এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Dipankar Basu | 160.129.67.189 | ২৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:২৮687205
  • মনোজদ ,
    চিন দেশটা সম্পর্কে খুব অল্পই জানি ,তাই অসীম আগ্রহ নিয়ে পড়ছি অপনার লেখা ।ভাগ্যক্রমে আপনার তোলা ছবিগুলি কিছু কিছু দেখেছি ফেস বুকে । দেখে অমি তজ্জোবো হোয়ে গেছি । এতো সুন্দর আলোঝলমলে রাস্তা ঘাট!! আজীবনের ঝাড়্খন্ড নিবাসী এই গরীবের চোখো ধাঁধিয়ে গিয়েচিল নিউইয়র্কের আলোর রোশনাই দেখে - বিশেষ করে টাইম স্কোয়ারের আলোর রোশনাই । কিন্তু চিনের রস্তঘটের অলোকো সোজ্জ দেখছি তাকেও ছপিয়ে গেছে।
    খুব জানতে ইচ্ছে করে চিনের সাধারণ আটপৌরে জীবনের কথা ।কিন্তু মত্র দশদিনের মধ্যে সে পরিচয় বোধ হয় খুব একটা পাননি।তবু অ পেয়েছেন সেটুকুই সই
  • Dipankar Basu | 160.129.67.189 | ২৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৩০687206
  • ইস্স্স্স্স।টাইপোর চোটে লেখাটা কেমন বিদ্ঘুটে রকমের হয়ে গেল
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.235.97 | ২৩ নভেম্বর ২০১৫ ১০:৩০687207
  • দীপঙ্করবাবু,

    আপনার মতনই আমার ধারনাও ছিল সীমিত ! - আমাদের ভরসা শুধু মিডিয়ার ওপরে ! - তাই মিডিয়ার গল্পেই আমরা আমাদের ধারনা গড়ে তুলতাম ।

    আমাদের সঙ্গে একজন ছিল - যিনি গাইডের ব্যাখ্যায় খুব অপ্রসন্ন হয়ে জিজ্ঞেস করে ফেলল - এরা হাজার হাজার বছরের ইতিহাস বলছে । কই ৮৬ সালের ইতিহাস বলছে না তো ! আমি জিজ্ঞেস করলাম - সেটা কি ! - সে বলল - কেন, থিয়ান আন মেন স্কয়ারের হত্যাকাণ্ড ! - আমি বললাম - যাচ্ছি তো সেখানে - গিয়ে দেখা যাবেখন কত লক্ষ ছাত্র মারা গেছে ! - আর এও দেখা যাবে - কোন হোটেল থেকে বিদেশী সাংবাদিকরা সেই ছবিগুলো তুলেছিল ! - থিয়ান আন মেন স্কয়ারের আশেপাশে সেরকম কোন হোটেল দেখি নি ! তবে জানি, বেশ কয়েকজন ফরাসী, আমেরিকান ও ব্রিটিশ সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল - ও পরে কূটনৈতিক চাপে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়েছিল !

    আমার চিরকাল টাইম স্কয়ার অঞ্চলটা ভীষণ ভালো লাগে ! - কিন্তু সাং হাইয়ের নান জিং অঞ্চল দেখে তাক লেগে গেছে !

    আপনি ঠিকই বলেছেন - মাত্র দশ দিনে চীনের আটপৌরে জীবন বোঝা সম্ভব নয় ! - তবু লিখতে বাধ্য হচ্ছি - যে চারটে শহরে গেছি বা যেখান দিয়ে গেছি - অনেক ছবিই দিয়েছি - ফেশ বুকে - কোথাও কোনও ভিখারি, বা পোশাক আশাকে দারিদ্র্যের চাপ দেখি নি ! - জানি না আঞ্চলিক প্রশাসন তাদের লুকিয়ে রেখেছে কি না !

    আপনার প্রশ্নগুলোর জন্যে ধন্যবাদ ! - এই প্রশ্নগুলো স্বাভাবিক কারনেই - আমারও আমারও ছিল এবং এখনও আছে !

    মনোজ
  • Dalia | 94.104.228.243 | ২৩ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:০৩687208
  • মনোজদা,
    একলা গে্ছিলেন , নাকি বৌদিকে নিয়ে?
    ডালিয়া।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.2.135.34 | ২৪ নভেম্বর ২০১৫ ১৪:৫৮687209
  • ও ডালিয়া ,

    না, সস্ত্রীক গেছিলাম ! - ভয় ছিল - যদি না ফিরতে পারি !

    মনোজ
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.2.135.34 | ২৪ নভেম্বর ২০১৫ ১৫:০৫687210
  • থিয়ান আন মান স্কোয়ার !

    থিয়ান আন মেন স্কোয়ার – মানে – আকাশে শান্তির দরজা অর্থাৎ স্বর্গদ্বার বা শান্তির দ্বার !

    – পরের দিন বাস যখন এসে থামল – থিয়ান আন মান স্কোয়ার এ – আমরা সত্যিই খুব অবাক ! এত বড় একটা বর্গাকৃতি মাঠ বেজিং শহরের মধ্যিখানে ! পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম স্কোয়ার – প্রায় ১০৯ একর জুড়ে । এর মধ্যে মিউজিয়াম আছে তিনটে – তার মধ্যে আছে বিপ্লবে মৃত মানুষের সৌধ । আর আছে মাও ৎসে তুঙ্গের একটা স্মৃতি সৌধ , ও তার মৃতদেহও সংরক্ষিত আছে !

    চারিদিকে সারা পৃথিবী থেকে আসা লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় গিজ গিজ করছে ! প্রত্যেক দলের হাতেই একটা করে ছোটো নিশান । তাই দেখে নিজের নিজের গ্রুপের খোঁজ রাখে ! – সেখানে প্রত্যেক গ্রুপের ম্যানেজার নির্দিষ্ট করে দেয় তার সঠিক অবস্থান ! আর সময় নির্দিষ্ট করে দেয় । এই সময়ের মধ্যে ঠিক এখানেই ফিরে আসতে হবে ! – কিন্তু ঐ বিরাট যায়গায় সবাই ছবি তুলতে তুলতে দিশাহারা হয়ে যায় ! তিনদিকে বিরাট মিউজিয়াম তার ছবি নিতে নিতে সময় চলে যায় ! অথচ মাও ৎসে তুং এর সেই বিরাট বানী রয়েছে বিরাট রাস্তার অপর পাড়ে । সেখানে না গেলে ভালো ছবি আসবে কি ! মুস্কিল হচ্ছে সোজাসুজি রাস্তা টপকে যাওয়া যাবে না। প্রচন্ড গতিতে গাড়ি যাতায়াত করছে আট লেনের রাস্তা দিয়ে । – রাস্তার নীচ দিয়ে টানেল আছে । সেখান দিয়ে ওপারে যাওয়া যায় । কিন্তু কি ভিড় ! তাড়াতাড়ি চলে – কার সাধ্যি ! – আমি তো টানেল দিয়ে সোজা বেরিয়ে এসে - একেবারে মাও ৎসে তুঙ্গের সামনে !

    – বেশ কিছু পাহারাদার দাঁড়িয়ে আছে – যারা মানুষ কিনা বোঝা মুস্কিল ! মনে হয় মোমের পুতুল – ডামি হিসেবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে ! – এদের চোখে ক্যামেরা বসানো আছে ! – কিন্তু তা নয় । খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে বোঝা যাবে - প্রত্যেকে জীবন্ত পাহারাদার । সমস্ত নজরে আছে ! – লাইনে যেতে যেতেও দুধারে থেকে থেকে পাহারাদার দাঁড়িয়ে । এমনিতে সোজা দৃষ্টি । কিন্তু আমার সামনে কয়েকটা সাদা চামড়ার ছেলে-মেয়ে যাচ্ছিল – ওদের চোখের মণি থেকে পুরো মুন্ডু ঘুরে গেল ! ঘরপোড়া মানুষ – মাঠে সাদা চামড়া দেখলেই সতর্ক হয়ে যায় !

    তখন আমি একা থিয়ান আন মেন স্কোয়ারে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ের মাঝে - হারিয়ে গেলাম ! সত্যিই হারিয়ে গেলাম !

    প্রায় এক ঘণ্টা ধরে খোঁজাখুঁজির পর এবং দুবার পুলিশের হাত থেকে ধরা পড়ে ও ছাড়া পেয়ে - একটি অল্প ইংরিজি জানা ছেলে আমাকে সাহায্য করলো । তার ফোন থেকে আমাদের টীমের চীনাভাষী গাইডের মাধ্যমে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে হোটেলে ফিরে এলাম।
    হোটেলে যখন পৌঁছলাম – তখনও কেউ এসে পৌঁছয় নি । হারিয়ে যাবার সাত ঘণ্টা পরে – ওদের বাস এলো আমায় তুলে নিয়ে যেতে ! এত জ্যাম বেজিংএ ! বেজিংএর জ্যাম নাকি বিখ্যাত ! সেই রাতে রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসতে রাত বারোটা বেজে গেল!

    থিয়ান আন মেন স্কোয়ারের পেছনেই - নিষিদ্ধ নগরী (ফরবিডেন সিটি ) । – মিং ডায়নেস্টি থেকে ছিং ডায়নেস্টি পর্যন্ত শাসকদের বাসস্থান ছিল এই প্রাসাদে । প্রাসাদের ভেতর আগে কারুর ঢোকার অনুমতি ছিল না । এখন অবশ্য কোনও বাধা নিষেধ নেই । - এখন লোকে এই প্রাসাদকে পুরনো প্রাসাদ বলে। এখানে প্রাচীন অনেক স্থাপত্যের কাজ রাখা আছে ।

    একটা কথা এখানে না লিখলেই নয় । - গুগুলের সৎ প্রচেষ্টা ! থিয়ান আন মেন স্কোয়ারে ফরবিডেন সিটি গেটের ওপরে বিরাট দুটো শ্লোগান লেখা আছে ! চুং হুয়া রেন মিন গুং হ কো - - এবং ইয়ে শিয়া রেন মিন রেন তা - - ! এই দুটো ফ্রেজ এর মানে খোঁজার জন্যে যতগুলো সাইট আছে – দেখেছি। সব নিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে । কিছুতেই মানেটা দিচ্ছে না ! প্রথম লাইনটার মানে যতদূর মনে পড়ে - চীনা গনতন্ত্রের মানুষদের বিপ্লব জিন্দাবাদ ! দ্বিতীয় লাইনটার মানে – মহান এশিয়ার মানুষদের বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক ! খুব অবাক লাগছে – কেন এই লাইন দুটো ওদের এত শিরঃপীড়া ! – অবশ্য গুগুলের এই অপচেষ্টা আগেও দেখেছি – আন্দামানের ক্ষেত্রে !

    সামার প্যালেস – বা গ্রীস্মাবাস – এখানে বিরাট একটা লেক আছে । এই লেক ঘিরে কয়েকটা প্রাসাদ আছে । নৌকা করে সেখানে যেতে হয় । গ্রীস্মকালে শাসকরা এখানে থাকত । শোনা যায়– সম্রাট ও তার স্ত্রী যখন কোন প্রাসাদে থাকত – তখন সবাই জানতো – ওনারা থাকতেন অন্য প্রাসাদে ! – এখানে স্থাপত্য ছাড়া – লেক ও ছোটো দুটো পাহাড় ঘেরা দৃশ্য খুব আকর্ষণীয় ! – প্যাকেজ ট্যুর কভার করতে এখানে আনা হয় !

    বেশ কয়েকটা বুদ্ধ মন্দিরে যেতে হয়েছে ! বেজিঙ্গের একটা বৌদ্ধ মন্দিরে গেছি । দেখলাম সবাই গোছা গোছা ধূপ কিনে জ্বালিয়ে মন্দিরের সামনে আরতি দেওয়ার মতো করছে ! মন্দিরের ভেতর নয় কিন্তু । ভেতরে তো পর্যটকরা ঘুরে ঘুরে দেখছে । মোটামুটি সব মন্দিরেই এই ধরনের ব্যাপার স্যাপার ! সবাই শাক্যমুনি গৌতমের ও কিছু শয়তানের অস্তিত্ব ও কিছু উপকাহিনীর জন্ম দিয়েছে ! - প্রনামী, দক্ষিণা, পাণ্ডা, ইত্যাদির কোনও ব্যাপারই নেই ! – তবে স্টলে কিছু কিছু মালা ও আরও কিছু শ্যুভেনিয়ার বিক্রি হচ্ছে !

    ( আজ এখানে বিশ্রাম - ক্রমশ আমরা চীনের প্রাচীরে আসছি !)

    মনোজ
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.235.67 | ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ২০:৫৯687211
  • চীনের প্রাচীর !

    গাইড বলেছিল – মধ্যাহ্ন ভোজনের পর প্রাচীরে আসার কথা ! আমরা কেউই রাজী হই নি ! সবাই তো জানি – প্রাচীরে উঠতে অনেক দম লাগে । অনেকে উঠতেই পারেনা ! তাই ভোজনের আগেই এখানে এসেছি !

    আমরা বাস থেকে নেমে বিরাট উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা এক শহরে এসে এক ধরনের নিশ্চিন্ততা বোধ করলাম ! – সামনেই যেন এক তীর্থ ক্ষেত্র !

    নীচ থেকে ওপর দিকে তাকালে – প্রায় আকাশের কাছাকাছি ! অনেক উঁচু ! সবাই দম নিয়ে ওঠা আরম্ভ করবে । পাথরের সিঁড়িগুলো ভীষণ এবড়ো খেবড়ো – কোনও সমতা নেই ধাপগুলোর । কোনটা একফুট কোনটা প্রায় সোয়া এক ফুট ! প্রথম দিকে সিঁড়িগুলো বেশ প্রশস্থ । ক্রমে সরু হয়েছে – তবু তিন-চারজন একসঙ্গে উঠতে পারে! প্রথম কিছুটা ওঠার পর প্রশস্ত চাতাল – বিশ্রাম নেবার জন্যে । - অনেকটা ওঠার পর একটা তোরণ। একটু থেমে বিশ্রাম নিয়ে আবার ওঠার জন্যে ! কেউ যদি মনে করে আর ওঠার দরকার নেই – ফিরতেও পারে ! – এখান থেকেই ফিরে যাচ্ছে – অনেকে ! তারপর আরও একটা তোরণ প্রায় ঐ একই দূরত্বে । আমিও ঐ দ্বিতীয় তোরনে এসে থামলাম । - দুদিকে শুধু রেলিং ! রেলিঙের দুদিকে অনেক নীচু ।-নীচে - অপেক্ষমাণ মানুষগুলোকে খুব ছোটো ছোটো দেখাচ্ছে ! – কেন জানিনা মনে হল – বয়েসের এই শেষ পর্যায়ে এসে বেশি সাহস দেখানো উচিৎ হবে না ! – তাই সেখানেই থামলাম !

    ঐ একই দূরত্বে তৃতীয় তোরণ এবং শেষ তোরণ হল চতুর্থ তোরণ ! অনেক তরুন তরুনী একেবারে শেষ ধাপে উঠতে পেরেছে । মানে যেখান থেকে পাঁচিলের রাস্তা সুদুর বিস্তৃত ! – আমি দেখেছি – চীনের প্রাচীরের যত ছবি আছে – আর বেশির ভাগই ওপরের পাঁচিলের প্রশস্ত রাস্তার ছবি ! কিন্তু যেখান থেকে শুরু – অর্থাৎ সিঁড়ির প্রথম দিকের ছবি বিশেষ দেখিনি ! – কিন্তু এই সিঁড়িটা ওঠাও বেশ কষ্টকর !

    আমরা নীচে নেমে – একটা কফি স্টলে বসে কফি নিয়ে বিশ্রাম করতে লাগলাম ! – এই সেই সপ্তম আশ্চর্যের এক আশ্চর্য – চীনের প্রাচীর ! স্বপ্নেও কোনোদিন ভাবিনি – এই প্রাচীরের পায়ের তলায় এসে দাঁড়াতে পারবো ! তের হাজার মাইল – মতান্তরে একুশ হাজার মাইল লম্বা এই পাঁচিল – চায়নার ১৫টা প্রদেশের ওপর দিয়ে গেছে ! এই প্রাচীর তৈরি করতে আড়াই হাজার বছর আগে – কত লক্ষ মানুষকে প্রচন্ড ঠাণ্ডায় বিনা যথেষ্ট পোশাকে জোর করে কাজ করতে করতে স্রেফ মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল ! - পনের বছর বয়েসী ছেলে থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত মানুষকে জোর করে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ! - এরকম হাজার হাজার কাহিনীর মধ্যে আমি অন্তত তিনটে কাহিনী অনুবাদ করেছি !

    আমারও মনে হল – আমরা এখানে এসে কোনও ভুল করিনি ! আমরাও সাক্ষী থাকলাম – শুধু যুদ্ধ-প্রতিরক্ষার নামে কিভাবে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে বলি দিতে হয় প্রতি দিন প্রতি দেশে ! – শেষমেশ যুদ্ধ কী দেয় ? হয় - জয় – না হয় পরাজয় ! সত্যি কেউ কি জেতে ? সবাই তো হারে ! যুদ্ধে জিতেও তো সে জাতি ভেঙ্গেই যায় !

    মাও সে তুং চীনের প্রাচীর সম্বন্ধে বলেছিলেন – প্রত্যেকটা মানুষেরই উচিৎ এই প্রাচীরে এসে দেখা ! অর্থাৎ - কত মানুষকে এই প্রাচীর তৈরির জন্যে প্রান দিতে হয়েছে ! – এখানে এসে অনুভব করা – সেই সব মানুষগুলো – কিভাবে তাদের প্রান দিতে বাধ্য হয়েছিল !

    চীনের প্রাচীর নিয়ে অনেকেরই নানারকম প্রশ্ন আছে । একটা প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে – পাঁচিলের ওপর রাস্তা কতটা প্রশস্ত ! – পাঁচিলের ওপর যথেষ্ট প্রশস্ত – দুটো গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে । আর রাস্তায় হাঁটলে হোঁচট খাওয়ার ভয় নেই ! মানে এবড়ো খেবড়ো নয় ! – একজন জিজ্ঞেস করেছিল – ষোল-সতেরো জন অশ্বারোহী পাশাপাশি যেতে পারে কিনা ! – আমার মনে হয় – না - পারেনা ! একটা অনলাইন পত্রিকায় পড়েছিলাম – পাঁচিলের ওপর হাফ ম্যারাথন হয়েছে ! – সেটা কিভাবে সম্ভব – জানিনা ! প্রধান কারন হল – অতটা উঁচুতে ওঠার পর ম্যারাথন দৌড়ান কি সম্ভব ! – আর পাঁচিলের ওপর মাঝে মাঝে প্রখর রোদের হাত থেকে বাঁচতে - তোরণের ছাউনি আছে বটে – কিন্তু জলের কোনও বন্দোবস্ত নেই !

    তবে শী আনের পাঁচিলের ওপর খুবই প্রশস্ত – সেখানে মারাথন বা মেলা বা অশ্বের প্যারেড সম্ভব । খুব একটা উচুও নয় !

    ( চীনের প্রাচীর পর্ব শেষ । ক্রমস শাং হাই শহরে আসছি !)

    মনোজ
  • ranjan roy | 24.99.46.106 | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ১৭:১৫687212
  • কী হল? ও মনোজবাবু?
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.234.36 | ০১ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:৫১687213
  • ও রঞ্জনবাবু,

    পুরনো আমলের ঘোড়ার গাড়ির কোচোয়ানএর মতো চাবুক হাতে - মারব চাবুক চলবে ঘোড়া - ! - অতো ঠান্ডা থেকে ফিরে এসে সবে একটু নিঃশ্বাস নিচ্ছি !

    এবার সাং হাইতে এসে পৌঁছচ্ছি । খুব শীগগিরই দিচ্ছি ।

    সবার আগে - লিখি । আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । এখনও ধৈর্য ধরে পড়ছেন বলে !

    মনোজ
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.51.149.188 | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৫:৪৩687215
  • সাং হাই ! মানে সমুদ্রের ওপর শহর

    চায়নার সবচেয়ে জনবহুল শহর – প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষের বাস । বেজিং যেমন রাজনৈতিক শহর হিসেবে গন্য হয় - শাংহাই তেমনি ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত । এই শহরকে পূর্ব দিকে ইস্ট চায়না সমুদ্র ঘিরে রেখেছে । আর দক্ষিণে বিখ্যাত ইয়াং শী নদী । তাই বোধয় জলের ওপর শহর – সাংহাই !

    যদিও সাংহাই এর সৃষ্টি হয়েছে ৯৬০ খৃস্টাব্দে সুং ডায়নেস্টির সময় – কিন্তু একে পুরোপুরি শহরে উন্নিত করা হয় ১০৭৪ সালে – আর সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস রোধ করার জন্যে দ্বিতীয় প্রাচীর গড়ে তোলা হয় ১১৭২ সালে। - মোটামুটাভাবে ১৮৪২ সালে আফিং যুদ্ধ থেকে সাংহাইএর খ্যাতি হয় !

    সে যাই হোক, সাংহাইএর ইতিহাস লিখতে গেলে এক বিরাট গ্রন্থ হয়ে যাবে ! তবে একটা বিষয় জানা গেছে । সাংহাই দিয়েই কিন্তু এককালে প্রচুর অ-চীনা চায়নায় এসেছিল কাজের ধান্দায় ! বংশানুক্রমে তারা এখন শাংহাই-ল্যান্ডারস বলে নিজেদের পরিচয় দেয় । এমনকি ১৯২০ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে প্রচুর সাদা রাশিয়ান জুইশ লোকও এসেছিল । বর্তমানে অ-চাইনীজ হিসেবে সাদা রাশিয়ানদের সংখ্যা খুব বেশি !

    এসব তো হল ইতিহাস-ভুগোলের কথা ! গুগুল খুললেই পাওয়া যায় ! একটু জল বাদ দিয়ে নিলেই হবে ! – কিন্তু আমরা যে সাংহাই এসেই জলে পড়লাম ! মানে বৃষ্টি আর বৃষ্টি ! – বৃষ্টি খুব সম্ভবত আমাদের পিছু নিয়েই এসেছে ! স্টেশান থেকে বেড়িয়ে হোটেলে যেতে গিয়ে সবাই ভিজে গেলাম ! রাতে কোনক্রমে খেয়ে হোটেলে ফিরে এলাম । হোটেলের জানলা দিয়ে দেখতে পেলাম – অপূর্ব সুন্দর দেখতে লাগছে বাইরেটা ! – বৃষ্টিস্নাত সাংহাই !

    দ্বিতীয় দিনে – এখানে এ পি শপিং নামে একটা বিরাট মলে নিয়ে যাওয়া হল ! সেখানে পৃথিবীর বোধয় সবচেয়ে বড় বাজার আছে । - বাসে যে চীনা গাইড ছিল – সে বার বার সব্বাইকে বোঝাতে লাগলো – সাং হাইতে যেন দোকান বাজার না করি । - ফেক মার্কেট ফেক মার্কেট ! বলে মজা করতে লাগলো – যদি - ফিয়াসের জন্যে কিছু কিনি । এখানে কিনে দয়িতকে দিলে – বাড়ি গিয়েই সে পালাবে । এখানে সোনা বলে যা কেনা হবে – সেটা বাড়ি যেতে যেতে পেতল হয়ে যাবে ! গাইড আরও একটা গুপ্ত তথ্য জানালো । মনে করুন আপনি একটা জিনিস কিনতে রাজি হয়েছেন পাঁচশো টাকায় – সঙ্গে সঙ্গে দেখবেন পাশেই আরও একজন এসে বলবে সে আপনাকে চারশ টাকায় দেবে । আপনি যেই তার সঙ্গে যাবেন কিনতে – আগের দোকানী চেঁচিয়ে মেচিয়ে আপনাকে বাধ্য করবে তার জিনিস কিনতে ! এদিকে দ্বিতীয় জনও চেঁচামেচি জুড়বে আপনি তার কাছে কিনতে রাজি হয়েছেন বলে ! – খানিকটা গড়িয়াহাট মার্কেটের মতন নয় কি ! দর করলেই কিনতে হবে ! – মজা করে করে বলল বটে - কিন্তু শুনছে কে !

    মলে ঢুকতেই দেখি সরকারী বিরাট বিজ্ঞপ্তি – ইংরিজিতে – জরডাচ, গুচ্চি ইত্যাদি কুড়ি পঁচিশটা বিশ্বখ্যাত কোম্পানির কোনও জিনিশ ঐ মলের কোনও দোকানে না কেনা হয় । - সেগুলো সব ফলস ! ভেতরে গিয়ে দেখি অনেক দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । ওরা নাকি সব নকল মাল বিক্রি করে ! – এ যে দেখি জলে ভাসে শিলা ! কর্তৃপক্ষ দোকান শিল করে দিয়েছে ! – ও, লিখতে ভুলে গেছি – শাং হাইতে ব্যক্তিগত মালিকানায় বিল্ডিং, ব্যবসা সব হচ্ছে ! কোনও সরকারী নিয়ন্ত্রন নেই ! এটা হয়েছে তেং শিয়াও পিং এ আমল থেকে !

    তবু আমরা হলাম বাঙ্গালি ! কেনার লোভ সামলানো বিষম দায় ! অনেকে অনেক কিছু কিনে এনেছে ! দুহাত ভর্তি ! – সবই ইউয়ানে কেনা ! এক ইউয়ান মানে এগারো-বারো টাকা ! – একটা দৃষ্টান্ত দিই । বিরাট চারটে চাকা লাগানো স্যুটকেশ – মাত্র একশো কুড়ি ইউয়ান ! অবিশ্বাস্য ! - ঐ একই স্যুটকেশ আমাদের কিনতে হয়েছিল আমেরিকায় তিন হাজার ডলারে ! দুহাতে দিয়ে সুটকেশ নিয়ে ঠেলতে ঠেলতে ফিরে এলো । কি করে সম্ভব ! কদিন চলবে ? উত্তর হল – এখান থেকে অন্তত বাড়িতে তো নিয়ে যাওয়া যাবে ! – শপহলিকজম একটা রোগের নাম নাকি !

    নানচিং রোড - একটা বেশ বড় ধরনের রাস্তার মোড় আছে । সেখানে রাস্তায় ট্রামের মতো দেখতে ব্যাটারি চালিত ট্রেন চলছে । অনেকে চড়ছে – ছবি তোলার জন্যে ! সেখানে একটা মেট্রো রেলের ষ্টেশন । নীচে নেমে দেখি – বাজারের মতো । অনেক বড় বড় দোকান ! অনেকটা নিউ ইয়র্কের টাইম স্কোয়ারের মতন !

    – রাস্তার ওপর থেকে খুব পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে – পার্ল টি ভি টাওয়ার বিল্ডিং ! আরও অন্য উঁচু উঁচু বিরাট বিরাট বাড়িগুলোও দেখা যাচ্ছে ! – সময় কাটাবার বা বেড়াবার পক্ষে খুব আকর্ষণীয় যায়গা ! – একটা জিনিস খেয়াল করার – এখানে কেউ কাউকে কিছু বিক্রি করবার চেষ্টা করছে না । কোথাও কোনও ভিখারি নেই ! – শুধু লোকেরা ঘুরে ঘুরে ময়লা তুলে নিচ্ছে আর কাছাকাছি ওয়েস্ট বীনে ফেলছে !

    এই যায়গায় বেশ একটা ছুটি ছুটি ভাব ! সবাই রিলাক্স ভাবে ঘুরছে । ছোটো ট্রেনে চড়ে ঘোরাঘুরি করছে ! আশেপাশের সমস্ত বিল্ডিংগুলোতে আলোর রোশনাই – বিজ্ঞাপন ! খেয়াল করে দেখলাম – সব আলোই নিচ থেকে ওপর দিকে উঠছে !
    - তাহলে যে শুনেছিলাম – চীনেদের সব উল্টো – তাই সত্যি নাকি !

    ( এবার আমরা ম্যাগ্লেভ ট্রেনে চড়বো !)

    মনোজ
  • de | 69.185.236.54 | ০২ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৮:৩৩687216
  • খুব ভালো হচ্ছে - একটু ছবি দেখান না প্লিজ!
  • skm | 83.136.211.128 | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:২৬687217
  • 3000US dollar for a suit case. Hard to believe-300 is ok
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.235.45 | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৪:১৬687218
  • দে

    ধন্যবাদ ভাই - পড়ার জন্যে ! - আগের বার এখানে চেষ্টা করেছিলাম কিছু ছবি পোষ্ট করতে। পারিনি - দুঃখিত !

    তবে ফেশবুকে - আমার নামে গেলে সমস্ত ছবিগুলো দেখা যেতে পারে ! ছবিগুলো খুব কালারফুল ও বেশ ভালো উঠেছে !

    মনোজ

    এসকেএম,

    আরে সে স্যুটকেশ - আপনার রানার ! আপনার সঙ্গে দৌড়বে ! - আপনি পড়ে যেতে পারেন - কিন্তু সে পড়বে না ! তাঁর মধ্যে অন্তত দুটো বডি - জীবিত বা মৃত চলে যাবে ! ভিসা লাগবে না !

    মনোজ
  • skm | 83.136.211.128 | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:১৫687219
  • অতো বরো সুইসে নিয়এ কি কোরএ হান্দ্লে করা জায়
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.235.181 | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৭:২৫687220
  • এস কে এম,

    আরে আপনি স্যুটকেশ হ্যান্ডেল কারবেন কি ? স্যুটকেশই আপনাকে হ্যান্ডেল করবে ! স্যুটকেশে চারটে শক্ত পোক্ত চাকাওলা পা ! - তার ওপর বসে আপনাকে হিয়াসে হুয়া নিয়ে যাওয়া যাবে !

    ইয়ে একটু বাড়িয়ে কমিয়ে নেবেন !

    মনোজ
  • Atoz | 161.141.84.176 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২২687221
  • এ হে হে সুটকেসের তো গলাকাটা দাম নিয়েছে!
    ঃ-)
  • Atoz | 161.141.84.176 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২৬687222
  • আহা আহা আহা! জগজ্জুড়ে এত ভালো ভালো খরিদ্দার আছে বলেই না এই ব্যবসায়ীরা তেড়েঝেড়ে দুনিয়া শাসন করছে আর সন্ধ্যাবেলার পার্টিতে উদ্দাম নৃত্য করছে! ঃ-)
  • PM | 116.79.7.96 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ১২:১৩687223
  • ২ লাখ টাকার সুট্কেস!!!!!!! বাপরে।

    ঐ সুট্কেস কি দরকে সিড়ি ভাঙ্তেও পরে?
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.232.171 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৬:৪২687224
  • হে হে কোন যুগে আছেন ভাই ! আজকাল কি সিঁড়ি দিয়ে কেউ ওঠে ! না সিঁড়িই আপনাকে ওঠায় !

    স্যুটকেশের তো গলা নেই - কাটবে কিকরে ! - বরং খদ্দেরকে জ্যান্ত ধরে গলা কাটে দোকানদার !

    ওখানে স্যুটকেশ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১২০ ইউয়ানে ! ড্যাঞ্ছি বাবু ! লিয়ে যান লিয়ে যান ! - কদিন টিকেছ - কে জানে ! - সবাই যেরকম লজর দিচ্ছে !

    মনোজ
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ২২:৪৫687226
  • মনোজের লেখা পড়লাম, ভাল লাগল।

    এবার আমি লিখব - লিখি?

    আমার দশ দিন না, তিন দিন - আর, শুধু বেজিং ।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.232.181 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ১১:৫৫687227
  • এল সি এম

    আরে বাঃ ! আপনিও গেছিলেন ! - লিখে ফেলুন ! ভালই হল !

    মনোজ
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:১৫687228
  • বাহ, বলছেন তাহলে ।

    তো হল কি, সেবার, মানে ২০১০-এ জুন-জুলাই নাগাদ ঠিক করা হল যে এবারের কলকাতা ট্রিপে যাবার সময় চীনে কদিন কাটিয়ে যাওয়া হবে। এবং, আমরা যাবো বেজিং - কারণ ওখানে অন্য অনেক কিছুর সঙ্গে গ্রেট ওয়াল আছে।

    অফিসে একজন দক্ষিণ ভারতীয় তাই শুনে শুধালো - কোনো আত্মীয় ওখানে থাকে কি না। আর একজন বিস্ময় প্রকাশ করল - এত জায়গা থাকতে, জাপান, হংকং, বালি, হলং-বে -- এসব ছেড়ে চায়না কেন। তাদেরকে বললাম, যে দেখো, চারিদিকে প্রায় সবই তো মেড ইন চায়্না, একবার চায়না গিয়ে দেশটা কি দিয়ে তৈরী দেখতে হবে না !

    কিন্তু বেজিং যেতে গেলে ভিসা চাই, তিন দিনের জন্য হলেও চাই। চাইনিজ কনসুলার আপিসে ফর্ম জমা দিয়ে এলাম। আমাদের দলে একজনের ভারতীয় পাশপোর্ট, তার জন্য টুরিস্ট ভিসা ফি ৪০ ডলার, কিন্তু বাকীদের ১৩০ ডলার। কাউন্টারে জিগ্গেস করলাম - ইয়ে না ইনসাফি কিউ । চাইনিজ তরুণী উত্তর দিল - আই দোন্‌ত্‌ নো, আই দোন্‌ত্‌ সেত্‌ দ্য রুল্‌স, ওকেএএএএ। ইউ চেক আওয়ার ওয়েব সাইত্‌।

    তখন মনে পড়ল এতা সেই দেশে-দেশে অঘোষিত বোঝাপড়ার গপ্পো। যখন কোনো চাইনিজ ভারতে বেড়াতে আসে তার থেকে ভারত সরকার ৪০ ডলারের সমান পরিমান টাকা নেয় টুরিস্ট ভিসার ফি হিসেবে, তাই উল্টোটা হলে তখন চাইনিজ গভর্নমেন্ট একই পরিমাণ চায়। আম্রিগা বেশি পয়সা নেয় চাইনিজ টুরিস্টদের থেকে, তাই চায়নায় বেশি পয়সা নেবে। ফি কা বদলা ফি, তা হোক কিন্তু আমার এই ফি-টা কাফি জাদা মনে হল।

    এরপরে প্লেনের টিকিট কাটা। বেজিং-এ হল্ট লাগবে চারদিনের, তারপরে ভারতে চার সপ্তাহের মতন। প্রচুর দাম পড়ে যাচ্ছে। অনেক কায়দা-টায়দা করে, অভূতপূর্ব এক আইটেনেরারি হল - স্যান ফ্রানসিস্কো থেকে বেজিং ওয়ান ওয়ে টিকিট। আবার বেজিং থেকে স্যান ফ্র্যানসিস্কো ভায়া দিল্লি, এবং দিল্লিতে প্রায় চার সপ্তাহের হল্ট, এবং দিল্লি থেকে ফেরাটা নিউইয়র্ক হয়ে, মানে অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড .... । স্যান ফ্রানসিস্কো থেকে বেজিং এয়ার চায়নার ডাইরেক্ট ফ্লাইট আছে, কিন্তু সেটা বোধহয় ভর্তি, তাই আমাদের দিল ভায়া ভ্যান্কুবার। তাই সই।

    লোকাল টাইমে দুপুরের দিকে বেজিং প্লেন পৌঁছল। প্লেনে ব্যব্স্থা ভালো, মানে সব প্লেনে যেমন হয় আর কি। শুধু সাদা লোক বেশি, আর ভারতীয় উপমহাদেশের লোক কম মনে হল। বেজিং এয়ারপোর্ট বিশাল। এয়ারপোর্টের মধ্যের ট্রেন ধরে আসা হল ইমিগ্রেশনে, সেখানে সিস্টেম স্মুথ। কিন্তু লাগেজ নিতে গিয়ে আমাদের বাক্স আর আসে না। অবহেলায় কোনের দিকে পড়ে আছে কিনা খুঁজে দেখলাম - নাহ্‌, নেই। অগত্যা, এনকোয়ারি কাউন্টার, সেখান থেকে পাঠিয়ে দিল বাক্সপ্যাঁটারার সেকশনে, এবং, সেখানে গিয়ে দেখলাম আমাদের বাক্সগুলি দিব্য রয়েছে। জানা গেল, আমাদের বাক্সগুলি কয়েক ঘন্টা আগে চলে এসেছে। এদ্দিন শুনেছি এবং প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও হয়েছে - মানুষ পৌঁছে গেছে এবং বাক্স পৌঁছয় নি, কিন্তু এখানে বাক্স আগে পৌঁছে গেছে দেখে দেশটার ওপর ভক্তি বেড়ে গেল।

    হ্যাঁ, একটা কথা বলা হয় নি - আমাদের তেমন নির্দিষ্ট প্ল্যান নেই। শুধু প্লেনের টিকিট কাটা হয়েছে। আর হলিডে ইন নামক হোটেল বুক করা হয়েছে। বাকি সব ওখানে গিয়ে ব্যবস্থা করা যাবে এখন।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.51.149.81 | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ২০:১৫687229
  • এল সি এম,

    আরে ঐ হলিডে ইন এক্সপ্রেস হোটেলে তো আমরাও ছিলাম ! - ভালো লাগছে পড়তে । লিখে যান !

    মনোজ
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৫৬687230
  • বাহ! একই হোটেল।

    আমার একটু সম্দেহ ছিল বছর পাঁচেক আগের ঘটনা, হোটেলের নাম মনে আছে কি না। কিন্তু হোটেলের ছবি তুলেছিলাম, হলিডে-ইন ই, এই যে ছবি।



    হোটেলটি ভালই ছিল, বাইরের দেওয়াল বেয়ে লিফ্‌ট ছিল, তাই দিয়ে উঠতে উঠতে এলাকাটা দেখা যায়। আর হোটেলের মধ্যে দুখানা খান দুয়েক ভালো রেস্টোরেন্ট ছিল। আমরা তিন রাত, চার দিন ছিলাম। সারাদিন ঘুরে বেরিয়ে এসে ঐ রেঁস্তোরায় এসে খাওয়া দাওয়া হত।

    একদিন বিখ্যাত খাবার - শার্ক ফিন স্যুপ নিয়েছিলাম। অবশ্য পরিবেশবিদদের কাছে এই খাবার কুখ্যাত, কারণ ব্লু ফিন হোয়েল - যাদের মেরে ফেলে তার ডানা দিয়ে এই স্যুপ তৈরী হয়, তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ছবি দিলাম --


    আমার অবশ্য আহামরি তেমন কিছু লাগে নি। মানে এখানে চাইনিজ কলিগদের যেমন শার্কফিন স্যুপ শুনলে একেবারে মুখচোখ মোহিত হয়ে ওঠে তেমন কিছু মনে হল না। একটু গামি।

    পিকিং-এ গিয়ে পিকিং ডাক না খেলে খুব দুঃখ হবে, আর সার্ভারও বলল এটি নাকি ওদের ওখানকার সিগনেচার আইটেম। সেটি কিন্তু সত্যিই ভালো ছিল, মুচমুচে ছাল, নরম মাংস। ছবি -


    চিনে গিয়ে ওখানকার অথেনটিক ডিম-সাম খাওয়া উচিত, সেটিও ছিল ভারী সুস্বাদু।


    মেনুতে একটি মাত্র ভারতীয় পদ ছিল - ল্যাম্ব রোগান জোস। শেষদিন ওটি অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। সেদিন শেফ এসে আমাদেরকে জিগ্গেস করেছিল এন্কেমন হয়েছে - ভারতীয়রা তার রান্না ভারতীয় খাবার খেয়ে কি বলে তা শুনতে। মাংসটা তুলতুলে সেদ্ধ হয়েছিল, কিন্তু মশলাপাতির রেশিও মনে হয় একটু এদিক ওদিক ছিল, আর ঝোলের সেই খোলতাই রং-টাও আসে নি। অবশ্য এত কথা আর তাকে বললাম না।
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:৪৮687231
  • দেখেছ! ভ্রমণ ছেড়ে কখন ভোজনে শিফ্‌ট্‌ করে গেছি খেয়াল নেই !

    ঐ হোটেলে আর একটি ইন্টারেস্টিং জিনিস জেবনে প্রথম বার দেখি - কারেন্সি মেশিন। মেশিনে ডলার ভরলাম, ঝরঝর করে চাইনিজ টাকা (উয়ান) বেরিয়ে এলো। নো পাশপোর্ট, নো ডকুমেন্ট্‌স। অবশ্য মেশিনে দেখলাম সব কারেন্সি নেয় না - একটা লিস্ট ছিল - ডলার, ইউরো, পাউন্ড, ইয়েন... কয়েকটা।

    এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের দিকে এলাম। হোটেলের নাম ঠিকানা লেখা কাগজ দেখালাম। একটি টয়োটা মিনিভ্যান এলো। মাঝ বয়েসী এক জন ড্রাইভার এলেন - এক বর্ন ইংরেজি জানেন না । তিনি আমাকে একটি কাগজ দিলেন তাতে হোটেলের নামের লিস্ট আর ভাড়া - ইংরেজি আর চাইনিজ ভাষায় লেখা আছে (চাইনিজ ভাষা বলে কিছু হয় না, ম্যান্ডারিন ইত্যাদি )। তো তাকে আমি সেই লিস্ট থেকে আমাদের হোটেলের নাম দেখালাম, সে আমাকে তার ভাড়ার ওপর আঙুল রেখে কি সব বলল - ট্যাক্সিচালকদের ইউনিভার্সাল ল্যাঙ্গুয়েজ - আমি বুঝে গেলাম - ঐ ভাড়া দিতে হবে কিন্তু। ইন্টারনেট থেকে দেখে গেছিলাম কিরকম ভাড়া হওয়া উচিত, একদম সেরকমই চাইল।

    ট্যাক্সি চলতে শুরু করল। এয়ারপোর্টের বাইরে সুন্দর রাস্তাঘাট। বছর দুয়েক হল বেজিং অলিম্পিক হয়ে গেছে, তখন নাকি সব কিছু আরো টিপটপ ছিল।


    রাস্তায় গাড়ি ইন্টারেস্টিং। বিদেশি গাড়ি - যেমন, মার্সিডিজ, বিএমডাব্লু, ভোক্সোয়াগন এসব তো ঠিক আছে - কিন্তু এত আমেরিকান গাড়ি - জিএমসি, লিন্কন, ডজ । অবশ্য খবরে পড়েছিলাম চায়নাতে আমেরিকান গাড়ির ভালো ব্যবসা।


    খানিক এগোতে এলো টোল গেট । তার দারুণ কারুকার্য দেখে মন ভরে গেল -


    জানতাম এয়ারপোর্ট থেকে ৪৫ মিনিটের মতন লাগে, কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেল তো। এক ঘন্টা হতে চলল। ড্রাইভার তো নো ইংরিজি, কয়েকবার জিগ্গেস করার চেষ্টা করলাম। একটু বিরক্ত হল যেন। কি একটা বললেন বিড়বিড় করে। একটু ভয় ভয় হল। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে কে জানে। নেটে পড়েছি টুরিস্টদের কাছে, বেজিং খুব সেফ জায়গা। তবু, একদম কথা বলা যাচ্ছে না, একটু অস্বস্তি হচ্ছে। তিয়ানেনমেন স্কোয়ারের কাছে চলে আসতে চিনতে পারলাম, ফরবিডেন সিটি-র তোরণের মুখে মাও জেদং-এর ছবি - এ জায়গা তো ছবিতে অনেক দেখেছি। আশ্বস্ত হলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে হোটেল চলে এল।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.232.109 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:৫৪687232
  • এল শি এম,

    মনে হচ্ছে যেন চিনি উহারে !

    সে যাই হোক, আপনি হলেন যাকে বলে পয়সা বালা আদমি - তাই হলিডে ইন ! আমরা আম জনতা - তাই হলিডে ইন এক্সপ্রেস ! ঐ হোটেলটি নয় !

    আপনি চীনা সহকর্মীদের পরামর্শ অনুযায়ী পছন্দ অনুসারে খানা খেয়েছেন ! বা তাদের কিছুটা সহায়তা পেয়ে থাকবেন ।

    আমার মনে হয় - নিজেরা যাওয়াই ভালো ! তাতে অনেক স্বাধীনতা থাকে । তার ওপর আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ ছিল - যাদের প্রতিটি ব্যাপারে খুঁতখুঁতানি থাকে । - কিন্তু সম্প্রতি আমাদের বয়েসের ভারেই - এস ও টি সির ওপর নির্ভর করতে হয় !

    ভালই লাগছে - আপনার লেখা পড়তে ! এতদিন লেখেন নি কেন - সেই ভেবেই অবাক হচ্ছি !

    মনোজ
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 212.78.232.109 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১১:৪০687233
  • ম্যাগ্লেভ ট্রেন !

    একটা ছোট্ট কুইজ বা রসিকতা ! যদি ট্রেনের দুদিকেই দুটো ছুঁচালো মুখওলা কেবিন থাকে – আর দুদিকেই ড্রাইভার বসে থাকে – তবে সেই ট্রেনের কটা ইঞ্জিন হওয়া উচিৎ ? আর চাকা – ছটা কামরার কতগুলো চাকা হবে ?

    শী আন থেকে বেইজিং – বেজিং থেকে শাং হাই যাওয়ার সময়ে - আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে বুলেট ট্রেনে চড়ার – খুব জোরেই চলে – কোনও সন্দেহ নেই ! কিন্তু ম্যাগ্লেভ ট্রেন ! ম্যাগনেটিক লেভিটেশান ট্রেন ! - লংইয়াং রোড স্টেশান থেকে পুডং এয়ারপোর্ট পর্যন্ত প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর যাতায়াত করছে । প্রতি ঘন্টায় ৪৩১ কিলো মিটার গতিবেগ । আমরা সব ক্যামেরা নিয়ে তৈরি । পাছে মিস করি তাই ৪৩০ কি মি হতেই ক্লিক করি । ঠিক পরক্ষণেই দেখি ৪৩১ কি মি। আমরা কিন্তু আরও একটা চমকের জন্যে তৈরি !- রেডি - ওয়ান - ট্যু - হুশ -! - ঠিক ঐ গতিতে উল্টোদিক থেকে আরও একটা ম্যাগ্লেভ ট্রেন যখন পরস্পরকে পাশ করে – তখন যে দ্বিগুণ গতি হয় – ঠিক ঐ পরিস্থিতির জন্যে আমরা সকলেই প্রস্তুত ছিলাম । - এক মুহূর্তেরও ভগ্নাংশ – হুশ – আর একটা ছোট্ট ধাক্কা ! – গাড়ি আমরা কেউই দেখতে পাই নি । চকিত একটা ছায়া ! ঐ গতিতে ম্যাগ্লেভ ট্রেন নাকি লাইন থেকে ৬ সেন্টি মিটার ওপরে চলে ! – ভাবা যায়! যাত্রাটা এত এক্সাইটিং – যে আরও একবার ট্রেন ভ্রমণ হল !

    সন্ধেবেলায় আমাদের যেতে হল – আরও একটা খুব আকর্ষণীয় প্রোগ্রামে । সমুদ্র বক্ষে লঞ্চে করে সাং হাই শহরের চারপাশে জলের ওপর দিয়ে শহর দেখা !

    ক্রুজ বলতে আমাদের যে ধারনা – খাওয়া-দাওয়া ! সেসব কিছুই নেই । শুধু কাঁচের দেওয়ালের দিকে দাঁড়িয়ে জাহাজ থেকে শহর দেখা ! – সেটা যে এত সুন্দর – জানতামই না । আসলে শাং হাই শহরটাই এত সুন্দর ! যেদিক থেকেই দেখি না কেন – একই রকম আকর্ষণীয় ! এত সুন্দর বাড়িগুলো – রঙিন আলোর মালা পড়ে সমুদ্রের ধারে দাঁড়িয়ে ! – যে বাড়িগুলো দেখতে রাস্তায় ক্যামেরা ক্লিক করছিলাম – সেগুলোই যেন আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে ! খুবই মোহময় সন্ধ্যা !

    লঞ্চের ভেতর থেকে ছবি তুলছি । আচমকা ক্যামেরার লেন্সে দেখি আমার পাশের জন জলের ওপরে ভাসছে ! এ কী !শুধু লেন্সে নয় – ক্লিক করার পর দেখি ছবিতেও সেই ভাবেই তাকে দেখা যাচ্ছে – ভাসমান ! আমার পাশেই যদি তিনি – তাহলে জলে ভাসে কিনি ! – বেশ আশ্চর্য লাগলো । পরে বুঝলাম – লঞ্চের ভেতর আলো আর বাইরে অন্ধকার । তাই প্রতিবিম্ব এসেছে ছবিতে !

    আরও একটা শো – সার্কাস দেখলাম – ভালই লাগলো ! চীনারা তো সার্কাস জিনিষটা ভালই করে ! সার্কাসের চেয়ে বলা ভালো অ্যাক্রবেটিক পারফরম্যান্স ! সারকাসে জন্তু জানোয়ার থাকে । ক্লাউনদের কারুকার্য থাকে । এখানে সেসব কিছু নেই । বেশ কিছু ছেলে মেয়ে অনেক অনেক উঁচুতে ট্র্যাপিজের খেলা বা উঁচু চেয়ার থেকে ঝাঁপ দিচ্ছে !

    এখন সবারই খুব আফসোস – এখানে কেন আরেকটা দিন থাকার প্রোগ্রাম নেই! এত সুন্দর সুন্দর বাড়ি, পরিষ্কার রাস্তা ! এত মোহময় শহর শাং হাই ! এসব যায়গায় তো আর দুবার আসা যাবে না ! দুই শহর । বেজিংএর চরিত্র যদি হয় বড় বোন – স্থিতধী, মৃদুভাষী – শাং হাইএর চরিত্র হবে চপলা যৌবনাচ্ছলা - ছোটো বোন !

    বাই বাই সাং হাই !

    মনোজ
  • lcm | 118.91.116.131 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:২৯687234
  • ওসব কিসু না, যদ্দুর মনে পড়ত্যাসে ক্রেডিট কার্ড পয়েন্টে কিনসিলাম হোটেল - ওদের সাইটে যা যা হোটেলের নাম ছিল তার মধ্য থিকা একখান।
    আর, চায়্না নিয়া আপনের লেখা দেইখ্যা এনথু পাইলাম। প্লাস, এখন গুরুতে খুব বেড়ানোর লেখার ঝোঁক হইছে, তাই খুব ইচ্ছা হইল। অবশ্য ব্যোমকেশের গল্প নিয়া সিনেমাও আজকাল খুব বাড়সে।

    ম্যাগনেটিক লেভিটেশন (ম্যাগলেভ) ট্রেন, হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে যায় - সাংহাই-এর এই ট্রেনের খুব সুখ্যাত শুনেছি। আপনের লেখা থেকে বুঝলাম ৬ সেমি, মানে লাইনের থেকে ২ ইঞ্চি ওপর দিয়ে যায়।

    আর আপনাদের রুট ইন্টারেস্টিং, শিয়ান থেকে নর্থ-ইস্টে বেজিং উঠে, তারপরে নেমে সাউথ-ইস্টে সাংহাই। তারপর?
  • d | 144.159.168.72 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:৫৫687235
  • গুরুর রাজদীপ তো ঠিক এক্ষুণি চীন বেড়াচ্ছে। পরশু চীনের প্রাচীরে ওপরে ছবি দিল। কালকে তিয়েনানমেন এর সামনে দিল।
  • d | 144.159.168.72 | ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৩:৫৬687237
  • ল্যাদোশকে বললাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন