তায় ঘরটিকে অচেনা আগন্তুকের পক্ষে একটু বাসযোগ্য করতে গিয়েই দিনের এই বাকি সময়টুকু যেন এক লহমাতেই ফুরিয়ে গেল।এখন এই পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে রান্না করা তো দূর,ভাত বসাতে গিয়েও যেন মনে হচ্ছে,হাঁটুতে যেন কেউ ভারী পাথর বেঁধে দিয়েছে।সে মুড়ির টিন থেকে বাটিতে কিছুটা মুড়ি ঢেলে নিয়ে তাতে কিছুটা চানাচুর ঢেলে নিল।ক্ষুধার্ত পেটে সেটাই এক নিমেষে শেষ করে রান্নাঘরের আলো বন্ধ করে সে শোবার ঘরে এল।ঘরে ঢুকে সে দেখল,মশারির ভিতরে সারা শরীরখানিকে গুটুলি পাকিয়ে নিয়ে পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে কাদা হয়ে রয়েছে মেয়েটা।জামাকাপড় কেমন করে পরতে হয় এটাই বোধহয় মেয়েটা আজ পর্যন্ত শিখে উঠতে পারেনি।একমুখ মায়া ঢালা গভীর ঘুমে অবচেতন শরীরটির আনাচে কানাচে ... ...
পর্ব ২ বেশ। তুমি তাহলে হাত মুখ ধুয়ে এসো আমি বিলটা পে করে আসি। তিয়াসা লক্ষী মেয়ের মতো ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়ে রাতুলের অঙ্গুলি নির্দেশ অনুসরণ করে মুখ ধোওয়ার বেসিনের দিকে এগিয়ে গেল। রাতুল খাবার বিল পে করে নিয়ে তিয়াসাকে নিতে এল ভিতরে। ভিতরে এসে তার একেবারে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ার মতো অবস্হা হল। সে দেখল, হাতমুখ ধুতে গিয়ে মেয়েটা কলের জলে পুরো স্নান ... ...
আকাশে লালচে আভাযুক্ত সূর্যাস্তের স্বর্ণালী দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছে।পাখিদের বাসায় ফেরার কিচিরমিচির উল্লাসে চারদিকের বাতাস মুখরিত হয়ে উঠেছে।ফুটপাতের লাগোয়া বটগাছটির ক্রোড়দেশে অঘোরে ঘুমিয়ে থাকা বিশ বর্ষীয়া তিয়াসা চোখ কচলে জেগে উঠল। প্রাথমিক ঘোরটা কাটতে না কাটতেই সে তার সর্বনাশটা বুঝতে পারল।জনবহুল ভীড়ের রাস্তার মধ্যে সে "মামি মামি...তুমি কোথায়..." বলে ডুকরে কেঁদে উঠল।সে তো হারিয়ে গেছে।এখন এই অচেনা জায়গাটাতে মামা বা মামি তাকে কেমন করে খুৃঁজে পাবে!তাহলে কি আর তার ঘরে ফেরা হবে না?প্রবল আতঙ্কে তার গলা বুঁজে এল।আস্তে আস্তে করে তার মনে পড়তে লাগল সব।গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই তো হঠাৎ করে তার মামা আর মামি হঠাৎ কেমন ভালো হয়ে গিয়েছিলেন।বাবা মা ... ...
---আমি আজকের বাঙালি--- বাংলা আমায় আঁচল দিল, দিল কথন,ভাষা আমার অক্ষি-শ্রবণ-কথায় বিদেশী ঠাট ঠাসা। বিদেশী সুরে আত্মভোলা, ধার করা আবরণে আভিজাত্যের দম্ভ ফোটাই অন্ধ বিশ্লেষণে। বিদেশী শব্দে ... ...
চিরুনি তিনদিন হল সবে বিয়ে করে নতুন বাড়িতে পা রেখেছে ঐশী। শ্বশুরবাড়ি মোটামুটি স্বচ্ছল। টাকাপয়সা বাড়ি গাড়ি থেকে আরম্ভ করে শিক্ষিত এবং অভিজাত পরিবার হিসেবে এলাকায় যথেষ্ট সুনাম আছে। স্বামী অর্ক একটা বড় কোম্পানিতে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার পদে অধিষ্ঠিত। সারাজীবনের জন্য একেবারে নিশ্চিন্ত ঐশী। তার ওপরে তিনতলার ওপরে এই সুদৃশ্য ব্যালকনিযুক্ত অর্কর ঘরটি এখন তার। আহ্লাদে আটখানা ঐশী তার নতুন ঘরটিতে ঢুকে এখন তার মতো করে ... ...
শুনছিস...কাগজের নাওয়ে ভাসিয়ে দিলেমমন খারাপের গান,বৃষ্টিভেজা মেঘলা বিকেল,মেঘলা অভিমান।রিম ঝিম ঝিম বৃষ্টি খোঁজেদুষ্টু নূপুরজোড়া,মনের উদাসপুরের ঘাটিকাঁদছে ফুলের তোড়া...কুলের আচার হারিয়েছে স্বাদহয়েছে অভিমানী,রথের মেলার পথ ভুলেছি,ভুলেছি মুখখানি।দুচোখ তবু চুমে ও দুইকাজল কালো আঁখি,মুক্তোফুলের হাসির সুবাসহৃদে কালবৈশাখী।উথালপাথাল ঝড়ের দাপটআমায় ভাঙে গড়ে,খুনসুটি আর দস্যিপনাবৃষ্টি হয়ে ঝরে।হোস্টেলের এই কাঁচের আকাশবৃষ্টিফোঁটায় স্নাত,হাতড়াই আজ শুধুই তোকেবাউলক্ষ্যাপার মত।যেদিন হল ছাড়াছাড়ি,তোর পুতুলের বিয়ে,পুরুত ঠাকুর শহরে যাবেখেলায় ফাঁকি দিয়ে।পন্ড হল সব আয়োজন,নাছোড় তোকে বলি,"আসব ফিরে দেখিস পুঁটু"কান্না মুছে ফেলি...অশ্রুর সেই অঝোরধারায়ভিজেছি প্রতিপলে,আসব আজি,দেখব তোকেশ্রাবণধারার জলে...দুহাত ভরে করব উজাড় আদর যত আছে,প্রতীক্ষার ওই অধীর দুচোখটানব আরও কাছে।কু ঝিকঝিক শব্দবেগেআসব নিয়ে ডালি,ভাসিয়ে দিলেম সে সুর আজি,দিগন্তে প্রেম জ্বালি...রশ্মিতা দাস ... ...
---এসো---মনের কপাট রুদ্ধ আজিপূর্ণিমার আকাশে,চাঁদের আরশি প্রত্যাখ্যাতব্যর্থ সব প্রয়াসে।সরিয়ে নিলেম আঁখিদুটি মোরজোনাকির মায়া হতে,ভ্রমরেরা ছুঁতে হবে অপারগফিরে যাবে খালি হাতে।পায়রার ঠোঁটে লাখো অভিলাষ যত বেঁধে দেবে সাঁঝে,পরিহার তার হবে মালাহারব্যর্থ প্রেমের লাজে।জ্যোৎস্না মায়ার আলগা বুননেযাব না সে অভিসারে,বাতাসের ধ্বনি আর ধরাবে নাভাঙন হৃদয় নীড়ে।খুলতে চাও এ রুদ্ধ কপাট?আজি ঝড় হয়ে এসো,বাউল বাতাসে তোলা ঝঙ্কার,নৃত্যের তালে মেশো।প্রলয় তুলে কালবৈশাখীমেঘেতে বারিষ আনো,ভেজাও,নেভাও অশ্রু-আগুনপ্রলয়ে বজ্র হানো।দ্বিধার পাহাড়ে ধরিয়ে ফাটলহৃদয়-গোমুখ খোলো,গঙ্গার স্রোতে বেঁধে মোর হিয়াঅমৃতসুধা ঢালো...জাতপাত কূল আর বৈভবযত আছে বাধা,বেড়িপ্রেমের এ হোলিতে করো ন্যাড়াপোড়া,ভগ্নস্তূপের সারি...নিক্ষেপ করে সাগরের জলেদাও গো দুহাত ভরে,শাশ্বত কর স্পর্শ তোমারআমার হাতের করে...রশ্মিতা দাস ... ...
---তড়িৎ ও সাগর--- গোলাপ পাপড়ি ছড়ায় সুবাস,সৌরভে মুখরিত,জীবন সোপান মুক্তকেশেরেণুরংএ সজ্জিত।আবির রংএ সাজে সোহাগসাজে প্রতিশ্রুতি,গর্জে ওঠে সাতটি রংএরমত্ত প্রেমের দ্যুতি।ক্ষণিকের ওই আলোর ছটায়যখন চোখে ধাঁধা,দামাল স্রোতের খড়কুটোতেইভাসে যুক্তি,দ্বিধা।যৌবনমত্তা নদীতটেআছড়ে পড়ে ঢেউ,রামধনুর ওই ফল্গুধারায়হৃদয়ে জাগে কেউ।জীবন সোপান আতর মাখে,সাজে ফুলের তোড়ায়,শব্দ যে হয় স্বরলিপিতপ্ত শোণিত-শিরায়।শুন্য শোকেস গগনচুম্বীস্বপ্ন মায়ায় সাজে,প্রতিশ্রুতির দামাল স্রোতেস্বপ্নেরা কূল খোঁজে।কালের গর্ভে হারায় তখনতড়িৎ এর ঝলকানি,বজ্রপাতর অগ্নিচিতায়নেশাতুর মোমদানি।খাঁক হয়ে যায় মন মহুয়ারআবির রংএ স্নাতমুঠো মুঠো স্বপ্ন সুবাস,ক্রন্দন অবিরত।তখন হাসে চুপটি করেশান্ত সাগরজল,গভীরতা যার যায় না ছোঁয়া,অধরা রয় তল... রশ্মিতা দাস ... ...
---মাংসের দাম--- কলমে-রশ্মিতা দাস ---বুঝলো কাকা,পকেট ফাঁকা আজ রাতের আসরে স্ন্যাক্সকেই করো মদের দোসর। আগুন মাংসের দরে। ---বলিস কি রে,বলিস কি রে, কালীপূজোর রাতে স্ফূর্তি ... ...
---অগ্নিপরীক্ষা--- রশ্মিতা দাস জ্বলেছে আগুন আত্মাহুতির গনগনে হাঁড়িকাঠ, মুখরিত সভা লোকসমাগমে হরষে ভরেছে মাঠ। টাটকা না বাসি, দেখে নিতে হবে শরীরে কতটা ... ...