রাজার ব্যাটা কেরোসিন তেলওয়ালা। এটা দেখতে আমরা একেবারেই অভ্যস্ত নই। কারণ বাবর পুত্র হুমায়ূন মসনদে বসেছিলেন। তারপর তাঁর পুত্র আকবর। তারপর পুত্র জাহাঙ্গীর। তাঁর পুত্র শাহজাহান। তারপরে তাঁর পুত্র ঔরঙ্গজেব। এই জাতীয় পিতাপুত্রের পরম্পরার কাহিনী ইতিহাস ছেয়ে রয়েছে। সেটা ছিল রাজরাজড়াদের একনায়কতন্ত্রের যুগ। গণতন্ত্রের বালাই ছিল না। দেশ স্বাধীন হবার পর গণতন্ত্রের জোয়ার এল। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হল। জনতাই হল জনার্দন। এই আপ্তবাক্য ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচারিত হল। জনতার ভোটে নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধিরা দেশ বা রাজ্য শাসন করবেন। সংবিধানের ছত্রে ছত্রে এমনটাই বর্ণিত। যোগ্যতার নিরিখেই জনপ্রতিনিধিগণ দেশ শাসনের অধিকার পাবে। গণতন্ত্রের কষ্টিপাথরে যাচাই করার পরেই মিলবে দেশ চালানোর চাবিকাঠি। জনসাধারণের ... ...
'জীবনপণ' সুপার স্পেশালিটি বেসরকারি হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট চেম্বারে মিটিং চলছে খুব গোপনে। সুপারের টেবিলের সামনে মোট তিনজন বসে। তিনজনেই সিনিয়র ডাক্তার। এই হাসপাতাল শুধু নয় তাঁরা প্রত্যেকেই শহরের আরো বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে যুক্ত। "আজকের ভর্তি নিয়ে টোটাল ক'টা পেশেন্ট ?" খুব চাপাস্বরে সুপার জিজ্ঞেস করলেন। "শুধু কি কভিড পেশেন্ট বলব ?" ডা: সুবীর সরকার বললেন। "তা নয়ত কি, অন্য পেশেন্ট নিয়ে কথা বলতে বসেছি ?" সুপারের গলায় ঈষৎ ঝাঁজ। "আজকের নিয়ে টোটাল ছত্রিশ।" "ফিফটি আপ কজন ? আর কদিনের পুরনো ?" "স্যার, প্রায় কুড়ি জন ফিফটি আপ। আঠাশ জন কো-মর্বিডিটি প্লাস। তারমধ্যে বাইশ জন পুরোনো। আইসিইউতে রয়েছে আঠেরো। তার মধ্যে চারজন বিলো ফর্টি।" "ওই বাইশ জনের মধ্যে ... ...
ভারতবর্ষের কিছু মানুষ বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব নিম্নস্থানীয় ধারণা পোষণ করেন। ওরা অনুপ্রবেশকারী, উইপোকার মত আমাদের দেশে ঢুকছে... ইত্যাদি সংলাপ সেই ধারণারই ফসল। যাঁরা এই ধরনের কথাবার্তা বলে থাকেন, আমার খুব সন্দেহ আছে তাদের বাংলদেশ সম্পর্কে জানার আগ্রহ নিয়ে। ... ...
সারা পৃথিবী জুড়েই চলছে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসার রমরমা। অবাক হচ্ছেন? অবাক হবার কিছু নেই। একেবারে ঠিকই বলছি। মানুষের জীবন বাঁচায় যে ওষুধ সামগ্রী, তার ব্যবসাতেই সবচেয়ে বেশি মুনাফা। তাই পৃথিবীর তাবড় মুনাফাখোরদের ওষুধ ব্যবসার প্রতি তীক্ষ্ণ নজর। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই বুঝতে পারবেন। একটু পিছিয়ে কয়েক বছর আগেই পাড়ার দোকানগুলো ওষুধের এমআরপিতে দাম নিত। ওষুধের দামের সঙ্গে লেখা থাকত এল.টি. অর্থাৎ লোকাল ট্যাক্স এক্সট্রা। মানে একটি ওষুধের এমআরপি দাম যদি একশো টাকা হয়, খুচরো বিক্রেতা আরো আট দশটাকা বেশি অনায়াসে নিতে পারত। এই অরাজক ব্যবস্থা যদিও কালক্রমে উঠে গেছে। এখন এমআরপিই যথেষ্ট। ... ...
কেন্দ্রের কালা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন চলছে, এ কথা আজ সব্বাই জানি। কৃষকদের সাথে সরকারের একাধিক বৈঠক অসফল হয়েছে। কারন কৃষকদের একটাই দাবি, কালা কানুন রদ করা হোক। কেন্দ্র তা মানবে না। আর মানবেই বা কি করে ? ছেলেখেলা নাকি ? আবদার আর কি ? চাষাগুলোর কি বোধ বুদ্ধি নেই ! আরে আইন পাশের অনেক আগে থেকেই আদানিভাই প্রচুর ইনভেস্ট করে ফেলেছেন। আদানি, আম্বানী গুজ্জুভাইয়েরা আগে নাকি তোদের মত চাষাভুসো ? ... ...
আজকাল মনীষীদের জন্মতিথি পালনে কোন না কোন রাজনৈতিক দলের তত্বাবধানে তাদের নেতা বা নেত্রীর ছবি মনীষীদের ছবির ওপরে বিরাজ করে। ... ...
অত্যন্ত বিশ্বস্তসূত্রে আমি জানতে পেরেছি যে আপনাদের যুদ্ধাপরাধী সুভাষচন্দ্র বসুকে স্তালিন রাশিয়াতে ঢুকতে দিয়েছেন। এটি রাশিয়ানদের পক্ষে পরিষ্কার বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। যেহেতু রাশিয়া, বৃটিশ ও আমেরিকার সাথে মিত্রপক্ষেই ছিল সেহেতু তাদের এটা করা উচিত হয়নি। অনুগ্রহ করে এই ব্যাপারটি মনে রাখবেন এবং এই ব্যাপারে যা প্রয়োজনীয় ও সঠিক বলে মনে করবেন তাই করবেন। ... ...
"বৈধ টিকিট কেটে ট্রেনে চড়তেও অওকাত লাগে মশাই..." হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। 'অওকাত' অর্থাৎ ক্ষমতা লাগে। যদি কেউ কষ্ট করে হলেও রাজধানী ট্রেনের টিকিট কেটে ফেলে। তাহলেও চড়তে পারবে কিনা, এটায় এখন বিস্তর সন্দেহ। কারণ পোশাকই আপনার পরিচয় বহন করবে। সেই পোশাক যদি অমলিন হয়, তাহলে বৈধ টিকিট সত্ত্বেও আপনি ঘাড় ধাক্কা খাবেন ট্রেনের দরজায়। উঠতে দেওয়া হবে না। ... ...
অনেকক্ষণ ধরে অনেকগুলো দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। অবশেষে যেরকমটি চাইছিলেন, ঠিক সেরকমটি নাহলেও কিছুটা কাছাকাছি ধরনের পেলেন। সেই সস্তার যুগ তো আর নেই ! এখন সবই অগ্নিমূল্যের বাজার। তাই ভাবনার চেয়েও বেশ কিছু গুণ বেশিই পকেট থেকে খসলো। তা কি আর করা যাবে...! এখন মূল্যেও উচ্চ আর গুণমানে নিম্ন, এটাই ভবিতব্য বলে মেনে নিতে সকলেই একপ্রকার বাধ্য। বস্তুটিকে পরম যত্নে হাতের ছোট্ট ব্যাগটিতে ভরে শালের আড়ালে সেঁধিয়ে ফেললেন। যেন লোকচক্ষুর নজরে না পড়ে, সেই ভয়ে। শীতকাল পড়লেই মনটা ভীষণ উচাটন হয়ে যায়। ডিসেম্বরের বেলা সাড়ে এগারোটাতেও হনুমান টুপি, মাফলার, পায়ে মোজা পরে পাম্প শু, ফুলহাতা সোয়েটারের ওপর দিয়ে শাল জড়িয়ে তবে বের ... ...
এমনিতে শান্তিনিকেতন বহুবার গেছি। খুব সাধের জায়গা। সাধ্যের ও বটে। মনের মধ্যে বেড়ানোর সাধ প্রচুর থাকলেও সাধের সংকুলান অপ্রতুল। করোনার জন্য সঙ্গত কারণেই এ বছর নয়। আগের বছর ঠিক এই সময়ে গিয়েছিলাম। শান্তিনিকেতন বহুবার গেলেও সোনা ঝুরির হাট টি দেখার সৌভাগ্য কোনোবারই হয়নি। এটা আমার দূর্ভাগ্য। এবার মনে মনে ঠিক করেই রেখেছিলাম, সোনা ঝু রির জঙ্গলেই রাত্রিযাপন করব। তাই আগে থেকে শকুন্তলা রিসোর্টে একটি ঘর বুক করে রেখেছিলাম। সত্যিই অপূর্ব এক রিসোর্ট, শকুন্তলা। সুচারুরূপে কৃত্রিম গ্রাম্য পরিবেশ সাজিয়ে তোলা। রিসর্টের ভিতরে পুকুরে রাজ হাঁস চরছে। গরুর গাড়ি দাঁড় করানো। মাটির প্রলেপ মাখানো খড়ের চালের কুটির। পোড়া মাটির সাজ সজ্জায় ভরানো ... ...