এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • যে হাতে জ্বলেছিল আলোর শিখা - ডঃ বিভা চৌধুরী

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৮ মার্চ ২০১৯ | ১৮৩৩ বার পঠিত
  • বিভা চৌধুরীকে নিয়ে আমার আগ্রহ অনেক দিনের। আগ্রহের সুচনা কেন্দ্র অবশ্যই তাঁর বিজ্ঞানচর্চা । বৈজ্ঞানিককে তার বিজ্ঞান ছাড়া ধরা যায় না। তবে তিনি যখন বিজ্ঞান সাধনায় নামেন , তখন সে জগত এক অবিচ্ছিন্ন জ্ঞানের জগত, আমার বিজ্ঞানের যে সীমিত জ্ঞান তাই দিয়ে তাঁকে আবছা বোঝা গেলেও , পুরোটা ধরা মুশকিল-ই।

    আগ্রহের শুরুটা একটু অদ্ভুত ভাবে। ফেমিনিজম নিয়ে পড়াশুনা করছিলাম। দেখলাম কট্টর নারীবাদীরা বলেন যে ক্লাসিক্যাল ফিজিক্স যেভাবে গোটা বিশ্ব ব্রহ্মান্ডকে objectifiable আর knowable বলে সেটাই নাকি গণ্ডগোলের। তুলনায় সম্ভাবনা-ভিত্তিক কোয়ান্টাম ফিজিক্স নাকি তবুও ভালো। সেখান থেকে একটা ছেলেমানুষী উৎসাহ জেগেছিল যে তাহলে কি মেয়েরা কোয়ান্টাম ফিজিক্সে বেশী সফল হবেন? সেই খুঁজতে গিয়ে বিভা চৌধুরীর সঙ্গে প্রথম পরিচয়। আরও একটু গভীরে জানতে গিয়ে আগ্রহটা পালটে গেল।

    নতুন আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হল তার সময়কাল। ১৯১৩ সালে তাঁর জন্ম। কেমন ছিল সে সময়টা? কলকাতা তখন এক দোলাচলে দুলছে। বিদ্যাসাগর, বেথুন, প্যারীচরণ ছাড়িয়ে ততদিনে নিবেদিতাও এসে গেছেন অভিজাত এবং ব্রাহ্ম সমাজের হাত ছাড়িয়ে প্রথাগত শিক্ষাকে বাঙ্গালীর অন্দরমহলে নিয়ে যেতে। কাজেই নারী শিক্ষা কথাটা আর ততদিনে অজানা নেই বাঙ্গালীবাবুদের বাড়িতে। বদল আসছে, খুব ধীরে হলেও। আর বিশেষতঃ ব্রাহ্ম বাড়িতে পড়াশোনা না করলেই তখন চোখ কপালে তোলার দস্তুর।

    আর বিভার বাড়িতেও ছিল খোলা হাওয়া। বাবা বঙ্কু বিহারী তো আগেই তার ব্রাহ্ম পরিবারের মেয়ে বিয়ে করার দোষে তার ভান্ডারহাটির পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ও কলকাতাবাসী। সেই ব্রাহ্ম জীবনবোধ এবং আত্মীয়দের সংসর্গই বিভা আর তার পাঁচ ভাই বোনের জীবনে আলো এনে দিয়েছিল। বেথুন থেকে পড়াশোনা, স্কটিশ থেকে ফিজিক্স অনার্স পাস তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স - ১৯৩৬ সালে। মজার কথা হল স্কটিশের বিখ্যাত প্রাক্তনদের তালিকায় অবশ্য তার নাম ওঠে না।

    বিভার মাসী ছিলেন নীলরতন সরকারের স্ত্রী আর নীলরতন সরকারের মেয়ের বিয়ে হয়েছিল জগদীশ চন্দ্র বসুর ভাগ্নে ডি এম বোসের সাথে। শুনেছি প্রথম যখন তিনি ডি এম বোসের কাছে রিসার্চ করার কথা তোলেন, ডি এম বোস নাকী রাজী হন নি। পরে অবশ্য মত বদলান। তারপর তো বসু বিজ্ঞান মন্দিরের হয়ে সেই মেসন কণা্র আবিস্কারের প্রারম্ভিক কাজ ( সে কাজ অবশ্য শেষ করতে পারেন নি যুদ্ধের বাজারে গবেষণার জিনিসপত্রের অভাবে, যদিও নেচারে প্রকাশিত হওয়া তিনটে পেপারই বেশ সাড়া জাগিয়েছিল, পাওয়েল একই বিষয়ে কাজ করে ১৯৫০ সালে নোবেল প্রাইজ পান )। সেখান থেকে ব্ল্যাকেটের ল্যাব ( সেই কাজের জন্যই পি এইচ ডি পাওয়া ) হয়ে TIFR. সেখান থেকে আমেদাবাদের বিক্রম সারাভাই এর ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি। কোলার গোল্ড মাইনের রিসার্চেও তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। সারাভাই মারা যাওয়ার পরে পি আর এল আর বিভার রিসার্চ ফাণ্ড করতে আগ্রহী ছিল না। তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন। সাহা ইন্সটিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আর কাল্টিভেশন অফ সায়েন্সের সাহায্যে গবেষণা চালাতে থাকেন। ১৯৯১ র জুনে মারা যাওয়ার আগে অবধি গবেষণা চালিয়েছেন। এই তথ্য জোগাড় করাটা সহজ - কারণ তাঁর বৈজ্ঞানিক জীবনের কাজকর্ম সবটাই প্রায় ডকুমেন্টেড। আমাদের মত ফালতু পাব্লিকের হাতে না পরলেও অধ্যাপক - বৈজ্ঞানিক দের কাছে সে তথ্য সহজলভ্য। বিশেষতঃ TIFR বা PRL র আর্কাইভ- এ অনেক তথ্য মেলে। তাই নিয়ে ইন্টারনেটেও কিছু লেখা মেলে।

    যে তথ্য মেলে না তা হল কেন বিভা ফিজিক্সে আগ্রহী হলেন? বিভা নিজেও এক জায়গায় বলেছেন মেয়েরা ফিজিক্সে আসেন কম কারণ অঙ্ক পড়তে হবে বলে। তাহলে? গোটা পৃথিবীর কথা জানি না, কিন্তু সাধারণ ভাবে বাঙ্গালী মেয়েদের অঙ্কভীতি জানতে বোধহয় কারো বাকী নেই! এবার সেই ১৯২০-৩০ র জমানায় বিভাকে কে ধরালেন অঙ্কের মজা ? নিজে নিজেই ? নাকি কোন শিক্ষক বা বাড়ির লোক? তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই এই কাজটির জন্য।

    আর দ্বিতীয়তঃ যেটা আরও মনে হয় যে সেই সময় তো আজকের মত শিক্ষার কমারসিয়ালাইজেশনের সময় নয়। তখনও আজকের মত এই মতবাদটি পুষ্ট হয়য়ে ওঠে নি যে "পড়াশোনায় ভালো হলেই বিজ্ঞান পড়তে হবে", সে তোমার ছাই ভালো লাগুক আর না লাগুক। তখন কলাবিদ্যার রমরমার সময় ও বটে। অবশ্য মেনে নিচ্ছি যে বিভা যখন বড় হচ্ছেন ততদিনে প্রায় কুড়ি বছরের বড় সি ভি রামন, সত্যেন বোস, মেঘনাদ সাহারা ভেল্কি দেখাচ্ছেন , তবু কটা বাঙ্গালী বাড়ির মেয়ে সে পথে গেল? আরো একটা মজার কথা বলি, আশির দশকে এক পরিচিত ফিজিক্সের ছাত্রীকে এক সদ্য-পরিচিতা মহিলা বলেছিলেন, তোমার এত সুন্দর ফেমিনিন বিউটি, তুমি কেন ফিজিক্স পড়তে গেলে? এই যে ফিজিক্স মানেই মর্দানি এই ধারণা তো ক'দিন আগেও ছিল - তাহলে বিভার আমলে সে ধারণা ভ্যানিশ হয়ে গেছিল এমন তো হতে পারে না! এই সামাজিক চাপটা তিনি কাটিয়ে উঠলেন কি করে? শুধুই মায়ের তরফে পাওয়া বরিশাইল্যা গোঁ দিয়ে এতটা হয়?

    অবশ্য সামাজিক চাপ মেনে নেন নি নিজের কাজের ব্যাপারেও। মেয়েদের শিক্ষা যতই সমাজে চলতি হোক, মেয়েদের জন্য বেঁধে দেওয়া শিক্ষক আর নার্সের ভুমিকার বাইরে বেরোনটাও কতটা সমাজ মান্য ছিল? সেখানে একটি মেয়ে সারাজীবন অবিবাহিত থেকে বিজ্ঞানচর্চা করে গেল, শুধু তাই নয় সেই ১৯৪০ সাল নাগাদ কাজ করতে গেলেন বসু বিজ্ঞান মন্দিরের মায়াপুরী, দারজিলিং শাখায় - কোথায় সান্দাকফু, কোথায় ফারিজং সে সব জায়গায় প্লেট বসিয়ে তার আনালিসিস করতে হবে বলে, তার পরেও নিজের মত করে নিজের কাজ করে গেলেন - এবং সবটাই করলেন চুপচাপ। কি করে পারলেন?

    প্রসঙ্গতঃ বিভা অসীমা চট্টোপাধ্যায়ের ( জন্মঃ ১৯১৭) প্রায় সম সাময়িক - তাঁকে নিয়েও আমার এই প্রশ্ন গুলো আছে। অসীমা তো তবুও পরে বাইরের জগতে অনেক নামযশ পেয়েছেন, সেগুলোর মন ভরানর ক্ষমতা নিজের ব্যক্তি-ভাবনার উপর নির্ভর করলেও অন্ততঃ পথ চলার দম নিতে সাহায্য করে। তুলনায় বিভার জীবন কেটেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে, এবং সবটাই যে ঝঞ্ঝা বিহীন এমনও হয়ত নয়। তথাকথিত ক্ষমতা, নিজের প্রতিভার অনুসারী সর্বোচ্চ সাফল্য কোনটাই পান নি তিনি - এতে কি তিনি ক্ষুব্ধ হতেন? নিজের ব্যর্থতা বলে ভাবতেন? নাকি এসব কেয়ারও করতেন না? পিআরএল থেকে চলে আসাটাই কি খুব আনন্দের ছিল? জানা নেই। অথচ তারপরেও তার বিজ্ঞানচর্চায় ভাটা পড়ল না - কোন সঞ্জীবনী মন্ত্রে?

    এই সব কিছুকে অগ্রাহ্য করে নিজের মতে নিজের পথে শান্ত ভাবে চলার ক্ষমতাটাকে কুরনিশ!

    ===========================
    সংযোজন ১- একটা উল্লেখযোগ্য তথ্য হল বিভার মত ওই মানে না পৌঁছলেও বিভার দিদি- বোনেরাও যথেষ্ট কৃতি। বিভার বড়দি রমা চৌধুরী ছিলেন ব্রাহ্ম বালিকা স্কুলের শিক্ষিকা আর এক বোন লীলা চৌধুরী যাদবপুর বিদ্যাপীঠের শিশু বিভাগের প্রধান হিসেবে অবসর নেন। সব থেকে ছোট বোন উমা চৌধুরী ছিলেন সোস্যাল সাইকলজিতে পি এইচ ডি। যে বাড়ির পরিবেশ মেয়েদের সবাইকে এমন শিক্ষানুরাগী, স্বাবলম্বী করে তোলে, সে বাড়ির গুরুজনদের হাতযশ মানতে হয়।

    সংযোজন ২
    সুপ্রকাশ চন্দ্র রায় আর রাজিন্দর সিং এর লেখা A Jewel Unearthed: Bibha Chowdhuri বইটা বেরিয়েছে ২০১৮ সালে। সেই বইটা নিয়ে টেলিগ্রাফে আমিতাভ ভট্টাচার্য একটা সুন্দর লেখা লিখেছিলেন, ২৬ শে নভেম্বর। লিঙ্ক ঃ https://www.telegraphindia.com/science/the-woman-who-could-have-won-a-nobel/cid/1676488?fbclid=IwAR1v43AzRnsDOJlyDjjgBZfoPUTuq-MlE6i8rZHtW4aYUHqbxpVAlq2S4xg। এই উপরের লেখাটাও সেই নভেম্বর মাসেই লেখা। এই মার্চ মাসের দেশেও অবশ্য বিভাকে নিয়ে সুন্দর একটি লেখা আছে। তবে বিজ্ঞান-উৎসাহীদের ভালো লাগবে একপর্ণিকা পত্রিকার অক্টোবর ২০১৮ সংখ্যায় বেরোন গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখাটি - https://ekapornika.blogspot.com/2018/10/blog-post_73.html

    আমি এই লেখাটা লেখার আগে অল ইন্ডিয়া রেডিওর বিজ্ঞান রসিকের দরবারে খ্যাত বিজ্ঞান-কমিউনিকেটর মানসপ্রতিম দাস আর IISER র অধ্যাপক আনন্দ দাশগুপ্তকে অজস্র প্রশ্ন করেছি। আনন্দ তো লেখার পরেও অনেক ভুল সংশোধন করে দিয়েছে। তাই লেখার বেশী কৃতিত্বটাই ওঁদের। ভুলত্রুটি আমার।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৮ মার্চ ২০১৯ | ১৮৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 2345.106.9003423.64 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৩:৩৫49635
  • অনেকগুলো ধন্যবাদ এতকিছু জানানোর জন্য। বিশেষ কিছুই জানতাম না প্রায়।
    আশির দশকে ফিজিক্স নিলে আর একটা চলতি লব্জ শুনতে হত 'ওরে বাবা কোথাও কোন চাকরি পাবে না ফিজিক্স নিলে কেন?'
  • স্বাতী রায় | 781212.194.1278.151 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৫49636
  • আচ্ছা! চাকরীর কথাটা শুনি নি বটে - ছেলেদেরও বলত নাকি? নাকি শুধু মেয়েদের?
  • | 2345.108.674523.234 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩৫49637
  • মেয়েদেরই বেশি, মানে সত্যি বলতে ছেলেদের ক্ষেত্রে শুনিই নি ছোট্ট পরিসরে।
    তা আমি তখন তার্কিক ছিলাম বেশ। খুঁচিয়ে চেপেধরে যা শুনেছিলাম 'আহা ছেলেরা তো আর কিছু নাহোক পিএইচডিতে ঢুকবে আর এ হয়ে যাবে। তোমাদের কী হবে?' মানে মেয়েরা তো আর গপবেষণা টনা করবে না, এদিকে ফিজিক্স পড়ে নাকি এল আইসি বা ব্যাঙ্কেও পাবে না ( কেন কে জানে) ইত্যাদি।
  • b | 4512.139.6790012.6 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:১১49638
  • সংস্কৃত এডিশনাল নেওয়াতে বায়োলজি পড়া বন্ধুদের কাছে "মেয়েদের সাবজেক্ট পড়িস" শুনতে হয়েছিলো।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৬:০৪49639
  • পড়ে মনে হল চার বোন, এক ভাই ওঁরা। প্রশ্ন হল, ভাই কি সবচেয়ে ছোটো?
  • অর্জুন অভিষেক | 561212.96.343412.108 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৬:৫৬49640
  • @স্বাতী রায়, ডঃ বিভা চৌধুরীকে নিয়ে লেখার জন্যে প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। তবে লেখাটা আরো ডিটেলে হলে খুব ভাল লাগত।

    বিভা চৌধুরীকে নিয়ে আমার কৌতূহল হয়েছিল সেই স্কুল লাইফে, নব্বইের দশকে কোনো এক শারদীয়া 'আনন্দমেলা'য় ডঃ ডি এম বসু ও বিভা চৌধুরীকে নিয়ে একটি চমৎকার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। সম্ভবত পথিক গুহ'র লেখা। প্রায় গোয়েন্দা কাহিনীর মত তাদের সমগ্র গবেষণার ইতিহাসটা লেখা ছিল এবং কি ভাবে অল্পের জন্যে হাতছাড়া হয়েছিল নোবেল! কিন্তু ওই লেখায় বিভা চৌধুরী বিষয়ে একটি লাইনও ছিল না। অনেককাল কাউকে জিজ্ঞেস করেও সদুত্তর পাইনি। অতি সম্প্রতি তার জীবনী প্রকাশের পরে রিভিউ পড়ে বিশদে জানলাম।

    তার থেকে সামান্য ছোট তার কন্টেম্পরারি ডঃ অসীমা চট্টোপাধ্যায় সফল গবেষিকা, অধ্যাপিকা এবং বিজ্ঞানের একজন কিংবদন্তী ব্যক্তিত্ব। তুলনায় বিভা বিস্মৃতপ্রায় এবং বিজ্ঞানসমাজে প্রায় নামহীনা। কিন্তু কত গুরুত্বপূর্ণ সব সায়েন্টিফিক প্রজেক্টে কাজ করেছেন এবং সব আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে।

    ওর সময়ে তুলনায় নগণ্য হলেও মেধাবী, বিদুষীরা প্রায় কেউই বিজ্ঞানে যেতেন না, বড়জোর কোনো বিখ্যাত উইম্যান্স কলেজে চাকরি এবং অন্যান্য সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়তেন, কখনও বা রাজনীতিতে। এই শাখা প্রশাখাগুলি তাদের পরিচয়, খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠাকে মসৃণ করত ।

    এবং তারা অধিকাংশই বিবাহিতা, সংসারী। সেখানে এই মহিলা বেছে নিলেন নিঃসঙ্গ, গবেষণার জীবন। এর ফল যা হল তিনি কারো বিশেষ চোখেই পড়লেন না।

    চিত্রা দেবের 'মহিলা ডাক্তারঃ ভিন গ্রহের বাসিন্দা' নামে একটি দারুণ বই আছে, যেখানে উনি বাংলার সব মহিলা ডাক্তার এবং তাদের সমসাময়িক দেশের অন্যান্য রাজ্য এবং পশ্চিমে সব মহিলা ডাক্তারদের জীবন ও কর্ম জীবন নিয়ে সুখপাঠ্য গবেষণা করেছিলেন।

    মহিলা বিজ্ঞানীদের নিয়ে এইরকম একটা গ্রন্থের খুব প্রয়োজন,
  • স্বাতী রায় | 781212.194.1278.151 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৭:৩৬49641
  • @Atoz বিভার এক বোন ছোটবেলায় মারা গেছেন। তাঁকে নিয়ে পাঁচ বোন। ভাই রণজিত চৌধুরী সবার ছোটই ছিলেন। তিনি ইঞ্জিনীয়ার ছিলেন।

    @অর্জুন অভিষেক, বিভারা কোন ভাইবোনই ,যতদূর জানি, বিয়ে করেন নি। তার একটা কারণ বলা হয় যে সম্ভবতঃ ব্রাহ্ম সমাজের মধ্যে যোগ্য সঙ্গী না পাওয়ায়। কারণটা আমার ঠিক ঠাক লেগেছিল কারণ আমার প্রতিবেশী দুই উচ্চশিক্ষিত ভাইবোনকে সত্তরের দশকে অকৃতদার থাকতে দেখেছি এই কারণেই।
    বিভা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এস সি পাশ করা তৃতীয় ছাত্রী। আগের দুজনের নাম জানি না - তাদের খুঁজে বার করতে পারলে এবং তার পর কি করলেন জানতে পারলে ভালো লাগত। বিভার ব্যক্তিজীবন সম্বন্ধে বিশেষ জানি না। তবে ওঁর কাজের ট্রাজেক্টরী দেখতে গিয়ে মনে হয়েছে, উনি বোধহয় প্রবল অন্তর্মুখী ছিলেন আর নেটওয়ার্কিং তথা নেগসিয়েসনে ততটা দড় ছিলেন না - হারিয়ে যাওয়ার সেটা একটা কারণ হতে পারে।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৮:০৩49642
  • আমারও তাই অনুমান ছিল, ভাই সবচেয়ে ছোটো।
    হুঁ হুঁ বাবা, হিন্দু হন ব্রাহ্ম হন মুসলমান হন যাই হন না কেন, পিতৃতন্ত্রের হাত থেকে রেহাই নেই। ঃ-)
  • অর্জুন অভিষেক | 561212.96.343412.108 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৮:৪০49643
  • @স্বাতী রায়

    ওর জীবনী বইটি আমার পড়া হয়নি। ওর ব্যক্তিগত জীবনের থেকেও ওর গবেষণা, সেই সময়ে মহিলা বিজ্ঞানীদের কর্মজগত, তাদের প্রতিকূলতা, অন্যান্যদের থেকে অসহযোগিতা ইত্যাদি তথ্যগুলো ইম্পরট্যান্ট । ওর ভাইবোনেদের তো বটেই তার চাইতেও ওর কলিগদের থেকেও জানা যেতে পারে ওর সম্পর্কে। আপনি ঠিকই বলেছেন অন্তর্মুখী ছিলেন।

    আমার পাড়ায় দুই স্পিন্সটর সিস্টারকে চিনতাম, শিলং প্রবাসিনী দুই শিক্ষাবিদ। একজন বছর দুয়েক আগে ১০১ পূর্ণ করে প্রয়াত হন। ওরা ছিলেন দশ ভাইবোন, দাদা, ভাইয়েরা সবাই কৃতবিদ্য (ডাক্তার, অধ্যাপক, কেউ করেন সার্ভিসে) কিন্তু এই দুই বোন বাদে বাকী দিদিদের সব বাল্যেই বিবাহ হয়েছিল।
    এই দুই বোনের একজন বিবাহ না করার কারণ তার মাত্র সতেরো বছর বয়েসে টিবি হয়েছিল। আমাকে গল্প করেছিলেন ডাঃ বিধান রায় আর ওর ডাক্তার দাদা না থাকলে ওর বাঁচার কোনো আশা ছিল না। প্রায় এক দশক চিকিৎসার পরে রোগমুক্ত হবার পরে বিবাহের কোনো সম্ভাবনা ছিল না তাই পড়াশোনায় মন দিয়ে, পাশ, টাশ করে অধ্যাপিকা হন, ওপরজন ছোটবেলা থেকেই খুব অ্যাম্বিশাস, বিলিতি ডিগ্রি ছিল, অধ্যাপনা বাদেও শিক্ষা জগতে উচ্চপদে চাকরী করেছিলেন। ঠাট্টা করে বলেছিলেন পাত্র নিয়ে এত ঝাড়াই ,বাছাই করতে করতে বিয়ের বয়েস পেরিয়ে গেছিল।

    ওরা একটা সাংঘাতিক গল্প বলেছিলেন যা বোধহয় একমাত্র শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে পাওয়া যায়, শিলঙে তাদের বাড়িতে যখন পূর্ববঙ্গ থেকে কোনো আত্মীয়া আসতেন, তারা এই দুই বোনের ছোঁয়া কিছু খেতেন না। কেন? 'অরক্ষণীয়া' দের হাতে নাকি খেতে নেই! কানকে বিশ্বাস করতে পারা যায় না।

    দুজনের প্রকৃতি খুব আলাদা ছিল ( একজন অতি শান্ত, অন্যজন বেশ দাপুটে) কিন্তু এমানসিপেটেড, কিছুটা পিউরিটন এবং অবশ্যই আদর্শবাদী।
  • hu | 9000123.31.7889.150 (*) | ১৮ মার্চ ২০১৯ ১১:০২49644
  • বিভা চৌধুরী সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানা ছিল না। লেখিকাকে ধন্যবা।
  • কুমু | 238912.77.1234.1 (*) | ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৩49645
  • স্বাতী, খুব প্রয়োজনীয় ও সুন্দর লেখা।ভাল লাগল।
  • স্বাতী রায় | 781212.194.1245.102 (*) | ২০ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৮49646
  • সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    @অর্জুন অভিষেক সত্যি মিথ্যে জানি না, তবে শুনেছি বিভার আত্মীয়রা বাইরের লোকের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছুক নন- খুব ডিটেল জানি না অবশ্য।
  • অর্জুন অভিষেক | 340123.163.893423.78 (*) | ২০ মার্চ ২০১৯ ০৬:১১49647
  • @স্বাতী রায়, ওর জীবনীই তো বেরিয়ে গেছে। আপনি সংযোজনে যার উল্লেখ করেছেন। সেটা পড়া হয়নি এখনো আমার। বইটির বেশ কয়েক জায়গায় রিভিয় ভালই পড়লাম।
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.126712.75 (*) | ২২ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৬49648
  • বিভা চৌধুরী সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। ডালপালা বাদ দিয়ে লেখাটা বড়ো হতে পারতো।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২৪ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩৭49649
  • মূল্যবান লেখা। ভাল লাগল
  • গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় | 342323.223.125612.48 (*) | ২৭ মে ২০১৯ ০৩:০৩49650
  • @স্বাতী রায়
    কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম এম এস সি করেছিলেন চামেলি দত্ত। তিনি সরকারি কলেজে পড়াতেন। আনন্দবাজারে কলকাতার কড়চায় তাঁর কথা বেরিয়েছিল। http://archives.anandabazar.com/archive/1110829/29karcha.html
    ব্রেবোর্ন ও বেথুন কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগ তৈরিতে তাঁর মুখ্য ভূমিকা ছিল। বেথুন কলেজের প্রাক্তনীদের ইতিহাসে তাঁর নাম আছে। http://www.bethunex.org.in/dist.html
  • রঞ্জন | 232312.162.231212.35 (*) | ১৩ জুন ২০১৯ ০৩:২১49653
  • @স্বাতী,
    আমার একটা ছোট্ট জিজ্ঞাসা।
    আমার ছোটবেলায় জনৈক রমা চৌধুরি ও যতীন্দ্রবিমল চৌধুরির সংস্কৃত স্তোত্র এবং আলোচনা আকাশবাণীতে শুনতে পেতাম। যতদূর মনে পড়ছে ডক্টর রমা চৌধুরি পরে লেডি ব্রেবর্ন কলেজের প্রিন্সিপাল হয়েছিলেন।
    ইনিই কি - -বাই এনি চান্স-- বিভা চৌধুরির দিদি?
  • অর্জুন | 340123.163.344523.22 (*) | ১৩ জুন ২০১৯ ০৫:১০49651
  • গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়ের কমেন্ট পড়ে মনে হল, চেমেলি দত্ত এবং ওর সমসাময়িক মহিলা বিজ্ঞানী, অধ্যাপিকা, চিকিৎসক এদের নিয়ে লেখা mostly anecdotal নিয়ে একটা কলাম লেখা যেতে পারে। যারা একেবারে হারিয়ে গেছেন তাদের কথা নূতন করে জানা যাবে।

    এই মুহূর্তে মনে পড়ছে তিনজন মহিলা চিকিৎসকের কথা যারা তাদের সময়ে প্রথিতযশা হয়েছিলেন চিকিৎসা জগতে।

    ডাঃ শোভা ঘোষ, ডাঃ মুকুলিকা কোনার এবং ডাঃ অজিতা চক্রবর্তী। তাদের জীবদ্দশায় 'দেশ' পত্রিকার শেষের পাতায় 'ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্বে' এদের অনেককে নিয়ে লেখা বেরুত ৯০ র দশকে। বহুকাল সেসব আর নেই।

    ফেসবুক থেকে ডাঃ শোভা ঘোষ সম্পর্কে আমার একটা কমেন্ট এখানে তুলে দিলাম।

    ডঃ অসীমা চট্টোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে নূতন করে আলোচনা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে। উনি অনেকটাই আমাদের নিঃস্ব 'মারী কুরি'। এই সুযোগে ইচ্ছে করছে এইরকম আরও অনেক কৃতবিদ্য নারী যাঁদের কর্মময় জীবন আজ কিংবদন্তীতে পরিণত , আমাদের মধ্যে ছিলেন বা আছেন যাঁদের কথা আমরা জানিনা, তাঁদের কথা জানি, শুনি। তেমন একজনের কথা আজ মনে পড়ল- ডাঃ শোভা ঘোষ।

    ছোটবেলায় বাড়িতে মহিলাদের মধ্যে অসুখের কথা উঠলেই বলা হত 'শোভা ঘোষ কে দেখিয়েছও?' দূরদর্শনে চিকিৎসা সঙ্ক্রান্ত অনুষ্ঠানেও তাঁকে দেখা যেত ডাক্তারি উপদেষ্টা হিসেবে। আজ ফেসবুকে ডঃ অসীমা চট্টোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটা লেখা শেয়ার করলাম সেটা পড়তে পড়তে হঠাৎ মাকে ডাঃ শোভা ঘোষের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। মা জিজ্ঞেস 'উনি কি এখনো আছেন?'

    গুগল সার্চ করতেই এই লেখাটা পড়লাম ও জানলাম চার বছর আগেই ২০১৩ য় উনি চলে গেছেন। তার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন 'আমার ডাক্তার হওয়াটা নিতান্তই একটা অ্যাকসিডেন্ট, দিদির নিয়ে হয়ে গিয়েছিল বারো বছর বয়েসে।'

    মৃত্যুটা খুবই দুঃখের। বাড়িতে অগ্নিদগ্ধ্য হয়ে মারা গেছিলেন তিনি।
  • অর্জুন | 561212.96.671212.5 (*) | ১৩ জুন ২০১৯ ০৫:৩৫49654

  • @রঞ্জন-দা, আপনি একটা ভাল লাগা উসকে দিলেন যা না বলে পারছিনা। যতীন্দ্র বিমল ও ডঃ রমা চৌধুরী ছিলেন আমাদের অনেক বছরের পারিবারিক বন্ধু, বিশেষ করে ডঃ রমা চৌধুরী। আমার দাদু, ঠাকুমার বিশেষ পরিচিত। বাড়ির অন্যান্যদেরও।
    যোগাযোগটা হয়েছিল কি ভাবে! আমাদের এস আর দাস রোডের বাড়িতে তখন প্রায়ই পাঠ কীর্তন হত (৫০ ও ৬০ দশকে) । বেশ কয়েকদিন ব্যাপী সেই পাঠ কীর্তন করতেন মহানামব্রত ব্রহ্মচারী (বঙ্কিম দাশগুপ্ত) । কীর্তন গাইতে আসতেন অমিয় দাস, এসেছেন রাধারানী দেবী, অপর্ণা দেবী (দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের কন্যা) ও আরো অনেক নামকরা কীর্তন শিল্পী। ব্রাহ্ম হয়েও রমা চৌধুরী আসতেন। পাঠের বিভিন্ন সেশন হত, বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দিতে কারণ উপচে পড়া শ্রোতারা হতেন বিভিন্ন ভাষাভাষীর । মহানামব্রত ব্রহ্মচারী ওই পাঠগুলোয় ভগবৎ গীতা ছাড়াও, বাইবেল, কোরান, ত্রিপিতক ও গ্রন্থ সাহিব নিয়েও তুলনামূলক আলোচনা করতেন।

    সংস্কৃত নাটক, গান প্রচলনে ওর একটি সংস্থাও ছিল। ওর সংস্কৃত নাটকে অভিনয় করেছেন আমার পিসিরা। তবে এগুলো সব আমার জন্মের আগে। আমি খুব ছোটবেলায় ওকে একবারই দেখেছি।

    রমা চৌধুরী ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, মহিলাদের মধ্যে দ্বিতীয় ঈশান স্কলার এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ফিল। লেডি ব্রেবোর্ণ কলেজে উনি ৩২ বছর একটানা অধ্যক্ষা ছিলেন যা বোধহয় সারা দেশে একটা রেকর্ড। কলেজটাকে প্রায় উনিই হাতে করে তৈরি করেন। পরে রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য হন। উনি এক অভিজাত ব্রাহ্ম পরিবারে জন্মেছিলেন। আনন্দমোহন বসু ওর ঠাকুরদা। রমা চৌধুরী সম্ভবত কিছুকাল ব্রাহ্মসমাজের আচার্য পদে ছিলেন (সঠিক বলতে পারছিনা যদিও)।

    বিজ্ঞানী বিভা চৌধুরীর সঙ্গে ওর আত্মীয়তার কথা জানিনা।
  • অর্জুন | 561212.96.671212.5 (*) | ১৩ জুন ২০১৯ ০৫:৫৫49655
  • সংস্কৃত গান, নাটকের দলটি ছিল ডঃ রমা চৌধুরীর। সংস্কৃত ভাষার প্রচলনে ওর ছিল অগ্রণী ভূমিকা।

    @স্বাতী রায়, আমি কতটুকু আর জানি! ঐ কয়েক জনা। আপনিও লিখুন। আসলে এদের জীবনভিত্তিক তথ্য খুঁজে বের করা একটি অসাধ্য সাধন কর্ম।
  • স্বাতী রায় | 781212.194.6734.99 (*) | ১৩ জুন ২০১৯ ০৮:৫৭49652
  • @গৌতম বাবুকে অনেক ধন্যবাদ. যথারীতি চামেলি দত্ত বা বসুর সম্বন্ধেও কিছু জানতাম না. জানতে পেরে খুব ভালো লাগল. আর মনে হয় আপনারই লেখার রেফারেন্স আমি দিয়েছি. তাই আপনি নিজে এসে পড়লেন, এই তথ্যটি জানালেন, বড়. ভালো লাগল.

    @অর্জুন হ্যাঁ এগুলো নিয়ে কলাম লিখুন না, পড়তে খুব ভালো লাগবে. আর লিখলে একটু জানাবেন প্লীজ.
  • রঞ্জন | 232312.180.126712.236 (*) | ১৪ জুন ২০১৯ ০২:২৫49656
  • অর্জুন,
    আকাশবাণীতে ওনার সংস্কৃত নাটক হলে দাদু আমাকে টেনে নিয়ে রেডিওর সামনে বসে যেতেন। আমি তখন অনেক ছোট, দাদুর আগ্রহে গীতার কিছু অধ্যায় এবং শ্রীচন্ডীর অর্গলাস্তোত্র এবং দেবীকবচ মুখস্থ করেছিলাম। সংস্কৃত শেখা হয় নি , নিচে অন্বয় ও বাংলা মানে দেখে নিতাম।
    রেডিওতে একবার ভাস রচিত কোন নাটক উনি করিয়েছিলেন মনে আছে । ধ্বনিমাহাত্ম্যে শুনেছিলাম, মানেটা দাদু বুঝিয়ে দিয়েছিলান।
    মহানামব্রত ব্রহ্মচারীর পাঠ ও সংগের কীর্তন শুনতে দাদুর হাত ধরে বালিগঞ্জের কোথাও গিয়েছিলাম--- মহানির্বাণ মঠে কি রাসবেহারির কাছে গৌ ড়ীয় চৈতন্য মঠে-- আজ কিছুই মনে নেই ।
    দশবছর বয়েস অব্দি খুব আস্তিক ছিলাম।ঃ))
    তোমার ওনাদের সঙ্গে কনেকশনের কথা জেনে ভাল লাগল।
    আমার পিসতুতো দিদি সেইসময় লেডি ব্রেবোর্নে পড়েছে। কেতকী কুশারী ডাইসন ও বোধহয় সেই সময়ের ছাত্রী।
    এখন মনে হচ্ছে ডক্টর বিভা চৌধুরির বোন রমা চৌধুরি--যাঁর কথা স্বাতী লিখেছেন-- আলাদা ব্যক্তিত্ব।
  • অর্জুন | 340123.163.893423.49 (*) | ১৫ জুন ২০১৯ ০৭:৩৩49657
  • খুব ভাল লাগল, আপনার ছোটবেলার কথা শুনে। @রঞ্জন-দা।
    মহানামব্রত ব্রহ্মচারী আমাদের বাড়িতে সকলের 'মহানাম-দা' ছিলেন । আমার কানেকশন বলতে একেবারেই পারিবারিক কানেশন। আমাদের পরিবার বৈষ্ণব। প্রপিতামহ পরিব্রাজক হয়ে অনেক তীর্থে ঘুরে শেষে পুরীতে থিতু হন ও ওখানেই জীবনের শেষ দেড় দশক বসবাস করেন।

    ছোটবেলায় বাবা ডঃ রমা চৌধুরীকে প্রণাম করাতে তার ফেডারেশন ষ্ট্রীটের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন।
  • গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় | 236712.158.891212.117 (*) | ১৯ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৮49658
  • @স্বাতী রায়
    অধ্যাপিকা চামেলি দত্তকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমি তখন ওই বিভাগে পিএইচডি ছাত্র। উনি পুরানো বিভাগে এসে এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন যে অনুষ্ঠানের শেষে ওই ঘরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বিভাগের অধ্যাপকদের পরামর্শে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ওনাকে একতলায় নামাই ও সামনের এক নার্সিং হোমে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করি। দুর্ভাগ্যবশত সেই রাত্রেই তাঁর মৃত্যু হয়। যুবা বয়সের সেই স্মৃতি আজ আবার মনে পড়ে গেল। আরো মনে পড়ল, আমাদের বিভাগের শোকসভায় এসে ওনার পরিবারের লোকজন বলেছিলেন তাঁর প্রিয় ও গর্বের বিভাগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে -- অধ্যাপিকা চামেলি দত্ত নিঃসন্দেহে কোনো দুঃখ নিয়ে যান নি।
  • অর্জুন | 236712.158.1290012.147 (*) | ২১ জুলাই ২০১৯ ০৭:০৫49659
  • একেই বোধহয় বলে ধ্রুব মৃত্যু ।
  • স্বাতী রায় | 236712.158.786712.181 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৯49660
  • @গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়

    হয়ত দেখে থাকবেন যে International Astronomical Union থেকে star HD 86081 এর নামকরণের জন্য ভারতীয়দের থেকে নাম চাওয়া হয়েছে। শর্টলিস্টেড নামের তালিকায় বিভার নাম রয়েছে। এখন ভোটিং চলছে। http://astron-soc.in/outreach/activities/name-exoworlds/
    বিভার নাম যদি ভোটে জেতে তাহলে যে কি ভাল হয়!
  • গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় | 236712.158.566712.63 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০০49661
  • @স্বাতী রায় না, জানতাম না। খুঁজেও পেলাম না। জানিনা নামটা কে প্রস্তাব করেছিলেন, তাঁকে ধন্যবাদ। আশায় থাকি।
  • স্বাতী রায় | 236712.158.676712.104 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:০৪49662
  • একটা ভালো খবর। আজ ইন্টারন্যাশনাল এস্ট্রনমিক্যাল ইউনিয়ন থেকে HD 86081 তারাটির নতুন নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এবার থেকে এই তারাটি "বিভা" নামেও পরিচিত হবে। এর যে exoplanet টি তার নাম দেওয়া হয়েছে Santamasa। দুটি নামই আমাদের দেশের ইয়ং প্রজন্মের দেওয়া। আরো ডিটেল পেতে হলে দেখুন
    https://astron-soc.in/outreach/activities/name-exoworlds/

    খুশীর খবর।
  • গৌতম গঙ্গোপাধ্যায় | 236712.158.676712.104 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৯:০৪49663
  • @স্বাতী রায়
    দারুণ ভালো খবর। আপনার কাছেই এই সম্ভাবনাটা প্রথম শুনেছিলাম, তাই খবরটা শুনেই আপনার কথা মনে পড়ল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন