আম্ফান পরবর্তী করোনার দিনগুলি ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনা র দিন ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনাকালীন -- স্কুটি গ্যারাজ করে অদিতি দোতলার দিকে তাকালো। গোল বারান্দা ঘেরা বাবার বেডরুমে এখনো আলো জ্বলছে। অচ্যুত শিবরামণ অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। আবার উঠেও পড়েন ভোরে। সামনে বাগানে জল দেন। তারপর প্রাণায়াম ইত্যাদি । জগিং সেরে এসে তিনি স্টাডিতে ঢুকে যান ।সেখানেই তাঁর ব্রেকফাস্ট পৌঁছে যায় ।কিন্তু কোভিডকালে তাঁর জগিং বন্ধ। বাগানের পরিচর্যায় অনেকটা সময় কাটান তিনি।কোনো মালি নেই। ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনাকালীন -- পুনের বিকেলে গোলাপি আকাশ। একটা ক্যালাইডোস্কোপিক ভিউ।আকাশের দিকে তাকালে কেউ ভাবচটতেই পারবে না যে এখন প্রায় পাঁচশ কোভিড রোগী এই শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে , নাকে নল নিয়ে শুয়ে আছে।তাদের পরিবারগুলি আছে মারাত্মক রকম আইসোলেশনে ।ইতিমধ্যেই মারা গেছেন আটত্রিশ জন।গোটা জেলাতে করোনা ভাইরাস রোগী প্রায় সাড়ে পাঁচহাজার। মোটেই ভালো অবস্থায় নেই শহর।এমনকি গ্রাম।কেউ নিরাপদ নয়।কোথাও নিরাপদ নয়। ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনাকালীন - বাড়িটার গঠন বেশ আকর্ষণীয় । ঠাকুর্দার আমলের বাড়ি ভেঙে চুরে অনিল এবং পলি নিজেদের পছন্দে বাড়ি বানিয়েছেন।একবার ইনসাইড আউটসাইড পত্রিকাটি তাঁদের এই গৃহটি ফিচার করেছিল। পলি খোলামেলা পছন্দ করেন।তাই এই দোতলা গৃহের অন্তর্বর্তী একটি নালুকেতু রয়েছে।নালুকেতু অবশ্য আগে থেকেই ছিল।পলি বাড়িটির অনেক আধুনিকীকরণ করেছেন।বাড়ির মধ্যে খোলামেলা হাওয়া চলাচল করবে।নালুকেতু হল খোলা উঠোন।অনিলের পূর্বসূরি এই গৃহটি এক হিন্দু পরিবারের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনাকালীন - একটা টিলার মত উঁচু ভূমিখণ্ডের ওপর বসেছিল বশির, আমির এবং ওদের গোটা পরিবার। আম্মার গায়ে জ্বর, বেদনা। বশিরের ডান পা কেটে গেছে টিনে। রক্ত পড়ছিল দরদর করে। বশিরের দাদা আমিরের বউ গর্ভবতী। বড় তিনটে ছেলে। এবার একটি কন্যাসন্তান আশা করে আছে ফরিদা। শ্যামলা রঙে ভাসা ভাসা চোখ । ... ...
ঝড়ে লিভিংরুমের দেওয়ালজোড়া কাঁচ খানখান হয়ে পড়ে যাবার পর ও বুঝতে পারলো সিকিউরিটি বলে কোনো চিরকালীন আড়াল নেই। সামনে বাবা হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ।বাবার সারা হাত পায়ের রক্ত চোখে এল প্রথমে। তারপর গেঁথে যাওয়া কাঁচের টুকরোগুলো। বাবার মুখটা কেমন ভয়ে, বিস্ময়ে, ব্যথায় বেঁকে বেঁকে যাচ্ছিল আর ও চিৎকার করছিল। আসলে ও আর বাবা কাঠের বিশাল ফ্রেমটা চেপে ধরেছিল দুজনে দু'দিক থেকে।এই মহার্ঘ্য কাঁচের পার্টিশন বাবা আনিয়াছে সিঙাপুর থেকে। ... ...
আম্ফান পরবর্তী করোনাকালীন । সমসাময়িক ভারতবর্ষের কিছু গল্প। আস্তে আস্তে অন্ধকার সরে যাচ্ছিল।ভোর হবার একটু আগে দুধের সরের মতো সাদা অন্ধকার যেন লেগে আছে চারপাশে।বাড়িঘর।গাছপালা।যেন কিছু নেই।পাখির ডাক সাধারণত এই সময় থেকে শোনা যায়।বিশেষ করে এই অঞ্চল বেশ সবুজ।কিন্তু আজ কোনো পাখি ডাকছে না এখন। মৃতের শহর।মৃত্যুনৈঃশব্দের ভোর।একটা অতিপ্রাকৃতিক নৈঃশব্দ্য যেন চেপে বসেছে চারদিকে। শুধু শন শন হাওয়ার তুমুল তাণ্ডব এখনো পাক খেয়ে খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ... ...
ধারাবাহিক - ওয়ার্ক ফ্রম হোম ইজ ওভারওয়ার্ক অ্যাকচুয়ালি। সকাল। দুপুর। রাত। যে কোনো সময় মিটিং বসছে। অ্যাকাউন্টস। মার্কেটিং । ম্যানেজমেন্ট । সকাল। দুপুর । রাত। অন্তহীন মিট টু প্রোমোট কনসিউমারিজম। ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন ত্রিদিব । ... ...
করোনাকালীন ধারাবাহিক - সাদাটে একটা আলো ঘুরছিল। গোল করে ঘুরতে ঘুরতে মিলিয়ে যাচ্ছে।কোথা থেকে শুরু কোথা থেকে শেষ, কিছুই বোঝা যায় না। তীব্রতা মাঝেমাঝেই বেড়ে যাচ্ছে ।আবার খুব কমে যাচ্ছে।একটা ঝিঁঝির ডাকের মত যেন।সামনে কী ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।মাঝেমাঝে বিদ্যুতের চমক যেন।চিড়িক দিচ্ছে মাথার ভিতর। সঙ্গে সঙ্গে চোখে যন্ত্রণা ।হাত পায়ে জোর নেই কোনো। পাশ ফেরার ক্ষমতাহীন। ... ...