এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • ডিয়ার ডাম ডাইরী

    Sibu
    বইপত্তর | ০৮ মে ২০১২ | ৩৫০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৮ মে ২০১২ ২১:৩৩546956
  • বড়রা কি মানুষ হতে পারে?

    এই যে, তুমি কি জান যে অন্যের ডাইরী পড়াটা মোটেই ভাল না? যদি আমি তোমায় পারমিশন দেই তো ঠিক আছে। তুই অ্যাঞ্জেলিন হলে আমি পারমিশন দেই নি। সুতরাং পড়া বন্ধ কর।

    আর যদি তুমি বাবা কি মা হও - আমি জানি লোকেদের গাধা বা বুদ্ধু বলতে নেই। আর সব গ্রোস শারীরিক ব্যাপার নিয়েও আলোচনা করতে নেই। কিন্তু এটা হল গে আমার ডাইরী। আর আমি ওসব বলি নি তো, লিখেছি। আর, এ-সব লেখার জন্য তুমি যদি শাস্তি দাও তো তুমি আমার ডাইরী পড়েছ। কিন্তু তোমারও আমার ডাইরী পড়ার পারমিশন নেই।

    এখন, আমি শপথ করে বলছি, এখানে যা কিছু লেখা আছে সব সত্যি। অন্ততঃ যতটা সত্যি হওয়া উচিৎ বলে আমার মনে হয়।

    স্বাঃ - জেমি কেলী

    পুঃ - কেমন জন্তু অন্যের ডাইরী পড়ে? অ্যা?

    পুঃপুঃ - ওঃ, সে একটা নোংরা বড় জন্তু, সেষ অবধি সেটাকে কাসুন্দি, পেয়াঁজ দিয়ে বান রুটিতে ভরে খাওয়া হয়। উইঙ্ক, উইঙ্ক।

    কৌতুহলে বেড়াল মরে।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৮ মে ২০১২ ২১:৫৩546967
  • সোমবার, ০২

    ডিয়ার ডাম ডাইরী

    তুমি কি জান, টীচারেরা পাদে না!

    বছরে আট মাস, দৈনিক সাত ঘন্টা আমি টিচারদের সাথে কাটাই। টীচারেরা পাদলে আমি ঠিকই জানতাম। মা পাদে, বাবা পাদে। আমার বীগল কুকুরটাও পাদে। বীগলের পাদে চোখ জ্বালা করে, আর ফুসফুস বুক ছেড়ে মুখ দিয়ে পাইলে যেতে চায়।

    এমনকি আমিও পাদি। একবার একটা এমন লম্বা পাদ দিয়েছিলাম যে পাদতে পাদতে ভাবছিলাম, কখন পাদতে শুরু করেছিলাম।

    যাকগে, আজকে টীচারদের পাদ নিয়ে চিন্তা করতে করতেই ইস্কুলের সময় পার হয়ে গেল। তাই আর কিছু পড়া হয় নি। মনে হয় টীচারদের আরো চেষ্টা করা উচিৎ (আমাকে পড়াতে, পাদতে নয়)।

    সিরিয়াসলি, টিচারদের খুব একটা দোষ নেই। বিষুবরেখা কত ইন্টারেস্টিং, টিম্বাকটুর লোকেদের ড্রেস কত সুন্দর, এই সব কথা নর্মাল লোকেদের বিশ্বাস করানো খুব শক্ত কাজ বলেই মনে হয় (অন্য দেশের ফ্যাশন দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় লোকটা বাজী রেখে কাকতাড়ুয়া সেজেছে)।
  • hu | 22.34.246.72 | ০৮ মে ২০১২ ২১:৫৯546978
  • ব্যাপক শুরু হয়েছে। চলুক!
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৮ মে ২০১২ ২২:২৪546989
  • লাকিলি, একজন টিচারকে আমার সব-সময় ভাল লাগে। মিস অ্যান্ডারসন, আমাদের আর্ট টিচার। মিস অ্যান্ডারসন হলেন আমার BTF। BTF হল গে BFF (বেস্ট ফিমেল ফ্রেন্ড), কিন্তু টীচারদের মধ্যে। মিস অ্যান্ডারসনকে খুব সুন্দর দেখতে, একদম হোটেলের ওয়েট্রেসদের মত। আর উনি সব ইম্পর্ট্যান্ট ব্যাপার খেয়াল করেন। আমি একটা নতুন চকমকি গুঁড়ো তৈরী করেছি (এখন আমি একটা গোপন চকমকি ব্লেন্ড ব্যবহার করি, লাল, সোনালী আর ম্যাজেন্টা দেওয়া। হেব্বি জিনিষ)।

    যদি মিস ব্লন্ডি ব্লন্ড-থ্যাপি অ্যাঞ্জেলিন না থাকত তো আর্ট ক্লাসটা একেবারে ঝক্কাস হত। অ্যাঞ্জেলিন মোটেও আর্টিস্ট না। ঐ ব্লন্ড-থ্যাপিটা যখন কিছুর পাশে দাঁড়ায়, তখন সেই জিনিষটাকে তুলনায় কুচ্ছিৎ লাগে। ভেবে দেখলে এটাকে এক রকমের ভ্যান্ডালিজম বলাই যায়। হায়, আইনে এর জন্যে কোন শাস্তি লেখা নেই।

    ওহ্‌, মা আমাকে শেষ অবধি সেই জুতোজোড়া কিনে দিয়েছে। বাবা ছেলে তো, তাই বাবার মোটে দু'জোড়া জুতো। ছেলে হবার একটা খারাপ দিক হল, অদরকারী জুতোটা যে কত দরকারী সেটা তাদের বোঝানো যায় না।

    মা এমনিতে আমার ঘ্যানঘ্যানানিতে কান দেয় না। কিন্তু মা মেয়ে তো - অন্ততঃ এক সময়ে মেয়ে ছিল। তাই মায়ের অনেক-অনেক জুতো, আর অন্য মেয়েদের অনেক অনেক জুতো কত দরকারী সেটা বোঝে।

    যাই হোক, এই জুতোজোড়াতে আমাকে প্রায় কুড়ি বছর বয়েসী লাগছে।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৯ মে ২০১২ ০১:২৯547000
  • মঙ্গলবার, ০৩

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    আমাদের সোশ্যাল স্টাডিজ টীচার, মিঃ ভ্যান্ডয়, কখনো হাসেন না। জানি বিশ্বাস করা খুব শক্ত। সবাই তো কিছু না কিছু নিয়ে হাসে, তাই না?

    ইসাবেলার ভাই যখন ঝামেলায় ফাঁসে তখন ইসাবেলা হাসে। অ্যাঞ্জেলিনের যখন মনে হয় ও একটা ঝর্ণা বা ইউনিকর্নের চেয়ে কত বেশী সুন্দরী, তখন অ্যাঞ্জেলিন হাসে। আমি যখন ভাবি একটা ইউনিকর্ন অ্যাঞ্জেলিনকে ঝর্ণার ওপর থেকে লাথি মেরে ফেলে দিলে কেমন হবে, তখন আমিও হাসি। কিন্তু মিঃ ভ্যান্ডয় একেবারে হাসেন না। আমার মনে হয় বড় হয়ে গেলে যেমন দাঁত পড়ে যায়, বা ফ্যাশন সেন্স নষ্ট হয়ে যায়, সেই রকম সেন্স অফ হিউমারও নষ্ট হয়ে যায়।

    আমাদের সোশ্যাল স্টাডি ক্লাসে আমরা এখন জন্তুদের সোশ্যাল গ্রুপ নিয়ে পড়ছি। পিঁপড়ে, শিম্পাঞ্জী বা পাখিরা কেমন করে একসঙ্গে থেকেও অন্যদের সহ্য করে সেই সব আমাদের শেখানো হচ্ছে। পার্সোন্যালি আমি পিঁপড়েদের এত ঘেন্না করি যে, আমি যদি একটা পিঁপড়ে হতাম তো আমি নিজেই নিজে মাড়িয়ে দিতাম।

    ইসাবেলা বলে যে টিভিতে এডুকেশনাল চ্যানেল দেখেই আমাদের হোমওয়ার্ক করে ফেলা যায়। যদিও আমি যখনই এডুকেশনাল চ্যানেল খুলি তখনই দেখি চিতা একটা কিউট অ্যান্টিলোপকে তাড়া করছে দেখায়। আমাদের ক্লাসে যা পড়ায় তা কখনোই দেখায় না।

    ইসাবেলা বলে যে ও যদি একটা কিউট অ্যান্টিলোপ হত, আর ওকে একটা চিতা তাড়া করত, তো ও আর একটা কিউট অ্যান্টিলোপকে লাথি মেরে তার পা ভেঙে দিত। তখন চিতা ওকে ফেলে সেই পা ভাঙা অ্যান্টিলোপটাকে ধরত।

    খুব চালাক, অ্যাঁ? শুধু, আমাই মোটামুটি শিওর যে ইসাবেলা যদি একটা কিউট অ্যান্টিলোপ হত তো আফ্রিকার সব কিউট অ্যান্টিলোপেরা অ্যাদ্দিনে চিতা শিকার করে খেতে শিখে যেত। কি ভাগ্যিস ইসাবেলা কিউট ছোট্ট অ্যান্টিলোপ হয়ে জন্মায় নি! ভাগ্যকে এ নিয়ে আমাদের অনেক বেশী কৃতজ্ঞতা জানানো উচিৎ।

    ইসাবেলায় কথা যখন এল, আজকে দেখি সে আড়াচোখে আমার নতুন জুতোর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ওটা পড়ে আমাকে কেমন কুড়ি বছরের মত বড় লাগছে তাই দেখছে। কিন্তু ও যেমন আড়চোখে দেখছে, আমিও তেমনি ভাব করলাম যেন আমি ওর দেখা খেয়াল করি নি। কেন না বন্ধুদের তাই করার কথা।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৯ মে ২০১২ ০২:৫২547004
  • ডাম ডাইরী, আমি কি তোমাকে বলেছি ইসাবেলার সাথে কি করে আমার বন্ধুত্ব হল? ইসাবেলার সাথে আমার এক মুহূর্তে বন্ধুত্ব হয়ে গেছল। লোকে বলে না - অ্যাট ফার্স্ট সাইট, তেমনি। অ-নে-ক দিন আগে, আমি যখন ক্লাস টু-তে পড়ি, তখনকার কথা। প্রথম দিন ক্লাসে মিস বেকার সবাইকে নাম বলতে বলেছেন। ইসাবেলা উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার নাম ইসাবেলা ভিনচেল্লা। সেই শুনে লুইস ক্লার্ক হেসেছে - আর ব্যাস ...। ইসাবেলা ব্যাটার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কি মার, কি মার। ঠিক যেন একটা গোবদা জাইলোফোন বাজানো হচ্ছে। অবশ্য সত্যের পথে থকতে হলে বলতেই হবে লুইসের গলা কখনো কখনো জাইলোফোনের চেয়ে উঁচু তারে বাজছিল।

    তিনজন টিচার আর অর্ধেক ক্লাস মিলে অনেক কষ্টে ইসাবেলাকে ছাড়িয়ে আনতে পারে না-আ-আ। সবাই জানে, হিংসা দিয়ে কোন সমস্যার সমাধান হয় না, যদি না সমস্যা হয় - হে ইসাবেলা, তোর কি সমস্যা, অ্যাঁ? আমি ইসাবেলাকে ডেকে বললাম - তুই একটা ইঁদুর কলের মত। কেউ খোঁচানোর জন্যে হাত দিয়েছে কি - খচাং। সেটা ইসাবেলার ভারী পছন্দ হয়ে গেল, আর আমরা বন্ধু হয়ে গেলাম। তবে মানতেই হবে, ইসাবেলার সাথে, কখনো কখনো, ইঁদুর ধরা কলের চেয়ে অ্যাটম বোমার মিল বেশী।
  • kiki | 69.93.244.188 | ০৯ মে ২০১২ ১১:৩৫547005
  • শিবুদা,
    বেশ হচ্ছে!
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৯ মে ২০১২ ২১:১৪547006
  • বুধবার, ০৪

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    আজকে আর্ট ক্লাসে মিস অ্যান্ডারসন পরের অ্যাসাইনমেন্টের জন্য আমাদের কাছে আইডিয়া চাইলেন। আমি বললাম চকমকি গুঁড়ো আর নকল জুয়েল দিয়ে সাজানো সেলফ-পোর্ট্রেট করার কথা। অ্যাঞ্জেলিন বলল কোলাজ (আঘ্‌ঘ্‌)। ইসাবেলা বলল সুন্দর করে সাজিয়ে তালা বানাবে। সেই তালা ঘরের দরজায় লাগালে ভাইয়েরা আর ঘরে ঢুকতে পারবে না।

    মিস অ্যান্ডারসনের বুদ্ধি-সুদ্ধি এমনিতে ভালই, কিন্তু আজকে উনি অ্যাঞ্জেলিনার কোলাজের আইডিয়াটাই হোমওয়ার্কের জন্য পছন্দ করলেন। মনে হয় শৈল্পিক প্রতিবন্ধীদের জন্য হোমওয়ার্কের কোটা চালু হয়েছে, তাই এরকম হল। সবাই তো আর বড় আর্টিস্ট হবার সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায় না (এই আমার মত, মানে যদি না আমি সায়েন্টিস্ট হয়ে টিভি শো করে অনেক টাকা করব বলে ঠিক না করি)। তাই যে সব বাচ্চারা হাতেও পায়ের আঙুল নিয়ে জন্মেছে তাদের করতে পারার মত হোমওয়ার্ক টীচারদের কখনো কখনো দিতে হয় (এই যেমন কোলাজ)। যদি না জেনে থাক, কোলাজ হল ম্যাগাজিন থেকে ছবি কেটে আঠা দিয়ে খাতায় আটকানো। এমন কিছু শক্ত ব্যাপার না।

    একবার একটা ফীল্ড ট্রীপে চিড়িয়াখানায় দেখেছিলাম একটা ছাগল খবরের কাগজ আর বুড়ীর সুতো খেয়ে সারা খাঁচা ভত্তি করে কোলাজ ছড়িয়ে রেখেছে। ছাগলের পক্ষে চমৎকার আর্ট। কালেক্ট করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু টিচার দেখে ফেলল আমি ছাগলের আর্ট টিফিন বাস্কে ঢোকাচ্ছি।

    মিস অ্যান্ডরসনের ম্যাগাজিন কালেকশন আর একটু ভাল হলে কোলাজ প্রজেক্টও খুব খারাপ লাগত না। কিন্তু ওনার কাছে শুধু - 'বিয়ে না করে কুকুর পুষুন', বা, 'একার জন্যে রান্না করা মন্দ কি', শুধু এই সব ম্যাগাজিন ছিল।

    হ্যাঁ, অনেকগুলো বিয়ের কনে সাজানোর ম্যাগাজিনও ছিল। কিন্তু তাতে কনেদের ছবিগুলো কেউ নষ্ট করে দিয়েছে, দাঁতে কালো রং করে, আর বুকে তীর ঢুকিয়ে। এ দিয়ে কোলাজ করতে হলে একটা বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে প্রজেক্ট করতে হয়। সেই ছেলেটা একটা ভাড়ার বিয়েবাড়ীর কাছে থাকে, তীর-ধনুক নিয়ে খেলতে ভালবাসে, কিন্তু জঘন্য টীপ।

    ইসাবেলা বলে এই সব ম্যাগাজিন কেনার মানে মিস অ্যান্ডারসন বিয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন। ওনাকে এত সুন্দর দেখতে যে এ কথাটা ঠিক বিশ্বাস হতে চায় না। ও'পাড়ার মিসেস লেব্যু-র চেয়ে মিস অ্যান্ডরসনকে অনেক ভাল দেখতে। মিসেস লেব্যুর তো এর মধ্যে পাঁচ কি ছ'টা বিয়ে হয়ে গেল। ইসাবেলা বলে, মিস অ্যান্ডরসনের নির্ঘাৎ কিছু একটা দোষ আছে। তাতেই ওনার সৌন্দর্য্য ঢেকে যায়। এ নিয়ে ইসাবেলা কি সব হিসাব-পত্তর করেছে।
  • শ্রী সদা | 127.194.193.244 | ০৯ মে ২০১২ ২১:২৯547007
  • বেশ উইটি লেখা। চলুক :-)। অর্জিনালটাও পড়ার ইচ্ছে রইল।
  • Binary | 208.169.6.50 | ০৯ মে ২০১২ ২১:৩৫546957
  • শিবুদা, বেশ ভলো লাগছে পড়তে। এটা কি অনুবাদ ? না তোমার কল্পনা-ও আছে ? মেয়ের ডেস্কে দেখেছি, "ডিয়ার ডাম্ব ডায়ারী" আর "ডায়ারী ওফ হুইম্পি কিড", পড়িনি কখনো।
  • Binary | 208.169.6.50 | ০৯ মে ২০১২ ২১:৩৭546958
  • পশ্চিমী আধুনিক শিশু সাহিত্য নিয়ে, আমার একটু নাক সিটকানো ভব ছিলো, কিন্তু, দু একটা হতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখে খারাপ লাগেনি।
  • একক | 24.99.179.64 | ০৯ মে ২০১২ ২১:৫৮546959
  • ডাম্ব ডায়রি দারুন লেখা . আমার তো ব্যাপক লাগে ! বাংলাতেউ মন্দ হচ্ছে নাহ ... আরো চলুক
  • প্পন | 132.252.231.6 | ০৯ মে ২০১২ ২২:০২546960
  • দুটোই মেয়ের জন্য কিনে নিজেই গোগ্রাসে পড়ে শেষ করেছি (মেয়ের এখনো পড়ার বয়স হয়নি)। শিবুদার হাতে লেখাটা আরো খোলতাই হয়েছে। চলুক চলুক।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৯ মে ২০১২ ২২:২০546961
  • বাইনারী,

    এটা অনুবাদ। ডাম্ব ডাইরী আমার খুব প্রিয় লেখা। আমিও এটা মেয়ের বইয়ের তাকেই আবিষ্কার করেছিলাম।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৯ মে ২০১২ ২২:৪২546962
  • ইসাবেলা বলে মিস অ্যান্ডারসনের মত সুন্দরী হলে ব্রেকফাস্টে স্যালাড খেলে মানিয়ে যাবে, কিন্তু ম্যাগি সস দিয়ে দাঁত মাজলে মানাবে না। ইসাবেলার মতে অ্যাঞ্জেলিন কাসুন্দি দিয়ে দাঁত মাজলে লোকে কিছু বলবে না, কিন্তু চিড়িয়াখানা পুড়িয়ে দিলে মার লাগাবে।

    ইসাবেলা বলে ও পপকর্ণে মেয়োনিজ মেখে খেলে ঠিক আছে। কিন্তু চিড়িয়াখানা পুড়িয়ে দিলে ক্ষমা নেই। তবে চিড়িয়াখানা পোড়ানোর সময় মিস অ্যান্ডারসন আর অ্যাঞ্জেলিন যদি ওর সাথে থাকে তো লোকে ছেড়ে দিতেও পারে। ওর মতে আমি চিড়িয়াখানায় দ্রষ্টব্য হবার মত সুন্দরী। আমার মনে হয় আমার জুতোটা দেখে হিংসে করে ও এই সব বলছে। ঐ জুতোতে আমাকে কুড়ি বছরের মত বড় দেখাচ্ছে কি না!

    এক সময়ে ইসাবেলার এই সব টিপ্পনির জবাব দিতে পারতাম না। এখন এত বচ্ছর ইসাবেলার বন্ধু হয়ে থেকে কি করতে হবে শিখে গেছি।

    চিড়িয়াখানার টিপ্পনিটি কাটার পর সারা বিকেল ইসাবেলা চুল থেকে কালো-দাঁতী তীর-বেঁধা কনের ছবি ছাড়ালো। ওটা আমিই ওর চুলে চিপকে দিয়েছিলাম তো। মনে হয় এখন আমরা সমান-সমান।
  • I | 24.99.81.34 | ০৯ মে ২০১২ ২৩:২৬546963
  • হেব্বি হচ্ছে।
  • Tim | 208.82.17.218 | ১০ মে ২০১২ ০১:০৩546964
  • শিবুদার অনুবাদ দারুণ। অজ্জিনালটাও একটু দেখলাম কাল।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ১১ মে ২০১২ ০৩:৩৬546965
  • বেস্পতিবার, ০৫

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    ওকে, শেষ অবধি ইসাবেলার সাথে সমান-সমান হওয়া অসম্ভব। সেই যে সেবার ইসাবেলার ছোটলোক দাদাটা ওর লুকনো চকোলেট চুরি করে খেয়েছিল। তখন ইসাবেলা রাত্তিরে দাদার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত দাদার মুখে কেঁচো ভরে, মুখ স্কচ-টেপ দিয়ে আটকে দিয়েছিল। দাদার অবস্থা একবার ভাব। সেই থেকে ক্যান্ডি দেখলেই ইসাবেলার দাদা ওয়াক তোলে। ইসাবেলার খাতায় একেই বলে সমান হওয়া।

    যদিও কেঁচো-কান্ডটা চকোলেট নিয়েই হয়েছিল, আর ইসাবেলার হিউজ চকোলেট ক্রাশ, চকোলেট ছাড়া অন্য ব্যাপার নিয়েও ও মারাত্মক কান্ড করতে পারে। যখন ও 'হয়ে যাক' বলে হুংকার দেয়, সেটা একটা ব্যাপার।

    আজকে সকালে ইসাবেলা আমার হইয়ে দিল। আমাকে কালকের ছবিকান্ড নিয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপালের অফিসে ডেকে পাঠাল।

    শান্তভাবে ভেবে দেখলে দোষটা কিন্তু এঞ্জেলিনের। চুলে ছবি চিপকে দেওয়া নিয়ে নালিশ ইসাবেলাই করেছিল। কিন্তু কোলাজের আইডিয়া, যার থেকে এত কান্ড, সেটা তো এঞ্জেলিনরই।
  • Nina | 78.34.167.250 | ১১ মে ২০১২ ০৫:০৫546966
  • শিবু
    দারুণ --দারুণ---কর গুণ রে তোর!
  • I | 24.96.226.39 | ১১ মে ২০১২ ২১:৫১546968
  • ইসাবেলাটা বহুত খচ্চর তো !
  • Sibu | 84.125.59.177 | ১১ মে ২০১২ ২৩:৫১546969
  • অফিসের কেরানী দিদিমনিরা ভাল হয় এমন ইস্কুল হয়তো আছে। সে সব ইস্কুলের কেরানী দিদিমনিদের গায়ের থেকে বাজে কফি আর বাটারস্কচ ল্যাবেঞ্চুষের গন্ধ ছাড়ে না। হয় তো শুধু আমাদের ইস্কুল বাদে আর সব ইস্কুলই সেই রকম ভাল।

    তবে শুধু কেরানী দিদিমনিদের দোষ দেওয়া ঠিক হবে না। বড়রা অনেকেই সারাদিন ধরে কফি খায়, উদ্দেশ্য - জেগে থাকা ও মুখে গন্ধ করা।

    তবে ল্যাবেঞ্চুষের কথা আলাদা। অফিসের কেরানী-দিদিমনিরা ছাত্রদের কষ্ট দিতে ভালবাসে, আমি হলে আরো বেশী ভালবাসে। অফিস ঘরে এক জার বাটারস্কচ ল্যাবেঞুষ রাখা আছে। কেরানী দিদিমনিরা সেটার দিকে তাকায় আর ভাবে - এই ল্যাবেঞ্চুষগুলো জঘন্য। এগুলো ফুরোলে ভাল চকলেট নিনতে হবে। এখন যে ছেলে-মেয়েগুলো আসবে তাদের এগুলো বিলিয়ে দেই।

    তো যে ছেলে/মেয়েটি এর পরে এসে যায়, প্রায়ই সে হল আমি।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ১৪ মে ২০১২ ২০:৫৯546970
  • ইসাবেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপাল মিঃ ডেভনের কাছে আমার নামে লাগিয়েছিল। মিঃ ডেভন টাই পরেন, অথচ ভাল লোক। উনি আমাকে ধরে গুচ্ছের জ্ঞান দিলেন। লোকের চুলে কিছু আটকে দেওয়া ঠিক নয়, পরস্পরের সাথে ভাল ব্যবহার করা উচিৎ, যদি সবাই প্রতিশোধ নিতে মেতে ওঠে তো দুনিয়ার কি হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি, ব্লাহ্‌, ব্লাহ্‌ ...।

    এই সব জ্ঞান-ট্যান দিয়ে মিঃ ডেভন কি শাস্তি দেবেন তাই ভাবছিলেন। তো আমি দেখি ওনার সেই প্যাঁচার চোখের মত চশমাটা চোখে নেই। জানতে চাইলাম কি হয়েছে। উনি বললেন ওনার ভাইঝি ঘ্যানঘ্যান করে চোখ অপারেশন করিয়েছে বলে চশমার আর দরকার হচ্ছে না। মানতেই হল ওনার ভাইঝির আইডিয়াটা মন্দ না। চশমা ছাড়া মিঃ ডেভনকে চল্লিশ বছরের বুড়োর পক্ষে ভালই দেখাচ্ছে। ইসাবেলার কতটা-সুন্দর-হলে-কি-করে-পার-পাওয়া-যায় ফর্মূলায় আমি এক্সপার্ট না। কিন্তু আমার আন্দাজ হল মিঃ ডেভনকে চিড়িয়াখানা পুড়িয়ে দেবার মত সুন্দর দেখাচ্ছে না। তবে পোষা টিকটিকি মেরে ফেললে লোকে ওনাকে কিছু বলবে না।

    তো উনি ওনার পুরনো চশমাটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন আমি ওটা পরে দেখতে পারি। আমি ওটা পরেছি, আর একজন কেরানী দিদিমনি ঘরে ঢুকেছে। ঐ চশমার ভেতর দিয়ে কেরানী দিদিমনিকে দেখা - সে হলগে খাঁটি কুচ্ছিতকে অযুত-নিযুত গুন বড় করে দেখা। সে দেখে আমি একটা ছোট্ট করে চিৎকার করে ফেলেছিলাম।

    আমার চিৎকারে ঘাবড়ে গিয়ে কেরানী দিদিমনি বাটারস্কচ ল্যাবেঞ্চুষের বোতল উল্টে দিল। তারপর ঘরময় ল্যাবেঞ্চুষের ওপর পা হড়কে আছাড় খেল। পটাং করে হাড় ভাঙার শব্দ আমার খিলখিল হাসির শব্দ ছাপিয়ে সবাই শুনতে পেল।

    কেউ অ্যাম্বুলেন্স ডাকল, আর এই সব গোলমাল সামলাতে গিয়ে মিঃ ডেভন আমাকে শাস্তি না দিয়েই ক্লাসে ফেরৎ পাঠিয়ে দিলেন। কি আশ্চর্য্য, একটু আগেও আমি মনে করতাম বাটারস্কচ ল্যাবেঞ্চুষের কোন ভাল দিকই নেই।
  • zozon | 161.141.84.239 | ১৭ মে ২০১২ ২২:৫৪546971
  • আরে কী হোলো? এইটা পড়তেই তো আসি ঢুঁ মারতে। কখন লিখবেন ?
  • Sibu | 84.125.59.177 | ১৮ মে ২০১২ ০১:০৯546972
  • সরি জোজোন, বস বহুত চিল্লামিল্লি লাগিয়েছে। সামনের সপ্তাহে আবার লিখব।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ২৪ মে ২০১২ ২০:৩২546973
  • শুক্রবার, ০৬

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    ইসাবেলা আমার নামে নালিশ করার জন্য ক্ষমা চেয়েছে - "এটা তোরই দোষ জেমি। পোতিশোধ নেবার বেলায় আমি কেমন হয়ে যাই জানিস তো"। তখন আমিও ওর চুলে ছবি চিপকে দেবার জন্যে মাপ চাইলাম।

    ইসাবেলার অ্যাপলজি ঠিক কার্ডে লিখে পাঠানোর মত না। তবে ও তো ঐ রকমই। আমিও কখনো ঐ রকম হবার একটা উপায় খুঁজে বের করব।

    আরো একটা ব্যাপার আছে। ইসাবেলার মা আবার ডায়েটিং শুরু করেছে। ইসাবেলার মায়ের স্বভাব হল ওনার সাথে সারা বাড়ীও ডায়েটিং করে। বলা ভাল এটা ওনার পেটের স্বভাব। খাবারে চিনি কম হলে ইসাবেলা মিষ্টি মেয়ে থেকে তেতো মেয়ে হয়ে যায়।

    কেরানী দিদিমনিকে ঝাড় দেবার জন্য সবাই আমাকে হাই ফাইভ করল। অবশ্য কেরানী দিদিমনিকে ঝাড়টা আমি দেই নি। আমি কখনো কাউকে ঝাড় দেই না, এক যদি না সে ব্লন্ডি হয় আর তার নাম অ্যাঞ্জেলিন হয়।

    তবে গুজব যখন ছড়ায় তার সব তো আর সত্যি হয় না। এই যেমন ক'দিন আগে বাজারে একটা বাজে গুজব রটল অ্যাঞ্জেলিন হল আমাদের রাজ্যের সবচেয়ে সুন্দরী। যদি প্লেনে করে অ্যাঞ্জেলিনের চেয়ে সুন্দরী কেউ এখান দিয়ে উড়ে যায়, তাহলে সেই মেয়েটাকে তো রাজ্যের ভেতরে ধরতে হবে। তখন ঘন্টা দুইয়ের জন্যে অ্যাঞ্জেলিন আর রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী থাকবে না।

    কেরানী দিদিমনির পড়ে যাওয়া নিয়ে আমার খারাপ লাগছিল। তাই আমি অফিসে গিয়ে মিঃ ডেভনকে জিজ্ঞেস করলাম উনি কেমন আছেন। মিঃ ডেভন বলল ওনার কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। উনি রিটায়ার করবেন। কোমর ব্যাপারটা কেরানী দিদিমনিদের কাছে খুব ইম্পর্ট্যান্ট। কেন না যত কেরানী দিদিমনি দেখেছি সকলেরই খুব মোটা পাছা।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০২ জুন ২০১২ ০১:৩৫546974
  • তো অফিসে বাটারস্কচ ল্যাবেঞ্চুষ রাখা বন্ধ হয়েছে। মিঃ ডেভনও আমাকে আর কিছু বলেন নি। মনে হচ্ছে আমি কেরানী দিদিমনির কোমর ভেঙ্গে দিয়ে পার পেয়ে যাবার মত সুন্দরী। তবে সুন্দরপানা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিন্সিপাল আর মিস আওয়ার স্টেট রানার্স আপকে দলে পেলে তবেই (মোটের ওপর অ্যাঞ্জেলিনার কোলাজ প্রজেক্ট থেকেই তো এই সব হল)।

    আর অ্যাঞ্জেলিনা অবধি আমাকে একদিন বলল - কেরানী দিদির ওটা বেশ হয়েছে। পরের জন একটু দেখতে ভাল হলেই হল। অ্যাঞ্জেলিন তো সারাক্ষণই ক্যাট ওয়াক করছে। তার মধ্যেও এসব ভাবার সময় পেয়েছে তো।

    ভেবে দেখলে, অ্যাঞ্জেলিনের সময় পাওয়াটা বেশ আশ্চর্য্য। কেরানী দিদিমনির কোমর ভাঙায় ওর কি এসে যায়? অবিশ্যি যদি না ওর আমাদের সবাইকে এক এক করে হাটিয়ে সব দিয়ে আরো সুন্দরীদের আনার মতলব থাকে। এর মধ্যে একটাই ভাল ব্যাপার, অ্যাঞ্জেলিনকে এখনকার চেয়ে বেশী অপছন্দ করে উঠতে পারব বলে মনে হয় না। পারফেক্ট লোকেদের দেখলে আমার পারফেক্টলি গা গুলিয়ে ওঠে।

    সমস্ত বিকেল মা খুব বাজে বাজে খাবার রান্না করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তাই ক্যারল আন্টি ডিনারের সময় কল করায় মা একটু খচে গেছল। কিন্তু ক্যারল আন্টি আমাদের শহরে থাকতে আসছে, আর প্রথম কিছুদিন আমাদের সাথে থাকতে চায় শুনে মা খুব খুশি হয়ে গেল।

    আমি আর বাপি যে না খেয়ে প্রায় সবটাই ন্যাপকিন চাপা দিয়ে লুকিয়ে গার্বেজে ফেলে দিলাম সে মা খুশির চোটে খেয়ালই করল না। ন্যাপকিন ভ্যানিশিং শেখাটা মায়ের রান্না খেতে হলে সারভাইভ্যাল স্কিলের মধ্যে পড়ে।

    ক্যারল আন্টি মায়ের ছোট বোন। ক্যারল আন্টিকে দেখলে আমি আন্দাজ পাই মাতৃত্বে (নাকি মামাইটিস) আক্রান্ত হবার আগে মা কেমন ছিল। ভেবে অবিশ্যি লাভ নেই, কেন না মামাইটিস সারে না।

    ক্যারল আন্টি এখনো বিয়ে করেনি। তাই আন্টির সাজগোজ অনেকটা আমার পুরোনো বার্বি পুতুলগুলোর মত। শুধু বার্বির নোখের পেছনে আন্টি তত সময় দেয় না।

    দেখ ডাম ডাইরী, মাকে আমি ভালইবাসি। মা যদি ক্যারল আন্টির কাছাকাছিও কিছু হত তো বড় হয়ে ওঠার আগের মাকেও আমি ভালবাসতাম। কিন্তু বড়দের ভালবাসা কি কঠিন। এক শুধু এন্টারটেইনমেন্ট বিজনেসে যারা আছে তাদের ভালবাসা যায়। তবে ক্লাউনেরা বাদ। ক্লাউনদের পছন্দ করা এমনি বড়দের চাইতেও শক্ত।
  • ranjan roy | 24.96.103.181 | ০২ জুন ২০১২ ০২:০৬546975
  • মিঃ ডেভন টাই পরেন, কিন্তু ভাল লোক।
    কেরানী দিদিমণিদের ভারী পাছা।
    বড়দের ভালবাসা কি কঠিন।
    অসাধারণ।
    শিবুর অনুবাদ এত ভাল যে আমার মনে হয় অরিজিনাল না পড়লেও চলবে।
  • aranya | 154.160.226.53 | ০২ জুন ২০১২ ০৬:৩৫546976
  • কি দারুণ অনুবাদ। শিবু, ফাটাফাটি হচ্ছে।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৪ জুন ২০১২ ২০:৩৬546977
  • শনিবার, ০৭

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    সোশ্যাল স্টাডিজ ক্লাসের জন্য একটা ছোট প্রজেক্ট ছিল। সেটা করতে ইসাবেলা আজকে আমাদের বাড়ীতে এসেছিল। মিঃ ভ্যান্ডয়, আমাদের টীচার (কখনো হাসেন না) আমাদের মানুষের মধ্যে জন্তুদের মত সামাজিক আচরণ খুঁজে বের করতে বলেছেন।

    এমনিতে ইসাবেলা হোমওয়ার্ক করে শনিবারটা নষ্ট করার পাত্রী নয়। কিন্তু ওদের বাড়ীতে এখনো ডায়েটিং চলছে বলে মিষ্টি বন্ধ। আর আমাদের বাড়ী সবসময়েই জাংক ফুডে বোঝাই।

    গত সপ্তাহের ক্লাসে মিঃ ভ্যান্ডয় শিম্পাঞ্জীদের নিয়ে একটা ভিডিও দেখিয়েছিলেন। তারপর শিম্পাঞ্জীরা কিভাবে নিজেদের মধ্যে কথা বলে তাই পড়িয়েছিলেন। কিন্তু এডুকেশনাল চ্যানেলে একগাদা বাঁদর দেখার পর আমার মনে হচ্ছে বাঁদরদের কথাবার্তার বিষয় বেশ লিমিটেড। "হে ডুড, তো পোঁদে কি হয়েছে? তুই কি চলন্ত ফ্যানে পোঁদ ঘষেছিলি? নাকি স্টোভের ওপর বসতে গেছিলি? তুই কি জানিস তো হাসপাতালে যাওয়া দরকার? তোর পাছাটা তো ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে।"

    একবার এসব নিয়ে কথা শুরু করতে দেখলাম বড়দের সাথে জন্তুদের অনেক মিল।

    বাবা রোজ সকালে অফিস যায়। অফিস বাড়ীটা একটা মৌচাকের মত। সেখানে ছোট ছোট বড়রা ঘুর-ঘুর করে, মধু বানায়, আর রানী মৌমাছি যা বলে তাই করে। বাবার বেলায় রানী মৌমাছি অবিশ্যি একটা ছেলে। আর বাবারা মধুর বদলে হিসাবের খাতা বানায়।

    মা হল তৃণভূমিতে ঘুরে বেড়ানো মাইক্রোওয়েভেবল জেব্রা শিকারী সিংহী। মাইক্রোওয়েভবল না হলে রান্না করতে অনেক টাইম নেবে।

    আর ইসাবেলা ...

    এখানে এসে আমাদের হোমওয়ার্ক করা বন্ধ করতে হল। বড়রা কেমন জন্তুদের মত সেটা সহজে দেখা যায়। কিন্তু আমাদের জন্তুদের মত আচরণের কোন উদাহরণ আমরা খুঁজে পেলাম না।

    ইসাবেলা বলে সায়েন্স বিশ্বাস করে বড়রা আসলে মানুষ নাও হতে পারে। এ নিয়ে যত কথা বলা যায়, ততই এটা সত্যি বলে মনে হয়। বড়রা খুব বড়, আর গায়ে জন্তুদের মত চুল। বড়রা যখন গান গায় তখন অনেক সময়েই মনে হয় একটা জন্তুকে লেজ ধরে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বড়রা ঘন্টার পর ঘন্টা অর্ত্থহীন কাজ করে যেতে পারে (এই যেমন টিভিতে ক্রিকেট দেখা)। ব্যায়াম করে উঠলে বড়দের গায়ে উটের মত গন্ধ হয়। আর বড়রা আদর করলে অনেকটা কুকুরে চেটে দেবার মত লাগে।
  • Sibu | 84.125.59.177 | ০৫ জুন ২০১২ ২০:১৪546979
  • রবিবার, ০৮

    ডিয়ার ডাম ডাইরী,

    ই-ই-ই-ই-হুঃ, আজকে ক্যারল আন্টি এসেছে। বাবার রবিবারের বারোটা বেজে গেল। সারাদিন দলা-মোচড়ানো জামা-কাপড় পড়ে থাকা, বাড়ীর মধ্যে খুট্খাট করে বেড়ানো, সব মাটি।

    মায়ের আত্মীয়রা এলে বাবা সবসময়েই একটু সেজেগুজে থাকে, যদিও মুখ দেখলে মনে হয় লোকের সামনে চুলকানো যাবে না এমন জায়্গায় চুলকুনি পাচ্ছে।

    টেকনিক্যালি ক্যারল আন্টি প্রাপ্তবয়স্ক। প্রায়ই বয়স্ক আত্মীয়দের নিয়ে সমস্যা হয়। টিপিক্যালি মাসী/পিসী/মামা/কাকাদের সাথে এরকম কথাবার্তা হয়ঃ

    বঃআঃ - কিরে, ইস্কুল কেমন চলছে?
    আমি - ভাল।
    বঃআঃ - আর ফুটবল?
    আমি - ভাল (ফুটবল খেলি না বললে আরো প্রশ্ন শুনতে হবে)।
    বঃআঃ - এত যে বৃষ্টি হচ্ছে সেটা কেমন লাগছে?
    আমি - জানি না।

    কিন্তু ক্যারল আন্টির সাথে কথা বলা তুলনায় মজারঃ

    ক্যাআঃ - কিরে ইস্কুল কেমন চলছে?
    আমি - হল।
    ক্যাঃআঃ - কোন বাচ্চাটা নোংরা রে?
    মা - কি হচ্ছে ক্যারল?
    আমি - অ্যাঞ্জেলিনটা নোংরা আর পাজি।
    মা - জেমি!!
    ক্যাঃআঃ - জানিস, তোর মা ইস্কুলে প্যান্টে হিসি করে দিত?
    মা - আন্টির কথা শুনো না জেমি। অ্যালার্জির ওষুধ খেয়ে ও এখন কি বকছে তার ঠিক নেই। (রাগী গলায় আন্টির কানে কানে ফিসফিস)।
    ক্যাঃআঃ - বাব্বাঃ, ওকে, ও-ও-ক্কে, আর বলব না। এই জেমি, এত যে বৃষ্টি হচ্ছে সেটা কেমন লাগছে?
    আমি - জানি না।
    ক্যাঃআঃ - তোর মায়ের খুব খারাপ লাগছে, পেন্টু ভিজে যাবে বলে ভয় পাচ্ছে।

    এই অবধি এসে মা ক্যারল আন্টিকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারল। সেদিনের আলাপ ওখানেই শেষ। যার কথা শুনে মা বালিশ ছুঁড়ে মারতে পারে তেমন লোককে অপছন্দ করা খুব কঠিন।

    মা আর আন্টি বোন তো। মা বলে আত্মীয়রাই সবচে বেশী পাগল করে তোলে। আর কেউ সেরকম পারে না, বন্ধুরা না, শত্রুরা না, কেউ না।

    আমার একটা নাকে সর্দি ঝোলা, অ্যালার্জিতে ভোগা নোংরা তুতো ভাই আছে। সেটাকে দেখলে আমার গা জ্বলে যায়। তবে একটা ভাল কি বিয়ে বাড়ী-টাড়ীতে ওটার পাশে দাঁড়ালে আমাকে ভাল লাগে। আমি কিন্তু আসলেও ভাল, আর সুন্দর। তবে ওটার পাশে আমাকে আরো ভাল আর সুন্দর দেখায়।

    আমার মনে হয় ইসাবেলা আর ওর সেই কেঁচোখেকো দাদা আত্মীয়দের সমস্যা নিয়ে অনেক কথা বলতে পারবে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন