পুরোনো কথার আবাদ বড্ড জড়িয়ে রাখে। যেন রাহুর প্রেমে - অবিরাম শুধু আমি ছাড়া আর কিছু না রহিবে মনে। মনে তো কতো কিছুই আছে। সময় এবং আরো কত অনিবার্যকে কাটাতে সেইসব মনে থাকা লেখার শুরু খামখেয়ালে, তাও পাঁচ বছর হতে চললো। মাঝে ছেড়ে দেওয়ার পর কিছু ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ ঝাঁকিয়ে তুললো ফর্টিসিক্সের স্মৃতি, ভাবলাম লিখে ফেলা যাক। তারই কিছু ঝাড়পোঁছ করে এখানে। ঝাড়পোঁছ হলো একটু, কিন্তু গোছানো গেলনা, গল্পের আঁকাবাঁকা রেখা গতিও সোজা হলো না। তা হোক, স্মৃতির খেয়ার আজগুবি চাল। ~হরিগঙ্গা বসাক রোড ... ...
টিভি চালাই। খবর দেখি। একদিকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিচিত্র সব শিরোভূষন শিরোধার্য করে এদিক ওদিক ঘুরে লাফিয়ে লাফিয়ে চিত্কার করে অন্যের অকর্মণ্যতা প্রচার করছেন। কখন কোন জাদুবলে ভারতের গৌরব সেনাবাহিনীকে নিজের দলের প্রচারের হাতিয়ার করে উঁচিয়ে ধরছেন। এক এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আঙুল উঁচিয়ে সমান চিত্কারে পাল্লা দিচ্ছেন। কে কত গর্জনশীল তার ওপর ভোট নির্ভর করছে। বিরোধী মানেই দেশদ্রোহী এটা আগে বিশেষ কেউ শেখায়নি। এবারে শিখলাম। আগে গ্রামগঞ্জের মহিলারা প্রার্থী মহিলাদের দেখতেন মোটামুটি নিজেদের একজন হিসেবে। ... ...
খুব গরম। দুপুরের ঘুম ডাকাতে নিয়ে গেছে। মনে পড়লো গতকাল অর্থাত্ হারবিষুর দিনে তেতো খাওয়া। আগের দিন বিকেলে আমার বিশালাক্ষী, চোপায় খোপায় সমান ঠাকুরমা আমাকে ভীষ্ম আর হারুকে নিয়ে সরজমিন তদন্তে নেমেছেন,--- গাঙ্গের তলে (চৈত্রের গরমে জল নেমে যাওয়া নদীর ঘাটে) দেখছিলাম রাইজ্যের গিমা শাক, চল্ কয়ডা তুইল্যা আনি। প্রাক্তন ডাকাত জব্বর আলি এখন আজ্ঞাবহ মুনিশ। জব্বর, বাপ্ যাওসেন সতু রুনুরার বাগানো গিয়া কয়ডা বন জামিরের পাতা ছিঁড়া আনসেন। ভীরু চোখে তাকায়, আমতা আমতা করে প্রাক্তন ডাকু, জেডিমা সকালে তিতা ন ... ...
ফেসবুকে শুরু করা লেখাটা কয়েকটা পোস্ট একত্রে করে অল্পসল্প পাল্টে এখানে শুরু করি।
~~~
নন্দিতার বন্ধু টন্ধু সহ দোকানে খাওয়ার ছবি দেখেই লিখতে ইচ্ছেটা হোলো, আমার বোন কুটন ও মাঝে মধ্যে এরকম ছবি দেয়। কয়েক বছর আগে ও eating out ব্যাপারটাই খুব gender biased ছিলো। ছেলেরা দল বেঁধে কি একা চায়ের দোকানে রেস্টুরেন্টে হইহই করে খাচ্ছে কুছ পরোয়া নেই। সদ্য মেটার্নিটি লীভ কাটিয়ে আসা মা, পেটে আকাশ পাতাল খিদের জ্বালা চেপে অঙ্ক বাংলা পড়াচ্ছে, ফাইল ওঠাচ্ছে, তাতে কি। আমার খুব শখ ছিলো ছেলেদের মতো চায়ের দো ... ...
স্মৃতির পটে জীবনের ছবি যে আঁকে সে শুধু রঙ তুলি বুলিয়ে ছবিই আঁকে, অবিকল নকল করা তার কাজ নয়। আগেরটা পরে, পরেরটা পরে সাজাতে তার একটুও বাঁধেনা। আরো অনেক সত্যের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতির আরম্ভেই এই ধ্রুব সত্য মনে করিয়ে দিয়েছেন। কথাটা মনে রেখেই শৈশবস্মৃতির প্রথম ছায়া -আভাসে সাঁতার কাটতে চেষ্টা করছি। তখন কি আর সন তারিখ জানি? নিজের বয়স কতো জানি? উঁহু, না, কিছুই বুঝি না। এখন একটু হিসেব করি, মনে হয় তিন বছর কি সাড়ে তিন বছর হবে হয়তো। ঝাপসা মনে পড়ে বিজন দুপুরে কি ঘুমছুট শেষরাতে।
নামের সুতোয় ঈপ্সিতার লেখা পড়ে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না।
( )
আমার নিজের নাম নিয়ে চিরকাল আমার দুঃখ। আমার অনেক মেয়েলি নামও ছিলো। শক্তিও আদতে মেয়েরই নাম হওয়ার কথা, ছেলেরা হবে শক্তি পদ বা শক্তি ব্রত। স্ত্রী -দেবীরা ই তো শক্তি। তা, ছেলেদের দাবীর কি সীমা আছে? বড় রুমাল, বড় ছাতা, সুবিধা জনক হাফপ্যান্ট সব ওঁদের দখলে। শক্তি নামে আবার বিখ্যাত কবি, শক্তিপদ রাজগুরুর মত ... ...
সাধারণত অন্য অনেকের মতো আমিও অপ্রিয় প্রসঙ্গ নিয়ে লিখতে ভয় পাই, বিশেষত যদি প্রসঙ্গ এমন হয় যে কেউ ভাবতে পারেন আমি নিজের কথাই লিখছি। আমার আপনার সমস্যা না হলেও এই সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। প্রবীণারা অনেকেই পাড়ার সঙ্গিনীদের কাছে ছাড়া নিজেদের কথা বলতে জানেনই না। সেটাই হয় পরচর্চা। সাহসী সমব্যথীদের এই সব বয়স হারানো মানুষদের সমস্যা নিয়ে কথা বলা দরকার। এই ব্যাপারটা বহুদিন যাবত আমার খুব খারাপ লাগে যে মেয়েদের যন্ত্রণা নিয়ে আলোচনার সময় সেই শ্রীরাধিকার যুগ থেকেই শাশুড়ি আর রায়বাঘিনী ননদিনীর উৎপাতের কথা উঠে ... ...
অপরাজিতা রায়ের ছড়া -ত্রিপুরায় চড়িলাম/ ক্রিয়া নয় শুধু নাম। ত্রিপুরায় স্থাননামে মুড়া থাকলে বুঝে নেবেন ওটি পাহাড়। বড়মুড়া, আঠারোমুড়া; সোনামুড়ার সংস্কৃত অনুবাদ আমি তো করেছি হিরণ্যপর্বত। আঠারোমুড়া রেঞ্জের একটি অংশ দেবতামুড়া, সেখানেই ছবিমুড়া মানে চিত্রলপাহাড়। এখন ট্যুরিস্টস্পট, সরকারী থাকার ব্যবস্থা, যন্ত্র চালিত বোট। কিন্তু এসব আমার শোনা কথা। আমরা যখন গেছি ত্রিপুরার সিংহভাগ মানুষই নামও শোনেননি। আমাদের অভিযান কাহিনী শুনলে অবাক হবেন।
ত্রিপুরা অনতিউচ্চ পাহাড়, ঘনপিনদ্ধ জঙ্গল আর খরস্রোতা ছড়া মানে ... ...
বুড়ো নিধুরাম আজকে খুব নিষ্ঠার সঙ্গে গাছকালীবাড়িতে পুজো দিয়েছে। সোয়া পাঁচআনার নকুলদানা আর প্রসাদী বেলপাতা লাল সালুর রুমালে বেঁধে নিয়ে এসেছে। নিধুর বড়ছেলে নুটু স্নান করে শুদ্ধভাবে বাটিতে তেল আর কালি গুলছে। নুটুর বৌ বিরিঞ্চির মা রঙ্গময়ী কালো একটা জাঙিয়ার ফুটোফাটা যত্নে সেলাই করছে। সন্ধ্যেবেলা সবাই স্নান করে তুলসীতলায় বাতাসা দিয়ে হরির লুঠ দিয়েছে। আজকে এই প্রজন্মের প্রথম সন্তান তেরো বছরের বিরিঞ্চি কাজে বেরোবে। তার সঙ্গে বিরিঞ্চির পিতৃবন্ধু সিঁদেল হরি।
এলাকার নামকরা চোর নিধুরাম। এইদিকে ছড়িয়ে ছিটিয় ... ...
আঠারোমুড়া পাহাড়ের গায়ে সোনালী সোনালী খোড়ো ঘর। জুমিয়াদের গ্রাম। শীত নেমেছে কুয়াশা জড়িয়ে। জম্পুইএর কমলা ঝুড়ি ভরে একটু করে সীম বেগুন লাইপাতা ঢেঁকী শাকের পাশে বসে বাজারে কমলা রঙের আভা ছড়াচ্ছে। পৌষ মাস - সংক্রান্তি আছে। মুগের পিঠা মাছের পিঠা একঘরে কেউ যদি করে সব ঘরের বাচ্চারা ভাগ পায়। দুধের বাচ্চাগুলোরও ফর্সা গালে লালি গুড়ের লাল ছোপ ছোপ, মায়ের পিঠে কাপড় দিয়ে বাঁধা। ঘুমোচ্ছে আর জিভ দিয়ে গাল চাটছে। মায়ের মাথায় কনকের কি বয়রা লাকড়ীর বোঝা। বড় রাস্তার ধারে বাস ট্রাকের মালিকেরা দাম দিয় ... ...