এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  প্রথম পাঠ

  • রসিকার ছেলে

    দেবকুমার চক্রবর্তী
    পড়াবই | প্রথম পাঠ | ১০ মার্চ ২০২৪ | ৬৫৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)


  • প্রতিভা সরকার তাঁর লেখক পরিচয়ের বাইরে একজন পরিবেশ-কর্মী, মানবতাবাদী, নারীবাদী মানুষ। যাপনের সাক্ষর তাঁর সাহিত্যকর্মেও দৃশ্যমান, কলম সোচ্চার জমাট বাঁধা অসাম্য নিয়ে।
    সদ্য প্রকাশিত রসিকার ছেলে উপন্যাস নিয়ে আলোচনা ​​​​​​​করলেন ​​​​​​​দেবকুমার ​​​​​​​চক্রবর্তী।  



    গল্পকার এবং ঔপন্যাসিক প্রতিভা সরকার সাহিত্যপ্রেমী মানুষের মজলিশে আত্মপ্রকাশ করেন ২০১৯ সালে তাঁর প্রথম গল্পের সংকলন ‘ফরিশতা ও মেয়েরা’ গ্রন্থটি প্রকাশ করে। ‘ফরিশতা ও মেয়েরা’ প্রকাশিত হয়েছিল ‘গুরুচণ্ডালী’ থেকে। প্রথম গল্পের বই প্রকাশের পর থেকে অনেকগুলি গল্পের বই প্রতিভা লিখেছেন। প্রতিভার গল্পের হরেক চরিত্রের মিছিল সমাজ ও পরিবেশ নিয়ে আবর্তিত হয়েছে। তাঁর সাম্প্রতিকতম উপন্যাস ‘রসিকার ছেলে’ প্রকাশিত হল ২০২৪ এর বইমেলায়। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসটি একটি সামাজিক উপন্যাস। এই উপন্যাস পাঠককে উথালপাথাল করে দেয়। স্তরবিন্যস্ত এই সমাজের নিম্নবর্গের মানুষদের উপর উচ্চবর্ণের মানুষের অবহেলা, অপমান, ঘৃণা হতচকিত করে দেয় অনুভবী পাঠককে। করে দেয় - কারণ দেশের সর্বোতকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতেও এই বঞ্চনা, অবহেলা একই ভাবে সতত ক্রিয়াশীল।

    আমাদের চারিপাশের সমস্ত প্রতষ্ঠানই- বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, আইএসআই, আইআইএম ইত্যাদি, এমনকি মন্দির, মসজিদ, অফিস-আদালত, ক্রীড়াঙ্গন - সবই যেন সমাজের ছিন্ন ছিন্ন একেকটা অংশ। সমাজের ভালো-মন্দ সব প্রতিষ্ঠানে একইভাবে থিতু হয়ে থাকে। জমাট বেঁধে থাকে সমাজের বর্ণচেতনা, বৈষম্য, বিদ্বেষ। মানুষকে বিচার করতে তার মেধা, সৃজনশীলতার পরিবর্তে তার জাত, লিঙ্গ, বর্গ এইসবই প্রধান হয়ে ওঠে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে শিক্ষার কী কোনো ভূমিকা আছে? যে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হয় সমাজের উচ্চবর্গের মানুষদের সক্রিয় উদ্যোগে - যেখানে উচ্চবর্গের মানুষ আর প্রশাসন হাতে হাত ধরে থাকে- সেখানে দরিদ্র নিম্নবর্গের ছাত্রদের জন্য কী খোলা হাওয়া বয়? যদি বইতো, তাহলে আমরা জানতে পারতাম না রোহিত ভেমুলা, ফয়জান আহমেদ, অনিল কুমার, আয়ুষ আশনি, দর্শন সোলাঙ্কি, অনিকেত আম্ভোরে, পায়ল তদভির মতো হতভাগ্য কয়েকটি নাম। এদের মতো আরও অনেকে শিডিউলড কাস্ট পরিবার থেকে মেধার ভিত্তিতে উঠে আসা সত্বেও উচ্চবর্ণের সতীর্থদের অবহেলা, ঘৃণা, উপহাস সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছে। এইরকম বহু নাম সাম্প্রতিক কালে উঠে এসেছে দেশের সংবাদপত্রে। সংবেদী মানুষের মনে সাময়িক অসাড় তরঙ্গ তুলেই যে সংবাদ দৈনন্দিনতার মধ্যে হারিয়ে গেছে সহজে। সমাজ-কাঠামোয় এই বিষয়টি এমনই গুরুত্বপূর্ণ যে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেছেন-


    ‘Incidents of suicides of students from marginalized communities are becoming common. These numbers are not just statistics. They are stories of centuries of struggle’. (D Y Chandrachud J).


    উল্লেখিত নামগুলো নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কারণ কী? এরা সকলেই সমাজের নিম্নবর্গীয় পরিবার থেকে উঠে আসা যুবক। এরা সকলেই মেধার জোরে, সরকারী নিয়মে শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে উচ্চশিক্ষায় নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। আর এরা সকলেই জাতপাতের বিচারে উচ্চবর্ণের সহপাঠীদের কাছ থেকে বৈষম্য, ঘৃণা, অবহেলা, অপমানের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে, অথবা নিহত হয়েছে। সামূহিক প্রতিবাদ দাবী করে – এমন একটি বিষয়কে নিয়ে ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসটি লিখেছেন প্রতিভা সরকার।

    বাংলায় লেখালেখির জগতে গল্পকার প্রতিভা সরকার এখন সুপরিচিত এবং যথেষ্ট পাঠকপ্রিয়। গদ্যে যা বলার তা তিনি বলেন ঋজুভাবে। কখনও আখ্যানে পাঠক কাব্যময়তার স্বাদ পান। গল্পের পটভূমি সযত্নে সংগ্রহ করেন সমাজ, অর্থনীতি, পরিবেশ, অবক্ষয়ী রাজনীতির গহ্বর থেকে। সমস্ত রকম বঞ্চনাকে গল্পে উচ্চকিত করে পাঠককে আলোড়িত করার ক্ষমতা আছে প্রতিভার। তাঁর গল্প পাঠ করে বোঝা যায় যে প্রথমে তিনি একজন সচেতন সমাজবীক্ষক, তাঁর দ্বিতীয় পরিচয় তিনি সমসাময়িক বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট গদ্যশিল্পী।

    আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিম্নবর্গের ছাত্রদের হত্যা-আত্মহত্যার যে সব ঘটনা ঘটে চলেছে তার সামান্যীকরণ (generalisation) করতে প্রতিভা বেছে নিয়েছেন কর্নাটকের একটি, অন্ধ্র প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পূর্বভারতের খড়্গপুর আইআইটির একটি করে ঘটনা। কাহিনিতে রোহিত এসেছে রোশন নামে আর ফয়জান আহমেদ এসেছে শেখ ফয়জুল নামে। তৃতীয় ব্যক্তি ভেঙ্কটেশ। ভেঙ্কটেশ স্কলার হওয়ার পরেও সাড়ে তিন বছর গাইড পায়নি। অন্যান্য কারণ ব্যতিরেকে তাঁর বর্ণ-পরিচয় কী কোনো কারণ? পাঠকের মনে এই প্রশ্ন স্বাভাবিক ভাবেই দেখা দেয়। উপন্যাসে রোশন, ফৈজু বা ভেঙ্কটেশেদের বঞ্চনা মূল বিষয় হলেও বইটি শেষ করে পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত করে রোশনের মা রসিকা। সেই হিসেবে গল্পগ্রন্থটির নামকরণ ‘রসিকার ছেলে’ ছাড়া আর কিছুই হতে পারত না।

    এমন এক বেদনাদায়ক বিষয় নিয়ে গল্প পড়তে পাঠক কখনও মানষিক পীড়ায় ভোগেন না, কারণ প্রতিভার লেখার তারুণ্য আর কাব্যময় ভাষার ব্যবহার। একটি ছোট্ট নমুনা এই রকম-


    "তখন সূর্য পাহাড়ের সবচেয়ে নীচু চূড়োটার মাথায় থ্যাবড়া মেরে বসে রয়েছে। যেন তার সেদিন বাড়ি ফেরার ইচ্ছে নেই, কিম্বা প্রচুর তাড়ি খেয়ে ব্যাটা নড়তে চড়তে পারছে না। পাহাড়ি মৌচাকে জমানো গাঢ়-মধুর মতো আলো চুইয়ে পড়ছে গোটা বনের ওপর, স্বর্ণচম্পার সোনালি রঙের সঙ্গে তার কোনো তফাত নেই। এইরকম আলোতে নাকি প্রাচীন মন্দিরের গায়ে খোদাই করা অপুর্ব দেব দেবীরা জ্যান্ত হয়ে আকাশ পথে ঘুরে বেড়ায়"।


    প্রতিভা এমন একটি মনোরম দৃশ্যকল্প রচনা করেছেন এর অব্যবহিত পরেই একটি ঘৃন্য অপরাধের প্রিল্যুড হিসেবে।


    -"দুহাতে ঢিবি আউলানো মাত্র বেরিয়ে এল একটা চার পাঁচ বছরের মৃত বাচ্চার মৃতদেহ। সারা গায়ে একটা সুতোও নেই। দেহের নানা লক্ষণ দেখেই বোঝে সিদ্ধা, বাচ্চাটাকে মানুষ-বাঘে খেয়েছে উলুতপুলুত করে চেটে। আশেপাশের কোনো গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে এসেছিল আর কী!"


    কাহিনির আগাপাশতলা বুঝিয়ে দেয় বাচ্চাটি কোনো এক দলিত পরিবারের। বুঝিয়ে দেয়, কারণ দেশ আর সময় যতই এগিয়ে যাক –


    "অবস্থা খুব একটা পাল্টায়নি। গরীব গরীবই থেকে গেছে, বড়লোকেরা বড়লোক। জাতিবাদও তেমন রয়ে গেছে, শুধু বাইরে রূপটা পাল্টেছে। আগে তারা গ্রামের বাইরে থাকতে বাধ্য হত, এখন তারা গ্রামের ভেতরে আলাদা পাড়ায় থাকতে বাধ্য হয়। আগে জমিদার তাদের জুতোর ডগায় রাখত, এখন ভোটের সময় ছাড়া এমএলএ বাবুদের একই মূর্তি। দিন আর পাল্টাল কোথায়?"


    এই যে দেশের সমাজ – তার সর্বোতকৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হল দেশের আইআইটিগুলো। সেখানকার অন্দরমহলে চোখ রাখলে দেখা যায় –


    "যারা পড়তে আসে তারা প্রায় সবাই সম্পন্ন পরিবারের সন্তান, পরিবার এবং ছাত্র হিসেবে নিজেদের স্ট্যাটাস নিয়ে অতিমাত্রায় সচেতন। তার মধ্যেই অনেক কারণে অনেকে কোণঠাসা। কারণগুলোও বিচিত্র, হয়তো কেউ সচ্ছল নয়, বা কোটায় পড়তে এসে মহা অপরাধ করে ফেলেছে। অথবা তার কোটায় পাবার অধিকার থাকলেও, নিজের মেধার জোরে সফল ছাত্রের তালিকায় নাম তুলতে পেরেছে, কিন্তু সে জাতিগত ভাবে কোটার ছাত্র, এইটা সে ছাড়া বাকি সবাই মনে রেখেছে"।


    কেউ ইংরেজি মিডিয়ামে পড়েনি, পড়েছে আঞ্চলিক (vernacular) ভাষামাধ্যমে- যাদের ডাকনাম ভার্নু, কেউ বেজায় কালো, কেউ মেদবাহুল্যে পৃথুল। শুধু এইটুকুই কি শীর্ষ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর সবটুকু কাহিনি?


    –"এত বিভেদের মাঝে যে মহান মিলন নিজের বর্ষামুখ উঁচিয়ে থাকে, তাঁকে কাচে মোড়ানো লম্বা ডাইনিং হলটার সারা গা থেকে ঠিকরে বেরোতে দেখা যায়। তবে অবশ্যই দূর থেকে। রাতে দূর থেকে দেখলে অগুনতি হাজার ওয়াটের বাতি, ভেতরে সারি সারি চেয়ার টেবিল, ছেলেমেয়েরা খাচ্ছে, গল্প করছে, ঢুকছে, বেরোচ্ছে, স্টিলের থালায় চামচের আওয়াজ, গানের কলি, হাহা অট্টহাসি। মিলে সুর তুমহারা!
    অন্ধকার মাঠে দাঁড়িয়ে ওটার দিকে তাকালে মনে হয় বিরাট আলো ঝলমলে স্পেশশিপ একটা, অন্ধকারে পথে ভুলে নেমে এসেছে, ভেতরে গিজগিজ করছে অন্য গ্রহের বাসিন্দা! তবে হ্যাঁ, দূর থেকেই। কাছে গেলেই নজরে পড়তে পারে এ ওর পাশে বসে খাবে না বলে থালা নিয়ে উঠে গেল, … মোদ্দা কথা, অন্য গ্রহ থেকে আসা
    ঐ স্পেশশিপের মধ্যে ঠাসা রয়েছে এক টুকরো অক্ষয় ভারতবর্ষ। খাবার থালাতে যার মহত্তম প্রকাশ"।


    এমন মোচড়ের ম্যাজিক যে উপন্যাসে, তা পাঠককে কি মুগ্ধ করবে না? উপন্যাসের কাহিনি কেবল পাটা ন্যারেটিভ হয়ে থেকে গেলে একরকম হত। প্রতিভা ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসে ম্যাজিক রিয়ালিজমের চমৎকার ব্যবহার করেছেন। দলিত ছাত্রদের প্রতিবাদে সমাজ-সংসার আশ্চর্যজনকভাবে উদাসীন। শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অন্যায় আর বিদ্বেষের আবহে অপরিসীম শৈত্য বইছে যেন।


    "… সামনেই সগর্বে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনিক ভবনটা বরফে মোড়া! দূরে লাইব্রেরিটাকে মনে হচ্ছে একটা সাদা অতিকায় পাহাড়! … রোশন স্টাডি সার্কেলে বলেছিল, কিন্তু এখন মানুষের মনের অনেক গভীরে ঢুকে পড়েছে সেই ভয়াবহ শৈত্য। সবাই এখন তুষার যুগে বাস করছি আমরা। শরীর উষ্ণ, ভেতরে হৃদয় মরে কাঠ, বরফের মতো ঠান্ডা"।


    এই যে ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসে নায়িকার ভূমিকায় উঠে আসা রসিকা – কেমন মেয়ে সে?–


    "ডেইলি ওয়জ লেবারদের বাচ্চারা প্রায়ই বড় রাস্তায় খেলতে খেলতে গলিটায় ঢুকে পড়ে। নাকে শিকনি গড়ানো, হাতে পায়ে ধুলো কালিমাখা যতো হাভাতের দল। রসিকাই একমাত্র অন্যরকম। গায়ের রঙ ফর্সা, ধনী বাড়ির মেয়েদের মতো, আর কী শান্ত! … রসিকার পড়া ইলেভেনের পর আর না এগোলেও ঘরের কাজকম্মো, রান্নাবান্নায় সে পোক্ত… রান্না করে সবাইকে খেতে দিয়ে, এঁটো স্টিলের বাসন রূপোর মতো ঝকঝকে করে মেজে, সীতালক্ষ্মীর খোঁপায় পরবার মালা গেঁথে, পাথরের বাটিতে সেটা জলে ভিজিয়ে রেখে, সিঁড়ির নীচের ভাঁড়ার ঘরে ঢুকে শোবার কাঠের চৌকিতে উপুর হয়ে রসিকা কবিতা লিখত"।


    রসিকার মুখে কিছু কবিতাও পাঠক পড়বেন ‘ব্রহ্ম রাক্ষসের লোভ’, ‘ইয়েলাম্মার সন্তানসন্ততি’ অধ্যায়ে। বোঝাই যায় কবিতাগুলি প্রাসঙ্গিকতা অনুসারে লিখেছেন ঔপন্যাসিক নিজেই। তাঁর কলম অনাবিল গদ্য উগড়ে দিলেও, তাঁর মনে যে একজন কবি প্রচ্ছন্ন হয়ে আছে, পাঠকের বুঝতে অসুবিধে হয় না। এইজন্যই প্রতিভার প্রতিবাদী কাহিনির ভাষাও দুরন্ত কাব্যময় হয়ে উঠতে পারে।

    রসিকাকে লেখিকা কীভাবে তৈরি করেছেন? না, ভেঙে পড়া একজন সন্তানহারা, দলিত সন্তানের মা নয়। সন্তানের দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর পরেও একজন লড়াকু মা হিসেবে গড়ে উঠেছে চরিত্রটি। ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ উপন্যাসের পাভেলের মায়ের মতো। গল্পগ্রন্থের শেষ গল্প ‘রসিকার জীবন’ থেকে দেখা যাকঃ


    -"আপনি দেখছি খুব সাহসী মহিলা। শুনেছি রোশনও খুব সাহসী ছিল। এই সাহস কি সে আপনার কাছ থেকে পেয়েছিল?"


    একজন অল্পবয়সী মেয়ে (সাংবাদিক) ওপাশ থেকে প্রশ্ন করে। … চোখ তুলে মেয়েটিকে সে শুধু বলে,


    -ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ যে মা নিজের চোখে দেখেছে, তাঁর সাহসের সঙ্গে তুলনা হতে পারে শুধু আহত বাঘিনীর। আগের আমি আর এই আমি, দুজনের মধ্যে কোনো মিল নেই।


    এবার টিভি ক্যামেরাম্যানের পাশ থেকে মুখ বার করে মাথের পেছনে ঝুঁটি বাঁধা ছেলেটি রসিকাকে জিজ্ঞেস করে,


    আপনি কি সত্যি বিশ্বাস করেন, এইভাবে দৌড়োদৌড়ি করে, কয়েকজনকে নিয়ে মিছিল করে, দুচাট্টি আন্দোলন আন্দোলন খেলা করে আপনা রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসনের ক্ষমতাবানদের কাছ থেকে সুবিচার আদায় করতে পারবেন? সিস্টেমে আনতে পারবেন কোনও পরিবর্তন? …
    "মুখ ফিরিয়ে সাংবাদিক ছেলেটির চোখে চোখ রেখে বলল,
    -আপনি ভেবেছেন আমি আন্দোলন করি, মিছিলে যাই, মিটিং-এ বক্তব্য রাখি, সন্তানহারা মায়ের হাত ধরে লাশকাটা ঘরে দাঁড়িয়ে থাকি, এই দুর্নীতিবাজ শক্তিধরদের মন পরিবর্তনের জন্য? রাষ্ট্রযন্ত্রের মন বলে কিছু থাকে?
    আপনি একেবারেই ভুল ভেবেছেন বাবা। আমি এগুলো করি অন্যকে পরিবর্তনের জন্য নয়, আমি নিজেই যাতে পরিবর্তিত না হয়ে যাই, সেই জন্য। … "


    প্রতিভা সরকার গল্প উপন্যাস লেখেন পাঠককে ভুলিয়েভালিয়ে মোহাবিষ্ট করে রাখতে নয়। চরিত্রগত ভাবে একজন পরিবেশ-কর্মী, মানবতাবাদী, নারীবাদী সংবেদনশীল লেখিকা হিসেবে পাঠককে ভাবিয়ে তোলাই প্রতিভার ‘হিডন এজেন্ডা’। সমাজের সমস্ত স্তরে জমাট বাঁধা অন্যায়ের বিরুদ্ধে পাঠক-সমাজকে মনে মনে আন্দোলনের ভাগীদার করে তোলাই প্রতিভার উদ্দেশ্য। ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসে প্রতিভা সে ব্যাপারে সফল।

    হাজার হাজার বছরের সামাজিক বিভাজন জনিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র উদাসীন। রসিকা আমাদের শেখায় যে, এই নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তির পথ ভেঙে পড়া নয়, ধারাবাহিক আন্দোলন আর জনসচেতনতা সৃষ্টি। নিপীড়ণ আর বঞ্চনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজের ভেতরের আগুনটুকু জ্বালিয়ে রাখতে হবে নিরন্তর, যতদিন না বাইরেটার বদল হচ্ছে। রসিকা শেখায় মর্যাদা কোনও মাধুকরী নয়। মাথা ঊঁচু করে, মেরুদণ্ড টান টান করে রাষ্ট্র-ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার দায় আসলে বঞ্চিতদের ওপরেই বর্তায়।

    পাঠশেষে বোঝা যায় উপন্যাসটি লেখার পেছনে বিস্তৃত সাজঘরের কাজ করতে হয়েছে লেখিকাকে। জানতে হয়েছে শীর্ষ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলির ভিতরের কথা। বুঝতে শিখতে হয়েছে দলিত পরিবারের জীবনধারা, অল্পবিস্তর দক্ষিণ ভারতের ভাষা। বাস্তব খুঁটে তথ্য সংগ্রহ করে তার ওপরে কোথায় কতখানি কল্পনার মিশেল ঘটেছে, তা পাঠকের কাছে প্রহেলিকা হয়ে থেকে যায়।

    ‘রসিকার ছেলে’ উপন্যাসটি দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হলে সমাজবিজ্ঞানের কিছু উপকার হতে পারত। জাত-পাতের রাজনীতির বিরুদ্ধে জন-জাগরণে মৃদু তরঙ্গ উঠলেও উঠতে পারত। বইটির ইংরেজি অনুবাদ করবেন, প্রকাশ করবেন, বৃহত্তর আঙিনায় পাঠকের হাতে তুলে দেবেন – এমন প্রকাশনা সংস্থা কবে উদ্যোগ নেবে জানা নেই। এনবিটি বা সাহিত্য অকাদেমী কি এগিয়ে আসবে?

    ‘রসিকার ছেলে’ প্রকাশিত হয়েছে গুরুচন্ডালী থেকে। চটি সিরিজের বই হিসেবে। গুরুচন্ডালী ট্রাস্ট বুক বাজিয়ে বলে –‘ঘ্যামা ঘ্যামা বইয়ের বড় বড় ব্যাপার। যেমন গড়ন তেমনি দাম। ওদিকে নজর না দিয়ে আমরা বানিয়েছি সস্তা কাগজের চটি বই, যা সুলভ ও পুষ্টিকর’। যাঁরা বইয়ের সংগ্রাহক, পাঠক – অথচ পকেটে রেস্ত কম- তাঁদের পক্ষে দাঁড়িয়ে এই ইশতেহার প্রকাশনার দুনিয়াকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে বইয়ের উচ্চমূল্য প্রকাশনা সংস্থা ও পাঠকের মধ্যে প্রাচীর হয়ে উঠছে ক্রমশ। অন্ন, বস্ত্র সবকিছুরই মূল্য ক্রমবর্ধমান। বইয়ের দাম যে বাড়বে এতে আর আশ্চর্যের কী আছে? তবে পাঠকের বেঁচে থাকার জন্য প্রাথমিক চাহিদা অন্ন বস্ত্রের সংকুলান করে উদবৃত্তটুকু নিয়ে আসেন বই কিনতে। বই সুলভ হলে আরও দু-খানা বই কিনতে পারে্ন পাঠক।

    আট ফর্মার বইটির বিনিময় মূল্য একশ’ পঞ্চাশ টাকা মাত্র। বইটি অবশ্যই সংগ্রহযোগ্য।


    রসিকার ছেলে
    প্রতিভা সরকার।

    প্রকাশক: গুরুচণ্ডা৯
    মূল্য—১৫০ টাকা।
    বাড়িতে বসে বইটি পেতে হোয়াটসঅ্যাপে বা ফোনে অর্ডার করুন +919330308043 নম্বরে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ১০ মার্চ ২০২৪ | ৬৫৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • saswati bhattacharjee | ১০ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৯529196
  • "আমি এগুলো করি অন্যকে পরিবর্তনের জন্য নয়, আমি নিজেই যাতে পরিবর্তিত না হয়ে যাই, সেই জন্য। … " - এই কথাগুলো মাথায় ঢুকিয়ে রাখতে হয়। 
    দারুণ আলোচনা।
  • এনার | 103.118.50.5 | ১০ মার্চ ২০২৪ ১৪:০০529198
  • একটি দুর্জয় উপন্যাসের অনবদ্য আলোচনা করেছেন শ্রীদেবকুমার চক্রবর্তী। উনি এক মহতী আশা পোষণ করেছেন, বইটি ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ হলে হয়ত বা বাঙালির অন্দরমহলের বাইরেও সাড়া পড়ে যেত। সেরকম দিন কবে আসবে, সেটা যেমন তিনি জানেন না, তেমনিই আমরাও জানিনা। কিন্তু আমরা এটা জানি যে এই পাঠপ্রতিক্রিয়া উপন্যাসটিকে আরও এগিয়ে দেবে অগণিত পাঠকের কাছে। 
     
    যে কটি উদ্ধৃতি উপন্যাসটি থেকে চয়ন করে দেবকুমারবাবু তাঁর লেখাটিকে সাজিয়েছেন, বইটি পড়তে পড়তে মনে হল এর চাইতে উপযুক্ত উদ্ধৃতি পাঠ প্রতিক্রিয়ার স্বল্প পরিসরে অসম্ভব ছিল। 
     
    গুরুচন্ডালী প্রকাশনার আশু কর্তব্য, এই বইটি ইংরেজি ও সম্ভব হলে অন্যান্য ভারতীয় ভাষায়, বিশেষত হিন্দিতে অনুবাদ করে এটির বহুল প্রচার করা। তাহলে যে বিকল্প ভাষ্য গোটা ভারতকে শাসন করছে, তার সত্য পরিচয়টি উন্মুক্ত হবে। কারণ রোহিত ভেমুলা সম্পর্কে কোনও বিশ্লেষণাত্মক ফ্যাক্ট বা ফিকশন অন্তত বাংলা বা ইংরেজিতে লেখা হয়েছে বলে জানা নেই। 
     
    গুরুচন্ডালীকে অনুরোধ অন্যান্য পাবলিশিং হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই মহতী কর্তব্যটি শীঘ্র সমাধা করুন। 
    দেবকুমারবাবু এই অনুরোধ জানাতে পাঠককে প্ররোচিত করছেন।
  • পাঠক | 2605:6400:30:f174::42 | ১০ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৭529204
  • গুরুচন্ডা৯র অনেক বইই অনুবাদ হওয়ার যোগ্য। হওয়া প্রয়োজন। গুরচন্ডা৯র তরফে এবার ইংরিজি অনুবাদের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। প্রতিভা সরকারের অনেক চেনাশোনা বিদগ্ধ মহলে তাঁর হয়ে বলার জন্য অনেকেই থাকবেন। গুরুচন্ডা৯র তরফে সামগ্রিকভাবে চেষ্টা শুরু করা দরকার।
  • Prativa Sarker | ১০ মার্চ ২০২৪ ১৭:২০529205
  • বিদগ্ধ মহলে চেনাশুনা যদি অনেক মাপকাঠিরও একটি হয়, সেটা গুরুচন্ডা৯- র বেশির ভাগ সদস্যদেরই আছে মনে হয়। প্রতিভা সরকারের চাইতে অনে বেশিই আছে। শেষ লাইনটাই কাজের কথা। 
  • এনার | 103.118.50.5 | ১০ মার্চ ২০২৪ ২০:৩১529214
  • আমিও যে 'বিদগ্ধ মহলের' মধ্যে গণ্য হচ্ছি,  একথা জেনে যারপরনাই প্রীত হলুম! "পাঠক"মহোদয়কে ধন্যবাদ।
  • JSL | 165.1.172.197 | ১০ মার্চ ২০২৪ ২০:৫৩529215
  • নিজের পছন্দের লেখকের হয়ে কিছু বলা, বা বিদগ্ধ মহলে থাকা - এর কোনটাই তো দোষের কিছু না, বরং এটাই কাম্য।
    পাঠকরা যদি কিছুই হচ্ছে না, বইমেলা ফিশ ফ্রাইয়ে ভরে গেল, লোকে কেন সেল্ফি তোলে - এর বাইরে, নিজের পছন্দের বইটি পাঁচজন সমমনা মানুষের সঙ্গে আলোচনার পরিসরে নিয়ে আসেন, তার থেকে ভালো আর কী হতে পারে। আর সেই পাঠকের যদি সারস্বতজগতে প্রতিষ্ঠিত গ্রহণযোগ্যতা থাকে তবে তো সেটা আরৈ কার্যকরী হয়।

    একটা জিনিস নিয়ে আমার কৌতুহল - পুরস্কার টুরস্কারের জন্য যেমন বই পাঠাতে হয়, কিঞ্চিৎ সুপারিশও লাগে বলে শুনি, তবে নিশ্চিত জানিও না, সব জায়গায় নিশ্চয় লাগেও না, অনুবাদের জন্যও কি সেরকম? নাকি যে অনুবাদক বা প্রকাশনা অনুবাদকর্ম করেন, তাঁরা নিজের উদ্যোগেও খোঁজখবর রাখেন, যে, এক্ষেত্রে, বাংলায় কি নতুন লেখালিখি হচ্ছে, কোন বই বা কার লেখা অনুবাদ করে অন্য ভাষাভাষি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিত?

    পাঠক/ প্রকাশক/ লেখকের তরফ থেকে পাঠানোর নির্দিষ্ট চ্যানেল থাকলে সেসব দিয়ে পাঠানোও অবশ্যই একটা বড় অপশন, কিন্তু সেরকমও কি আছে, না ব্যাপারটা মূলত চেনাশুনো নির্ভর?

    মূল বইয়ের আলোচনা থেকে অনেকখানি বিপথে যাওয়া হল, চমৎকার আলোচনা, আর প্রতিভা সরকারের বেশির ভাগ প্রকাশিত বইই পড়েছি, এই সময়ের অন্যতম গল্পকার, বিষয় বৈচিত্র, শৈলী, বক্তব্য - সবেতেই, এতে কোন দ্বিমত নেই। জরুরী লেখা, আজকের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাতাবরনে অতি জরুরী পাঠ্য।
  • শিবাংশু | ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:১০529216
  • প্রতিবেদন বা পাঠ-প্রতিক্রিয়া, যাই বলি না কেন, রচনাটির মধ্যে আধেয় বিষয়ের সমগ্রতাকে ধরার প্রয়াস রয়েছে। তাই লেখাটি নিছক পাঠ-প্রতিক্রিয়ায় পর্যবসিত হয়নি। বৃহত্তর অন্বিষ্টকে স্পর্শ করেছে। দেবকুমারবাবুকে ধন্যবাদ। 

    পাঠক হিসেবে ব্যক্তি আমার বাংলা ফিকশন পড়ার অভ্যাস এই মুহূর্তে ক্ষীয়মান। যে কয়েকজন সমকালীন লেখক কবজির জোরে আমাকে তাঁদের লেখা পড়িয়ে নেন, শ্রীমতী প্রতিভা সরকার তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য। এই মুহূর্তে আমার পড়ার টেবিলে তাঁর তিনটি সম্প্রতি প্রকাশিত গ্রন্থ 'রসিকার ছেলে', 'কমলে কামিনীর কিস্যা' এবং 'নির্বাচিত পঁচিশ' দেখতে পাচ্ছি। গদ্যরচনা-কৌশলের ভিত্তি যে দৈবী ত্রিভুজ, বিষয়, শৈলী এবং ভাষা, তার উপর তাঁর অধিকার তিনি ক্রমশ প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছেন। সবার উপর তাঁর আছে এক জোড়া 'সহৃদয়' চোখ। সেই চোখ দিয়ে তিনি মানুষকে দেখতে জানেন। আবেগকে পণ্য না করে, তার অমোঘ আবেদন দিয়ে পাঠকের নিরাবেগ নির্লিপ্তিকে কীভাবে জয় করতে হয়, তার মন্ত্র তিনি অর্জন করেছেন। সময়ের সঙ্গে উত্তীর্ণ হচ্ছে তাঁর আখ্যান রচনার দক্ষতা। বাংলা পাঠকদের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা এই মুহূর্তে যথেষ্ট রয়েছে, নির্দ্বিধায় তা স্বীকার করা যায়। আমরা তাঁর থেকে আরও বহু অর্জনের অপেক্ষা করি। জানি তা দুরাশা নয়।    

     
  • Prativa Sarker | ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:১০529217
  • JSL কে ধন্যবাদ। অন্য দিকে গড়িয়ে যাওয়া আলোচনাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমি যতদূর জানি, অনুবাদকেরা খোঁজখবর রাখেন। একজন ভারতবিখ্যাত অনুবাদক এবারের বইমেলায় গুরুর বই এবং অন্যান্য প্রকাশনার বই নিজে সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। গুরুর সূত্রেই একথা জেনেছি।
     
    রসিকার ছেলে অনুবাদ করবার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একটি বিদূষী মেয়ে, সত্যিই আন্তর্জাতিক মানের অনুবাদক, সে নিজে থেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু তার একটি অসুবিধে হয়ে দাঁড়িয়েছে সদ্যোজাত সন্তানের অসুস্থতা। মেয়েদের যে অসুবিধেগুলো লেগেই থাকে আর কী ! 
     
    কিন্তু প্রকাশকের ব্যাপারে আমার জ্ঞানগম্যি কিছুই নেই। বই পাঠাতে হয়, নাকি অনুবাদ করেই পাঠাতে হয়, তা জানা নেই। কলকাতায় ফিরে এ ব্যাপারে আরও খোঁজখবর নেব।
    গুরুর কর্ণধাররাও তাঁদের প্রকাশিত বইগুলোর অনুবাদে আগ্রহী হবেন, এই আশা।
  • Prativa Sarker | ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:১৮529218
  • শিবাংশু দে-কেও আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ওঁর কমেন্টটি আমি আগে দেখিনি। এখানে নেটওয়ার্ক খুব খারাপ। ওঁকে জানাই, এই মন্তব্যের যোগ্য হবার চেষ্টায় ক্ষান্তি দেব না।
  • বিপ্লব রহমান | ১১ মার্চ ২০২৪ ০৭:২৬529235
  • একদিন নিশ্চয়ই প্রতিভা দির মতো লিখবো। 
     
    স্বীকার করি,  বইটি এখনো হাতে পাইনি, উস্কানি দেয়ার জন্য দেবকুমারকে সাধুবাদ heart
  • | ১১ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৫529238
  • চমৎকার রিভিউ।  (দু একটা টাইপো আছে ঠিক করে দিলে ভাল লাগত।) 
     
    আমি এখনো বইটা পড়ার সাহস করে উঠতে পারি নি,  পড়ে ফেলব।  অনুবাদ সম্পর্কে সত্যিই গুরুর বেশ কিছু বই অনুবাদ হওয়া দরকার। এবার সেটা কীভাবে হওয়া সম্ভব জানি না।  ব্যক্তিগতভাবে কিছু খোঁজ খবর করেছিলাম খুব একটা  তথ্য পাই নি। 
  • সোমনাথ ঘোষাল। | 2409:4060:2e81:ac13:3121:b709:a02e:ec8e | ১১ মার্চ ২০২৪ ২১:৪৪529270
  • ভীষণ ভালো আলোচনা। বইটি আরও আরও পাঠকদের কাছে পৌঁছে যাক। পাঠকপ্রিয় হোক। আমার শুভকামনা রইল। 
  • Suparna Bhattacherjee | 223.223.149.65 | ১২ মার্চ ২০২৪ ১০:৩৩529286
  • প্রতিভা সরকার সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মন স্বচ্ছ আয়নার মত পড়তে পারেন। ওঁর কলম এতোটুকু দ্বিধা করে না সত্য লিখতে। কী ভাষা,কী দৃশ্য রচনায়। সাহিত্য গুণ অসীম। 
    'রসিকার ছেলে' পড়ার অপেক্ষায়। তার আগে এই বিদগ্ধ আলোচনা বড়ো অন্তর স্পর্শ করল। এতো বিস্তৃত আলোচনা অবশ্যই লেখক এবং পাঠক উভয় পক্ষেরই এক অভূতপূর্ব প্রাপ্তি। 
    প্রতিভা সরকার আমাদের সমাজের সমস্ত দিকের অন্ধকার দিক আলোকিত করবেন,এ বিশ্বাস আছে। মানুষ আঁকবেন নিরন্তর। 
  • Prativa Sarker | ১৩ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৩529328
  • সুপর্ণা ভট্টাচার্যকে আমার ধন্যবাদ জানাই। 
  • Prativa Sarker | ১৬ মার্চ ২০২৪ ১৪:২২529457
  • এন আর, শাশ্বতী, বিপ্লব রহমান, সোমনাথ ঘোষাল, দ-কে অনেক ধন্যবাদ জানাই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন