এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ওস্তাদি 

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৮ মার্চ ২০২২ | ৭৮১ বার পঠিত | রেটিং ৩.৫ (২ জন)
  • মসলন্দপুর থেকে ট্রেনে উঠল রামশঙ্কর। দুপুর দেড়টা বাজে। ডাউন ট্রেনে এই সময়ে ভিড় ভাট্টা বিশেষ থাকে না । রামশঙ্কর জানলার ধারেই জায়গা পেয়ে গেল। ট্রেন ছাড়ার পর একটা বিড়ি ধরাল। তার পাশের জায়গাটাও খালি আছে।কেউ এসে বসার আগেই বিড়িটা টেনে ফেলে দিতে হবে। ট্রেনে এখন বিড়ি ফোঁকা বারণ। ধরলে কেস খেতে হবে নিশ্চিত। কামরায় অবশ্য ধরার কেউ নেই। অনেক প্যাসেঞ্জারও অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে কামরায় বসে ধোঁয়া ছাড়লে।  জানলা দিয়ে বাইরে ধোঁয়া ছাড়তে লাগল রামশঙ্কর। 
    ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। রামশঙ্কর  শেষ টান মেরে বিড়িটা ফেলে দিল। জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল। রোজই দেখে এইসব গাছপালা মাঠঘাট পুকুর, তবু বেশ লাগে চলন্ত গাড়ির জানলার ধারে বসে বসে দেখতে।
    দুপুরের গনগনে রোদে ঝলসাচ্ছে বাড়িঘর, দোকানপাট।
    কামরা বেশ ফাঁকা । দুচারটে হকার ইতিউতি ঘোরাঘুরি করছে । একজন বাদামওয়ালা গেটের ধারে বসে ঘুমে ঢুলছে। দত্তপুকুর থেকে চার পাঁচজন উঠল । একজন রোগামতো লোক রামশঙ্করের পাশে এসে বসল কারন উল্টোদিকে জানলার ধারে একজন বসে আছে। উঠে বলল, ‘ দাদা এটা কি গ্যালপিং ? বামনগাছি ধরবে ? ‘  রামশঙ্করের মনে হল প্রশ্নটা তার উদ্দেশ্যেই।সে লোকটার দিকে না তাকিয়েই উত্তর দিল , ‘ না: .... সব স্টেশনই ধরবে।’ বলে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল। মিনিট দুই পরে লোকটা আবার বলল, ‘ চোত মাস পড়তে না পড়তে খুব গরম পড়ে গেল।’ 
    — ‘ হুঁ .... সে..ই ‘ , বলে রামশঙ্কর  মুখ ঘুরিয়ে লোকটার মুখের দিকে তাকাল। ফর্সা, রোগা লোকটার গাল দুটো বসা। কোলের ওপর দুহাত জড়ো করে বসে আছে। রামশঙ্করের সঙ্গে চোখাচোখি হতে অমায়িকভাবে হাসল। চোখ দুটো গ্রাম্য সারল্যে ভরা। রামশঙ্করের বুকে কেমন যেন দোলা লাগল। যেন অবিকল তার গুরু কামারুল মোল্লার চোখ মুখ, হাসি। কামারুল তাকে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছিল। তার বনগাঁয় বাড়ি। কিন্তু কাজের জায়গা শিয়ালদা থেকে ধর্মতলা। বিশেষ করে অফিস টাইমে। জীবনে কখনও ধরা পড়েনি। এ লাইনে সত্যিকারের শিল্পী। রামশঙ্কর প্রতিজ্ঞা করেছে তাকেও কেউ কোনদিন ছুঁতে পারবে না। মৌলালি থেকে আলিপুর চিডিয়াখানা আপাতত: তার চক্কর কাটার জায়গা । তার প্যান্টের পকেটে একটা মোবাইল আছে। সাদামাটা। হাজার তিনেক টাকা দাম হবে। আর এক পকেটে একটা চামড়ার মানিব্যাগ আছে। তাকে শ চারেক টাকা আছে। সারাদিনে খাওয়াদাওয়ার কিছু টাকা লাগে।
    সে যাই হোক তার গুরু কামারুল মোল্লার সঙ্গে আকারে প্রকারে মিল পেয়ে লোকটার সঙ্গে আলাপ করার প্রবল বাসনা হল। লোকটার কর্মক্ষেত্র নিশ্চয়ই সম্পূর্ণ আলাদা । সে হোক। বনগাঁ লাইনেরই তো প্যাসেঞ্জার।
    সে লোকটার দিকে তাকিয়ে সবিনয়ে হেসে বলল, ‘ দাদা কি দত্তপুকুরেই থাকেন ? ‘
    — ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ .... ওই একটু ইন্টেরিয়রে ....’
    — ‘ রোজ কলকাতায় যান ? ‘
    — ‘ হ্যাঁ তা ... মোটামুটি রোজই বলতে পারেন । কাজটা কলকাতাতেই কিনা । অবশ্য অফিস টাইমের ট্রেনেও হয়।’ বলে রামশঙ্করের দিকে হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে রইল। হাত দুটো কোলের ওপর জড়ো করা। 
    রামশঙ্করের বুকটা অকারণেই ছ্যাঁত করে উঠল।ব্যাটা খোঁচড়ের ইনফর্মার নয় তো। হঠাৎ এসে তার পাশেই বা বসল কেন । হকার বলে তো মনে হচ্ছে না। এই লাইনের সব হকারকে চেনে সে। 
     রামশঙ্কর আবার বলে, ‘ ও আচ্ছা..... কলকাতায় .... মানে ...কোন বিজনেস টি ...জ নেস ? ‘
    — ‘ না ... বিজনেস ঠিক না .... ওই হাতের কাজ বলতে পারেন । আমার গুরু খুব যত্ন করে শিখিয়েছিল । সেটা দিয়েই করে খাচ্ছি । বলব সব বলব। সবে তো আলাপ হল.... আরও দুচারটে স্টেশন যাক ।ঠিক বুঝতে পারবেন। তা আপনি কোন লাইনে আছেন ? ডেলি প্যাসেঞ্জার বোধহয় .... ‘
    রামশঙ্কর একটু সময় নিল। বেশ প্যাঁচাল পাব্লিক মনে হচ্ছে।তারপর বলল, ‘ ঠিক কিরকম হাতের কাজ ঠিক বুঝলাম না। যাক ওসব কথা । আপনার নামটা জানা হল না .... ‘
    — ‘ আজ্ঞে .... নৃপেন তরফদার।সবাই বলে নেপেন ।’
    — ‘ ও আচ্ছা.... ‘ বলে রামশঙ্কর 
    মুখ ঘুরিয়ে আবার জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল।মুখ ঘোরাবার আগে সে উঁকি মেরে দেখল লোকটার বুক পকেটে একটা ছোট ডায়েরি গোছের নোটবুক আর কিছু খুচরো টাকা সমেত কয়েকটা একশ টাকার নোট রয়েছে।

    রামশঙ্কর বিয়ে থা করেনি। বাবা মারা গেছে যখন রামশঙ্কর হামাগুড়ি দিচ্ছে। মা মারা গেল এই বছর দুই আগে। দুই ভাই, এক বোন যে যার মতো আলাদা আলাদা। রান্নাঘরের পেছনদিকে একটা খুপরি মতো আছে। সেখানে রাতে শোয় সে।তাকে ভাত বেড়ে খেতে দেবার কেউ নেই এ দুনিয়ায় । কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাথের বেঞ্চি পাতা ভাতের হোটেলে খাওয়া দাওয়া সারে সে। একটা পিওন আর্দালির চাকরি খুঁজে খুঁজে হয়রাণ হয়েছে সে কলকাতাময় বড় বড় বিল্ডিংয়ের অজস্র ছোট ছোট অফিসে। ঘুরে ঘুরে হয়রাণ হয়ে লিন্ডসে স্ট্রীটের হগ মার্কেটের বাইরে বেদীটায় আরও পাঁচজনের মতো বসে একটা বিড়ি ধরিয়েছে, এমন সময়ে পাশের লোকটা বলল, ‘ একটু আগুনটা দিন না ভাইজান....’। তারপর কথায় কথায় আলাপ হয়ে গেল নারকেল ডাঙা নিবাসী কামারুল মোল্লার সঙ্গে। সেও নাকি একটা কাজের খোঁজে চক্কর মারছে এ তল্লাট থেকে সে তল্লাট। 
    —- ‘ তবে কি জানেন ভাইজান চুস্ত হাতের কাজ জানলে ভাতের অভাব হয় না। তবে একটু ঝক্কির কাজ কিনা তাই ..... আমি টেরেনিংও দিয়ে থাকি। একশর ওপর শিষ্য আছে আমার এই রাজারহাট থেকে কসবা পর্যন্ত।’
    কামারুল পা দোলাতে দোলাতে বলে।
    — ‘ কিরকম কিরকম ? যদি একটু বলেন সাহেব .... ‘ রামশঙ্কর প্রবল উৎসাহে হামলে পড়ে।
    — ‘ না ওই ছোটখাটো কাজ আর কি .... মন দিয়ে প্র্যাকটিস করলে তেমন কঠিন কিছু না । শুধু মাথা, চোখ আর হাত তিনটে বেশ এক জায়গায় এনে ফেলতে হবে।’
    — ‘ আজ্ঞে .... ঠি..ক বুঝতে পারলাম না ব্যাপারটা ।’
    —- ‘ ও .. হ্যাঁ তাও তো বটে । খুলে না বললে বুঝবেনই বা কি করে ! আচ্ছা বোঝাচ্ছি বোঝাচ্ছি .... কখন থেকে বিড়িটা
    ঠোঁটে গুঁজে বসে আছি .... শলাইটা একটু দিন না।’ কামারুল হাত পাতে।
    — ‘ ও হ্যাঁ .... দিচ্ছি দিচ্ছি ... ‘ রামশঙ্কর বুকপকেটে হাত দেয় — নেই। তারপর প্যান্টের দু পকেটে  হাত ঢোকায়। তার ভুরু কুঁচকে  ওঠে। ‘ ..... আরে শালা গেল কোথায় ! পকেটেই তো ছিল .... ‘ রামশঙ্কর বিব্রত বোধ করতে থাকে সময়োচিত অতিথি সেবা করতে না পারায়।
    —- ‘ পাচ্ছেন না... না ? ‘
    — ‘ না: ... এ..ই বুক পকেটেই তো ছিল । পড়ে গেল ... নাকি ? ‘
    রামশঙ্কর ঘাড় নীচু করে পায়ের কাছে এদিক ওদিক চোখ বোলাতে থাকে ।
    — ‘ বুক পকেটেই ছিল ... না ? ‘
    — ‘ হ্যাঁ তাই তো মনে হচ্ছে । কোথাও পড়ে গেছে বোধহয়।কি মুশ্কিল .... ‘
    — ‘ না না একেবারেই কোথাও পড়েনি , বরং অামার হাতে এসে পড়েছে অাপনার বুকপকেট থেকে। এই যে .... এটাই তো ? ‘
    রামশঙ্কর বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। 
    কামারুল আবার বলল, ‘ প্রায় পনের বছরের সাধনা। মাথা হাত আর চোখ এক করে ফেলতে  হয় .... বুঝলে কিনা ? ‘
    নারকেলডাঙায় গিয়ে কামারুলের কাছে নাড়া বাঁধল রামশঙ্কর।
    কামারুল মাঝে মাঝেই বলত, ‘ যন্তরপাতি ইস্তেমাল করা আমি একদম পসন্দো করি না। যারা ছুরি ব্লেড ব্যাভার করতি চায় আমি তাদের মোটে কাছে ঘেঁসতে দিই না।ওরে হাতের কাজ বলে না। আসল কারিগরি খেলে শুধু হাতের পাঁচ আঙুলে। ওস্তাদ হওয়া অত্ত সোজা না। সাধনা করতি       লাগে। ওস্তাদের জন্ম হয়েছিল সুন্দরবনের ওদিকে গোসাবায়। তারপর নানা ঘাটে ভাসতে ভাসতে এখন নারকেলডাঙায় শিকড় গেড়েছে ।
    এই পাশে বসা লোকটার সঙ্গে চেহারা হাবভাবে অনেক মিল।এখনও সেই কোলের কাছে হাত জড়ো করে বসে আছে। লোকটা কি ধরণের হস্তশিল্পের কারিগর 
    ঠিক পোস্কার হল না রামশঙ্করের কাছে। 
    রামশঙ্করের দিকের সিটটা পুরো ভরে গেল। এখন গায়ে গা লাগিয়ে বসতে হচ্ছে মোটামুটি। ওদিকের লোকের চাপে পাশের লোকটা অারও কাছ ঘেঁসে এল।শিয়ালদার প্যাসেঞ্জার সব। ওখানে গাড়ি পৌঁছলেই হুড় হুড় করে বস্তাবন্দী ইঁদুরের মতো ছড়িয়ে যাবে স্টেশনের চত্বরময়। তারপর যে যার কাজে ছুট লাগাবে এদিকে ওদিকে। 
    ট্রেন দমদমে পৌঁছলে ট্রেন প্রায় খালি হয়ে গেল। রামশঙ্করদের সিট এখনও ভর্তি। ওই লোকটার তার গা ঘেঁসে বসে আছে। গায়ে কেমন গুটকা তামাকের গন্ধ। রামশঙ্কর উসখুস করতে লাগল। তার কারিগরি সত্ত্বা ভিতর থেকে ঠেলা মারতে লাগল। লোকটার বুক পকেটে ক্ষুদে বইয়ে চাপা একশ টাকার নোটগুলো লেপটে শুয়ে আছে।
    ওই পাশে বসা কামারুলের মতো দেখতে লোকটা নৃপেন না কি নাম, বোধহয় আলাপটা আর একটু বাড়াতে চাইল। বলল, ‘ আপনার নামটা জানা হল না। কখন কার উপকার লাগে বলা যায় না। যত লোকের সঙ্গে পরচয় থাকে ততই ভাল ..... ‘
    শালা খোঁচড়ের লোক কিনা কে জানে । যার মনে আছে যা, ফাল দিয়ে ওঠে তা ..... । সে যাই হোক, দরকার কি অত সস্তা পীরিতের । রামশঙ্কর নিজের নামটা ঢেকে রাখল। মুখটা হাসি হাসি করে বলল, ‘ আমার নাম .... ওই ..... মৃত্যুঞ্জয় ..... মানে, মৃত্যুঞ্জয় কাবাসি ।’
    — ‘ তা ভাল । তা... আবার কখনও দেখা হয়ে যাবে নিশ্চই। এই লাইনেই তো যাতায়াত। ‘ নৃপেন তরফদার মিশুকে ভঙ্গীতে বলে।’
    — ‘ হ্যাঁ নিশ্চই ... নিশ্চই ।‘  মুখে বলে রামশঙ্কর। মনে মনে ভাবে, আর কোনদিন দেখা না হলেই মঙ্গল। তোমারও মঙ্গল, আমারও মঙ্গল।
    গাড়ি শিয়ালদায় ঢুকছে। সবাই গেটের কাছে গিয়ে ঝাঁক বাঁধছে।
    নৃপেন ও রামশঙ্কর সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। গাড়ি হেলেদুলে অলস গতিতে প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে। নৃপেন তরফদার বলল, ‘ আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে খুব ভাল লাগল। যদি দত্তপুকুরে কখনও এসে পড়েন চলে আসবেন .... ষষ্ঠিতলায় অগ্রদূত কেলাবের পাশে আমার বাড়ি। এলে খুব আনন্দ পাব। ‘
    — ‘ হ্যাঁ অবশ্যই। আর আপনি যদি কখনও মসলন্দপুরে নামেন, বকুলতলা পোস্ট অফিসের পেছনে..... ওখানে আমার নাম বললেই হবে ..... ।’
    লোকটা মুচকি হেসে বলল, ‘ হ্যাঁ হ্যাঁ ..... বুঝতে পেরেছি। আর বলতে হবে না। নিশ্চই যাব।’
    রামশঙ্কর মনে মনে একটু থতমত খেয়ে গেল । ভাবল, ব্যাটা ওরম মুচকি হাসল কেন । তার  নাম ঠিকানা দুইই যে জাল সেটা কি ধরে ফেলল নাকি। সে মরুকগে..... এখন ঠিকমত সামলেসুমলে নেমে যেতে হবে। 
       গাড়ির চাকা পুরোপুরি স্থির হওয়ার আগেই গেটে দাঁড়ানো লোকগুলো টপাটপ খসে যেতে লাগল প্ল্যাটফর্মে। রামশঙ্করও নৃপেন তরফদারের কাঁধে কাঁধ ঘসে নেমে গেল ট্রেন থেকে। তারপর ভিড়ের স্রোতে ভেসে নিমেষে হারিয়ে গেল স্টেশন চত্বর থেকে।
    পা চালিয়ে হেঁটে একেবারে নীলরতন সরকার হাসপাতালের গেটের সামনে এসে থামল। হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে একটা অতি পরিচিত ফাঁকা জায়গায় চলে গেল । প্যান্টের ডান পকেটে হাত ঢোকাল রামশঙ্কর । বার করে আনল নেপেনের বুকপকেটের ছোট্ট নোটবুক এবং শ চারেক টাকা, একশর নোট এবং কিছু খুচরো সমেত। কামারুল মিঞার চ্যালা সে। একেবারে নিঁখুত পাঁচ আঙুলের কাজ। কোন যন্ত্রপাতির কারবার নেই।
    পুঁচকে খাতাটা ফালতু। এটা পরে খালের জলে ফেলে দিতে হবে, রামশঙ্কর ভাবল। ওতে তল্লাশি চালানো তার নীতিবিরুদ্ধ কাজ। গুরুর বারণ আছে। প্যান্টের ডান পকেটে  হাত ঢোকাল ওগুলো রাখার জন্য, বাঁ   হাতে নৃপেনের মালগুলো পাকড়ে । তার শ চারেক টাকা সুদ্ধু মানি ব্যাগটাও এই পকেটেই আছে। হাতে কিছু ঠেকল না। বুকটা ছ্যাঁত করে উঠল।প্যান্টের কাপড় উল্টে বাইরে নিয়ে এল। ফাঁকা। বাঁ পকেটেও একই ভাবে খোঁজ চালাল। এটাও শূন্য। 
    রামশঙ্কর ফ্যালফ্যাল করে সামনে এ জে সি রোডের দিকে তাকিয়ে রইল। অজস্র মানুষের ব্যস্ত হাঁটাহাঁটি সেখানে।
    সে বেশ বিমূঢ় এবং হতাশ হয়ে গেল। না, মানিব্যাগের শোকে নয়। তার মনে আক্ষেপ হল, এমন ওস্তাদের সঙ্গে আর এট্টু বেশি করে আলাপ হল না এবং এটাও আগাপাস্তলা বুঝে গেল, মসলন্দপুরে বকুলতলা পোস্ট অফিসের মতো দত্তপুকুরের ষষ্ঠিতলায় অগ্রদূত ক্লাবও বিলকুল ধোঁকা ।নৃপেন তরফদার নামটাও নিশ্চয়ই তাই। স্রেফ  পাঁচ আঙুলের ওস্তাদির মতো ।কোলের ওপর হাত জড়ো করে বসে বসেই..... !  ভাবা যায় না ।
    ..................................................................
     
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন