এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে

  • গ্বলিয়র

    দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে | ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৪৮২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ভোরবেলা ট্রেন আমি পারতপক্ষে নিতে চাই না, কারণ তাতে রাত্তিরটা ঘুমের কাজে লাগানো যায় না এবং কোনো জায়গায় পৌঁছে ঘোরাঘুরি শুরু করতে বেলা হয়ে যায়। কিন্তু গ্বলিয়র দিল্লী থেকে তিনঘন্টা বলে সারা রাত্তিরের কোনো ট্রেনের অপশন নেই। হয় সকাল ছটার ভোপাল শতাব্দী , বা আটটার গতিমান এক্সপ্রেস। প্রথমটাই নিলাম তাহলে তাও কিছুটা অতিরিক্ত সময় পাওয়া যাবে ঘোরার। 
     
     
    গ্বলিপ বলে একজন সাধুর কথায় এই পাহাড়ের ওপরে এক কুন্ডের জল খেয়ে প্রায় দু হাজার বছর আগে কচ্ছপঘাত রাজপুত বংশের রাজা সুরজ সেনের কুষ্ঠ সেরে যায়। তিনি সেই কুন্ডকে ঘিরে এই প্রাচীন দুর্গ গড়ে তোলেন। প্রথম পানিপতের যুদ্ধে জেতার পর বাবর বলেছিলেন ভারতের সমস্ত কেল্লাদের এক সুতোয় গেঁথে একটা হার বানালে গ্বলিয়র হবে তাদের মাঝখানের মুক্তোর মত। ভৌগোলিক কারণে এই ঐতিহাসিক জায়গা সব শাসক দখলে রাখতে চেয়েছে।
     
    পঞ্চম শতাব্দীতে আলখান হুন রাজা তোরমান , মিহিরকুল ইত্যাদিরা ছিলেন গ্বলিয়রের শাসক [সেই এরানের বরাহ অবতারের গায়ে যার নাম ছিল]। নবম শতাব্দীতে গুর্জর প্রতিহার বংশের শাসনকাল। তারপর আবার কচ্ছপঘাত রাজপুত বংশের আমল। ১০২১ সালে গজনির মামুদ গ্বলিয়র দখল করতে ব্যর্থ হলেন , শেষ পর্যন্ত বারোশোতে কেল্লা জিতলেন দাস বংশের কুতুবউদ্দিন আইবক , ইলতুৎমিশ। তেরোশোতে আবার তোমারদের শাসন শুরু হয়। পনেরোশোতে তোমার রাজা বিক্রমাদিত্যকে হারিয়ে ইব্রাহিম লোদী গ্বলিয়রের কেল্লা দখল করেন। আবার পানিপথের প্রথম যুদ্ধের পর ইব্রাহিম লোদী এবং বিক্রমাদিত্যকে হারিয়ে মুঘলরা এর দখল নিয়ে নেয়। আঠেরোশোতে বৃটিশরা কেল্লা দখল করার পর মারাঠী সিন্ধিয়ারা তাদের গ্বলিয়রকে বৃটিশদের করদ রাজ্যে পরিণত করে। 
     
    স্টেশনে নেমে দেখলাম প্ল্যাটফর্মে সারা ভারত কিষাণ সভার মিছিল। সাকুল্যে দশজনের হাতে পঞ্চাশটা পতাকা। দশজনের মধ্যে চারজন মহিলা। তারা ট্রেনে করে সবাই মিলে কোনো বড় মিছিলে যোগ দিতে যাচ্ছেন। 
     
    স্টেশন থেকে কেল্লার পিছন দিকের উর্বাই দরজা অটোতে দেড়শো টাকা। সেখানে নেমে হেঁটে রাস্তা দিয়ে ওপরে উঠতে হবে। খাড়াইয়ের জন্য উল্টে যেতে পারে বলে গাড়ি ছাড়া অন্য অটো , টোটো যাত্রী নিয়ে ওপরে ওঠে না।
     

    উর্বাই তোরণের রাস্তা দিয়ে হেঁটে উঠতে থাকলে প্রথমেই চোখে পড়ে পাহাড় কেটে বানানো দিগম্বর জৈন তীর্থঙ্করদের উঁচু মূর্তি। 
     

    সামনে থেকে দিগম্বর বলে বোঝা যায়না 
     

    চোদ্দোশোতে তোমার রাজা দুঙ্গার সিংয়ের সময় এই জৈন মূর্তিগুলো পাহাড় কেটে বানানো হয়েছিল। 
     

     
    পদ্মাসন [বসে] এবং কায়োৎসর্গ [দাঁড়িয়ে] অবস্থানে সমস্ত ২৪ জন তীর্থঙ্করদের মূর্তি আছে এখানে।
     

     
     

    বাবরের আমলে মূর্তিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
     

     
     

    ~৫৭ ফুট লম্বা প্রথম জৈন তীর্থঙ্কর আদিনাথের সবথেকে উঁচু মূর্তি, ওঠার সময় ডানদিকে পড়ে।
     
     
    দূর্গের এই নিচুতলার এবং ওপরের দরজাগুলো বানানো হয়েছিল ইলতুৎমিশের সময়।
     
    দূর্গের ভেতরটা অনেক জায়গা নিয়ে ছড়ানো। মান সিংহ তোমারের প্রাসাদ ছাড়াও অনেক কিছু আছে। পুরোনো জায়গাগুলোর মধ্যে মান মহল এবং একটা সংগ্রহশালা দেখাশোনা করে এএসআই। কর্ণ মহল , বিক্রম মহল, জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহান মহলগুলো দেখাশোনা করে মধ্যপ্রদেশ সরকার। গুজারি মহলের সংগ্রশালাটাও মধ্যপ্রদেশ সরকারে অধীন। এছাড়াও তিনটে বিখ্যাত মন্দির আছে। শিখদের গুরু বান্দি ছোড় সাহিব গুরুদ্বারা আছে কেল্লার ভেতর। মান মহল [কুড়ি টাকা] এবং গ্বলিয়র সংগ্রহশালার [পাঁচ টাকা] টিকিট দেয় এএসআই। বাকি সব জায়গা দেখার জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকারের কুড়িটাকার একটা টিকিট। সেটা না কেটে মন্দিরে গেলে ঢুকতে দেয় না। পাহাড় থেকে নামার সময় গুজারি মহলের সংগ্রশালারা টিকিট আরো কুড়ি টাকা আলাদা। এছাড়াও সিন্ধিয়াদের স্কুল , প্রাসাদ ইত্যাদিও এই পাহাড়ের ওপর কেল্লার ভেতর আছে। 
     

    কেল্লার ভেতর অনেক থাকার বাড়িও আছে , বাগানসমেত। 
     

    মান সিং তোমারের বানানো গ্বলিয়য়ের সবথেকে বিখ্যাত ছবি চারতলা মান মহল যার মধ্যে নিচের দুটো তলা আসলে মাটির তলায়।
     
    মান মহলের একতলায় দুটো উঠোন আছে। এটা তার মধ্যে প্রথমটা। 
     
    মান মহলের দ্বিতীয় উঠোন। এরকম ঢেউখেলানো টালির চাল আর ভারতের কোনো কেল্লায় নেই। 
     
    সিংহদের মূর্তি। 
     
    মুঘলদের সময় মহলের নীচের দুটো তলা একটা কারাগারে পরিণত হয়। সেখানে আছে ঝুলা ঘর , ফাঁসি ঘর এবং কেশর কুন্ড। ঔরঙ্গজেব তার দুই ভাই মুরাদ বক্স এবং দারা শিকোহকে এই দুর্গে আটকে রেখেছিলেন। দারা শিকোহ এখান থেকে পালিয়ে গেছিলেন। মুরাদ পালাতে পারেননি। একটা ছোট দরজা আর সিঁড়ি দিয়ে নীচের তলায় নামতে হয়। 
     

     
    এমনিতে অন্ধকার , আলো ঢোকে না। এএসআই বাইরে দিয়ে তার টেনে কয়েকটা সাদা এলইডি লাগিয়েছে। 
     

     
    নিচের ঘরগুলো একেবারে গা ছমছমে। একটুও সূর্যের আলো ঢোকেনা, ছোট কয়েকটা ঘুলঘুলি দিয়ে অল্প প্রাকৃতিক আলো আসছে। ওপরের রঙিন উঠোনগুলো দেখলে কেউ বুঝতেও পারবেনা মাটির তলায় এরকম ঠান্ডা অন্ধকার। একজন সিকিউরিটি গার্ড হাঁটাহাঁটি করছিলেন, নাহলে ওই দমবন্ধ ফাঁকা জায়গাটায় বেশিক্ষণ একা থাকা বেশ কঠিন হয়ে যেত। 
     

    বেসমেন্টের প্রথম তলা। ঔরঙ্গজেবের নির্দেশে মুরাদকে এবং দারার ছেলে সুলেমান শিকোহকে এখানে কয়েক বছর আটকে রাখার পর হত্যা করা হয়েছিল।
     

    বেসমেন্টের দ্বিতীয় তলা। ওই মাঝখানের কুন্ডের তলায় চন্দন কাঠের আগুনের মধ্যে ঝাঁপিয়ে মান সিংহের রাণীরা জহর ব্রত পালন করেছিলেন। এখন এএসআই গ্রিল দিয়ে আটকে দিয়েছে যাতে কেউ ভুল করে পড়ে না যায়। 
     
    মান মহল থেকে বেরিয়ে পিছনের দিকে গেলাম বাকি মহলগুলো দেখতে। দুটো ছোকরা বসে ব্যাজার মুখে টিকিট দিচ্ছে। আমাকে দেখে বলল - "আই কার্ড জমা রাখুন। "
    অথচ অন্য কারুর কাছে আই কার্ড দেখতে চাইছে না। কি কেস? জিজ্ঞেস করতে বলল , এখানে নাকি একা এসে লোকজন পাহাড় থেকে লাফ মারে !! বেশ কয়েকবার এরকম ঘটনা ঘটার পর সরকার থেকে বলা হয়েছে  একা এলে আই কার্ড জমা রাখার কথা যাতে কেউ আত্মহত্যা করলে নাম ঠিকানা পুলিশ জানতে পারে। 
     

    বিক্রমাদিত্যের বিক্রম মহল। এই ধরনের স্তম্ভ ওয়ালা হলঘর গুলোকে বলত বারদুয়ারী। মুর্শিদাবাদে আছে অনেক। 
     

    এটা শাহজাহান মহল এবং জাহাঙ্গীর মহলের ভেতরের উঠোন। এই মহলগুলো মুঘলরা গ্বলিয়র এলে থাকার জন্য ব্যবহার করতেন। 
     

    মাঝখানের এই বাঁধানো জায়গার জল তাদের জন্য ব্যবহার করা হত। 
     
    রাজছত্র ভেঙে পড়ে / রণডঙ্কা শব্দ নাহি তোলে 
     

    জয়স্তম্ভ মূঢ়সম অর্থ তাহার ভোলে 
     

    শাহজাহান মহলের কিনারা থেকে নিচে গুজারি মহল। ওই গল্পে পরে আসছি। 
     
    গ্বলিয়েরর কেল্লা ব্রিটিশরাও জেলখানা হিসেবে ব্যবহার করত। এটা সেই আমলের একটা বাড়ি। 
     

    বিক্রম মহল থেকে কেল্লার সামনের দিকের রাস্তা। 
     
    এএসআই সংগ্রহশালায় ইন্দ্রের মূর্তি 
     

    নারেসরের শিবমন্দির থেকে পাওয়া 'শিবগণ'র একটা মূর্তি। একটা কঙ্কাল একহাতে বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে। 
     
    মিউজিয়ামের বাগানে রাখা নন্দীর মূর্তি। মাথা খুঁজে পাওয়া যায়নি। 
     

     
    সিংহের মূর্তি সমেত মান মহল
     

    আশিটা খাম্বা [স্তম্ভ]  দিয়ে তৈরী একটা পূর্ণবৃত্ত বাওলি [জলাধার] 
     
     
    ~১৬০০ সালে এগারো বছর বয়সে গুরু হরগোবিন্দ ষষ্ঠ শিখ গুরু হবার পর তার বাবা গুরু অর্জনের হত্যার প্রতিশোধ নিতে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেন। চোদ্দ বছর বয়সের হরগোবিন্দকে ধরে জাহাঙ্গীর এই গ্বলিয়র কারাগারে আটক করলেন। দু তিন বছর বন্দি থাকার পর গুরু হরগোবিন্দ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলে তার নিজের এবং সঙ্গে বাহান্ন জন স্থানীয় হিন্দু বন্দীকে কেল্লা থেকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই দিনটা প্রতিবছর 'বান্দি ছোড় দিবস [বন্দিমুক্তি]' হিসেবে শিখরা দীপাবলির দিনে পালন করেন। গ্বলিয়য়ের শিখ গুরুদ্বারটিও এই উদ্দেশ্যে তৈরী এবং শিখদের একটি তীর্থক্ষেত্র। 
     
    গুরুদ্বারাটি এবং বাকি মন্দিরগুলো কেল্লার অন্য দিকে। সেদিকে হেঁটে যাওয়া যায়। অথবা ই রিকশাও আছে। 
     

    মরু গুর্জর স্টাইলে কচ্ছপঘাত রাজপুত বংশের মহিপালের আমলে বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা ~১০৯৩ সালের সহস্রবহু মন্দির। অপভ্রংশ হতে হতে এখন সাস বহু মন্দির হয়ে গেছে। 
     
    আকারে ছোট মন্দিরটা 'বহু' মন্দির
     

    তুলনায় আকারে বড় মন্দিরটা হচ্ছে শাশুড়ীর মন্দির।  
     
    সূর্যালোক প্রচুর ঢোকার কারণে মন্দিরগুলোর মধ্যে রৌদ্রকরোজ্জ্বল মূর্তিরা 
     
    নবম শতাব্দীতে গুর্জর প্রতিহার বংশের শাসনকালে তৈরী হয় তেলি কা মন্দির। একজন ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীর টাকায় এই মন্দির তৈরী হয়েছিল দ্রাবিড়িয়ান স্টাইলে। মন্দিরে চামচিকের বাসা। ভেতরে কোনো মূর্তি নেই।
     
    'নগর' স্টাইলের সঙ্গে দ্রাবিড়িয়ান স্টাইলের মন্দিরের প্রধান পার্থক্য এর শিখর , যেটা ছুঁচোলো শঙ্কু আকৃতির নয় , চতুর্ভুজ টাইপের। এই ধরনের শিখরকে গোপুরম বলে। 
     
    তেলির মন্দিরের বাগানে আবার জৈন মূর্তির অবশেষ। পিছনের মন্ডপিকাটা ব্রিটিশ মেজর কিথের আমলে তৈরি ~১৮৮০ সালে । 
     
    কেল্লার মধ্যের সুরজ কুন্ড। এই কুন্ডেরই জল পান করে সুরজ সেনের কুষ্ঠ সেরে গেছিল। রবিবার দিন এখানে পুজো করার পর কুষ্ঠরোগীদের জন্য জল বিতরণ করা হয়। 
     
    কেল্লা ঘুরে এসে এবার সামনের দরজার দিক দিয়ে নিচে নামতে থাকি। 
     
     

    কেল্লার সামনের দিক দিয়ে নামতে থাকলে প্রতিহার রাজা ভোজদেবের সময় ~৮৭৬ সালের চতুর্ভুজ মন্দির। পাহাড়ের পাথর কেটে বানানো এই চতুর্ভুজ মন্দিরের ভেতরে গর্ভগৃহের গায়ে খোদাই করা আছে একটা লিপি যেখানে ভারতের প্রথম শূন্যের সন্ধান পাওয়া গেছে।
     
     
    "৮৭৬ সালে , মাঘ মাসের উজ্জ্বল অর্ধের দ্বিতীয় দিনে সবাই এই মন্দিরে সমবেত হয়েছে যা ভৈলবভট্টের ছেলে আল্লা ২৭ হস্ত দৈর্ঘ্য এবং ১৮৭ হস্ত প্রস্থের ওপর বানিয়েছেন। এছাড়াও একটা ফুলের বাগানের জন্য পুরো নগর অর্থ দান করেছে যাতে এই মন্দিরের পুজোর জন্য দিনে ৫০টা করে ফুলের মালা তৈরী হতে পারে।" [১ হস্ত ~ ৪৫ সেন্টিমিটার] গণিতজ্ঞ ব্রহ্মগুপ্ত এর প্রায় দুশো বছর আগে পাটিগণিতের নিয়মগুলো লিখে ফেলেছিলেন। ১৯৩১ সালে ৬৮৩ সালের ক্যাম্বোডিয়ার একটা মন্দিরের লিপিতে শূন্য পাওয়া যায়। আপাতত সেটাই পৃথিবীর সবথেকে প্রাচীন শূন্য। গ্বলিয়র দ্বিতীয় স্থানে। আরেকটা প্রাচীন শূণ্য পাওয়া গেছে পাকিস্তানের বাকশালী পুঁথির বার্চ গাছের ছালের পাণ্ডুলিপিতে , যেটা রাখা আছে অক্সফোর্ডের বোডলেইন লাইব্রেরীতে। শূন্যের ইতিহাসে আগে যদি কোনোদিন গ্বলিয়রের শিলালেখের উল্লেখ দেখে থাকেন তাহলে বুঝে নেবেন এটাই সেই জায়গা। 
     

    মন্দিরের বাইরের দেওয়ালের ঘোড়সওয়ার মূর্তি 
     
     
    অসুরদের দখলে সমুদ্রমন্থনের অমৃত থাকাকালীন অসুররাজ বলি তার কিছুটা ভাগ পেয়ে অমর হয়ে যান। ফলে দেবতাদের হারিয়ে সহজেই স্বর্গ এবং মর্ত্য দখল করে ফেললেন। দেবতারা বিষ্ণুর কাছে গিয়ে বললেন বাঁচাতে। বলি বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন ফলে সরাসরি এই যুদ্ধে অংশ না নিয়ে বিষ্ণু বামন অবতার রূপে জন্ম নিলেন। বলি তখন স্বর্গ মর্ত্য জয়ের পর অশ্বমেধ যজ্ঞ করতে ব্যস্ত। তাকে গিয়ে যে যা ভিক্ষা চাইছে তাই দিচ্ছেন। বামনরূপী বিষ্ণু তার কাছে গিয়ে বললেন তার তিনটে পা রাখার মত জমি চাই। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন অসুরদের গুরু শুক্রাচার্য্য। বামনের অবতার ধরে বিষ্ণু এসেছেন সন্দেহ করে তিনি বলিকে বারণ করলেন। বলি বারণ শুনলেন না , বামনের আবদার মেনে নিতেই বিষ্ণু ধারণ করলেন তার বিশাল ত্রিবিক্রম মূর্তি যার এক পা দিয়ে পুরো স্বর্গ আর দ্বিতীয় পায়ে সম্পূর্ণ মর্ত্য ধারণ করা আছে। এবার তিনি বলিকে জিজ্ঞেস করলেন - তিন নম্বর পা কোথায় রাখব ? বলি বললেন আমার মাথার ওপর রাখুন। তারপর সেই তৃতীয় পা দিয়ে বিষ্ণু বলিকে ঠেলে দিলেন পাতালে। 
     
    মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে বিষ্ণুর সেই ত্রিবিক্রম মূর্তি। 
     
    ​​​রাস্তা দিয়ে আরো দিয়ে নামতে থাকলে গুজারি মহল। এখন মধ্যপ্রদেশ সরকারের সংগ্রহশালা। 
     
     
    মান সিং রাই বলে এক গ্রামে গেছিলেন হাতি শিকার করতে। তিনি সেই গ্রামের মেয়ে মৃগনয়নীকে দেখেন রাস্তা দখল করে দুটো যুদ্ধরত ষাঁড়কে শিং ধরে আলাদা করে দিতে । সেটা দেখে পাণি প্রার্থনা। বিয়ের জন্য মৃগনয়নী কিছু শর্ত দিয়েছিলেন। যেমন তিনি বাকি রানীদের সঙ্গে থাকবেন না। তার জন্য স্নানের জল আনাতে হবে তার গ্রামের পাশে সংক নদীর থেকে। সেই অনুযায়ী মান সিং পাহাড়ের নিচে এই গুজারি মহল তৈরী করলেন এবং সংক নদীর জল আনার জন্য একটা মাটির নীচ দিয়ে ছোট খাল খুঁড়িয়ে ফেলেন। এই সমস্ত গল্প লেখা আছে বৃন্দাবন লাল ভার্মার হিন্দী উপন্যাস 'মৃগনয়নী'তে। 
     
    ধ্রুপদী সংগীতের শিষ্য মান সিং মৃগনয়নীর জন্য গুজারি টোরি বলে রাগিণীটি আবিষ্কার করেছিলেন। তখনকার জনপ্রিয় খেয়াল ঘরানার থেকে তিনি ধ্রুপদ ঘরানার প্রসারে উৎসাহিত হয়ে নিজেই তিন খন্ড পদাবলী লিখে ফেলেন এবং সংস্কৃত সরিয়ে হিন্দি গান রচনায় বাকিদের উৎসাহ দেন। তার লেখা [ঘোস্টরিটেন মনে হয়] মানকুতূহল বইটি গান নিয়ে লেখা প্রথম হিন্দি বই এর মূল পাণ্ডুলিপি পাওয়া যায়নি।আগ্রার গভর্নর পদ থেকে অবসর নেবার পর ফকিরুল্লা সইফ খান ~১৬০০ সালে এই বইয়ের একটা পাণ্ডুলিপি পেয়েছিলেন এবং তাল সংক্রান্ত পর্বটা বাদ রেখে তার নিজের উর্দূতে লেখা 'রাগ দর্পণ'তে এই বইয়ের নানা অংশর অনুলিপি করে গেছেন। 
     
    গুজারি মহলের ছাদগুলো ধ্বসে যাবার পর মূর্তিগুলো ভালভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। 
     
    গুজারি মহলে রাখা আরেকটা ছোট বরাহ অবতার 
     
     
    ইন্দোরের ধারের কাছে ন টা বাঘ গুহাতে [বাঘিনি নদীর তীরে বলে জায়গাটার এরকম নাম] বৌদ্ধ শিল্পকলায় ~৬০০ খ্রীষ্টাব্দে আঁকা কিছু রঙিন মুরাল ছবি পাওয়া গেছে। সেসব কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবিও বাঁধিয়ে এই সংগ্রহশালায় রাখা আছে। ছবি তোলা বারণ। এছাড়া গুজারি মহলের বেসমেন্টে আছে সংগীতের গ্যালারি। যেখানে মান সিং কৃত 'কল্যাণ সুন্দর' রাগের স্বরলিপির ফটোকপি দেখলাম।
     

    শিবের তিনমুখ ওয়ালা 'সদাশিব' মূর্তি। তিনটি মুখের মুখের ভাব তিন রকম। 
     
    শিবের একটি অন্যরকম 'নটরাজ' মূর্তি। 
     
     
    বিষ্ণুর মৎস্য অবতার। 
     
    বিষ্ণুর কুর্ম অবতার , যার পিঠের ওপর মন্দার পর্বত রেখে সমুদ্রমন্থন চলছে। 
     
    নৈঋত যমের মূর্তি। সঙ্গে vyal
     
    বরুণের মূর্তি। 
     
    গুজারি মহল থেকে বেরিয়ে কেল্লার এদিকের তোরণ থেকে স্টেশনের অটো, গতিমান এক্সপ্রেসে ফেরা। মোহাম্মদ ঘউস এবং মিঞা তানসেনের সমাধি দেখা হল না। মোহাম্মদ ঘউস ছিলেন এক সুফি সাধক যিনি বাবরকে গ্বলিয়র জিততে সাহায্য করেছিলেন। তানসেন তার কাছে নাড়া বেঁধেছিলেন। মান সিংহ ছাড়াও একারণে হিন্দুস্তানী ধ্রুপদ সংগীতের জগতে গ্বলিয়র ঘরানার বিশেষ স্থান আছে। খ্রীষ্টমাসের সময় এক সপ্তাহ ধরে এখানে ধ্রুপদী গানের আসর বসে। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ০৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৪৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ২২:১৫525538
  • যথারীতি চমৎকার।
  • dc | 2401:4900:1f2b:aaa1:a96b:3393:c457:1a28 | ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ২২:২৬525539
  • প্রথম ছবিটা দেখে ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য লাস্ট ক্রুশেডের সেই মন্দিরটার কথা মনে পড়ে গেলো। 
  • kk | 2607:fb90:ea0c:cd31:c5e4:bfd6:bab5:f55f | ০৪ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:১৪525540
  • হ্যাঁ, চমৎকার। তোরমান, মিহিরগুল ইত্যাদিদের কথা কিছু জানা ছিলো। কিন্তু এগুলো জানতামনা। কী অদ্ভুত সুন্দর স্থাপত্য ছিলো সেইসব যুগে ভাবলে খুব ভালো লাগে। সাস আর বহু দুটো মন্দিরের ছাদের গঠনই দারুণ লাগলো। আর খুব ভালো লাগলো মানমহলের ও নীলের কাজ। পিলারের ওপরে ঐ যে সিংহগুলোর মূর্তি, ওগুলো দেখে কী রকম গার্গয়েলদের কথা মনে পড়ে গেলো।
  • এলেবেলে | 202.142.71.17 | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০১:০৭525543
  • এই সিরিজটা প্রথম থেকেই পড়ছি। একটা কারণ বহু দিন আগে এর অনেকগুলো জায়গাতেই - ভীমতাল, উদয়পুর, মুসৌরি, হৃষিকেশ, খাজুরাহো, সারনাথ- গিয়েছি। কিন্তু প্রধানতম কারণ চমৎকার বর্ণনার সঙ্গে অনবদ্য ছবির অনায়াস যুগলবন্দি। বিশেষত সাঁচী গিয়েছিলাম সেই ৯৪ সালে, এখন এএসআই যেভাবে চত্ত্বরটা পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে রেখেছে, সেটা দেখে চমকে গেলাম।
     
    ২০০৯ সালে আমিও ভোপাল শতাব্দীতে চেপে গোয়ালিয়র গিয়েছিলাম। তখন সাঁস-বহুর মন্দির এমন সাজানো দেখিনি। আমি অত্যন্ত খারাপ ছবি তুলি। তায় আবার ২০০৯-এ আমার কাছে ডিজিট্যাল ক্যামেরা থাকার প্রশ্নই ছিল না। দীপাঞ্জনবাবু ঘাউস কা মকবারা আর তানসেনের সমাধি যেতে পারেননি পড়ে ওই দুটো জায়গার ছবি দিলাম। সবাই একটু ক্ষমাঘেন্না করে দেবেন।


  • এলেবেলে | 202.142.71.17 | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০১:০৯525544
  • এঃ, একেবারে চারটে ছবি এল না। অগত্যা আরেকবার দিই।


  • Ranjan Roy | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০১:১৬525545
  • বয়েস হয়ে গেছে। আর এসব দেখা হবে না।
     
    কিন্ত আপনার লেখার গুণে চমৎকার মানসভ্রমণ হচ্ছে।
    আগ্রহের সঙ্গে পড়ে চলেছি।
  • সুদীপ্ত | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:১৯525555
  • বাহ খাসা হচ্ছে সিরিজটা! পড়ছি আগ্রহ নিয়ে!  
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৯525563
  • গোয়ালিয়র খুবই সুন্দর জায়গা। ঘুরে এসেছিলাম 4-5 বছর আগে। ভালো লাগলো এই পর্বটা। ওখানে আর একটা কারাগার ধরণের স্থাপত্য আছে স্থানীয় লোকেরা জরাসন্ধের কারাগার বলে উল্লেখ করে। একটা দুঃখ রয়ে গেছে গুজারি মহলটা যাওয়া হয়নি। পরের দিনের জন্য রেখে ছিলাম। কোনো কারণে পরের দিন বন্ধ ছিল। দুর্গটা খুবই সুন্দর। আসে পাশের মন্দিরের কাজ গুলো সত্যি অপূর্ব। জৈন তীর্থঙ্করের মূর্তি গুলোও। ঘাউস এর মকবরাটি প্রকান্ড। দেখলেই মনে বিস্ময় মেশানো শ্রদ্ধা জেগে ওঠে।
  • দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:২১525568
  • আপনাদের সবাইকে আবারো ধন্যবাদ। 
     
    ডিসি , ওটা মনে হয় জর্ডনের পেট্রা দেখিয়েছিল। এই জৈন মূর্তিগুলো দেখে আমার মনে হয়েছিল বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তির ছোট ভার্সান। 
     
    এলেবেলে , এই জায়গাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ মনে হয় বছরের কোন সময়ে যাচ্ছেন তার ওপরেও নির্ভর করে। শীতকালে একরকম আবার গরমকালে রং জ্বলে যাওয়া ঘাস ইত্যাদি। আপনার তোলা ছবিগুলোতে ঘাউসের মাকবারা আর তানসেনের সমাধির স্থাপত্যের সিমেট্রিটা কিন্তু খুবই ভাল এসেছে। 
     
    রমিত , জরাসন্ধের কারাগার কি কেল্লার ভেতরেই? মনে হয় আলাদা করে কোথাও লেখা ছিল না বলে মিস করে গেছি। 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৪০525571
  • জরাসন্ধের কারাগার একদম ফোর্টের পাশেই ছিল। মান মহল থেকে হাঁটা দূরত্বে, সম্ভবত।
  • দীমু | 182.69.178.81 | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৪৬525588
  • ওহ বুঝতে পেরেছি। আপনি ওই ASI মিউজিয়ম আর বাওলির মাঝখানের মোটা অনেকগুলো থামওয়ালা বাড়িটার কথা বলছেন। ওটা কারাগার ছিল জানতাম না। ধন্যবাদ।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন