রাজগৃহ। পরিব্রাজনরত গোতম এসে পৌঁছেছেন। বেণুবনে যেখানে কাঠবিড়ালিদের খাওয়ার জায়গা সেইখানে উপবিষ্ট হলেন সন্ন্যাসীসমাগমে। সহসা তাঁর উদরে বায়ু-বিকার দেখা দিল। সন্ন্যাসী আনন্দ দ্রুত সেই রোগের উপশমের লক্ষ্যে এক পথ্য প্রস্তুত করে পরিবেশন করলেন বুদ্ধকে। ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন প্রভু। কিন্তু আমরা পেয়ে গেলাম খিচুড়ির এক সুনির্দিষ্ট পূর্বজ। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
ভাষাতত্ত্বের কম্পাস নিয়ে খিচুড়ির পূর্বজর খোঁজ করতে গিয়ে আমাদের পথ আটকে গিয়েছে কৃসর বা কৃসরা-য়। তার চাল আর তিলের পাক। আজকের খিচুড়ির ইভ কে, সে খোঁজ করতে হলে, খেলা ঘুরিয়ে হাতে নিতে হবে রসনাতত্ত্বের কম্পাস। আর তাতেই খুলে যাবে চাল-ডালের প্রথম পাকের আশ্চর্য এক দুনিয়া। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
মনুর ধর্মশাস্ত্র সহ নানা শাস্ত্রে খাদ্যকে একটি বিশেষ আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কায়েম রাখার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের যে নির্দেশ রয়েছে খিচুড়ির ইতিহাস খুঁজতে বসলেই মেলে পুরাণগুলোতেও ঠিক সেই চতুর কৌশল। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
খিচুড়ির পূর্বজ কৃসর-র খোঁজে ভরতমুনির রুদ্ধশ্বাস নাট্যশাস্ত্র পার করে এবার পার করতে হবে মনুর ধর্মশাস্ত্র—মনুষ্য রসনাকে একদিকে ভয় অন্যদিকে লোভ দেখিয়ে শৃঙ্খল-বদ্ধ করার সে রোমহর্ষক প্রয়াস। খাবার রইল না কেবলই পেট-ভরানোর বস্তু, তা হয়ে গেল একটা বিশেষ আর্থসামাজিক ব্যবস্থা কায়েম রাখার অন্যতম হাতিয়ার। সেই খাদ্যাস্ত্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে কৃসর। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
জানা গেছে খিচুড়ির এক পূর্বজর নাম কৃসর। ভরতমুনির নিদানে নাট্যমঞ্চ নির্মাণে সে খানার আছে বেশ জরুরি ভূমিকা। কিন্তু মুশকিল হল, এ খাদ্যের সঙ্গে যে আজকের খিচুড়ির কোনোই মিল নেই! নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
কোনো এক বিশেষ ব্যক্তির নামাঙ্কিত চার শতাধিক বছর প্রাচীন খিচুড়ি—যেমন উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই—আসলে কী, সেরহস্যের কিছুটা সমাধান হল। এবার শুরু এ খানা কত প্রাচীন এই মহাখোঁজ। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
বাংলা রন্ধনশিল্পের যুগপুরুষ বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে ‘পরিমিত’ লঙ্কা নিয়ে সুপ্রাচীন খিচুড়ি প্রবেশ করল বঙ্গীয় রেনেসাঁস-এর যুগে। কিন্তু বঙ্গীয় রেনেসাঁসের কালে রসনা-বিলাসের শ্রেষ্ঠ ফসলে নেই জাহাঙ্গিরি খিচুড়ি বলে কিচ্ছুটি। ঊনবিংশ শতকের শেষে ডুব মেরে একশো বছর পরে এক বঙ্গীয় জমিদারি হেঁশেল ফের ভেসে উঠল সেলিম বাদশার নামাঙ্কিত এই আশ্চর্য খানা। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
জাহাঙ্গিরি খিচড়ি বাংলায় প্রবেশ করে বিপ্লবের মুখোমুখি হল! তাতে এই প্রথম চাল পড়ল। দম পড়ল। এবং খুব সাবধানে আধুনিক রান্নার প্রথম অধ্যায়ে আলতো করে পা রাখায় ‘পরিমিত লঙ্কা’ পড়ল। আর আমরা জানলাম ‘খেচরান্ন’ এক ছোকরা শব্দ—অর্বাচিন সংস্কৃত, যার সঙ্গে খেচর বা পাখির কোনো সম্পর্ক নেই! নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। আগের কিস্তিতে দেখেছিলাম খাঁটি ভারতীয় খিচুড়িতে কীভাবে আফগানিস্তান পার করে এসে মিশেছিল ইরানি ‘শোলে’। এ কিস্তিতে আমরা সেই জাহাঙ্গিরি খিচড়ি আর বাজরা খিচড়ির রহস্যভেদের তাগিদে নেতি নেতি করতে করতে হাজির হব ইরান ফিরতি দিল্লি হয়ে সোজা বর্ধমান! নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। আগের কিস্তিতে দেখেছিলাম খাঁটি ভারতীয় খিচুড়িতে কীভাবে এসে ভিড়েছিল ‘শোলে’, খিচুড়ির আফগানি চলন। এ কিস্তিতে আমরা এই শোলে-ধারার খোঁজে আফগানিস্তান পার করে পৌঁছে যাব ইরানে! নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। যে ‘বাজরাখিচড়ি’ ওরফে ‘লাদরা’-র এমন নাম রটাল ডাকসাইটে কেতাব জাহাঙ্গিরনামা, কী সেখানা? আদৌ যাবে কি জানা? এ প্রশ্ন ধাওয়া করেই আমরা ঢুকে পড়েছি মুঘল বাদশাদের মহাহেঁশেলে, যেখানে একবার ঢুকলে বার হওয়া কঠিন! আর সেখানেই আমরা দেখব, কীভাবে আগমার্কা ভারতীয় খিচড়িতে এসে মিশে গেল আফগান ধারা। নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। যে ‘বাজরাখিচড়ি’ ওরফে ‘লাদরা’-র এমন নাম রটাল ডাকসাইটে কেতাব জাহাঙ্গিরনামা, কী সে খানা? আদৌ যাবে কি জানা? এ অ্যাডভেঞ্চারের উপরি পাওনা, এ কথা জানা যে মুঘল রাজন্যের পাতে গোমাংস বা এ যুগের সাধের চিকেন দুটির কোনোটিই মোটে পড়ত না! নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...
চলছে খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। জাহাঙ্গির নন, মুঘলাই শাহি দস্তরখওয়ানে খিচড়ির রমরমা মহামতি আকবর বাদশার জমানা থেকে। কিন্তু তেমন খিচুড়ি আর কোনও দিন রসনা-রসিকের পাতে পড়বে না। গৃহস্থালি, ভোজবাড়ি, রেস্তোরাঁ কোত্থাও তা আর মিলবে না। ভ্যানিশ! নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...
জাহাঙ্গির বাদশা স্বয়ং লিখে গেছেন বটে বাজরা খিচড়িকে তাঁর দস্তরখওয়ানে বা-ইজ্জত ইস্তেমাল করার কিস্সা-কারণ, কিন্তু মুঘল শাহি পাকোয়ানে খিচুড়ির দাপুটে উপস্থিতি মহামতি আকবরের জমানা থেকেই। কেমন ছিল সেই আকবরি খিচড়ির স্বাদ? খিচুড়ি মহারহস্য সিরিজের এ কিস্তিটি তাই নিয়েই চর্চা, যার কেন্দ্রে আছে মুঘলাই জমানার চালের হালচাল। নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...
ধন্য খিচুড়ি। চাল-ডালের কিংবা বাজরার, নাকি তিলের? নিরামিষ বা আমিষ, হিন্দু নৈবেদ্য, জৈন মহাপণ্ডিতের শাস্ত্র, বৌদ্ধ মঠের অনুশাসন, মুসলমান বাদশাহি মহল-ই-খুরাক পাজ়ি, চিকিৎসকের ভেষজালয়, অকিঞ্চনের হেঁশেল, ভোজের একান্ন পাত—সর্বত্র বিরাজমান এ পাকোয়ানে কী বিপুল বৈচিত্র্যে আমরা ভারতবাসীরা যুগে যুগে একাত্ম হলাম! সে এক মহারহস্য বটে… কম রঙিন নয় কালাপানি পার করে তার বিলেত মায় মিশর পাড়ির কিস্সা। শুরু হল খিচুড়ি মহারহস্য অ্যাডভেঞ্চার। নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...