এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  স্মৃতিচারণ

  • নারীত্বের উদ্‌যাপন - ডঃ মঞ্জু রায়

    রূপালী গঙ্গোপাধ্যায়
    স্মৃতিচারণ | ০৮ মার্চ ২০২৪ | ৯০৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • ছবি - র২হ


    ৮ই মার্চের ক’দিন আগে থেকেই খবরের কাগজের পাতায় সর্বজয়া নারীদের কথায় পড়ি। আর সেই সঙ্গে মনের গভীরে একটা সংশয়ও দানা বাঁধে, যে নারীদিবস কি তাহলে নারীকে দশভুজা হয়ে ওঠারই বিধান দিচ্ছে! সে যাই হোক, জীবনে আমরা কিন্তু কিছু নারীকে দেখতে পাই যাঁদের জীবনের কাছে এসে এইসব গড়পড়তা কথাকে থমকে যেতে হয়। এমন একজন ছিলেন, বিজ্ঞানী প্রফেসর মঞ্জু রায়, আমাদের মঞ্জু-দি, প্রয়াত হয়েছেন ২০২১ সালের জুলাই মাসে। আমার সৌভাগ্য আমি তাঁকে কাছ থেকে দেখেছি, তাঁর কথা তাঁর মুখ থেকে শুনেছি আর দুঃখ এটাই যে তাঁর কথা তাঁর জীবদ্দশায় সেভাবে লিখে উঠতে পারিনি।

    স্বাধীনতার বছরেই (১৯৪৭) জন্মেছিলেন ত্রিপুরায়, পিসীর বাড়িতে। তবে নিজের বাড়ি বাংলাদেশের ময়মনসিং জেলার ‘ছরছতী’ গ্রামে। ১২ ভাইবোনের সবচেয়ে বড় দিদি। ছোটবেলা কেটেছে পরিবারের সঙ্গে লড়াই করে, পড়াশোনা / পরীক্ষা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে, বিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে। লুকিয়ে ইস্কুলে গেছেন, মুসলিম কন্যা সেজে বোরখা পরে পরীক্ষা দিয়েছেন, পাত্রপক্ষকে ঢিল ছুঁড়ে তাড়িয়েছেন, সবই গল্পের মত। অবশেষে কলকাতায় পিসীমার বাড়িতে এসে কলেজে ভর্তি হলেন। ডাক্তারী পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, অর্থাভাবে পড়া হয়নি। স্নাতক স্তরে ভর্তি হলেন শারীরবিদ্যায়, খরচ চালাতে দুধের ডিপোয় এমনকি পরিচারিকা হিসেবেও কাজ করেছেন। এসব কথা কোনোদিন গোপন করেননি, নিজেই বলেছেন বিভিন্ন কথাবার্তায়; আবার তেমন বিস্তারিতও বলেননি, কোনো গর্ব বা লজ্জা কিছুই ছিল না, এতটাই সহজভাবে নিয়েছিলেন।

    কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর স্তরে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে মঞ্জু রায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগে গবেষণায় যোগ দিলেন প্রফেসর অমরনাথ ভাদুড়ির কাছে। তারপর গবেষণাই করেছেন সারাজীবন। গবেষণার বিষয় ছিল ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার। ডঃ মঞ্জু রায় এবং তাঁর স্বামী ডঃ শুভঙ্কর রায় একসঙ্গে কাজ করে কর্কট রোগ বা ক্যান্সারের চিকিৎসায় মিথাইল গ্লাইওক্সাল নামক যৌগটির কার্যকারিতা প্রমাণ করেছিলেন এবং ক্যান্সারের ওষুধ হিসেবে এই যৌগটিকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কাজ করেছেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দি কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স (IACS, যেখানে সি ভি রমনও কাজ করেছেন) এবং বসু বিজ্ঞান মন্দিরে; শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার এবং সম্মানও পেয়েছেন সারাজীবনে। ৩০০-র বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং ৩০ এর বেশি গবেষককে পি এইচ ডি পেতে গাইড করেছেন। কিন্তু আসল কথা হল, জীবদ্দশায় তাঁর ওষুধ সারা ভারতের কয়েকশো ক্যান্সার রোগীকে সারিয়ে তুলেছে, এই মূহুর্তেও (তাঁর মৃত্যুর একবছর পরেও!) অনেকেই তাঁর ওষুধের ওপর নির্ভর করে বছরের পর বছর মোটামুটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন অনেকেই, যাঁদের বেঁচে থাকার মেয়াদ ছিল কয়েকমাস মাত্র। বহুবছর আগে একটি বেসরকারী ওষুধ কোম্পানি এই আবিস্কারটি কিনে নিতে চেয়েছিল, উনি রাজী হননি। পুরস্কার নয়, অর্থ তো নয়ই, নিজের আবিষ্কারকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই ছিল ওঁর স্বপ্ন। কিন্তু এখনও সেই স্বপ্ন পূর্ণতা পায়নি, আটকে আছে নানা নিয়মের বেড়াজালে।

    এহেন বিজ্ঞানী তাঁর কর্মজীবনে নিজের কর্মস্থলেই চূড়ান্ত বিরোধিতা ও শত্রুতার শিকার হয়েছেন। ক্যান্সারের মোকাবিলায় তাঁর কাজকে বার বার ‘কাকতালীয়’, ‘ভুল’ এমনকি ‘মিথ্যা’ বলে প্রচার করা হয়েছে। পেশাদার চিকিৎসক না হয়েও চিকিৎসা করেছেন বলে (সেই চিকিৎসায় রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও!) তাঁর বিরুদ্ধে এমনকি আইনি ব্যবস্থাও নিতে চেষ্টা করা হয়েছে। বলা বাহুল্য, এইসব কাদা ওঁর গায়ে লেগে আপনিই ঝরে পড়েছে। কর্মজীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এই শত্রুতার কারণে মঞ্জুদিকে IACS-এ ওঁর সারাজীবনের গবেষণাগার ছেড়ে দিতে হয়েছে। পরোয়া করেননি, কলকাতার অপর প্রান্তে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে নতুন গবেষণাগার তৈরি করে কাজ চালিয়ে গেছেন জীবনের শেষ দিন অবধি।

    তবে এহ বাহ্য। আন্তর্জাতিক স্তরের বিজ্ঞানী হয়েও ডঃ মঞ্জু রায় সারাজীবন রয়ে গেছিলেন আদ্যন্ত একজন নারী, একজন সংসারী মানুষ, একজন প্রগতিশীল সমাজসেবী সংবেদনশীল ডানপিটে মহিলা, যে কারণে তাঁর কথা বার বার মনে করা। তাঁর স্বামী ডঃ শুভঙ্কর রায় সারাজীবন গবেষণা করেছেন কিন্তু চাকরি করেননি স্বেচ্ছায়। অর্থাৎ সংসার চালাবার উপার্জন মঞ্জুদি একাই করেছেন কিন্তু তাই নিয়ে তাঁদের দুজনের কারুরই কোনো দ্বিধা বা সঙ্কোচ ছিল না। কাজের প্রয়োজনে সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন, যখন বাড়িতে থেকেছেন, দাপটে সংসার করেছেন। ওঁর কন্যা দিয়া-র কথায় বাড়িতে জমায়েত হলে ৬০-৭০ জনের রান্না মা একাই করবেন এটাই ছিল স্বাভাবিক। দুই সন্তানকে নিজে পড়িয়েছেন, সেলাই করে শাড়ি থেকে চাদর-পর্দা-পাপোশ হাতের কাজে ভরিয়েছেন, ছাদ জুড়ে বাগান করেছেন, দরকারে নৌকো চালিয়েছেন, সংসারের খুটিনাটি নজর রেখেছেন, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছেন প্রায় সকলের জন্য। জীবনে কিছুর জন্য কিছু বাদ রাখেননি, সাফল্যের জন্য তাঁকে পুরুষ হয়ে উঠতে হয়নি, নারীত্ব তাঁর কাছে ছিল একটা উদ্‌যাপন এবং নারীসুলভ কোমলতা ছিল তাঁর অহঙ্কার। আত্মীয়-প্রতিবেশি কেউ অসুবিধেয় পড়লে যাকে প্রথমে ফোন করেছেন, তিনি মঞ্জুদি। তাঁর আত্মীয়-স্বজন এমনকি পাড়া-প্রতিবেশি যাঁরা গ্রামের দিকে এমনকি বাংলাদেশেও থাকেন মঞ্জুদির কলকাতার বাড়ি ছিল তাঁদের নানারকম কাজের জন্য (মূলত চিকিৎসা) এসে থাকার জায়গা। তাঁর বাড়িতে কিছু ঘর তোলাই হয়েছিল এই রকম মানুষদের জন্য। যাদের সঙ্গে ওঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাঁরা দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে ওঁকে ফোন করে প্রায়ই শুনেছেন যে উনি থানায় বা হাসপাতালে বসে আছেন।

    ভরসন্ধেবেলা ব্যস্ত এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে এক যুবক মার খাচ্ছে দেখে যিনি ঝাঁপিয়ে পড়ে তার শরীরের ওপর শুয়ে পড়ে তাকে বাঁচাতে পারেন তিনি ডঃ মঞ্জু রায়, সাফল্য, ব্যর্থতা, শত্রুতা কিছুই যাঁকে সেভাবে টলাতে পারেনি। তাই কর্মরতা মহিলারা সংসারের কাজ করেন না বা প্রতিষ্ঠিত নারী উপার্জনহীন পুরুষকে বিয়ে করেন না, মেয়েদের বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ একটি জীবনেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন ডঃ মঞ্জু রায়। নিজেই নিজেকে দশভূজা বানিয়েছিলেন না দশভূজা হয়েই জন্মেছিলেন, সে কথাও আমাদের পক্ষে বুঝে ওঠা অসম্ভব। মানুষ মঞ্জুদির ভালোমন্দ সবকিছু বিচারের মত ঘনিষ্ঠতা আমার সঙ্গে ওঁর ছিলনা। কিন্তু এখানে উল্লেখ করা অনেক ঘটনাই আমার চোখে দেখা এবং কিছু হয়ত চোখে দেখিনি কিন্তু শুনে মনে হয়েছে ওঁর পক্ষে এরকম কাজ করা সম্ভব।

    ডঃ শুভঙ্কর রায় এবং মঞ্জুদি কেউই যে জীবদ্দশায় তাঁদের সারাজীবনের স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারলেন না, এ দুঃখ আমাদের যাবার নয়। তবে বহু টালবাহানার পর কেন্দ্রীয় সরকার এই ওষুধের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের খরচ বহন করতে রাজি হয়েছেন এবং ‘লাইফ কেয়ার’ নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে ওষুধটি বাজারে আসা অপেক্ষা করছে। এই অবধি মঞ্জুদিও জেনেই গেছেন। কিন্তু ওঁর হঠাৎ চলে যাওয়ার কারণে এই ওষুধের বাজারে আসার সম্ভাবনাও কমে গেছে, সেটাই সবচেয়ে বেশি দুঃখের কথা। ওঁর নিজের চলা থেমে গেছে কিন্তু আমরা যারা ওঁর সঙ্গে ছিলাম, এখনো হাঁটছি। জানিনা আরও কতটা পথ হাঁটলে তবে পৌঁছোনো যাবে।


    (লেখকের বই ‘অর্ধেক আকাশের নীচে’ থেকে সংগৃহীত)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • স্মৃতিচারণ | ০৮ মার্চ ২০২৪ | ৯০৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb90:eab2:c595:f982:14a6:e0a8:2c0b | ০৮ মার্চ ২০২৪ ২৩:২২529123
  • হুতোর ছবিটা এক্কেবারে যথাযথ হয়েছে! মঞ্জুদি কে আমি খুব ভালোভাবে চিনি। আমার পিএইচডি সুপারভাইজার ছিলেন।
  • r2h | 165.1.200.98 | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০০:০৫529126
  • থ্যাংকিউ!
    ছবিটা নিয়ে একটু খুঁতখুঁত করছিলাম...
  • স্বাতী রায় | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০০:৪৬529127
  • বাপ রে! এতো চূড়ান্ত রকমের মাল্টিটাস্কিং এর গল্প! হাসপাতাল থানা গবেষণা রান্না সেলাই ফোঁড়াই সব ২৪ ঘণ্টায় ধরাতেন কি করে? টাইম ম্যানেজমেন্ট এর ট্রিক টা কী? 
  • যোষিতা | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৫:০৮529130
  • মহিয়সী নারী। সশ্রদ্ধ প্রণাম।
  • পারমিতা | 2409:408a:2d3a:1955:3edf:1b02:3a9c:a2a1 | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩৬529133
  • এক জীবনে এতকিছু করেছেন, শ্রদ্ধা জানাই।
  • কু মু দা | 106.215.88.237 | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৮:১৮529135
  • • শ্রদ্ধা - যেন লীলা।
    • চশমায় চোখের দুটি তারা - যেন কথা বলছে।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:৪৪529137
  • আঁকাটা খুব সুন্দর হয়েছে।
     
    ডঃ মঞ্জু রায়ের জীবন খুব ইন্সপায়ারিং। ভীষন খারাপ লাগছে ক্যানসারের ওষুধটা আটকে গেল বলে। 
  • | ০৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:০৯529140
  • কি অসাধারণ মানুষ! শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে আপনিই।
    ক্যানসারের ওষুধ বাজারে আসা খুব দরকার। কোনোভাবে জনমত সৃষ্টি করে চাপ দেওয়া যায় সরকারকে? অবশ্য এই বেচু সরকার জনস্বার্থে স্বল্পমুল্যের জিনিষে উদ্যোগী হবে এরকম সম্ভাবনা বেশ  ক্ষীণ।
  • শারদা মণ্ডল | 202.142.73.184 | ১০ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৩529186
  • মঞ্জু রায়ের কথা জানতাম না। শ্রদ্ধায় মাথা নত হল। 
  • অরুণাচল দত্ত চৌধুরী | 106.202.235.234 | ১০ মার্চ ২০২৪ ১৮:৪৫529207
  • যাঁকে নিয়ে লেখা তাঁর পুরো জীবনটাই এক লড়াই। কোনও প্রণামই তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়।
    যিনি লিখেছেন তিনিও শ্রদ্ধেয়া।
  • তির্যক | ১১ মার্চ ২০২৪ ১৩:৫৭529247
  • ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি কদাচিৎ করে উঠি। সেই বিরল ঘটনার একটি হল নারীদিবসে মঞ্জুদির কথা এখানে লিখে ফেলা। তার যে এত মতামত পাওয়া যাবে ভাবা যায়নি। বিশেষ করে মঞ্জুদির সরাসরি ছাত্রী কে-কে কে পেয়ে সত্যিই আশ্চর্য লাগছে। কেকে-কে অনুরোধ যদি গবেষণার গাইড হিসেবে মঞ্জুদির  সঙ্গে কাটানো অভিজ্ঞতার লেখেন। আমি তো মানুষটাক দূর থেকে দেখেছি,যাঁরা কাছ থেকে দেখেছেন তাঁরাও যদি লেখেন ভালো হয়।
    লড়াকু মানুষটা জীবনে দুঃখ পেয়েছেন বড় বেশি। শেষের দিকে কাল্টিভেশন অফ সায়েন্সের গবেষণাগার ছেড়ে দিতে হয়েছে চূড়ান্ত শত্রুতায়। সেসব শত্রুতার কিছু আমি নিজেই দেখেছি। শত্রুতার আসল কারী ওঁর সাফল্যে ঈর্ষা আর উদ্দেশ্য ওঁকে কাজ করতে না দেওয়া। যাদের চিকিৎসা করেছেন তারাও কেউ কেউ যোগ দিয়েছেন শত্রুপক্ষে। স্বামী মারা গেছেন পাঁচ/ছ বছর আগে। ছেলের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেছে, শেষ অবধি ছেলে মারাও গেছেন ওঁরমারা যাবার এক বছর আগে। বিবাহ বিচ্ছিন্না পুত্রবধু ও নাতনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন, নাতনীকে নিজের কাছে নিয়ে গিয়ে রাখতেন সেসব কথাও তাদের কাছেই শুনেছি। 
    ওঁর মাল্টিটাস্কিং এর গোড়ার কথা হল প্যারালাল ওয়ার্ক।  ছেলেমেয়েদের পড়াতে পড়াতে সেলাই করেছেন,রান্না করতে করতে গাছে জল দিচ্ছেন এইরকম। তবে থানা-পুলিশ-হসপিটাল এসব কাজ তো রোজ করতে হয় না। ওঁর হাতে তৈরী কাঁথাস্টিচের শাড়ি আমি দেখেছি ভরসন্ধ্যায় থানায় গিয়ে বসে আছেন সে কথাও শুনেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পরও নানা টালবাহানায় ওঁর ওষুধের কাজ যে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার আসল কারণ হলওঁর হঠাৎ মৃত্যু ও যথেষ্ট অদ্বিরের অভাব। ওঁর মেয়ে বিজ্ঞানের ছাত্রী নন সবটা ভালো বোঝেন না। তিনিও হতাশ হয়ে পড়ছেন। এই কথা মনে হলে বড় অসহায় লাগে মনে হয় যদি কিছু করা যেত ! এখানে স্বাস্থ্য বিভাগের ও অনেকে আছেন। কিছু কি করা যায় ?
  • kk | 2607:fb90:eab2:c595:f982:14a6:e0a8:2c0b | ১১ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৫529261
  • তির্যক,
    হ্যাঁ দেখেছি তাঁকে। খুব কাছ থেকে, নানা অ্যাঙ্গল থেকেই দেখেছি। আপনি ওঁর একটা দিক নিয়ে লিখেছেন। খুব ভালো করেছেন। এই লেখার ফলেই আজ উনি অনেকের থেকে এত শ্রদ্ধা পাচ্ছেন। এইই তো ভালো। এইই বরং থাক।
    নমস্কার জানবেন।
  • hu | 72.241.81.21 | ১১ মার্চ ২০২৪ ২২:৫৫529272
  • মঞ্জু রায়ের কথা পড়ে উদ্বুদ্ধ হলাম। তির্যককে ধন্যবাদ এনার কথা জানানোর জন্য।
  • Arindam Basu | ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:২৭529281
  • kk, "খুব কাছ থেকে, নানা অ্যাঙ্গল থেকেই দেখেছি। আপনি ওঁর একটা দিক নিয়ে লিখেছেন ...  এইই তো ভালো। এইই বরং থাক।"
     
    হুঁ, তার মানে অন্য দিকও একটা আছে মনে হয়, :-)? সেটা কি? ভীষণ ডিম্যাণ্ডিং সুপারভাইজার? কাজের ব্যাপারে খুঁতখুঁতে? হাত থেকে নম্বর গলে না? কঠোর নিয়মশৃঙ্খলা? 
    নাকি আরো কিছু? 
  • kk | 2607:fb90:eab2:c595:f982:14a6:e0a8:2c0b | ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:৫২529282
  • অরিন দা,
    কাজের ব্যাপারে খুঁতখুঁতে, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা, বা ডিম্যান্ডিং, এগুলো কোনো পিএইচডি গাইডের মধ্যে থাকাটা তো খুব বিরল নয়। আনএক্সপেক্টেডও নয়। কাজেই ওগুলোর কথাই হলে লিখতাম এখানে সেসব গল্প। আমি যে দিকের কথা বলছি সেটা ঐ "আরো কিছু" ক্যাটিগরিতেই আর কী। একবার ভাটে লিখেছিলাম কিছুটা। যাক গে, বাদ দিন। এই টইয়ের ভাইব যেমন আছে থাক।
  • Arindam Basu | ১২ মার্চ ২০২৪ ০৬:৫৭529283
  • বুঝতে পেরেছি, :-)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন