এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শৈশব কাহিনী: বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ

    সৌম্য
    অন্যান্য | ১৪ জুলাই ২০১২ | ৫৭৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kiki | 69.93.240.200 | ১৪ জুলাই ২০১২ ২৩:১৮567618
  • কি ভাগ্যি আলো জ্বালছে। প্রোটিন বলে সিদ্ধ করে খেতে বলে নি।
  • sch | 24.96.146.114 | ১৪ জুলাই ২০১২ ২৩:৪৮567619
  • প্রশ্ন হচ্ছে বাবা চর্চা করলেন কখন ???? ছোট থেকেই তো ম্যাজিক করছেন
    সৌম্য বাবার সাধন জীবন সম্বন্ধে কিছু বলুন।
  • T | 24.139.128.15 | ১৫ জুলাই ২০১২ ০০:০৫567620
  • পাই জানতে চেয়েছে, গরুটার কি হল? আরে উহাকে লইয়াও ওঁর লীলা রহিয়াছে। সৌম্য আসার আগে এই বেলা বলে ফেলি।

    এক রবিবারে বালকধামে মহা শোরগোল। আজিকে কতিপয় মহোদয় মহোদয়া সাধুসঙ্গ প্রসঙ্গে আসিবেন। হোমরা চোমরা লোক সব। ঠাকুরের কাছে ওঁদের নাকি কিঞ্চিৎ একান্ত নিবেদন আছে। শোনা গিয়াছে, চিৎপুরের যাত্রাপার্টির কিছু লোকজনও আসিবেন। ফলে সকাল হইতে ঘর, দালান, বৈঠকখানা, চৌকি প্রভৃতি সাফসুতরো করণের কাজ চলিতেছে। গুরুবোন ও গুরুভাইয়েরা যতপরোনাস্তি ব্যস্তসমস্ত হইয়া তদারক করিতেছেন। পান আনো রে, তামাক সাজো রে, গড়গড়া কোথায়, জুড়িগাড়ী নিকালো, সতরঞ্চি কোথায়, টেলিফোন টেলিগ্রাম ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থপ্রাপ্তির আশায় ভিখারির দল হাজির হইয়াছে। কিন্তু প্রতি আশ্রমেই যেহেতু একজন ফেকু পাঁড়ে বর্তমান থাকেন, ফলতঃ সকাল হইতে পাইকারি হারে উহাদের খেদানো হইতেছে।

    হেনকালে ঢং করিয়া দশটার ঘন্টা বাজিল। গুরুধামের প্রধান ফটকে একখানি ফিটন গাড়ী উঁকি দিতেই গুরুভাই ও বোনেরা সহর্ষে উলুধ্বনি দিয়া উঠিলেন। ঐ মহামানব আসে। প্রত্যেকেই চুলোচুলি করিয়া ফিটনের সার্সির উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল। ভেতরে কিছু শীর্ণকায় ব্যক্তি চতুষ্টয় ও একটি বেবুশ্যে মাগী। ছুছন্দর সদৃশ চাহুনি লইয়া সন্তানদলের বিবিধ কার্যকলাপ লক্ষ্য করিতেছে। ভক্তগণ উহাদের বলপূর্ব্বক চ্যাঙদোলা করিয়া বসিবার ঘরে উপস্থিত হইল।

    ঘরের সমগ্র পরিসর ইষত ধূমাকীর্ণ। সারি দিয়া উপুড়িত ভক্তসমূহ, গুরু ভাই বোন ও ফোপরদালালের দল। মধ্যভাগে উপবিষ্ট কিছু সর্বস্তরের প্রাণী, যথা নকশাল, বিপ্লবী, কমিউনিষ্ট, জমিনদার ও বিলেতফেরত। ইঁহারা সদ্য বালকদিগের সাথে যোগ দিয়াছেন। এখন বসিয়া বসিয়া পাকিতেছেন। অগ্রভাগে ঠাকুরের আস্থাভাজন কিছু গণ্যমাণ্য মোসাহেব। ঠাকুরের বামপার্শ্বে সেকন্ড মহারাজ, যাঁহার রাণাঘাটের মিল্ক ফ্যাক্টরীতে আজকাল মন্দা যাইতেছে। ডানপার্শ্বে কিছু মধ্যসত্ব্বভোগীর দল, যাঁহারা ঠাকুরের চরণধূলি ছিপিওয়ালা বোতলে ভরিয়া বিক্রয়ের তাল করিতেছেন। মাঝখানে বেদি। ধূপ ধুনা, কছুয়া, ফুল মালা চন্দন ও ইলেক্ট্রিক বাল্ব সজ্জিত। বেদির উপর একটি বালতি। বালতিতে ব্রক্ষ্ম স্বয়ং উপবিষ্ট। মুখে স্পিকটি নট, বাবা ধ্যান করিতেছেন।

    শ্যামসুন্দর চৌবে মহাশয় আর থাকিতে পারিলেন না। সটান 'হজৌর' বলিয়া চেঁচাইয়া উঠিলেন, ফলে পরিবেশের গাম্ভীর্য একেবারে চিত্তির। সমস্ত সারির ভক্তেরা একসাথে প্রতিবাদ করিয়া উঠিল। আস্তিন গুটাইয়া কিছু মুশকো জোয়ান রে রে করিয়া তেড়ে আসে আর কি! বেবুশ্যেটি চট করিয়া সেকন্ড মহারাজের কানে কানে মিষ্টবাক্য শুনাইলেন। সহসা কেমনে মলয় সমীরণ বহিতে লাগিল। ভক্তগণ চমকিত ও ত্রস্ত হইয়া দেখিলেন বালতির ভিতর ব্রক্ষ্মনাদ উঠিতেছে। ঠাকুর চোখ খুলিলেন।
    --কি ব্যাপার চৌবে?
    --হজৌর, হামি গরীব আদমি আছি। আংরেজকে সাথ বেওসা ওয়াস্তে হামার কুছু লোকসান হয়েছে। পরন্তু ঐ গোরুজি--
    --গোরু? কোন গোরু?
    --গুরুজি, যো গোরুজিকো আপনে জান দিলবায়া ওহি! উ যো লাটক মাটক...যো আপনে লীলা চঢ়ায়া, উসিকি বজেমে ও গোরুজি...
    --আহা, করেছেটা কি?
    --খেয়ে লিয়েছে হজৌর। আমার টেক্সের নোটের তাড়া, সব খেয়ে লিয়েছে। আংরেজ হামাকে উঠতে বসতে গালি দিচ্ছে। পেয়াদা আসিছে...
    --বল কি?
    '-- আজ্ঞে হ্যাঁ! শুধু চৌবেরই নয়। আরো সকলেরই কিছু কিছু গিয়েছে।' একটি মধ্যম উচ্চতার গোঁফ সর্বস্ব ভারিক্কি চেহারা উঠিয়া দাঁড়াইল। উনি কর্পোরেশনের মেয়র। গোঁফজনিত কারণে দোর্ডন্ডপ্রতাপ। সম্প্রতি বিপত্নীক হইয়া দীক্ষা লইবার তর করিতেছেন। নিয়মিত গোঁফচর্চা করেন। এবং সেই সুবিন্যস্ত গোঁফের ফাঁক হইতে মন্দ্র স্বরে জানাইলেন, কিছু অপোগন্ড গোরুজিকে ইলেকশনে নামাইবে বলিয়া মাথা খাইয়াছে। গোরুজি গতকাল তাঁহার আপিসে আসিয়া বড়লাটের ছবি সমেত পুস্তক চিবাইয়াছেন, এবং সময় সুযোগ পাইলেই কলিকাতার সমস্ত দেওয়ালে গোবর লেপিতেছেন। লোকে সিডিশস বলিয়া গাল পাড়িতেছে। এমনকি স্বনামধন্য অপেরা মালিক রাজেন্দ্রনারায়ণের শীলের যাত্রাপালার খোল কত্তাল অবধি খেয়ে ফেলেছে।
    --সর্বনাশ। পুড়াইয়া মারো না কেন? খড় বৈ তো নয়। দ্রুত পরমাত্মার সাথে মিলিত হবে।
    -- সে চেষ্টা কি করিনি হুজুর। গতকাল যে সব বায়োস্কোপের ঠাঁই পুড়ে ছাই হলো, সেসবের কারণ কি আর ব্যাখ্যা করতে হবে! গোরুজি সর্বত্র বিরাজমান স্যার। কাল রঙরঙিয়াতে টিকিট ব্ল্যাক করছিল, খপর পেয়ে পেয়াদা পাঠালুম। আগুন দিতেই সে ব্যাটা হল্লুমান হয়ে ইদিক উদিক চরে বেড়ালো। খড়কে খড় জ্বল্ব যাচ্ছে, গোরুজির কিস্যু হচ্ছে না। ভাগ্যিস বিলাসিনী বেরিয়ে এয়েছিল তাই। নইলে আর রক্ষে ছিল না।
    বেবুশ্যেটি খানিক নখরা করিয়া হাসিয়া লইলেন। ইত্যবসরে মেয়রবাবু ও অন্যান্যরা ক্রমে ক্রমে প্রকৃত অর্থে তাঁহাদের গোরুজি কর্ত্তৃক লাঞ্ছনার বিবরণ দিতে লাগিলেন।
    এমন সময় বাহিরে হঠাত একসাথে সমগ্র পৃথিবী ডাকিয়া উঠিল। এক সুবিশাল হাম্বা রবে একজোড়া ভয়াবহ শিং, একটি কান ও একটি লেজ সমেত এক প্রকান্ড কালাপাহাড়ের উদয় হইল। দরোয়াজা আটক। সম্মুখে মূর্তিমান ফ্রাঙ্কেনস্টাইন।
    পত্রপাঠ সকলের সে কী পলায়নের ধূম! সেকেন্ড মহারাজ একলম্ফে বিলাসিনীর কোলে উঠিলেন। আরো সকলে এর উহার পা মাড়াইয়া, জাপটাজাপটি করিয়া জুজুবত স্থির। কেবল ব্রক্ষ্মময় ঈশ্বর বালতির ভিতর হইতে বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইলেন। মুখে রাম নারায়ণ রাম!
    অচানক সকলের হুঁশ ফিরিল। রামো নারায়ণ রামো। জয় রামো নারায়ণ রামো। দিগবিদিক মুখরিত করিয়া সন্তানদল শিহরিত হইলেন। তাঁহাদের ভক্তিরস উপচাইয়া পড়িতে লাগিল। ঠাউর ঘুরে ঘুরে নেত্য করিতেছেন।
    সে কী নেত্য! গদগদ চিত্তে ঠাউরের ধুতি কাপড়া ইত্যাদি খুলিয়া আসিতে লাগিল। কিন্তু উনি অচেতন। মুখে শুধু নামগান। সেইসঙ্গে ঘুরিয়া ফিরিয়া ঝুমুরনৃত্য! শান্তিপুর ডুবু ডুবু। ভক্তগণ বিহ্বল দৃষ্টিতে এই লীলা দেখিতেছেন। এই উঠিতেছে, ওই পড়িতেছে। শেষে সবকিছু খুলিয়া আসিল। ভক্তগণ তুমুল হর্ষধ্বনি সহযোগে ব্রক্ষ্মরূপ প্রত্যক্ষ করিলেন।
    অকস্মাৎ সকলে অবাক হইয়া দেখিল খড়ের গোরু জ্বলিতেছে। জ্বলিয়া জ্বলিয়া পুড়িতেছে। ভস্মাবশেষ হাওয়ায় ভাসিতেছে। পরম গোরু পরম ব্রক্ষ্মের সহিত মিলিত হইতেছেন।
    চৌবেজী বিস্ময় চিত্তে কহিলেন, ই কেমনে হোলো! হামাকে বুঝান।
    ঠাকুর, মৃদু হাসিয়া কহিলেন, চৌবে, ভাবিতেছ কেবলই বাহিরের উত্তাপ, ও কিছু নয়, কিছু নয়! আসল কথা হইল অন্তর। আমার পুরুষরূপ দেখিয়া গোরুর কামভাব জাগিয়াছিল। ইহাকে প্রাকৃতজনে বলে হিট খাওয়া। ফলে দুরন্ত তাপে ভেতর হইতে ধিকিধিকি পুড়িয়াছে। যা তোমরা বাহির হইতে শতচেষ্টাতেও পারোনি, আমি তাহা এক মূহুর্তে করিয়া দেখাইলাম। ইহাকে বলে একপ্রকার ট্রোজান হর্স আটাক । আসলে আমারই ভুল। প্রথমেই বেচারাকে ষাঁড় বানাইলে, আজ এই দিন আসিত না। চট করিয়া বীর্য্যধারণ শিখাইয়া দিতাম। সবই নিয়তি।

    ভক্তগণ হর্ষধ্বনি করিয়া উঠিল। ফিটন সমেত আরোহীকুল প্রসন্ন চিত্তে বিদায় লইলেন।
  • নিশান | 84.67.102.197 | ১৫ জুলাই ২০১২ ০৭:৩৭567622
  • হজম করা ভারী শক্ত, আসিদ্ধ চালের মত, পেটে গিয়ে ভুটভাট আওয়াজ মারছে!
  • সৌম্য | 151.0.9.27 | ১৫ জুলাই ২০১২ ১৫:২১567623
  • রাম নারায়ন রাম। মন্তব্য করার জন্য সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।
  • নিশান | 84.67.102.197 | ১৫ জুলাই ২০১২ ২২:২৭567624
  • কাকার ধৈর্য আছে মানতেই হবে!
  • গুরুপদ | 126.75.4.244 | ১৫ জুলাই ২০১২ ২২:৪০567626
  • আপনারা এখানে ঠাকুর কে নিয়ে খিল্লি করছেন , কিন্তু যখন অত ভারী উড়োজাহাজ আকাশে অরে,বিশাল জাহাজ সমুদ্রে ভাসে,জল থেকে তড়িত তৈরী হয় তখন কি আপনারা বিশ্বাস করেন না?
    আর একটা কথা, যত বীর্য রোজ হস্তমৈথুনে নষ্ট হয়, তা জমিয়ে তার থেকে প্রোটিন বিস্কুট বানানো হলে আজ দেশের খাদ্যসমস্যা অনেকটা মিটত।
  • ranjan roy | 24.96.227.91 | ১৫ জুলাই ২০১২ ২২:৪০567625
  • টি,
    আপনার সোনার দোয়াত-কলম হোক! কি নামিয়েছেন মাইরি!ঃ))))
  • ranjan roy | 24.96.227.91 | ১৫ জুলাই ২০১২ ২৩:১৫567628
  • গুরুপদ,
    আপনি বানাবেন? তো বলুন, আমি কিছুটা সাহায্য করতে পারি।
  • সিকি | 132.177.2.130 | ১৫ জুলাই ২০১২ ২৩:২২567629
  • যে কোনও রকমের দেশসেবামূলক কাজে আমিও আছি। :) কেবল আমি ওইদিন থেকে বিস্কুট আর খাবো না।
  • kiki | 69.93.244.83 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০০:০৭567630
  • ব্যাস! বিস্কুটের উপর নির্ভর করে সকালবেলাটা কাটিয়ে দি। সেও গেলো হতচ্ছাড়াদের জ্বালায়।ওয়াক!
  • kiki | 69.93.244.83 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০০:০৮567631
  • অ সৌম্যবাবু,
    আপনে বলেন............... আহা !

    রানারা
  • | 24.99.197.112 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০০:১১567632
  • ঃ)))
  • pi | 82.83.87.188 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৭:৫৪567633
  • T, বেড়ে হয়েচে, খাসা হয়েচে ঃ)
  • সৌম্য | 151.0.11.29 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:১৬567634
  • T এর গল্পটা আসলেই অসাধারণ হয়েছে। এত দ্রুত এত রসপূর্ণ লেখা তার অসাধারন লেখনীরই পরিচায়ক।
  • aranya | 154.160.5.25 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:৩০567635
  • দারুণ হয়েছে তো বটেই। আর একটা কার সাথে যেন লেখার একটু মিল পাচ্ছি, সেই যে যিনি পিশাচ, গুম্ফবতী ইত্যাদি নিয়ে লিখতেন - নিশান কি ?
  • ribhu | 78.232.122.201 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:৪৫567636
  • আমি তো পরশুরামের ছোয়া পেলাম টি দার লেখায়। কিন্তু যাই হোক, ব্যাপক হয়েছে।
  • pi | 82.83.87.188 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:৫২567637
  • অরণ্যদা, পিশাচ, গুম্ফবতী নিয়ে তো স্যাম লিখতো।
  • aranya | 154.160.5.25 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:৫৩567639
  • হ্যাঁ, স্যাম। আজ মেমরি পুরো ফেল, ব্র্রাম্ভীশাক দরকার।
  • aka | 85.76.118.96 | ১৬ জুলাই ২০১২ ০৮:৫৪567640
  • ঃ)
  • সৌম্য | 151.0.10.57 | ১৬ জুলাই ২০১২ ১৭:৩৭567641
  • STORY 23

    ঠাকুরের শিক্ষক প্রকাশ বল, আনন্দ মাষ্টার প্রভৃতিদের সাথে আলোচনা করার সময় ঠাকুর বললেন, "এক জায়গায় বসে বিশ্বের সমস্ত খবরাখবর পাওয়া যায়, এক জায়গায় বসে যার সাথে ইচ্ছা দেখা করে আসা যায়।" তারপর ঠাকুর বললেন, "আমি এই মুহুর্তে রামচন্দ্রপুরের নবদ্বীপ দাসের (আট নয় মাইল দূরে থাকে) সাথে দেখা করে এলাম। তাকে তোমরা সবাই চেনো। আমার হাতে কিছু দাও। আমি নবদ্বীপকে দিয়ে আসছি।" সামনে ফলের বাটি থেকে একটি আপেল নিয়ে ঠাকুরের হাতে দেয়া হল। ঠাকুর আপেলটি ছুঁড়ে দিলেন শূন্যে এবং কিছুক্ষণ পরে বললেন রামচন্দ্রপুর গিয়ে দিয়ে এলাম আপেল।

    সবাই রামচন্দ্রপুরে খোঁজ নিলে নবদ্বীপ দাস বলেন, "আমি রাতে বারান্দায় বসে ছিলাম। হঠাত্‍ দেখি ঠাকুর। তিনি একটি আপেল আমাকে দিয়ে হাসলেন, আশীর্বাদি ভঙ্গীতে হাত তুললেন এবং মিলিয়ে গেলেন।"

    STORY 24

    ঠাকুর একদিন তাঁর স্কুলের কিছু শিক্ষক ও ভক্তদের সাথে আলোচনা করছেন। ঘরে আলো জ্বলছে। সকলে দেখছেন কর্পূরের মত বাষ্পাকারে ঠাকুর আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছেন। প্রথমে ঠাকুরের কথা শোনা যাচ্ছিল, তারপর শুধু শব্দ, তারপর তিনিও নেই- শব্দও নেই। সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে নদীর ধারে গিয়ে দেখলেন, ঠাকুর সেখানে দাড়িয়ে আছেন।

    STORY 25

    শিক্ষক প্রকাশ বল, ত্রৈলোক্য সোম, আশু সেন ভুবন বাবু সহ অন্যরা ঠাকুরের বিভূতি দেখার জন্য আসেন। অন্তর্যামী ঠাকুর বুঝতে পেরে ত্রৈলোক্য সোমকে বলেন, "জ্যাঠামশাই আপনার মেয়ে টুলি ও তার জামাই নারায়নগঞ্জে থাকেন, আমি এক মুহূর্তের মধ্যে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করে আসতে পারি। শুনে সবাই হতবাক। কারন দূরত্ব ৩০ মাইল মাঝে তিতাস, মেঘনা ও শীতলক্ষা নদী। নৌকাকরে গেলেও এক বেলা লাগবে। সকলের সমর্থনে ঠাকুর পাঁচ মিনিট পরে বললেন, "কেমন আছ টুলিদি? এইযে জামাইবাবু কেমন আছেন?" ঠাকুর টুলিদির কাছ থেকে এক গ্লাস জল নিয়ে খেলেন। ওনারা মিষ্টি খাবার জন্য পীড়াপিড়ি করলেও খান নি। একটা বাতাসা দিয়ে জল খেলেন। জল যে খাচ্ছেন সবাই শুনতে পাচ্ছেন। ঠাকুর একটা কাগজ চেয়ে সই করে এলেন- শ্রী বীরেন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী, ১১ই আশ্বিন, ১৩৪০(1933) ; কাগজটা টুলিদির হাতে দিয়ে দিতে বললেন।

    নায়েব ত্রৈলোক্য সোম তখন হরিচরণকে নারায়নগঞ্জে পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা পান।

    কিভাবে ঠাকুর এতদ্রুত অতদূরে গেলেন জানতে চাইলে ঠাকুর বললেন, "আমি অণিমায় দেখালাম। খুব দ্রুতগতিতে মনন করে প্রথমে গর্ভে, পরে খাদ্যে, বাতাসে, আলোতে, বিদ্যুতে চলে গেলাম। তখন আমার মনের গতি সাংঘাতিক। এক সেকেন্ডেই ত্রিশ মাইল চলে গেলাম।"

    STORY 26

    একদিন ঠাকুরের মামা হেরম্বনাথ তর্কতীর্থ, ঠাকুরের কাছে অষ্টসিদ্ধির অণিমা শক্তি দেখতে চান। তাঁরা ঠাকুরঘরে বসে ছিলেন। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে পূজার ঘরের সব উপকরণ সাজ সরঞ্জামসহ ঠাকুর শূন্যে বিলীন হয়ে যান। ঘর খালি। মামা একা বসে আছেন। কেটে যায় কিছু সময়। তারপর ঠাকুর আবার ফিরে এলেন তাঁর আসনে। ঘরটিও সঙ্গে সঙ্গে আবার ভরে উঠল পূজার সাজসরঞ্জাম উপকরণাদিতে।

    STORY 27

    তিতাস নদীর তীরে খেলাধূলা শেষে ঠাকুর তাঁর সাথীদের কর্তৃক পরিবৃত্ত হয়ে বসে ছিলেন। ঠাকুর সাথীদের বলেন, "তোমরা লক্ষ্য রাইখো, বাতাস যেন আমারে উইড়া নিয়া না যায়।" হঠাত্‍ কালবৈশাখীর মত ঝড়ের তান্ডব- বিশেষ করে যেখানে মধ্যমণি হয়ে ঠাকুর বসেছিলেন। মুহূর্ত পরে সকলে দেখল, ঝড় থেমে গেছে কিন্তু ঠাকুর নেই। একটু পর নদীর ওধার থেকে শব্দ ভেসে এল, "আমারে লইয়া যাও।" সাথীর দল এইপাড় থেকে চিত্‍কার দিল, "আমরা কি জানি! তুমি য্যামনে গেছিলা ত্যামনেই ফিইরা আসো। আর আমাগো জন্যি জালি ক্ষীরা (নদীর ঐ পাড়ে ক্ষীরার ক্ষেত) নিইয়া আইসো।" ঠাকুর আবার অণিমা শক্তি দিয়ে ফিরে আসেন নদীর এই পাড়ে। হাতে কয়েকটি ক্ষীরা।

    STORY 28

    ঠাকুরের অণিমা শক্তি (অদৃশ্য হয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া) সম্বন্ধে ঠাকুরের পিতার সহকর্মী নগেন চক্রবর্তী এবং জমিদার বাড়ির কাছারির লোকজনদের ভিতর সন্দেহ ছিল। একদিন তারা শিশুঠাকুরকে একটা লোহার সিন্দুকে ভরে তালাবন্ধ করে ফেলে দিলেন তিতাস নদীর জলে। বিশ মিনিট কেটে গেল। শিশুঠাকুরের দেখা নেই। সবাই এরকম কাজ করে আতংকিত। নগেন চক্রবর্তী অত্যধিক ভীতি ও দুশ্চিন্তায় বিবর্ণমুখে দৌড়াদৌড়ি করছেন। এমন সময় একজন বলে উঠল, "ঐ তো কাছারীর ছাদে শিশু দাড়িয়ে আছে।"
  • রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য | 233.223.134.27 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২০:২২567642
  • এটা এই টইয়ের সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার ।
    অরণ্য বাবু
    আপনার সঙ্গে আমার খুব দরকার !
    আমার ইমেল :[email protected]
    একটু দয়া করে যোগাযোগ করবেন?
  • সিকি | 132.177.2.130 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২১:০৮567643
  • বাঙালরাও ক্ষীরা বলে নাকি? :)
  • | 127.194.100.98 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২১:০৯567644
  • তারমানে নিউটন কি আসলে ছদ্মবেশে বাবা?
  • Rit | 213.110.243.21 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২২:০৭567645
  • বাবা কি সুপারলুমিনাল?
  • Rit | 213.110.243.21 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২২:১২567646
  • টেলিপোর্টেশন ও হত। এ ইলেকট্রিক বাবা নয়, এ সাক্ষাৎ কোয়ান্টাম বাবা।
  • শঙ্খ | 169.53.78.142 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২৩:০৪567647
  • আব সমঝা।

    বাবা আগের অবতারে বালক হয়েছিলেন। বাবার নতুন অবতারের নাম হল শিবাজী রাও গাইকোয়াড়।

    কৈসন? এই দেখুন, বলে না, স্বভাব না যায় মলে। ওঁর লাস্ট বিভূতি গুলো দেখুন (শিবাজি দা বস, রোবোট), উনি নিজের বয়েস ২০-৩০ বছর কমিয়ে ফিরে ফিরে আসেন। শিং ভেঙ্গে বালক থাকতে চান বলেই তো, নাকি?
  • সৌম্য | 151.0.8.225 | ১৭ জুলাই ২০১২ ০৮:৫২567648
  • রাম নারায়ন রাম । মন্তব্য করার জন্য আপনাদের সবাইকে অজস্র ধন্যবাদ ।
  • cb | 202.193.132.7 | ১৭ জুলাই ২০১২ ১৭:০৯567650
  • কি ভয়ন্কর ব্যাপার, ছোট ছেলেকে বাক্সে ভরে ফেলে দিল নদীতে!!!! যা শালা
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন