এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্বাস্থ্য, সকলের জন্য

    pi
    অন্যান্য | ২২ মার্চ ২০১৩ | ২৮৫১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বাংলার "হাতেম-তাই" | 151.0.9.59 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৫:৪৮600300
  • " স্বাস্থ্য, সকলের জন্য " --- এই 'মায়া পাতায় ' ,অ-কারণেই , " BanglarBagh"- এর ভৌ ভৌ - এর আওয়াজ শুনে খ্যা খ্যা করে অনেকক্ষণ হাসলাম। ( বিশদে বর্ণন আধিক্য মাত্র্র ---- 9:45PM post is self explanatory)

    তবে হ্যাঁ --- পেরাইভেসি-- শুধুমাত্র তেনার নিজেরটা-র জন্য্ই না -- সক্কলের জন্য চিন্তিত তিনি । সক্কলে জানে " বাঘ" নিজের জন্য পেরাইভেসি পছন্দ করে।

    কয়েইজন অবইশ্য তেনাকে আশ্বস্ত করইেছেন : ভয় নাই ভয় নাই প্রিয়ে ইঃ ইঃ ... মZআ লাগছে পইড়্যে -- হিঃ হিঃ ..
    ---
    "আত্মপ্রকাশ"-এর সমস্যা কোথায় ? কেনো?

    --- তিনিই জানেন কেনো।
    ---

    কপিরাইটের সমিস্যে ইটা নয় -- ( "আত্মপ্রকাশ"-এর কপিরাইটের সমিস্যে আছে বটে, কিন্তুক ইটা সিটা নয় )

    কি জানি, ইটা হয়তো ২০১৩-এর "গেরিলা -যুদ্ধের" / "মেঘনাদ" -এর ইস্টাইল বটে।
    --- .... বেণী ভিজাইবক না -- হিঃ হিঃ

    থুরিথুক্কি , ( গুণীজন বুজহ সন্ধান )
  • ranjan roy | 24.97.12.130 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৬:৪২600301
  • এই পাতায় আলোচনাটা জনস্বাস্থ্য আন্দোলন, সরকারের ভূমিকা ও সেই নিয়ে ডঃ পুণ্যব্রতের সঙ্গে অন্যদের তোলা সংগত প্রশ্নের মধ্যেই সীমিত থাকলেই ভালো হয় না?
  • riddhi | 118.218.136.234 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৯:০৭600302
  • দুটো প্রশ্নঃ এই সার্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চয় স্বাধীনতার আমল থেকেই লক্ষ্য ছিল? তাহলে ঠিক এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে কেন?

    একটা ম্যাপে দেখলাম 'সার্বজনীন স্বাস্থ্য' থাকা বা না থাকা ডেভেলপড আর ডেভলপিং দেশগুলোকে প্রায় আলাদা করছে। এখানে অ একটা খুব বোকা প্রশ্ন ঃ 'সবার জন্য স্বাস্থ্য' একটা অনেক বড় প্রবলেম কে সলভ করে দিচ্ছে কি! কু-স্বাস্থের আওতায় নিশ্চয়ী ম্যাল্নিউট্রিশান পড়ে, অনাহার-জনিত অসুখ বা মৃত্যু। সেটা সারানো=সবার জন্য পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করা? তেমনি স্যানিটেশন, ভাল জল। আবার মাথার ওপর ছাদ না থাকা বিশাল রিস্ক ফ্যাক্টার। অনেক চিকিৎসাই কাজ করবে না যদি মিনিমাম শেল্টারটুকু না থাকে। তাহলে হোমলেসনেস ও টার্গেট? মানে, এই পুরো উদ্যোগটা কি দারিদ্র্য দূরীকারনের সাথে বিশাল মাত্রায় ওভারল্যাপ করছে না কোথাও ভুল বুঝছি ?
  • riddhi | 118.218.136.234 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৯:১২600303
  • আর, আমেরিকায় ইলেকট্রনিক হেল্থ রেকর্ড/ ইলেক্ট্রনিক মেডিকাল রেকর্ড নিয়ে খুব হইচই হয়। এই সিস্টেম চালু করার পক্ষে বিপক্ষে অনেক মত শোনা যায়। বিপক্ষের মত হল, বিশাল খরচা। দেশে 'সার্বজনীন স্বাস্থ্য' প্রসঙ্গেও সেন্ট্রালাইড পেশেন্ট হেল্থ রেকর্ডের কথা শুনে থাকি। সেরকম কিছু করার কি সরকারের প্ল্যান অছে? সেখানে কি বিশাল লেভেল আই-টি ইন্হলভমেন্ট দরকার?
    কম্পিউটারে চরম অজ্ঞতার কারণে খরচাটা কেন আর কোথায় সে নিয়ে আমার বিশেষ ধারণা নেই, কিন্তু জানার বিপুল আগ্রহ রয়েছে। কারণ মাঝে মাঝেই ঐ ই-মেডিকাল রেকর্ড নিয়ে কাজ দেখি। এটা আই-টির লোকেরা ভালো বলতে পারবেন। গোদা লক্ষ্যটা বুঝি, একটা বিশাল কানেক্টেদ ডেটাবেস বনানো। এখানে শুনেছি খরচার কারণে ভাল ভাল হাসপাতাল ও পারে না। যাই হোক এটা নিয়ে অন্য কোন টইয়ে আলোচনা করা ভাল।
  • b | 135.20.82.166 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ০৯:২৫600304
  • @টুপু,
    হেলথ কেয়ার শুধু রামা কৈবর্তদের জন্যে সীমিত রাখার বিপদ আছে। তাহলে প্রশ্ন উঠে যাবে যে কাকে রাখবো, আর কাকেই বা ফেলবো ( এ পি এল/ বি পি এল নিয়ে বিতর্ক স্মরণ করুন)। আর তাছাড়া, একটা সমান্তরাল উদাহরণ টেনে বলা যায়, ধরুন পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম। এখন এতো যে সরাসরি ক্যাশ ট্রান্সফারের কথা উঠছে, তা কিন্তু সেরেফ দুর্নীতি জনিত কারণে ঃ প্রাপ্য খাদ্যশস্যের অনেকাংশ-ই আর গরীবদের কাছে পৌঁছচ্ছে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, যে সব রাজ্যে (তামিলনাডু, কেরালা, ছত্তিসগড়) পি ডি এস সার্বজনীন বা প্রায় সার্বজনীন, সেখানে এই সংক্রান্ত দুর্নীতিও অনেকটা কম।
    আর, এন শ্রীনিবাসন কি আর রেশন দোকানের লাইনে দাঁড়ান?

    (এটা ঠিক আপনার প্রশ্নের উত্তর হল না অবশ্য।)
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:১১600305
  • ওষুধ সরবরাহ সম্পর্কে High Level Expert Groupএর সুপারিশগুলো বলছিঃ
    নির্ভরযোগ্য ও কার্যকরী ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্যগুলো কি হবে?
    স্বাস্থ্যখাতে সরকারী খরচের অন্তত ১৫% হোক ওষুধের জন্য, অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকায় থাকা ওষুধগুলো সরকারকেই কিনতে হবে।
     আয়ুর্বেদ, উনানী, সিদ্ধ, হোমিওপ্যাথির আলাদা অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা করতে হবে, রাজ্যস্তরে তা কেন্দ্রীয় ভাবে কিনতে হবে।
     প্রামাণ্য চিকিৎসা বিধি (Standard Treatment Guidelines) অনুযায়ী প্রেসক্রিপশন ও ডিসপেন্সিং করতে হবে।
     স্বচ্ছ টেন্ডার পদ্ধতির মাধ্যমে ওষুধ কিনতে হবে।
     ভাল গুণমানের জেনেরিক ওষুধ নিশ্চিত করতে হবে।
     প্রত্যেক জেলায় গুদাম থাকবে।
     ওষুধ, টীকা ও পরীক্ষার সরজ্ঞাম কেনার জন্য স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা চাই।
     ওষুধের গুণবত্তা পরীক্ষার ল্যাবরেটরী নথিভুক্ত করতে হবে।
     দ্রুত দাম মেটানোর ব্যবস্থা চাই।

    ওষুধ, টীকা ও কারিগরী নাগালে আনতে
    ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
    জাতীয় ও রাজ্যস্তরে ওষুধ সরবরাহ কর্পোরেশন স্থাপন করতে হবে।
    ওষুধ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা মজবুত করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রককে ক্ষমতা দিতে হবে।
    ফার্মাসিউটিকাল দপ্তরকে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে দেওয়া হোক।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:১৭600306
  • চিকিৎসকের সমস্যা বিশেষত ডাক্তারদের গ্রামে যেতে না চাওয়ার সমস্যা নিয়ে অনেকে বলছেন।আসুন দেখি HLEG স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মানব সম্পদ নিয়ে কি ভেবেছে।
    আমার ব্যক্তিগত বা সংগঠনগত মতামত পরেআসুক।

    স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মানব সম্পদ
    পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিভিন্ন স্তরে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মী নিশ্চিত করা হোক, গুরুত্ব পাক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা।
    গ্রামীণ ও আদিবাসী এলাকায় ASHA-র সংখ্যা দ্বিগুণ করা হোক, জনসংখ্যার ১০০০ পিছু ১ থেকে বাড়িয়ে ১০০০ পিছু ২।
    মাঝারি স্তরের স্বাস্থ্য কর্মী চালু করা হোক—গ্রামীণ উপকেন্দ্রগুলোতে Bachelor of Rural Health Care (BRHC) প্র্যাকটিশনার ও শহরের উপকেন্দ্রগুলোতে Nurse Practitioners।
    ব্লক, জেলা, রাজ্য ও জাতীয় স্তরে মানব সম্পদ ম্যানেজমেন্ট উন্নত করা হোক।
    স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মানব সম্পদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের গুণমান উন্নত করা হোক।
    প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বাস্থ্য কর্মী তৈরীর জন্য অতিরিক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে অর্থ বিনিয়োগ করা হোক।
    সামাজিক স্বাস্থ্য কর্মী প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা ব্যবস্থা স্থাপন করা হোক।
    জেলাগুলোতে স্বাস্থ্য জ্ঞান কেন্দ্র (District Health Knowledge Institutes) স্থাপন করা হোক।
    স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মানব সম্পদের জাতীয় কাউন্সিল স্থাপন করা হোক।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:২২600307
  • ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে সুপারিশ

    ম্যানেজমেন্ট ও প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠন
    জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ম্যানেজমেন্ট-এর কর্মী ও পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
    উন্নততর মানব সম্পদ অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যাতে ভালোভাবে কর্মীদের নিয়োগ, ধরে রাখা, উদ্দীপিত করা ও কাজ করানো যায়, যুক্তিসঙ্গত বেতন ও উৎসাহ ভাতা দেওয়া যায়, দক্ষতা অনুযায়ী পদোন্নতি হয়।
    সুসমঞ্জস মানের এক স্বাস্থ্য তথ্য কারিগরী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে যাতে সমস্ত অংশীদার তার সুযোগ নিতে পারেন।
    ম্যানেজমেন্ট ও নিয়ন্ত্রক সংস্কারগুলোর মধ্যে মজবুত বন্ধন চাই আর রোগী ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।
    অর্থের যোগান সহজ করতে অর্থ সরবরাহ ও বাজেট পদ্ধতি স্থাপন করা চাই।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:২৪600308
  • জনসমুদায়ের অংশগ্রহণ ও নাগরিকদের ভাগীদারী
    বর্তমানের গ্রামীণ স্বাস্থ্য সমিতি (বা স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সমিতি)গুলোকে স্বাস্থ্য পরিষদে পরিণত করা হোক যাতে নাগরিকরা অংশ নেবেন।
    নিয়মিত স্বাস্থ্য সংসদের আয়োজন করতে হবে।
    নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত ও শহরাঞ্চলে পুরসভা-র ভূমিকা বাড়ানো হোক।
    নাগরিক সমাজ ও অসরকারী সংস্থা (NGO)-গুলোর ভূমিকা মজবুত করা হোক।
    ব্লক স্তরে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ প্রতিবিধান (grievance redressal)-এর ব্যবস্থা করা হোক।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:২৫600310
  • চিকিৎসা ছাড়িয়ে স্বাস্থ্য
    নোবেল পদক-বিজেতা সুইডিশ অর্থনীতিবিদ গুনার মিরডাল বলেছেন—“ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান থেকে লাফিয়ে বেরোয় আর আশপাশের সমাজ থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে।”
    তাই বিশেষজ্ঞ দল মনে করে—• অর্থ • জল • নিকাশী • কৃষি • খাদ্য-প্রক্রিয়াকরণ • শিক্ষা • গ্রামীণ উন্নয়ন • শহরের পরিকল্পনা • পরিবহন • যোগাযোগ • বাণিজ্য • পরিবেশ—এসবে নীতি আর কর্মসূচী জনস্বাস্থ্যের প্রয়োজনগুলোর প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে।

    উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ...
    জাতীয় স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও সুরক্ষা ট্রাস্ট (National Health Promotion and Protection Trust) গঠন করা হোক যাতেঃ
    •কার্যকরী স্বাস্থ্য শিক্ষা, প্রসার ও তথ্য ভাগ করে নেওয়া যায়।
    •জনসাধারণ, রোগী, চিকিৎসাপ্রদানকারীদের সর্বজনীন স্বাস্থ্য-বিষয়ক শিক্ষা দেওয়া যায়।
    •অন্যান্য ক্ষেত্রে নীতি ও কর্মসূচীগুলোর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব হিসেব করা যায়।
    •আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে সু অভ্যাস, নীতি নির্ধারণ করা যায়, বিশ্বের পটভূমি থেকে শিক্ষা নেওয়া যায়।

    উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল তাঁদের রিপোর্ট শেষ করেছেন এক উদ্ধৃতি দিয়ে—
    “If we don’t create the future, the present extends itself”(‘আমরা যদি ভবিষ্যৎকে সৃষ্টি না করি, তাহলে বর্তমান প্রলম্বিত হবে।’)—Toni Morrison (Song of Solomon)
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:২৭600311
  • যোজনা কমিশন কিন্তু তার নিজের তৈরী বিশেষজ্ঞ দলের সুপারিশ মানে নি

    আসুন দেখি যোজনা কমিশন কি বলছে—
    বাজেটের ২.৫% নয়, ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হবে ১.৫৮%।
    কেন্দ্রীয় বরাদ্দ হবে রাজ্য নিজে স্বাস্থ্যখাতে যা ব্যয় করে তার চেয়ে বেশী। কেন্দ্র কর বাবদ রাজ্য থেকে যে অর্থ নেয়, ফেরত দেয় তার ১৫-২০%। বেশীর ভাগ রাজ্য স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বাড়াতে পারবে না।
    জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন, জননী সুরক্ষা যোজনা, পরিবার পরিকল্পনা, টীকাদান, যক্ষ্মা-ম্যালেরিয়া-ডায়েরিয়া প্রতিরোধ, ইত্যাদি সবই এখন চলে কেন্দ্রের অর্থে। রাজ্যে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের অর্ধেক যদি কেন্দ্র দেয়, তবে ব্যয় বরাদ্দ বাড়াতো দূরের কথা, কমে যাবে।
    সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবায় নিজের কেন্দ্রীয় ভূমিকা ত্যাগ করে মূলত ম্যানেজার হিসেবে কাজ করবে।
    বেসরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবা ও স্বাস্থ্যবীমার ভূমিকা হবে প্রধান। এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোর ম্যানেজড হেলথ কেয়ার-এর উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।
    উচ্চ-স্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল-এর সুপারিশ করা হেলথ প্যাকেজ ও প্রয়োজনে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তির বদলে সরকারের পয়সায় বেসরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি করার কথা বলা হয়েছে।
    লাভজনক তৃতীয় স্তরের পরিষেবাকে তুলে দেওয়া হবে কর্পোরেট হাসপাতালের হাতে।
    যেটুকু সরকারী ব্যবস্থা আছে, সেটুকুও গুটিয়ে ফেলা হবে।
    সরকারী অনুদানে বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যবসায়ীরা ও অসরকারী সংস্থাগুলো নতুন চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলবে।
    প্রতি পরিবার নিজের পছন্দমত বেসরকারী হাসপাতাল বেছে নেবেন, সরকার একটা সীমা অবধি তার মূল্য চুকিয়ে দেবে।
    জাতীয় স্বাস্থ্য প্যাকেজের উল্লেখ অবধি নেই।
    চিকিৎসকের অভাব মেটানোর জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল ও মেডিকাল কলেজ গড়ে তোলার জন্য সরকার উৎসাহ দিতে মোট খরচের ২০% অবধি অনুদান দেবে।
    তাদের আয় বাড়ানোর জন্য করছাড় দেওয়া হবে।
     সরকারী অর্থে গড়ে তোলা হাসপাতালে ইউজার ফি সবই নেওয়া যাবে।

    উল্লেখ নেই
    জেনেরিক নামের ওষুধ প্রচলনের।
    বিনা পয়সায় অত্যাবশ্যক ওষুধ সরবরাহের।
    ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণের।
  • পুন্যব্রত গুণ | 151.0.9.60 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:২৯600312
  • আমাদের সংগঠন বা বন্ধু যে সব সংগঠন জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে দাতব্য স্বাস্থ্য সেবা তাদের একমাত্র কাজ হতে পারে না। সর্বজনীন স্বাস্থ্যের অধিকারের দাবীতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি আমাদের অন্যতম কাজ। সে কাজে আমাদের হাতিয়ার হতে পারে শ্রীনাথ রেড্ডি কমিটি-র সুপারিশ। সরকার নিয়োজিত কমিটির সুপারিশ যদি সরকারই না মানে তাহলে জনসাধারণ তো সোচ্চার হতেই পারেন।
  • Sibu | 118.13.142.178 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১১:৩০600313
  • বাংলার বাঘকে।

    যদি আইপি অ্যাড্রেস দেখাতে না চান তো আইপি লুকিয়ে পোস্ট করুন। আপনার টেকনিক্যাল সফিস্টিকেশন কতটা জানি না। সুতরাং আপনাকে একটি সহজ রাস্তা বাতলাচ্ছি। পোস্ট করার সময় টর ব্রাউজার ব্যবহার করুন।

    https://www.torproject.org/

    ভিদালিয়া আর ব্রাউজার, এই দুটি টর কম্পোনেন্ট আপনার লাগবে। যদি অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইপি লুকোতে চান তো orbot ব্যবহার করুন।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.8.155 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৮:৪৩600314
  • এখন অবধি যা যা পোস্ট করেছি তা শ্রীনাথ রেড্ডি কমিটির সুপারিশ নিয়ে। মাঝে মাঝে আমার/আমাদের মত এসেছে।
    এবার আমার-আমাদের মতগুলো বলব বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। শুরু করা যাক ওষুধ নিয়ে। এ বিষয়ে কয়েকজন প্রশ্নও করেছেন কিছু।আমার একটা লেখা তুলে দিচ্ছি, এক বাংলা দৈনিকের জন্য লিখেছিলাম কিছুদিন আগে।

    আশির দশকের শুরু—প্রতিবেশী বাংলাদেশের সামরিক স্বৈর সরকার এক জনমুখী পদক্ষেপ নিল, বাংলাদেশের বাজার থেকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর সব ওষুধ নিষিদ্ধ করে। প্রায় একই সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অত্যাবশ্যক ওষুধের প্রথম তালিকা প্রকাশ করে, সে তালিকায় ওষুধ ছিল শ’দুয়েক। এই ওষুধগুলো দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত মানুষের প্রায় সমস্ত রোগ চিকিৎসা সম্ভব। অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকা ছিল ‘২০০০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অথচ ভারতের বাজারে তখন হাজার ষাটেক ওষুধের ফরমুলেশন।
    তারও প্রায় এক দশক আগে সংসদ নিযুক্ত হাতি কমিটি (কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সাংসদ জয় শুকলাল হাতি) ১৯৭৫-এ প্রকাশিত রিপোর্টে বলে ১১৭টা মাত্র ওষুধ ভারতের জন্য অত্যাবশ্যক। কমিটি এই ওষুধগুলোর উৎপাদন নিশ্চিত করার সুপারিশ করে, ওষুধের ব্রান্ড নাম বা বাজারী নামের বদলে জেনেরিক নাম বা বৈজ্ঞানিক নাম ব্যবহারের সুপারিশ করে। যাতে জীবনদায়ী ও অত্যাবশ্যক ওষুধগুলো মানুষের আয়ত্বের মধ্যে থাকে তাই মূল্য-নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করা হয়। হাতি কমিটি চেয়েছিল পাব্লিক সেক্টর যেন ওষুধ উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা নেয়। দেশীয় ওষুধ-কোম্পানীগুলোর বিকাশের জন্য কিছু ওষুধ-উৎপাদন কেবল দেশীয় কোম্পানীগুলোর জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা বলা হয়। ওষুধ-শিল্পে বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর ভূমিকার নিন্দা করে কমিটি, ওষুধ-কোম্পানীগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগের মাত্রা তৎক্ষণাৎ কমিয়ে ৪০% করা এবং তারপর কমিয়ে ২৬% করার কথা বলা হয়, এমনকি বিদেশী ওষুধ-কোম্পানীগুলোর জাতীয়করণের পক্ষে ছিল হাতি কমিটি।
    হাতি কমিটির সুপারিশে সরকার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তার প্রমাণ ওষুধের বাজারে ষাট হাজার ওষুধ।
    যুক্তিসঙ্গত ওষুধ ব্যবহারের পক্ষে, জাতীয় ওষুধ নীতির দাবীতে আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগে ‘মানুষের জন্য ওষুধ না ওষুধের জন্য মানুষ’—এই প্রচার আন্দোলন শুরু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ড্রাগ একশন ফোরাম, ফোরামের নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা শহরের দুই সরকারী মেডিকাল কলেজের দুই শিক্ষক-চিকিৎসক—চর্মরোগবিদ ডা সুজিত দাশ ও ওষুধবিজ্ঞান-বিশেষজ্ঞ ডা পীযূষকান্তি সরকার। ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার মানে ক্ষতিকর ও ফালতু ওষুধ ব্যবহার না করা, বাজারী নামের পরিবর্তে ওষুধের বৈজ্ঞানিক নাম ব্যবহার, ওষুধ-বিজ্ঞানস্বীকৃত fixed dose combinations (একাধিক ওষুধের নির্দিষ্ট মাত্রায় মিশ্রণ) ছাড়া অন্য fdc-গুলো ব্যবহার না করা, বৈজ্ঞানিক নামে যেসব ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না সে সব ওষুধের কমদামী ব্র্যান্ড ব্যবহার করা, বহুজাতিক কোম্পানীর চেয়ে দেশীয় ওষুধ-কোম্পানীগুলোকে প্রাথমিকতা দেওয়া, ইত্যাদি। এই প্রচার-আন্দোলনে প্রভাবিত হয়েছিলেন অনেক চিকিৎসক, অন্যান্য রাজ্যেও সমধর্মী সংগঠন গড়ে উঠেছিল, সারা ভারতে গড়ে উঠেছিল অল ইন্ডিয়া ড্রাগ একশন নেটওয়ার্ক। ডা দাশ ও ডা সরকারের ছাত্র-স্থানীয় ডাক্তাররা প্রয়াত শ্রমিক-নেতা শংকর গুহ নিয়োগীর নেতৃত্বাধীন ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার শহীদ হাসপাতালকে ভারতে ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহারের প্রথম পরীক্ষাগার হিসেবে গড়ে তোলেন। ড্রাগ একশন ফোরামের প্রথম পুস্তিকা ‘মানুষের জন্য ওষুধ না ওষুধের জন্য মানুষ’ বহু বার পুনর্মুদ্রিত হয়, হিন্দী ভাষায় অনূদিত হয়। জনস্বাস্থ্য কর্মসূচীগুলোকে যুক্তিসঙ্গত ওষুধ সরবরাহ করার জন্য বাংলায় ওয়েস্টবেঙ্গল ভলান্টারী হেলথ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে গড়ে ওঠে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট মেডিসিনাল ইউনিট, গুজরাটে গড়ে ওঠে লোকস্ট (LOCOST)। এই আন্দোলনগুলোর চাপে সরকার বারবার বাধ্য হয়েছে ক্ষতিকর কিছু ওষুধকে নিষিদ্ধ করতে।
    আর আজ কি দেখছি? কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে রিপোর্ট ৮ই মে সংসদের দুই কক্ষে পেশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে—উন্নত দেশে নিষিদ্ধ হওয়া বিভিন্ন ওষুধ আমাদের দেশে ছাড়পত্র পেয়ে যাচ্ছে ওষুধ-কোম্পানী, সরকারী ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসকদের একাংশের ‘অশুভ আঁতাত’-এর ফলে। দেশে হাজার-হাজার বিশেষজ্ঞ-চিকিৎসক থাকলেও নির্দিষ্ট গুটিকয়েকের সুপারিশই দাখিল করছে ওষুধ-কোম্পানীগুলো। দেশের তিন শহরের তিন বিশেষজ্ঞ সুপারিশ করেছেন একই ভাষায়, বোঝা যাচ্ছে ওষুধ-কোম্পানীর তৈরী বয়ানে সই করেছেন এঁরা। লজ্জার বিষয় যেসব চিকিৎসকদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে তাঁদের তিনজন আমাদের শহরের তিনটি সরকারী মেডিকাল কলেজের শিক্ষক-চিকিৎসক। অবাক হচ্ছি—এঁরা ডা সুজিত দাশ-ডা পীযূষ সরকারের উত্তরসূরী!
    ওষুধবিজ্ঞানে বলা হয়—যার বিষক্রিয়া নয় তা ওষুধই নয়। এরকম একটা পদার্থ একটা মাত্রায় ওষুধের কাজ করে আবার মাত্রা বাড়ালে বিষের মত কাজ করে। তাই কোনও বস্তুকে ওষুধের তকমা পেতে গেলে কতগুলো ধাপ পেরিয়ে আসতে হয়।
    •প্রথমে ধারণা করা হয়
    •তারপর ওষুধপদপ্রার্থী বস্তুটার ডিজাইন করা ও সংশ্লেষণ
    •এবার মানবেতর প্রাণী ও তাদের কোষকলার ওপর সেটার প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
    •এরপর মানুষের ওপর পরীক্ষা
    •এরপরের ধাপে সরকারী লাইসেন্স পেয়ে চিকিৎসার জন্য বস্তুটা বাজারজাত করা
    •বাজারজাত হওয়ার পর তার নিরাপত্তা ও অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে তুলনামূলক তথ্য-সংগ্রহ চালানো।

    বাজারে আসার লাইসেন্স পাওয়ার আগে মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর কথা আবার তিনটে পর্যায়ে-১) ২০ থেকে ৫০ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবী বা স্বেচ্ছাসেবী রোগীর ওপর, ২) ৫০ থেকে ৩০০ জন রোগীর ওপর, ৩) ২৫০ থেকে ১০০০ জন রোগীর ওপর। কোন পর্যায়ে কি কি দেখা হয় তা জটিলতা বর্জন করার জন্য এখানে বলছি না।
    বলাই বাহুল্য এভাবে পরীক্ষা চালিয়ে একটা ওষুধকে বাজারে আনা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ, তার ওপর আবার দেখা যায় ১০০ টা ওষুধপদপ্রার্থীকে নিয়ে কাজ শুরু করলে শেষ অবধি ওষুধের তকমা পায় গড়ে তাদের মধ্যে একটা। নতুন ওষুধ বাজারে আনার খরচ হিসেব করে দেখা গেছে ওষুধ পিছু খরচ পড়ে গড়ে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সময় লাগতে পারে ১৫ বছর অবধি, তার মধ্যে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য ১০ বছর অবধি।
    খরচ বাঁচানোর জন্য বহুজাতিক ওষুধ-কোম্পানীগুলো যে পন্থা অবলম্বন করে তার মধ্যে অন্যতম হল—তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশগুলোতে ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানো, যেসব দেশে ওষুধ-নিয়ন্ত্রক সংস্থা কমজোর, যেখানে ওষুধ-নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মীদের একাংশ ও চিকিৎসকদের একাংশকে কমপয়সা খরচ করেই কিনে নেওয়া যায়, নিজেদের পছন্দমত রিপোর্ট তৈরী করানো যায়।
    ভারতেও এরকম অনৈতিক ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলেছে বহুদিন ধরে। বিষয়টা নিয়ে হইচই হওয়ার পর সরকার বাধ্য হয় নিয়ম করতে—২০০৯-এর ১৫ই জুন থেকে সমস্ত ক্লিনিকাল ট্রায়াল করার জন্য আই সি এম আর-এর ক্লিনিকাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রিতে নথিভুক্তিকরণ বাধ্যতামূলক। নতুন নতুন নিয়ম যতই হোক না কেন তাতে ওষুধকোম্পানীগুলোর কোনো অসুবিধা হচ্ছে বলে মনে হয় না। ক্ষতিকর, অপ্রয়োজনীয় ও উন্নত দেশে নিষিদ্ধ ওষুধের সংখ্যা আমাদের দেশের বাজারে বাড়ছে বই কমছে না।
    দুবছর আগে হেলথ একশন ইন্টারন্যাশানাল (HAI)-এর অর্থানুকূল্যে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট মেডিসিনাল ইউনিট (CDMU) ভারতের বাজারে অযৌক্তিক মিশ্রণ ওষুধের ওপর এক সমীক্ষা চালায়। CDMU-এর সমীক্ষক দলের অন্যতম সদস্য ছিলাম আমি। আমরা দেখেছিলাম—
    •২০০৭-র সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের ওষুধ-মহানিয়ন্ত্রক বাজারে চলা ২৯০ রকমের মিশ্রণ ওষুধকে অনুমোদনহীন ঘোষণা করেন। এই মিশ্রণগুলো বিভিন্ন রাজ্যের ওষুধ-নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্র পেয়ে বাজারে ছিল। (আমাদের দেশে যে কোনো রাজ্যের ওষুধ-নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে যে কোনো উপায়ে লাইসেন্স পাওয়া থাকলেই অন্য রাজ্যগুলোতে ওষুধ বিক্রি করা যায়)। ওষুধ-কোম্পানীগুলো নিজ নিজ মিশ্র ওষুধের অনুমোদন পাওয়ার জন্য ক্ষমতার অলিন্দে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে, আদালতে কিছু মামলা দায়ের করা হয়। ২৯০ টার মধ্যে ১৭৫ টা অনুমোদন পেয়ে যায়, অনুমোদনহীন থেকে যায় ১১৫ টা মিশ্রণ। আমরা দেখি সেই ১১৫ টার মধ্যে ৫০ টা তখনও নানা ব্র্যান্ড নামে বাজারে বিকোচ্ছে।
    •বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ও ভারতের সাম্প্রতিক অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকায় নির্দিষ্ট মাত্রায় মিশ্রণ ওষুধ আছে যথাক্রমে ২৫টা ও ১৩টা যেগুলো বিজ্ঞান্সম্মত, অথচ Current Index of Medical Specialities-এর এপ্রিল-জুলাই সংখ্যা থেকে আমরা ১৩৫৬ রকম অযৌক্তিক মিশ্রণ ওষুধ এবং সেগুলোর মোট ৪৫৫৯ রকম ব্র্যান্ড খুঁজে পাই।
    •ওষুধের বাণিজ্যিক তালিকা CIMS-এ আমরা দেখি কাশির ওষুধের নামে ১৬৬ রকম মিশ্রণ বাজারে চলছে ৪৯৩ টা ব্র্যান্ড নামে, তৈরী করছে ১০৬ টা কোম্পানী। সবক’টাই অপ্রয়োজনীয়, কয়েকটাতো আবার ভারতেই নিষিদ্ধ।
    •রক্ত তৈরীর ওষুধের তালিকায় আমরা ১৩২ রকমের অযৌক্তিক মিশ্রণ পেয়েছিলাম ২১২ টা ব্রান্ড নামে। তার মধ্যে ৪ টে এমন ব্র্যান্ড ছিল যাতে হিমোগ্লোবিন মেশানো আছে। অথচ ১৯৯৮ থেকেই ওষুধে প্রাণিজ হিমোগ্লোবিন মেশানো নিষিদ্ধ।
    •ডায়াবেটিসের মুখে খাওয়ার ওষুধের অযৌক্তিক মিশ্রণ আমরা পেয়েছিলাম ১৮ রকম, ২৩১টা ব্র্যান্ড নামে।

    এই সমীক্ষা চলার সময় ওষুধ নিয়ে অনেকটা পড়াশুনা করার সুযোগ হয়েছিল, দেখেছিলাম—
    •বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ষোড়শ অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকায় ওষুধ আছে ৩২৯ টা, ভারত সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের তৈরী দ্বিতীয় জাতীয় অত্যাবশ্যক ওষুধের তালিকায় ওষুধ আছে ৩৫৪ টা। অথচ ভারতের বাজারে বিকোচ্ছে প্রায় লাখ খানেক ওষুধ।
    •প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ জাতীয় ওষুধ নীতি তৈরী করেছিল ১৯৮২ সালে, প্রায় একই সময়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করে প্রথম প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকা। ১৯৮৩-র ২৩রা জুলাই ভারত সরকার প্রথম কিছু ওষুধকে অযৌক্তিক বা ক্ষতিকর হিসেবে নিষিদ্ধ করে, কোপ পড়ে ১২টা ওষুধের ওপর। তারপর থেকে ২৭ বছরে নিষিদ্ধ ওষুধের সংখ্যা মোট ৮০ রকম। আমরা বাণিজ্যিক তালিকায় এই ৮০টার মধ্যে ২৮টার খোঁজ পেয়েছি।

    এতসব কথা বলার উদ্দেশ্য একটাই-বোঝানো যে বাস্তবে ওষুধ-নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে যেগুলো আমাদের দেশে আছে তারা জনস্বার্থরক্ষা করে না, ওষুধ-কোম্পানীর স্বার্থরক্ষাতেই তারা ব্যস্ত।
    চিকিৎসা, বিশেষ করে চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ, এমন পণ্য যেখানে বিক্রেতা ও ক্রেতার মাঝে আরও কেউ থাকেন যিনি ক্রেতা অর্থাৎ রোগীর হয়ে পছন্দ করে দেন রোগী কোন ওষুধ খাবেন। তিনি অর্থাৎ ডাক্তার অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতার স্বার্থ না দেখে বিক্রেতার অর্থাৎ ওষুধ-কোম্পানীর স্বার্থ দেখছেন!
    ত্রিশ বছর পর আবারো আওয়াজ তোলার দরকার—ওষুধের জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য ওষুধ চাই। পথে নামতে হবে নীতিবোধ-সম্পন্ন চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে জনসাধারণকেও……।
  • পুণ্যব্রত গুণ | 151.0.8.155 | ২৪ মার্চ ২০১৩ ১৯:০৪600315
  • ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড রাখার এক পদ্ধতি আমার সংগঠন শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগ চালাচ্ছে তার সবচেয়ে বড় ক্লিনিক শ্রমিক ৃষক মৈত্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২০০৩ থেকে। খুব জোরের সঙ্গে বলব এমন পদ্ধতি পশ্চিমবঙ্গের কোনও স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতালে নেই।
    প্রত্যেক রোগীর একটা করে আইডি নং আছে। তাঁর নাম, অভিভাবকের নাম, ঠিকানা, ফোন নং, বয়স, লিঙ্গ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, পারিবারিক আয় নথিভুক্ত।
    প্রতিবার তাঁকে কোন কোন বিভাগে, কোন কোন ডাক্তার দেখেছেন, কি কি রোগ নির্ণীত হয়েছে, কি কি পরীক্ষা করা হয়েছে, পরীক্ষাগুলোর ফলাফল, কি কি ওষুধ কি মাত্রায় দেওয়া হয়েছে, ওষুধ বাবদ ও অন্যান্য খরচ কি কি হয়েছে--সব পাওয়া যায় এই রেকর্ড থেকে।
    এই পদ্ধতি চালু করতে রোগীর ওপর কোনও আলাদা খরচের বোঝা চাপাতে হয় নি আমাদের।
    এই প্রোগ্রামটা আমাদের বানিয়ে দিয়েছেন আমার নিকটাত্মীয় অমর সরকার, পেশায় যিনি ব্যাংক কর্মী।
    আমার মনে হয় সরকার সদিচ্ছা থাকলে পারে সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে জুড়ে তথ্যভান্ডার তৈরী করতে।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২৫ মার্চ ২০১৩ ০০:২৩600316
  • পুণ্যব্রতবাবু,
    আপনার লেখা পড়ে এবং আপনাদের প্রচেষ্টার কথা জেনে খুব ভালো লাগল। আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবার উপায় জানতে পারলে আরো ভাল হত।
  • lcm | 34.4.162.218 | ২৫ মার্চ ২০১৩ ০০:৩৫600318
  • থাঙ্কু
  • brc-slg | 37.125.202.110 | ২৬ মার্চ ২০১৩ ১৩:২৬600321
  • .

    ডঃ পুণ্যব্রত গুণ উৎসমানুষের একটা লেখার কথা বলেছিলেন। বাইপাস, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বনাম ওষুধ নিয়ে।
    লেখাটি পড়তে খুবই আগ্রহী। আরও অনেকের উপকার হবে নিশ্চয়ই।।

    লেখাটি এখানে পোস্টানো যাবে ?

    ধন্যবাদ জানালাম।
  • pi | 78.48.231.217 | ২৬ মার্চ ২০১৩ ১৩:৪৮600322
  • লেখাটা কাল আপলোড করে দেব।
  • brc-slg | 37.125.200.213 | ৩০ মার্চ ২০১৩ ০৫:০৬600323
  • টইটি উপরে তুললাম।
  • brc-slg | 37.125.203.61 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ০১:০২600325
  • @ pi

    আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানালাম ডঃ গৌতম মিস্ত্রিকে তাঁর এই অনবদ্য সাবলিল লেখাটির জন্য এবং
    আপনাকে , লেখাটি পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

    এই লেখাটি আমার এবং আরো অনেকের মধ্যে এক স্পষ্ট ধারণা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
    অনেক মানুষ খুবই উপকৃত হবেন।

    ভাল থাকবেন।

    ধন্যবাদ ।।
  • Blank | 69.93.207.191 | ৩১ মার্চ ২০১৩ ০১:২৪600326
  • শেয়ার করছি ডক টা
  • Jay | 100.215.26.12 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৩০600327
  • ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট নোভার্টিসের এক্টা পেটেন্ট খারিজ করে দিয়েছে, অন্য কোম্পানীগুলো গ্লিভেস (ব্লাড ক্যান্সারে ইউস হয়) বানাতে পারবে। ব্রাভো!
  • Jay | 100.215.26.12 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৩১600328
  • ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট নোভার্টিসের এক্টা পেটেন্ট খারিজ করে দিয়েছে, অন্য কোম্পানীগুলো গ্লিভেস (ব্লাড ক্যান্সারে ইউস হয়) বানাতে পারবে। ব্রাভো!
  • pi | 78.48.231.217 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৩২600330
  • জয়দা, ইউকের NHS সিস্টেম নিয়ে একটু লিখুন।
  • pi | 78.48.231.217 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৩২600329
  • হ্যাঁ, এটা ভালো খবর।
  • Jay | 100.215.26.12 | ০১ এপ্রিল ২০১৩ ২১:৪৬600332
  • paai, aamaar lekhaar naame jwar aase Je
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন