সময় পেরিয়ে গেলে তবে, ক্ষমা, দিতে চেয়ে নিয়ে আসা শেখা। শেখা দিতে চাওয়া। ভালোবাসি, বলেছিলে, শূন্য অনুভব। চেয়েছিলে কিছু তাই, চাওয়া, যেন বন্ধু হতে চায়। সমাধিস্পর্শী এসব, অর্থহীন। ব্যর্থ নামে ডাক তাকে। শুধু হায়, সময় ফুরিয়ে গেলে তবে।"Over time you will learn to forgive or ask for forgiveness, say you love, say you miss, say you need, say you want to be friends, since before a grave, it will no longer make sense. But unfortunately, only over time…”~Jorge Lui Borges ... ...
তখনও চেননি অনমনীয়তার স্বর। তুমি, খোঁজনি তখনও দৃঢ়তার স্পর্শ। খুঁজতে গেলে যেদিন, মনে হয়েছিল পৃথিবীর সব সেতু একসাথে ভেঙে পড়েছে, তারপর তুমি তিস্তার জলে ভেসে, পাথরের স্পর্শে, তার প্রত্যেক চুম্বনে ক্ষতবিক্ষত হয়েও বেঁচে যাবে। ভুলে যাবে সেতু ভাঙায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে, একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে চিৎকার ক'রে বলেছিলে, "আমি ভাঙিনি, আমি ভাঙিনি..."। তোমাকে তখনও শেখানো যায়নি কঠিনের অর্থ। এরপর একদিন তিস্তার কাছে দাঁড়িয়ে তুমি তাকে প্রশ্ন করবে। সে বলে,"দেখো দেখো রে চিত্তকমলে চরণপদ্ম রাজে-- হায়!"সেদিন ওপরে তাকাতে তুমি দেখতে পেয়েছিলে, তিস্তার দুপাড় জুড়ে সেতুবন্ধন। অক্ষত। তুমি জানতে পেরেছিলে, সেতু নয়। মানুষ ভেঙেছিল সেদিন। এমন করে তুমিই ভেঙেছিলে। প্রতিদিন। একটু একটু ক'রে... আজ তার ওপর ... ...
ধারণা ভাঙলে শব্দ হয়? তার কি যন্ত্রণা হয়? কাঁদে সে ব্যথা পেলে? হয়তো হয়, হয়তো কাঁদে। সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে, কার্নিশে তখন জমতে থাকা শ্যাওলায় চোখের জল পিছলে নীচে পড়তে থাকে। তিনতলার ঝুলবারান্দা, দোতলার লাইব্রেরী, একতলার সিঁড়ির ঘর কেউ তাকে ডাকেনা, কেউ বলেনি, "দাঁড়া, কি হয়েছে?""বিপরীত মুখে চলে যাওয়া রাজপথ কতোটা সময় রেখে যায়---আয়ুহীন মাপকাঠি?"অল্পেতে কষ্ট পায়, অল্পেতে হাসে। আর কষ্ট পেলে? হাসে। ধুলো উড়িয়ে, পাথর কুড়িয়ে নিয়ে হেসে ওঠে। পাথর জমানো যে তার শখ। সেই ছোট্টবেলার শখ। পরশপাথর? ধারণা ভেঙে পড়েছে। টুকরো টুকরো পাথর হয়ে। মাটির সোঁদা গন্ধে, বকুল কুড়াতে এসে কেউ পাথর তুলতে থাকে, বিন্দু বিন্দু শিশিরে তার ... ...
আমাদের ভারসাম্যহীনতার দায় সরে গেছে স্থবিরতার দিকে। এই গতিহীন বিবর্তনকে যদি বলা যেত ধ্রুবক, তবে হয়তো এত ক্লান্তি নিয়ে, অপরিবর্তনীয় গ্লানি নিয়ে কাউকে ফিরে যেতে হতো না। শুধু একটাই প্রশ্ন থেকে যায় কেউ কি সত্যিই পারে ঝরে পড়া বকুলের দীর্ঘশ্বাস হয়ে উঠতে? যেখানে শুধু অগ্রন্থিত শিকড়ের মত বিস্মৃতির বিস্তার ঘটে যায়। এভাবে একটা কথাকে বারবার কেউ ফিরিয়ে দিয়েছে আমার কাছে : এমন করেও বিনির্মাণ সম্ভব?It was the corpses that the fire could burn.যে দ্বান্দ্বিকতায় দুচোখ বুজে আসে, দৃষ্টিশক্তি সংকুচিত হয় ক্রমাগত, সে আমায় অন্ধ করে।~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~"সূর্যাস্ত দেখে মুগ্ধ হলে কোনোদিন, কাঁধে হাত রেখেছি নিজের, ‘সত্যি তো, নাকি বই পড়ে শিখেছ?’ জানতে চেয়েছি, ... ...
~সত্যি বলতে ভীষণ সাংসারিক টাইপের সিনেমাটা, সংসার : ভালো না খারাপ? দেখ, এসব আমি বলছি না যে সংসার করা খারাপ, না না ভালোই, হ্যাঁ ভালোই তো, কিন্তু কী বলতো সিনেমাটা আমার পছন্দ হয়নি...গতকাল এক বন্ধুর সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ সংসার প্রসঙ্গ উঠে আসে। আমি বুঝতে পারি হঠাৎ বলে ওঠা "সাংসারিক টাইপের" কথাটা কীভাবে আমি নেবো তা আমার বন্ধু বুঝে উঠতে পারেনি। সে চেনে আট বছর আগের এক মেয়েকে, সেজন্য অনায়াসে আমার সামনে বন্ধু বলে ফেলে, "সাংসারিক টাইপের...."। তারপর তার খেয়াল হয়, আট বছর পেরিয়ে গেছে মাঝে। আট বছরে সে কি জয়শ্রী ম্যাডাম এর তাৎক্ষণিক লেখা ক্লাসে "সংসার" বিষয়ে যে বিশ্ব ... ...
"এতদূরে সরে গেছো/ নিভৃত সৃজন ফেলে/ অন্য নির্মাণে―" কথা নয়, আমি রূপকথা হতে চাই। এ জন্মে যা কিছু দেখতে পেলাম তার সবই প্রতিফলিত। বিপরীতে থেকে গেল প্রথা অনুসারে। নিয়ম মেনে, নিষ্ঠা ভরে শিউলিগুলো মাটিতে ঝরে পড়েছে। অবিন্যস্ত। কিন্তু ওদের গন্তব্য একক। এরপর ধুলো বালির পরতে সেই শ্বেতশুভ্র স্নিগ্ধতা ম্লান হয়ে আসে। তাদের ফিরে যাওয়ায় একক এর অনুভূতি থাকে। তাকে আমি ডাকলাম অদ্বিতীয়া বলে। ওদের আসা যাওয়ায় পরিবর্তন শুধু সহনের, অপেক্ষার। যে অপেক্ষায় চোখের নীচে সন্ধ্যে নামে। এমন দুই অপেক্ষার মধ্যে তবে এত দূরত্ব, এত অসমাপ্য দ্বন্দ্ব, এত বিরোধ, এত প্রভেদ। এ জন্মে কোনও এক অপেক্ষা অদ্বিতীয়া হয়ে উঠতে পারলনা। অস্বচ্ছ দৃষ্টি ... ...
অভিসার মানে ঠিক ততটা যাওয়া নয়, যতটা যেতে চাওয়া ~সুনেত্রা ঘটকআজ থেকে প্রায় বছর পাঁচেক আগের কথা। "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" পড়তে পড়তে বছর সতেরোর যে মেয়েটা ভাবে, 'এসব আবার কী?, ভীষণ বোকা বোকা তো!', যুক্তি-তর্কের যূপকাষ্ঠে 'অভিসার' শব্দ বলিপ্রদত্ত হয় যার নিষ্ঠুর হাতে; সেই হাত আজ কাঁপছে। তীব্র অনুকম্পন। প্রতিটা আঘাত, নিজের প্রতি ধিক্কার ছারখার করে দিচ্ছে এক ঘৃণিত বাইশকে। যন্ত্রণার দায় প্রতিবারের মত এবারেও মাথা পেতে নিয়েছে কালো ফ্রেমের আড়ালে ... ...
পাড়ের মাঝে জোড়াতালিছিন্নভিন্ন টুকরো কথাজুড়তে গেলে নকশি কাঁথাআলগা সুতো জমকালো বেশগাঁথতে পারা, ছিঁড়তে পারা,সূক্ষ্মসূচীর পত্রমালাপাথরকুচিবিস্মৃত প্রায়গতজন্মের দ্বিপাক্ষিকসারি বাধা, জড়িয়ে বাঁধাকঙ্কালসার ভুল;বাধন খুলে বাঁধতে থাকা অনিয়মিত অন্যনামেনামমাত্র মাত্রনামেপৌষালী এক আরোপ দোষেএক ফসলি উক্তি স্বীকারঋতম্ভরা, কঙ্কাবতীনীলকণ্ঠ ভ্রান্তিসমজন্মায় না পুনঃপুনঃ।ফাঁসিকাঠে মৃতদেহনয়ানজুলিগা ডুবিয়েরূপনারাণী রূপের খোঁজেমোহনমাঝিনৌকাডুবিতুর্কিনাচন-মরণবাঁচন,ক্ষণিক মাঝে ধনেখালিনীরাগ সজলপদ্মনয়ন,রক্ত ওঠে ফিনকি দিয়েবিন্নি ধানের খই।খানিক হৃদয়, হৃদয় ক্ষণিকভাষা-ভাঙা-পাড়ভাঙা-পাড় ভাসেআশমানি স্বরঅমলতাসে,নোঙর তোলাপ্রলাপ-গোলাপ,বকুল ঝরে কই?নোনতা স্বাদেগল্প ভুলেভুল গল্পের মাশুল গোনেমাত্রাবহু!সপ্তপর্ণীতিনসত্যি তিনসত্যিমন্দভালো তাসের বাসাযাযাবরী চালেআশাবরী গানসব সত্যি। তিন সত্যি।কল্পতরু, মৃদঙ্গ তাইশুনতে হবে তাও সত্যি।আলফানি গান শুনতে পেয়েউলগুলানের ভয় পেল যেকৌরবী নদীপ্লাবনী বেগে,উরু-মেরু খন্ড বেচে,মহুয়ার নামে দিব্যি ক'রে,জলের দরেআচম্বিতেহৃদয় কিনে;নকশি কাঁথায়,ভিজতে থাকাআলগা সুতোয়,ইস্কাবনে;ওরা সব পালিয়ে বাঁচেওরা সব পালিয়ে বাঁচে। ... ...
সেযেন একবুক বিষাদের মতো। সেই বিষটুকু হোক আমার। ...........……...............………….............................................যতটুকু শোক, যতটুকু ক্ষোভ, যতটুকু পরিচয়তবু যেন কারও অসম নিরীক্ষণ। বিলাপী আলাপ, গোলাপি সুতো, প্রত্যাশী কেউ উড়তে থাকে, অন্য পাতায় ঝরতে থাকে, অন্য ফুলের নাম।সে। যেন আমার চেনা মানুষের ছায়ার মতো। সেই ছায়াটুকু হোক আমার।…...................................................................................যতটা ক্ষত, যতটা অশ্রু, যতটা সমর্পণতবুও তো তার অস্বচ্ছ অনুমান। আলাপী বিলাপ, মরচে শিকল, বিপরীতে কেউ ঝরতে থাকে, শালুক জলে ডুবতে থাকে, মৃত গতকাল।এমন ক'রে, বিষের পাত্র নিয়ে আমি ফিরে যাই। একজন্ম পারাপার..... আমি ফিরে যাব। ................................................................................. ... ...