এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • achintyarup | 59.93.247.176 | ১৭ মার্চ ২০১২ ০৫:১৭534306
  • বরফান্দি কাঁদছিল।

    বরফান্দি কাঁদছিল, আর দূরে, অরুণাচলের পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে নেমে আসছিল মেঘ। হাতির দলের মত মেঘ। নেমে আসছিল সুবনশিরির বুকের ওপর।

    ডুলুং জঙ্গলের ভেতর দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল বরফান্দি। তার গালের কুঁচকে-যাওয়া চামড়ার ওপর দিয়ে জল গড়াচ্ছিল। চিকচিকে নদির মত জল। জঙ্গলে ঝিঁঝি ডাকছিল। বর্ষার জলে তাজা জঙ্গলে। ভর দুপুরে মেঘের ছায়ায় বুনো গন্ধের ভাপ-ওঠা জঙ্গলে। তিরতির করে বয়ে-যাওয়া নালার জলের শব্দ কানে আসছিল না। শুধু বরফান্দির কান্নার শব্দ আর ঝিঁঝির ডাক।

    এইখানে গাঁও ছিল। এই ডুলুং জঙ্গলের ভেতর। ওই লম্বা গাছটার পাশে বরফান্দির বাড়ি ছিল। আরও হাজার ফান্দির পরিবার এসে বসত করেছিল এইখানে। অরুণাচল বর্ডার থেকে অল্প দূরে, ঘাঘর নদির কাছে। সরকার সরিয়ে দিতে চাইল তাদের রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে। ফান্দিরা কেস করল হাইকোর্টে। হাইকোর্ট স্ট্যাটাস কো দিল। কিন্তু ফরেস্টের লোকেরা একদিন এসে লোকজনকে মারধর করে, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল। ফান্দিরা পালিয়ে গেল। আবার ফিরে এল। আবার ঘর ভেঙ্গে দিল ফরেস্টের লোক। অরুণাচল সরকারও লোক পাঠিয়ে জ্বালিয়ে দিল গাঁ। বলল এ তাদের জায়গা। আসাম সরকারের জায়গাই নয়। বারবার পাঁচ বার ঘরছাড়া হয়ে মানুষগুলো ছিটকে গেল এদিক ওদিক। কাজ নেই, খাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। পোড়া ঘরবাড়িগুলো আবার যত্ন করে গাছ-লতায় ঢেকে দিল ডুলুং-এর জঙ্গল। এই ঝিঁঝি-ডাকা জঙ্গল। এইখানে ফান্দিরা থাকত। কাজ চলে-যাওয়া ফান্দিরা।
  • aranya | 144.160.226.53 | ১৭ মার্চ ২০১২ ০৫:৪০534317
  • অপূর্ব।
  • Nina | 69.141.168.183 | ১৭ মার্চ ২০১২ ০৫:৪৩534328
  • বিষদ মধুর!
  • dukhe | 202.54.74.119 | ১৯ মার্চ ২০১২ ১৮:১০534339
  • আর নেই ?
  • kd | 59.93.194.158 | ১৯ মার্চ ২০১২ ১৮:৩৭534340
  • যা:!!
    হেডিং দেখে আমি ভাবলুম এটা রিপাবলিকানদের নিয়ে নির্মোহ ব। :(
  • achintyarup | 115.111.248.134 | ১৯ মার্চ ২০১২ ১৯:০৮534341
  • BSP?

    আসবে, আসবে। তবে বড় জানোয়ার তো, ধীরে চলে
  • Nina | 12.149.39.84 | ২০ মার্চ ২০১২ ০০:৫০534342
  • হাতির তাড়া খায়নি কখনও চিন্টুবাবু--ধীরে তো তোমার কলম-কচ্ছপ চলে হে ---
  • dd | 110.234.159.216 | ২৪ মার্চ ২০১২ ১৪:৪৯534343
  • হাতির কথা উঠলই যখন তখন অত্যন্ত জরুরী এই বিষয় গুলি ঝট করে জেনে নিন। খুব ইম্পর্ট্যান্ট।

    রণহস্তী কবের থেকে? এই গুরুত্বপুর্ন প্রশ্নটি যে আপনাদের নিরন্তর চিন্তিত রেখেছিলো সে তো জানি ই। এখন সেই উত্তর আপনার হাতে এসে গেলো। হা:।

    ঋগবেদের দশম মন্ডলে অংকুশের কথা আছে।"এ দিয়ে তুমি হস্তীদের বশীভুত করো।" মেইনলি যুদ্ধ হতো রথে ও পদাতিক নিয়ে। ক্যাভালরীর জন্য ভালো ঘোড়া তখনো "জন্মায়" নি। কিন্তু কোনো যুদ্ধের বর্ননাতেই হাতীর কথা নেই।

    কিন্তু অথর্ব বেদের সময়ে লেখা আছে "শত্রুদের রথ,অশ্ব,হস্তী কিছু যেন অবশিষ্ট না থাকে।" অংকুশের কথা এসেছে বেশ কয়েকবার। মনে হয় সেই সময়ে গুটি গুটি হাতী এসে গেছিলো যুদ্ধের মাঠে।
  • practice | 59.93.254.148 | ২৬ মার্চ ২০১২ ০০:০৬534344
  • ভিডিওতে "হাতি মেরা সাথী" সিনেমা দেখেছি। চিড়িয়াখানায় সত্যিকারের হাতি দেখেছি।
  • Lama | 117.194.232.63 | ২৬ মার্চ ২০১২ ০৮:৫৭534307
  • আমার বাবা একবার জঙ্গলের পথে হাতি দেখে ভয় পেয়েছিলেন। সেই কাহিনী শুনে আমাদের হোস্টেলের শ্যামোঙ্কÄল মেদ্দা বলেছিল "কাকু ভয় পেলেন কেন? হাতি তো কামড়ায় না শুনেছি।'
  • siki | 122.177.58.73 | ২৬ মার্চ ২০১২ ০৯:০৪534308
  • :)
  • achintyarup | 24.99.8.63 | ২৩ জুন ২০১৩ ০৫:১৬534310
  • গুস্তাকি মাফ করবেন। এই লেখা শুরু হওয়ার পর থেকে গণ্ডক নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেছে, লেখা এগোয় নাই। এক বরফান্দির গল্প দিয়ে শুরু করা গিয়েছিল কাহিনী। সেখান থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল হাতি-ধরিয়ে ফান্দিদের এখনকার পেশাবিচ্যুত জীবনে, এবং সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছে ছিল তাদের হাতি ধরার পদ্ধতি বিষয়ে দু চার কথা বলার। ফাঁকে ফোকরে হাতির বিষয়েও একটা দুটো কথা, যা হয়ত সকলেই জানেন এখানে, তাও বলা হবে বলে ভাবা গিয়েছিল। কিন্তু বলা হয় নাই। এর মধ্যে গণ্ডক নদী দিয়ে গড়িয়ে গেছে অনেকটা জল। সে জল গড়িয়ে যেখানে গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে, তার কাছেই হরিহরছত্রের মেলা হয়ে গেছে একবার, যে মেলা থেকে নাকি এক কালে রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের জন্য হাতি কেনা হত।

    ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭৭ সালে সংশোধন করে সরকার বাহাদুর হাতি ধরা বন্ধ করে দেন। তারপর থেকে এ যাবৎ অনেকটা বেড়েছে হাতির সংখ্যা, সঙ্গে সঙ্গে কমেছে তাদের থাকার জায়গা। মানুষের উপদ্রবে কোথাও কোথাও পাল্টে গেছে তাদের যাতায়াতের নির্দিষ্ট পথ, খাদ্যের উৎসভূমি সঙ্কুচিত হয়েছে, ফলে হাতির হানা বেড়েছে লোকালয়ে, তাদের আক্রমণে মানুষ মরার ঘটনাও বেড়েছে, তার প্রতিশোধে বেড়েছে হাতির ওপর পাল্টা আক্রমণ। বিষ দিয়ে, গুলি করে, হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎবাহী তার তাদের যাতায়তের পথে বিছিয়ে রেখে হাতি মারার উপায় খুঁজে নিয়েছে বিপর্যস্ত মানুষ। রেলে কাটা পড়ার কথা তো বাদই দিলাম। এ সব গল্প সকলেই জানেন। এক হস্তীবিশারদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল কিছুদিন আগে, তিনি বলছিলেন দলমা এবং জঙ্গলমহলের মধ্যে হাতির চলাচলের বাৎসরিক রুট ও রুটিন বদলে গেছে গত পাঁচ-ছয় বছরে। কারণ অনুমেয়। অভ্যস্ত পথ ছেড়ে অন্যদিকে চলে আসছে হাতির দল, কোনও দল অস্বাভাবিক রকম দীর্ঘ সময় ধরে থেকে যাচ্ছে একই জঙ্গলে, সঙ্গে সঙ্গে আশেপাশের গাঁ-গঞ্জের ওপর হাতির আক্রমণও বেড়ে যাচ্ছে। সমস্যার সাময়িক সমাধানের জন্য গত বছরের গ্রীষ্মকাল নাগাদ (অর্থাৎ এই টই শুরু হওয়ার কয়েক মাস পরে :P) জঙ্গলমহলে কিছু হাতি ধরার এক প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়। ঠিক হয়েছিল স্পেশাল পারমিশন নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে করা হবে সেই অভিযান। এক-দুজন বনকর্তাকে পটিয়ে পাটিয়ে সেই হাতি ধরা পার্টির সঙ্গে জুড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে ফেলা গেল। খুব কাছাকাছি যাওয়া যাবে না, হয়ত বেশ খানিকটা দূর থেকেই দেখতে হবে, তাও বিপদের আশঙ্কা থাকবেই-- এরকম বললেন তাঁরা, কিন্তু এমন সুযোগ পেলে ছাড়ে কে? শেষ পর্যন্ত অবশ্য কয়েক মাস টালবাহানার পর বাদ সাধল নয়াদিল্লি। সেখান থেকে অভিযানের ছাড়পত্রই এল না। ফলে কাছ থেকে (মানে দূর থেকে) হাতি ধরা আর দেখা হল না আমার।
  • sosen | 111.63.144.190 | ২৩ জুন ২০১৩ ১১:১০534311
  • তা হলে এখন কি হবে? এই টই -ও কি শেষ হবে না?
  • বিশ্বেন্দু | 125.187.39.204 | ২৪ জুন ২০১৩ ১৫:০৫534312
  • বিশ্বের প্রথম হাতি পোষ মানানোর শাস্ত্র
    হরপ্রাসাদ শাস্ত্রী
    (প্রাচীন বাংলার গৌরব থেকে নির্বাচিত অংশ)

    হাতী
    এই যে হাতী ধরা হাতী পোষ মানানো, তাহার চিকিত্সা, তাহার সেবা, যুদ্ধের জন্য তাহাকে তৈয়ার করা – এসব কোথায় হইয়াছিল! এই প্রশ্নের এক উত্তর আছে. আমরা এখন যে দেশে বাস করি, যাহা আমাদের মাতৃভূমি, সেই বঙ্গদেশই এই প্রকাণ্ড জন্তুকে বশ করিতে প্রাথমিক শিক্ষা দেয়. এ দেশের একদিকে হিমালয়, একদিকে লৌহিত্য ও একদিকে সাগর – সেই দেশেই হস্তিবিদ্যার প্রথম উত্পত্তি. সেই দেশেরই এমন এক মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়, যিনি বাল্যকাল হইতেই হাতীর সঙ্গে বেড়াইতেন, হাতীর সঙ্গে খাইতেন, হাতীর সঙ্গে থাকিতেন, হাতীর সেবা করিতেন, হাতীর পীড়া হইলে চিকিত্সা করিতেন, এমন কী একরকম হাতীই হইয়া গিয়াছিলেন. হাতিরা যেখানে যাইত তিনিও সেখানে যাইতেন. কোনও দিন পাহাড়ের চূড়া, কোনও দিন নদীর চড়ায়, কেন দিন নিবিড় জঙ্গলের মধ্যে, হাতীর সঙ্গেই তাহার বাস ছিল. ...অঙ্গদেশের রাজা লোমপাদ বঙ্গবাসীর সুপরিচিত. তিনি রাজা দশরথের জামাই ছিলেন. তাঁহার একবার শখ হইল হাতী আমার বাহন হইবে. ইন্দ্র স্বর্গে যেমন হাতী চড়িয়া বেড়ান, আমিও তেমনি হাতীর উপর চড়িয়া বেড়াইব. কিন্তু হাতী কেমন করিয়া বশ করিতে হয় তিনি জানিতেন না. তিনি সমস্ত ঋষিদের নিমন্ত্রণ করিলেন. ঋষিরা পরামর্শ করিয়া কোথায় হাতীর দল আছে, খোঁজ করিবার জন্য অনেক লোক পাঠাইয়া দিলেন. তাহারা এক প্রকাণ্ড আশ্রমে উপস্থিত হইল. সে আশ্রম শৈলরাজাশ্রিত, পুণ্য এবং সেখানে লৌহিত্য সাগরাভিমুখে বহিয়া যাইতেছে. সেখানে তাহারা অনেক হাতী দেখিতে পাইল, দেখিয়াই বুঝিল যে, এই মুনিই হাতীর দল রক্ষা করেন. ...রাজা সসৈন্যে সেই আশ্রমে উপস্থিত হইয়া ... হাতি তাড়াইয়া লইয়া ... ঋষিদের পরামর্শমত হাতিশালা তৈরি করিয়া সেখানে হাতিদের বাঁধিয়া রাখিয়া ও খাবার দিয়া নগরে প্রবেশ করিলেন. ঋষি...চম্পানগরে আসিয়া দেখিলেন যে তাহার হস্তিগুলি সব রোগা হইয়া গিয়াছে...নানারূপ রোগের সৃষ্টি হইয়াছে. শেষে অনেক সাধ্যসাধনার পর মুনি আপনার পরিচয় দিলেন. তিনি বলিলেন হিমালয়ের নিকটে যেখানে লৌহিত্য নদ সাগরাভিমুখে যাইতেছে, যেখানে সামগায়ন নামে এক মুনি ছিলেন. তাঁহারই ঔরসে ও এক করেণুর গর্ভে আমার জন্ম. আমার নাম পালকাপ্য. আমি হাতিদের পালন করি, তাই আমার নাম পাল, আর কাপ্য গোত্রের আমার জন্ম, সেই জন্য আমার নাম কাপ্য. লোকে আমাকে পালকাপ্য বলে. আমি হস্তিচিকিত্সায় বেশ নিপুণ হইয়াছি. ..তিনি হস্তীর আয়ুর্বেদশাস্ত্র ব্যখ্যা করিলেন. তাহার শাস্ত্রের নাম হস্ত্যায়ুর্বেদ বা পালকাপ্য. ...তাহাতে ক্রিয়াপদ নাই. ...যদিও অঙ্গরাজ্যে চম্পানগরেতাঁহার আয়ুর্বেদ লেখা ও প্রচার হয়, তিনি আসলে বাংলাদেশেরই লোক. পালকাপ্য পড়িতে পড়িতে অনেক স্থানে মনে হয় যেন, উহা অন্য কেন ভাষা হইতে সংস্কৃতে তর্জমা করা হইয়াছে, অনেক সময় মনে হয় উহা সংস্কৃত ব্যকরণের মতে চলিতেছে না. ...কালিদাস ইহাকে অতি প্রাচীণ কাব্য বলিয়া গিয়েছেন. ...কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে হস্তিপ্রচার অধ্যায়ে হস্তিচিকিতসার কথা আছে.

    হাতি নিয়ে এধরনের লৌকিক সাধু ভাষায় লেখা একমাত্র লিখতে পারেন হরপ্রসাদই। তাঁর ৫ খন্ডের রচনাবলী বাংলার অতীত উতসুকের অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে।
  • achintyarup | 69.93.253.206 | ১০ জুলাই ২০১৩ ০৫:৫২534313
  • সুযোগ হলে পালকাপ্য পড়া যাবেখন। মহাভারতের কর্ণ পর্বেও দেখছি গজবহিনী নিয়ে ভয়ানক সব লড়াইয়ের কথা আছে। এবং সেই সব বাহিনী নিয়ে গিয়েছিলেন এই ম্লেচ্ছ দেশের রাজারা-- অঙ্গ, বঙ্গ, পুণ্ড্র, মগধ, তাম্রলিপ্ত-- এই সব জায়গা থেকে। আর হাতিগুলোকে ধরে ধরে নকুল-সহদেব কি পিট্টিই না দিলে। সে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।

    কিন্তু নকুল-সহদেব অশ্বিনীকুমারদের বরে জন্মেছিলেন না? তাঁরা অশ্ববিদ্যাবিশারদ বলেই শুনেছিলাম তো। হাতির বিষয়েও এনারা অনেক কিছু জানতেন নাকি? ডিডি একটু আলো দেবেন কি? মনে এই প্রশ্ন জাগার কারণটা হল একখানা হিন্দি ছড়া। সে এই রকম:

    সোলানখী ঝাড়ুদুম
    যো চড়হে, ক্যহ গিয়া নকুল সহদেব
    ঘর জ্বলে, ঘরনী মরে, স্বামী চলে বিদেশ।

    অর্থাৎ, হাতি যখন কিনতে যাবেন ভাইসব, তখন দেখেশুনে নেবেন। ষোলনখী, ঝাড়ুদুম হাতি কদাপি কিনবেন না। অমন কুলক্ষণ-যুক্ত হাতি ঘরে এলে কি হবে দেখলেনই তো, স্বয়ং নকুল আর সহদেব বলে গিয়েছেন।

    সাধারণত হাতির চার পায়ে মোট আঠেরোটা করে নখ থাকে। সামনের দু পায়ে পাঁচটা করে মোট দশটা, আর পেছনের দু পায়ে চারটে করে, মোট আটটা। তার চেয়ে কম বা বেশি নখওয়ালা হাতিও অনেক সময় দেখা যায়। নখের সংখ্যা বেশি হলে ক্ষতি নেই, কিন্তু কম হলেই সর্বনাশ। আর দুম হল গিয়ে লেজ। হাতির লেজ যদি এমন লম্বা হয়, যে তা মাটি ছুঁয়ে যাচ্ছে, তাহলে সেই হাতি অলক্ষ্মীকে ঝাড়ু দিয়ে এনে ঢোকাবে আপনার ঘরে। অতএব সাবধান।

    সবচেয়ে ভাল হাতি নাকি হতে হবে সম্বলপিঠ, পঙ্খীদুম, আর গ্যাঁড়াখাল। সম্বলপিঠ, অর্থাৎ পিঠখানা বেশ চওড়া মত, ঢেউখেলানো নয়। সম্বলপিঠ হাতি যখন মাল কি মানুষ বইবে, তখন তার পিঠের কোনো একটা জায়গায় বাড়তি চাপ পড়ে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। এই রকম হাতির শক্তিও নাকি বেশি হয়। পঙ্খীদুম হল, পাখির মতন ছোট্ট লেজওয়ালা হাতি। আর গ্যাঁড়াখাল হল, গ্যাঁড়া, অর্থাৎ গণ্ডারের মত খাল অর্থাৎ চামড়াওয়ালা হাতি। সমজদার লোকেরা নাকি দেখে নেন, যে হাতি কেনা হবে, তার চামড়াটা গণ্ডারের চামড়ার মত বেশ একটু মোটা আর গুটলি গুটলি কিনা। তা যদি হয়, তাহলে সে হাতি ভাল। উদ্দেশ্য কিন্তু সেই একই। হাতিকে যে কাজেই লাগানো হোক, তার গায়ে দড়ির বাঁধন তো দিতেই হবে। সেই দড়ির ঘষায় ঘষায় গায়ে ঘা না হয়ে যায়।

    (পশ্চিমেও এক কালে চামড়ার বিভিন্নতা অনুসারে প্রাণীর এক রকম শ্রেণীবিন্যাস করা হত, এবং সেই বিন্যাসে হাতি এবং গণ্ডার দুটি প্রাণীই আবার একই গোত্রভুক্ত। তাদের বলে প্যাকিডার্ম।)

    তবে হস্তিবিশারদ লালজী কিন্তু এই সব লক্ষণ-টক্ষণ বিচারের ব্যাপারে খুব একটা গোঁড়া ছিলেন না। ভদ্রলোক সারা জীবনে বিস্তর হাতি ধরেছেন, বহু হাতি কেনাবেচা করেছেন, এবং এখনকার হস্তিবিশেষজ্ঞরা তাঁকে গুরু বলে মানেন।

    লালজীর কথা সবাই জানেন এখানে। আসামের গৌরীপুরের মহারাজা প্রভাতচন্দ্র বড়ুয়ার দ্বিতীয় পুত্র, রাজকুমার প্রকৃতীশচন্দ্র বড়ুয়া। প্রমথেশ বড়ুয়া ছিলেন তাঁর সহোদর। লালজীর কথা ছাড়া ভারতীয় হাতি নিয়ে লেখা হয় না।
  • dd | 132.167.0.63 | ১০ জুলাই ২০১৩ ০৯:১৪534314
  • নকুল সহদেব দুজনেই অসিযুদ্ধে পারদর্শী হন দ্রোণের ইশকুলে। বিরাট রাজার বাড়ীতে নকুল ঘোড়া আর সহদেব গরুর দেখভাল করতেন। হাতীর কোনো সীনই নেই।

    মহাভারতে পান্ডবেরা ঘোড়ায় চড়তেন না। তবে কেরল থেকে আসা পৌন্ড্র ছিলেন ওদের দলে, উনি হাতীর পিঠে থাকতেন,অশ্বথ্থামার হাতে ফৌত হন। আর অচিন্তো য্যামোন কইলো ,পুর্ব ভারতের রাজা রাজরারা হাতীর পিঠে চড়েই মারপিট করতেন, মোস্ট ফেমাস অব দেম হচ্ছে অসমের ভগদত্ত,তার হাতীর নামও ভগদত্ত ছিলো।

    একেবারে লাস্ট দিনে লাস্ট সময়ে দুর্যোধন হাতীর পিঠে উঠে লড়াই করেন। বোধয় আর রথ কিছু ছিলো না,প্লাস তার ভিসিবিলিটি বাড়ে ,সৈন্যদের মরাল বাড়াতে।

    উপনিষদেও নানান শাস্ত্রের উল্লেখ আছে ইন্ক্লুডিং সর্পবিদ্যা, কিন্তু হস্তীবিদ্যা ছিলো না। বোধয় আর্যাবর্ত্তের সীমান্ত অঞ্চলেই শুধু রণহস্তী ছিলো।
  • siki | 132.177.223.56 | ১০ জুলাই ২০১৩ ০৯:৩৯534315
  • বোঝো, গ্যাঁড়াকে কিনা গণ্ডার বানিয়ে দিল! গ্যাঁড়ার কি এতই মোটা খাল?

    গণ্ডারকে হিন্দিতে বলে গেন্ডা। উচ্চারণটা অনেকটা গেঁডা টাইপের হয়।
  • b | 135.20.82.164 | ১০ জুলাই ২০১৩ ০৯:৪০534316
  • ডিডি একটু চেক করুনঃ পৌন্ড্র কথাটা তো ঘোরতর ভাবে বঙ্গীয়।
  • dd | 69.92.171.43 | ১০ জুলাই ২০১৩ ১০:৩৭534318
  • চেক কোরবো।

    পুন্ড্র হচ্ছে উত্তর বংগো।নট পৌন্ড্রো। পৌন্ড্র রাজা ছিলেন প্রবীর। কেরলের।

    কিন্তু ভুল কইতেও পারি। বাড়ী গিয়ে দেখবো।
  • b | 135.20.82.164 | ১০ জুলাই ২০১৩ ১০:৫৯534319
  • পুন্ড্রের যাঁরা অধিবাসী, তেনারাই তো পৌন্ড্র, অর্থাৎ আমাদের অনার্য্য ভাষায় পোদ। চেক করে জানান তো।

    মহাভারতে একজন পৌন্ড্র বাসুদেবের কথাও আছে, যিনি নিজেকে অসলি কৃষ্ণ বলে দাবী করতেন ও শংখ চক্র গদা ধারণ করতেন।
  • dd | 132.167.14.206 | ১০ জুলাই ২০১৩ ২৩:১৬534320
  • ভো বিবি। পেইচি।

    শুনুন," পান্ড্য। পান্ড্যদেশ মাদুরা ও তিরুনেলভেলি জেলা নিয়ে গঠিত ছিলো। রঘুবংশ অনুযায়ী পান্ড্যদের রাজধানী উরগপুর। টলেমি অনুযায়ী এটি পনডিয়ান রাজ্য। মদৌরা এর রাজধানী" .... আরো রেফারেন্স আছে। বোথ রামায়ন অ্যান্ড মহভারতা।এটা দক্ষিনের দেশ,পষ্টই উল্লেখ আছে। কালী প্রসন্ন সিংহী র টীকাকারেরা বলেছিলেন কেরল।

    আর পুন্ড্র বা পুন্ড্রবর্ধনভুক্তি বহু পুরান,মহাভারত এবং আরো অর্বাচীন লেখায় ও তাম্রশাসনে মেনশনড হয়েছে। খুব জেনেরালি বলতে গেলে বাংলার দিনাজপুর,মালদা,রাজশাহী এবং বগুড়া ও রংপুরের পশ্চিমাংশ নিয়ে গঠিত ছিলো।"

    আমার রেফারেন্স"প্রাচীন ভারতের ভৌগলিক ইতিবৃত্ত"। বেসিক্যালি কানিংহ্যাম, বি সি ল ইঃদের হিস্টরিক্যাল জিওগ্রাফির সংকলন আর অনুবাদ। পাবলিশার বিজয়ন প্রকাশনী।
  • siki | 132.177.223.56 | ১০ জুলাই ২০১৩ ২৩:২০534321
  • পান্ড্য থেকেই পন্ডিচেরি নয় তো?
  • Sibu | 84.125.59.177 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০১:৩১534322
  • ধুত্তোর, গল্পের খোঁজ নাই যত সব পান্ড্য আর পুন্ড্র হচ্ছে।

    অচিন্দিকে ধরে আনা দরকার। তারপর হাতির পায়ের নীচে ফেলে দেওয়া যেতে পারে।
  • achintyarup | 69.93.242.4 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০৪:৫৩534323
  • হে হে! গণ্ডারকে অহমের কোনো কোনো জায়গায় গ্যাঁড়া বলে তো।

    আর পুণ্ড্র বিষয়ে নীহার রঞ্জন কী বলেছেন, শুনুন।

    পুণ্ড্রজনপদের সর্বপ্রাচীন উল্লেখ ঐতরেয় ব্রাহ্মণে, এবং তারপর বোধায়ন-ধর্মসূত্রে। প্রথমোক্ত গ্রন্থের মতে, ইহারা আর্যভূমির প্রাচ্য-প্রত্যন্তদেশের দস্যু কোমদের অন্যতম; দ্বিতীয় গ্রন্থের মতে ইহারা সংকীর্ণযোনি, অপবিত্র; বঙ্গ এবং কলিঙ্গজনদের ইহারা প্রতিবেশী। ঐতরেয়-ব্রাহ্মণের শুনঃশেপ-আখ্যানের এই উল্লেখে দেখা যায়, পুণ্ড্ররা অন্ধ্র, শবর, পুলিন্দ ও মুতিব কোমদের সংলগ্ন এবং আত্মীয় কোম। এই ধরনের একটি গল্প মহাভারতের আদিপর্বে আছে, একাধিক পুরাণেও আছে; সেখানে কিন্তু পুণ্ড্ররা অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ এবং সুহ্মদের ঘনিষ্ঠ জ্ঞাতি। মানবধর্মশাস্ত্রে পুণ্ড্রদের বলা হইয়াছে ব্রাত্য ক্ষত্রিয়, যদিও মহাভারতের সভাপর্বে বঙ্গ ও পুণ্ড্র উভয় কোমকেই শুদ্ধজাত ক্ষত্রিয় বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে। কর্ণ, কৃষ্ণ এবং ভীমের যুদ্ধ এবং দিগ্বিজয় প্রসঙ্গেও মহাভারতে পুণ্ড্রকৌমের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। কর্ণ সুহ্ম, বঙ্গ এবং পুণ্ড্রদের পরাজিত করিয়াছিলেন এবং বঙ্গ ও অঙ্গকে একটি শাসন-বিষয়ে পরিণত করিয়া নিজে তাহার অধ্যক্ষ হইয়াছিলেন। কৃষ্ণও একবার বঙ্গ ও পুণ্ড্রদের পরাজিত করিয়াছিলেন। কিন্তু ভীমের দিগ্বিজয়ই সমধিক প্রসিদ্ধ। তিনি মুদ্গগিরির (মুঙ্গের) রাজাকে নিহত করিয়া প্রতাপশালী পুণ্ড্ররাজ ও কোশীনদীর তীরবর্তী অন্য এক ভূপালকে পরাভূত করেন, এবং তাহার পর বঙ্গরাজকে আক্রমণ করেন। যাহাই হউক, উপরোক্ত উল্লেখগুলি হইতে বুঝা যাইতেছে, পুণ্ড্রদের জনপদ অঙ্গ, বঙ্গ এবং সুহ্ম কোমদের জনপদের সংলগ্ন, এবং হয়ত ইহারা সকলেই একই নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয়ত, এই জনপদের অবস্থান মুদ্গগিরি বা মুঙ্গেরের পূর্বদিকে এবং কোশীতীর-সংলগ্ন। জৈনদের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থ কল্পসূত্রে গোদাসগণ-নামীয় জৈন সন্ন্যাসীদের তিন-তিনটি শাখার উল্লেখ আছেঃ তাম্রলিপ্তি শাখা, কোটিবর্ষ শাখা, পুণ্ড্রবর্ধন শাখা। এই তিনটি শাখার নামই বাঙলার দুইটি জনপদ এবং একটি নগর হইতে উদ্ভূত। কোটিবর্ষ পুণ্ড্রবর্ধনের অন্তর্গত প্রসিদ্ধ নগর। খ্রীষ্টপূর্ব আনুমানিক দ্বিতীয় শতকের মহাস্থান-ব্রাহ্মী লিপিতে এক পুন্দনগল বা পুণ্ড্রনগরের উল্লেখ আছে। এই পুন্দনগলই বোধহয় ছিল তদানীন্তন পুণ্ড্রের রাজধানী, বর্তমান বগুড়া জেলার মহাস্থান, যাহার পুরাতন ধ্বংসাবশেষ ঘেঁষিয়া এখনও করতোয়ার ক্ষীণধারা বহমান। এই করতোয়ারই তীর্থমহিমা মহাভারতের বনপর্বের তীর্থযাত্রা অধ্যায়ে উল্লিখিত হইয়াছে। লঘুভারতের কথায় "বৃহৎপরিসরা পুণ্যাঃ করতোয়া মহানদী"।

    কিন্তু এইবার শিবুদা আমারে লিচ্চয় হাতির পায়ের নীচে ফেলবে।
  • C | 161.141.84.239 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০৪:৫৯534324
  • আরে হাতি কই?
    হাতি হাতি করে ছুটে এসে দেখি করতোয়া বয়ে যাচ্ছে। কয়েকটা হাতিকে জলে নামিয়ে দিন না, একটা শুঁড়ে জল তুলে হুশ করে আরেকটাকে ভিজিয়ে দিক। ঃ-)
  • achintyarup | 69.93.242.4 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০৫:১৬534325
  • কিন্তু হাতির বিষয়েও নীহাররঞ্জন দু পয়সা দিয়ে গেছেন দেখছি। এই নিন।

    বাঙলাদেশের রাষ্ট্রের সামরিক শক্তি ও সংস্থাপনার মধ্যে হস্তীর একটি প্রধান স্থান ছিল। গ্রীক ঐতিহাসিকদের বিবরণীতে পাই, Prasioi = প্রাচ্য ও Gangaridae = গঙ্গারাষ্ট্রের সম্রাট Agrammes বা ঔগ্রসৈন্যের সামরিক শক্তি অনেকটা হস্তীর উপর নির্ভর করিত। পাল ও সেন রাজাদের হস্তী, অশ্ব ও নৌবল লইয়াইঅ ছিল সামরিক শক্তি। এই হস্তি আসিত কোথা হইতে? কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে আছে, কলিঙ্গ, অঙ্গ, করূষ এবং পূর্বদেশীয় হস্তীই হইতেছে সর্বশ্রেষ্ঠ। এই পূর্বদেশ বলিতে কৌটিল্য বাঙলাদেশ, বিশেষ-ভাবে উত্তর-বঙ্গ ও কামরূপের পার্বত্য অঞ্চলের কথা বলিতেছেন, তাহা অনুমান করা যাইতে পারে। এখনও তো গারো পাহাড় অঞ্চল হাতির জায়গা। আর এই বাঙলাদেশেই তো পরবর্তিকালে হাতি ধরার এবং হস্তী-আয়ুর্বেদ নামে এক বিশেষ বিদ্যা ও শাস্ত্রের উদ্ভব হইয়াছিল, সে কথা হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বহুদিন আগেই প্রমাণ করিয়া গিয়াছেন। প্রাচীন গৌড়দেশ যে হাতির জন্য বিখ্যাত ছিল তাহা রাজতরঙ্গিণীর কবির নিকটও সুবিদিত ছিল। প্রাচ্য ও গঙ্গারাষ্ট্র দেশও একই কারণে বিখ্যাত ছিল, তাহা মেগাস্থিনিসের বিবরণে, এবং কামরূপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে (গারো পাহাড়ে?) যূথবদ্ধ হাতি বিচরণ করিত তাহা য়ুয়াম্‌ -চোয়াঙের বিবরণে জানা যায়।
  • Sibu | 183.60.205.153 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০৫:১৭534326
  • হাতির অর্ডার দিলাম। ঃ-(
  • b | 135.20.82.164 | ১১ জুলাই ২০১৩ ০৯:৩৩534327
  • লজ্জার মাতা খেয়ে মুজতবার সেই গল্পটা বলব?
    সেই ইংরেজ, ফরাসী, জার্মান আর আমেরিকানের হাতি নিয়ে এসে-র কম্পিটিশন?

    ইংরেজ বুট, বন্দুক, মাল পত্তর বাগিয়ে জাহাজে চড়ে বসল। আর দু বছর পরে লিখলো "এলিফ্যান্ট হান্টিং ইন কেনিয়া অ্যান্ড আসাম"।

    ফরাসী চীজ আর ওয়াইনের বোতল নিয়ে ছুটলো চিড়িয়াখানায়। সেখানে দু বছর ধরে হাতি দেখে লিখলো ১০ লাইনের একটি ছোট্টো কবিতা, লেজামুর দেসেলেফ্যাঁ, অর্থাৎ হস্তীপ্রেমকথা।

    জার্মান দু বছর পরে নামালো ৭ ভল্যুমের একটি এনসাইক্লোপিডিয়া এলিফ্যান্টিকা জার্মানিকা। তাতে হাতির ইভোল্যুশন, বায়োলজি, কালচারাল হেরিটেজ, মানুষের সাথে তার রিলেশন ইত্যাদি ইত্যাদি বিশদে বলা আছে।

    আর আমেরিকান দু বছর পরে লিখলো একটি শ দেড়েক পাতার প্যামফ্লেটঃ "এলিফ্যান্ট্স ঃ মেকিং দেম বিগার অ্যান্ড বেটার "
  • achintyarup | 69.93.243.222 | ১২ জুলাই ২০১৩ ০৫:০৭534329
  • শিবুদার অর্ডার দেওয়া হাতি এসে পড়ার আগে নীহার রায় থেকে আরও খানিকটে টুকে রেখে যাই।

    সুপ্রাচীন কাল হইতেই পূর্বভারতে হস্তী অন্যতম প্রধান বাহন বলিয়া গণ্য হইত... রাজ-রাজড়া, সামন্ত-মহাসামন্তরা, বড় বড় ভূম্যধিকারীরা হাতীতে চড়িয়াও যাতায়াত করিতেন, সন্দেহ নাই। চর্যাগীতি ও দোহাকোষে হাতির রূপক আশ্রয়ে অনেকগুলি গীত স্থান পাইয়াছে, এবং রূপকগুলি এমন, মনে হয়, এই প্রাণীটির সঙ্গে বাঙালীর প্রাণের গভীর পরিচয় ছিল। খেদা পাতিয়া আজিকার দিনে যেমন করিয়া হাতী ধরা হয় তখনও তেমন করিয়াই হাতী এবং হাতীশিশু (করভ) ধরা হইত। বন্য হাতী সুদৃঢ় করিয়া বাঁধিয়া রাখা হইত। চর্যাগীতিতে কাহ্নুপাদের একটি গীত আছে,

    এবং কার দৃঢ় বাখোড় মোড়িউ।
    বিবিহ বিআপক বাহ্মণ তোড়িউ।
    কাহ্ন বিলসঅ আসব মাতা।
    সহজ নলিনীবন পইসি নিবিতা।।

    কিন্তু বন্যহস্তী কোনো বাধা বন্ধনই মানিত না, সমস্ত শিকল ছিঁড়িয়া খুঁটি ভাঙ্গিয়া পদ্মবনে গিয়া প্রবেশ করিত। পাগলা হাতীর বর্ণনা মহীধরপাদের একটি গানেও আছে।

    মাতেল চীঅ গএন্দা ধারই।
    নিরন্তর গঅণন্ত তুসেঁ ঘোলই।।
    পাপ পুণ্ণ বেণি তোড়িঅ সিকল মোড়িঅ খম্ভাঠানা।
    গঅন টাকলি লাগিয়ে চিত্ত পইতি নিবানা।।

    আমার মত্ত চিত্তগজেন্দ্র ধাবিত হইতেছে; নিরন্তর গগনে সকল কিছু ঘোলাইয়া যাইতেছে। পাপ ও পুণ্য উভয়েই শিকল ছিঁড়িয়া এবং সকল খাম্ভা মাড়াইয়া গগন-শিখরে গিয়া পৌঁছিয়া একেবারে শান্ত হইয়াছে।

    উত্তর ও পূর্ব-বাঙলার পার্বত্য নদীর তীরে হাতীরা ঘুরিয়া বেড়াইত যথেচ্ছে ভাবে। সরহপাদ বলিতেছেন,

    মুক্কউ চিত্তগজেন্দ করু এত্থ বিঅপ্প ণু পুচ্ছ।
    গঅন গিরী ণইজল পিএউ তিহুঁ তড় বসউ সইচ্ছ।।

    চিত্ত গজেন্দ্রকে মুক্ত কর; এ বিষয়ে আর কোনো বিকল্প জিজ্ঞাসা করিও না। গগন গিরির নদী জল সে পান করুক, তাহার তটে স্বেচ্ছায় সে বাস করুক।

    হাতী ধরিবার আগে সারিগান গাহিয়া হাতীর মনকে বশ করিতে হইত। বীণাপাদের একটি গানে আছে,

    আলি কালি বেণি সারি মুনিআ।
    গঅরব সমরস সান্ধি গুণি আ।।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন