এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে: পোর্টল্যান্ড

    Tim
    অন্যান্য | ২২ মার্চ ২০১০ | ৩১৩২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Tim | 67.88.206.99 | ২২ মার্চ ২০১০ ০৯:১৩443082
  • অবশেষে ওয়েস্ট কোস্ট। দেখতে দেখতে বেশ কয়েক বছর হয়ে গেলেও পুবদিক ছেড়ে বেরোনো হয়নি। মার্কিন ম্যাপের বাঁদিকটা নাকি বাঁধিয়ে রাখার মত, বহুবার শুনেছি ও ছবিতে কিছু কিছু দেখেছি। এইবার সময় আর সুযোগ দুইই মিললো। কাজের শেষে, আড়াইদিনের ভ্রমণ। বেসক্যাম্প পোর্টল্যান্ড, মূল গন্তব্য মাউন্ট হুড, কলম্বিয়া রিভার গর্জ এবং, সময় হলে, ওরেগন কোস্ট।

  • Tim | 67.88.206.99 | ২২ মার্চ ২০১০ ০৯:২৮443093
  • যোগব্যায়াম সেরে এসে ফেলুদা বললো, "" এই যে তুই ভাবছিস পোর্টল্যান্ড যাচ্ছিস মানেই ইশকুল কামাই করে সাতদিন ধরে বেড়াবি, সেটা ভাবার সময় কিন্তু এখনও আসেনি। কাজটা কবে খেয়াল আছে তো? ""

    - কিন্তু কাজটা শেষ হয়ে দুটো দিন তো পাবোই।
    - কিকরে জানলি?

    হ্যাঁ, টেলিপ্যাথি। চুরিচামারি করে বাঁচানো সময় হাতে নিয়ে ঘুরতে বেরোনো মানেই জানবেন, অলৌকিক কিছু না ঘটলে আপনি বহু দ্রষ্টব্য স্থান ও বস্তু না দেখে (উদ্ভিদ ও প্রাণীদের কথা বাদই দিলাম) ফিরবেন। প্ল্যানিং, হোমওয়ার্ক সমস্ত ধুয়ে যাবে। তাই এবারে কিস্যু প্ল্যান করিনি। শুধু মাথার ওপর একটা ছাদ দরকার হবে, আর এক পিস বাহন। এইদুটো বুক করে চুপচাপ বসে রইলাম আঠেরো তারিখ অবধি। ঊনিশের একবেলা, কুড়ি আর একুশ -- প্ল্যানিং হলো আঠেরোর রাতে। ভাটের পাতায় তানিয়াদি বলে রেখেছিলো মাল্টনোমাহ ফল্‌সের কথা, রিভার গর্জের কথা। তার আগেই উইকিপিসি মাউন্ট হুডের ছবি দেখালো। দেখে মন এহলো স্রেফ একখানা খুড়োর কল। অমন একটা পাহাড় দেখতে কয়েকশো মাইল ড্রাইভ করা যায়। কিন্তু সেকথা পরে। আগে শহর পোর্টল্যান্ড।
  • Tim | 67.88.206.99 | ২২ মার্চ ২০১০ ১০:০৯443104
  • ১৪ই মার্চ, রবিবার থেকে ১৮ই মার্চ, বৃহস্পতিবার অবধি উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু অভিজ্ঞতা হলোনা।
    বারতিনেক ওড়াউড়ি করে ডেল্টা যখন পোর্টল্যান্ডে এনে ফেললো, ততক্ষণে বারোটা বেজে গেছে। আকাশ থেকেই দেখলাম, খানতিনেক তুষারাবৃত শৃঙ্গ, তার মধ্যে একটা মাউন্ট হুড বলে চিনতেও পারলাম। ক্যামেরা ব্যাকপ্যাকেই ছিলো, কিন্তু এইসব ক্ষেত্রে যা করি, অর্থাৎ পড়িমরি করে প্লেনের জানলা দিয়ে ছবি তোলা --- সেরকম কিছু করলাম না। কেন জানিনা। এই ট্রিপে এইরকম অনেককিছু করেছি ও করিনি, যেগুলো ভেবেচিন্তে করা না। কিন্তু তার ফলে শুধুই বোনাসের ঘরে পয়েন্ট জমেছে। যেন সেহওয়াগের ব্যাটিং, আর বিপক্ষ অধিনায়ক ইচ্ছে করে অ্যাটাকিং ফিল্ডিং সাজিয়েছে।

    তো, যে কথা হচ্ছিলো। পোর্টল্যান্ড। নামতেই ম্যাক্সট্রেন। রেড, ব্লু, গ্রিন আর ইয়েলো -- লুডোর ছক পেতে বসে আছে আজব শহর। এত শস্তা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট আর দেখিনি। ডাউনটাউন এলাকায় ট্রেন ফ্রি। ডাউনটাউনেই স্ট্রিট ফুড -- বহুদিন পরে রাস্তার ধারের খাবারের স্টল দেখলাম। এখন ভারতেও বড়ো শহরে মলের দাপটে এসব উঠে যেতে বসেছে, অথচ হইহই করে শস্তার খাবার চেটেপুটে খাচ্ছে ঝাঁ চকচকে শহরের মানুষ -- দেখে ভালো লাগলো। চায়নাটাউনটা বেশ বড়ো। আমি ওয়াশিংটন ডিসিরটা দেখেছি। তার থেকে বেশ বড়ো মনে হলো।

    ওয়াটারফ্রন্ট এলাকা, নর্থ ইস্ট, নর্থ ওয়েস্ট আর ডাউনটাউন এই মোটামুটি স্থলভাগের পরিচয়। জলের মধ্যে উইলামেট নদী। নদীর ওপর তিনটে ব্রিজ। একটা তার মধ্যে বেশ পুরোনো, নাম স্টিলব্রিজ। ট্রেনটা যখন নদী পেরিয়ে এয়ারপোর্টের দিকে যায় তখ সেখান থেকেও দেখা যায় মাউন্ট হুড। একবগ্গা ছুঁচলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।
  • Blank | 170.153.65.102 | ২২ মার্চ ২০১০ ১১:৪৪443115
  • এই যে আমি টিম কে কেমন কত্তদিন বইমেলা নিয়ে গেলুম, আর ইদিকে টিম আমাকে পোর্টল্যান্ড নিয়েও গেলো না !!!! কি অন্যায় !!!!! পিতিবাদ্‌দ্‌দ্‌দ্‌দ্‌দ্‌দ
  • SS | 131.193.196.148 | ২২ মার্চ ২০১০ ২২:২৭443117
  • তারপর?
    পোর্টল্যান্ডে একটা পুঁচকে পার্ক আছে, দেখেছেন?
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৩ মার্চ ২০১০ ০১:১০443118
  • এইমাত্তর ল্যান্ড করলুম। কালকে এয়ারপোর্ট থেকেই লিখছিলাম। এট্টু জিরিয়ে নিয়ে আসছি, সঙ্গে থাকুন। পুঁচকে পার্কটা কি নদীর ধারে?
  • Pintu | 82.130.98.92 | ২৩ মার্চ ২০১০ ০১:৩৫443119
  • না। পার্ক টা নদী পেরিয়ে। ব্লু বা রেড লাইনের ট্রেন। একটা মজার স্ট্যাচু আছে ওখানে (যদিও নদীর কোনদিকে আস্তানা সেট important)।

    বেশ শহর Portland
  • SS | 131.193.196.148 | ২৩ মার্চ ২০১০ ০২:৩৪443120
  • দু ফুটের Mills End Park এর কথা বলছিলাম। পিবিএসে খুব দেখায় পুঁচকেতম বলে। নিজে পোর্টল্যান্ড যাইনি কখনো।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৩ মার্চ ২০১০ ০৭:১৯443121
  • শুক্রবার দুপুরে আস্তানা বদলে উঠে এলাম শহরের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে। হোস্টেলে জিনিসপত্র রেখে, ম্যাক্স ট্রেন (ব্লু/রেড দুটোই যায়) ধরে ওয়াশিংটন পার্ক। জায়গাটা বিভারটন/হিল্‌সবোরোর দিকে পড়ে। বিশাল এলাকা জুড়ে নানারকম হাইকিং ট্রেইল আর মাঝে মাঝে একেকটা বিশেষ এলাকা, যেমন রোজ গার্ডেন, জাপানিজ গার্ডেন ইত্যাদি। এছাড়া একপাশে দু-তিনটে ছোটোদের অমিউজমেন্ট পার্কের মতও আছে। আমি এসব কোনোটাই দেখিনি। পাশ কাটিয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে একটা ট্রেইল ধরে চলে গেছি। পায়ে হেঁটে পুরো পার্ক ঘুরতে হলে কয়েকদিন লেগে যাবে, তাই খানিকটা হাঁটাহাঁটি করে আর ছবি তুলে টুলে নেমে আসবো- এইটাই প্ল্যান।
    সবথেকে কাছে পড়লো ওভারলুক ট্রেইল। রাস্তা থেকে চড়াই ভেঙে খানিকটা উঠতেই দৃশ্যপট বদলে গেল। চেরি, ওয়ালনাট ও আরো সব নাম না-জানা গাছের সারি (নাম অবশ্য চাইলেই জানা যায়, লেবেল করা আছে) মিলে বেশ মনোরম পরিবেশ। একেবারে টঙে উঠে একটা ভিউপয়েন্ট পাওয়া গেল। সেইখানে পৌঁছে ইতিউতি চাইতেই দেখি - সামনে দাঁড়িয়ে সেন্ট হেলেনা পিক। মুহূর্তে মন ভালো হয়ে গেল। ভিউপয়েন্ট বরাবর একটা ফলকে আঁকা আছে শৃঙ্গের জ্যামিতিক অবস্থান, মানে কিনা কত ডিগ্রি কোণে তাকালে দেখা যায় তাকে - সেইসব তথ্য। ফলক পড়ে জানা গেল ডানদিকে তাকালে হুড এবং বামদিকে আরো একটি শৃঙ্গও দেখতে পাওয়ার কথা, কিন্তু সেসব গাছের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে। হয়ত পার্কের অন্য কোন প্রান্ত থেকে এখনও দেখা যায় তিনটে পিকই।
    ঘড়িতে বলছে সন্ধে হতে দেরি নেই, তাই নেমে এলাম। অবশ্য তার আগেই আরো খানিকক্ষণ ঐ চত্বর টইটই করে নিয়েছি। ট্রেইল থেকে নামার সময় জনা দুই হা-ক্লান্ত হাইকারের সাথে গপ্পগাছা করে জানা গেল কোনদিকে দিয়ে হাঁটতে থাকলে সবথেকে কম সময়ে পার্কের সবথেকে বেশি অংশ ঘুরে নেওয়া যায়। ওদের ধারণা হয়েছিলো আমারো সেইরকম ইচ্ছে। তাই আমাকে ম্যাপ্ট্যাপ এঁকে বোঝালো খানিক। লোভ দেখালো ফ্রি ফুডের। খুব উৎসাহ দেখিয়ে গপ্প করে তারপর কয়েক পা হেঁটেই ফিরতি ট্রেনের টিকিট কাটলাম। এয়ারপোর্ট যেতে হবে গাড়ি তুলতে।
    ম্যাক্স ট্রেনে করে এয়ারপোর্ট যাওয়ার পথে শহরের আরো কিছু ছবিটবি তোলা গেল। নিতান্তই আটপৌরে মুহূর্তের ছবি সব। আড়মোড়া ভেঙে শহর সপ্তাহান্তের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, সন্ধে পেরিয়ে রাত নামলেই ব্যস্ত হবে পোর্টল্যান্ড। গাড়ি নিয়ে, চায়নাটাউনে খেয়ে, যখন হোস্টেলে ফিরলাম তখন রাত প্রায় দশটা। ঘুম ঘুম পাচ্ছে সারাদিনের ঘোরাঘুরিতে, এদিকে এখন ঘুমোলেই সমস্ত মাটি। এইবারেই তো আসল প্ল্যানিং। কাল সকালেই যাত্রা শুরু - গন্তব্য মাউন্ট হুড, এবং সময়ে কুলোলে কলম্বিয়া রিভার গর্জ। এবং ইত্যাদি।

    হোস্টেলের ডর্মে এসে বেশ সন্দেহ হলো রাতে আদৌ ঘুম হবে কিনা। ম্যাপ পয়েন্টিং সেরে, ফ্রন্ট ডেস্কের ছেলেটির থেকে খুঁটিনাটি জেনে যখন ঘুমোতে গেলাম তখন সাড়ে বারোটা। ঘর ঘুরঘুট্টি অন্ধকার, শুধু একটা সবুজ আলোয় লেখা একজিট জ্বলছে। ওরই মধ্যে সেলফোনের আলোয় বাঙ্কে উঠে পড়া গেল। তারপর শুরু হলো এক বিচিত্র কার্য্যক্রম। পরিপাটি করে ভাঁজ করা কম্বলটা খুলে নিয়ে শুয়ে পড়বো, এমন সময় দেখি একপাশে সাদা রঙের ভাঁজ করা আরো একটা কি। চাদর হবেওবা। ভেবে টান মেরে সেটা খুলেই দেখি, চাদর তো নয়। কিসের একটা কভার। বালিসের কভার না, কারণ সেটা আগেই দেখেছি। ভাবলাম হোস্টেলের জন্য নির্মিত বিশেষ বেডক্‌ব্‌হার। তো, সেটা পাতার চেষ্টা করে দেখি, নাহ্‌! ভবি ভুলবার নয়। কোনদিকেই আঁটছে না। এদিকে দৈর্ঘ্য-প্রস্থ যা তাতে কোনমতে হয়ে যেতেও পারে। তাই মিনিট কুড়ি চেষ্টা করলাম আরকি। তারপর বোঝা গেল ওটা কম্বলের কভার। কুটকুটে কম্বলের শরীর যাতে মানবশিশুর রেশমকোমলত্বকে কোন স্মৃতিচিহ্ন না রেখে যায়, তাই কর্তৃপক্ষের এই সাধু প্রয়াস।
    অত:পর বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করে শুয়ে পড়লাম। তখন কম্বল আর আমার মাঝে দেওয়াল তুলেছে সেই অপূর্ব কভার, যেন তিনথাক কেকের মত লেয়ারে লেয়ারে অবস্থান।
    এতক্ষণ খেয়াল হয়নি, এবার কান একটু ফুরসত পেল। সমুদ্র বেশ দূরে, তবুও চতুর্দিক থেকে নাসিকাগর্জনে মনে হচ্ছে বালুকাবেলায় শুয়ে আছি। চোখে ঈর্ষাজর্জর এগজিটের জোরালো সবুজ আলো, কানে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস আর মনে ভয়ানক দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমোবার বৃথা চেষ্টা করে রাত কাটলো। সকালে এতটা ড্রাইভিং --- টানতে পারবো তো?
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৩ মার্চ ২০১০ ০৭:২১443083
  • গুচ্ছ টাইপো হয়েছে। হওয়ারই কথা। এখনও অন্তত ঘন্টা দশেক ঘুমোনো দরকার।

    এসেস,
    না আমি ঐ পার্কটা দেখিনি মনে হয়। আমার দৌড় ওয়াটারফ্রন্ট এরিয়া আর ডাউনটাউন। যতটা হেঁটে আর ট্রেনে যাওয়া যায়। পরে গাড়ি নিয়ে তো বেরিয়েই পড়লাম।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৫ মার্চ ২০১০ ০৯:১৯443084
  • পরদিন, অর্থাৎ শনিবার সক্কাল সক্কাল বেরিয়ে পড়া গেল। হোস্টেলে প্রচুর টুরিস্ট, সবাইই প্রায় ব্যাকপ্যাকার, এবং হয় কনফারেন্স বা আপিসের কাজে এসে একটু ঘুরে নিচ্ছে। তাদেরই একজন, আদতে ইউকের ছেলে, সকালে হাই তুলতে তুলতে বললো - যাও ভালো করে স্কি-টি করে এসো। আর হ্যাঁ, সানবার্নের লোশন নিয়ে যেও।
    ভালো করে চেয়ে দেখলাম বেচারার মুখ পুড়েটুড়ে এক্কেরে যাতা অবস্থা। লোশন আর কোথায় পাবো, তাছাড়া সেসব হ্যাঙ্গামের মধ্যে কেই বা যেতে চায়, তাই দুগ্গা বলে গাড়িতে স্টার্ট দিলাম। ওহো, বলতে ভুলে গেছি, আগের দিন রেন্টাল থেকে গাড়ি তুলতে গিয়ে দেখি একটা কিয়া, একপিস শেভি আর একখানা টয়োটা ইয়ারিস পড়ে আছে। তো, টয়োটাই নিয়েছিলাম। এইটুকু একরত্তি গাড়ি, এ নিয়ে যে কিকরে পাহাড়ে উঠবো সেটা ভেবে একটু নার্ভাস লাগছিলো। বিশেষ করে আসেপাশে অনেকে চেনটেন জুড়ে গাড়ি চালাবার কথা বলছিলো যখন তখন তো মনে হচ্ছিলো এ যাত্রায় আর ফিরে আসা হলনা বোধয়। পরে অবশ্য ইয়ারিসের কেরামতিতেই দুর্ভোগের হাত থেকে বেঁচে গেছিলাম। সে কথা যথাস্থানে।
    শহর থেকে বেরোতেই মাঝেমধ্যে উঁকি দিয়ে যেতে লাগলো পর্বতপ্রবর। অতিকষ্টে ফ্রিওয়ের ধারে গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলার লোভ সামলে স্যান্ডি অবধি পৌঁছলাম। স্যান্ডিকে বলা হয় গেটওয়ে অফ মাউন্ড হুড। ছোট জনপদ। জায়গায় জায়গায় হুডে যাবার নির্দেশিকা দেওয়া, বেশ কিছু রেস্তোঁরা ছাড়া আপাতদৃষ্টিতে কিছু নেই বলে মনে হলো। কিন্তু এখানেই একটা ভুল করলাম, আর কিকরে যেন ভুলটা ঠিক হয়ে গেল। হাইওয়ে ২৬ ইস্ট ধরে সোজা চলে গেলে হুডে পৌঁছে যাবার কথা। দিব্যি সোজাই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কি খেয়াল হলো, স্যান্ডি থেকে বাঁদিকে ঘুরলাম। কেমন মনে হলো ঐদিক দিয়ে গেলে কেমন হয় দেখি। তো, সেই রাস্তাটা একটু সরু, দুটো গাড়ি পাশাপাশি সাবলীলভাবে যাওয়ার জন্য যতটা স্পেস লাগে ততটাই চওড়া। সেখান দিয়ে খানিক এগিয়ে ডানদিকে একটা অবিস্মরণীয় দৃশ্য পাওয়া গেল। রাস্তার ধারে খানিকটা খোলা জায়গা। গাড়ি থেকে সেদিকে তাকিয়ে পরিষ্কার ভিউ পাওয়া গেল বলে নেমে ভালো করে দেখতে গেলাম। নিচে, অনেক নিচে দিয়ে একটা নদী বয়ে যাচ্ছে। পরে শুনলাম নদীটার নামও হুড। নদীর পরে খানিকটা ঘন জঙ্গল, কালচে সবুজ রঙের সে ঠাসবুনোটে চোখ চলে না, শুধু গাছের মাথাগুলো দেখা যায়। তারপরে সবুজের আরো একটা শেড। তারপরে হালকা সবুজ একফালি উপত্যকা। সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে। তার ও পর থেকে শুরু হয়েছে মাউন্ট হুড। তাকিয়ে আছি তো তাকিয়েই আছি। ব্যাকগ্রাউন্ডে নীল আকাশ, এত রঙিন, এত নিখুঁত, এত অবিশ্বাস্য নিখুঁত ছবির মত দৃশ্য আশা করিনি। এমনকি ধোঁয়ার কুন্ডলীটা পর্যন্ত ছবির ব্যকরণ মেনে যেন কেউ বসিয়ে দিয়েছে।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৫ মার্চ ২০১০ ০৯:৪৮443085
  • অতএব আরো এগিয়ে চলা। আরো কাছ থেকে মুখোমুখি দেখা হবে, এই আশায় ছুটতে থাকা। দুপুর একটা নাগাদ নাগাড়ে ড্রাইভ করে পৌঁছলাম টিম্বারলাইন লজসংলগ্ন এলাকায়। ঐ অঞ্চলে ঐটাই সবথেকে বড়ো স্কি-রিসর্ট। আমার স্কি করার সময় নেই, কিন্তু মাউন্ট হুডের বেশ করে ছবি তুলতে হবে, আর তারজন্যও সবথেকে ভালো এলাকা ঐ টিম্বারলাইন। হুডের মুখোমুখি বসিবার জায়গা আরকি। যা ভাবা গেছিলো, তার থেকেও কাছ থেকে ধরা দিলো সেই পর্বতশৃঙ্গ। মনে হলো হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যায়। বহু বহুদিন পরে এত কাছ থেকে সত্যিকারের পাহাড় দেখলাম। ছবি তোলার শিক্ষানবিশিও জারি রইলো।
    পাহাড় থেকে নেমে এসে আবার পুবমুখো চললাম ২৬ নং হাইওয়ে বরাবর। পরের স্টপ কলম্বিয়া রিভার গর্জ। ২৬ ধরে আরো একটু এগোতেই মাউন্ট হুড ন্যাশনাল পার্ক শুরু হলো (বা হয়ত আগেই শুরু হয়েছিলো, ঐখানে একটা বিশাল নোটিসে সেটা প্রথম খেয়াল করলাম)। সেও এমন জায়গা যে না দাঁড়ালেই নয়। রাস্তাটা একটা ব্রিজে গিয়ে শেষ হয়েছে। ব্রিজটা একটা নদীখাতের ওপর দিয়ে গিয়ে জুড়েছে রাস্তার অপরপ্রান্তকে। নদীটা, বলা বাহুল্য, হুড। সে এঁকে বেঁকে পর্বতান্তরালে অদৃশ্য হয়েছে। আর একপাশে, নীল ক্যানভাসের অনেকখানি জুড়ে দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং মাউন্ট হুড। আবারো অবাক হওয়ার পালা। একটু আগেই অত কাছ থেকে দেখা পাহাড় এখন কত অন্যরকম লাগছে।
    এরপর যতই চলতে থাকলাম ততই সেই পাহাড় নবনব রূপে এসে দেখা দিলো। পুব আর পশ্চিম দিক থেকে তাকে এতই আলাদা লাগলো যে অসংখ্যবার গাড়ি থামিয়ে নামলাম। বৃত্তাকারে এরকম চলতে চলতেই একসময় ২৬ নং হাইওয়ে থেকে বেরিয়ে ৩৬ নম্বরে পড়লাম। সেই রাস্তা গিয়ে ৮৪ ফ্রিওয়েতে মিশবে, সেখানেই হুড রিভার কলম্বিয়াতে মিশেছে। এ রাস্তারও বর্ণনা দেবার মানে হয়না। একের পর এক পাহাড় আর উপত্যকা পেরিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা যাদের আছে তারাই জানে কেমন লাগে মাইলের পর মাইল জনমানবহীন ধূ ধূ জঙ্গল আর পাহাড় দিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে যেতে।
    সেই রাস্তা একসময় শেষ হলো। এসে গেলাম কলম্বিয়া রিভার গর্জ। নদীর বিস্তৃতি দেখে তাক লেগে যায়। হওড়ার গঙ্গার কথা মনে পড়ে যায়, যদিও কলম্বিয়া নদী তার থেকে খানিকটা কমই হবে হয়ত চওড়ায়। সারিসারি পাহাড় পরপর দাড়িয়ে থেকে পথ করে দিয়েছে নদীকে। পড়ন্ত বিকেলে আবছা হয়ে আসা দূরের সেই দৃশ্য মনখারাপ করে দেয়। তড়িঘড়ি ছবি তুলে ছুটি, মাল্টনোমাহ ফল্‌স পানে। পথে অবশ্য বারকয়েক থামতে হয়, বারবার থেমে নিশ্চিত হয়ে নিতে হয় সবটা, সমস্তটাই চোখ বা লেন্সে ধরা পড়লো তো! প্রতিবারই নদী মুচকি হাসে।
    জলপ্রপাত দেখা হলো। সুন্দর তো অবশ্যই, তবে মন জুড়ে তখনো নদী আর পাহাড়। বিশেষ করে পাহাড়। সূর্য্য ঢলে পড়ছে, মন বলছে এই শেষ সুযোগ। শুনেছি সূর্যাস্তের হুড নাকি অসাধারণ। দেখেওছি, ছবিতে। সন্ধ্যার প্রাক্কালে লাল টকটকে লাভাসদৃশ মাউন্ট হুড। তো, দৌড়োলাম আবার। চক্রাকারে ঘুরে এসে সেই স্যান্ডি ভিলেজ। ততক্ষণে কনকনে হাওয়া দিচ্ছে। আকাশের মুখ ভার। পরের দিন নাকি বৃষ্টি হবে, হয়ত তারই তোড়জোড়।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৫ মার্চ ২০১০ ১০:০৮443086
  • পূর্বোক্ত ভিউপয়েন্টে পৌঁছে দেখা গেল অবশ্য সূর্য্য ডুবতে খানিক দেরি আছে। এতক্ষণে, সারাদিনের দৌড়ের পর, একটুখানি অবসর পাওয়া গেল। চুপচাপ ক্যামেরা হাতে বসে রইলাম একটা পাথরের ওপর। সেই সুযোগে চারপাশে একটু চোখ বুলিয়ে নেয়া গেল। একটু দূরে দূরে বাড়ি আছে, দেখা গেল। আরো অল্প অপেক্ষা করতেই হাঁটতে বেরোনো একদল স্থানীয় বাসিন্দার সাথে দেখা হয়ে গেল। ওঁরা সকলেই ষাটোর্ধ্ব বলে মনে হলো। সংখ্যায় জনা পাঁচ। সামান্য কথাবার্তা বলার পরে একজন একটা ক্যামেরা বের করে আমাকে ওঁদের গ্রুপ ফতো তুলতে দিলেন। আমি অবাক হয়েছি বুঝে বললেন, যদিও একমাইলের মধ্যেই থাকেন, তবু ছবি তুলবার ফুরসত হয়ে ওঠেনা।

    তারপর আরো অপেক্ষা। পাঁজিতে নাকি লিখেছে সন্ধে সাতটার পরে সূর্যাস্ত। জানতাম না, পরবর্তী আলাপির মাধ্যমে জানলাম। আমি তো বসেই আছি। দিব্যি লাগছে হালকা ঠান্ডা হাওয়ায়। এমন সময় দেখি কাঁধে ট্রাইপড, আমারি মত ক্যামেরা কাঁধে আরেক মূর্তিমান। দেখে মনে হলো চৈনিক। সে এসে দিব্যি আমাকে পাত্তা না দিয়ে ক্যামেরা সেট করে বসলো। আমি তো ভাবছি এ ব্যাটা নির্ঘাৎ এলাকার ছেলে, ঠিক সময়ে এসেছে যাতে ছবি তুলতে পারে। বেশ মনে মনে খুশিও হলাম যে অন্তত জায়গাটা ঠিক বেছেছি। ওমা, আমাকে অবাক করে সে এরপর আমার দিকে চেয়ে একটু ইতস্তত করে হেসে জিগ্যেস করলো,- এখান থেকে সূর্যাস্ত দেখা যাবে তো? বোঝো!
    এরপর বেশ গপ্প জমে গেল তার সাথে। ভিয়েতনামের ছেলে, কানাডায় পড়াশুনো করে। আমারই নৌকার যাত্রী, অর্থাৎ কলা বেচা সেরে এখন রথ দেখতে এসেছে। দুজনে ঠায় ঘন্টাখানেক বসে বসে হ্যাজালাম, আর তার মধ্যে আকাশ কালো করে মেঘ ছেয়ে এলো। পরিষ্কার বোঝা গেল আজকের অধিবেশন আর বেশিদূর গড়ানোর চান্স নাই।
    আমরা মুখভার করে পরষ্পরকে গুচ্ছের বাইটাই বলে ফেরার পথ ধরলাম। পরের দিন যে ভারি বর্ষণ অপেক্ষা করে আছে বোঝাই যাচ্ছিলো। প্ল্যানমোতাবেক আমার সেদিন সমুদ্দুরের দিকে যাওয়ার কথা। প্রশান্ত মহাসাগরের সাথে পেথ্‌থমবার শুভদিষ্টি হওয়ার আশায় জল ঢালবার সমস্ত আয়োজন প্রস্তুত দেখে অলরেডি যথেষ্ট ব্যাজার মুখটা আরো ব্যাজার করে ঘুমোতে গেলাম।
  • a x | 99.165.170.39 | ২৫ মার্চ ২০১০ ১০:২৩443087
  • পোর্টল্যান্ড শহরটা শুনেছি আমেরিকার সবচেয়ে প্ল্যানড্‌ শহর। আর্কিটেকচরালি খুব সুন্দর। ইন জেনেরাল লোকে খুবই পরিবেশ সচেতন।

    শহরের এইদিকগুলো কি দেখলে সেটাও লিখবে টিম?
  • Blank | 170.153.65.102 | ২৫ মার্চ ২০১০ ১৬:৫৪443088
  • ছবি কইইইই !!
  • nyara | 203.83.248.37 | ২৫ মার্চ ২০১০ ২২:৪৭443089
  • খুব সুন্দর শহর, কিন্তু কিছু জয়গা এত বেশি প্ল্যান করা আর ওয়েল-মেন্টেইন্ড যে একটু অ্যান্টিসেপ্টিক মতন লাগে।

    অক্ষর উত্তরে বললাম।
  • Tim | 198.82.20.171 | ২৫ মার্চ ২০১০ ২৩:৩০443090
  • অক্ষকে,
    আমি খুব খুঁটিয়ে দেখার সময় পাইনি। মানে শহরের মধ্যেটা আরকি। তবু কয়েকদিন তো হাঁটাহাঁটি কল্লাম। মনে করে করে লিখতে হবে। এ ব্যাপারে মনে হয় ন্যাড়াদার অভিঞ্জতা বেশি। এক হপ্তায় হোটেলে থেকে কি আর শহর চেনা যায়?
    আমি বরং লিখবো অল্পস্বল্প মানুষজনের কথা, অন্যরকম যা দেখলাম। একটা দুটো ঘটনায় কেমন নাড়া দিয়ে গেছে, যদিও সেসব একেবারেই নতুন কথা নয়। তাও লিখবো। একেবারে শেষে, ফিল গুড টাইপের খুশিয়ালি জিনিসপত্তর সাঙ্গ হলে তারপর।
  • Hukomukho | 198.184.5.252 | ২৫ মার্চ ২০১০ ২৩:৩৪443091
  • গোলা হচ্ছে লেখাটা । চালিয়ে যাও টিমভাই । কিন্তু ব্ল্যাংকির দাবিমত আমার ও এক প্রশ্ন "ছবি কই ??" আহা এমন জায়গার বর্ণনা দিলে ভায়া, ল্যান্ডস্কেপ গুলো কেমন দাঁড়িয়েছে তাই ভাবছি বসে বসে , আর অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি লেখা আর ছবির জন্য।
  • nyara | 203.83.248.37 | ২৫ মার্চ ২০১০ ২৩:৩৬443092
  • হে হে, ন্যাড়াদার অভিজ্ঞতা গাড়ি করে তিনদিন। নাকি দুদিন!
  • Tim | 198.82.20.171 | ২৫ মার্চ ২০১০ ২৩:৫৩443094
  • ছবিও আছে। এত ছবি যে ঝাড়াইবাছাই করে তুলতে হবেক।
  • Shuchismita | 71.201.25.54 | ২৬ মার্চ ২০১০ ০৭:১২443095
  • ভারী সুন্দর লেখা। সল্টলেক সিটি থেকে ইয়েলোস্টোন যাওয়ার রাস্তাটার কথা মনে পড়ছে - ভার্জিন রিভারকে পাশে রেখে। এটা চলুক দৌড়ে দৌড়ে। আর সেই সাথে ছবির জন্যও প্রবল দাবী জানিয়ে গেলাম।
  • pi | 128.231.22.89 | ২৬ মার্চ ২০১০ ০৭:৩৯443096
  • শুভদৃষ্টি হল ?
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৬ মার্চ ২০১০ ১০:৩২443097
  • রবিবার সকাল। ঘুম ভাঙতেই জানলা দিয়ে বাইরে তাকালাম। মেঘলা আকাশ, কিন্তু বৃষ্টি শুরু হয়নি এখনও। ঘড়ি বলছে সাতটা। আগেরদিন একজন বলছিলো সব জায়গায় নাকি একসাথে বৃষ্টি নাও হতে পারে। মানে পোর্টল্যান্ডে ধরুন ঝমঝমিয়ে বিষ্টি, ওদিকে সমুদ্রে দিব্যি রোদটোদ উঠেছে, এরকমটা নাকি প্রায়ই হয়। বিশ্বাস হয়নি। ওরকম টুরিস্টভোলানো কথা সবাই বলে।
    তবে আমি কিনা নাছোড় পাবলিক, তাই ঐ মেঘলা আর স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়াতেই রওনা দিলাম। হোস্টেলে তখনও বেশিরভাগ লোক ঘুমোচ্ছে। একে রোব্বার, তায় মেঘলা। আপশোষ যে একেবারেই হচ্ছিলো না তা নয়। ঘুম আর ট্রিপ, দুকূলই হারানোর আপশোষ। তাও বেরিয়ে পড়া গেল।
    এবং, ভাগ্যিস বেরিয়ে পড়া গেল। ফ্রিওয়ে ধরে খানিক এগিয়ে এবারে মাউন্ট হুডের উল্টোমুখো রাস্তা, অর্থাৎ ২৬ ওয়েস্ট ধরতে হলো। সেই রাস্তায় পড়তেই মনটা ভালো হয়ে গেল। বৃষ্টি তখনও হচ্ছেনা, আকাশ ছেয়ে মেঘের কারিকুরি। মনে হলো, তাইতো! মেঘলা দিনের সমুদ্র তো কম ইন্টেরিস্টিং হওয়ার কথা নয়! অতএব চালাও পানসি টিলামুক।
    পথে পড়লো একের পর এক গ্রাম, রাস্তার কোল ঘেঁষে পাহাড়, আর ক্ষেত। বেশ খানিকটা ড্রাইভ করে টিলামুক রিজার্ভ ফরেস্টে ঢুকলো গাড়ি। তখনও বুঝিনি কি ঝামেলা ওৎ পেতে আছে। টিলমুক একটা গ্রাম টাইপের কিছুই ভেবেছিলাম। দিব্যি এফেমে কাϾট্র মিউজিক চলছে, ইয়ারিসকে কনভার্টিবল বলে মনে হচ্ছে ধূধূ রাস্তার জন্য, এমন সময় কেলেঙ্কারিটা ঘটলো। ৬৫ মাইলে সাঁ করে বেরিয়ে যেতে যেতে কি একটা সাইনবোর্ড দেখলাম। গ্যাস স্টেশন কথাটা শুধু পড়া গেল। তারপরেই একটা গ্যাস স্টেশন বেরিয়ে গেল তীরের মত। আমি বিন্দাস চলতে থাকলাম। মিনিট দশেক মত ড্রাইভ করার পরেই দেখি আরো একটা সাইনবোর্ড, তাতে লেখা আমি এখন টিলামুক রিজার্ভ ফরেস্টে ঢুকছি। বেশ, ভালো কথা। দিব্যি কুয়াশায় ঝাপসা প্রায়ান্ধকার জঙ্গল, পুরোটাই পাহাড়ের গা বেয়ে বেয়ে চলতে হবে। পাশ দিয়েই একটা নদী গেছে, সেটার নামও মনে হয় টিলামুক (ভুলও হতে পারে, মনে নেই)। তো চলতে থাকলাম।
    রাস্তা ক্রমশই সরু আর অন্ধকার হয়ে আসতে লাগলো দেখে একবার আড়চোখে ফুয়েল ইন্ডিকেটরের দিকে তাকালাম। দেখি এম্পটির আগের দাগে এসে ঠেকেছে! এবং এতক্ষণে সেই প্রথম নোটিসবোর্ডটার মানে জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেল। ওখানে নির্ঘাৎ লেখা ছিলো পরবর্তী গ্যাস স্টেশন অমুক মাইলের পর পাবেন। তাও টয়োটার ওপর ভরসা রেখে চলতে থাকলাম। এমন ফুয়েল এফিশিয়েন্ট গাড়ি, এমন বিপদের দিনে সে কি মুখ ফিরিয়ে নেবে?

    ব্যাপারটা বেশ ঘোরালো হয়ে উঠলো আরো মিনিট কুড়ি পর। এর মধ্যে রাস্তা এঁকেবেঁকে উঠেছে নেমেছে, জঙ্গল ঘন হয়েছে, নদী কখনও ডানদিকে কখনও বাঁদিকে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে ছুটেছে পাল্লা দিয়ে--- কিন্তু গ্যাস স্টেশন তো কোন ছার, একটা কুঁড়েঘর পর্যন্ত চোখে পড়েনি। ভাবনা হলো। জঙ্গলে আটকে পড়ার ভাবনা নয়, কারণ রোডসাইড অ্যাসিস্ট্যান্সে খবর দিলে তারা ঠিক এসে উদ্ধার করবে। সারাদিনটা নষ্ট হওয়ার ভাবনাটাই তখন জাঁকিয়ে বসেছে। বারবার গাড়ি থামিয়ে বেশ কিছু ফটো তোলার কথা ছিলো। ফুয়েল বাঁচাবার জন্য সেসব বন্ধ হলো। গান বন্ধ তো আগেই হয়েছিলো। খালি গুনগুন করে গুপির গানটা গাইতে গাইতে স্টিয়ারিং ধরে প্যাঁচার মত বসে রইলাম। কতক্ষণ পরে জানিনা, একটা চলটা ওঠা বাড়ি দেখা গেল। কাছে গিয়ে দেখি স্থানীয় স্টোরের মত। কফি, কুকি আর পাঁউরুটি-কেক জাতীয় জিনিস পাওয়া যায় কেবল। ফুয়েল ট্যাঙ্কি ততক্ষণে এম্পটি ছুঁইছুঁই। কি আর করি, ঐ দোকানেই জিগ্যেস করতে গেলাম নিকটবর্তী গ্যাস স্টেশনের কথা।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৬ মার্চ ২০১০ ১১:১৪443098
  • দোকান চালান এক ভদ্রমহিলা, আর তাঁর মেয়ে। একজনও ক্রেতা নেই, তবু আনন্দের সাথে দোকান সাজিয়ে চলেছে দুজনে। ওখানেই জানা গেল আরো ২৩ মাইল গেলে জঙ্গল ফুরোবে। তারপর গ্যাস স্টেশন। অতএব দীর্ঘশ্বাস ( বলা বাহুল্য, শুধু দূরত্বের জন্য নয়। হাতে যদি একটু সময় থাকতো!)। অতএব চরৈবেতি।
    পরের চল্লিশ মিনিট আর ফুয়েলের দিকে তাকালামই না। শুনেছি এম্পটির পরেও তেলের একটা অংশ থাকে, যা দিয়ে চল্লিশ মাইল অবধি চালানো যায়, এবং সেটা নাকি পাহাড়ি রাস্তায় কাজ করেনা। তেইশ মাইলের অভিযান শেষ হলে পর দেখলাম কাঁটা তখনও এম্পটিতেই আছে। মানে টেকনিকালি এম্পটির পরে অংশ এখনও ধরা হয়নি। ধন্য ফুয়েল এফিশিয়েন্সি।
    ঐ শেষ চল্লিশ মিনিটেও কিন্তু চোখকান খোলাই ছিলো। অজস্র খন্ড খন্ড ছবি পেরিয়ে এলাম পুরো রাস্তাতেই। কুয়াশায় বড়ো অপার্থিব লাগছিলো সেসব। গাড়ি বন্ধ হয়ে বসে থাকতে হলে কেমন লাগতো জানিনা, তবে রাস্তাটা ফুরিয়ে যাবার পর আপশোষই হচ্ছিলো।

    পথের শেষে মিললো টিলামুক। এই সেই গ্রাম যেখান থেকে ১০১ নর্থ ধরে এগোলে পাশেই পাবো প্যাসিফিক। হাইওয়ে ১০১ ধরার আগে ছোট্ট করে একটা ট্রেইল ধরে ঘুরে এলাম। একটা লাইটহাউসের পাশে সমুদ্দুরের সাথে প্রথম শুভদৃষ্টি হলো। আকাশ তখনও বেশ মেঘলা, মাঝে মাঝে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও পড়ছে। তবে সেসব বড়ো তুচ্ছ। ঝকঝকে রোদ্দুরে কেমন লাগে পরে দেখেছি, মেঘলা দিনের অশান্ত সমুদ্রের কাছে সে বড়ো অকিঞ্চিৎকর।
    আরো দেখলাম, একের পর এক পাহাড়, সমুদ্রের গা ঘেঁষে। বিস্তীর্ণ জলাভূমি, অগভীর। ক্যানভাসে হেলাফেলা করে আঁকা আঁচড়ের মত ডাঙা আর জল মিশে অলৌকিক সব ছবি।
    তারপর শুরু হলো হাইওয়ে ধরে চলা। চলা আর মাঝে মাঝেই থেমে চোখ ভরে দেখা। পাহাড়ের পায়ের কাছে সগর্জনে আছড়ে পড়ছে সমুদ্র, এমনটা আমি আগে দেখিনি। বিশাল বিশাল শিলাখন্ড প্রেতের মত জলের মাঝে দাঁড়িয়ে। মেঘে কুয়াশায় পাহাড় আর সমুদ্রে এমন সব পার্মুটেশন কম্বিনেশন করেছে যে এক ঘন্তার রাস্তায় অন্তত ছয়বার গাড়ি থেকে নেমে আসতে হলো। প্র্রতিবারই মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম যে আর দাঁড়াবো না। কিন্তু সময় আর সংযমকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চললাম।
    অবশেষে এলো ক্যানন বিচ। নর্থ ১০১ এর উপর বেশ নামকরা বেলাভূমি। সমুদ্রতীরে খানকয়েক বিরাট পাথরের চাঁই পড়ে আছে। হঠাৎ করে দেখলে কামানের মতই লাগে। মনে পড়ে পাইরেটস অফ দ্য ক্যারিবিয়ানের দৃশ্য। সেইজন্যই ক্যানন বিচ নাম কিনা জানিনা যদিও ( আগে এরকম ভেবে ঠকতে হয়েছে, যেমন কিনা মাউন্ট হুডের আকৃতি হুডের মত বলে ভেবেছিলাম ঐ নাম, পরে দেখা গেল আবিষ্কারকের নামেই নাকি এই নাম)।
    তীরে খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেও মন ভরলো না। চারদিকে তাকাচ্ছি, এর তার গ্রুপ ছবি তুলে দিচ্ছি, এমন সময় চোখে পড়লো দূরের প্রায় আবছ হয়ে আসা একটা লাইটহাউস। সমুদ্রের বেশ খানিকটা ভেতরে একপায়ে দাঁড়িয়ে। জানতাম অসম্ভব, তাও একজন স্থানীয় লোককে জিগ্যেস করলাম -- ওখানে যাওয়া যায়?
    - তোমার নৌকো আছে?
    - নাহ্‌।
    - তাইলে যায় না।
    - ওটা কোন এলাকা? মানে আসে পাশে আর কিছু নেই?
    - ওটা একটা স্টেট পার্কের থেকে কাছে পড়ে। চাও তো সেখানে ড্রাইভ করে যেতে পারো।
    অতএব চললাম ইকোলা স্টেট পার্ক। বেশি দূর নয়, মাত্রই চার মাইল, তবে পুরোটাই চড়াই। সদ্য টিলামুকের বিভীষিকা কাটিয়ে এসেছি, জগতের কোনকিছুকেই তেমন চ্যালেঞ্জিং লাগছে না ( অনেকটা জটায়ুর উটে চড়ার মত আরকি)। তো, উঠে গেলাম।
    ইকোলা পার্কের একেবারে শেষে আছে পাহাড়ের মাথায় ভিউপয়েন্ট। পাহাড়টা এমন যে বেঁকে গিয়ে সমুদ্রের একেবারে ভেতরে গিয়ে শেষ হয়েছে। দুদিকেই দিগন্তবিস্তৃত প্রশান্ত মহাসাগর, তীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলেছে একের পর এক ঢেউ। হাওয়া আর জলের শব্দে কান পাতা দায়। পাহাড়ের একেবারে শেষ প্রান্তে তো দাঁড়িয়ে থাকাও কষ্টকর, এত জোরালো হাওয়া। শোনা গেল ওখানে নাকি তিমি দেখা যায় ( মনে মনে হাসলাম শুনে)।
    ইকোলা পার্ক নি:সন্দেহে দিনের সেরা প্রাপ্তি। তখন সেখানে দাঁড়িয়ে যা মনে হয়েছিলো সেসব ঘরের কোণে বসে ভাবলে বাতুলতা বলে মনে হবে। ঐ ব্যাপ্তি বর্ণনা করার শক্তি নেই আমার।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৬ মার্চ ২০১০ ১১:৪৭443099
  • পোর্টল্যান্ড কেন আমেরিকার বেশিরভাগ শহরই আমার বড্ড বেশি সাজানো লেগেছে। আর্কিটেকচারে আমি জিরো, তাই স্টাডি করা হয়নি কেন সবথেকে ওয়েল প্ল্যান্‌ড সিটি বলে। তবে দুটো তথ্য শুনলাম। পোর্টল্যান্ড নাকি ইউএসের মধ্যে একসময় বাসস্থান হিসেবে এক নম্বরে ছিলো। সত্যি মিথ্যে জানিনা, শোনা কথা। আর, উইলামেট নদীর ধারে এখন যেখানে পেল্লায় পার্ক আর সবুজের ছড়াছড়ি, সেখান দিয়ে নাকি ফ্রিওয়ে যেত আগে। পুরো ফ্রিওয়েটা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শহরের স্বাস্থ্যের জন্য।
    দূর থেকে দেখলে পাহাড়ের গায়ে গায়ে ছড়িয়ে থাকা শহরটা যে কত বড়ো বোঝা যায়। কিন্তু কানেক্টিভিটী খুব ভালো, শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যেতে বেশি সময় লাগেনা। এইসবই মনে আছে।

    এবার বলি দুজনের কথা। একজন, ধরে নেওয়া যাক তার নাম ম্যাথিউ। পোর্টল্যান্ড ডাউনটাউনের কাছে পায়োনিয়ার স্কোয়্যারের ধারের ফুটপাথে বসে গিটার বাজায় সে। প্রথমবারই পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কানে লেগেছিলো। আমি গানের কিছুই বুঝিনা, কিন্তু বড্ড বেসুরো লেগেছিলো তবু। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দেখলাম ছেলেটিকে। হ্যাঁ, ছেলেই বলা উচিত। বয়স কত আর, বড়োজোর চব্বিশ। এমন জোয়ান ছেলে গিটার বাজিয়ে ভিক্ষে করছে কেন? তাও আবার বাজনাটা রপ্ত না করেই!
    ম্যাথিউ এমন একজন মানুষ যাকে সভ্য সমাজ সর্ব অর্থে আনস্কিল্‌ড বলে দেগে দিয়েছে। ম্যাথিউ পড়াশুনো করেনি, অন্যান্য আরো যা যা স্কিল জীবিকার্জনের জন্য দরকার তার কিছুই নেই। শুনতে অদ্ভুৎ হলেও সত্যি, আমরা কি চমৎকার ছাঁচ বানিয়ে ফেলেছি সাফল্য আর ব্যর্থতার। ব্যালেন্স শিটে টিক দিয়ে দিয়ে আমরা নির্ধারণ করে দি অযুতনিযুত ভাগ্য। কোনটা স্কিল আর কোনটা না, আমরাই পাথরের গায়ে লিখে রেখেছি।
    দ্বিতীয়জনের নাম অ্যানি। ম্যাকডোনাল্ডে খেতে ঢুকেছিলাম একদিন। পোর্টল্যান্ডেই। খাবার নিয়ে এক কোনায় বসেছি, ডানদিক ঘেঁষে দেখি এক বুড়ি বসে। গায়ে কালো ঝোলাকোট, চোখে চশমা। হাতে স্মুদির একটা কৌটো, মন দিয়ে চামচে করে খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে। আরো পাঁচজনের সাথেই একেও দেখলাম, মানে কিনা দেখেও দেখলাম না। কয়েক মিনিট পরেই কেন জানি চোখ পড়লো। দেখি সে তখনো একই ভঙ্গীতে বসে আছে। অথচ তার খাওয়া শেষ হয়ে যাওয়ার কথা এতক্ষণে। ভালো করে চেয়ে দেখি বুড়ি বসে বসেই ঝিমুচ্ছে। তখন কৌতূহল হলো। দেখি পায়ের কাছেই একটা বড়োসড়ো পুঁটলি, তাতে ছেঁড়াফাটা জামাকাপড় আর আরোসব কি যেন ঠাসাঠাসি করে রাখা। সামনের টেবিলে স্মুদির কৌটোটা ছাড়া অন্য কোনো খাবারের চিহ্নও নেই। এমনকি যে অর্ধতরল বস্তুটা সে চামচের আগায় করে তোলার চেষ্টা করছে সেটাও আদপে কি বলা মুশকিল। পর্যায়ক্রমে চলছিলো তার ঝিমিয়ে হেলে পড়া, তারপর চটকা ভেঙে বিড়বিড় করে অদৃশ্য শত্রুকে শাপশাপান্ত, আর চামচে-তরলে যুদ্ধ। কয়েক হাত দূরেই বসে আমি এরপর দেখলাম সে একবার নড়েচড়ে বসলো। বোধহয় বুঝেছিলো কৌটোটা খালি হয়ে গেছে অনেকক্ষণ। পুঁটলি থেকে বেরোলো একটা আধময়লা ফয়েল। সেখান থেকে গুনেগেঁথে দুটো স্লাইস মাংসের টুকরো মুখে দিলো। অসহায় চোখে একবার তাকালো স্মুদির কৌটোর দিকে।
    আর আমি পালিয়ে এলাম। যে জঘন্য স্বার্থপর মেকি আর ভন্ড ফ্রেমে নিজেদের সাজিয়ে রেখেছি, সেইখানে।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৬ মার্চ ২০১০ ১২:০৫443100
  • কাল ছবিগুলো তুলে দেবো।
  • I | 59.93.220.116 | ২৮ মার্চ ২০১০ ২১:৪১443102
  • ও কি, টিমি? ছবি দ্যাখতে দ্যায় না ক্যানো? তাড়িয়ে দ্যায় ক্যানো?
  • aka | 24.42.203.194 | ২৮ মার্চ ২০১০ ২১:৪৮443103
  • আমারেও তাড়ায়ে দিল।
  • Tim | 71.62.121.158 | ২৮ মার্চ ২০১০ ২১:৫৪443105
  • এইটা কি হচ্ছে বুঝছিনা। পাবলিক করা আছে তো ফোল্ডারটা। আমাকেও সাইন ইন করতে বল্লো ক্লিক করার পর। অক্কুটের লিং দেবো?
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন