অনেকদিন ধরে একটি ম্যানুয়াল তৈরীর কথা ভাবছি। সহজলভ্য ইন্টারনেট কানেকশনের যুগে কিভাবে ইন্টারনেট আঁতেল হিসাবে নাম করা যায়। অতীব কপচানো জিনিস, হয়ত আমেরিকা মহাদেশে এমন বই-এ বাজার ছেয়ে গেছে – কিন্তু সাহেব আর আমাদের মনস্তত্ত্ব আলাদা হবার জন্য, স্ট্রাটেজীতে কিছু ঈষৎ পরিমার্জন দরকার। আমি এটাও জানি না যে কোন বাঙালী ফেসবুক গোষ্ঠী অলরেডী তাদের গুপ্ত সমিতিতে এমন ম্যানুয়াল চালু করেছে কিনা! আবার এমনও হতে পারে যে অলরেডি আঁতেল বলে মার্কেটে নাম ছড়িয়ে ফেলেছেন এমন কেউ এই ম্যানুয়াল উল্টোলেন – কিছুটা কৌতুকে ও কিছুটা ... ...
প্রথম দৃশ্য
হেমাঙ্গবাবু - হ্যাঁ গো ভুতো, তোমাকে যে আমার মেয়ের জন্য কবে থেকে একটা পাত্র দেখতে বলছি তার কি হল?
ভুতো - আজ্ঞে দেখুন হেমাঙ্গবাবু, ওই যে কথায় আছে না “ঘর লেপ্যা মুছ্যা, আতুর ঘর বানাইয়া, মা ষষ্ঠীর কাছে বাচ্যা চাইলেই তো আর বাচ্যা পয়দা হয় না! তার জন্যি নয় মাস দশদিন অপেক্ষা করতে হয়!” তবে হ্যাঁ, কাজ আরম্ভ করে দিয়েছি।
হেমাঙ্গবাবু -কাজ আরম্ভ মানে? একি জলা মাঠে বাড়ি হচ্ছে নাকি যে আগে মাটি দিয়ে ভরাট করতে হবে তবে কাজ শুরু করা যাবে? ... ...
ললিত স্যার না থাকলে দেবু দত্তগুপ্তর লেখার সাথে হয়ত কোন দিনও পরিচয় হত না। তখন দশম শ্রেণী, স্যার একদিন আলোচনা প্রসঙ্গে একটি বইয়ের কথা বললেন, যা সারাংশ দিলেন তাতে করে খুবই আগ্রহ জন্মাল। এটাও বললেন যে বইটা আমাদের ওই বয়সী ছাত্রদের সবারই পড়া উচিত অন্তত একবার করে। ওই বই তখন আমাদের ওদিকের দোকানে বিক্রী হত না – তাই স্যারই আনিয়ে দিলেন কোথা থেকে যেন। হাতে এসে পড়ল লাল-কালো প্রচ্ছদের একশো তিরিশ পারাত বইটি – “যে পাহাড়্গুলি ডিঙোতে চাই”। আমাদের এলাকা তখন প্রবলভাবে বামপন্থী – স্কুলের স্যাররাও বেশীর ভাগ বাম মতাদর ... ...
চুপিসারে কেউ আসে না – নীরবে চলে আসার মাহাত্ম পাশের বাড়ির কালো বেড়ালটাও শিখে গেছে। আমার কোন পোষা গাছ নেই, আমার প্রিয় গাছে ফুল আসে, ফুল ঝরে যায়। বিষবৃক্ষের সাথে নিয়মিত সম্পর্কে জড়িয়ে পরে ঘুম ভাঙা চোখ। বিষবৃক্ষে মিষ্টি ফল হয় – দশ মিনিট যায়, পনের মিনিট পরে আমি বৃক্ষ ভুলে যাই। বাড়ির সামনের গাছটায় লেগে আছে গত রাতের জল – অথচ ওই পাতা, যা আমাকে অনেক বিভক্ত করেছে, তা পিচ্ছিল হবারই কথা ছিল ।
বৃষ্টির শব্দ – চেতনা – ফোঁটা থেমে গিয়েছিল ভোর রাতের অনেক আগে। জলের পরেও সিল্ক এসেছে, আধভেজা দরজা গুডনাইট বলেছে, ... ...
বেশ কিছুদিন আগে খবরে কাগজে পড়লাম কলকাতার কোন এক প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন বিক্রেতা নাকি রসগোল্লা বানাবার মেশিন আমদানি করেছে বিদেশ থেকে! রসগোল্লা বানাবার মেশিন ! তায় আবার বিদেশ থেকে! খবরটা শুনে যথারীতি নিদারুণ দুঃখিত হলাম। এখানে দেশপ্রেম রিলেট করে একটা মাখো-মাখো বা ভারত এতোদিনে ইঞ্জিনিয়ারিংটাও শিখল না – এই নিয়ে তুল্যমূল্য আলোচনা একটা ফাঁদা যেতেই পারত। সেই দিকটায় এখন আর ঢুকছি না, কারণ এটা মূলত খাবার-দাবার নিয়ে আলোচনা। যদিও আমরা জানি খালি পেটে যেমন বিপ্লব হয় না, খালি পেটে তেমন দেশপ্রেমের আলোচনাও জমে না। স ... ...
আমরা কাঠের বাড়িতে থাকতাম – ফারখান্দা অন্য কাঠের বাড়িতে। আমার মনে হয় ও অন্যরকম ভাবে আমাকে কাছের ভাবত। আর স্বাভাবিক কাছের ভাবত সেই ইতালিয়ান ছেলেটাকে। কেউ কেউ বলে ফারখান্দা নাকি পাখি হতে চেয়েছিল – প্রোফেসর বলতেন ও নাকি নিজেও জানত না – অথচ আমার মনে হত ফারখান্দা কেবল একটি পরিপূর্ণ মেয়ে হতে চেয়েছিল। সে ওড়না ভালোবাসত, মেহেন্দী – মাথার টিপ – আমার দেশে যাবার সময় ফরমাশ – ও স্যামন ভালোবাসত লাইম জুস দিয়ে। বাকি সময়টাতে ইতালিয়ান ছেলেটার সাথে খুনসুটি। ফেসবুকে ক্রিশ্চিয়ানোর ছবি দেখি, কিন্তু একটাতেও ফারখা ... ...
অশোক যেমন বাপের চাকুরী পেয়েছিল তেমনই তার বউ করত তার মৃত স্বামীর থেকে পাওয়া চাকুরীটা। সরকারী চাকুরী করা ছেলের ভালো পাত্রী পাওয়াটাই চল ছিল তখন – তাই অশোক এক মেয়ে সমেত বিধবাকে বিয়ে করল কেন সেটা আলোচনার বিষয় হয়ে উঠল গ্রামের জটলাগুলিতে, শিতের খামাড়ে বা রোদ পোয়ানো ছাদে। যাদের ব্রেন সুদূরপ্রসারী – যারা অন্ধের মাঝে কানা ছিল তারা ভাবে বার করল অশোকের এহেন আচরণের মূলে হল তার নিজের বাড়িতে তরুণ ঘটিত কমপ্লেক্সিটি।
কিন্তু উহারা অচিরেই ভুল প্রমানিত হল – বেগারস্ ক্যান নট বি চুজারস্ আপ্তবাক্য ভুল প্রমা ... ...
বাঁশের তীর ধনুক দিয়ে পাখি মারার পর্যায়ের বয়সটা সবে শেষ করে মোড়লদের বাগানে নেউল কামারের তৈরী কাঠের ব্যাট নিয়ে ক্রিকেট খেলায় ঢুকেছি আর ঠিক তখনই প্রথম ঝটকাটা লাগল। সেই তখনও পর্যন্ত আমার মূল কৌতূহল সাধারণত খাদ্য বস্তুর ভিতরেই সীমাবদ্ধ ছিল। আনন্দমার্গ স্কুল থেকে সুবল কাকা সাইকেলে করে বাড়ি নিয়ে আসার সময় খালের মিষ্টির দোকানে পেটা সন্দেশ আমার বরাদ্দ ছিল। তৎকালীন বয়েসে আমি বেশীর ভাগ ভাবনাটাই কেন্দ্রীভূত করেছিলাম এটা বের করার জন্য যে পেটা সন্দেশ এ্যাতো ভালো খেতে হয় কেন! জ্যাঠা কলকাতা থেকে হালখাতার সময় মহা ... ...