যাদবপুর - আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি : অভিষেক তুঙ্গা
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ১৩৮০৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩০১
আমাদের বক্তব্য কী?
১) যে কেউ অভিযোগ করতেই পারে তাকে র্যাগিং করা হয়েছে,কিন্তু প্রকৃতই র্যাগিং হয়েছে কিনা,তার সঠিক অনুসন্ধান হওয়া উচিত।
২) গোটা ঘটনায় মানিক এর দোষ অবৈধভাবে রুম-এ ছাত্র রাখার ঘটনা সুপার-এর নজরে আনা! অনুপমের দোষ উত্যক্ত কথাকাটাকাটি মধ্যে চড় মেরে বসা,যেটা আবার নিজে মিটিয়েও ফেলে। বাকি ঘটনাগুলো কারা করেছে প্রমাণিত নয়, তাহলে কি করে এই দুজনকে র্যাগিং এর শাস্তি দেওয়া হচ্ছে?
৩) Fact Finding Committee এভাবে লুকিয়ে অনুসন্ধান চালানো কেন? এমনকি Anti Ragging Committee-এর মেম্বারও জানতে পারলো না!
গণপিটুনির ধারাবিবরণী : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৪ জুলাই ২০১৯ | ২৪৯৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
ক্যামেরার সামনে একের পর এর খুন হয়ে চলেছে। খুনীদের চেহারা ক্যামেরায় স্পষ্ট। অথচ তাঁদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। ক্যামেরা বন্ধ করানোর কোনও চেষ্টা নেই। বরং, বীরত্ব, জিঘাংসা আরও ফুটে বের হচ্ছে। আইনের শাসনের প্রতি মানুষের মনে কতদূর অবজ্ঞা জন্মালে এটা হতে পারে, সেটা ভেবে দেখুন। ধরুন, আমি গয়নার দোকান থেকে চুরি করছি। ক্যামেরা চলছে জেনেও আমার কোনও হেলদোল নেই। কেন না, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমি জানি, কোই মাই কা লাল, আমার কিছুটি বাঁকা করতে পারবে না।
ডাক্তার-রোগী সংবাদ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ২১৪৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
তার দু’হপ্তা পরের কথা। এই দু’হপ্তায় আমার শরীর আদ্দেক হয়ে গেছে। মাথায় আর চুল বিশেষ অবশিষ্ট নেই। তার মধ্যে মুখে কী সব গুড়িগুড়ি বেরোনো শুরু হয়েছে। আমার সুহৃদরা ডাক্তার পাল্টাতে বলছে। কেউ কেউ বলছে একটা সেকেন্ড ওপিনিয়ন নিতে। কথাটা ডাক্তারকে বলতেই ওনার চোখদুটো ছলোছলো হয়ে গেল। কান্নাভেজা গলায় বললেন, "অন্তত আর দুটো হপ্তা দাও আমায়?" ওই কাঁদোকাঁদো মুখ দেখে আমার মনে ভদ্রলোকের জন্য মায়া হল। ভাবলাম, যাক গে দুটো সপ্তাহর তো ব্যপার। ডাক্তার বলল, "রেডিও শুনবে?"
মিত্রর পত্র : অভিজিত মজুমদার - অনুবাদ সায়ন কর ভৌমিক
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ৩১ আগস্ট ২০১৭ | ১৭৭২ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
আজ সেই বহুপ্রতীক্ষিত ও বহুপ্রতিশ্রুত ৫০ (x ৬) দিন পর আমাদের দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত মশা থেকে মুক্ত, গঙ্গা নদীতে বইছে পবিত্র টাকা, বয়স্কদের ওষুধের জোগান নিশ্চিত, সন্ত্রাসবাদ, নক্শালপন্থা, মাওবাদ, জালটাকার বাণিজ্য, ড্রাগ ব্যবসা, মানব পাচার সব কিছু উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, এখন দয়া করে সেই 'অর্ধেকের বেশি সাংসদ', যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনার যুদ্ধকে বাধা দিয়েছিলেন, তাদের নাম গুলো প্রকাশ্যে আনুন। দুই তৃতীয়াংশের বেশী সাংসদ তো আপনারই জোটের। দয়া করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন তাদের ওপর। অন্তত আপনার ঘরের সাংসদদের ওপর তো বটেই। ইংরেজীতে কথাই আছে, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম, তাই না?
ডায়রি নয়, লিখিত এজহার! - পর্ব ১ : অভিজিত কুণ্ডু
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : অন্য যৌনতা | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | ৯১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
পরবর্ত্তী সময় “জেন্ডার কনস্ট্রাক্ট” নিয়ে তো অনেক পড়াশোনা করেছি, কিন্তু তখন তো বয়স মাত্র'চার'। কিন্তু ওই বয়সেই এই বোধটুকু তৈরী হয়েছিল যে ছেলেদের এত কোমল হ'তে নেই - এত মায়া মমতা, এত' দয়া দাক্ষিণ্য কি 'ছেলে'দের হ'লে চলে? তাদের ত' হ'তে হবে খাপছাড়া, বেমানান, ডানপিটে, মিটিমিটি, বদমাইশ। তবেই না ছেলে, ব্যাটাচ্ছেলে!! আর এ দেখ - সবকিছুই কেমন মানানসই, বড় সুন্দর, বড় নরম, "ভালো' এবং আদুরে টাইপ!! পাল্টে দাও, পাল্টে দাও একে !!
ব্যোমকেশ- এক রিভার্স ট্রিবিউট পর্ব : অভি
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ০৯ জানুয়ারি ২০১৭ | ৭৪১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
বাংলার ভাগ্যাকাশে এখন ব্যোমকেশের দুই সত্ত্বাধিকারী, ঈশেন আর সত্যবাহন, ইয়ে মানে দত্তবাবু আর শীলবাবু। দত্তবাবু ল্যাপ শুরু করেছিলেন আগে, অন্যজন সদ্য যোগ দিয়েছেন। ওনার আগের ফিল্মটা দেখে মনে হয়েছিল, বজরা টজরা এনে ট্রিবিউট দিয়ে ফাটিয়ে দিতে চাইলেও, জ্ঞানের বহর প্রথমজনের চেয়ে একটু কম হওয়ায় হয়তো একটু বেশি সহনীয় হবে। কিন্তু এই পর্ব দেখে উপলব্ধি: এটা বাস্তবে দত্ত vs দত্ত।
আসলে ট্রিবিউটের মধ্যেই কেলোটা লুকিয়ে ছিল। এতে উনি ট্রিবিউট দিয়েছেন স্বয়ং অঞ্জন দত্তকেই, একটু আদিবাসী নাচে আগন্তুক, রেসকোর্সের বাইরে সীমাবদ্ধ ইত্যাকার কিছু হালকা সত্যজিৎ বাদ দিলে। লোকেশন সেই এক ডুয়ার্স, ভিলেন সেই এক কৌশিক, গ্রেফতারির আগের সেই এক ধাঁচের বক্তৃতা, এবং জ্ঞানের বাটখারা।
ফিরে এসে মনে হল ন্যাশনাল এনথেম ও ন্যাশনাল সং দিয়ে মোড়া এই সিনেমাটিতে কী কী চমক লাগলো, তারও লিস্টি করা দরকার। শুরুতে ড্রোন ক্যামেরায় রেল লাইনের বিহঙ্গদৃষ্টি অতি চমৎকার, কিন্তু তারপরেই চমক। রাইটার্সে বসে আছেন স্বয়ং অরিন্দম শীল, টেবিলে লেখা 'মুখ্য সচিব'। এবং তার পর থেকেই সত্যবতী, অজিত, বড় দারোগা সবাই বিন্দাস বলে যাচ্ছে মুখ্য সচিব অমুক, মুখ্য সচিব তসুক। ১৯৪৮এর আগস্টের আগেই 'মুখ্য সচিব' শব্দের এরূপ প্রসার ও গ্রহণযোগ্যতা দেখে তাক লাগার শুরু। আমার সহদ্রষ্টাকে বললাম, ইয়ে তখনও মাউন্টব্যাটেন আছেন, সংবিধান আসতে বহু দেরি তো, তিনি বললেন, চুপ করে দ্যাখ। দেখলাম। এবং এটা হজম করার পর আর কষ্ট হল না যখন দেখলাম সেই মুখ্য সচিবের ঘরের দেওয়ালে অখণ্ড বাংলার ম্যাপ, তিনি নিজেই সান্তালগোলার তদন্তের দায়িত্ব দিতে তো এসেইছেন সরকারের তরফ থেকে, সেই সান্তালগোলার সম্ভাব্য কোন কোন ব্যবসায়ী আসামী হতে পারেন তার লিস্টিও তিনিই পকেটে নিয়ে ঘোরেন, দারোগা নন, এসপি নন, এমনকি সিপিও নন। তা সেই তথাকথিত নগণ্য জায়গার ওসিকে সরাসরি নির্দেশ দেন মুখ্য সচিব, এবং তার পরেও সেই সচিবের পাঠানো খাস গোয়েন্দার সামনে সরাসরি তাচ্ছিল্য, হুমকি ইত্যাদি দেখাতে সাহস করেন আংরেজ জমানার সেই দারোগা। চুপ করে দেখা ছাড়া উপায় নেই। আমি তো কোন ছার, ব্যোমকেশ-ই চুপ।
অধরাই রয়ে গেছে ‘মেক ইন ইণ্ডিয়া’র স্বপ্ন : অভিজিত মুখোপাধ্যায়
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৮৯০ বার পঠিত
২০০৮-এর সারা বিশ্বের প্রবল অর্থসংকটের পরে দুনিয়া জুড়েই অর্থনীতি থমকে রয়েছে, এবং এখনো পর্যন্ত সেই আগের বৃদ্ধির ধারেকাছেও ফেরত আসতে পারে নি, তার মানে দাঁড়ায় বিদেশে রপ্তানি করে নিজের দেশের ম্যানুফ্যাকচারিং-এ বৃদ্ধি ঘটানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায় ২০১৪ সালে এসে চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং সাফল্য ভারতে “কপি-পেস্ট” করাটা অনেকটাই অসম্ভব উচ্চাকাংখা বলেই বোধ হয়েছিল কিছু অর্থনীতিবিদের, কিন্তু নতুন সরকারের সাথে সাথে নতুন আশাবাদী ভাবনাচিন্তারও জন্ম হয়েছিল বলে সেই সব মতামত খুব একটা হালে পানি পায় নি। প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে ‘মেক ইন ইণ্ডিয়া’ ঘোষণার পরে। এখন সময় এসেছে এই বহুল প্রচারিত প্রকল্পের একটা নিরপেক্ষ মূল্যায়নের
এক ট্রাঙ্ক গপ্পো : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০১৮ | ৩৪১৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৬
কলকাতা টেলিফোন ভবন। ডালহৌসি স্কোয়ার, যাকে এখন বিবাদী বাগ বলা হয় সেইখানে লালদীঘির পাড়ে সুউচ্চ অট্টালিকা। তার সাত তলায় ট্রাঙ্ক এক্সচেঞ্জ। যে সময়ের কথা বলছি তখন কলকাতা থেকে দুবরাজপুর কথা বলতে হলেও ট্রাঙ্ক কল বুক করে অপেক্ষা করতে হত কখন টিলিফোনের ঘন্টি বাজবে। আবার কানেকশন লাগলেও শান্তি ছিল না, কেন না যান্ত্রিক গোলযোগে প্রায়ই লাইন কেটে যেত। সেইসব দূরবর্তী ফোন ও মনের কানেকশন জোড়ার কাজ যারা দিনে রাতে ২৪ ঘন্টা করতেন তাঁদের পোষাকি নাম ছিল টেলিফোন অপারেটরস। কোনো এক অজ্ঞাতকারণবশত: তাঁরা সবাই ছিলেন মহিলা। যার মধ্যে আমার মা ছিলেন একজন। তাই সেইসব অপারেটররা সবাই ছিলেন আমার অমুক মাসি, তমুক মাসি। সংখ্যায় প্রায় তিনশো ছুঁই ছুঁই। অজস্র নাম আর তাঁদের জীবনের অজস্র গল্প। হাসি-কান্না-লড়াই। জয়ের গল্প। হারেরও। সেই সব গল্পই মায়ের মুখে শোনা। মায়ের তেত্তিরিশ বছরের চাকরি জীবনে, অর্থাৎ বিংশ শতকের শেষ তৃতীয়াংশে টেলিফোন ভবনের ট্রাঙ্ক এক্সচেঞ্জে কাজ করা মানুষীদের জীবনের সেই সব সিনেমাকে হার মানানো টুকরো-টাকরা সত্যি গল্প নিয়ে এই সিরিজঃ "এক ট্রাঙ্ক গল্প"। পাত্রপাত্রীদের নাম পরিবর্তিত।
বিছে : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০৭ নভেম্বর ২০১৮ | ১৮৩৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
প্রায় এক সপ্তাহ সেই ফোনের অপেক্ষা করেছিল শতদ্রু। আসে নি।
আর এই এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে ওই অজানা অবয়বটা আকৃতি নিয়েছিল ওর মাথায়। সেই অবয়বটার দেহ সুগঠিত ও পিচ্ছিল, দুটো বাড়ানো সরু হাতের শেষে আঁকশির মত দাঁড়া, ঘন ভুরুর নীচে দীঘল চোখে মায়া ও মোহ, আর শ্রীলেখা মিত্রর মত ভারী ঠোঁঠের তলায় তীক্ষ্ণ মাদকভরা একটা লুকোনো হুল।
শতদ্রু এরপর আর দেরি করে নি। বহুদিন ধরে লুকিয়ে রাখা সেই বিছের ছবিগুলো এয়ারমেলে পাঠিয়ে দিয়েছিল কলকাতায় রাজীব ঘোষের অফিসের ঠিকানায়। এক ঝটকায় বিছেটার সমস্ত চিহ্ন মুছে দিয়েছিল নিজের জীবন থেকে।
তখন কে জানত, আবার ন বছর বাদে এভাবে বিছেটা ওর সামনে এসে দাঁড়াবে? এই রকম করুণ, থ্যাঁৎলানো, মৃতপ্রায় অবস্থায়?
ভালো লাগে আরবার/ পৃথিবীর কোণটি : অভিষেক সরকার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৫ জুন ২০১৮ | ১২৮৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
পরিবেশ বলতে কী বুঝি আমরা? গাছ-পালা,পশু,কীটপতঙ্গ, নদ-নদী, পাহাড়, সমুদ্র, অন্তরীক্ষ এইসব? মানে মানুষ এবং তার সমাজের বাইরের জিনিসপত্র। জাতিভেদ মেনে নিয়ে প্রজাপতিকে চুমু খেলে তা কি সু-পরিবেশ চেতনা? ধোঁয়াহীন ইলেক্ট্রিক গাড়িতে করে দিল্লি-মথুরা হাইওয়ে দিয়ে চলতে চলতে জানালা দিয়ে চিপসের খালি প্যাকেট ফেলে দেওয়া? পরিবেশের বাইরে আসলে কে? কী? যে স্মলপক্সের ভাইরাস নির্মূল করার জন্য আমাদের দীর্ঘ অধ্যাবসায় আসলে তো প্রকৃতি সেও। গোড়াতেই তাই মেনে নেওয়া ভালো যে মানুষের পরিবেশ চেতনা আসলে মানুষেরই স্বার্থে। কখনো সেটা প্রত্যক্ষ ভাবে অর্থ, কখনো বা নন্দনবোধ, কখনো বা কারুণ্য ও সহমর্মীতা। এবারে দ্যাখার দরকার যে স্বার্থটা য্যানো দীর্ঘমেয়াদী হয়।
শোনা কথা ৩ - দেশ ও সীমানা : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ আগস্ট ২০১৮ | ২২৪৬ বার পঠিত
আসলে বুঝি না, দেশ মানে একটা রাজনৈতিক-ভৌগোলিক সীমানা নয়, দেশ মানে জবরদস্তির ভক্তি নয়, দেশ মানে একাত্মতা। দেশ মানে একটা ভূখন্ড যাকে আমি চিনি এবং যে আমাকে চেনে। সেই ভূখন্ডের সীমানা যা কিছুই হতে পারে। তাই আমার আমেরিকান সিটিজেন দিদি বৎসরান্তে 'দেশে' ফেরে আর আমার কাজের দিদি 'দেশে' যায়।
আমি বাবা-মাকে কলকাতায় ফোন করি। ফোন রেখে দিয়ে বলি, বাড়িতে ফোন করেছিলাম। আমায় কেউ বকে না। কেউ বলে না, কেন মুম্বাইয়ে যেখানে থাকো সেইটা কি বাড়ি না? সেটা কি গাছতলা? কেউ বকে না। তাই আমি কলকাতায় গেলে নির্দ্বিধায় বলি, "বাড়ি গেছিলাম", ফিরলে বলি, "বাড়ি থেকে ফিরলাম"। আসলে বুঝি, বাড়ি মানে ইঁট, সিমেন্ট, জানলা নয়। বাড়ি মানে অন্যকিছু। ঠিক কি সেটা জানি না।
শোনা কথা ২ - হিসাব-কিতাব : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | বাকিসব : শোনা কথা | ৩১ জুলাই ২০১৮ | ১৩৯৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
আচ্ছে দিনের বাজারে অবশ্য সবসময় উন্নয়নের হিসেব রাখা মুশকিল। কখন কোথা দিয়ে বিকাশ হয়ে যাবে, টেরটিও পাবেন না। ভাববেন আমের বাজারদর যাচাই করবেন, সরকারপক্ষ আপনার হাতে ধরিয়ে দেবে আমলকী ফলনের বার্ষিক হিসেব। যেমন ধরুন, কর্মসংস্থান। বিরোধীপক্ষ সরকারের কাছে জানতে চাইলেন গত চার বছরে কত নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। মোদীজি তার উত্তরে কতজন বছরে পাশ করে ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, সি এ হচ্ছে তার হিসেব দিয়ে দিলেন। নাও, এবার ঠ্যালা সামলাও। তাই বলছি, হিসেব মেলানোর চেষ্টা না করাই ভালো।
শোনা কথা ১ - বংশবিস্তার : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৬ জুলাই ২০১৮ | ১৩৮৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
সুপ্রীম কোর্টে ৩৭৭ নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানি শেষ হয়েছে। তাতে ৩৭৭-এর পক্ষের কে একজন সুপ্রীম কোর্টে যেন বলেছেন শুনলাম, ৩৭৭ উঠে গেলে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। কেননা, সেক্ষেত্রে না কি জওয়ানরা সীমাসুরক্ষার কথা ভুলে নিজেদের মধ্যে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবেন। হুম, গুরুতর সমস্যা। সীমা সুরক্ষার কথা ভুলে যাওয়া কোনও কাজের কথা নয়। অন্তত বুলাদি তাই শিখিয়েছিলেন।
এ সবের বাইরে গত সপ্তাহে আরও কিছু সাধারন ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকজন গনপিটুনিতে মারা গেছেন, কোথায় যেন কাকে গেস্ট হাউসে আটকে রেখে চারদিনে চল্লিশবার ধর্ষণ করা হয়েছে, টাকা নীচে ও পেট্রল ওপরে উঠে চলেছে, কিছু চাষী এদিক ওদিক আত্মহত্যা করেছে। আর ও হ্যাঁ, শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবীর প্রথম সিনেমা রিলিজ করেছে।
সংখ্যাতত্ত্ব : অভিষেক মুখার্জি
বুলবুলভাজা | কূটকচালি | ২৫ আগস্ট ২০১৪ | ৯৫৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
চেতন ভগৎ তাহলে ফিরেই এলেন! সমালোচকের মুখে নুড়ো জ্বেলে কোটি কোটি ভক্তের প্রত্যাশা মেটাতে নিজের নতুন উপন্যাস নিয়ে শ্রীভগৎ স্বয়ং ধরাধামে পুনরাবির্ভূত হয়েছেন। আমরা জানতাম, ভগৎসাহিত্যগণিতের নিয়ম মেনে শ্রীভগতের নতুন বইয়ের নামে কোনও সংখ্যার উপস্থিতি অনিবার্য, কিন্তু এবারে শ্রীভগৎ আমাদের সবার ওপরে টেক্কা দিয়েছেন। তাঁর নতুন নামে সংখ্যা আছে ঠিকই, কিন্তু তা নেহাৎই ভগ্নাংশ: আধ।
ভাবতে বসলাম। একুশ শতকের শেক্স্পীয়রের নামে সংখ্যা থাকবে – এটা এতদিনে বুঝে গেছি। কিন্তু পরের বইয়ে কোন্ সংখ্যাটা থাকবে, তা আগে থেকে বলা সম্ভব? হাজার হোক্ আমি স্ট্যাটিস্টিক্স পড়েছি – একটা মান-ইজ্জত আছে –
মদ্যপায়ী বঙ্গবাসী পদ্যপায়ী জীব : অভিষেক সরকার
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১৪ | ১৮ অক্টোবর ২০১৪ | ১২১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
শৈশব ব্যাপারটা নিয়ে আমার বিশেষ আদিখ্যেতা নেই। গেছে- বাঁচা গেছে, আপদ গেছে। বাঙালির শৈশব(অন্তত আমি যখন শিশু ছিলুম) তো ঠিক অ্যালিস বা চার্লির শৈশব নয়। কোনও নার্নিয়ার গপ্পো নেই। শিশু অর্থাৎ বারোয়ারি দুচ্ছাই! যেই না সিলিং-এর নুরনকশায় একটা হিজিবিজবিজ দেখতে পেয়েছে, অথবা ব্যাকরণ শিং-এর সঙ্গে দু’দণ্ড আপন মনে কথা বলতে বসেছে – সবে মনে হয়েছে, দূর এইখানটায় হ য ব র ল ফেল, আমি হলে তো এইটা বলতাম – সাতপাঁচ ভেবে যেই না খ্যাক খ্যাক করে হেসে উঠতে যাবে,অমনি কোথ্থেকেকে এক হুমদো কাকীমা এসে, ‘ওমা! আপন মনে কী বিড়বিড় করছিস?’ বলে গাল টিপে দিয়ে চলে যাবে। তুমি লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছ তাতে কারও কিছু যায় আসে না, তোমার কোনও নির্জনতা নেই। সর্বক্ষণ গোটা দুনিয়া তোমার ঘাড়ের ওপর নিশ্বাস ফেলছে, তুমি উলঙ্গ, ল্যাংটো। তোমার যে কোনও নিরিবিলিকে, একলাযাপনকে দুনিয়ার সামনে বেপর্দা করে দেওয়া যায়। বাবা সিগারেট খাওয়ার সময় বলবে, ‘বড়রা খায়’; চপ-মুড়ি খেতে খেতে রোববারের সিনিমা চোখে মাসিমা বলবে, বড়রা দেখে; মধ্যকৈশোরে পা-রাখা দিদি বাড়িতে তুমি থাকলে আরামসে বয়ফ্রেন্ডকে ডেকে নেবে, ফোনে বলবে; একা আছি’। তুমি নেই চাঁদ, তুমি আসলে একটা ছায়া। তুমি ভোট দাও না, দেশের সেবায় মিছিল করো না, বন্যাত্রাণ কি বিচিত্রানুষ্ঠানে চাঁদা দাও না, মাধ্যমিকে ফার্স্ট হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর করুণা কুড়োও না, তুমি জাস্ট নেই।
অপরাধ যখন : সৌরভ চ্যাটার্জী ও অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | অন্য যৌনতা | ২৪ মে ২০১০ | ১৭৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
নিজের ঘরেই পাওয়া গেলো রামচন্দ্র সিরাসের মৃতদেহ। সিরাসের এই মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু, হত্যা না আত্মহত্যা, তা এখনো জানা যায়নি, ঠিক যেমন আজ অব্দি নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি টুরিং-এর মৃত্যুর কারন। চলছে এবং চলবে নিয়মমাফিক পুলিশি তদন্ত। সত্য কি জানা যাবে? শাস্তি কি পাবেন এ এম ইউ-র সেই কর্তৃপক্ষ যারা সিরাসকে সাস্পেন্ড করেছিলেন, প্রাইভেসির অধিকার এবং সমানাধিকারকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে? কি শাস্তি হবে তাদের যারা শ্রী সিরাসের ব্যাক্তিগত জীবনকে টেনে এনেছিল মিডিয়ার হাটবাজারে?
প্রসংগত, মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে, ১ই এপ্রিল, সিরাসের পক্ষেই রায় দিয়েছিলো এলাহাবাদ হাইকোর্ট, তার সাসপেনশনের উপরে স্টে অর্ডার জারি করে। কিন্তু আইনের লড়াইতে জিতে গেলেও শেষরক্ষা হলো না। কোনও এক অজ্ঞাত কারনে কোর্টের অর্ডার অনেক আগেই হাতে পাওয়া সত্তেও কর্তৃপক্ষ তা কার্যকরী করার নির্দেশ জারি করলো ৮ই এপ্রিল, সিরাসের মৃত্যুর ঠিক এক দিন পরে!
কোভিড, টীকা ও অন্যান্য ইতিবৃত্ত : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১৭ আগস্ট ২০২০ | ৫১০২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
ইংরেজিতে একটা কথা আছে, “যা আমাদের শেষ করে দেয় না, তা আমদের শক্তিশালী করে”। সেইরকম ভাবেই, প্রতিটি নতুন চোরের সাথে মোকাবিলার পর শরীরের সিকিউরিটি গার্ড সেইসব নতুন চোরদের ছবি তুলে রাখে। মনে করে রাখে পরিচয়জ্ঞাপক কিছু বিশেষ চিহ্ন যা দিয়ে সেই চোরকে শনাক্ত করা যায়। পরের বার আবার শরীরে ঢোকার চেষ্টা করলেই পাকড়াও হয়ে যায় সেই চোর, বেঁচে যায় আমাদের শরীর। তাই একবার পক্স হয়ে গেলে সাধারনতঃ আর দ্বিতীয়বার পক্স হয় না। তবে এর ব্যতিক্রম আছে। কিছু চোর খুব চালাক হয়। তারা প্রতিবার নতুন নতুন ছদ্মবেশে আসে আর আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমকে বোকা বানিয়ে দেয়। তাই আমাদের বছর বছর ইনফ্লুয়েঞ্জা বা পেট খারাপ হয়।
কোভিডের ক্ষেত্রে সমস্যা হল, মানবজাতির জন্য এ এক নতুন চোর। তাই এর নাম নভেল। শরীর একে চেনে না। তাই সব সময় শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে একে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম আটকাতে পারে না।
খাপ আর গণ আদালত, তফাৎ অনেক : অভিজ্ঞান সরকার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সমাজ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ৩২৬৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
১৯৪৭-এর পরবর্তী নানারূপ কৃষি সংস্কার, আইন করে জমিদারি প্রথার বিলোপ সত্ত্বেও ভারতরাষ্ট্রের উৎপাদন সম্পর্কের সামন্ততান্ত্রিক চেহারাটি বদলায়নি, সামন্ততান্ত্রিক সম্পর্কের উপর আইনি আঘাত এলে, অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে নতুন ধরনের উপরিকাঠামোর সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামন্তবাদ নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রেখেছে। বুর্জোয়া আইনের মাধ্যমে জমি হাতবদল আটকাতে আইনি ব্যবস্থার নাকের ডগায় গড়ে ওঠে সামন্ততান্ত্রিক সশস্ত্র সংগঠন।
শ্যামাপ্রসাদ ও সাম্প্রদায়িকতা : অভিরূপ গুপ্ত
বুলবুলভাজা | আলোচনা : রাজনীতি | ০২ এপ্রিল ২০২১ | ৮৪১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ক্ষমতার লোভ বরাবরই ছিল, তার ওপর বড় নেতা আর মন্ত্রী হওয়ার উচ্চাশা তাঁকে নিয়ে গেলো হিন্দু মহাসভায়। তিনি তাঁর ডায়েরিতে লিখছেন যে তৎকালীন সরকারে যোগ দেওয়া তাঁর মত সাচ্চা হিন্দুর পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু দু'বছরের মধ্যেই, ১৯৪১ সালের ১২ই ডিসেম্বর, তিনি ফজলুল হকের মন্ত্রিসভায় যোগদান করলেন অর্থমন্ত্রী হিসেবে। রাজনৈতিক জীবনে বারংবার তাঁর দল বদল করা কিন্তু শ্যামাপ্রসাদের মনের অস্থিরতার পরিচয় দেয়না। বরং উল্টোটাই। অত্যন্ত 'বিচক্ষণতার' সঙ্গে মওকা বুঝে, হাওয়া যেদিকে যাচ্ছে, বিবেক বিসর্জন দিয়ে সেদিকে যেতে তিনি কখনোই পিছপা হননি।
বিসর্জন : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : নববর্ষ | ১৫ এপ্রিল ২০২১ | ১৮৮৩ বার পঠিত
এটা হবেই, জানা কথা। তাই গত দশ বছরে বেশ কয়েকবার একা বা ওর দলের সঙ্গে এই বাড়ির সামনে দিয়ে হেঁটে গেলেও ভেতরে কখনো পা রাখার কথা ভাবে নি রাজিয়া। তিনতলায় উঠে আসা তো দূরের কথা। ওকে ওর দীক্ষা মা বলেছিল পুর্বাশ্রমের কথা সম্পূর্ণ ভুলে যেতে হয়। হিজড়া সমাজের এটাই নিয়ম। তাই রাজেশনারায়ণকে মুছে ফেলে ওকে দেওয়া হয়েছিল ওর নতুন নাম। দীক্ষা মা জিজ্ঞেস করেছিল, “কি নাম নিবি রে বেটি?” রাজেশের মনে পড়েছিল ছোটবেলার কথা। ইস্কুলে ইতিহাস পড়ার সময় কেমন কখনো নিজেকে মনে হত লক্ষীবাই, কখনো রাজিয়া সুলতানা। পুরনো নামের সঙ্গে মিলিয়ে তাই নিজের নতুন নাম রেখেছিল রাজিয়া।
পূর্বাশ্রমের কথা এতদিন তো ভুলেই ছিল। তাই এমনকি পুজোর কদিন মনটা হু হু করলেও কখনও এদিকে পা মাড়ায় নি ও। কিন্তু আজ আর কিছু করার নেই। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই সিংহভবনের চৌকাঠ পেরোতে হল রাজিয়াকে। উকিল বলেছে, এনআরসিতে নাম তুলতে হলে বার্থ সার্টিফিকেটটা যেভাবেই হোক নিয়ে যেতে হবে। বাকি কাগজপত্র, অপারেশানের সার্টিফিকেট সব যোগাড় হয়ে গেছে। শুধু এইটাই বাকি।
জীবনও কখনো কখনো কিছু কৌতুক করে। আজ রাজিয়ার নাগরিকত্ব প্রমাণের কাজে লাগবে দশ বছর আগে বিসর্জন হয়ে যাওয়া রাজেশনারায়ণের জন্মনথি। যাকে কেউ মনে রাখে নি। রাজিয়া নিজেও না।
করোনা ও আমরা : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | আলোচনা : স্বাস্থ্য | ২৩ এপ্রিল ২০২১ | ২৭০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
আরেকদল বলে চলেছে, সরকার কী করবে? মানুষগুলোই বদ। মানুষগুলোই কোনও কথা শোনে না। তাই তো বটে। রাজনৈতিক প্রচার থেকে কুম্ভমেলা, তাতে তো সরকারের কোনও দায় নেই। যাবতীয় সচেতনতার প্রচার যে জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে শূন্যে পৌঁছে গিয়েছিল, তাতে সরকারের দায় নেই। দাবাই ভি আওর কড়াই ভি বলে চলা নেতা মাস্ক না পরে ব্রিগেডে সভা করছে, সরকারের কোনও দায় নেই। কোভিড টাস্কফোর্স যে গত দু-মাস কোনও মিটিং করে নি তাতেও সরকারের দায় নেই। মানুষ যে আজ লকডাউন শব্দটা শুনলে রেগে যাচ্ছে, তাতেও রাষ্ট্রের দায় নেই। অক্সিজেন বিদেশে এক্সপোর্ট হল, সরকারের কোনও দায় নেই। খাদ্য থেকে ওষুধ, কোনও কিছুতেই সুরক্ষা দেওয়ার কোনও দায় রাষ্ট্রের নেই। সব মানুষদের দোষ।
এর বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে আছে আরেক যুযুধান পক্ষ। মাস্ক পরতে বললে তারা নিয়ে চলে আসছে গরীব মুটে-মজুরদের অসহায়তার কথা। তারা দুটো কথা ভুলে যাচ্ছে। এক, মহামারীতে সব থেকে বেশি কষ্ট সহ্য করবে ওই নীচেরতলার মানুষগুলোই। যে যত ওপরে, তার চিকিৎসা পাওয়ার সুরক্ষা তত বেশি। দুই, একথা অর্থনীতিতে প্রমাণিত সত্য যে গরীবদের চিকিৎসা ও তৎসংক্রাম্ত আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা কম।
গুড্ডি : অভিষেক ঝা
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : ইদের কড়চা | ২৮ মে ২০২১ | ২০৪৯ বার পঠিত
চোখে পাখি গেঁথে থাকা একটা আলো হুড়মুড়িয়ে ছড়িয়ে পড়ছে ল্যাংড়াবাড়ির ঘাসগুলোতে। এই সময় গাছের গায়ে লাঠা হয় খুব। সারি সারি লাল পিঁপড়া লাঠা পায়ে চলতে থাকে ঘাসের উপর। ঘাস চ্যাটচ্যাট হয়ে যায়। কেঁচো খেতে নামা পাখির ঠোঁট ঘাসে আটকে যায় কখনও, দু-এক সেকেন্ড। যুতসই মওকা বুঝে, উদবিড়াল পাখি মুখে গাছে চড়ে বসে। এইসব সময়েই আলো হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে ল্যাংড়াবাড়ির ইতিউতি। যাদের কান ভালো তারা এসময় গাছেদের বাতচিত শুনতে পায় শুনশান আমের বাগান পেরোতে পেরোতে। আজ গাছেরা কথা বলছে না। কিংবা যে দুটি ছেলে, বাগানের ভিতর দিয়ে এমনভাবে পা ফেলছে যেন সাপের মতো বয়ে চলা সময়ের জিভ পার করে তারা আলজিভে ঢুকে পড়বে অন্য কোনো সময়ের, তাদের এখনও গাছেদের কথা শোনার কান পেতে বাকি আছে খানিক। উত্তর থেকে হাওয়া বওয়া বন্ধ হয়েছে দিন কয়েক আগে। দখিনা আর পছিয়ার আসতে আরও কয়েক দিন। এসময় গুড্ডি উড়াতে বেশ লাগে।
কোভিড টিকা- কিছু বহুল-প্রচারিত বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও তার বিরুদ্ধে যুক্তি : ডঃ জ্যোতিষ্ক দত্ত , ডাঃ অরিন্দম বসু, ডঃ অভিজিত চক্রবর্তী ও ডঃ ঈপ্সিতা পালভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ০৪ জুন ২০২১ | ১০০৯৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩৬
গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনাভাইরাসের অতিমারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষকে ব্যতিব্যস্ত করেছে, জীবনের নানান দিক আর আগের মতন নেই | প্রাণঘাতী এই বিশ্বব্যাপী অতিমারী না হয় একরকম, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরেকটি অতিমারী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, সেটি তথ্যবিভ্রান্তির অতিমারী। বিশেষ করে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের টিকা, এবং টিকা দেওয়া-নেওয়া নিয়ে নানান রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য চোখে পড়ছে। তাদের মধ্যে কয়েকটি নিয়ে এই আলোচনা। প্রতিটি “ভ্রান্ত ধারণা” (“মিথ”) আমরা প্রথমে উল্লেখ করে তারপর সেটিকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি।
দেবীর সাজে সৌরভ গোস্বামী : অভিজিৎ মজুমদার
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব | ১২ নভেম্বর ২০২১ | ৩৪৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
দুর্গাপুজোর সময় থেকেই আপনারা নিশ্চই এরকম অনেক ছবি দেখেছেন যেখানে মডেলরা বিভিন্ন দেবীর সাজে ছবি তুলেছেন। সেরকম কিছু ছবি দেখে আপনারা নাক সিঁটকেছেন, কিছু দেখে ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন. কিন্তু আমি বাজি রেখে বলতে পারি, এই লেখার সঙ্গে যে ছবিগুলি আছে সেরকম আপনারা আগে কোথাও দেখেননি। কেন বলুন তো? এই ছবিগুলোর যিনি মডেল তিনি কোনো মহিলা নন বরং একজন পুরুষ। তাঁর নাম সৌরভ গোস্বামী। কী, একটু চমকে গেলেন তো? চমকানোরই কথা!
এই চমক, এই ব্যতিক্রম দিয়েই শেষ হল এবারের উৎসব সংখ্যা।
কালো রামধনু - ১ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৫ জুন ২০২২ | ৩৩৫০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৬
ওলায় বসে জানলার কাচটা নামিয়ে দিল সৌম্য। এমনিতেই এসি ওর পছন্দ নয়, তার ওপর এই প্যানডেমিকের সময় মনে হয় একটু খোলামেলা থাকাই ভাল। সৌম্য ভেবেছিল তুহিনদের বাড়ি যেতে যেতে ও রজতের সাথে মায়ের এখানে আসার ব্যপারটা নিয়ে একটু কথা বলে নেবে। সোহিনীদেবী রজতকে চেনেন সৌম্যর বন্ধু এবং ওদের ডিটেক্টিভ এজেন্সি সৌরলোকের পার্টনার হিসেবে। তিনি জানেন, যে কাজের প্রয়োজনে রজতকে প্রায়ই সৌম্যর বাড়ি থেকে যেতে হয়। তাই সৌম্যর বাড়িতে সব সময়ই রজতের জন্য স্পেয়ার টুথব্রাশ, জামাকাপড়, ঘরে পরার পায়জামা, চপ্পল ইত্যাদি থাকে। কিন্তু রজত আর সৌম্য যে কাজের পার্টনারের থেকেও বেশি কিছু, সেটা ওঁর জানা নেই। ফলে, সোহিনীদেবী কলকাতায় এলেই রজতকে কিছু দিনের জন্য পাততাড়ি গোটাতে হয়। এবং প্রতিবারই এই নিয়ে একটা মন কষাকষি হয়।
সমকামিতা ও বিবর্তন: পাঠ প্রতিক্রিয়া : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | পড়াবই : বই পছন্দসই | ২৬ জুন ২০২২ | ১৯৭৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
এই বইটাতে সুদীপ্ত দু’টি দুরূহ কাজ সম্পন্ন করেছে। প্রথমত সহজে বিজ্ঞান বলা, আর দ্বিতীয়ত বাংলায় বিজ্ঞান বলা। এই দু’টিই যে কতটা কঠিন কাজ – সেটা যারা কখনো চেষ্টা করেছেন, তাঁরাই জানেন। সেই কাজটা আরো কঠিন হয়ে যায়, যখন আপনি এমন কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলতে বসেন, যার অনেকটাই এখনো কুয়াশায় ঢাকা। সমকামিতার কারণ এখনো তর্কাতীতভাবে জানা যায়নি। এর পেছনের একটা কারণ বিষয়টির জটিলতা, অপর কারণটি রাজনৈতিক। সমকামিতা জেনেটিক না এপিজেনেটিক না হরমোনাল না সামাজিক এই নিয়ে বহু পরস্পরবিরোধী তত্ত্ব আছে। এই জট পাকানো বিষয়টিকে বইটিতে সুন্দরভাবে গুছিয়ে ধাপে ধাপে পরিবেশন করা হয়েছে, যাতে সহজে গ্রহণ করা যায়, কোথাও ধাক্কা খেতে না হয়। যেখানে যেখানে প্রয়োজন, সেখানে সুদীপ্ত খুব সুন্দরভাবে একদম গোড়ার কথাগুলোও পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
ফ্যাকাশে রামধনুরা : অভিনব দত্ত (অভি)
বুলবুলভাজা | অন্য যৌনতা | ০৪ জুলাই ২০২২ | ১৪৪৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
মাত্র চার বছর আগে অবধি আমরা আইনত বলতে পারতাম না, যে আমরা এলজিবিটিক্যু+ সম্প্রদায়ের মানুষ বা তাঁদের অধিকার নিয়ে কাজ করি। একটা লার্জার হিউম্যান রাইটস ছাতার তলায় ‘জেন্ডার’-এর আওতায় আমাদেরকে ফেলা হত। ফলে যা হওয়ার তাই হল – মানবাধিকার কমিশনের এক রিসার্চে যা উঠে এল, তা হল ৯২% ট্রান্সজেন্ডার মানুষ কোনোরকমের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত নয়। অথচ সরকারি স্তরে এই মানুষদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার কোনো পরিকল্পনাই নেই। ২০২১ সালে ভারত সরকারের সোশ্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রক সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর স্বশক্তিকরণ বাবদ যদি ১০০ টাকা খরচ করে থাকে, তার মধ্যে মাত্র ৪ পয়সা খরচ করেছিল ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের জন্য – প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র পাঁচ কোটি। অপরদিকে ভারতের কর্পোরেটগুলো সিএসআর বাবদ যে বিপুল অর্থ খরচ করে সামাজিক কারণে, সেখানে নারী কল্যাণ বা উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট জায়গা পেলেও, ট্রান্সজেন্ডার বা লার্জার এলজিবিটিক্যু+ সম্প্রদায়ের মানুষেরা জায়গা পাননি এখনও।
কালো রামধনু - ২ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ০৯ জুলাই ২০২২ | ১৮০৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
লম্বা-চওড়া, জিম করা সুদর্শন তুহিনকে একবার দেখে চোখ ফেরানো শক্ত ছিল। সবথেকে আকর্ষণীয় ছিল ওর চোখ দুটো। ভাসা ভাসা স্বপ্নালু। আর হাসলে গালে টোল পড়ত। সব মিলিয়ে মনে হত, যেন বলিউডের কোনও রোম্যান্টিক হিরো। ওরকম চেহারা আর ওই রকম ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলে যে কেউ অন্তত গোটা কতক প্রেম তো করতই। কিন্তু তুহিন ছিল লাজুক, একটু অন্তর্মুখী। সম্ভবত নিজের সেক্সুয়ালিটিকে অন্যদের, বিশেষত আগ্রহী মেয়েদের থেকে দূরে রাখতেই, নিজের চারপাশে একটা গণ্ডি টেনে রাখত তুহিন। তার জন্য কেউ কেউ ওকে অহংকারী ভাবলেও, সৌম্য অন্তত জানে, যে ও আদপেই ওরকম ছিল না। সৌম্যর সঙ্গে একটা সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক শুরুতেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল তুহিনের। তবে একে অন্যের ওরিয়েন্টেশনের ব্যপারে জানতে সময় লেগেছিল আরো অনেকদিন।
কালো রামধনু - ৩ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৬ জুলাই ২০২২ | ২২৭৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
মানসের কাছ থেকে যতটুকু জানা গেল, তা হল এই, যে শনিবার রাত ১১টা নাগাদ তুহিন আর ঋক পার্টিতে পৌঁছয়। তারপর যথারীতি হাই-হ্যালো, নাচ, ড্রিংক্স এসব চলছিল। সবাই বেশ ভাল মুডেই ছিল। কথা নেই, বার্তা নেই – কোথা থেকে ওই আমন শর্মা নামে ছেলেটা এসে তুহিনকে চুমু খেতেই পুরো সিচুয়েশন পাল্টে গেল। ঋক তো রেগে টং। তারপর খানিক কথা কাটাকাটির পর তুহিন আর ঋক দু’জন পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে যায়। নাহ্, কোথায় গেছিল সেটা মানস জানে না। পার্টিতে তুহিনের হাতে গ্লাস ছিল, সে ব্যপারে মানস নিশ্চিত। কিন্তু কী খেয়েছে, কার থেকে খেয়েছে – তা মানস জানে না।
কালো রামধনু - ৪ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২৩ জুলাই ২০২২ | ১৪৬৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
“সেইটা বলা খুব মুশকিল, বুঝলি। এটাই হল এই বিষটার মজা। সাঙ্ঘাতিক টক্সিক এই বিষটা কোনও পরীক্ষায় চট করে ধরা পড়ে না। আর কতক্ষণে কাজ করবে সেটা নির্ভর করে কীভাবে আর কতটা প্রয়োগ করা হয়েছে তার ওপর। তবে যেহেতু কয়েক ঘণ্টা আগেও পার্টিতে ও একেবারে স্বাভাবিক ছিল, তাই অনুমান করা যেতে পারে বেশ খানিকটাই শরীরে ঢুকেছে। তবে বেশ খানিকটা মানে আবার কয়েক গ্রাম ভাবিস না যেন। একটা আলপিনের মাথায় যতটুকু ধরে ততটা রাইসিনই একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে মেরে ফেলতে যথেষ্ট। ওই পরিমাণ বিষ যদি ইনজেক্ট করা হয়, তবে তিন থেকে ছ’ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে।”
কালো রামধনু - ৫ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ৩০ জুলাই ২০২২ | ১৭৪৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
সৌম্য জিজ্ঞেস করলো, “কেন একথা বলছেন বলুন তো?”
- কারণ খুঁজে বের করা তো আপনার কাজ। তবে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক যে কতটা ‘মধুর’ ছিল, সেটা আপনি বাড়ির কাজের লোকদের জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন।
- তাই বুঝি? দু’জনের মধ্যে এই তিক্ততার কোনো বিশেষ কারণ ছিল কি?
- বিশেষ আর কী? নিজের ওরিয়েন্টেশন লুকিয়ে বিয়ে করা, এটাই কি যথেষ্ট কারণ নয়? আপনার বন্ধু ছিলেন, এখন আর পৃথিবীতে নেই, তবুও বলছি, কাজটা কিন্তু তুহিনবাবু ঠিক করেননি। আর এই সবের পর যদি স্ত্রী অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলেন, তাকে কি দোষ দেওয়া যায়? আরে বাবা, বাড়িতে হাঁড়ি না চড়লে মানুষ তো খাবার বাইরে থেকে অর্ডার করবেই, তাই না?
কালো রামধনু - ৬ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ০৬ আগস্ট ২০২২ | ২৭২৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
নিজের প্লেট থেকে চামচে করে চাউমিন তুলে সৌম্যর প্লেটে দিল রজত। খাবারের প্রথম গ্রাসটা একে অন্যকে বেড়ে দেয় ওরা। বহুদিনের অভ্যেস। আগে বেশ একটা প্রেম-প্রেম ব্যাপার ছিল। এখন সেটা এতটাই অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে, যে খাওয়ার শুরুতে এই কাজটা আপনাআপনিই হয়ে যায়।
রজত চাওমিন মুখে পুরে বলল, “তোর অনুমানটাই ঠিক। তুহিন সেদিন পুরো সন্ধ্যেটা ঋকের বাড়িতে ছিল না। অন্তত একবার তো বেরিয়েইছিল। ওর কল লিস্ট থেকে জানা যাচ্ছে, যে সন্ধ্যে পাঁচটা পঞ্চান্নয় ওর ফোনে একটা কল আসে। দিল্লির নাম্বার। সাম আনন্দ মিশ্র। মিনিট পাঁচেক কথা হয়। তারপর তুহিনের ফোন থেকে ওই নাম্বারে আবার একটা ফোন যায়। সেটা সাতটা পনেরোয়। সেই ফোনটা যখন করা হয়, তখন তুহিনের টাওয়ার লোকেশন হাওড়া স্টেশনের কাছাকাছি। এইবার কল ডিউরেশন দু’মিনিটেরও কম। এর ঠিক পরেই ও পৃথাকে মেসেজ করে। এরপর অনেকক্ষণ কোনো কল রেকর্ড নেই। তারপর আবার তুহিনের ফোনে কল ঢোকে রাত দশটায়। লোকেশন ঋকের বাড়ি। ফোন এসেছিল ফুড ডেলিভারি বয়ের কাছ থেকে।”
কালো রামধনু - ৭ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১৩ আগস্ট ২০২২ | ১৫৫৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
জীবন লজের বাইরে দাঁড়িয়ে, দিব্যেন্দুকাকুর সাথে ফোনে কথা বলা শেষ করে, সিগারেট ধরিয়েছিল সৌম্য। ফাঁকা রাস্তা দেখে এক হাতে রজতের ঘাড়ে আঁকিবুঁকি কাটছিল। হঠাৎ একটা গাড়ি প্রচণ্ড জোরে কোথা থেকে এসে হুশ করে বেরিয়ে গেল। শেষ মুহূর্তে রজত সৌম্যকে ধরে এক ঝটকায় সরে না গেলে একটা বড়সড় অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেত। রজতের মুখ আতঙ্কে সাদা হয়ে গিয়েছিল। একটু সামলে নিয়ে বলল, “আমাদের কেউ খুনের চেষ্টা করছে।” সৌম্য মৃদু হেসে বলল, “এগুলো রাতের শহরে বড়লোকের বখাটে ছোঁড়াদের কাজ। রাত বাড়লে সবাই সলমন খান হয়ে যায়।” রজতকে এই বলে প্রবোধ দিলেও সাদা ইনোভার পাশের আঁচড়ের দাগটা সৌম্যর চোখ এড়ায়নি। অর্থাৎ কেউ এখন আর শুধু ওদের ওপর নজর রেখে ক্ষান্ত দিচ্ছে না, সরাসরি খুন বা আহত করার চেষ্টা করছে।
কালো রামধনু - ৮ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ২০ আগস্ট ২০২২ | ২০৭৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৪
রজত যখন তুহিনদের বাড়ি গিয়ে পৌঁছল, তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামছে। তুহিনদের বাড়িতে এখনো একটা চাপা শোকের ছায়া। রজত চারিদিকে তাকিয়ে দেখল। ঘরটা প্রথম দিনের মতই আছে। শুধু দেওয়ালে ঝুলছে তুহিনের একটা হাসিমুখের বড় ছবি। গলায় রজনীগন্ধার মালা।
রজত বসার খানিক পরে ঘরে ঢুকল পৃথা। আজকে পরনে একটা হাল্কা সবুজ রঙের চুড়িদার, সাদা ওড়না। চেহারায় শোকের ছায়া অনেকটা কম। সম্ভবত খানিক আগেই স্নান করে বেরিয়েছে। রজত লক্ষ্য করে দেখল, চুল থেকে এখনও অল্প অল্প জল ঝরছে।
কালো রামধনু - ১০ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৫৫০ বার পঠিত | মন্তব্য : ৮
সবার মুখের ওপর চোখ বুলিয়ে রজত বলতে থাকল, “পৃথাদেবীর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে ধারণা পেতে আমি ওঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলো খুঁটিয়ে দেখা শুরু করলাম। সেটা করতে গিয়েই ইনস্টাগ্রামে দেখতে পেলাম তুহিন আর পৃথার মানালি বেড়াতে যাওয়ার ছবি। খুব আনন্দে ভরা ছবি সব। আর সেই সব ছবির মধ্যেই আমার চোখে পড়ল আরেকটা জিনিস। চৌঠা নভেম্বরের ছবিতে পৃথার হাতে ছিল ওদের বিয়ের আংটি, যে আংটির ছবি এই ঘরে টাঙানো ছবিতে রয়েছে। পাঁচই নভেম্বর আঙুল খালি। ছয় নভেম্বর ওই আঙুলে আবার আংটি ফেরত এল। কিন্তু এবার অন্য আংটি। তবে দেখতে অনেকটা আগেরটার মতনই। ফলে খুঁটিয়ে না দেখলে সবার চোখে চট করে ধরা পড়বে না। কী মহেশবাবু, ওই দিনই তো আপনাদের ইনফর্ম্যাল এনগেজমেন্ট ছিল, তাই না?”
কালো রামধনু - ১১ : অভিজিত মজুমদার
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : উপন্যাস | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ১৭১৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ১১
সৌম্য বলল, “এটাকে আসলে বলে ইন্টার্নালাইজড হোমোফোবিয়া। অনেক হোমোফোবিক মানুষ আসলে নিজেরাই গে বা লেসবিয়ান। নিজেদের ওরিয়েন্টেশনকে ঢাকতে এরা ওভার কম্পেনসেশন করে আরো বেশি বেশি হোমোফোবিক হয়ে যায়। এরা সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকে, যে যদি এরা কুইয়ার মানুষজনকে সাপোর্ট করে, তবে লোকে এদের কুইয়ার ভাববে। তুষারবাবুও তাদের মধ্যে একজন। তার সাথেই ছিল কনজারভেটিভ ভোটব্যাংক হারানোর ভয়। সব মিলিয়ে উনি ওই রকম হোমোফোবিক হয়ে উঠেছিলেন। তবে শুধু তুষারবাবু নন, মনে রাখিস আমাদের পলিটিশিয়ানদের অনেকেই এর শিকার। আমি ধরে ধরে এরকম বেশ কয়েকজন পলিটিশিয়ানের নাম বলে দিতে পারি। বিশেষত দিল্লি আর ব্যাঙ্গালোরের। আর আনন্দের মত এরকম অল্পবয়সী, আকর্ষক ছেলেরা এইসব হাই এন্ড ক্লায়েন্টদের গোপনে সার্ভিস দেয়, ফর সাম ক্যুইক ক্যাশ। অল গোজ ওয়েল যতক্ষণ না কোনও গোপন ক্যামেরায় কিছু রেকর্ড হয়ে যায়।”
আমার জার্মানি - জলের ধারে বসে থাকার স্মৃতি : অভিজিৎ সেন
বুলবুলভাজা | পড়াবই : বই পছন্দসই | ১২ মে ২০২৪ | ২৯৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
‘আমার জার্মানি’ বইটা পড়ে শেষ করার পর খানিকক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। তবে হ্যাঁ, যদি কেউ বলেন যে আমি এই বইটা এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করেছি তাহলে তাঁকে বলতেই হবে যে ক্ষমা করবেন মহোদয়, আপনার বোধহয় কোথাও ভুল হচ্ছে’, কারণ ওটা সম্ভব নয়। এ বই পড়তে হবে থেমে থেমে , রসিয়ে রসিয়ে, অনুভব করে করে, প্রত্যেকটা অনুচ্ছেদের মর্ম অনুধাবন করে।