এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ক্যাভালকেড'স

    Binary
    অন্যান্য | ২৮ মে ২০১৫ | ২৯৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৮ মে ২০১৫ ০২:২৬679498
  • জীবন স্মৃতি লেখা ইচ্ছে আমার কোনো কালেই ছিল না। আমি আর এমন কি হনু , যে জীবন স্মৃতি লিখতে হবে। এগুলো কোনো মেময়ের নয়। এই আমি , আমি নই ....

    ======
    ভালো থাকিস ....

    বাড়ির পেছনের সরকারী আবাসনের , যার সাথে আমাদের বাড়ির কমন পাঁচিল , বন্ধুদের সাথে বৈকালিক আড্ডা/তাস/ক্যারাম/গোল্ডফ্লেক -এর সময়টুকু একটুও যাতে টোল না খায় তাই রোজ বিকেলে ওই পাঁচিল টুকু টপকাতে হত। নইলে , দুশো মিটার মত ঘুরে , আবাসনের মূল ফটক দিয়ে যেতে বড়জোর মিনিট তিনেক। কিছুদিন আগে , সেই সময়ের একটা পুরনো ছবিতে , সেই সময়ের সেই রং ওঠা ফ্যাকাসে পাঁচিল , আর তার পেছনে বন্ধুদের বাড়ির সেই সময়ের বারান্দায়, ফ্রিজ হয়ে যাওয়া সময়, দেখে মনটা একটু টন টন করলো।
    গেলবার , কলকাতা গিয়ে , কলেজস্ট্রিট-এর বইয়ের ফেরিওয়ালা , পুরনো বই-এর এলোমেলো গন্ধ , কলেজস্কোয়ারের ঘোলাটে এদো জল , প্যারামাউন্টের সরবত আর কফিহাউসের গমগমে হট্টগোল দেখে একটা 'কিছুই বদলায় নি' ফিলিং হচ্ছিল। তারপর , হিন্দুস্কুলের উল্টো দিকে , কলেজের অর্ধবৃত্তাকার নিয়ন আলোর সাইন বোর্ডে 'প্রেসিডেন্সি উনিভার্সিটি' দেখে প্রথম খটকা , তাইত কলেজ এখন ইউনিভার্সিটি। তারপর বাঁহাতে একটু এগিয়ে বাসস্ট্যান্ড। হঠাত , এইখানে , কোনো এক পুরনো বিকেলে , কোনো আশা ভঙ্গের আর 'ফিলিং অফ রিজেক্সন' -এর স্মৃতিতে মনে হলো সময় পেরিয়ে গ্যাছে কুড়ি কুড়ি বছরের পার।
    আজকাল , ফেসবুক/স্কাইপে/চ্যাট হ্যানাত্যানা-র যুগে তিন সমুদ্র সাতাশ নদী পুরাতন মিথ। যোগাযোগের দুনিয়া বিন্দুবত। নিতান্ত ব্যক্তিগত, খাওয়ায় ঘুম , দাঁতমাজা , মনখারাপ, মনভালো, পাড়ার রাজনীতি , মন্টুকাকুর ছেলের গাড়ি কেনা, ঘোষাল-দের মেয়ের নতুন প্রেম সব খবর, ঘটার আগেই হাত বদল হয়ে যাচ্ছে দেশান্তরে। তাহলে , সময়ের দূরত্বটা পাড়ি দিতে এত কেন কষ্ট করতে হয় ? হতেই পারে, রোগা প্যাংলা ঝপ্পস চুলের সেই আমি -র সাথে গায়ে গতরে ফুলেওঠা , ব্লাডপ্রেসারের বড়ি খাওয়া এই আমি-র ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট চালাচলি হয়ে গ্যালো ফেসবুকে। বাড়ির পেছনের পাঁচিলডিঙানো বা কলেজস্ট্রিটের সেই আমির সাথে রাতভর গল্প করতাম তাহলে।
    বলতেই পারতাম , 'মন খারাপ করিস না রে , ভালো থাকিস ছোটবেলা' ....

    ======
    ২৫ বৈশাখী ...

    তখন ক্লাস ওয়ানে পড়ি , নাকি ক্লাস টু ? সরকারী ইস্কুল। কোনদিন-ই ইংরাজি মাধ্যম , ইস্কুলে পড়া হয়নি। ছয় বছর বয়েসে টাই পরা হয়নি। সত্যি বলতে কি, পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ইংরাজি অ আ ক খ -ও শেখা হয় নি। আমার শৈশব , বিশুদ্ধ বাংলায় বেড়ে ওঠা শৈশব। খাওয়া , ঘুম, স্বপ্ন , লীলা মজুমদারের টংলিং , সুকুমার রায়ের হুকোমুখো, নারায়ন দেবনাথের এর নন্টেফন্টে , সব বাংলায়। ইংরাজি-র সাথে পরিচয় বলতে বাড়িতে রোজ সকাল-এর খবরের কাগজ স্টেটসম্যান -এ।
    সরকারী ইস্কুলে , বাংলা , ইতিহাস , ভূগোল , বিজ্ঞান-এর বই , স্কুল থেকেই বিতরণ করা হত। বিনামূল্যে। 'সহজ পাঠ' প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী -র পাঠ্য। আর কিশলয় তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত। বাংলা পাঠ্য বই। তো, রবি ঠাকুরের সাথে সেটাই আমার প্রথম যোগাযোগ। তখন রবি ঠাকুরীয় অবয়ব বলতে, বাবার লেখার ডায়রীর ওপরে একটি , আলখাল্লাধারী দাড়িওয়ালা সিলুয়েট। আর কিছুকিছু শব্দের উর্মিমালা , যা পাঠ্য বই -এর কবিতা হয়ে স্নায়ুতে স্নায়ুতে ছড়িয়ে পড়া। 'মধু মাঝির ওই যে নৌকা খানি ' , 'ইটেগড়া গন্ডার , বাড়ি গুলো সোজা, চলিয়াছে দুদ্দার জানালা দরজা ' , 'সারাদিন জজ্জর থথ্থর কাপে পাতা পত্তর , ওড়ে যেন ভাবে ও, মনে মনে আকাশেতে বেড়িয়ে , তারাদের এড়িয়ে যেন কথা যাবে ও' ... . কথাও যেন একটা জানালা খোলার উদ্যোগ , কোথায়, সেটা ওই বয়েসে বোঝার মত ক্ষমতা ছিল না। তবে, বইয়ের আলমারিতে , ছিল চোদ্দখন্ডে , বিশ্বভারতী প্রকাশিত রচনাবলী , যার সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠতে লেগে গেছিল আরো একদশক।
    তবে, আরো যে বইটা , বহু ব্যবহারে জীর্ণ , সকলের হাতেহাতে ফিরত , সেটিও বিশ্ব ভারতী প্রকাশিত। সঞ্চয়িতা। তার হার্ডকভার মলাটের পরে প্রথম পাতায় , দুই তিন ছত্র লাইন। সেই কয়েক ছত্র লাইনের মানে তখন সেই বয়েসে না বুঝলেও , হাতের লেখাটা আমার বাবার সেটুকু বুঝতে পারতাম।
    অনেক পরে বুঝেছি , সঞ্চয়িতা-টা ছিল মা -কে বাবার উপহার , ফুলশয্যা-র রাতে। ..

    ======
    ইচ্ছে ....

    একটু আতুপুতু ছেলে বেলা ছিল। বালিগঞ্জ লেকে সাঁতার -এর ক্লাবে ভর্তি করা হয়েছিল জোর করে, কিন্তু অনেক হাত পা ছুড়েও শেখার মত দমে কুলোয় নি। অনেক ছোট বেলায় লালরঙ্গা ট্রাইসাইকেল বাদ দিলে , ধেরে বয়স পর্যন্ত দুচাকার সাইকেলে হাফ প্যাডেল-ও করা হয়নি। উঁচু ক্লাসে বিড়ি-সিগারেট খাওয়া আর আড়াই টাকার টিকিটে অমিতাভ-র সিনেমার ফাস্টডে - ফাস্টশো দ্যাখা বন্ধুদের একটু সমঝে চলতাম ইস্কুলে । ছোটবেলায় মাথায় তুরপুন মেরে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল , 'সিনেমা দ্যাখে বখে যাওয়া ছেলেরা'.
    এইসব প্রতিটি , সিদ্ধ-নিষিদ্ধ শিক্ষায ওস্তাদি দেখানোর সুসুপ্ত ইচ্ছা ডালপালা মেলে বাসা করে ছিল মনের ভেতর। ইচ্ছা আর গঙ্গা ফড়িং একই জাতের তো । যত দাবিয়ে রাখা যায় তত পিড়িং করে। তো, এক এক করে সবেতেই হাতেখড়ি হয়েই গ্যালো, আসতে আসতে। এমনকি কলেজে-র ক্যান্টিনের পেছনের গলিতে কেতলি করে কলের জলে 'ওল্ড মঙ্ক' রাম পর্যন্ত।
    আরো কিছু বেয়াদপি ইচ্ছে , কলকাতার বাইরে স্বপ্ন/দুঃস্বপ্নের পৃথিবীটা দেখে নেওয়ার ইচ্ছে , আইফেল টাওয়ারের ওপরে উঠে প্যারিসের আলো দ্যাখার ইচ্ছে , বার্লিনওয়ালের ধ্বংসাবশেষ দেখার ইচ্ছে , নরওয়ের অতলান্তিক গিরিখাতে মধ্যরাতে সূর্য্য দেখার ইচ্ছে , কোনো না কোনো সময়ে মনের মধ্যে পাকিয়ে উঠেছিল ছোটোবেলার ভূগোল বই আর কলেজ বেলার রাজনীতি থেকে। সেইসব দেওয়াল লিখন-ও ক্যামন করে সত্যি হয়ে গ্যালো সময়ের চাকায়। 'ভোরের সপ্ন সত্যি হয়' -এর মত। গভীর ইচ্ছে, স্পর্শ করা যায় -র মত।
    সত্যি ? হয় নাকি ? কালকে কোথায় যেন পড়লাম সুচিত্রা-র কথা। সেন নন। মাওবাদী জঙ্গি নেত্রী। কেন্দুপাতায় মহাজনী কারবারের প্রতিবাদে বন্দুক তুলে নিয়ে জঙ্গলে গেছিলেন। কিছু একটা ইচ্ছে নিয়ে। এখন কারো ঘরণী। জঙ্গল মহল শান্ত। মহাজনীরা যে কে সেই।
    আর সত্যি ? হয় নাকি ? প্রথম প্রেম। মানে ক্রাশ। ছিল তো। মনেই ছিল। ইচ্ছে হয়ে। সত্যি হলো কি ? এখনো খুড়ে দেখলে তাজা-ই পাওয়া যাবে , সত্যি নয়।
    ঘুম ভেঙ্গে অন্ধকারে হাতরে দেখি কোথায় আছে বইটা ? 'আম আঠির ভেঁপু ' ? তারপর খোয়াড়ি ভাঙ্গে , মুখধুয়ে তৈরী হই, আপিস যাই। .....

    ===========
    লিগ্যাসি ....

    পশ্চিমী সংস্কৃতি আর পান্ডুরবর্ণা বন্ধু-বান্ধবীদের মধ্যে বেড়ে ওঠা মেয়ে পাঁচ বছর থেকে আজ পর্যন্ত , বঙ্গদেশীয় সম্পর্কের শিকড় গুলো ঠিক চিনে উঠতে পারেনি। ওর কাছে, কাকু, জেঠু, পিসি, মামা, মাসি - গুলো সুধুই ধন্ন্যাত্বক কোলাজ। কিছু সর্বনাম আর নামের প্রতিশব্দ মাত্র। আমাদের সোসলাইজেসন-এ মামা বা মাসি -র সাথে একটা সম্পর্কের অবয়ব উঠে আসে , বা তার সাথে মিশে থাকে একটা বিশেষ অনুভূতি-র সমীকরণ , সেটা দুই বছরে দেশ ছাড়া পঞ্চদশী কিশোরীর কাছে, একটা মিথ। একই লোক কি করে একসাথে পিসি, মাসি, দিদি হতে পারে , সেটা ওর কাছে একটা জটিল রিডিল। শিকড় তো আর আমূল উপ্রে ফেলে নতুন করে তৈরী-ও করা যায় না।
    সেই সময় সদ্য কলেজ। বাড়ি, ইস্কুল, মা-এর শাসন , ভোর বেলার এলার্ম ঘড়ি এইসব বেড়ার বাইরে বেরিয়ে আসার পর, যেমন হয় , বাবা-মা-রা একটু নিঃসঙ্গ অনুভব করতে থাকে। তো, আমার মা , আমাদের বাড়ি দুধ দিত যে বারো তেরো বছরের কালো কুষ্ঠি , রোগা রোগা হাত পায়ের মূর্তিমান , তাকে ধরে এনে অঙ্ক সেখাতে সুরু করে। তো সেই ছেলেটার নাম ছিল রেজা। রেজাউল বা রেজাউদ্দিন , কিছু একটা হবে। আমরা ডাকতাম রেজা বলেই। হাত খরচ দেওয়া হত। ছোটখাটো ফরমাইস তামিল করত। আর সারা দুপুর মা'র কাছে অঙ্ক শিখত। আমরা পাটিগণিত শিখেছি যে ভাবে, রেজা -কে শেখানোর পদ্ধতি-ও অন্য রকম ছিল না। রেজার বাবা মুনিশ খাটত, নির্মীয়মান বাড়িতে । ছেলের অঙ্ক শিখে কি মোক্ষো লাভ হবে, বোঝে নি কোনদিন, তবে আপত্তি-ও করেনি।
    রেজা মা-কে বলত দিদা। কেউ বলতে বলে নি। নিজেথেকেই বলত। আমার ছেড়ে আসা প্যান্ট জামা , যে গুলো যত্ন করে রাখা ছিল দেরাজে, সেগুলো ওকে পরতে দিয়েছিল মা। তো সেই সময়, কোনো এক গ্রীষ্মের দুপুরে, আমার দাদার ছেলে পৃথিবীতে আসে। আমাদের আনন্দের প্রসঙ্গ এখানে বলার নয়। যেটা বলার , রেজা সেই খবরে , তিড়িং বিড়িং নাচ করেছিল বারান্দায়। কালো মুখে, সাদা দাঁতের ঝকঝকে হাসি নিয়ে। সম্পর্কের ত্রিকোনমিতি মনে হয় শেকড়েই থাকে।
    তো, সম্পর্কের ত্রিকোণ আর রঙের আঙ্গিক এক-ই। কোনোটা গাড়ো সবুজ , কোনোটা ফিকে হয়ে আসা। এগারো বারো ক্লাসে , দেরী করে হলেও , ২৪ ইঞ্চি হিরো সাইকেল যখন আয়ত্তে এসে গ্যাছে , কোনো এক বাড়ির বারান্দায় কোনো এক বান্ধবী কে দেখিয়ে অকারণ কসরত , সেটাও সম্পর্কের প্রতিচ্ছায়া। কৈশোরের সেই লিগ্যাসি-ও বেঁচে থাকে কোনো কোনো সময়। মস্তিস্ক হলুদ হয়ে যায়, তবুও। ঘাস সবুজ হয় বুকের ভেতর।
    তবে হ্যাঁ , জল দিতে হয় , নিয়মিত .....

    ======
    বয়স ...

    বয়সের সাথে জীবনের লেখচিত্রটা দ্বিমাত্রিক। একটা খুবই সাদা কালো। আরেকটা খুবই রঙিন। চুলের রং, পেশী আর ত্বকের নমনীয়তা , হাড়ের ক্যালসিয়ামের ঘনত্ব , দৃষ্টির স্বচ্ছতা , এগুলো ঋণাত্বক প্যারাবোলা-র মত। শুন্য থেকে সুরু , অমোঘ প্রাকৃতিক নিয়মে সর্বাধিক শিখরে পৌছানো , তারপর ধীরে ধীরে ক্ষয হয়ে যাওয়া। তবে হ্যাঁ , প্যারাবোলার কার্ভেচার , এক এক জনের এক এক রকম। কারো দীর্ঘায়িত , কারো হ্রস্ব। যাঁরা 'এজিং গ্রেসফুলি'-তে বিশ্বাস করেন , তাঁদের কার্ভেচারে কোনো মাথা ব্যথা নেই। যাঁরা করেন না , তাঁরা 'লেটাস রেক্টাম' বা আনুভুমিক অক্ষ-কে প্রলম্বিত করতে চান।

    আর যেটা রঙিন, সেটা থাকে কিছুটা মস্তিস্কে , আর বেশির ভাগটা বুকের খাচায়। এর কোনো জ্যামিতিক আকার নেই। পৃথিবীর সাত বিলিয়ন হোমো স্যাপিয়েন্স-এর সাত বিলিয়ন রকম। কোনো আকার নেই অবয়ব নেই। অনুভূতি-র কোনো লেখ চিত্র হয় না। জীবনানন্দ-র কবিতায় কারো ল্যারিংসে বাস্প জমে, তার ঘনত্ব, আঠারো বয়সে-ও যা, আটসট্টি-তেও তাই। প্রেমের কবিতার স্মৃতি আঠারো বয়সে-ও যা, আশিতেও তাই। সরল রৈখিক।

    ছোটবেলায়, পড়া , মার্কিন দেশের ইতিহাস , অষ্টাদশ শতকের পটভূমি তে লেখা লোকাযাত কাহিনী , রহস্য ঘেরা চরিত্রেরা, আর ততোধিক রহস্য ঘেরা প্রকৃতি , একটা ধোয়াটে জাল বুনে রেখেছিল বুকের ভেতর। আংকেল টম , পোকোহন্টাস , ক্রেজি হর্স এই চরিত্র গুলো , যাদের কথা পড়লে মনটা আকুলি বিকুলি করে, কিন্ত একটা জমাটবদ্ধ অবয়ব তৈরী হয় না কারো। আর প্রকৃতি। অনেক অনেক দিগন্ত বিস্তৃত তৃণভূমি। তাতে বাইসন-এর পাল। তাদের গর্বিত কাঁধ, জোরালো সিং আর ঋজু দৌড়। এই সবটাই একটা কল্পলোক হয়ে থেকে গেছিল মাথার ভেতর। তো, সেই ঋণাত্মক প্যারাবোলার , পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট হাঁটতে হাঁটতে ঐন্দ্রজালিক স্বপ্নগুলো বাস্তব হয়ে গ্যালো। ২০১৩ সালের গ্রীষ্মে , কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে , ইযলোস্টন হাইওয়ে-র , পশ্চিমে তৃণভূমি , আকাশ আর জমির মাঝামাঝি কিউমুলাস মেঘের প্রতিফলনে, সূর্যের হলুদ রং আর শয়ে শয়ে বাইসনের হার্ড দেখে , মনে হলো আমার অনুভূতি-র বয়স এখনো আনুভুমিক।

    কাল রাতে আরো একটা স্বপ্ন দেখলাম। গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন-এর সাউথ রিম। রুক্ষ কিন্তু তীব্র সুন্দর নিসর্গ। সমতল জমির ট্রেলার পার্ক। ১০০ মিটার মত দুরে , ক্যানিয়নের পাথুরে দেওয়াল , ভাঁজে ভাঁজে নেমে গ্যাছে দের হাজার ফুট। দেওয়ালের গায়ে কিছু গাছের ডালপালা মেলা কঙ্কাল। ক্যানিয়নের পাথুরে দেয়ালে ঢলে পরা সূর্য। একটা সাদানিল বর্ডার দেওয়া ক্যারাভানের সামনে বন ফায়ার। ফোল্ডিং টেবিলে কফি মগ। আর একটা ফোল্ডিং চেয়ারে বসে একজন , যার মুখটা আবছা , অন্য জগতের , কিন্তু খুব চেনা।

    ও সুসানা , ডু ইউ ক্রাই ফর মি ?
  • kumu | 132.161.67.52 | ২৮ মে ২০১৫ ০৮:৫৯679509
  • চুপ করে থাকি।ভাষা জানি না ,তাই।
  • byaang | 233.227.163.194 | ২৮ মে ২০১৫ ০৯:০১679520
  • ভালো লাগছে লেখাটা। একবার নয়, বেশ কয়েকবার পড়লাম।
  • | ২৮ মে ২০১৫ ০৯:০৬679531
  • ভিন্টেজ বাইনারি।
    পালিও না, লেখো।
  • Bratin | 122.79.35.134 | ২৮ মে ২০১৫ ০৯:৩৯679537
  • বাইনারী দা ফেসবুকে পড়েছিলাম। আবার পড়লাম।খুব ভালো লাগলো।
  • অমিত সেনগুপ্ত | 116.208.196.9 | ২৮ মে ২০১৫ ১০:২১679538
  • বা:। পড়ার পরে একরাশ ভাললাগা নিয়ে চুপ করে বসে থাকা।
  • সিকি | ২৮ মে ২০১৫ ১০:৪৮679539
  • বাঃ।
  • Binary | 208.169.6.50 | ২৮ মে ২০১৫ ২০:৪৩679540
  • থ্যান্কস ।

    অনেকদিন গুরুতে আসা হয় না । নামের সাথে লিংক টা কি ফেবু দিয়ে লগইন করলে হবে ?
  • Div0 | 132.172.241.121 | ২৮ মে ২০১৫ ২১:০৫679541
  • অনেকদিন পরে বাইনারিদা'কে দেখে এবং তদুপরি লিখতে দেখে ভালো লাগছে। কীপ ইট কামিং :)
  • sosen | 212.142.95.221 | ২৮ মে ২০১৫ ২১:৩১679499
  • বাহ!
  • potke | 126.202.139.134 | ২৮ মে ২০১৫ ২১:৩৮679500
  • কি ভালো লেখা!
  • | ২৮ মে ২০১৫ ২২:০৬679501
  • হ্যাঁ বাইনারি। ফেবু বা গুগল দিয়ে লগিন করতে পারবে। প্রথমে একটা অ্যাকাউন্ট বানানোর ফেজ আছে। পাতার ওপরদিকে দেখি লগ অন অপশান আছে, ঐখানে ক্লিকাকে ফেবু আর গুগলের অপশান আসবে। সব হয়ে গেলে যখন লগড অন তখন তোমার গুগলে বা ফেবুতে যে নামটা আছে সেইটে দেখাবে। তখন তুমি ঐ পাতার একদম ওপরে বাঁদিকে কার্সার নিয়ে গেলে ইউজার প্রোফাইল, প্রেফারেন্স এইসব অপশান পাবে। সেখানে গিয়ে গুরুচন্ডা৯ তে ডিসপ্লে'র জন্য এই বাইনারি নিকটা দিয়ে দাও।

    ব্যাস!
    এরপর থেকে লগ অন করলে ঐই দেখাবে।
  • শ্রী সদা | 24.99.145.166 | ২৮ মে ২০১৫ ২২:০৯679502
  • খুব সুন্দর।
  • Binary | ২৮ মে ২০১৫ ২২:৪৬679503
  • যাক , লগইন করলাম
  • Arpan | 192.156.64.228 | ২৮ মে ২০১৫ ২২:৫০679504
  • সেই পুরনো বাইনারিদা!!
  • ranjan roy | 192.69.106.132 | ২৯ মে ২০১৫ ০০:৪৯679505
  • আরো আরো প্রভু, আরো আরো!
  • lcm | 118.91.116.131 | ২৯ মে ২০১৫ ০৯:১৯679506
  • বাইনারি ইস্‌ ব্যাক উইথ এ ব্যাং
  • | 213.99.211.19 | ২৯ মে ২০১৫ ০৯:৫২679507
  • বাইনারী দা, ভাটে এসো। বহু দিন ভাটে লেখো না।
  • b | 135.20.82.164 | ২৯ মে ২০১৫ ১২:১৫679508
  • পুরোনো ল্যখাগুলো কি হবে, অ্যাঁ?
  • Binary | ০৬ জুন ২০১৫ ০২:৪৪679510
  • উত্সব ........

    বাঙালির , বিশেষ করে আমার মত নাস্তিক বাঙালির পার্বন-উত্সব , দোল-দুর্গোত্সব-কালিপুজো উদযাপনে একটু দ্বন্দমূলক বস্তুবাদ খেলা করে। কেন জানি মনে হয় , উত্সবের সাথে কেন সবসময় একটা ধর্মীয় সুতোর সেলাই থাকতেই হবে ? উত্সবের রঙিন দিকটা সবসময় ঠাকুর-দেবতার ঘেরাটোপে থাকাটা , আমাদের মত নাস্তিকদের পক্ষে কেমন যেন লুব্রীকেশন-এর অভাব। বহুত না-ইনসাফি। সে যাই হোক। হালকা লেখায়, জোর করে বিতর্ক ইনজেক্ট করা আমার উদ্দেশ্য নয়।

    কালী পুজোয় বাজি পড়ানো একটা রিচুয়াল। নাকি চিনচিনে খোকা সুলভ আনন্দ ? শৈশবের মাঝামাঝি থেকে বহুদিন , যতদিন পর্যন্ত , আস্তিক-নাস্তিক , শিবকাশির শিশুশ্রমিক , শব্দদূষণ এই সব গুরুগম্ভীর ব্যাপারে সেয়ানা হয়ে ওঠা হয় নি , ততদিন কালী পুজোয় বাজি পড়ানোটা নিছক নির্মল আনন্দের-ই ছিল। আমদের পাড়ায় অলোকেশ-দা তুবড়ি বানাতো , সে আবার য্যামন ত্যামন তুবড়ি নয় , রীতিমত প্রতিযোগিতা মূলক তুবড়ি। সেই আলোকেশদা-কে কালী পুজোর আগে থেকে বেশ হিরো হিরো মনে হত। তুবড়ি-র রকমফের , গন্ধক , লোহাচুর , এলুমিনিয়াম পাউডার আর তুবড়ি ঠাসার শিল্পকৌশল নিয়ে তার অনন্ত বক্তৃতা ছিল। আমাদের অবশ্য , তারাবাতি , রংমশাল -এর ওপরে ওঠা হয়নি। সাহস-ও হয়নি বড়দের অনুমতি-ও হয়নি। আমাদের বড়দার বন্ধু সুব্রতদা , হাতে করে হাউই ছাড়ত আর আমরা অনেক দুরে উচ্চিংড়ের মত তিড়িংবিড়িং করতাম। একবার এই রকম-ই একটা হাতে ছোড়া হাউই , পাঁচিলের ওইপারে লাট্টুদের বাড়ির রান্না ঘরের জানালা গলে ভেতরে ঢুকে গেছিল , লাট্টুদের কারো ক্ষতি হয়েছিল কিনা জানা নেই , কিন্তু আমাদের তারপর থেকে বাজি নিয়ে কথা বলার ওপরে-ও নিষেধাগ্গা জারি হয়ে গেল।

    এক প্রজন্ম পরে , সেই একই বয়সের কন্যার সাথে কোনো এক বর্ষ বরণের রাতে , ডিজনি ওয়ার্ল্ডের জলাশয়ের ধারে , আকাশে , জলে, গাছের মাথায় অবিশ্বস্য আর দমবন্ধ করা আতস বাজির প্রযুক্তি গত কেরামতি আর মেয়ের উত্তেজিত বিস্ময় দেখে মনে হলো , এও সেই অলোকেশ-দার গন্ধক-লোহাচুর-এলুমিনিয়াম-পাউডার , আঙ্গিকটাই যা ভিন্ন।

    **
    বসন্ত উত্সবে বালতির জলে, পাচটাকার রং গুলে , পিচকারী দিয়ে পাচটাকার প্যাকেটের জল বেলুনে ভরা হত। সেসব বেলুনের অর্ধেক-ই ফুটো , আর বাকি অর্ধেক-এ রংজল ভরা গেলেও তার মুখে গিট্টি বাঁধা যেত না। সাকুল্যে শেষ পর্যন্ত যে কটা রংজল ভরা বেলুন রেডি-টু-ইউস হত , তার প্রথমটা পাড়ার সবচেয়ে নচ্ছার নেড়ির গায়ে পরখ করা হত। এই ভাবে , বেলুন টেস্টিং গিনিপিগ হিসাবে , সাদা লোমের নেড়ি , দুপুরের মধ্যে বেগুনি হয়ে গেলে রং খেলার মেজাজ খুলত।

    তো, তখন দোল-এর দুপুরে তামার পয়সা ঘসা ভাং কোনদিন খেয়ে দ্যাখা হয়নি , বা কালী পুজোর রাতে বিয়ার-ও কোনদিন খাওয়া হয়নি। অথচ এখন অষ্টআনা জীবন পেরিয়ে এসে , কোমরের নিচে এলকোহলিক মেদ। এখন মাঝে মাঝে শুক্কুরবারের রাতে , সামান্য তুরীয় অবস্থায় , সেই দোলের সকালে কৈশোরের লিকপিকে আমি কে দেখতে পাই।

    হাতে আবিরের প্যাকেট , কোনো এক বান্ধবী-কে মাখানোর ইচ্ছায় ঘেমেনেয়ে অস্থির। ...
  • Binary | ১৩ জুন ২০১৫ ০২:০৮679511
  • প্রতিস্থাপন .....

    'ভালো ছেলে' হতে গেলে দুধ খেতেই হবে এরকম কোনো কথা কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক-এর বই তে ছিল না। যেটা ছিল সেটা , ধুতির খুঁট কোমরে কষিয়ে বেঁধে পড়াশোনা করা। সামনে একটা খোদাই করা কাল্পনিক ফ্রেম ছিল। কেরিয়ার। কারিগরী শিক্ষা। ফ্রেমটা ঠিক কে তৈরী করেছিল জানা নেই কিন্তু সেটা আমাদের প্রায় সব বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যবিত্ত বাড়িতে ছিল। ভালো ছেলের একটাই রসায়ন। শিক্ষার ইঁদুর দৌড়ে নামো। পারিবারিক ঘেরাটোপ জ্বালানি যোগাবে অনবরত। সাধ্যের বাইরে গিয়ে গৃহশিক্ষক , পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান , মায়ের গুছিয়ে দেওয়া খাওয়ার টেবিল , বাবার লাইব্রেরি ঘেঁটে লিখে আনা কেমিষ্ট্র-র নোট্। আজকাল দেখি , পরিস্থিতি কিছুই বদলায় নি। বহরে অন্যরকম হয়েছে এই যা নতুন ।

    সে যাই হোক , পুরাতন জানা বাক্য , নতুন বোতলে ভরে , পরিবেশন করা আমার উদ্দেশ্য নয়। যেটা বলার , সেটা আমরা, আমাদের ১৭ বছরে একটি অর্বাচীন , ভ্যাবাচ্যাকা , কিম্ভূত মনুষ্য ছিলাম। হায়ারসেকেন্ডারী পরিক্ষা-র সময় , বাবা-মা-এরা টিফিন বাক্সে তালসাঁশ সন্দেশ আর ডাবেরজল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত রোজ , আর আমরাও ডাবেরজল খাওয়া ল্যাজবিশিষ্ট মাথা নিয়ে পরিক্ষা দিতাম।

    তো কৈশোরের হিরোইজম , যা কিনা একটা দেশত্তীর্ণ , যুগোত্তির্ন প্রত্যয় সেটা আমাদের সময় ছিল অলীক নির্বোধ-এর মত। আমাদের হিরোইজম ছিল , রুপোলিপর্দার অমিতাভ বচ্চন -এর হিরোইজম , যে কিনা হেড়ে গলায় তেড়ে গালিদেয় , মুখে একরাশ দাড়ি নিয়ে গুন্ডাদের উত্তমমধ্যম দেয়। বা আমাদের হিরোইজম ছিল আমাদের আগের উচ্চমাধ্যমিক ছাত্র আশীষ মন্ডল -এর মত , যে কিনা বোর্ড পরিক্ষা-তে প্রথম , কারিগরী প্রবেশিকা-তে প্রথম , বিজ্ঞানে, বোর্ডে যার রেকর্ড নম্বর। এই সব মায়া মায়া মিথ্যেকারের হিরোইজমের বাইরে, আমাদের মধ্যবিত্ত পর্দানাসিন চারদেওয়ালের বাইরেও যে বহু সাধনযোগ্য পালোয়ানি -র সুযোগ আছে সেটা আমাদের জানা ছিল না।

    তো আমার ধারণা , মেয়েদের মধ্যে , ছেলেদের সম্পর্কে মুগ্ধতা-ও ছিল একই রকম , হয় অমিতাভ বচ্চন স্টাইল নয় তো আশীষ মন্ডল স্টাইল। ডিসক্লেইমার দিয়ে রেখেও , শতকরা হিসেবে এদিক - ওদিক হলেও মোটের উপর সেই , কাল্পনিক টাইপ। তার বাইরে কিছু না। হয় গাঁজা খাওয়া বখে যাওয়া -র রাস্টিক আকর্ষন , নয় শিক্ষার প্রতিযোগিতায় শীর্ষে থাকার আবেদন। কেন যে জানা ছিল না , এই দুটোতেই যেটা অভাব , সেটা স্বকীয়তার।

    সেদিন , ষোল বছর বয়সী মেয়ের মুখে ওর সহপাঠিনী-র কথা শুনলাম । আরো একটি ষোল বছর বয়সী মেয়ের কথা। তার নতুন ছেলে বন্ধু-র কথা। সেই ছেলে বন্ধুর প্রতি মেয়েটির মুগ্ধতার কথা। কেমন সেই হিরোইজম ? ছেলেটি হাইস্কুল শেষ বছরে। ইউনিভার্সিটিতে যাবে পরের বছর। নিজের পড়াশোনার খরচ-এর জন্য চাকরি করছে , অডজব। নিজের উপার্জনে পুরনো গাড়ি-ও কিনে ফেলেছে একটা। পলিটিকাল স্টাডিস নিয়ে পড়বে নাকি। ছেলেটি নাকি নিজের গাড়ির তেলের খরচ নিজেই চালায়। নিজের সেলফোন নিজেই কিনেছে , পরের বছর থেকে বাবার বাড়িতে থাকার রেন্টাল দেবে বাবা-কে , নিজের রোজগার থেকে।

    শুনে একটা ভাষা ভাষা হিরোইজম-এর ছবি উঠে আসে , তার নাম 'স্বাবলম্বী হওয়া' .......
  • i | 134.169.135.239 | ১৩ জুন ২০১৫ ০৪:২৫679512
  • বাইনারি,
    বেলকাম ব্যাক।
    লিখুন লিখুন লিখুন।
  • Titir | 138.210.206.145 | ১৬ জুন ২০১৫ ২১:৪১679513
  • এই পাতায় খুব একটা নিয়মিত নই। তবে পড়ি মাঝেমাঝে। লেখাটা পড়ে এই কথাটা মেন হল "তারে ধরি ধরি, মনে করি, ধরতে গেলে আর মেলে না।"
    বড্ড ভালো লেখা।
  • Binary | ২৬ জুন ২০১৫ ০৩:০৪679514
  • আস্থান ....

    ছোটবেলায় কলকাতার অর্থনৈতিক বৃত্ত-টা এখনকার মত এরকম মদগর্বী ছিল না। এখনকার মত চাকরি পাওয়ার তৃতীয় বছরেই হোন্ডাসিটি আর পঞ্চম বছরে রাজারহাটে তিন কামরার দক্ষিন খোলা এপার্টমেন্ট কেনা যেত না। সল্টলেকের বাড়ি যখন হয়েছে, বাবা তখন চাকুরী জীবনের শেষ প্রান্তে। সল্টলেক তখন নিতান্ত-ই লবনহ্রদ , মাটিতে বালি আর আগাছা , রাস্তায় নাম মাত্র পাবলিক বাস , আর আমাদের জমি থেকে ধু ধু মাঠের মধ্যে দিয়ে এক দৌড়ে উল্টোডাঙা স্টেশন চলে যাওয়া যায়। বাড়ির ভিতপুজো থেকে গৃহপ্রবেশের রাতে শিয়ালের কোয়া কোয়া শোনার কৈশোর স্মৃতি এখনো আইসবার্গের মত মাথা তুলে আছে।

    সে যাই হোক। বাড়িতে মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত সিমেন্টের স্ট্রাকচার করা দুটো দেওয়াল আলমারি-র কাঠামো তৈরী হয়েছিল বাড়ি করার সময়। একটা বসার ঘরে, আরেকটা খাবার ঘরে। এরকম উদ্ভুটি সাইজের দেওয়াল আলমারি করার কথা কার মাথায় এসেছিল মনে নেই , তবে মা'এর চিরকালীন 'একটা ঠিকঠাক স্টোরেজ প্লেস' না থাকার অসন্তোষ শুনে শুনে , বাবা'ই বীর বিক্রমে দেওয়াল আলমারির সাইজ ঠিক করেছিল হয়তো। তো আমরা বাড়ি-র চৌহদ্দি-পাঁচিল , আর দরজা জানালা রঙিন হওয়ার আগেই উঠে এলাম ওই বাড়িতে , কর্মসূচিটা হলো , বাকি সব কাজ 'আস্তে আস্তে' করা হবে। এই 'আস্তে আস্তে' করার কাজগুলোর মধ্যে একটা ছিল ওই গামা সাইজের দেওয়াল আলমারি গুলো কাঠ দিয়ে তৈরী করা। তো, তার জন্য চাই দক্ষ কাঠেরমিস্তিরি। আর সে কাজের জন্য-ই মনোরঞ্জন -কে পাওয়া গেছিল।

    বেশ ধুসর মনে আছে, মনোরঞ্জন বাড়িতে এসে 'কাঠের কাজ করি' বলেছিল , আর আমার অগ্রপশ্চাত বিবেচনা না করা আত্মভোলা টাইপ বাবা , অমনি তাকে নিয়োগ পত্র দিয়ে দিয়েছিল। পুরো নাম ছিল মনোরঞ্জন বিশ্বাস। কালো লম্বাটে পেটানো চেহারা। মাথায় কোকড়া-ঝাঁকরা চুল ছিল ঘাড় পর্যন্ত। ধুতি আর ফতুয়া , যা কিনা কাঠের মিস্ত্রীরী পক্ষে বেশ বেমানান , পরে কাজে আসত। প্রথমে , দুটোর মধ্যে একটা আলমারি তৈরী করার বরাত ওকে দেওয়া হযেছিল। কাঠ অবশ্য আমরাই কিনে দিয়েছিলাম। দেখতাম ওর একটা ডায়রি ছিল , মানে 'ডেইলি প্ল্যানার' টাইপ , তাতে ওর ক্লাইন্টটাইল এপয়েন্টমেন্ট সব লেখা থাকত , তবে যেটা বেশি চোখে পরার , সেটা ওর হাতের লেখা, যেখানে শিক্ষার ছাপ ছিল স্পষ্ট ।

    বেশ গপ্পেবাজ ছিল মনোরঞ্জন। কাঠপালিশের রাঁদা আর মুখ একসঙ্গে চলত। আমার নরম স্মৃতিতে এটাই খালি মনে আছে, যে নদীয়ার কোনো আধা শহরে ওর দেশ। কাঠের কাজ ওর পেশা, আর যাত্রা দলে বাঁশি বাজানো ছিল ওর নেশা। তারপর একদিন , সেদিন ছিল কোনো রবিবার , দুপুর কাজে এসে আমাদের বাঁশি শুনিয়েছিল। সুর তাল লয় আমি বুঝিনি তখন , তবে মনে আছে দেশ একটা গমগমে , ঝনঝনে সুরেলা শব্দে বাড়ি ম ম করছিল। আর যখন শেষ হলো , মনে হয় সুরের কীর্তনিয়া টানে, ঠাকুমার চোখে জল , মা'এর চোখ মুগ্ধতা আর বাবার মখে প্রশ্রয়ের হাসি।

    (আরো ...)
  • ranjan roy | 132.180.215.190 | ২৭ জুন ২০১৫ ০১:১৯679515
  • খুব খুব ভালো লাগছে এই লেখার মেজাজটি।
  • 00 | 181.64.40.102 | ২৭ জুন ২০১৫ ০২:১৩679516
  • ভালো লাগা বোঝাবার ভাষা নেই !
  • | ২৭ জুন ২০১৫ ১৮:০২679517
  • তারপর?
  • pi | 192.66.3.163 | ২৮ জুন ২০১৫ ০৯:৩০679518
  • ভালো লাগছে।

    'ছোটবেলায় কলকাতার অর্থনৈতিক বৃত্ত-টা এখনকার মত এরকম মদগর্বী ছিল না।' ... এটা সত্যিই খুব মনে হয়।
  • Binary | ০১ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৭679519
  • মাস খানেক -এর কাজের পর , একটা দেওয়াল আলমারি শেষ হলো। মনোরঞ্জনের হাতের কাজ বটেই নিখুত। বেয়্ড়া সাইজের আলমারি-র কাঠামো , রং-পালিশ আর নির্ভুল কাঠের ফ্রেমে ভালই লাগছিল। বসার ঘরের জেল্লাই বদলে গ্যালো কাঠের কাজের পর। এটা ছিল বসার ঘরে। আগেথেকেই প্ল্যান ছিল , যে বসার ঘরের আলমারি-টা বুকসেল্ফ হিসাবে ব্যবহার করা হবে। তো, ঠাকুমা শখ করে এই আলমারির নাম দিলো 'আস্বাদ ভান্ডার'।

    ততদিনে, মনোরঞ্জন বাড়ির লোকের মত হয়ে গ্যাছে। বাবা , পরিচিত আরো সব বাড়ির মালিক-দের কাছে দেদার দরাজ সুপারিশ করেছে ওর নাম । মনোরঞ্জন আরো অনেক যাত্রাপার্টির গল্প শুনিয়েছে ঠাকুমা কে। মোট কথা , বাড়ির সবাই মুগ্ধ। ওর কাজেও , আবার বাঁশি বাজানো রোমান্টিসিসম-এও। তো, দ্বিতীয় আলমারিটা , যেটা খাবার ঘরে , যেটায় জামা-কোট-শীতেরপোশাক এইসব রাখা-র প্ল্যান , সেটা এইবার তৈরী করতে হবে। ঠাকুমা আগে থেকেই তার নাম রেখেছে 'রুচি ভান্ডার', এও কতক-টা মনোরঞ্জনের ওপর আস্থায়। শেষ হলে এও-তো আগেরটার মতই দাঁড়াবে , নিখুত।

    তো এইবার , বাবা নিজে কিছু ব্যস্ত থাকা-র কারণে , আর সময়ের অভাবে-ও পুরোপুরি মনোরঞ্জন-কেই দ্বায়িত্ব দেওয়া হলো। কাঠের যোগান-এর জন্য-ও। তো কোনো এক শুক্রবার , বিকেলে , মনোরঞ্জন আগের কাজের মজুরি , আর পরের আলমারিটার কাঠের যোগানের জন্য , আগাম দাম নিয়ে বাবা-কে 'আসি স্যার ' বলে বেরিয়ে গ্যালো। ঠিক ছিল আবার কাজ সুরু হবে মঙ্গলবার।

    .... তারপর দিন , সপ্তাহ , মাস কেটে গ্যালো , মনোরঞ্জন -এর আর দ্যাখা নেই। ওর আগের কাজ করা বাড়ি গুলো তে খোজ করা হলো , কেউ হদিস দিতে পারল না। মোটামুটি নিখোজ। সেইসময় এখনকার মতো মোবাইল , টেলিফোনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। নিখোজ মানে একদম-ই নিখোজ।

    শেষে হতাস হয়ে বাবা, অন্য কোনো কাঠের মিস্ত্র-র খোঁজ খবর শুরু করেছে , এমন-ই এক দুপুর-এ আচমকা মনোরঞ্জন এসে হাজির। সেই ধুতি ফতুয়া। সেই পেটানো চেহারা। সেই ঘাড় পর্যন্ত ঝাঁকরা চুল। কিছু কাজে দেশে আটকে গিয়েছিল। বাজারে কিছু দেনা ছিল তাই আগাম টাকা সব খরচ হয়ে গ্যাছে। কিন্তু ও আমাদের বাড়ির কাজ করতে চায়। দ্বিতীয় আলমারিটা তৈরী করে দেবে। মজুরি বাবদ আগাম টাকাটা যেন আমরা সমন্বয় করে নি।

    বাবা-মা এমনিতেই রাজি। কারণ ওর হাতের কাজ। কারণ ওর বাঁশি। এবারে ঠিক হলো , মনোরঞ্জন বাবা কে নিয়ে কাঠ কিনতে যাবে ওর চেনা দোকানে। কাঠ কেনা হলে , কাজ সুরু করবে ও। সেই মত কোনো শনিবার , কাঠ কিনে আনা হলো। উল্টোডাঙ্গার , মনোরঞ্জনের পরিচিত কোনো কাঠের দোকান থেকে। কাঠ জমা হলো বাড়িতে। আবার সেই মঙ্গলবার কাজ শুরু-র কথা।

    ***
    এর পরের গল্প সীমিত। পরের ছয় মাসে আর মনোরঞ্জনের দেখা পাওয়া যায় নি। আমরা অনেকদিন অপেক্ষায ছিলাম। ঠাকুমা হয়ত মনোরঞ্জনের কীর্তনিয়া বাঁশি জন্য-ও অপেক্ষা করে ছিল। শেষে বাবা , রমেশ নাম অন্য এক কার্পেন্টার -কে নিয়োগ করে।

    মনোরঞ্জনের চেনা দোকানে-র কাঠ সব-ই ফেলে দিতে হয়েছিল , কারণ সবটাই নষ্ট হওয়া কাঠ ছিল।

    পাড়াপ্রতিবেশী , শুভানুধ্যায়ী অনেকের অনেক বিজাতীয় উপদেশ , চোখ-কান খোলা রেখে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বাবা-কে শুনতে হয়েছিল। আমার কেন জানি না এই ঘটনা টা এখনো প্রগাঢ় মনে আছে। আজ এতবছর পরেও। কারণ-টা মনোরঞ্জনের বিশ্বাসহীনতার জন্য নয়।

    প্রথিবীর সব রোমান্টিক মানুষ কি খামখেয়ালী হয় ? বা সে অর্থে অবিশ্বাস-ইও ? যারা জীবনানন্দ শুনতে ভালোবাসে তারাও ?
  • Binary | ০৬ জুলাই ২০১৫ ১০:০৩679521
  • জল ....

    বালিগঞ্জ লেক, যেটাকে ভালো বাংলায় বলা হয় রবীন্দ্র সরোবর , সেখানে দুটো সাঁতার শেখার ক্লাব ছিল। একটার নাম অ্যান্ডার্সন ক্লাব , সেটা গাড়িচড়া উচ্চবিত্তদের জন্য । দেড় মানুষ সমান উঁচু লতাগাছের অভিজাত হেজ। সেই সময় বড়লোক-মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত-র বেঞ্চমার্ক ছিল অন্যরকম। এখন য্যামন বড়লোক মানে বিএমডাব্লু , মধ্যবিত্ত মানে মারুতিআল্টো বা টাটান্যানো । তখন ছিল বড়লোক মানে অ্যাম্বাসেডর , মধ্যবিত্ত মানে স্কুটার। তো আমার বাবার সেই সময় স্কুটার-ও ছিল না, আমদের বাহন ছিল রিক্সা আর পাবলিক বাস। তো, অ্যান্ডার্সন ক্লাবের সামনে মূলত অ্যাম্বাসেডর চড়া ফুটফুটে ছেলেমেয়েদের সাঁতার শিখতে আসতে দ্যাখা যেত। তারা সামনের উর্দিধারী দারোয়ানওয়ালা গেট পেরিয়ে ভেতরে চলে গেলে , তারপর কি রকম কি হত, সেটা বাইরে থেকে কল্পনায় দ্যাখা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।

    সে যাই হোক। আরো একটা সাঁতার শেখার ক্লাব ছিল , তার নাম 'ক্যালকাটা স্পোর্টস'। সেটা সদ্য তৈরী হয়েছে তখন। দরমার বেড়া দিয়ে তৈরী ড্রেসিং রুম, পুলের চারিদিক মাটির , সিমেন্ট বাঁধানো হয় নি তখন-ও । বুকজলে-র ট্রেনিং এরিয়াটা কোনরকম ইঁট বাঁধানো । পুলের উল্টোদিকে ত্রিপল দেওয়া মেকশিফট বাথরুম। আর যেটা নেই সেটা ডাইভিংডেক , যা কিনা যে কোনো সুইমিংপুলে-র প্রেস্টিজ। এককথায় অতি সাধারণ মধ্যবিত্ত সুইমিং ক্লাব। আমাদের জন্য। এই ক্লাবে-ই আমায় , সাঁতার শেখার জন্য ভর্তি করে দেওয়া হয়েছিল , আট/নয় বছরে।

    সাঁতার যে চেষ্টা করেও ভালকরে শেখা হয়নি, সেটা অন্য গল্প। কিন্তু গরমের বিকেলে জলে নেমে ঝাঁপাঝাঁপি করতে বেশ লাগত। অ্যান্ডার্সন ক্লাব-এর পুল-টা দেখা যেত জল থেকে। ঘন্টা খানেক সুইমিং করার চেষ্টা করে উঠে আসার সময়, দেখাতাম, অ্যান্ডার্সন ক্লাব-এর দুধসাদা ডাইভিংডেক-এ আলো জ্বলছে। পারের দিকে রঙিন কেয়ারীকরা ফুলের বাগান। ঘাসের লন, তাতে কফি টেবিল , তাতে রঙিন ছাতা।

    সেই সময় আমার একটা দিবাসপ্ন ছিল। ডাইভিং বোর্ড থেকে শুন্যে ডিগবাজি খেয়ে জলে ঝাঁপিয়ে পরা। একেবারে মার্কস্পিচ -এর মত। সাথে সমবয়সী বন্ধুদের হাততালি। এই দিবা সপ্ন টা অনেকবার অনেক সময় ঘুরপাক খেয়েছে মনে মনে। তো, 'ক্যালকাটা স্পোর্টস' -এ ভর্তি হওয়ার সময়, সেখানে ডাইভিং বোর্ড না দেখে মনটা বেশ দমে গিয়েছিল। তবে আর যাইহোক , সেই আট/নয় বছর থেকে আজ এই কাঁচাপাকা চুলের আমি যত দিবা সপ্ন দেখেছি, তার মধ্যে ওই ডাইভিং বোর্ডের কোনা থেকে দুহাত ছড়িয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াটাই প্রথম।
    ষোড়শি কন্যা সেদিন বলে , ওর নাকি ওভার-ডেড্রিমিং সিন্ড্রম আছে। মানে কি জিগ্গেস করাতে বলল , ওর নাকি একটা সপ্নের জগত আছে , তাতে ও নাকি তন্নী , সুন্দরী , সেনসেটিভ , রোমান্টিক কিশোরী। সেই জগতে নাকি, অনেক চরিত্র যাদের সাথে ও একটা প্যারালাল ইউনিভার্সে চলা ফেরা করে। তো আমি বললাম , সেতো সবার-ই এরকম থাকে, বিশেষ করে ওর মত বয়সে। আমার-ও ছিল।
    ওকে বলতে গিয়ে , মনে হলো , বয়স বাড়ার সাথে সাথে , ছোটবেলার দিবাসপ্ন গুলো কিছুটা সেনসুয়াল আর কিছুটা রাস্টিক হতে থাকে। অনেক অনেক ভালো জীবন-নাট্য , বা প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক হওয়ার দিবাসপ্ন আমার কোনদিন-ই ছিল না। তবে হিরোইজম টা বরাবর-ই ছিল। য্যামন ফাটাফাটি কবিতা বলে দর্শকদের আবেগে ভাসিয়ে দেওয়া বা পাড়ার ফুটবল ম্যাচে দশজন কে কাটিয়ে গোল দেওয়া টাইপ।

    তবে জলের সাথে সম্পর্কটা সেন্সুয়ালিটির। ত্বকের সাথে জলের সম্পর্কটা ভিজে ভিজে। এখনো , লম্বা উড়ানে , উড়োজাহাজের অর্ধবৃত্তাকার জানালা-র বাইরে , ধুসর অভিমানী মেঘ দেখলে একটা ছুঁয়ে দেখার অনুভূতি হয়। সেই দুধসাদা ডাইভিং বোর্ডটা মনে পড়ে । তার কিনারায় দাঁড়িয়ে আমি। দু হাত প্রসারিত , নিচে সুইমিং পুলের নীল্ জল।

    বা হয়ত ওটা সুইমিংপুল নয় , আয়াত কোনো একজোড়া চোখ , ঝাপিয়ে পড়লে তল খুঁজে পাওয়া যায় না , ডুবে যেতে হয়.........
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন