এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • এনসিআর, এনপিআর, এ এ এঃ কিছু প্রশ্ন

    রঞ্জন
    অন্যান্য | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ | ২১১৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • রঞ্জন | 236712.158.895612.166 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:০০729016
  • কিছু নতুন কথা শোনা যাচ্ছে। কিছু নতুন তথ্য সোশ্যাল সাইটে ছড়াচ্ছে । তাই একবার খতিয়ে দেখা দরকার মনে হল।
    ধরুন,
    ১ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী রূপানীজির মিছিল এবং বক্তব্যঃ মুসলমানদের প্রতাড়িত হলেও আশ্রয়ের জন্যে ১৫০ দেশ আছে । ওদের জন্য এ এ এ ক্যান? হিন্দুদের জন্যে হিন্দুস্থান।
    ------- আড্ডায় সবাই বোলে উথল,সত্যিই ত ? এমন স্পষ্ট এবং সহ্জ কথা! এক্কেবারে কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিল গো!
    কিন্তু সব জায়গায় একটা খ্যাপা বাউল থাকে। সে গাঁজা পাকাতে পাকাতে বোলে উঠল , তাহলে ত বৌদ্ধ দেরও বাদ দিতে হয় । ওদের আশ্রয় দেবার জন্য মিয়ানমার ,ভুটান, জাপান, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম মুখিয়ে আছে । শ্রীলঙ্কা,ভুটা্‌ মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রধর্ম বৌদ্ধ। জাপান এবং ভিয়েতনামে মেজরিটান ধর্ম বৌদ্ধ, যেমন হিন্দুস্তানের সেকুলার রাষ্ট্রে হিন্দু মেজরিটান ধর্ম।
    আমার মনে হল ক্রিশ্চানদেরও বাদ দিলে হয় । ইতালি, ফ্রান্স, ব্রিটন, ইউ এস, লাতিন আমেরিকা , উত্তর এবং মধ্য ইউরোপ --কত বোলব?
    আর যদি ধর্মীয় বেরাদরিতে সবাই আশ্রয় দিত তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের থেকে এত মুসলিম ইউরোপে শরণার্থী হত ক্যান?

    ২ বাংলাদেশ মুসলিম রাষ্ট্র?
    --- ৪ঠা ডিসেম্বর, ১৯৭২ এ বাঙলাদেশের কন্সটিটুয়েন্ট এসেম্বলি যে সংবিধান গ্রহণ করল তাতে তার চরিত্র বলা হল স্বাধীন সার্বভৌম গণসাধারণতন্ত্র । প্রথম প্রিয়াম্বলে ' ন্যাশনালিজম, ডেমোক্র্যাসি, সোস্যালিজম এবং সেকুলারিজম' কে বলা হল সংবিধানের মৌলিক নীতি।
    এটাও বলা হল এই রাষ্ট্রের লক্ষ্য হল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজতান্ত্রিক শোষণমুক্ত সমাজ কায়েম করা--- অমিত শাহরা শুনছেন?
    কিন্তু ১৯৭৭ সালে সামরিক একনায়ক জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সেকুলার শব্দটি মুছে দিলেন। ১৯৮৮ এ রাষ্ট্রপতি এরশাদ এসে আর্টিকল ২এ ঢোকালেন যাতে এই দেশকে ইসলামিক রিপাব্লিক ঘোষণা করা হল।
    কিন্তু এই সংশোধনীটি ২০০৫সালে হাইকোর্ট এবং ২০১০ সালে সুপ্রীম কোর্ট বাতিল করল। সুপ্রীম কোর্ট বলল ইসলাম রাষ্ট্রধর্ম হলেও সংবিধান সেকুলারই থাকবে । ৩০ জুন, ২০১১তে সংবিধান আবার সংশোধিত হল। এবার 'সেকুলার' শব্দটি ফের জুড়ে দেওয়া হল এবং প্রিঅ্যাম্বল থেকে ১৯৯৭ সালে জুড়ে দেওয়া " ইন দ্য নেম অফ আল্লাহ, দ্য বেনিফিশিয়েন্ট, দ্য মার্সিফুল' মুছে দেওয়া হল। সর্বধর্ম সমভাব রাখতে বলা হল ' ইন দ্য নেম অফ আওয়ার ক্রিয়েটর, দ্য মার্সিফুল' ।
    অর্থাৎ বাংলাদেশের সংবিধান নাস্তিক না হলেও সবধর্মের প্রতি সমদৃষ্টি সম্পন্ন সেকুলার সংবিধান; আদৌ ইসলামিক সংবিধান নয় এবং ওখানে কোন ব্লাসফেমি আইন নেই ।
    তাহলে তিনদেশের প্রতি কটাক্ষ করা এ এ এ কিসের ভিত্তিতে দাঁড়াচ্ছে?
    আমার বিনীত প্রশ্নঃ আফগানিস্তানে বা বাংলাদেশে ক'জন জৈন অত্যাচারিত? সাকুল্যে আছেন কত যে ওদের জন্য আলাদা আইন চাই ?
    ( বাকি পরে লিখছি)।
  • সে | 236712.158.015612.63 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:০৬729027
  • রঞ্জনদা,
    বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম ছিল ১৯৮৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত।
    ব্লাসফেমি অপরাধযোগ্য কিনা জানি না কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকা অপরাধ বৈকী, জেল খাটতে হয়। এখানে বা অন্য কোথাও সেসব নিয়ে লেখা হয়েছিল পষ্ট মনে পড়ছে।
    মাওলান বলে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হয় না?
  • সে | 236712.158.015612.63 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:০৭729038
  • অভিজিত রায়কে হত্যা করবার পর আজ অবধি কোনও বিচার হয়েছে, অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে?
  • সে | 236712.158.015612.63 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:১৯729049
  • শুধু অভিজিত রায়ই নয়, এর পরপরই বেশ কয়েকটা খুন হয় ধর্মের সমালোচনার অপরাধে।
    তসলিমা নাসরিন অবশ্য ১৯৮৮-২০১০ এই সময়কালের ভেতরেই নির্বাসিত হয়েছিলেন।
    আমরা এনার্সি-ক্যা এসবের বিরোধীতা করছি অবশ্যই, কিন্তু তা বলে এসব ঘটনাগুলোকে বেমালুম ভুলে গিয়ে বাংলাদেশকে সেকুলার বলব? ২০১০ এর বেশ পরেও ফারাবি নামক একজন এবং আরও কয়েকজন তো হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছিল, এখানেই সেসব পড়েছি।
    বাংলাদেশে আজও হিন্দুদের ওপর প্রচুর অত্যাচার হয়, প্রমাণ চাইলে দিতে পারি। এনার্সি-ক্যা এসবের বিরোধীতা করতে গিয়ে এগুলো এড়িয়ে যাওয়া কিন্তু সত্যের অপলাপ।
    বাংলাদেশের হিন্দুরা নির্যাতনের জন্য পৃথিবীর অনেক দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তেমন মানুষ এখানেও আছেন।
    আজই আমার বাংলাদেশি বন্ধুদের গ্রুপ থেকে নিগ্রহের ভিডিও পেলাম।
  • সে | 236712.158.015612.63 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:২১729051
  • চুরাশিজন সেকুলার ব্লগারের হিট লিস্ট তৈরী হয়েছিল কি ১৯৮৮-২০১০ এর মধ্যে না পরে?
    বাংলাদেশ সেকুলার? জানা রইল।
  • রঞ্জন | 236712.158.895612.8 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:২৬729052
  • প্রশ্নঃ এটা কি সত্যি যে দেশভাগের পরে পাকিস্তানে হিন্দু জনসংখ্যার প্রতিশত ২৩% ছিল ,এখন কমে ৩% হয়েছে? যেমন বিভিন্ন নেতারা বলছেন?

    -- এগুলো বিকৃত তথ্য। খেয়াল করুন কেউ ডেটার রেফারেন্স বা সোর্স বলছেন না । আসলে ১৯৭১ পাকিস্তানের জনসংখ্যা এবং তার মধ্যে হিন্দুর প্রতিশত বলতে বোঝাত পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তান মিলিয়ে মোট জনসংখ্যা এবং দুই পাকিস্তানের হিন্দু জনসংখ্যা ও তার প্রতিশত।
    দেশভাগের পর পশ্চিম পাকিস্তানে দুই সম্প্রদায়ের পপুলেশনের অদল-বদল হয়েছিল। অর্থাৎ যত মুসলমান এপার থেকে পাকিস্তানে গেছল এবং প্রায় সমান সংখ্যক হিন্দু এপারে চোলে এসেছিল। ফলে হিন্দু তখনই ওপারে কমে গেছল। কিন্তু পূর্ব বাংলায় অনেক হিন্দু রয়ে গেল। আমার ঠাকুমার আপন ভাই ডঃ নীলমণি রায় সপরিবারে জমিজমা নিয়ে ময়মনসিং শহরে রয়ে গেলেন। ছোট পিসি এবং ট্রেড ইউনিয়নিস্ট উকিল তথা রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিক্ষক পিসেমশায় কমলেশ্বর নাহা রয়ে গেলেন। ১৯৭১ এ এঁদের আদ্দেক পরিবার কোলকাতায় স্থায়ী ভাবে এলেন।
    তাই ১৯৭১ এ পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে বাংলাদেশ হয়ে গেলে গোটা পাকিস্তানের জনসংখ্যা এবং হিন্দু জনসংখ্যা স্বাভাবিক ভাবেই কমে গেল।
    সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের ফাঁক ধরা পরে স্বাধীনতার সময়য় থেকে শুধু পশ্চিম পাকিস্তান বা আজকের পাকিস্তানের জনসংখ্যা চেক করলে।
    যেমন, দেশভাগের সময় পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ভারতে ৫ মিলিয়ন হিন্দু চলে আসার পর ১৯৫১ সালে হিন্দু জনসংখ্যার অনুপাত দাঁড়াল মাত্র ৩।৪৪%।
    ( এটাকে বিকৃত করে ১৯৪৭ সালের বিভাজনের আগের ডেটা কোট করা হয়য়)। ১৯৬১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে( অর্থাৎ বর্তমান পাকিস্তানে) অ-মুসলিম জনসংখ্যা আরও কমে গিয়ে দাঁড়ায় ২।৮৩% । কিন্তু তারপরই এই সংখ্যাটা বাড়তে থাকে।
    জনগণনা বর্ষ অ-মুসলিম (অধিকাংশই হিন্দু) প্রতিশত
    ১৯৭২ ৩।২৫%
    ১৯৮১ ৩।৩০%
    ১৯৯৮ ৩।৭০%
    এই হল গত কয়েক দশক ধরে লুন্ঠিত, ধর্ষিত, নিহত হয়ে জনসংখ্যা কমে যাওয়ার গল্প।
    সিন্ধ প্রদেশে সবচেয়ে বেশি হিন্দু। সেখানে ২০১৬তে জোর করে ধর্মান্তরণ বে-আইনি বোলে আইন পাশ হয়েছে। ২০১৮ সালে পাঞ্জাব বিধানসভা শিখ আনন্দ ম্যারেজ অ্যাক্ট পাশ করেছে। (চলবে)
  • রঞ্জন | 236712.158.565612.163 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:৩৯729053
  • @সে,
    ব্লগারদের হত্যাঃ এর মধ্যে কি শুধু হিন্দু? নাস্তিক বোলে মুসলমানদেরও হত্যা করা হয়নি কি ? সেকুলার ভারতে হিন্দুবিরোধী অভিযোগে গ্রাহাম স্টাইন ও তার শিশুদের পুড়িয়ে মারা হয়নি কি? গত কয়েকবছরে রাজস্থান থেকে হায়দ্রাবাদ , গুজরাত থেকে ঝারখন্ড সর্বত্র হিন্দুবিরোধী গোমাতার অসম্মান এসব বাহানায় কত জন মব লিঞ্চিং এর স্বীকার হয়েছেন? হিন্দু বিরোধী অভিযোগে কতজন পুলিশ অফিসার নিহত হয়েছেন? কতজনের শাস্তি হয়েছে?
    কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী ভারত এবং বাংলাদেশ সেকুলার, অন্ততঃ এই দুইদেশের প্রি-অ্যাম্বল অনুযায়ী।
    আপনি আইনের অবস্থান এবং সমাজে মেজরিটারিয়ান ফিলিং দুটোকে গুলিয়ে ফেলেছেন।
    আদৌ বাংলাদেশে ধার্মিক গোঁড়ামির উৎথানএর (এবং ভারতেরও) বিপদ ও তার প্রতি রাষ্ট্রের নরম মনোভাবকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই ।
    বস্তুতঃ এই টইয়ের উদ্দেশ্য যখন সেটাকে আইনি জামা পড়িয়ে জাস্টিফাই করা হয় তার বিরোধিতা করা। দেখাতে চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র বোলে আইনে ঘোষণা করার কোন ভিত্তি নেই । আপনিও মানছেন যে ২০১০ এর পর থেকে বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী ইসলামিক রাষ্ট্র নয় । একইভাবে ভারতের সংবিধান সেকুলার হলেও আইন যা পাশ করা হচ্ছে তা সেকুলার নয় , তাই বিরোধ।
  • Du | 237812.69.0178.214 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:১৬729054
  • ভারতদেশের সেকুলারত্ব নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এমনকি মাইনরিটি অ্যাপিজমেন্ট নিয়েও কারো সত্যি করে কোন ডাউট নেই। কিন্তু হঠাৎ করে জানা গেল কাউ স্লটার প্রায় সারা ভারতেই নিষিদ্ধ। ভিত্তিটা কি এর? জীবপ্রেম যদি হয় বাকী জীবেদের দোষ কি? আলোচনা বিপথ করতে নয় লিখলাম শুধু এইজন্য যে ম্যাজরিটির কিছু অ্যাপিজমেন্ট থাকেই যেটা আমাদের স্বাভাবিক বলেই মনে হয়।
  • | 236712.158.676712.186 | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:২৫729055
  • মাইনরিটি অ্যপিজমেন্ট একটা বিরাট ঢপ।
  • Amit | 236712.158.23.209 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:০৪729017
  • বাংলাদেশ র সেক্যুলারিজম নিয়ে বলতে পারবো না যেহেতু নিজের অভিজ্ঞতা নেই , তবে সেটা হটাৎ কেন ইসু হয়ে দাঁড়ালো, সেটা বুঝতে পারছি না। নিজে কিছুদিন মিডল ইস্ট এ এবং মালয়েশিয়া আর ব্রুনেই তে থাকার সুবাদে বলতে পারি বহু ইসলামিক দেশ- ই আর যাই হোক , সেক্যুলার নয়। সেক্যুলার বলতে আমি বুঝি যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে দেশের আইনে কোথাও ডিস্ক্রিমিনেট করা হয়না এবং যে কেও নিজেরদের ধর্মাচরণের স্বাধীনতা পান, অন্যদের বিরক্ত না করে বা অন্যদের স্বাধীনতা খর্ব না করে। এর মানে এই নয় যে এই দেশগুলোতে অন্য ধর্মের লোক দেখলেই রাস্তাঘাটে মেরে কেটে ফেলে দেয়, কিন্তু ডিস্ক্রিমিনেট বহু ক্ষেত্রেই করা হয়। সুতরাং সেক্যুলারিজম বা একুয়াল রাইটস , বা ইভেন বেসিক হিউমান রাইটস এর দিক দিয়ে ৫৭ এর মতো এতগুলো ইসলামিক দেশ, এদের কারোর রেকর্ড ই খুব বলা র মতো নয়।

    অবশ্যই এদের ভুলের দায় ভারতের মুসলিম দের ওপর বর্তায় না, এনারা এই দেশে জন্মেছেন, এই দেশটা তাদের ততটাই, যতটা আমাদের বা অন্যদের। কিন্তু এখানে বাংলাদেশ বা ইসলামিক দেশ গুলো নিয়ে লেখা হচ্ছে দেখে দু পয়সা দিয়ে গেলাম। আবার এদের মধ্যেও সব দেশ সমান নয়, কোনো কোনো দেশ, যেমন সৌদি বা কুয়েত প্রচন্ড ভাবে গোড়ামি দেখায়, বাকিরা অতটা নয়, কিন্তু ডিসক্রিমিনেশন আছেই। ওটাকে সেক্যুলারিজম এর সাথে গোলানোর কোনো স্কোপ ই নেই।

    সেখানে এই দেশগুলোতে:

    ১। ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের পাবলিক ডিসপ্লে নিষিদ্ধ। সৌদি তে এয়ারপোর্ট এ ব্যাগ চেক করে যদি কোনো গীতা বা বাইবেল এর কপি পায়, ছিড়ে ফেলে দেয়। বাকি দেশ গুলোতে এতটা না হলেও, কোনো খোলা মাঠে পুজো করা হোক বা সেলেব্রেশন নিষিদ্ধ।

    ২। সমস্ত মসজিদে ফুল ভলিউম এ মাইক বাজিয়ে আজান শোনানো হয়। কিন্তু অন্য কোনো ধর্মের অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো কড়াভাবে নিষিদ্ধ। এমনকি পুজোতে খাওয়া দাওয়া হলেও সেগুলো হলের মধ্যেই করতে হয়, বাইরে দেখা গেলে সেখানেও বাধা আসে।

    ৩। সরকারের পয়সাতে প্রতিটা মহল্লাতে মসজিদ বানানো হয় এবং মেন্টেন করা হয়,, কিন্তু অন্য কোনো ধর্মের লোকেরা নিজেরা কোনো মন্দির বা চর্কায় বানাতে চাইলে পের্মিস্সং দেওয়া হয়না। এই গত ৩-৪ বছরে আবু ধাবি তে মন্দির বানাতে দেওয়া হয়েছে। ওমানে দু একটা আছে, তার কারণ ওমানের সুলতান নিজে ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করেছেন এবং তার আমলে ধর্মীয় উগ্রতা অনেক কম দেখা গেছে গত ২০-৩০ বছরে।

    ৪। মজা হলো এতো কড়াকড়ি সত্ত্বেও কিন্তু সৌদি তে আরামকো কোয়ার্টার্স এ বা মার্কিন আর্মি বেস এ চার্চ আছে মার্কিন বা ইউরোপিয়ান দের জন্যে। কারণ টা সহজেই অনুমেয়।

    ৫। সরকার থেকে ইসলামিক রুল বা কালচার ঠিকঠাক পালিত হচ্ছে কি না সেসব দেখার জন্যে নীতি পুলিশ নিয়োগ করা হয়। তাদের কাজকম্মো যোগী সরকারের আন্টি রোমিও স্কোয়াড বা আন্টি লাভ জিহাদ দলের থেকে আলাদা কিছু নয়।

    ৬। এই দেশ গুলোতে সরকারি পয়সায় ইসলামিক স্টাডি র পেছনে বিশাল ফান্ডিং ঢালা হয় সব কোটা কলেজ বা উনি তে। অন্য কোনো ধর্মের স্টাডি র পেছনে টাকা দেওয়া হয়না বা পড়ার প্রভিশন ই নেই।

    ৭। ইসলামিক ব্যাঙ্ক মুসলিম দের বিনা সুদে বা খুব অল্প সুদে ঋণ দেয়, বাকি দের অনেক বেশি সুদে ঋণ নিতে হয়। কোনো ব্যবসা শুরু করতে গেলে সেখানে শুরুতেই একটা বিশাল তফাৎ হয়ে যায়।

    ৮। ইসলামিক ব্যাঙ্ক গুলো মুসলিম দের বাড়ি র জন্য লোন দিলে েকে তো প্রায় বিনা সুদ, তার ওপর তারা যতদিন না বাড়ির কনস্ট্রাকশন শেষ করে সেই বাড়ি ভাড়া দিচ্ছে আর ইনকাম করতে শুরু হচ্ছে, টোটো দিন তাদের ইনস্টলমেন্ট দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু বাকিদের জন্য এক দিকে বেশি ইন্টারেস্ট, তার ওপর ইন্সটলেমেন্ট সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায়।

    ৯। সরকারি নিয়মেই আছে কোনো সরকারি উচ্চপদে মুসলিম ছাড়া অন্য কাওকে বসানো যাবে না।
    ১০। সরকারি higher স্টাডিস এর স্কলারশিপ বা বিদেশে পড়তে যাওয়ার স্কলারশিপ শুধু মুসলিম দেরি দেওয়া হয়।

    ১১।মিডল ইস্ট র কোনো দেশ ইমিগ্র্যান্ট নেয়না , বা ওদের দেশে ২০-৩০ বছর থাকলেও সেখানে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি বা সিটিজেনশিপ দেয়না।

    ১২। কোনো নন মুসলিম মহিলা যদি কোনো এরাবিক কে বিয়ে করেন, তাহলে ইসলাম গ্রহণ করা কম্পালসরি যদি তিনি সিটিজেনশিপ ন্তে চান। তাতেও ১০ বছরের ওয়েটিং পিরিয়ড আছে। তিনি যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করেন, তাহলে স্বামীর সম্পত্তির ভাগ পান না বা দেশে ডিভোর্স এর মামলা করতে পারেন না।

    আগে যেটা লিখেছি, এদের মধ্যেও সব দেশ সমান নয়, মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া অনেক সফ্ট। মালয়েশিয়া তে মেজর সব বিসনেস চীনা দের হাতে, সুতরাং এতো বেশি কড়াকড়ি করতে গেলে ওদের লালবাতি জ্বলবে। সুতরাং অনেক ক্ষেত্রেই এদের রুল গুলো মিডল ইস্ট র মতো এতটা ডিস্ক্রিমিনারটি নয়। কিন্তু তও আছে।

    এতো গাদা গুচ্ছের লেখার দরকার ছিল না, কিন্তু বাংলাদেশ র রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম, কিন্তু তারা আবার সেক্যুলার ও, এটা জাস্ট অনেকটা কাঁঠালের আমসত্তর মতো শোনাচ্ছে। সেক্যুলার মানে এটাই যে সেই দেশে কোনো ধর্মভিত্তিক আইন থাকবে না। যদিও এর সাথে গ্রাউন্ড রিয়ালিটির কোনো সম্পর্ক নেই। ইন্ডিয়া আইনত সেক্যুলার হওয়া সত্ত্বেও গুজরাট আটকায়নি, গ্রাহাম স্টেন হত্যা আটকায়নি, গরুর নাম করে গাদা গাদা লোককে মারা আটকায়নি। কিন্তু সংবিধানে অন্তত এতদিন সেক্যুলার ছিল, সরাসরি কোনো ডিস্ক্রিমিনাটোরী আইন ছিল না, এবার সেটাও গেলো আর কি।

    কিন্তু তার জন্যে জোর করে বাংলাদেশ বা অন্য ইসলামিক দেশ গুলোকে সেক্যুলার প্রমান করার দরকার পড়ে না। যেটা যা , সেটা তাই ই।
  • Du | 237812.69.8967.198 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:৫১729018
  • রঞ্জনদার ৮ঃ২৬ খুবই ইম্পর্ট্যান্ট।
  • সে | 236712.158.015612.31 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:০৩729019
  • অমিতকে ক।
  • b | 236712.158.676712.160 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:১৪729020
  • বাংলাদেশটা বুঝলাম। অনেকটা ইসরায়েলের মতো লাগলো। ইদিকে জিউইশ নেশন স্টেট, এদিকে সেকুলার বলে লাফালাফি।
  • | 236712.158.676712.146 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:০৮729021
  • অমিত এর পোস্ট এর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা যেগুলো সেগুলো মোটামুটি এইঃ

    'এই দেশ গুলো' এক ধরণের হোমোগেনেইটি ক্লেম করছে, যেটার মডেল সৌদি। কিন্তু তাতে মোটামুটি আলবানিয়া।তুরস্ক/মিশর থেকে ইন্দোনেশিয়া অব্দি সমস্ত দেশ কেই ধরা যায়। এটার মূলে শুধুই অ্যানালিসিসের সুবিধা নাই, বাংলা রেসিজম আছে। অথচ উচ্চ শিক্ষিত মানুষের কাচে এটা আশা করা যায় না।
    ভারতের সঙ্গে , অন্য দেশের পার্থক্য অ্যাকসেনচুয়েট করা হোক আমরা চাইলে, পার্থক্য আমাদের ও করতে শিখতে হবে। এই যে আমেরিকা এতো জ্ঞান দেয়, ফ্র্যাংক্লি , ওদের সেগ্রিগেশন যখন চলছে, তখন তো আমাদের ওসব ফাল্তু জিনিশ নাই। কিন্তু ওরা উল্টে যদি বলে, আমরা তো আইন করে বন্ধ করেছি, এবং কালো লোকের সোশাল মোবিলিটি বাড়িয়েছি, তোমরা দলিত দের সোশাল মোবিলিটি বাড়াতে পেরেছো, ইত্যাদি। তো তখন চাপান উতোর লেগে থাকবে ইত্যাদি। আমরা বলব, এতো ই যদি করলে, তাইলে ব্ল্যাক লাইভ্স ম্যাটার হচ্ছে কেন। তখন ওরা বলবে, সমাজ সরকারের থেকে পিছিয়ে , তখন সেটুকু বলার জন্য আমাদের সংবিধান রক্ষার আন্দোলনের কথা বলতে হবে ইত্যাদি।

    এই গেল এক টা দিক। আরেকটা দিক আছে। প্রচুর দেশে, প্রচুর রকম মাইনরিটি কিন্তু স্ট্রং প্রোগ্রেসিভ অপিনিয়ন রয়েছে, তালিকা করতে গেলে সেটার ও করতে হবে, নইলে এই সব পোস্ট আমাদের দেশে বিজেপির টকিং পয়েন্ট্স এ কাজে লাগবে, তো সেটা এখনো মনে হচ্ছে উদ্দেশ্য নয়, কিন্তু তাহলে তো আরেকটু কেয়ারফুল হতে হবে। দিস ইজ নট অ্যাবাউট পারসোনাল ভ্যালু জাজমেন্ট, আন্দোলন চলহ্চে, বিজেপির কাজে লাগতে পারে টকিং পয়েন্ট্স এলে পাল্টা টকিং পয়েন্ট্স আসবে। ফেয়ার!!

  • | 237812.68.674512.79 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:২৪729022
  • ড্রিফ্ট অফ দ্য আর্গুমেন্ট টা বেশ মজার। যদিও অমিত ক্লিয়ারলি চাইছেন না, বা অমিত কেন কোনো সেন্সিবল লোক ই চাইবেন না,

    যেকোনো হিন্দুত্ত্ববাদী এজেন্ডার শারণতঃ র‌্যাশনাল হিসেবে এই রকম ভাবে লজিক ব্যবহার করা হয়ঃ

    -- ইসলামিক দেশে অ-মুসলিম রা অত্যাচারিত।
    --ইউরোপ মুসলমান রা দখল করে নিল।
    --আমেরিকা ঘুসকে মেরেছে, আমাদের ও তাই করা উচিত, সার্জিকাল স্ট্রাইকে, এবং দেশের অভ্যন্তরে।
    -- আমাদের দেশে মুসলমান রা প্রায় সে সব দেশের মতই অ্যাপিজমেন্ট এর বেনেফিসিয়ারী
    -- আইন কানুন বড় কথা না, সে অনেক দেশেই অনেক নিয়ম থাকে, আসলে সামাজিক ভাবে মুসলমান রা সবার উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে।
    -অত্যাচার যে চালাতে পারছে, কারণ 'ওরা' সংখ্যায় প্রতিদিন ডেঞ্জারাস ভাবে বেড়ে যাচ্ছে ইত্যাদি।

    অতএব ঘুসকে বা না ঘুসকে মারো। আর মুশল মান দের কে দেশ থেকে পার্জ করো।

    --পাকিস্তান অথবা কবরে যাওয়া উচিত

    ইত্যাদি।

  • Amit | 236712.158.23.215 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২০729023
  • আমার পোস্টে একটা কেন, হাজারটা দুর্বলতা আছে। কিন্তু আমি তো প্রবন্ধ লিখতে বসিনি এখানে, কঠিন কঠিন কথা বলতেও পারিনা, লিখতে ও পারি না, আর বোঝা তো দূরের কথা। জাস্ট নিজের এক্সপেরিয়েন্স গোদা বাংলায় লিখে দি।

    এখানে খ বাবু হটাৎ করে হোমোজেনিটি ক্লেম কেন করলেন বুঝলাম না, আগেই লিখে দিয়েছি সৌদি বা কুয়েত এ যেরকম গোড়ামি বা ধর্মীয় উগ্রতা দেখেছি, সেরকম অনেক দেশ ই নয়, মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ার উদাও দিয়েছি, কিন্তু আইনত ডিসক্রিমিনেশন সব কটা ইসলামিক দেশে আছে ডিফারেন্ট ডিগ্রী তে, সেটা দিনের দিন জীবনে প্রভাব ফেলে কি না সেটা অন্য কথা, কিন্তু আছে। এবার শখ থাকলে দেশ ধরে ধরে কেও আলোচনা করতে চাইলে শুরু করেন, আমি ও জুড়ে দিতে পারি তাতে আমার নিজের চোখে দেখা সব অভিজ্ঞতা যেটা হয়তো প্রাবন্ধিক দের বইপড়া যুক্তির থেকে খুব লো স্ট্যান্ডার্ড হবে না। কিন্তু পুরো জিনিস টাই সময় নষ্ট।

    ধর্মের বেসিস এ কোনো দেশ থাকা মানেই সেটা সেক্যুলার হতে পারেনা, এটাই গোদা সত্যি কথা। সুতরাং বাংলাদেশ এর উদাহরণ বা নানা যুক্তিজাল বুনে তাদেরকে সেক্যুলার দেখানোর চেষ্টা - এই পুরো জিনিস টাই আমার কাছে নিতান্ত অপ্রোজনীয় আর টাইম ওয়েস্টিং মনে হয়েছে। এবার এটা নিয়ে কেও পোবোন্ধো নামাতে চাইলে নামান।

    ইন্ডিয়া একটা সম্পূর্ণ আলাদা দেশ, হ্যা সবার থেকে আলাদা। এই দেশে সব রকমের ধর্ম মিলে মিশে আছে হাজার বছর ধরে, এখানে সেক্যুলারিজম জাস্টিফাই করতে আমাদের জোর করে অন্য দেশের উদা দেওয়ার কোনো দরকার নেই। আমি অন্তত চাইনা ইন্ডিয়া বাকি ইসলামিক দেশ গুলোর মতো হয়ে যাক। যেটাকে শশী থারুর বলেছিলেন, "হিন্দু পাকিস্তান"।
  • o | 237812.69.3423.44 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০২729024
  • সত্তর বছর পরেও চাড্ডি-লিবেরাল সব্বাই একমত যে পাকিস্তান মানেই খারাপ। ভাগটা হেবি করেছিল কিন্তু। সাহেবদের মাইরি পাকাহাতের কাজ। ঃ-)))
  • রঞ্জন | 236712.158.895612.8 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৫৬729025
  • @ অমিত, এবং সে ,
    কন্টেক্সটটি খেয়াল করুন।
    আমি এই টইয়ে একবারও গ্রাউন্ড রিয়েলিটি নিয়ে কথা বলছি না , বরং বলছি সংবিধান ও আইন নিয়ে কারণ এ এ এ প্রণেতারা এই আইনকে সংবিধান সম্মত বলে দাবি করে আফগানিস্তান পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে ইসলামিক রাষ্ট্র বোলে দেগে দিয়েছেন। আমি তথ্য দিয়ে দেখাতে চাইছি জন্মের সময় এবং মাঝখানের জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের সময়টুকু বাদ দিলে (অর্থাৎ ২০১১ থেকে) বাংলাদেশ অন্ততঃ তার সংবিধান অনুযায়ী একটি 'সেকুলার' রাষ্ট্র। এটা সে' ও তার পোস্টে স্বীকার করে নিয়েছেন । তাহলে এ এ এ নিয়ে বর্তমান সরকারের প্রেমিসটা দাঁড়ায় না । এইটুকুই।

    আর জোর করে বাংলাদেশ কেন ,কোন সরকারকেই 'সেকুলার'এর সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকার রাখি না । গ্রাউন্ড রিয়েলিটির ভিত্তিতে কোন কোন সরকারকে এই সার্টিফিকেট দেওয়া যায় তা' বিতর্কের বিষয়। এই সার্টিফিকেট দেওয়ার অধিকারয়- -- আমার হিসেবে-- শুধু সেই দেশের অল্পসংখ্যকেরা, এবং অবশ্যই গ্রাউন্ড রিয়েলিটির ভিত্তিতে। এটাই কষ্টিপাথর, ঠিক যেমন গণতন্ত্র মাপার কষ্টিপাথর হল রাষ্ট্র বিরোধী কন্ঠস্বরকে কতটা স্পেস দেয় তা দেখা ।
  • রঞ্জন | 236712.158.9005612.51 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১১:৪৩729026
  • ্সিভিল সোসাইটির প্রতিবাদী কন্ঠস্বর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৯৯১ জন ল'ইয়ার সংযুক্ত হস্তাক্ষর দিয়ে এ এ এ এবং প্রতিবাদী আন্দোলন নিয়ে সরকারের সমর্থনে বক্তব্য দেওয়ার বিরোধিতা করে বলছেন এটি সমস্ত আইনজীবির প্রতিনিধিমূলক বক্তব্য নয় । আইনটির চরিত্র সংবিধান সম্মত কিনা এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলন থামাতে বিষমানুপাতিক বলপ্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চিন্তার বিষয়।

    এবার দেখুন পাঞ্জাবের অ্যাডভোকেট জেনারেল অতুল নন্দার বক্তব্য।
    উনি বলছেন নাগরিকতা আইনের এই নবীনতম সংশোধনটি ' ব্যাড ইন ল', পুয়োর ইন হিস্ট্রি'। কেন?
    ১ সরকারের বড় দাবি যে এই সংশোধনীটির উদ্দেশ্য হল ৭০ বছর আগের 'ঐতিহাসিক ভুল' শোধরানো । কিন্তু সংবিধানের আর্টিকল ৬ থেকে ১১ ( পার্ট -২, সিটিজেনশিপ) দেখলেই বোঝা যায় যে তাতে এই সমস্যার সমাধান যথা সময়ে করা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে যারাই ওই দেশভাগের সময়ে ভারতে শরণার্থী হিসেবে এসেছেন তাঁরা সবাই ভারতের নাগরিক।
    [১৯ জুলাই, ১৯৪৮এর আগে আসলে স্বতঃ, এর পরে আসলে ৬মাস ভারতে বাস করে আবেদন করলেই। আমার নিজের পরিবারের দাদু, বাবা, কাকা, মামা সবাই এভাবেই নাগরিকত্ব এবং ভোটদানের অধিকার পেয়েছেন। এগুলো আমি আগের অন্য একটা সম্বন্ধিত টইয়ে লিখেছি।]
    ২ এই সগশোধনীতে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ অব্দি যারা আসবেন ( মুসলমান ছাড়া) তারা সবাই বিনা প্রশ্নে নাগরিকত্ব পাবেন। তাহলে পার্টিশনের কথাটা ঢপ?

    ৩ এবার সিটিজেনশপ অ্যাক্টের (১৯৫৫) ধারা ২(বি) দেখুন।
    'বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী' বা ইল্লিগাল মাইগ্র্যান্ট হলেন যিনি পাসপোর্ট/ ভিসা বা ভ্রমণের জন্যে আইনসম্মত কাগজপত্র ছাড়া এদেশে এসেছেন।
    তাহলে কেউ বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী' কিনা তার একটাই মাপদন্ড-- ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট আছে কি নাই? কোন ধার্মিক পরিচয় নয় ।

    কিন্তু বর্তমান সংশোধনীটি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এটিকে 'তরল' করে দিয়েছে । বলা হচ্ছে অ-মুসলিম ছ'টি ধর্মের লোক হলে কোন দস্তাবেজ চাওয়া হবে না । শুধু দ্যাখা হবে ঐ তিনটি দেশ 'থেকে' এসেছে কিনা।
    'থেকে' মানে? ইন হোয়াট ক্যাপাসিটি? ওই দেশগুলোর নাগরিক, যারা ধর্মীয় কারণে এদেশের নাগরিকতা চাইছে? অথবা ঐ দেশগুলোর অধিবাসী? অথবা ঐ দেশগুলো থেকে বেড়াবার অছিলায় ভারতে ঢুকেছে।
    সেসব দেখার দরকার নেই , কোন অপরাধী সেখান থেকে বা অন্য কোন দেশ থেকে পালিয়ে এল এবং এদেশে বিয়ে করে সংসার পেতে বসলেও কোন চিন্তা নেই । এফিডেভিট দিলেই হবে যে অমুক তিনটি দেশের কোনটা থেকে এসেছি। বিনা কাগজ দেখিয়ে সবাই নাগরিকত্বের দাবিদার। শুধু 'মুসলিম'রা বাদ? ওরা শরণার্থী নয় , বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী; অতএব জেলে যাও।
    ৪ সংবিধান সভার বিতর্কেও এই ধর্মীয় মাপদন্ডের ভিত্তিতে নাগরিকতার ওকালতি হয়েছিল। পঞ্জাবরাও দেশমুখের প্রস্তাব ছিল যে ধর্মে হিন্দু বা শিখ হলে এবং যে দেশেই বাস করুক সে দেশের নাগরিক না হলে তাকে 'ন্যাচারালাইজেশন ধারা' ( আর্টিকল ৬ এবং শিডিউল ৩) অনুযায়ী নাগরিকত্ব দেওয়া হোক । সেই আজকের যুক্তি, মুসলমানেরা পাকিস্তান যেতে পারে , হিন্দু ও শিখ কোথায় যাবে ? কিন্তু সংবিধান সভার গরিষ্ঠ অংশ এই যুক্তি মানেননি। তাঁদের মতে শরণার্থীদের মধ্যে ধার্মিক বিভাজন বা মাপকাঠি আনা অনুচিত।
  • রঞ্জন | 236712.158.455612.60 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২০:০০729029
  • ধন্যবাদ, তাতিন। এই কথাগুলো এবং পরিপ্রেক্ষিত সবার জানা দরকার।

    এন পি আর এবং এন সি আঃ(কাট অফ ডেট এবং আবশ্যক ডকু)
    ==================
    অন্য সুতোয় আমার একটি বক্তব্য সংশোধন করে আরও খোলসা করছি।
    খেয়াল করুন, সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট, ১৯৫৫তে মোটামুটি 'জুস সোলি' বা জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সিদ্ধান্ত মানা হয়েছে।
    ১) তাই ২৬ জানুয়ারি ১৯৫০ এবং পরে যারা জন্মেছেন তাঁরা স্বতঃ ভারতের নাগরিক। (ধারা ৩ক)।
    কিন্তু পরের সংশোধনগুলোতে ভারত ক্রমশঃ 'জুস স্যাঙ্গুইনি' বা রক্তধারার সূত্রে নাগরিকত্বের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তাই ১লা জুলাই, ১৯৮৭তে দাঁড়ি টেনে দেওয়া হল।
    এই সময়ের জাতকদের জন্য জন্মের তারিখ প্রমাণ করাই যথেষ্ট, বাবা-মাকে টানা নিষ্প্রয়োজন। ফলে ম্যাট্রিক বা স্কুল ফাইনালের বা স্নাতক/স্নাতকোত্তর পরীক্ষার সার্টিফিকেট/মার্কশীট যাতে জন্মতারিখের প্রমাণ রয়েছে তাই যথেষ্ট।এছাড়া ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট, জমিবাড়ি বিষয়ক মালিকানার সার্টিফিকেট (সরকারী বিভাগ, মিউনিসিপ্যালিটি বা ল্যান্ড রেভিনিউ), জীবন বীমা, সরকারি চাকরির সময় জারি জন্মতারিখের প্রমাণপত্র, মায় সিভিল বা ফৌজদারি মোকদ্দমায় থানা/আদালত দ্বারা জারি কাগজ যাতে বয়েস বা জন্মতারিখের উল্লেখ রয়েছে সবই গ্রাহ্য। এর যে কোন একটিই যথেষ্ট , ভয় পেয়ে একগাদা কাগজ জোগাড়ের দরকার নেই , তাতে নামের বানানের অমিল থাকলে তাতে হিতে বিপরীতের আশংকা ।
    ২) এরপর ১লা জুলাই, ১৯৮৭ থেকে ৩১শে ডিসেম্বর, ২০০৩ পর্য্যন্ত যারা জন্মেছে তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণের সময় নিজের জন্মের উপরোক্ত প্রমাণ ছাড়া নিজের বাবা অথবা মার নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে একইভাবে কোনএকটি কাগজ দেখাতে হবে। এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে একটি তৃতীয় কাগজ লাগবে; যদি নিজের জন্মের যা সার্টিফিকেট ( এডুকেশনাল, এল আই সি, ভোটার কার্ড ইত্যাদিতে) তাতে বাবার নাম লেখা থাকে তাহলে আর তৃতীয় ডকুমেন্টের দরকার নেই । [ধারা ৩(খ)]
    আসলে বাজপেয়ীজির সময়ে ২০০৪ সালের সংশোধনী থেকেই ভারত জুস স্যাঙ্গুইনি বা ভারতীয় মূলের হওয়ার সিদ্ধান্তের দিকে ঝোঁকা শুরু। তাই বাপ-মাকে নিয়ে টানাটানি।
    ৩) এরপর যারা ১লা ডিসেম্বর, ২০০৪ এবং তার পরে জন্মেছেন তাদের জন্যে নিজের ভারতে জন্মের তারিখের প্রমাণ ছাড়া হয় বাবা-মার দুজনেরই ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণের কাগজ দিতে হবে। কিন্তু যদি বাবা-মার মধ্যে কোন একজন যদি ভারতের নাগরিক না হন, ধরুন আমেরিকার বা সৌদি আরবের বা বাংকাদেশের নাগরিক হন তাহলে তিনি যে 'ইল্লিগ্যাল ইমিগ্র্যান্ট' নন তার প্রমাণ দিতে হবে । অর্থাৎ তাঁর ভিসা/পাসপোর্ট ঠিকঠাক আছে কিনা।

    ( ন্যাশনাল ল' ইউনিভার্সিট, হায়দ্রাবাদ (নালসার) এর ভিসি এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ ফয়জান মুস্তাফার ব্যাখ্যা অনুযায়ী)ঃ
  • রঞ্জন | 124512.101.89900.231 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৫১729030
  • এন পি আর এবং এন সি আরঃ সম্পর্ক ইত্যাদিঃ

    এন পি আর এল কোত্থেকে?
    --- সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫৫য়ে বাজপেয়ীজির সময়ে ২০০৩ এর অ্যামেন্ডমেন্টের সময় ধারা ১৪(ক) আমদানি করা হল। তাতে বলা হল সরকার 'চাইলে' বাধ্যতামূলক ভাবে সব নাগরিকদের রেজিস্টারে নাম তুলে সবাইকে একটি সিটিজেন আইডেনটিটি কার্ড ইস্যু করতে পারে । তার নোডাল অফিসার হবেন কেন্দ্রীয় জন্ম-মৃত্যুর রেজিস্টার এবং একই ভাবে জেলা তথা মহকুমা স্তরে পাওয়ার ডেলিগেট করা থাকবে।
    খেয়াল করুন এই ধারায় ইংরেজি 'শ্যাল' এর বদলে 'মে' বলা আছে । অর্থাৎ সরকার চাইলে এই রাজসূয় যজ্ঞি এখনই না করে পরে করতে পারে । কিন্তু বর্তমান শাসকদলের কাছে এটা হল অশ্বমেধের ঘোড়া।
    সত্যি কথা , এরা এখন যা করছে তাতে এইকাজ এপ্রিল ২০০০ থেকে শুরু হয়ে সেপ্টেম্বর ২০০০ এ শেষ হবে।
    ক) এটা নাগরিকত্বের প্রমাণ নয় ।
    খ) এতে শুধু ছ'মাসের বেশি যারা কোন গ্রামে/নগরে আছে তাদের নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করা হবে। তাই বেড়াতে আসা বিদেশিদেরও রেকর্ড করা হবে।
    গ) এতে যা বলা হবে তাই প্রাইমা ফেসি সত্যি ধরে নিয়ে লিপিবদ্ধ করা হবে। কোন দস্তাবেজ বা প্রুফ চাওয়া হবে না ।
    ঘ) এতে ২০১০ এর জনগণনার সময় চিদাম্বরম একইসাথে যে যে ডেটা নিয়েছিলেন তার সাথে নতুন পাঁচটি ডেমোগ্রাফিক এবং বায়োমেট্রিক ডেটা চাওয়া হচ্ছে। যেমন বাপ-মায়ের জন্মস্থান এবং জন্মতারিখ। নিজের মোবাইল নম্বর ইত্যাদি।
    এদিকে পার্সোনাল ডেটা সংরক্ষণের সুরক্ষা নিয়ে বিল শিকেয় তুলে রাখা হয়েছে। কিন্তু ওপরের ডেটাগুলি কীভাবে মিসইউজ হতে পারে তা নিয়ে পাবলিক ডোমেইনে বেশ কিছু তথ্য এসেছে।
    তাহলে বাপ-মার জন্মস্থান, তারিখ এবং আবেদকের মোবাইল নাম্বার চাওয়ার উদ্দেশ্য কী ?
    এরপর এন সি আর হলে ?
    --- হবেই। কারণ এর মোডালিটি ২০০৫ সালেই পাকা হয়য়ে গেছে। তাই মেনে সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে আসামে এন আর সি হয়েছে। কাজেই আলাদা কোন প্রস্তুতির দরকার নেই । এন পি আর হলেই তারপর হবে এন আর সি।
    তখন যে ডেটা গুলি স্বেচ্ছায় দেয়া হয়েছে সেগুলোর প্রমাণ/দস্তাবেজ চাওয়া হবে।
    আসামে লোককে নিজেই গিয়ে ফর্ম ভরে প্রমাণ জমা দিতে হত । এখানে আমলারা এসে জনগণনার মত ঘরে ঘরে কড়া নেড়ে কাগজ চাইবে।
    তারপর কী হবে?
  • b | 236712.158.566712.237 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:২১729031
  • এক অসমিয়া বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো। যাঁর কথা বলছি, তিনি প্রবল ভাবে লেফটিস্ট। ওনার ভাইয়ের বৌ বাঙালী (এবং বাতিল হয়ে যাওয়া এন আর সি অনুযায়ী, ঘুসপেঠিয়া) । তবুও বলে চলেন, আইডিয়াটা ঠিকই ছিলো, ঠিকঠাক করা হয় নি।

    ***
    মরালঃ সব কিছুর বিরুদ্ধে যুক্তি দেওয়া যায়, কিন্তু পারসেপশন পাল্টাবেন কি করে?
  • রঞ্জন | 236712.158.565612.163 | ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ২৩:৫৪729032
  • @বি,
    এটাই আসল কথা , পারসেপশন!

    আশা করা যায় যে এত আন্দোলন এবং একগাদা সুপ্রীম কোর্টে রিটের ফলে এন সি আর হবে, কিন্তু আসামের মত হবে না । ডকুমেন্টের লিস্টে অপশন বাড়বে, যেমন আধার কার্ড হয়তো জন্মতারিখ এবং কোথাও বাস করার ভ্যালিড ডকুমেন্টের সম্মান পাবে। কিন্তু ডকুমেন্টগুলো স্যাটিসফ্যাক্টরি কিনা, তাতে ক'টা খুঁত বা মেটেরিয়াল কোন ফারাক আছে কিনা, ডাট এবং দত্ত, পল এবং পাল, বল এবং বাল, মোল্লা এবং মুল্লা, মুখার্জি এবং মুখোপাধ্যায়, মুহম্মদ এবং মোহাম্মদ বা মহম্মদকে একই ধরা হবে কিনা--এসবের সিদ্ধান্ত নেবেন একজন আনট্রেইন্ড করণিক।
    যদি আপনি পাশ হয়ে যান ত বলার কিছু নাই , কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করলে দুইখান কথা আছে।
    হয় আপনি সন্দেহের তালিকা ভুক্ত হবেন অথবা বাতিলের তালিকা ভুক্ত হবেন। যদি বাতিলের তালিকা ভুক্ত হবেন ত কোন কথা নাই। কিন্তু যদি সন্দেহের বা ডাউটফুল তালিকায় নাম উঠে ত দুইখান কথা আছে ।
    ডাউটফুল তালিকায় নাম উঠলে আপনাকে হয় ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির করবে, নয় ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাবে।
    যদি ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠায় ত কোন কথা নাই। কিন্তু যদি ফরেন ট্রাইব্যুনালের সামনে দাঁড় করায় ত দুইখান কথা আছে।
    ফরেন ট্রাইব্যুনাল পরীক্ষা করে হয় আপনাকে পাশ করিয়ে নাগরিক ঘোষণা করবে, নয় আপনাকে ' বে-আইনি অনুপ্রবেশকারী' ঘোষণা করবে।
    যদি আপনাকে ভেরিফাই করে নাগরিক বানায় ত কোন কথা নাই, কিন্তু যদি ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠায়? তাহলেও কোন কথা নাই।

    শেষ কথা ঃ সিটিজেনশিপ কনফার করা হয় । আর যদি একবার কাউকে সিটিজেনশিপ দিয়ে থাকে তাহলে তা এমনি এমনি ফেরত নেওয়া যায় না ।
    সবাই ভাল করে ঘুমোন দিকি!
  • রঞ্জন | 124512.101.89900.231 | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:১২729034
  • সরি, তাতিন।
    তাড়াহুড়োয় এই লেখাটি আমার চোখ এড়িয়ে গেছল। অনেকগুলো প্রেক্ষিত সুন্দরকরে বেশ গুছিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। আমার লেখার ফোকাস ছিল বর্তমান বাঙালী সমাজে ( হিন্দু এবং মুসলিম) ব্যাপ্ত আতংককে কিছুটা কম করা। তুমি অনেক বড় ফোকাস নিয়ে কাজ করেছ।
    আবারও ধন্যবাদ।
  • রঞ্জন | 236712.158.895612.180 | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:১৮729035
  • চারদিকে অর্ধসত্য এবং মিথ্যের চাষ।
    গতকাল আইনমন্ত্রী বলেছেন -- ১ এখনও কী কী ডকু চাওয়া হবে তা ফাইনাল হয়নি। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের পাবলিক ইনফরমেশন ব্যুরো যা 'এফ এ কিউ' দিচ্ছে তাও একাডেমিক এক্সারসাইজ মাত্র ।
    ২ এসব হবে ---দি সিটিজেনশিপ (রেজিস্ট্রেশন অফ সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইস্যু অফ ন্যাশনাল আইডেনটিটি কার্ডস) রুলস, ২০০৩ অনুযায়ী আইন মেনে। ধারা ৩ ও ৪ অনুযায়ী।
    ৩ এন পি আর এর ডেটা এন সি আরে ইউজ হবে এমন নয় ।

    ৪ এসব রুলস এবং এন প আর পি চিদাম্বরমের সময় জারি হয়েছিল। অথচ উনি এখন ন্যাকামি করে বিরোধিতা করছেন।

    কোনটা সত্যি?

    -- শেষ থেকে শুরু করছি। এটা অর্ধসত্য। এই রুলস তৈরি হয় ২০০৩ সালে বাজপেয়ী সরকারের আমলে। কিন্তু ইমপ্লিমেন্টেশন শুরু হয় চিদাম্বরমের হাতে, ১৫ মার্চ, ২০১০য়ে অর্ডার জারি করে উনি ১ এপ্রিল, ২০১০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১০ এর মধ্যে ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার শুরু করেন যাতে ছ'মাসের বেশি কোন এক জায়গায় থাকলে তার নাম মহকুমা স্তরের রেজিস্টারে তুলতে হবে। কিন্তু উনি ওখানেই থেমে যান। মূল আইনে ধারা ৩(৪) এর অপশন ব্যবহার করে সিটিজেনশিপ ভেরিফাই করে ন্যাশনাল সিটিজেনশিপ রেজিস্টার বানিয়ে আইডেনটিটি কার্ড জারি করার পদক্ষেপ নেননি।
    লক্ষ্যণীয়, বর্তমান সরকার বলছে একই ভাবে এন পি আর হবে ১এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ অব্দি।
    এবং ডেটাশিটে চিদাম্বরমের ১২ পয়েন্টের সংগে বাবা-মার জন্মতারিখ এবং স্থান, মোবাইল নাম্বার এসব জুড়ে দিয়েছে যা সন্দেহজনক।
    ৩ এটা অসত্য। ওই রুলস এর ধারা ৪ বলছে এরপর হাউস-টু-হাউস ভেরিফিকেশন করে এন পি আর বা পপুলেশন রেজিস্টারে 'ডাউটফুল' নামের পাশে রিমার্ক লিখে লোককে জানাতে হবে। তারপর ৯০ দিনের মধ্যে স্থানীয়/মহকুমা স্তরের লিস্ট প্রকাশ করতে হবে। সেটা দেখে আপত্তি করার সময় ৩০ দিন । তারপর ৯০ দিনের মধ্যে ফাইনাল রাষ্ট্রীয় স্তরের লিস্ট প্রকাশিত হবে।
    অর্থাৎ এন পি আর হল এন সি আরের প্রথম ধাপ।

    ওঁর ১ এবং ২ নম্বর বক্তব্য মোটামুটি ঠিক ।
    --- ধারা ৯ বলছে কী কী দস্তাবেজ চাই তা রেজিস্ট্রার জেনারেল (জন্ম-মৃত্যু, এক্স অফিসিও সিটিজেন্সশিপের দায়িত্বে) নির্ধারণ করে ঘোষণা করবেন।
    ধারা ৫--আসামের জন্যে আলাদা নিয়ম।
    ধারা ৬-- রেজিস্ট্রার জেনারেল ইনিশিয়েশন পিরিয়ড ঘোষণা করবেন, তার মধ্যে সমস্ত নাগরিককে রেজিস্টারে নাম তোলাতে হবে।
    ধারা ৭-- হেড অফ ফ্যামিলি ডেটা দেবেন, এটা ওঁর দায়িত্ব।
    ধারা--৯ রেজিস্টার জেনারেল প্রসিডিওর পদ্ধতি জানাবেন।
    ধারা ১৪-- ন্যাশনাল আইডেনটিটি কার্ড হল সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের সম্পত্তি, তাকে রক্ষা করা নাগরিকের দায়িত্ব।
    ধারা ১৪/৪ --হারালে তৎক্ষণাৎ থানায় জানাতে হবে।
  • মুসকিল | 237812.69.563412.237 | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:৪৮729036
  • বিজেপি কতগুলো প্রশ্ন তুলছে, সে গুলোর উত্তর কি ?---
    ১। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে কিন্তু ইসলাম রাষ্ট্র ধর্ম নয়
    আর সেকুলার সংবিধান এমন ৩ টে দেশের নাম

    ২। ভারতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে সংবিধানের সেকুলারত্ব থাকবে কি ? প্রোব্যাবিলিটি কি? যদি পারইপার্শ্বিক প্রমান অনুযায়ী এই সম্ভাবনা যদি খুব ই কম হয় , সেক্ষেত্রে সেকুলার পন্থীদের যে কোনো মুল্যে মুসলিম সংখ্যগরিষ্ঠতা প্রতিরোধ করা উচিত
    ৩। একই রকম ভাবে ইসলামিক দেশ গুলোতে সংখ্তালঘুদের মানবাধিকারের যা হাল, সমস্ত মানাবাধিকার পন্থীদের সাধ্যমত চেষ্টা করা উচিত যাতে দেশে ইসলামিক মুসলিম মেজরিটি না হয়।

    ৪। ১৯৭১ থেকে বাংলাদেশ এ হিন্দু পপুলেসন ২৩% থেকে ৮% হয়েছে।। একই সময়ে পঃবঃ আর আসামে মুসলিম পপুলেসন লক্ষনিয় ভাবে বেড়েছে। কয়েকতি জেলায় মুসলিম সংখ্যাগরিস্ঠতা হয়েছে।এর বিরুদ্ধে কোনো অথেন্টিক স্ট্যাট আছে কিনা? যদি এই তথ্য সত্যি হয়, তাহলে, এই পরিস্থিতি প্রতিরোধ করা উচিত না উচিত না?

    ৫। পঃবঃ এর মুসলিম অধ্যুসিত পাড়া য় , জেলায় হিন্দুরা কেমন আছে? এটা জানা গেলে এআজ্যে যখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা হবে , তখন কেমন থাকবে হিন্দুরা , তার একটা ছবি পাওয়া যায়।

    ৬। পঃবঃএ যদি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা হয়, তাহলে এই রাজ্য যদি বাংলাদেশের সাথে মিশে যাবার দাবী তোলে তাতে কি অন্যায় হবে ? সেই দাবী কেন মানা হবে না ? এখন যে জেলায় মুসলিম গরিষ্ঠতা আছে তারাই বা বংলাদেশে মিশে যাবার দাবী জানাবে না কেনো ?

    ভবিষ্যতে এই সব জতিল পরিস্থিতি এড়াবার জন্য ই CAA/NRC দরকার বলে বিজেপির দাবী।

    এখন লিবেরাল বক্তব্য হল--
    ১। ওপোরের কোনো সম্ভাবনাই সত্যি নয়( কেন নয় তার সপক্ষে যুক্তি সোসাল মিডিয়ায় খুব কম)
    ২। ওপোরের সম্ভবনা গুলো সত্যি হলেও আউট কাম খারাপ কিছু হবে না হিন্দুদের জন্য
    ৩। CAA/NRC কনসেপ্চুয়ালি ঠিক হলেও, প্রসেস টা ভুল। অনেক নাগরিক বাদ যেতে পারে।

    ৪। NRC ঠিক কিন্তু
    CAA ভুল, কারন মুসলিম মাইগ্রেন্ট দের ডিস্ক্রিমিনেট করে।

    আম হিন্দু জনতার কাছে বিজেপির যুক্তি আর দেখানো ভয় যথেষ্ট ট্যন্জিবল আর ইসিলি বোধগম্য। তাদের পক্ষে রিলেট করা সোজা। অন্যদিকে লিবেরল দের যুক্তি কিছুটা গোল গোল, তথ্যহীন ( এখন পর্য্যন্ত), ইমোসনল বেসের ওপোর তৈরী ।

    মোদীর অর্থনীতি, ফ্যসিসম , কুশাসন, একনায়ক তন্ত্র এর বিরুদ্ধে আন্দোলন আর ফোকাস করা সোজা। লোকে রিলেট করতে পারবে সহজেই । তার বদলে অন্য দেশ থেকে আসা লোকেদের চোখ কান বুজে নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত, এই দাবীতে আন্দোলন --- গরিষ্ঠ লোককে অ্যালিয়েনেট করবে, পরোক্ষে বিজেপি আর মোদীকে শক্তিশালি করবে। লিবেরাল রা মোদির টার্ফ এ , মোদির সেট করা নিয়মে খেলছে। যেতার সম্ভবনা খুব কম

    কলকাতায় বাংলাদেশ থেকে তাড়ানো "বিহারী মুসলিম" দের কয়েকটা লম্বা মিছিল দেখলাম। মিছিলের অ্যাগ্রেসিভ স্লোগান শুনলাম । তার সাথে রাস্তার পাশে দাড়ানো হিন্দু মানুষজনের রিঅ্যাকসন ও শুনলাম । আমি চিন্তিত।
  • সৈকত রায় মহাশয় | 236712.158.453412.51 | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:২৯729037
  • প্রশ্ন ১ এর উত্তর এই উইকি পাতায় পাওয়া যাবে।

    https://en.m.wikipedia.org/wiki/Muslim_world#Religion_and_state

    তিন নয়, গোটা কুড়ি রয়েছে। দেখেশুনে তিনটি বেছে নিন।
  • b | 237812.68.674512.145 | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৫০729039
  • ৩ নং পয়েন্টঃ
    একই রকম ভাবে ইসলামিক দেশ গুলোতে সংখ্তালঘুদের মানবাধিকারের যা হাল, সমস্ত মানাবাধিকার পন্থীদের সাধ্যমত চেষ্টা করা উচিত যাতে দেশে ইসলামিক মুসলিম মেজরিটি না হয়।

    সেকুলার দেশেই সংখ্যালঘুদের যা হাল, আর ইসলামিক দেশ দেখে কি করব! আসামের হিন্দু বাঙালীদের অবস্থা দেখুন!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন