১৩
চলো, আখ্যান লিখি, তুমি কিছু বলো-
কিছু আমি বলি - যদি যেতে চাও, চলো...
১
যাই ছুঁয়ে আসি, নদীঘাট, একটি শালতি
পলকা দুলতেছিল, কাঁচা পথে কাদের পালকি
হেঁকে যায়, ঝোপ ঝাড়, পিছুপিছু কত বাচ্চারা
জুটেছিল, দেখ মুখ টিপে ঘোমটা আড়ালে
হঠাৎ বিদ্যুৎ চমক, ওইখানে তুমিই দাঁড়ালে।
২
তাই হবে, অনেক অনেক দিন আমাদের
কথা নাই, চিঠি ও পত্তর
তোমাকে লেখার খাতা, বারো ভূত দানছত্তর
উড়িয়ে পুড়িয়ে খেয়ে নোনা ইঁট জমিদার বাড়ি
জঙ্গলে দেওয়ালের গলায় বাঁধা আছে অশ্বত্থ ... ...
যেতে পাই না আসতে পাই না
কাঁপন লাগে তাই
চুল্লীর কাছে গত গ্রীষ্মের
গল্প বলতে যাই......
নেহাৎ কিছুই নেই এখন, না তাতে আক্ষেপ করছি না। বরং জানি এই না-থাকাটা অনেক জরুরী। একটা কাদার তাল, একটা সাদা পাতা, বেশ একটা মিনিট চল্লিশের নির্ঝঞ্ঝাট অবকাশের তুলনা কমই আছে। কিছু না থাকলেই সব থাকে, মানে যা খুশি তাই। মানে একটা শব্দ, যাকে কারও পাশে বসাই, যে কোনও চিন্তা ভাবনা ঘটকালি, কাঠপুতুল ঘরজামাই যেই হোক ভালো লাগে। তার আগে অবশ্য জানলা খুলতে হয়, হাওয়া আসতে দিতে হয়, ফুটতে দিতে হয় ভাবনার সম্প ... ...
পরের পর নাটক আসতেই থাকে আজকাল। গল্প সাধারণ, একটা জনগোষ্ঠীর গরিষ্ঠ অংশের অহংকে সুড়সুড়ি দেওয়া প্লট। তাদের বোঝান যে বাকিরা ও তাদের পূর্বপুরুষেরা লুঠতরাজ করে তোমাদের লাট করে দিয়েছিল, আজই সময় হয়েছে বদলা নিয়ে নাও, নয়ত কাল আবার ওরা তোমাদের শেষ করে দেবে। এই নাটক জনপ্রিয়, কারণ এতে বলা হচ্ছে তুমি ও তোমরা হলে গিয়ে ধোওয়া তুলসীপাতা, সব দোষ ওদের। দিনের পর দিন মাসের পর মাস ধরে গত আড়াই বছর ধরে এই একমুখী প্রচার চালান খুব কঠিন কাজ নয় যখন মিডিয়া ব্যবসায়ের অধিকাংশ সেই নাট্যকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল।
< ... ...
আজ ১৯শে নভেম্বর, সলিল চৌধুরী র জন্মদিন। ইন্দিরা গান্ধীরও জন্মদিন। ২০১৩ সাল অবধি দেশে এটি পালিত হয়েছে “রাষ্ট্রীয় একতা দিবস” বলে। আন্তর্জাতিক স্তরে গুগুল করলে দেখা যাচ্ছে এটি আবার নাকি International Men’s Day বলে পালিত হয়। এই বছরই সরকারী প্রচারে জানা গেল এটি নাকি World Toilet Day বা বিশ্ব শৌচালয় দিবস।
এ একই জিনিস করা হয়েছে ২ রা অক্টোবর কে স্বচ্ছ ভারত দিবস বানিয়ে। খেয়াল করলে দেখা যায় সেই স্বচ্ছ ভারত দিবসের প্রথম দিনের পোস্টারে গান্ধীজী স্পষ্ট। পরের দিকে শুধু সেই লোগোর চশমাট ... ...
১
নির্ধারিত সময়ে ক্লাবঘরে পৌঁছে দেখি প্রায় জনা দশেক গুছিয়ে বসে আছে। এটা সচরাচর দেখতাম না ইদানীং। যে সময়ে মিটিং ডাকা হ’ত সেই সময়ে মিটিঙের আহ্বাহক পৌঁছে কাছের লোকেদের ফোন ও বাকিদের জন্য হোয়া (হোয়াটস্যাপ গ্রুপ, অনেকবার এর কথা আসবে তাই এখন থেকে হোয়া) গ্রুপে মেসেজ পাঠাতেন। সপ্তাহের মাঝ মধ্যিখানে রাত সাড়ে ন’টায় ডাকা মিটিঙে এত ভিড় দেখে ভালোই লাগল কিন্তু। কিছু একটা কথা চলছিল, আমি পৌঁছতেই আচমকা স্তব্ধতা আর যারা বসেছিল তাদের চোখে মুখে আহ্লাদের উদ্ভাস দেখেও ভালো লাগল।
“কী খবর? ... ...
১
শান্তি নয়, মুক্তি নয়, নিছক রণক্ষেত্র নয়, পৃথিবীকে
নিরেট, গোবদা ভোঁতা হতে থাকা গেরস্থালীর
ছুরির মতো লাগে।
পর্দা বদলায়, বাসনকোসন, কাঁটা চামচ,
অথবা নয়া মশলার কৌটো, যা কিনা একবার মাত্র হায়
সুখী নতুন রন্ধনপ্রণালীতে ব্যবহৃত হয়ে বেশি পড়ে গেলে
অত:পর যাবজ্জীবন ফ্রিজের প্রত্যন্ত গুহায়।
দিন বদলায়, রান্নার লোক ঋতু পরিবর্তনে
সবাই স্বীকার করেন আশু বদলান দরকার। কাজ চলছে না
অথচ ছুরি বদলানটা আর হয়ে উঠছে না।
দেখেছি, চাঁদ ওঠে গুঁড়ি মেরে এক শীতের রাতে একা ... ...
প্রাককথন
যেমন আর পাঁচটা বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে হয়, কোথায় যাওয়া হবে, তারিখ, ফেরা কবে, কতদূর যাব এইসব টালবাহানা চলে, এবারেও ঠিক তাই ছিল। তা, সেই পর্ব মিটে যায় ভালোয় ভালোয়। আরও একটা বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা যেমন থাকে, তবু তার বাইরেও অনেকটা অনিশ্চয়তা থাকে, সংশয় থাকে, বিশেষত যে ব্যাপারটার একেবারে তল পর্যন্ত দেখে সে তো প্রায় হাঁড়িকাঠে মাথা দিয়ে বসে। কাজেই, পরিকল্পিত জায়গাগুলোর বুকিং আর রেল টিকিটের মাঝখানের সময়টা ঝড়ের আগের শান্তি।
যাত্রা শুরুর কিছুদিন আগে ফের গা-ঝাড়া দিয়ে ব ... ...
ছোটবেলায় একটা সময়ে, ওই যখন বাড়িতে টিভি এল, ক্লাস ফোর বা ফাইভ হবে, একটা অদ্ভূত ব্যাপার হত। সাদা-কালো টিভিতে পর পর দেখেছিলাম, ‘৪২, নীলদর্পণ, সিরাজদ্দৌলা কে সিনেমাগুলি। বিপ্লবী দের গল্পের বইটই পড়তে শুরু করেছি। অমর চিত্র কথাও। সেই সময়ে আমাদের ছাতে কয়লার গুল শুকোন হত (রান্নার গ্যাস আসে নি)। আমরা ভাইরা মিলে সেই বিকেলের দিকে ছাতে গিয়ে বিপ্লবী বনাম পুলিশ - যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতাম। বলাই বাহুল্য, বিকেলের ওই শুকিয়ে যাওয়া গুল গুলি হত বোমা।
রাতে পড়তে বসলে মনে হত - ঈশ, যদি সেই সময়ে থাকতাম, খুব লড়তাম। খ ... ...
হাঁকাটু
হ্যাঁ, এটা একটা ইতিহাস বই? রাজ্যের ভুলভাল কথা সব। এক একটা লোক যা নয় তাই লিখে রেখেছে। সব ব্যাটার মাথা খারাপ – আচ্ছা যাদের মাথার গোলমাল তাদেরই কি লেখালেখির কাজ দেওয়া হয়? উফফ… ইচ্ছে করছে সব কটা বই নিয়ে গিয়ে বাইরে ফেলে আসি, যা গরম বাইরে এমনি কিছুক্ষণ থাকলে পুড়ে ঝামা হয়ে যাবে। আর ওই বিতিকিচ্ছিরি ছবিগুলো – ওগুলো নাকি পোশাক। ওই পোশাকে বাইরে বেরোলেই সঙ্গে সঙ্গে ঘামাচি হয়ে মরে যেতে হবে। পারেও বটে এরা।
এইসব শিখতে স্কুলে যেতে হয়। ক্লাসে এমন একটা ব্যাঙের বই, বাইরেও আবার ফুটকড়াইয়ের মতো ... ...
কিছুটা আচমকাই দেখা হল আজ – কয়েকটা কাঠচাঁপা, একটি আমগাছ ঘেরা একচিলতে ঘাসজমি শহরের ব্যস্ত রাস্তার ধারে। কিছু বদন্যতা দেখিয়েছে পাশের কালো কাচে ঘেরা অফিস বাড়িটি। এমনকি দৈনিক বরাদ্দ জল নিয়মিত পায় বলে ঘাসেরা সবুজ থাকে। পাতাদের গায়ে ধুলো কিছু কম রাস্তার বাকি অংশের তুলনায়। তবু নিজস্ব ঋতুটিতে সে রীতি মেনে ঝরিয়েছে একরাশ পাতা। আকাশ পরিষ্কার ছিল আজ। তাই হাওয়া ছিল বেশি হয়ত। তাই খরাপাতার ফসল আজ কিছু বেশি –
“হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান ঘুরতে দেখেছি অনেক
তাদের হলুদ ঝুলি ভরে গিয়েছিল ঘাসে আব ... ...