিন্দু উচ্চবর্ণের একটা মানসিক বাধা যে তারা যেহেতু এখনো বাঙালি সমাজের মূলস্রোতের মাথা হয়ে আছে, তাই সেই জায়গাটায় তারা কোনো সংখ্যালঘু মুসলমানকে জায়গা দিতে চায় না। কেউ কোনোভাবে সেখানে এসে পড়লে প্রথমেই তাঁকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানরা ছিলেন সংখ্যাগুরু (৫৪%) --- যদিও তখন থেকেই হিন্দু উচ্চবর্ণ বাংলার রাজনীতি শিক্ষা সংস্কৃতি সরকারি উচ্চপদ সবই দখল করতে পেরেছিল শিক্ষায় দীক্ষায় ও সামাজিকভাবে অনেকটা এগিয়ে থাকার সুবাদে। বাংলা যে ভাগ হয়েছিল তার একটা কারণ যেমন মুসলমানদের নিজস্ব ধর্মরাষ্ট্রের চাহিদা ও দাবি অন্যদিকে বাংলার উচ্চবর্ণের হিন্দুরাও চেয়েছিল বাংলার পশ্চিমভাগ আলাদা হলে সেখানে তারাই সংখ্যাগুরু হয়ে থাকবে, কারণ মুসলিম জনসংখ্যার বেশিটাই ছিল পুব বাংলায়। এই হিসেব থেকেই হিন্দু মহাসভার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাংলা ভাগের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন, বিজেপি এটাকেই ঘুরিয়ে প্রচার করে যে শ্যামাপ্রসাদ না থাকলে বাঙালি হিন্দুর সর্বনাশ হত আর সেই কারণেই নাকি তিনি পশ্চিমবঙ্গের ‘প্রতিষ্ঠাতা’। এবং এই সঙ্কীর্ণ ভেদবুদ্ধির চাপেই সেদিন শরৎচন্দ্র বসুর অখণ্ড বঙ্গরাষ্ট্রের চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। সেই থেকে এপার বাংলায় মুসলমানরা সংখ্যালঘু, এখন এই রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৭%। শুধু তাই নয়, প্রায় এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা নিয়েও এত বছর পরেও রাজ্যের পাবলিক ফিগার হিসেবে সেইভাবে কোনও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকে আমরা পাই নি। এমনকি রাজনীতি সচেতন বলে পরিচিত এই রাজ্যের রাজনীতিও গত সত্তর বছরে রায়-সেন-মিত্র-ঘোষ-বসু-দাসগুপ্ত-ভট্টাচার্য -চক্রবর্তী-ব্যানার্জি-মুখার্জি-চ্যাটার্জি দের মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছে। সেই জায়গায় বঙ্গ রাজনীতির উঠোনে সদ্য খেলতে আসা একজন মুসলিম নেতাকে দেখে কারোর কারোর গাত্রদাহ হতেই পারে। একেবারেই গোড়ায় গেল গেল রব তুলছেন তারাই। তারাই ফেজ টুপি পরা নেতা দেখে তাঁকে মৌলবাদী বলে দেগে দিতে চাইছেন। এঁদের স্মরণে কেন এল না সম্পূর্ণ গেরুয়া পোশাকে সজ্জিত স্বামী অগ্নিবেশ কীভাবে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র নিয়ে পিছিয়ে পড়া জনজাতিদের মধ্যে কাজ করে দুবেলা বিজেপির গালমন্দ কুড়িয়েছেন? পোশাক দেখে কে যেন একবার সিএএ বিরোধী আন্দোলনের নেতাদের চিহ্নিত করতে বলেছিলেন, বছর খানেক আগে, মনে পড়ে? মাথায় পাগড়ি দেখে কৃষক আন্দোলনের নেতাদের কীসব যেন বলা হচ্ছিল কিছু দিন আগেও, মনে পড়ছে?

    আরেকটা কথা, যে নেতাকে ঘিরে এত বিতর্ক তিনি নিজে কিন্তু ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নিজেকে দাবি করেছেন যে সদ্য গঠিত ফ্রন্টের সেক্রেটারি শ্রীমন সোরেন একজন জনজাতির মানুষ। এই ফ্রন্ট এখনো অবধি যা প্রকাশ্যে দাবি করেছে তাতে তারা বাংলার মুসলমান, দলিত ও জনজাতিদের প্রতিনিধিত্ব করতে রাজনীতিতে এসেছে --- সেই উদ্দেশ্যেই তাঁদের বাম কংগ্রেসের সঙ্গে মোর্চা তৈরি করা। এখানে বলা দরকার, পশ্চিম বাংলার জনসংখ্যার মধ্যে আরো একটা উপেক্ষিত অংশ তফসিলি জাতি ও উপজাতি জনগোষ্ঠী যারা রাজ্যের জনসংখ্যার ২৯ শতাংশ । সংরক্ষণের সুযোগ পেলেও তাঁদের সামাজিক স্বীকৃতি এখনো অধরা শুধু নয় রীতিমতো নিন্দিত। কয়েক দশক আগের চুনী কোটালের কথা আমাদের মনে পড়ে। খেয়াল করতে যেন ভুলে না যাই খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা মেরুনা মুর্মুর কথা, যিনি সদ্য বেথুন কলেজের এক ছাত্রীর দ্বারা সমাজ মাধ্যমে নিজের জাতিগত পরিচয়ে বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন। আর ঐতিহাসিক ভাবে এটা মেনে না নিয়ে উপায় নেই, সারা বাংলায় যে গরিব মুসলমানরা থাকেন তাঁদের বড় অংশই আদপে তফশিলী জাতির মানুষ, উচ্চবর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারে যারা একসময় মধ্যযুগে ইসলামের শরণ নিয়েছিলেন। আর মুসলমানদের মতোই এই দলিত ও জনজাতিদেরও আমরা আমাদের মূলস্রোতে সামিল করতে পারিনি আজও। সেইসব কথা মাথায় রাখলে ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ যদি তাঁদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের কথা বলে রাজ্যের রাজনীতিতে সামিল হয়, আমাদের নাক কুঁচকে ওঠার কিছু নেই।

    বরং সমস্যাটা অন্য জায়গায়। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের মুখ হিসেবে যে আব্বাস সিদ্দিকিকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে তার অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন আছে। ব্রিগেডে ওই ফ্রন্টের সেক্রেটারি শিমুল সরেন, যিনি জনজাতির প্রতিনিধি তাঁকে সেইভাবে ফোকাস করা হয়নি, করা উচিত ছিল। এই সদ্য গঠিত ফ্রন্ট ( আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা ২১ জানুয়ারি ২১) ঠিক কীভাবে রাজ্যের একটা বড় পেছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে সেটা কি আমাদের সকলের কাছে খুব পরিষ্কার ? কী তাঁদের কর্মসূচি, কেমন তাঁদের ভাবনা? আর মুসলমান সমাজ ও জনজাতি সমাজের সমস্যা তো ঠিক একইরকম নয়, এই তফাৎ নিয়ে তারা ভাবছেন তো? যেমন সাঁওতালি জনগোষ্ঠীর একটা প্রধান দাবি সাঁওতালি ভাষায় ও অলচিকি লিপিতে তাঁদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা --- এই বিষয়ে কিছুটা ব্যবস্থা হলেও সব জায়গায় উপযুক্ত শিক্ষক নেই, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এর কোনো সুযোগই নেই। এটা আবার মুসলমানদের দাবি নয়। ফলে দুটো/তিনটে স্বতন্ত্র গোষ্ঠীর দাবি দাওয়াকে কীভাবে একটা সাধারণ মঞ্চে নিয়ে আসা যাবে সেই বিষয়ে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার দরকার হয়। তেমন কোনো সচেতন প্রক্রিয়ার ভিতর কি আমরা এঁদের দেখেছি?

    এরপরে আসে ব্যক্তি হিসেবে আব্বাস সিদ্দিকির প্রশ্ন। সাতশো বছরের পুরোনো, কিন্তু একশো পচাত্তর বছরের প্রামাণ্য ইতিহাসে সমৃদ্ধ ফুরফুরা শরিফের মাজার ইসলামের যে শাখা নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা মূলত সুফি ধর্মে প্রভাবিত। বলা হয় ‘দেওবন্দি’ ও ‘বেরলভি’ মতবাদের মাঝামাঝি এঁদের একটা ধর্ম ধারা আছে যা কোরাণ বা হাদিসের অনুসারী গোঁড়া মতবাদের থেকে কিছুটা আলাদা ও উদার। ধর্মীয় কাজের পাশাপাশি নানা সমাজকল্যাণ মূলক কাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এসব কাজে ফুরফুরা শরিফ কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ দিন ধরে অংশগ্রহণ করে আসছে । ইসলামের বাইরেও অন্য ধর্মের মানুষ ফুরফুরার পীরের ভক্ত আছেন। বাংলাভাষায় ইসলাম চর্চার সূত্রপাতেও এঁদের ইতিবাচক ভূমিকা ছিল। পণ্ডিত মহম্মদ শহিদ্দুলা এঁদের অনুগামী ছিলেন। আব্বাস সিদ্দিকি সেই পীর পরিবারের যুবক, তাঁর চিন্তায় চেতনায় এই উদারতার ছাপ থাকবে বলে ধরে নেওয়াই যায়। এমনকি তাঁর ধর্ম পরিচয় নিয়েও কিছু বলার নেই। ধার্মিক ও সাম্প্রদায়িক দুটি সত্ত্বা আলাদা। মহাত্মা গান্ধী ধার্মিক ছিলেন কিন্তু সাম্প্রদায়িক ছিলেন না, আবার মহম্মদ জিন্না ধার্মিক ছিলেন না কিন্তু সাম্প্রদায়িক ছিলেন। কিন্তু এই সব ব্র্যাকেটের মধ্যে আব্বাস সিদ্দিকিকে রাখার ক্ষেত্রে কিছু বাধা এসে দাঁড়াচ্ছে।

    কেন তা বলি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২০১৮ সালে কেরালাতে যখন বন্যা চলছে, সেখানকার ত্রাণকার্যে যোগ দিতে আব্বাস গিয়েছিলেন, এবং তখনই জড়িয়ে পড়েন ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের কার্যকলাপের সঙ্গে। সেখানে প্রায় ৬ মাস থেকে তাদের কাছে প্রশিক্ষণ নেন আব্বাস। লিগের প্রতিষ্ঠাতা পরিবার, পানাক্কার থাংগালদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আব্বাস চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গে লিগের শাখা খোলা হোক, যাদের সঙ্গে জোট বেঁধে তিনি কাজ করবেন। মুসলিম লিগ আব্বাসের সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিল। যাই হোক, আব্বাস একই সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়েছিলেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মীম নামক দলটির সঙ্গেও - যুক্তিটা দুই ক্ষেত্রেই এক - সব মুসলিমদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা। এন ডি টিভির নিউজ পোর্টালে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের প্রতিবেদক জানাচ্ছেন, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে ওয়াইসির মিম দলের সমর্থন আছে (২১ জানুয়ারি ’২১)। আবার ইন্ডিয়া টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে স্বয়ং আব্বাস জানাচ্ছেন, ওয়াইসি তাঁকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন (১৭ ফেব্রুয়ারি ’২১) --- চ্যানেল যদি তাঁকে ভুল ভাবে উদ্ধৃত করে থাকে তার কোনো প্রতিবাদ আমাদের এখনো চোখে পড়েনি। এর সঙ্গে যোগ করে দেখতে হবে, বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো আব্বাসের বিভিন্ন বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং। সেইসব বক্তব্যে তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন তিনি শরিয়তপন্থী ইসলামে বিশ্বাস করেন। তিনি মনে করেন, সিনেমা বা নাটকে মেয়েদের অভিনয় করা মানে দেহ দেখিয়ে পয়সা উপার্জন করা এবং এসবের জন্যে এদেরকে নাকি গাছে বেঁধে পেটানোই বিধেয়। যদিও একজন সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, এই ভিডিও নাকি গত বছর (২০২০) বসিরহাটে একটি এন আর সি বিরোধী সমাবেশের, সেখানে আব্বাস নাকি সেখানকার তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের শেষ মুহূর্তে এন আর সি র বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রতিবাদ করেছিলেন । তবে সেটা যদি নিন্দারও হয় তার প্রতিবাদের ভাষা ওরকম কেন হল তার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। তিনি জানিয়েছেন, মুসলিম ঘরে জন্ম গ্রহণ করেও যারা ইসলাম মানে না, তাদেরকে উনি তাড়িয়ে দেওয়ার এবং মারার নিদান দেন।করোনা ভাইরাসের মহামারীর সময়ে তিনি মন্তব্য করেন, যে আল্লা নাকি ভারতের ৫০ কোটি লোক মেরে দিতে এই ভাইরাস পাঠিয়েছেন। এই সব ভিডিওর সত্যতা আমরা যাচাই করিনি ঠিকই, কিন্তু এই ব্যাপারে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের পক্ষেও কিছু আপত্তি জানানো হয়েছে, এমন খবর নেই। আরো কিছু বিষয় নিয়ে কথা থাকছে। ব্রিগেডে আব্বাস দলের পক্ষে যে বক্তব্য রেখেছেন সেখানে এনআরসি / সিএএ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। অথচ এই মুহূর্তে এই প্রসঙ্গটা রাজ্যের মুসলমান, আদিবাসী জনজাতি ও কিছু কিছু তফসিলী জাতির ক্ষেত্রে খুবই দরকারি, কারণ তাদের অনেকের কাছেই ‘কাগজ’ নেই যা দিয়ে তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ হবে। আদিবাসীদের মধ্যে কাজ করা কিছু সংগঠন এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই অস্পষ্টতা দূর করার প্রয়োজন আছে। আর সবথেকে বড় কথা হল, রাজ্যের প্রায় ৫৬ শতাংশ ভোটারের দাবি নিয়ে আজ হঠাৎ যারা সরব হয়ে উঠলেন, তাদের এর আগে কোথাও কোনো ভোটে তো বাংলার মানুষ দেখেন নি! ভোট যদি বাদও রাখি, যারা বলছেন বাম কংগ্রেস বা তৃণমূল কোনো আমলেই মুসলমান ও অনগ্রসর জনজাতির কোনো উন্নয়ন হয়নি ---- তাদের বিগত সময়ে কোথাও কোনো ফোরামে কথা বলতে বা দাবি দাওয়া জানাতে আমরা কি দেখেছি? তাহলে তাদের এই ফ্রন্ট গঠন ও বাম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট তৈরি করে ভোটে লড়া, এর মধ্যে কি সাময়িক একটা আবেগই সব ? নাকি এর পেছনে কোনো বড় খেলা আছে ? একটা ফ্রন্ট তৈরি করতে গেলেও অনেক দিনের আলাপ আলোচনার প্রক্রিয়া, সমাবেশ এইসব লাগে । শুধু ধর্মীয় ভিত্তিতে নিজের কিছু সমর্থককে ব্রিগেডে নিয়ে এসে, এবং আগে জানলে আরো বেশি আনতে পারতেন ( আগে জানলেন না কেন, ব্রিগেডের ঘোষণা হয়েছে অন্তত একমাস আগে ) এই বক্তব্য রেখে নিজের ওজন ভারি করার চেষ্টা আর যাই হোক জনমুখী রাজনীতির পথ হতে পারে না ----- বড় জোর ওয়ান ম্যান শো হতে পারে। কিছু কিছু মহল থেকে এমন শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে, এই ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বিজেপির সমর্থনপুষ্ট আদপে একটা রাজাকার বাহিনী।এই আশঙ্কার একদম ভিত্তি নেই, তা নয়। রাজ্যের চল্লিশ পয়তাল্লিশটি আসনে লড়তে গেলে যে অর্থবল লাগবে তার সংস্থান কোথা থেকে হবে, সেই বিষয়ে এদের অবস্থান খুব দ্রুত পরিষ্কার করা দরকার। আব্বাসকে নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। এখনো অবধি যে সব আসন নিয়ে তাঁরা দর কষাকষি করছেন তার সবগুলিই সংখ্যালঘু এলাকার আসন, দলিত বা জনজাতি এলাকার আসন নয়, সন্দেহ বাড়ছে বই কি। সারা রাজ্যে বিজেপির সাম্প্রদায়িক দাপাদাপির মধ্যে পাল্টা সাম্প্রদায়িকতা বেশি বিপদ --- কার্যত বিজেপি ঠিক এইটাই চায়।

    এখন আরেকটা কথা এই সূত্রে অবধারিত ভাবে এসে পড়ে যে এমন একটা দলের সঙ্গে একই জোটে রাজ্যের বাম রাজনীতির কেষ্ট বিষ্টুরা হাত মেলালেন কেন ? অবশ্য বামেরা এর প্রত্যেকটি অভিযোগই উড়িয়ে দিয়ে বলবেন, তারা এই আব্বাসের চোখেই নতুন দিনের আলো দেখেছেন তাই ‘আব্বাস বিনে গীত নেই’। পত্র পত্রিকা পড়ে বোঝা যাচ্ছে, এখনো রাজ্যের অনেক মানুষ বাম রাজনীতির থেকে একটু অন্যরকম কিছু আশা করেন, তারা এই ব্রিগেড কাহিনিতে খানিকটা বিভ্রান্ত। ব্রিগেডের মূল হোতা ছিল বাম দলগুলো, বরাবরই তাই হয়। কিন্তু সেই আয়োজনে সমস্ত মনোযোগ এমন একজন নিয়ে চলে গেল যার আচারে আচরণে ভাবনায় অনেক অসংগতি আছে, এটা কট্টর বাম সমর্থকরা ঠিক হজম করতে পারছেন না। যদিও বামেরা আব্বাস সিদ্দিকিকে ইতিমধ্যেই “আলোর পথযাত্রী” হিসেবে চিহ্নিত করে দিয়েছেন তাই তারা বুক বাজিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, ওসব কিছু না, আব্বাসের চালেই নাকি টিএমসি বিজেপি মাত হয়ে যাবে। হবেও বা। কিন্তু তার পরেও তো কিছু প্রশ্নের পথ আটকে দাঁড়ানো যাবে না। আপাতত সেইরকম দুটি প্রসঙ্গ ।

    এই রাজ্যে মুসলমান বা জনজাতিদের উপযুক্ত উন্নয়ন হয়নি, এটা অস্বীকার করা যাবে না কিন্তু তারই মধ্যে মুসলমান সমাজের একাংশের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে মুসলিম মেয়েরা স্কুলে কলেজে যাচ্ছেন, বাইরে বেরোচ্ছেন, সরকারি প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন। আল আমীন মিশনের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন স্কুল কলেজে শিক্ষার সুযোগ পৌঁছে দিচ্ছেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিং দিচ্ছেন। সফলভাবে প্রতিষ্ঠিতরা নিজেরা আবার কোনো কোনো ছাত্র বা ছাত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন। আরো এমন অনেক সংগঠন আছে যারা এই ধরণের সামাজিক কাজ করে চলেছেন। কিন্তু, মূলধারা মিডিয়ায় তাঁদের খবর উপেক্ষিত থাকে । মুসলমান সমাজের এই উদার অংশটার ভূমিকা কোনোভাবেই কম নয়। কিন্তু সেই উদার অংশের কোনো প্রতিনিধিত্ব সেকুলার ফ্রন্টের মধ্যে নেই । অথচ ওই অংশটাকে বৃহত্তর সামাজিক পরিসরে জায়গা দিতে পারলে একটা সত্যি প্রতিষ্ঠা করা যেত। বিজেপি তাদের প্রচারে বৃহত্তর হিন্দু সমাজে মুসলমানদের বিষয়ে যে একটা ছকে বাঁধা একমাত্রিক কাঠামোর কথা বলে, তার বিপরীতে মুসলমান সমাজেরও যে অন্য একটা চেহারা আছে সেটা ছড়িয়ে দিতে পারলে বামপন্থীরা একটা জরুরি দায়িত্ব পালন করতে পারতেন। আর এই বাংলায় দীর্ঘ বাম শাসনে মুসলমানরা তো তাঁদের পাশেই ছিলেন, নিজেদের মধ্যেকার মৌলবাদী শক্তিগুলোকে সরিয়ে রেখে । রাজ্যের বাম আন্দোলনের ঐতিহ্যে বরাবরই মুসলমানরা একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে এসেছেন, সমস্ত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করেই। কিন্তু নিজেদের যারা অগ্রণী সমাজদর্শনের ধারক বাহক ভাবেন, তাদেরই নেতারা হাত ধরলেন ওই সন্দেহ জড়িয়ে-থাকা পেছিয়ে পড়া মানসিকতার প্রচারক দলের নেতার! কৌশল যখন নীতিকে ছাপিয়ে যায় অবশ্য তখন এমনই হওয়ার কথা ছিল।

    আরেকটা কথা, বামপন্থীরা ইদানিং দাবি করছেন গোটা লকডাউন জুড়ে বামকর্মীরা রাস্তায় থেকে কাজ করেছেন, নবান্ন অভিযানের মধ্যে দিয়ে যেভাবে বেকারত্বের প্রশ্নটিকে সামনে এনেছেন, তাতে মানুষের মনে তাঁদের বিষয়ে নতুন করে আস্থা জেগেছে। জেগেছে কি না সেটা সময় বলবে । কিন্তু এই গোটা সময়টায় আব্বাসের কী ভূমিকা ছিল? এনআরসি-সিএএ প্রশ্নে বা, কৃষিবিল বিরোধী আন্দোলনে অথবা বেকারির বিরুদ্ধে ‘নবান্ন অভিযান’, একবারও কি বামেদের সহযোগী হিসেবে রাস্তায় নেমেছেন তিনি বা তাঁর দল? বৃহত্তর কোনো গণ-উদ্যোগে বা আন্দোলনে যাকে দেখা যায়নি, রাজ্য বা দেশের জরুরি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়ে যাকে কোনো কথা বলতে শোনা যায়নি, যিনি শুধু ধর্মীয় সমাবেশে এক মাস আগে অবধি ভাষণ দিয়েছেন, সেই ধর্মগুরুকে স্রেফ কিছু ভোটের জন্য মাথায় তুলে নিয়ে আসতে হল? তাঁরা এক কদম এগোলেন না দুই কদম পেছোলেন?

    তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এন ডি টিভি, ইন্ডিয়া টিভি, আরেক রকম, আনন্দবাজার পত্রিকা, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, ইনসাফ টিভি
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৬ মার্চ ২০২১ | ১২৬২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 42.110.136.53 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:৪৫521313
  • কিছু না পড়ে কিভাবে সব ব্যাপারে মাতব্বরি মারতে হয়, তা এসব পাঁঠাদের দেখে বোঝা যায়! 
     জুতোপেটা এদের একমাত্র দাওয়াই!
  • hihi | 2405:8100:8000:5ca1::9e:f487 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৪:৫১521314
  • শুয়োরেলাগানো  বেবুশ্যের পো সামনাসামনি খিস্তাতে  গেলে ক্যাঁৎ ক্যাঁৎ খাবে তাই স্ক্রিনশট নিয়ে চুগলি মারাচ্ছে আর পেচনে পেচনে কুটকচাল কচ্ছে। টিপিকাল টুলো পন্ডিতের মতন ছ্যাঁচ্চোড়।
  • দীপ | 42.110.136.53 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৫:০১521315
  • শুয়োরের প্রোডাক্ট এসে গেছে!
  • দীপ | 42.110.136.53 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৫:০৫521316
  • সপাটে লাথি কারা খেয়েছে সে তো বোঝাই যাচ্ছে! পোষা কুত্তার তাতেও শিক্ষা হয়না!
  • পোশ্নো | 2405:8100:8000:5ca1::111:91b2 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:১৬521317
  • মুই তো দেকে এনু দিব্যি খোলা প্রোফাইল আর পাব্লিক পোস্ট। তা আফনের বিচিতে দম থাগলে আর কিসু কওনের থাগলে হেইডা পোস্টেই কইলে পারেন। নেড়ি কুত্তার মত পলায়ে আইস্যা এইহানে চুগলি কাটেন কেন? বিচি কাটা গেসে? 
  • দীপ | 42.110.136.53 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:৩০521318
  • Again the shameless and nameless scoundrel has arrived to perform his duty very sincerely.
  • পোশ্নো | 2405:8100:8000:5ca1::112:be43 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:৩৫521319
  • হে হে। বিচির বেদনা ভুলতে পারেনি মালটা। বিচির কথা শুনেই দু:খে ইঞ্জিরি বলতে নেগেচে।
  • hihi | 2a0b:f4c2:1::1 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৬:৪০521320
  • চুগলিখোরের এম্পটি নাটকেসের  কান্না
  • Sumit Roy | ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৭:০৪521324
  • দীপ বাবু,
    আপনি যদি ভারতীয় দর্শনের আলোচনা বলতে যা নির্দেশ করছেন তা দিয়ে যদি উপরের অরিজিৎ মুখার্জির পোস্টটির স্ক্রিনশটের প্রসঙ্গের আলোচনা করে থাকেন, তাহলে বলব অন্তত উপনিবেশী ও একেশ্বরবাদের পার্টটিতে তিনি তেমন ভুল কিছু লেখেননি। আমি ভারতীয় দর্শন পড়েছি। শংকরের অদ্বৈত বেদান্তে বিষ্ণুর ধারণা বা প্রতীকী ঈশ্বরের ধারণা ছিলোনা ঠিকই, কিন্তু তিনি ভগবদ গীতাকে প্রামাণ্য (প্রস্থান) হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এরপর শঙ্করাচার্যকে অনুসরণ করে রামানুজ, মাধবাচার্য, নিম্বার্ক, বল্লভাচার্য, বলদেব, শ্রীকণ্ঠরা উপনিষদ-ব্রহ্মসূত্র-গীতা - এই তিন প্রস্থান নিয়ে নিজ নিজ ভাষ্য প্রদান করেন। এখানেই টার্নটা আসে নিম্বার্ক, বল্লভাচার্য, চৈতন্যের বেলায় থেকে যাদের দর্শন ছিল বেদান্ত-বৈষ্ণব দর্শন। মানে এভাবে ভারতীয় দর্শনে বিষ্ণু বা কৃষ্ণভিত্তিক ম্যাক্সমুলার-বর্ণিত ক্যাথেনোথিস্টিক বা ফ্রেডরিক ওয়েল্কার বর্ণিত হেনোথিস্টিক দর্শনের বিকাশ লাভ করছে। শুধু বৈষ্ণব না, শৈব ও শাক্তদের দর্শন চর্চাও ওরকমই হচ্ছে কোন দেবতা বা দেবীকে কেন্দ্র করেই ঈশ্বরের উপাসনা বা দর্শন চর্চা। এর মধ্যে কাশ্মীর শৈব-দর্শন, বীর শৈব-দর্শন এসব পাবেন। মানে ব্রিটিশরা আসার পূর্বে ইন্টেলেকচুয়াল লেভেলে এরকমই ছিল ভারতীয়দের ঈস্বরচিন্তা। শঙ্করাচার্য, রামানুজ প্রমুখ যে দেবদেবীর বাইরে এক নিরাকার ঈশ্বরকে নিয়ে চিন্তাচর্চা করেছেন সেরকম ব্যাপার হিন্দুধর্মে তেমন ছিলোনা। আর ধর্মাচারে তো প্রতীকী দেববাদ আছেই। কিন্তু প্রাচীন ভারতীয় দর্শনগুলোতেও কি দেবতাদের অভাব ছিল বা তা পুরোপুরি একেশ্বরবাদ ছিল? পূর্ব মীমাংসা দর্শনে দেখি দেবতাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হচ্ছেনা, বেদান্ত দর্শনে দেখি ঈশ্বর শুধু নির্গুণ নয়, সগুণও হতে পারেন, মানে আকার ধারণ করতে পারেন। সংখ্যতে দেবতা নেই, কিন্তু তাতে তো ঈশ্বরও নেই, তো একেশ্বরবাদী নয় নিরীশ্বরবাদী হচ্ছে, এদিকে যোগ দর্শনে পুরুষের সংখ্যা বহু। ন্যায়-বৈশেষিকে ঈশ্বর সেকেন্ডারি আলোচনা, তবে কেবল ঈশ্বরের অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তি দেখা যায় কেবল। যাই হোক...

    ঠিক এই জায়গায় আসবে ব্রিটিশরা আসবার পর রামমোহন রায়ের দ্বারা হিন্দুধর্মে নতুন একটি টার্ন। প্রথমত, বাংলায় পিওর বেদান্ত বা উপনিষদের চর্চা ছিলোনা, বাংলার ইন্টেলেকচুয়ালরা মূলত নব্যন্যায় দর্শনের চর্চা করতো। এজন্যই রামমোহনকে কাশীতে যেতে হয়। রামমোহনই প্রথম বাংলায় বেদান্তের অনুবাদ করে প্রচার করেন। এরপর তিনি আস্তে আস্তে হিন্দুধর্মকে একেশ্বরবাদী করার দিকে হাত দেন। কেন হাত দেন সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি। এটা করতে হলে প্রথমত তাকে তদকালীন ভারতের লৌকিক আচার-প্রথার বিরোধিতা করতে হবে যেখানে বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করা হয়, আর সেটা বিরোধিতার জাস্টিফিকেশন হিসেবে তিনি চলে যান হিন্দুধর্মের মূলে, মানে বেদে। উদ্দেশ্য হচ্ছে বেদই সঠিক, এরপর হিন্দুধর্মে যা যা এসেছে সবই আসল হিন্দুধর্ম থেকে বিচ্যুতি। বেদকে তিনি অভ্রান্ত, ঈশ্বর-প্রত্যাদিষ্ট ও প্রামাণ্য ঘোষণা করলেন। শাস্ত্র বিচারের জন্য কিছু পুরাণ ও তন্ত্রশাস্ত্রকে স্বীকার করতে বাধ্য হলেন, কিন্তু বললেন এগুলোর কোনোটাতে প্রাচীন ও প্রামাণ্য গ্রন্থের পরিচিত টীকা না থাকলে সেগুলোকে প্রমাণ ধরা যাবেনা, আর এগুলোর মর্যাদা বেদের সমান না। আর স্মৃতিগুলোর মধ্যে কেবল মনুস্মৃতিকে প্রামাণ্য বললেন কারণ মনু বেদের সংগ্রহকর্তা। এখন কথা হচ্ছে বেদেও তো দেবদেবীর কথা লেখা আছে, আছে কিন্তু বেদের শেষ অংশ বেদান্ত বা উপনিষদে নেই। তিনি বললেন বেদান্তের অথরিটি বেদের সমান, আর বেদান্ত বেদের জায়গা নিতে পারে। যাই হোক, এসবের মাধ্যমে তিনি প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগের হিন্দুধর্ম চর্চা ও দর্শন চর্চা থেকে এসে একেশ্বরবাদের দিকে ঝুঁকছেন।

    কিন্তু কেন এমন করছেন? তার চিঠিতে এর প্রকাশ পাওয়া যায়। সেখানে যিনি বলছেন অন্ততপক্ষে রাজনৈতিক সুবিধা লাভ ও সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্যের খাতিরে এই ধর্মসংস্কার প্রয়োজন। এছাড়া তিনি তার বেদান্ত গ্রন্থগুলো অনুবাদের পর সেগুলো ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছিলেন এবং এর মাধ্যমে তার সাথে ব্রিটিশ শাসকদের মধ্যে খাতিরও হয়েছিল। তাই এরকম উপসংহার টানা অযৌক্তিক নয় যে, হিন্দুধর্মকে ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা বা উপনিবেশিদের প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টধর্মের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে তিনি এই কাজটি করেন, বিশেষ করে যেখানে তার পূর্বে ভারতীয় দর্শনচর্চায় বা ইন্টেলেকচুয়াল চর্চায় একেশ্বরবাদ অনুপস্থিত ছিল, তিনি নিজে বলছেন রাজনৈতিক কারণে এটি দরকার, আর ব্রিটিশদেরকে তিনি বলছেন ভারতীয়দের পিতা, রক্ষক, পরিত্রাতা। এই তিনটি দিককে মেলালে এই উদ্দেশ্যটাই সামনে আসে। আরেকটি এংগেলও থাকতে পারে। খ্রিষ্টধর্ম ও ইসলাম ধর্ম দুটোই আব্রাহামিক, আর শুরুতে ব্রিটিশরা মুসলিমদের সাথেই ভাল সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিল হিন্দুদের বদলে। ব্রিটিশরা বাংলায় শাসনের শুরুতে মাদ্রাসায় স্থাপন করতে চেয়েছিল। এই অবস্থায় রামমোহন হিন্দুধর্মকে একেশ্বরবাদী প্রমাণ করে হিন্দুধর্মকে ব্রিটিশদের চোখে ইসলামের একটি প্রতিযোগী ধর্ম বা খ্রিষ্টধর্মের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ধর্ম হিসেবেও প্রমান করার চেষ্টা করতে পারেন।

    আজকের অ্যাংরি রাম কালচারের সাথে যদি হিন্দুধর্মের সেই একেশ্বরবাদী ঔপনিবেশিকীকরণের সাদৃশ্যের দিকে তাকানো যায় তাহলে সেটা রাজনৈতিক দিকটাই। উপনিবেশের রাজনৈতিক পরিস্তিতির সাথে খাপ খাওয়াবার জন্য রামমোহন একেশ্বরবাদের দিকে যান, আর বর্তমান ভারতে রামের কালচারটা হিন্দু ন্যাশনালিজমের সাথে সম্পর্কিত, আর এটাও রাজনৈতিক। জাতীয়তাবাদ একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ যা একটি নির্দিষ্ট জাতির স্বার্থ এবং সংস্কৃতির উপর জোর দেয়, প্রায়শই তার মাতৃভূমির উপর জাতির সার্বভৌমত্ব অর্জন এবং বজায় রাখার লক্ষ্যে এটি কাজ করে। এর মধ্যে প্রায়শই এর জনগণের মধ্যে একটি অভিন্ন জাতীয় পরিচয় তৈরি করার ব্যাপারতা জড়িত। আর সেই জাতীয়তাবাদ যদি ধর্মীয় হয় তবে তা ধর্মীয় বৈচিত্র্যকে মিটিয়ে ধর্মীয় একীকরণ করতে চাইবে। যদি জাতিতে অনেক দেবতার পূজা হয়, তবে একটি দেবতাকেই সামনে চাইবে। জাতীয়তাবাদ একেশ্বরবাদের দিকে ধর্মগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে, আর এর একটি উপায় হতে পারে স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন এবং একীকরণ। একটি সমন্বিত জাতীয় পরিচয় তৈরির প্রয়াসে, ধর্মীয় বহুত্বকে নেগলেক্ট করা হতে পারে, যার ফলে একটি একক প্রভাবশালী ধর্মের প্রচার বা ধর্মের ব্যাখ্যাকে প্রচার করা হতে পারে যা জাতির আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারতে ইন্ডিয়ান জাতিসত্তার রোমান্টিক রূপ হিসেবে "রামরাজত্বের" একটি কনসেপ্ট জনপ্রিয়, আর সেখানেই আসছে রামের প্রসঙ্গ। এছাড়া একেশ্বরবাদী ধর্মগুলির প্রায়শই একটি অন্তর্নিহিত কাঠামো এবং শ্রেণিবিন্যাস থাকে যা একটি জাতি-রাষ্ট্রের কাঠামোকে প্রতিফলিত করতে পারে, যা তাদের জাতীয়তাবাদের ধারণার সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলে। একেশ্বরবাদী ধর্মগুলির প্রায়শই একটি একক, কেন্দ্রীভূত ধর্মীয় কর্তৃত্ব থাকে যা ধর্মীয় আইনকে ব্যাখ্যা করে, যেমন একটি জাতি-রাষ্ট্রের একটি কেন্দ্রীভূত সরকার রয়েছে। তো সব মিলে ভারতে রামভিত্তিক 'একেশ্বরবাদ' ও একীকরণ জাতীয়তাবাদের সাথে ভালোই সম্পর্কিত।

    জাতি গঠনের প্রক্রিয়ায়, নেতারা প্রায়শই একটি অভিন্ন পরিচয়ের অধীনে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে একত্রিত করার চেষ্টা করেন। এটি অর্জনের একটি পদ্ধতি একটি সাধারণ ধর্মের প্রচারের মাধ্যমে হতে পারে। যদি একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম প্রভাবশালী বা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক হয় তবে এটি এই জাতীয় পরিচয়ের অংশ হিসাবে প্রচার করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফরাসি বিপ্লবের সময় এবং পরে ফ্রান্সের ঘটনা ধরুন। বিপ্লবীরা সেই সময় ফ্রান্সের প্রভাবশালী ধর্ম ক্যাথলিক ধর্মকে একটি নাগরিক ধর্ম দিয়ে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল যা জাতি এবং তার আদর্শকে মহিমান্বিত করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল এই অভিন্ন নীতিগুলির চারপাশে জাতিকে একত্রিত করা। যাইহোক, ফ্রান্সে ক্যাথলিক ধর্মের দীর্ঘস্থায়ী সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক প্রভাবের কারণে এই প্রচেষ্টাটি পুরোপুরি সফল হয়নি। সৌদি আরবের জাতি-রাষ্ট্র একটি ভিন্ন উদাহরণ প্রদান করে। দেশটির জাতীয় পরিচয় সুন্নি ইসলামের একটি কঠোর রূপ ওয়াহাবি ইসলামের সাথে ব্যাপকভাবে জড়িত। সৌদি রাষ্ট্র তার বৈধতা এবং কর্তৃত্বকে শক্তিশালী করার উপায় হিসাবে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে ইসলামের এই রূপটি প্রচার করে। মানে বুঝতেই পারছেন, অন্যান্য ধর্মের মতো হিন্দুধর্মকেও রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য করেই রূপ দেয়া হচ্ছে। ঔপনিবেশিক সময়ে বেদান্তভিত্তিক একেশ্বরবাদ, আর এখন রামভিত্তিক একেশ্বরবাদের টেন্ডেন্সি রয়েছে।
  • দীপ | 2402:3a80:1960:232d:178:5634:1232:5476 | ০৫ আগস্ট ২০২৩ ১৫:০৩522123
  • ওদিকে মাতব্বর আব্বাসে প্রলেতারিয়েত নেতাকে দেখছে! 
     
  • দীপ | 2402:3a80:1960:232d:178:5634:1232:5476 | ০৫ আগস্ট ২০২৩ ১৫:০৪522124
  • পাক্কা অনাদ্যন্ত শুয়োরের বাচ্চা!
  • দীপ | 42.110.144.72 | ০৭ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৫৬522243
  • একটি আস্ত জাম্বুবান!
  • দীপ | 42.110.136.50 | ১৩ আগস্ট ২০২৩ ১২:৩৯522381
  • এখানেও অবশ্য কিছু মাতব্বর হিজাবকে অধিকার হিসেবে দেখাতে চায়!
  • দীপ | 42.110.137.81 | ১৭ আগস্ট ২০২৩ ১৭:৪০522568
  • বঙ্কিমের লেখায় হিন্দুত্ববাদ, দেবের সিনেমায় হিন্দুত্ববাদ! 
    মগজ বটে! সব জায়গা থেকে খুঁজে খুঁজে হিন্দুত্ববাদ বের করছে! কেউ পার পাবে না!
  • দীপ | 42.110.137.96 | ১৭ আগস্ট ২০২৩ ২৩:৩৪522574
  • জনৈক শূকরশাবক এখানে একটি প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে উৎসাহিত করছে। 
    এনিয়ে একটু প্রতিবাদ হবে নাকি, বিপ্লবী মহোদয়?
    নাকি ব্লগারদের পরিণতি দেখে গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরোবে না?
  • দীপ | 2402:3a80:196c:435e:778:5634:1232:5476 | ২৯ আগস্ট ২০২৩ ১৪:৫৯523057
  • ফ্রান্স স্কুলে আবায়া( মাথা ভাটার ওড়না) নিষিদ্ধ করলো। 
    আর পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীরা আব্বাসে প্রলেতারিয়েত নেতৃত্ব খুঁজে পাবেন; আর হিজাব, বোরখায় অধিকার! 
    আর অন্যদিক দিয়ে বিজেপি উঠে আসবে!
    অসামান্য বিপ্লবের অসামান্য ফলাফল!
  • দীপ | 2402:3a80:196c:435e:778:5634:1232:5476 | ২৯ আগস্ট ২০২৩ ১৫:০৩523058
  • সরি মাথা ঢাকার ওড়না
  • দীপ | 42.110.138.110 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৪২523186
  • শূকরশাবকেরা স্বীয় কর্তব্যে অবিচল!
    এই শুয়োরের বাচ্চারাই রামমোহন, বিদ্যাসাগরে হিন্দুত্ববাদ খুঁজে পায়!
  • দীপ | 42.110.146.55 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৬523188
  • মধুসূদন, বঙ্কিম, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, অবনীন্দ্রনাথ, যদুনাথ সরকার; কাউকে ছাড়েনি! 
    সবার শ্রাদ্ধ করে ছেড়েছে!
  • দীপ | 2402:3a80:1968:fec:578:5634:1232:5476 | ২২ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৪৪524994
  • বিকাশ পাঁঠা স্বীয় কর্তব্যে অবিচল!
    নির্ঘাৎ এই প্রাণীটি তৃণমূল-বিজেপির কাছ টাকা খেয়েছে অথবা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে!
    দায়িত্ব নিয়ে নিজের পার্টিকে খাটিয়ায় তুলছে!
  • দীপ | 42.110.139.130 | ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৮526039
  • দীপ | 42.110.139.130 | ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৯526040
  • গাধা আর গরুর মগজ মিশলে এরকম প্রোডাক্ট তৈরি হয়!
  • দীপ | 42.110.146.210 | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:৪৭526681
  • পশ্চিমবঙ্গের মহাবিপ্লবীরা তালিবান ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে বস্তা বস্তা প্রবন্ধ নামাতে পারেন, কিন্তু এইসময় গলা বন্ধ হয়ে যায়! 
    সাধে কি বিজেপি উঠে আসে!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন