জীবন তরঙ্গ পর্ব ২৬ কুণাল বোনকে খুব ভালবাসত। বোনের পছন্দের মানুষটা ওর একেবারে অপছন্দের হলেও ব্যাপারটায় একসময় সম্মতি দিয়েছিল। বোনের জেদের কাছে হার মেনে অনেকটাই নিরুপায় হয়ে। কেবল সম্মতিই দেয়নি, নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সামাজিক মতেই বোনের বিয়ে দিয়েছিল। আচার অনুষ্ঠানে কোন ত্রুটি রাখেনি। চাকরি বেশি দিনের নয়, সঞ্চয় তেমন একটা ছিল না। বিয়ের খরচ জোগাতে গিয়ে, কিছুটা অফিস আর ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২৫ বেশ কয়েকদিন অনুপস্থিত থাকার জন্য আড্ডায় গিয়ে নয়নকে অনেক গাল শুনতে হল। তখন পরের দিনের মোহন বাগান ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ নিয়ে আড্ডা সরগরম। আই এফ এ শিল্ড ফাইনালে দুই প্রধান মুখোমুখি হচ্ছে। পিন্টু সেই বছরেই ইস্টবেঙ্গলে সই করেছে। দলের প্রথম এগারোয় জায়গাও করে নিয়েছে। লিগের খেলাগুলোয় অনেক গোল করেছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২৪ নয়নের বাগবাজারে থাকাটা নির্ধারিত সময়ের থেকে কিছুটা বেড়ে গেল। কলেজ খুলে গিয়েছিল, ফলে শেষ দু দিন মামার বাড়ি থেকেই কলেজে গেল। নয়ন এদিক ওদিক গেলেও আড্ডার টানে দু এক দিন বাদেই ফিরে আসত। বাইরে বেড়াতে যাওয়া ছাড়া এতদিন রহড়ার বাইরে খুব কমই থেকেছে। আড্ডার টানকে উপেক্ষা করে এবারে রইল। কারণ একটাই, ঈজা। মেয়েটা ... ...
জীবন তরঙ্গ -পর্ব ২৩ পরের দিন নন্দ নটার সময় স্কুলে বেরিয়ে গেল। জলখাবার খেয়ে চায়ের কাপ নিয়ে নয়ন বারান্দায় চেয়ারে বসেছিল। এটা নয়নের খুব পছন্দের জায়গা। ছোটবেলায় এখানে বসে একমনে বাইরের জগতটাকে দেখত। তখনো দেখছিল। পরিবেশ, পরিস্থিতি, ঘর-বাড়ি, সব ধীরে ধীরে কেমন পাল্টে যাচ্ছে। যদিও দক্ষিণ কোলকাতার তুলনায় উত্তরে এই পাল্টে যাওয়ার গতি অনেক কম। দু চারটে ফেরিওয়ালা ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২২ গালুর চলে যাওয়ার কষ্টের তীব্রতা একটু কমতে না কমতেই আড্ডায় এল আর একটা ধাক্কা। কচিদা রহড়া ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কচিদার পরিবারে কেবলমাত্র ওর মা ছিল। চৌধুরি পাড়ায় মায়ে ব্যাটায় থাকত। চাকরি বাকরি না পেলেও কচিদা কখনো বসে থাকেনি। সকালে কাগজ বিলি থেকে শুরু করে সারাদিন কিছু না কিছু করে রোজগারের চেষ্টা করত। মায়ের পেনশন আর ওর রোজগার, দুয়ে মিলে সংসার চলে যেত। অবস্থা সেরকম ... ...
জীবন তরঙ্গ - পর্ব ২১ নয়ন আর রজতের পার্ট ওয়ান পরীক্ষা শেষ হয়েছে। সামনে কিছুদিন অখণ্ড অবসর। এই সময়ের দিনচর্চায় পড়াশুনার কোন জায়গা নেই। হাঁড়ি পুকুরের আড্ডায় ত্ততদিনে দুজনে স্থায়ী সদস্যের স্বীকৃতি পেয়ে গেছে। দিনের অনেকটা সময় ওখানেই কাটে। পরীক্ষা শেষ হবার পর নয়ন কয়েকদিন পিসির বাড়িতে গিয়ে ছিল। অনেকদিন পরে গেল, তাই নিয়ে পিসিমার অনেক অভিমান, অভিযোগ, নয়নকে সামলাতে ... ...
জীবন তরঙ্গপর্ব ২০ দুজনেরই বেশ কয়েকদিন অফিস কামাই হয়ে গেল। রণজয়ের ছুটি পাওনা আছে, তেমন একটা সমস্যা নেই। রাশির চাকরি তো এক বছরও হয়নি। বসেরা ভাল, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ছুটি মঞ্জুর করে দিয়েছে। বাবা বাড়ি চলে এসেছে, আর অযথা কামাই করার কোন অর্থ হয় না। দুজনে একসাথেই অফিসে বেরোয়, ফেরে আলাদা আলাদা সময়ে। অফিস যাওয়ার পথে বাবার খবর নিতে রাশিকে নিয়ে রণজয় ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ১৯ রাতে শোয়াটা এখনো একঘরেই আছে। পরিবর্তিত পরিবেশ, পরিস্থিতির প্রভাব দৈনন্দিন যাপনের অনেক ক্ষেত্রে পড়লেও বিছানা এখোনো একটাই আছে। বেডরুমের লাগোয়া একটা অ্যান্টি চেম্বারের মত আছে। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর রোজ প্রায় ঘন্টা খানেক দিগ্বিজয় ওই ঘরে বসে ওকালতির কাজকর্ম করেন। কণিকা খাওয়ার পর টুকটাক কাজকর্ম সেরে, একটু টিভি দেখে তারপর ঘরে ... ...
জীবন তরঙ্গ পর্ব ১৮ পছন্দসই একটা আস্তনার সন্ধান পাওয়া গেল। রণজয়ের এক ছাত্রের বাবা ব্যবস্থা করে দিলেন। তাঁর এক বন্ধুর বাড়ি। বন্ধুটি থাকেন কোলকাতায়, ছুটিছাটাতে এখানে এসে দু এক দিন কাটিয়ে যান। একজন মালি বাড়িটার দেখাশুনা করে। বাগানওয়ালা সুন্দর দোতলা বাড়ি। এক তলায় দুটো ঘর, রান্নাঘর, স্নানঘর আর একটা বড় বারান্দা ভাড়াটিয়ার জন্য বরাদ্দ হল। বাড়ির চারপাশে অনেকটা ... ...
জীবন তরঙ্গ - ১৭ এমএসসিতেও রণজয় ফার্স্ট ক্লাস পেল। পাশ করার অল্প সময়ের মধ্যেই একটা আধা সরকারি সংস্থায় ভদ্রস্থ একটা চাকরি লেগে গেল। রাশি তখন থার্ড ইয়ারে পড়ে। নির্মাল্য খুব খুশি এবং অনেকটা নিশ্চিন্ত হলেন। ছেলে ভাল জায়গায় চাকরি পাওয়াতে দিগ্বিজয়ও খুশি হয়েছিলেন। তবে যথারীতি তার বহিঃপ্রকাশ ছিল খুব সীমিত। রণজয় চাকরি পাওয়ার খবরটা প্রথমে মাকে জানিয়েছিল। কণিকা খুশি হয়ে অনেক আদর আর আশীর্বাদের পর ... ...