এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ছেলেটা আবার পালিয়েছে

    ranjan roy
    অন্যান্য | ১৪ আগস্ট ২০১০ | ৪৭২২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Samik | 122.162.75.95 | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১০ ২০:৩৫462434
  • আরে সেটাই তো ন্যাড়া চাটুজ্জের স্কুল। কিন্তু আপনি ক্যামনে জানলেন?
  • ranjan roy | 122.168.227.29 | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ ২৩:১৮462435
  • আরে শিবু বা শিবরাজ পাল আমার ভাইপো। বছর চব্বিশের বাচ্চা ছেলে। চুঁচড়োর স্টেশনের কাছে দেবব্রত সরণীতে আমার দাদা তপন পালের বাড়ি। সেই সুবাদে ও জানে।
    খালি গুচ তে ঠিক করে বাংলা লিখতে পারছে না।
    কালকে আবার সমের থেকে ধরব।
  • ranjan roy | 122.168.169.193 | ০৯ অক্টোবর ২০১০ ২৩:০২462436
  • স্যারের গম্ভীর বাণীর সামনে সোমেশ্বর, অসীম মান্না( ভোম্বল) হকচকিয়ে যায়।
    সত্যিই তো! রেডিওটা তো সামনেই রাখা। তদন্ত করতে আসা ডিপিআই অফিসের ভদ্রলোকেরা এবার কথা নজরে ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছেন। এরা বড্ড পাকা! স্যার ঘরে রেডিও নিয়ে যাবেন না তো কি তোরা নিয়ে যাবি? এই নিয়ে নালিশ! মন দিয়ে পড় গে যা!
    হটাৎ শোনা যায় তপনের গলা--- ""স্যার, সত্যি কথা বলতে আপনিই শিখিয়ে ছিলেন। সেই অধিকারে বলছি--- রেডিওটি অ্যাদ্দিন আপনার বাড়িতেই ছিল। আজকে এখানে আছে। কারণ আপনি জানেন আজকে তদন্তকারী দল আসবে।
    আর আমাদের অভিযোগ যে সত্যি সেটা আপনার চেয়ে ভাল কেউ জানে না।''
    ঘরের মধ্যে একটা পিন পড়লেও শব্দ শোনা যাবে। ছোঁড়ার আস্পদ্দা দেখে সবাই হতবাক।
    এবার তদন্তকারী দলটির একজন বলেন--- মাস্টারমশাই, আপনি আপনার অফিসে যান। আমরা ওখানেই আসছি।
    এবার সেই ভদ্রলোক তপনদের বলেন--- তোমাদের সাহস আমার ভাল লেগেছে। যাও, মন দিয়ে পড়া শুনো কর। আর এই কমপ্লেন করার জন্যে তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না, নিশ্চিন্ত থাক। বাকিটা আমরা দেখছি।
    এরপর কি হল তপনরা কেউ জানে না। তবে রেডিওটা স্কুলের অফিসেই রইল। ওই দোর্দন্ডপ্রতাপ হেডস্যার কোনদিন আর ওদের কোন পিরিয়ড নিলেন না।
    এরপর কি করা হায়ার সেকন্ডারি পরীক্ষা যে এগিয়ে আসছে! একজন স্যার খুব বিখ্যাত।উনি ছাত্রদের খুব ভালোবাসেন আর ওনার জানা আছে পরীক্ষা পাশের মন্ত্র। ছাত্র কেমন তা বুঝে উনি পাশের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দেন।
    তপন ঠিক করলো টেস্ট পরীক্ষার পর যে মাস দুই সময় তখন ওনার কাছে পড়বে।
    কিন্তু উনি বল্লেন-- মাপ কর বাছা! তোমাকে পড়ানো আমার সাধ্যের বাইরে। না-না, কিছুতেই না।
    তপন ওনার বাড়ির সামনে প্রায় হত্যে দিয়ে পড়ে থাকলো। স্যারের মন গললো। এবার কোন ব্যাচে ওকে অ্যাডজাস্ট করা যায়? উনি যাই বলেন তপনের রুটিনে খাপ খায় না যে!:)))))
    --- সকাল সাতটা? না স্যার, আমি তো বেলা আটটার আগে ঘুম থেকে উঠি না। বিকেল পাঁচটা? কি যে বলেন স্যার! তখন তো আমি স্কুল থেকে এসে মুড়ি খেয়ে গঙ্গার ধারে বেড়াই।
    --- বাপ্‌, তোকে পড়াতে রাজি হওয়াই আমার গুখোরি হয়েছে! তোর যখন সুবিধে, তখন পড়তে আসবি। এসে আমার উর্দ্ধতন চোদ্দগুষ্টিকে উদ্ধার করবি। এবার বাড়ি যা!
    রেজাল্ট বেরুলে সবাই অবাক। তপন হিউম্যানিটিজ নিয়ে পঞ্চাশের ওপর পেয়ে পাশ করেছে আর ওর প্রিয় বিষয় ভূগোলে সাতাত্তর পার্সেন্ট পেয়েছে।
    কোলকাতায় পার্কসার্কাসের মামাবাড়িতে গিয়ে খবর দেয়াতে বড়মামীমা বেকবাগানের "" মিঠাই'' থেকে মিষ্টি আনতে পাঠালেন।
    দাদু ও দুয়েকজন মামা মুখ বেঁকালেন।
    --- হইছে, অ্যাদ্দিনে স্কুলের বেড়া ডিঙ্গাইছে - এই মেলা। ফার্স্ট ডিভিসন তো পায় নাই। এই নিয়া আর বেশি নাথুংথুঙ্গা করন লাগতো না।
    বড়মামী গেলেন চটে।
    --- আপনেরা বোঝার চেষ্ট করেন -ও কি অবস্থা থেইক্যা--।
    হায়, তখন কি স্মৃতিকণা জানতেন যে একদিন তাঁকে এইসব কথা ও মন্তব্য নিজের ছেলেদের জন্যেও শুনতে হবে! ( চলবে)

  • ranjan roy | 122.168.200.127 | ০৮ নভেম্বর ২০১০ ২০:৩৬462437
  • এবার সে কলেজে যাবে, ভর্তি হবে ইকনমিক্স
    অনার্সে।
    -- অর্থনীতি কেন, ভূগোল নয় কেন? ওরে, সবচেয়ে ভাল নম্বর তো ভুগোলে পেয়েছিস!
    --কারণ মার্ক্সীয় দর্শনে অর্থনীতি হল ভিত্তি, আর রাজনীতি তার সৌধ এবং জাল দিয়ে গাঢ় হওয়া
    ক্ষীর।
    -- ওরে বাবা! লাল ঝান্ডার খপ্পরে পড়েছিস, পরকাল ঝরঝরে।

    সে যাকগে, কলেজ মাত্র শুরু হয়েছে এখন একটু কোথাও ঘুরে আসলে হয়। অনেকদিন থেকে
    কাছে ডাকছে শান্তিনিকেতন।
    মা ও দিদির কাছ থেকে কিছু টাকাপয়সা নিয়ে
    যাওয়া গেল শান্তিনিকেতন। পরিধান পাজামা ও গেরুয়া পাঞ্জাবী। তপন ওই পোশাকের দৌলতে মিশে গেল ওখানকার ছাত্রদের সঙ্গে। এমনকি এক বুধবার ছুটির দিনে কলাভবনে এϾট্র পেয়ে গেল।
    তখন শান্তিনিকেতন চত্বরে ওদের বাস সার্ভিস ছিল। বেশ শস্তা আর টিকিট বেশ সুন্দর দেখতে।
    তপন মহানন্দে ঘুরে বেড়ায়। একেবারে "" তাইরে নাইরে নাইরে, কোন দু:খ নাইরে'' ঢংয়ে।
    একদিন চোখে পড়ল একটি চিনা মেয়ে। তুলি দিয়ে আঁকা বাঁশপাতার মত চোখ, আর
    চাঁপাকলির মত আঙুল।
    মেয়েটি যেন নিজের মনে একটু ঘোরের মধ্যে রয়েছে। খেয়ালই নেই যে একটি বছর আঠেরোর ছেলে ওকে রোজ দেখতে থাকে। রিসেস পিরিয়ডে, লাইব্রেরিতে, চলার পথে।
    -- মেয়েটি কে?
    --- কোন মেয়েটি?
    -- ওই যে!
    -- ও ? ও হল তান চামেলি, চীনাভবনের অধ্যক্ষ অধ্যাপক তানের একমাত্র মেয়ে।
    সাত-আট দিন হয়ে গেল। পকেটের রেস্ত
    ফুরিয়ে এসেছে।
    না:, এবার ফেরার আগে ওর সঙ্গে কথা বলতেই হবে। কিন্তু সাহস সঞ্চয় করতে
    লাগলো প্রায় দু'দিন।

    --- এই যে শুনছেন! আপনাকে বলছি।
    --- আমাকে? কী ব্যাপার? বলুন!
    --- আমি কোলকাতা থেকে বেড়াতে এসেছি। আমার অটোগ্রাফ খাতায় দু'লাইন লিখে দেবেন?
    -- আমাকে কেন?
    --- আসলে ক'দিন ধরে আপনাকে দেখছি।
    ভীড়ের মধ্যে অন্যরকম লেগেছে, তাই।
    মেয়েটি এবার ভালও করে ছেলেটির দিকে
    তাকালো। গড়পড়তা সাদামাটা বাঙালী
    চেহারা। কিন্তু কোথায় একটু একরোখা ভাব।
    বাড়িয়ে দেয়া এক্সার্সাইজ বুক টেনে নিয়ে লিখলো----
    "" কত অজানারে জানাইলে তুমি কত ঘরে দিলে ঠাঁই,
    দূরকে করিলে নিকটবন্ধু, পরকে করিলে
    ভাই''।

    ভাই? তপনের সব নেশা কপ্পূর হয়ে উপে গেল। শান্তিনিকেতনের পরিবেশ,
    খাওয়াদাওয়া সব আলুনি লাগতে লাগলো। সেই দিনই বিকেলের ট্রেন ধরে ফিরে এল ঘরে।

    বেশ কিছু বছর আগে টাইমস্‌ অফ ইন্ডিয়ায় চোখে পড়েছিল যে দিল্লি বিশ্ব বিদ্যালয়ের
    বাংলা বিভাগের ডীন প্রোফেসর তান চামেলি অবসর নিয়েছেন, সঙ্গে চশমা চোখে ভারিক্কি চেহারার এক মহিলার ছবি।

    তিনি জানিলেন না যে তাঁহার কৈশোরোত্তীর্ণ নবযৌবনের দিনের একটি লিপিকা বঙ্গদেশের হুগলী জেলার চুঁচুড়া জনপদের একটি বাটিকায় সযত্নে রক্ষিত আছে।
    (চলবে)

  • Samik | 122.162.75.184 | ০৮ নভেম্বর ২০১০ ২০:৫১462438
  • উফ্‌ফ্‌। রঞ্জনদাকে আমি গুচ-র তরফে বুকার প্রাইজ দেব।
  • Manish | 59.90.135.107 | ০৯ নভেম্বর ২০১০ ১১:৪৪462439
  • কেনো? চুঁচুড়োর কথা লিখেছে বলে।:-)))
  • ranjan roy | 122.168.46.40 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১২:৩০462440
  • ইতিমধ্যে বাম ছাত্র রাজনীতিতে তপনের সক্রিয়তা অনেক বেড়ে গিয়েছে। মহসীন কলেজে অধ্যাপক শম্ভু ঘোষের প্রভায় আলোকিত হয়ে ফরওয়র্ড ব্লকের ছাত্র সংগঠন ক্ষমতায় ছিল।
    তপন পাল , অসীম মান্না, তপন চক্রবর্তীদের প্রয়াসে ছাত্র ফেডারেশন ক্ষমতায় এল। হুগলী জেলা ছাত্র ফেডারেশনের নেতৃত্বে অরবিন্দ গুহদের সঙ্গে এরা একটি সক্রিয় সক্ষম গ্রুপ তৈরি করল।
    তপনের মেন্টর ছিলেন সিপিএম নেতা প্রবীর সেনগুপ্ত , সকলের পাখিদা।
    আর জীবনের শেষ ভাগেও সমর্থন যুগিয়ে ছেন অধ্যাপক রূপচাঁদ পাল।
    ফার্স্ট ইয়ারে অ্যানুয়াল পরীক্ষা। স্ট্যাটিসটিকসের পেপার। তপন কিছুই জানে না, কোন ক্লাস করেনি বলতে গেলে। প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে চুপচাপ বসে আছে। উল্টো দিকের বেঞ্চিতে বসে প্রতিদ্বন্দ্বী ফ ব ইউনিয়নের নেতা মুচকি মুচকি হাসছে আর লিখে লিখে পাতা ভরিয়ে ফেলছে। তপনের ইজ্জতে গ্যামাক্সিন লেগে গেল। কিছু একটা করতেই হবে।
    আরে, সামনেই তো বসে ব্যাচের টপার ছেলেটি।
    -- অ্যাই, একটু দেখা না!
    -- কথা না বলে চুপচাপ দেখে লেখ, আমাকে জিগ্যেস করিস না।
    তপন নকল করতে গিয়ে দেখে ন্যুম্যারিকল্‌স্‌ এর পাশে ডেঁয়ো পিঁপড়ের মত কি সব লেখা। ঐ চিহ্নটি বারবার আসছে।
    -- অ্যাই, ওই পিঁপড়ের মত ওগুলো কি লিখেছিস রে! ওটাও লিখতে হবে নাকি!
    -- উফ্‌, ওটা পিঁপড়ে নয়, "সিগমা', গ্রীক লেটার, সাকসেসিভ সামেশনের সিম্বল।
    আর বিরক্ত করিস না!
    -- গ্রীক লেটার? কিন্তু এটাতো স্ট্যাটিস্টিকসের পেপার!
    -- তপন, তুই যা ভাল বুঝিস লেখ, আমাকে আর বিরক্ত করিস না! সময় বেশি নেই।
    তপন তাই করল। যেটুকু বুঝলো, তাই লিখলো। ফলে টপারের খাতায় করা প্রতিটি অংক ও টুকলো, কিন্তু সিগমা সিম্বলটুকু বাদ দিয়ে।
    সাত দিন পরে মহসীন কলেজের স্টাফ রুমে তপনের ডাক পড়ল।
    স্ট্যাটিস্টিকসের প্রফেসর।
    -- এটা তোমার খাতা? অংকগুলো কি তুমি নিজে নিজে করেছিলে?
    -- হ্যাঁ স্যার! না, স্যার!
    -- মানে?
    --- মানে সিম্পল্‌ স্যার। খাতাটা আমার, কিন্তু একটা অংকও নিজে করিনি, ফার্স্ট বয়ের খাতা দেখে টুকেছি।
    -- আচ্ছা? তা ফার্স্ট বয় কি অংকগুলো ঠিক এমনি ভাবেই পরীক্ষার খাতায় লিখেছিল?
    -- প্রায়, খালি মাঝেমাঝে কিছু ডেঁয়ো পিঁপড়ের মত ছিল, বুঝতে পারিনি, তাই বাদ দিয়েছি। কিছু মার্কস্‌ কাটবেন, কিন্তু পাশ নিশ্চয়ই করে যাব, কি বলেন স্যার?
    --you are a strange fellow! কিন্তু মার্কস্‌ পড়লেই পরীক্ষার খাতায় মার্কস্‌ তোলা যাবে, এমন ভুল ধারণা কেন? রাজনীতির সঙ্গে কিছু ক্লাসে এসে নোটস্‌ নিলে কোন ক্ষতি হবে কি?
  • ranjan roy | 122.168.46.40 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১২:৪৭462441
  • কিন্তু ক্লাসে হাজিরি বাড়া তো দূর, তপনের কলেজে আসাই কমতে লাগলো। কারণ ও বলাগড়ে সিপিএম এর সংগঠন গড়ে তুলছে।
    শীতের রাত্তির প্রায়ই কাটে বলাগড়ের এক মাস্টারমশাইয়ের মাটির বাড়িতে, মেজেয় কটি ইঁট বিছিয়ে তার ওপর খবরের কাগজ পেতে শুয়ে জানলায় কোন পাল্লা নেই, হাওয়া আটকাতে সাঁটা হয় পুরনো আ বা প।
    এসে গেল কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তপন কি জানতো সেটাই ওর কলেজ জীবনের শেষ বসন্ত! সেবার জবরদস্ত প্রোগ্রাম। কোলকাতার নামী সেতারি, খেয়াল গায়ক, গণনাট্য সংঘের স্কোয়াড, বেশ ক'টি নাটক। কার্ড পাওয়ার জন্যে হুগলী-চুঁচুড়া শহরে বেশ টেনশন!
    এদিকে তপন হুগলী থেকে একটি আটপাতার পাক্ষিক পত্রিকা নিয়মিত বার করছে। তার লেখা , ফোটো, মায় ব্যান্ডেল, হুগলী, চুঁচুড়া স্টেশনে , চকবাজারের মোড়ে, হুগলীঘাটে বিক্রির ব্যবস্থা--- সবই ওর দায়িত্ব। বাংলা বন্ধের দিনে ব্যান্ডেল কোর্টের শুণ্য লম্বা করিডোর ছবিটির পাখিদা খুব প্রশংসা করলেন।
  • Manish | 59.90.135.107 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:০১462442
  • বা: এইতো গাড়ি এগোচ্ছে।
  • ranjan roykaala | 122.168.46.40 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:০২462444
  • কালচারাল সেক্রেটারি তপন নিয়ম করেছে যে কলেজ সোশ্যালে একটি কার্ডে দুজনের বেশি ঢুকতে দেয়া হবে না।
    নিজে সেই সন্ধ্যেয় গেটের কাছে দাঁড়িয়ে তদারক করছিল। এমন সময় সেই মেয়েটি! কয়েক মাস ধরেই তপনের চোখে চোখ রেখে হাসে।ও যখন ক্লাস রুমে ঢুকে -- আমরা পাঁচমিনিট আপনার সময় নেব, স্যার! একটু রাজনৈতিক বক্তব্য রাখবো বলে শুরু করে, তখনও এমনি চোখে চোখে হাসে!
    মাঝে মাঝে তপন ভাবে মেয়েটিকে পার্টির স্টুডেন্ট এজি এর মিটিংয়ে ডাকবে কি না, তা মেয়েটি খিলখিলিয়ে হেসে লুটিয়ে পড়ে। সব ভালো ভালো ভারি ভারি কথা গুলিয়ে যায়।
    মেয়েটির হাতে কার্ড, তপনকে উঁচু করে দেখায়, তারপর পেছনে আরো দুটি মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গেট পেরোতে থাকে। কিন্তু কিছু একটা অনিয়ম হচ্ছে। একটা কার্ডে তিনজন কেন? মেয়েটি তপনের চিন্তা বুঝে ফেলেছে। সে হাসে সেই হাসিটি যার সামনে পুরুষেরা যুগে যুগে দুর্বল হয়েছে। তপন অন্যদিকে তাকায়। মেয়েটি প্রায় গেট ছাড়িয়ে এগিয়ে গেছে।

  • Samik | 122.162.75.91 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:২০462445
  • ওয়াও!!

    এক নং গলতা। ব্যান্ডেলে কোনও কোর্ট আছে বলে আমি জানি না। ওটা চুঁচড়ো কোর্ট হবে বোধ হয়। ব্যান্ডেল আর চুঁচুড়া কিন্তু দুটো পাশাপাশি আলাদা জনপদ।

    আর এই প্রবীন সেনগুপ্ত ওরফে পাখি সেন। শঙ্কর সেনের আগের বিদ্যুৎমন্ত্রী। লোডশেডিং জিনিসটাকে উনি বাঙালি সংস্কৃতির একটা প্রায় অঙ্গ করে ফেলেছিলেন। মোগলটুলিতে বাড়ি। আমরা সাইকেল করে ওখান দিয়ে পাস করলেই হুল্লাট আওয়াজ ছাড়তে ছাড়তে যেতাম।

    আমাদের যৌবনের উপবন, হুগলি বিনোদিনী বালিকা বিদ্যালয় (আমার দিদিমা, মা, দিদি এবং বউ, সব ওখানকার প্রোডাক্ট) সেবার প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী বর্ষ। খুব কষে মহড়া দিয়ে ছাত্রীরা রেডি সেলিব্রেশনের জন্য। প্রধান অতিথি পাখি সেন, তখন বিদ্যুৎমন্ত্রী।

    পাখি সেন বিনোদিনীর জেলখানাসদৃশ গেট পেরিয়ে কনভয় নিয়ে ঢুকলেন, আর লোডশেডিং। এক ইস্কুল মেয়ের সমবেত হুল্লোড়ে পাখি সেনের সেদিন প্রেস্টিজে এক কিলো গ্যামাক্সিন। :-)

    রঞ্জনদা, চলুক। আরও।
  • d | 14.96.148.131 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:৩৪462446
  • হ আমাদের ওখানেও ছড়া চালু ছিল, লোডশেডিং হলেই ছেলেপেলেরা চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলত:-

    রাতি আসিল, বাতি নিভিল, পাখিবাবু চুপ
    চোখের 'জ্যোতি' বিদেশ গেছে অন্ধকারে ডুব।

    :))
  • Manish | 59.90.135.107 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:৩৯462447
  • একি রহস্য, Ranjanএর শেষে Roykaala
  • Samik | 122.162.75.91 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৩:৪৮462448
  • রঞ্জনদাও বোধ হয় এপিঠ-ওপিঠ করে বাঙালি থেকে মারাঠি হয়ে গেছে।

    রঞ্জন রায়কালা, কায় ঝালা? :-))
  • Raj | 202.79.203.59 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৪:২৭462449
  • শমীক পাখিবাবুকে বড্ড বেশি জেনারেলাইজ করে ফেল্লে ! তবে শুধু তুমি নয় প্রায় অনেকেই করে ..... ওনার ঐ একটা মন্ত্রী পরিচয় ছাড়াও আরও অনেককিছু ছিল।

    ৭০এর পর কোলঘাট ছাড়া আর অন্য কোন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসেন্স না পাওয়া এর একটা অন্যতম কারণ ছিল , না কেন্দ্রের বঞ্চনার কোন কাঁদুনি নয় মায় বক্কেশ্বরের লাইসেন্স দিতে সময় লেগেছিল মাত্র বারো বছর ;-) এই পাখিবাবুই কিন্তু বক্রেশ্বরের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র করার প্রস্তাব দ্যান - অবিশ্যি পরবর্তীকালে সওব ক্রেডিট কৃতি অধ্যাপক শংকর সেনকে দিয়ে দেওয়া হয় ! এই একটি কারণে আমার মনে হয় জন আন্দোলনের নেতাদের প্রশাসনে বা মন্ত্রীত্বে যাওয়া বিপদ , মেধাবী সেলিব্রিটিরা গেলেই ভাল :-)

    আদিসপ্তগ্রাম -মগরা-মহানাদ-পোলবা-রামেশ্বরপুর বেল্টের খেতমজুরদের দাবিদাওয়া সংক্রান্ত আন্দোলন আর খাস জমি পুনরূদ্ধার ও বন্টনে পাখি সেনের যে অবদান তা কোনওদিনই ভোলবার নয়, আরেকজন লেখা রঞ্জনদার লেখায় পড়লাম , রুপচাঁদ পাল - হুগলী লোকসভা আসনটি যার নামের সঙ্গে প্রায় সমর্থক ছিল এই ২০০৯ পর্যন্ত , কিন্তু কার কাছে হারতে হল ? শ্রীরামপুরের সিদ্ধার্থ জামানার মন্ত্রী-বিধায়ক গোপালদাস নাগের কন্যা লেক টাউন নিবাসিনী রত্না দে র কাছে! সত্যি সাতবারের সাংসদের পতনটা হল এক্কেবারে যা তা !
  • Samik | 122.162.75.91 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৩০462450
  • :-)
  • Raj | 202.79.203.59 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৩১462451
  • * আরেকজনের কথা রঞ্জনদার লেখায়
    * সমার্থক
  • ranjan roy | 122.168.46.40 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৪:৪৪462452
  • --বা:, বিশেষ অতিথির জন্যে আলাদা নিয়ম আর জনগণের জন্যে আলাদা নিয়ম ! চমৎকার, এই না হলে বাম রাজনীতির নেতা?
    তপন চমকে পেছন ফিরে তাকায়। চশমার ফাঁক দিয়ে প্রবীণ অধ্যাপক হাসছেন, কিন্তু ব্যঙ্গের ঝাঁঝ চেহারা থেকে ফুটে বেরুচ্ছে।
    এবার ধর্মসংকট! শ্যাম রাখি না কূল? রাধিকারা তো শ্যামের জন্যে লোকলজ্জার পরোয়া না করে যুগে যুগে কূল ছেড়েছেন।
    কিন্তু পুরুষেরা? রামচন্দ্ররা? ওনাদের যে অন্য ট্র্যাডিশন! তপন কুমার পাল দু'সেকন্ড ভাবনা চিন্তা করে সেই বাঁধা পথেই পা বাড়ালেন।
    --- এই যে শুনছেন? আপনার কার্ডটা আবার দেখান তো!
    মেয়েটি অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। কার্ড তো আছে, তা হলে ফ্যাকড়া কিসের?
    ---- আপনারা যেতে পারবেন না। একটা কার্ডে তিনজন যাওয়া যায় না। যেকোন দুজন যেতে পারেন।
    ----বাব্বা:! আপনারা পারেনও বটে! ভেতরে গেলে আমরা তিনজনেই যাবো।
    -- তাহলে আরো একটা কার্ড নিয়ে আসুন।
    --- ওম্মা! আমি এখন কোথায় আবার কার্ড আনতে যাবো! আপনি তো সেক্রেটারি, দিন না আরেকটা জোগাড় করে!
    মেয়েটি অপাঙ্গে হাসে, সঙ্গের মেয়ে দুটো ও মুচকি হাসে। তপন নার্ভাসনেস ঢাকতে গিয়ে রুঢ় হয়।
    --- কি ভেবেছেন, আমার আর খেয়েদেয়ে কোন কাজকম্মো নেই নাকি! হয় দুটো কার্ড আনুন, নয় যে কোন দু'জন যান, ব্যস্‌।
    এবার মেয়েটির চোখের হাসি মুহুর্তে মিলিয়ে যায়। সেখান থেকে ঝরে পরে আগুন।
    ---- আপনি ঘরের খেয়ে কতখানি বনের মোষ তাড়ান সে সব আমাদের জানা আছে। ওসব ফুটুনি এখানে না দেখালেও চলবে! এই রইলো আপনার কার্ড।
    দুহাতের আঙুলে সবেধন নীলমণি কার্ডটিকে ও টুকরো টুকরো করে ফেলে। তারপর সঙ্গিনী দু'জনকে নিয়ে গটগটিয়ে বেরিয়ে যায়। পেছন থেকে ফুটকাটা অধ্যাপক কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলতে থাকেন-- এটা তুমি বাড়াবাড়ি করলে।
    তপন কোন জবাব দ্যায় না। সাইকেল চালিয়ে সোজা বলাগড়ে যায়।
    সেখান থেকে একটি জরুরি পার্টি ডকুমেন্ট কাল ভোরে রওনা দিয়ে ব্যান্ডেল স্টেশনে চড়ে দিল্লি-কোলকাতা সুপারফাস্ট কোন ট্রেনের প্রথম শ্রেণীর কামরায় ট্রেড ইউনিয়ন নেতা , কম: নীরেন ঘোশ,এমপি'র হাতে তুলে দিতে হবে। তারপর সেই ট্রেনে করেই ওকে কোলকাতায় বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রীটে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অফিসে যেতে হবে।
    পরদিন শীতের ভোরে মাফলার আর র‌্যাপারে মোড়া তপন সাইকেল ব্যান্ডেল স্টেশনের স্ট্যান্ডে রেখে প্রথম শ্রেণীর কামরায় কম: নীরেন ঘোষকে দিল সেই ডকুমেন্ট। উনি একবার দেখে নিয়ে ওগুলো ওনার ব্রিফ কেসে রেখে বললেন-- ঠিক আছে, আপনি আসুন।
    একটু আশ্চর্য হয়ে তপন যেই বাথরুম ছাড়িয়ে ওর থার্ডক্লাসের গলিতে পা রেখেছে উনি ওনার প্রথম শ্রেণীর কোচের দরজাটা দিলেন টেনে।
    ট্রেন ছুটেছে, পাশে সরে সরে যাচ্ছে ধানখেত, কলাবাগান । তপনের যে ভীষণ খিদে পেয়েছে, সেই কোন ভোরে খালিপেটে খালি অ্যাঁ করে বেড়িয়েছে। আচ্ছা, উনি যদি একটু চা আনাতেন! বা একটি সিগ্রেট অফার করতেন। কতক্ষণ কিছুই পায় নি।
    ওসব কিছু না, চা-সিগ্রেট নয়, তপন আশা করেছিল উনি তপনকে স্থানীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের ব্যাপারে জিগ্যেস করবেন। না, ছাত্র রাজনীতির কথা নয়। ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাকে বলতে চাইছিল চন্দননগর-চাঁপদানির জুটমিল মজদুরদের কথা, ব্যান্ডেলের বিড়ি শ্রমিকদের কথা, ত্রিবেণী টিস্যু পেপার মিলের সংগঠনের অবস্থার কথা। কত কী বলবে বলে ভেবেছিল! খাদ্য আন্দোলনের রেশ মিইয়ে যায় নি, তপনের কাছে যে পার্টি আগে! পার্টির ইজ্জত আগে, তাইতো কাল রাতে সেই মেয়েটাকে--।
    না:, তপনের কিছুই বলা হল না; না কম: নীরেন ঘোষকে, না সেই চোখে হাসি ছড়ানো মেয়েটিকে।
    ভাঁড়ের চা এসেছে, তপন চুমুক দিয়ে গুনগুন করতে লাগলো--" করি তুই আপন আপন, হারালি যা ছিল আপন''।

  • ranjan roy | 122.168.46.40 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৫:২৫462453
  • অ্যাই শমীক! আমি না হয় রিটায়ার করে ঘরে বসে লিখছি, কিন্তু তোমরা এত গুলো হোমরাচোমড়া আমীরওমরা অফিসে কাজকম্ম না করে গুরু পড়ছ? ঈদের ছুটি গতকাল শেষ হয়ে যায় নি?:))))))))
    যাকগে, তপনের ছেলেও পড়ছিল। ফোন করে জানাল কাকু, ভুল লিখেছ, কোর্ট চুঁচুড়ায় আর চন্দননগরে আছে; হুগলী-ব্যান্ডেল কোথাও নেই।

    আর প্রবীর সেন/ রূপচাঁদ পালদের ব্যাপারে তোমার ও রাজদীপ দুজনের কথাই সত্যি। আজকের সিপিএম কে দেখেষাট-সত্তরের সিপিএম কে খারিজ করে দেয়া যায়? ইহাই জীবন।
    রাষ্ট্রীয় স্তরে কংগ্রেস-সিপিএম নির্বাচনী সমঝোতা আমরা কোন দিন ভাবতে পেরেছিলাম না কি অ্যাশ-ছোটা বচ্চন স্বামী-স্ত্রী হবে ভাবতে পেরেছিলে?
    এইজন্যেই আবার জন্মাতে ইচ্ছে করে।
  • Bratin | 122.248.182.16 | ১৮ নভেম্বর ২০১০ ১৫:৪৬462455
  • আমিও মেরে এনেছি। বড় জোর বছর দশেক আর :-))
  • ranjan roy | 122.173.190.217 | ৩০ নভেম্বর ২০১০ ২২:১৫462456
  • ভারত রক্ষা আইনে বন্দী সব রাজনৈতিক নেতারা মুক্তি পেলেন। সামনেই সাধারণ নির্বাচন। ''চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন'' খ্যাত গণেশ ঘোষ আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তায় রাস্তায় নির্বাচনী সভায় বলছেন--" খেতে দেবে না? ঘরে ঘরে কংগ্রেসি নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে। ' প্রফুল্ল সেন সরকারের পুলিশ ওঁকে ধরতে পারেনি। মাথার ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে গত দু'বছরে গড়ে তুলেছেন সিপিএম এর তৃণমূল স্তরের সংগঠন আর খাদ্য আন্দোলন।
    জ্যোতি বসু মুক্তি পেয়ে নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয়, উৎপল দত্তের নাটক ""দিন বদলের পালা'' বড় বড় নির্বাচনী সভায় প্রচুর ভীড় টানছে। তপন বড় ব্যস্ত।
    উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ব্যস্ত হরিদাস পাল অনেকদিন হল দাদাটির কাজকম্মের খেই হারিয়ে ফেলেছে।
    এমন সময় বড়কাকা কক্স মেনিনজাইটিস এ ভুগে হটাৎ এই দুনিয়ার মায়া কাটালেন। বাড়িতে কান্নার রোল। বড়পিসিমাকে খবর কে দেবে? ওঁরা তখন থাকতেন পিপুলপাতির একটি ভাড়া বাড়িতে।( হুগলীতে? নাকি ব্যান্ডেলে?)
    রঞ্জন এই শোকের আবহ থেকে পালাতে চাইছিল। এককথায় হুগলী রওয়ানা হয়ে গেল। স্টেশনে নেমে পিসিমার বাড়ি পৌঁছে দেখল বড় করে তালা লাগানো। বাড়িওয়ালার মেজছেলেকে জিগ্যেস করায় বল্লো পিসিমা ও দিদি পুরুলিয়ায় রামকৃষ্ণ নাতারক মঠে গেছেন। আর ছেলে তপন এখন বাড়ি নেই।
    ও বললো-- আপনি প্রতাপদা তো, ছোটবেলায় এ বাড়িতে এসেছি। কোলকাতা থেকে একটি খারাপ খবর নিয়ে এসেছি। আমাকে ঘর খুলে একটু বসতে দেবেন? দাদা আসলে ওনাকে সঙ্গে নিয়ে কোলকাতা ফিরব।
    --- দু:খিত, আমি আপনাকে চিনতে পারছি না। ওঁদের অবর্তমানে আমি ঘর খুলে দিতে পারব না, বুঝতেই পারছেন।
    -- আপনি ঠিকই বলছেন। এক কাজ করি? আমি এখান থেকে চকবাজার হয়ে গঙ্গার পাড় দিয়ে শিবঘাট হয়ে আবার এ'বাড়ির সামনে দিয়ে হেঁটে যাবো। এরমধ্যে দাদা আসলে ওকে বলবেন বাইরের ঘরের জানালাটা খুলে রাখতে, যাতে আমি রাস্তা থেকেই বুঝতে পারি ।
    -- ঠিক আছে।
  • M | 59.93.215.250 | ০২ ডিসেম্বর ২০১০ ১১:০২462457
  • নক নক
  • ranjan roy | 122.177.131.201 | ০৩ ডিসেম্বর ২০১০ ২১:২৬462458
  • kallol | 115.242.186.220 | ০৩ ডিসেম্বর ২০১০ ২৩:০১462459
  • অ্যাই রঞ্জন ইয়ার্কি হচ্ছে!!!!
  • dd | 122.167.33.195 | ০৩ ডিসেম্বর ২০১০ ২৩:০৯462460
  • অ্যাই রঞ্জন, ইয়ার্কি হচ্ছে ?????
  • kallol | 115.242.194.61 | ০৪ ডিসেম্বর ২০১০ ০৬:০৮462461
  • গুরুবাক্য শিরোধার্য।
  • ranjan roy | 122.177.131.201 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১০ ১৭:৪৫462462
  • মাক্কালী! নো জোক! তিন তিন বার টাইপেছি, মেয়ের থেকে দান পাওয়া ল্যাপটপে। আনাড়িপনায় তিনবার বাঁ হাত শিফট কী তে পড়ে সব উড়ে গেল। ভ্যাঁ((((:।
    আজ কলিকাতায় অন্তিম রাত্রি, লিখে ফেলবো।

  • ranjan roy | 122.168.105.189 | ১৬ ডিসেম্বর ২০১০ ১২:৫৩462463
  • এবার শুরু হল হরিদাসপালের ভ্রমণ, একেবারে সার্কুলার রুটে। চকবাজার, মোগলটুলি, গঙ্গার পাড়, শিবঘাট, বিটি কলেজ, গার্লস্‌ স্কুল, ইমামবাড়া, হুগলীঘাট স্টেশন, কি আর বাকি রইলো! ইতিমধ্যে পিপুলপাতি দিয়ে যাবার সময় অনেক আশায় তাকিয়ে দেখে বাড়িটির জানলার দিকে, না: , বন্ধই আছে।
    কতবার চক্করকাটা হল? তিন না চার? এবার যে পেটের মধ্যে ছুঁচোয় ডন মারছে। বাড়িতে এসে বড়পিসির বাড়ি খেতে পাবে বলে এতটাই নিশ্চিন্ত ছিল যে গোণাগুণতি রেলভাড়া বাসভাড়ার বেশি টাকাপয়সা আনে নি যে! আর শোকের বাড়িতে নিজের খাবারের জন্যে পয়সা চেয়ে নেয়া? সে যে অত্যন্ত স্থুল ব্যাপার।
    আচ্ছা, এমনতো হতে পারে যে দাদা এসেছে, কিন্তু বাড়িওয়ালারা বলতে ভুলে গেছে যে কোলকাতা থেকে ভাই এসে অপেক্ষা করছে। হয়তো প্রতাপদা সেইসময় বাড়ি নেই।
    রঞ্জন আর একবার ওদের বাড়ি যায়। না:, দাদা সত্যি আসেনি। কখন আসবে? কেউ জানে না। তবে আসবে নিশ্চয়ই।
    আরেক চক্কর। এবার চকবাজারের মিষ্টির দোকানের সামনে। পকেট থেকে পয়সা বের করে গোনে। না:, যদি একটা মিষ্টিও কিনে খায় বা গোটা দুই সিঙাড়া, তাহলে হুগলী স্টেশন আর ট্রেনের ভাড়া হবে। কিন্তু হাওড়া থেকে ৬ নম্বর বাস ধরে নাকতলা অব্দি যাওয়ার ভাড়ার পয়সা থাকবে না।
    আরেকটা রাস্তা আছে। সোজা হুগলী স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরে কোলকাতা ফিরে যাওয়া। ঘন্টা দুইয়ে নাকতালার বাড়িতে ফিরে গিয়ে ভাত খাওয়া যাবে। খিদেটা যে সত্যিই চাগিয়ে উঠছে।
    --রঞ্জন না?
    চমকে তাকায়। মিষ্টির দোকানের থেকে প্যাকেট হাতে বেরিয়ে আসছে একটি সদ্য গোঁফ বেরোনো ছেলে।
    -- আমাকে চিনতে পারছো না? আমি সুনীলেন্দু, সুনীলেন্দু গোস্বামী। বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনে তোমার সিনিয়র ছিলাম। তুমি এখানে কোথায়?
    --- কাকা মারা গেছেন, পিসির বাড়িতে খবর দিতে এসেছি।
    -- আচ্ছা, আমার বাড়ি কাছেই। চলি তাহলে, আবার দেখা হবে।
    ( যেও না সুনীলেন্দু! তোমাকে চিনতে পেরেছি, চেহারাটা দ্রুত বদলে গেছে। তুমি খুব ভালো ব্যাকফুট ড্রাইভ মারতে, হিংসে হত। আমাকে আট আনা দেবে। দাদা আসলে ফেরৎ দেব! বড্ড খিদে পেয়েছে। দুটো কচুরি, আর দুটো রসগোল্লা। ব্যস্‌, দেখ তোমার সামনেই খাব।)
    না, হরিদাস পাল রঞ্জন বলতে পারেনি।
    সুনীলেন্দু চলে গেল।
    রঞ্জন পায়ে পায়ে হেঁটে ফিরে গেল পিপুলপাতির সেই বাড়িতে। বন্ধ জানলার সামনে উঁচু বারান্দার সিঁড়ির ওপর বসে পড়ল, ধুলোর ওপরে , নিজের হাওয়াই চটির ওপর। শরীরে আর শক্তি নেই। রাস্তার ওপর বাড়ি। বসে থাকবে প্রতীক্ষায়। কখনো তো দাদা আসবে।
  • ranjan roy | 122.168.105.189 | ১৬ ডিসেম্বর ২০১০ ১৩:২৭462464
  • রঞ্জন বসে বসে রাস্তাঘাটের লোকজন দেখতে থাকে। শীতের বিকেলে সন্ধ্যে তাড়াতাড়ি নামছে। ছেলেরা খেলার মাঠ থেকে ফেরা শুরু করেছে। আর স্কুল বা কলেজ ফেরতা অথবা কুঁদুলে পাড়াবেড়ানি মেয়েরা। না:, ক্লান্তশরীরে খিদের জ্বালায় আর মেয়েরাও তেমন মনোযোগ কাড়তে পারছে না।
    মিশনের ধর্মক্লাসে ভুল শিখিয়েছে। আনন্দ ব্রহ্ম নয়, অন্নই ব্রহ্ম। অন্ন না জুটলে আনন্দ পালায়।
    -- আপনি কে? আমাদের বাড়ির বারান্দায় এ ভাবে বসে?
    সিঁড়ির পাশে সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়েছে একটি চাপদাড়িওলা বছর পঁচিশের সাজোয়ান।
    ক্লান্ত রঞ্জন উঠে দাঁড়ায়, সংক্ষেপে গল্পটি বলে।
    ছেলেটি হাসে। -আমি এ'বাড়ির বড়ছেলে। আপনার সাথে অন্যায় হয়েছে। তপন পার্টি অফিসে। খবর না দিলে রাত দশটার আগে বাড়ি ফিরবে না। দাঁড়ান , দেখছি।
    এই হাবু, এনাকে সাইকেলে চড়িয়ে একটু পার্টি অফিসে নিয়ে যাবি? সকাল থেকে এসে বসে আছেন। তপনের মামাতো ভাই।
    পাজামা-পাঞ্জাবী পরা হাবু নামের ছেলেটির সাইকেলের সামনের রডে বসে একটি বছর তিনেকের বাচ্চা।
    সে সব শুনে বলে--অ্যাদ্দুর কষ্ট করেছেন, আর একটু অপেক্ষা করুন। বাচ্চা ভাইপোকে বাড়ি ছেড়ে আসছি।
    তারপর পার্টি অফিসে নিয়ে যেতে যেতে বলে-- প্রতাপটা জানোয়ার। কাছেই পার্টি আফিস। তপনদাকে একটু খবর দিতে পারলো না!
    পার্টি অফিসে তপন কোলকাতা থেকে আসা ভাইকে দেখে চমকে ওঠে। তারপর তাড়াতাড়ি করে বাড়ি ফিরে ঝোলা ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে রিকশায় উঠে বলে-- চল! আমরা ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে ফাস্ট ট্রেনে চড়বো।
    টিকেট কাটার পর একটি ট্রেন ছেড়ে দেয়।
    -- আগে পেট ভরে খা'।
    ব্যান্ডেল স্টেশনের সেই আলুর চপ আর চমচম, শেষে মাটির ভাঁড়ে চা।
    হরিদাস পাল তার স্বাদ আজও ভোলেনি।
  • Samik | 155.136.80.174 | ১৬ ডিসেম্বর ২০১০ ১৩:৩১462466
  • হিয়া টুপটাপ, জিয়া নস্টাল।

    এইভাবে দুপুরটা মাটি করবেন না রঞ্জনদা, এখনো দুটো মিটিন আছে ...
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন