এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নীলকরের দালালী

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৯৬৫৪ বার পঠিত
  • আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী ,শ্যামের নাম ‘ কানাই ‘ রেখে রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বে রাজ্যে চুক্তি চাষ শুরু হতে চলেছে । চুক্তি চাষ কথাটি যেহেতু সিঙ্গুর ,নন্দীগ্রাম পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে বিপদজনক সেহেতু এই প্রকল্পটির নাম রাখা হয়েছে পার্টিসিপেটারি ফার্মিং - অংশগ্রহণ মূলক চাষ । আনন্দবাজারের এই খবর যদি সত্য হয় তাহলে শাসকের পালটি খাওয়া শুরু ,তাও এমন এক ভদ্রলোকের হাত ধরে যিনি বিগত সরকারের সময়ে সমস্ত কৃষক বিরোধী কাজকর্মের পাণ্ডা ছিলেন । আদিবাসি জমি ,খাস জমির চরিত্র বদল করে হাজার হাজার একর জমি উনি উত্তর দিনাজপুর ,জলপাইগুড়ি এলাকায় চা বাগানের মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা বানিয়েছিলেন । ওদিকে যখন সিঙ্গুর নিয়ে ধুন্ধুমার হচ্ছে তখন চুপে চাপ হিন্দ মোটরের জমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ল্যান্ড থেকে ‘ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং কমার্সিয়াল ‘ এই চরিত্রে পরিবর্তিত করবার কারিগর ইনি । মাত্র সাড়ে দশ কোটি টাকার বিনিময়ে হিন্দ মোটরের ৭৪৩ একর জমির রায়তি স্বত্ব বিড়লাদের হাতে তুলে দেওয়ার রূপকার ইনি । এনার চতুরতার ফলে হিন্দ মোটর বন্ধ করে দিয়ে হাউসিং করতে বিড়লাদের আজ আর কোন অসুবিধা নেই ।

    তবে বর্তমান শাসকের এই পালটি খাওয়ার চতুর প্ল্যান এবং ধারাবাহিকতা বুঝতে গেলে আমাদের একটু পেছনের দিকে যেতে হবে । ভারতের কৃষি পন্য’র মার্কেট নাকি বদ্ধ জলার মত যেখানে কৃষক এবং উপভোক্তার মধ্যে হাজারো স্তর । ফড়ে ,আড়তদার ,হোল সেলার ,রিটেলারের হাত ঘুরে একটি কৃষিপণ্য যখন প্রকৃত উপভোক্তার হাতে পৌঁছায় তখন তাতে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ মূল্য যুক্ত হয় কিন্তু সেই বর্ধিত মূল্যের অধিকাংশই মধ্যস্বত্ব ভোগীরা আত্মসাৎ করে, উৎপাদক চাষি এবং সাধারণ উপভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় । তা চাষি এবং উপভোক্তার স্বার্থ রক্ষার এই মহান উদ্দ্যেশ্য কে সামনে রেখে,বিশ্বায়িত পুঁজির কাছে ভারতের কৃষিব্যবস্থার ক্রমাগত আত্মসমর্পণের সূত্রপাত হিসাবে ২০০৩ সালে তৎকালীন কেন্দ্রের এন ডি এ সরকার কৃষি ক্ষেত্রে রিফর্মের নামে কৃষি বিপণন সম্পর্কিত একটি মডেল আইন বা দিক নির্দেশিকা প্রস্তুত করে । সেই মডেল আইনের মুল তিনটে বিষয়গুলি ছিল ঃ-

    ১, মার্কেট কমিটি নিয়ন্ত্রিত কৃষক মান্ডি ছাড়াও প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি বা পাইকারি বাজার তৈরি করবার অধিকার দেওয়া দরকার - অর্থাৎ বর্তমান আড়ৎদার নিয়ন্ত্রিত কৃষক বাজার বৃহৎ এবং ব্যক্তিগত পুঁজির কাছেও উন্মুক্ত করা হোক ,এই বিপুল মধ্যস্বত্ত ভোগীদের মার্কেট শেয়ারে বৃহৎ পুঁজিকেও ভাগ বসাতে দেওয়া হোক ।
    ২, কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থা এবং যে কেউ যদি কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করতে চায় তাহলে সেই অধিকার প্রদান করা উচিৎ - যেহেতু কৃষক ফড়ে ,আড়ৎদার ইত্যাদির মাধ্যমে বাজারে ফসল বেচতে বাধ্য সেহেতু তারা উপযুক্ত মূল্য পায়না আর ফড়ে ,আড়ৎদারদের লাভের কারনে উপভোক্তাও বেশী দাম দিতে বাধ্য থাকে কিন্তু এই সমস্ত বৃহৎ রিটেল চেন বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি যদি কৃষকের থেকে সরাসরি কৃষি পণ্য কিনতে পারে তাহলে কৃষক ন্যায্য দাম পাবে এবং মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের লাভের অংশ এড়িয়ে রিটেল চেন বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কোম্পানি সস্তায় উপভোক্তাকে কৃষিপণ্য সরবরাহ করতে পারবে । দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবেনা ইত্যাদি ।
    ৩, চুক্তি চাষের অধিকারের স্বার্থে আইন তৈরি করা বা অ্যামেন্ড করা জরুরী। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত ভারত এখন উচ্চমানের কৃষিপণ্য কেনবার মত আর্থিক সামর্থ্যের অধিকারী তাঁদের স্বার্থে যদি মোটা চালের বদলে সুগন্ধি বাসমতী চাল ,বা বিশেষ ধরনের আলু ,উৎকৃষ্ট হাইব্রিড টম্যাটো , লেটুস পাতা ইত্যাদি চাষি নিয়মিত এবং নির্দিষ্ট গুনমান অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারে তাহলে কৃষক স্বাচ্ছ্যলের মুখ দেখতে পারে ইত্যাদি । সেক্ষেত্রে অবশ্য বীজ ,সার ,হরমোন, কি চাষ হবে এবং টেকনোলোজি প্রাইভেট কোম্পানিগুলিই নির্দিষ্ট করে দেবে ।

    আদতে এই দিকনির্দেশের মুল লক্ষ্য ছিল দেশের কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সরাসরি দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা পরিষ্কার করা । আসলে কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ডান -বাম নির্বিশেষে শাসকদলগুলির মধ্যে এক ধরনের ঐক্যমত বর্তমান যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্বায়নবাদী নীতির দ্বারা নির্দেশিত । আর তাই বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে আত্মসমর্পণ করে ২০১৪ সালের পুর্বে ভারতের প্রায় ১৭টি রাজ্য এই মুল তিনটে বিষয়কেই তাঁদের কৃষি বিপণন ব্যবস্থার মধ্যে ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে । যে সমস্ত রাজ্য ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই দিকনির্দেশ গ্রহণ করেনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য উৎপাদন কারি রাজ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গ ।

    আমাদের অনেকেরই মনে আছে বুদ্ধ বাবুর নেতৃত্বে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্য জুড়ে চুক্তি চাষ চালু করবার একটি প্রয়াস চালায় । কিন্তু সেই সময়ে ফরোয়ার্ড ব্লক যাদের হাতে রাজ্যের কৃষি বিভাগ এবং কৃষক মান্ডি গুলি পরিচালনার ক্ষমতা ছিল তারা এবং বিভিন্ন শরিকেরা চুক্তি চাষ চালু করবার বিপক্ষে তীব্র প্রতিবাদ করে । বিভিন্ন ছোট রাজনৈতিক দল ,অরাজনৈতিক সংগঠন এমনকি তৎকালীন তৃনমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষের বিরোধিতায় রাস্তায় নামলে বুদ্ধ বাবু মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি ,রিল্যায়েন্স ফ্রেস ,স্পেন্সার ,মোর , বিগ বাজার এই দু চারটি বৃহৎ কোম্পানিকে কৃষিপণ্য নিয়ে ব্যবসা করবার শর্তসাপেক্ষ অনুমতি প্রদান করে চুক্তি চাষের প্রজেক্ট হিমঘরে পাঠাতে বাধ্য হন । তবে চুক্তি চাষ চালু করবার ক্ষেত্রে এইসব বিক্ষোভ মুল বাধা ছিলোনা ,পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের কোন কৃষক দরদী বিকল্প পন্থা বা বদান্যতাও ছিলোনা । সেই সময়ে যে আইনের বলে বাংলার কৃষি পণ্যের বাজার কর্পোরেট আগ্রাসন থেকে নিষ্কৃতি পায় তা হোল তৎকালীন APMC অ্যাক্ট । ১৯৭২ সালে পাস হওয়া এবং ১৯৮০ সালে সংশোধিত রাজ্যের কৃষক স্বার্থরক্ষার এই আইনের বলে APMC কে এড়িয়ে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেনা বা ভিন্ন রাজ্য থেকে সস্তায় কিনে এ রাজ্যে বিক্রি করা সম্ভব ছিলোনা । আর সেই অ্যাক্ট সংশোধন না করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রস্তাব এবং চুক্তি চাষ আইনসংগত ভাবে পশ্চিমবঙ্গে চালূ করা অসম্ভব ছিল । তাই বুদ্ধ বাবুর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিব্যবস্থা রিফর্মের নামে কৃষি বিপণন ব্যবস্থা সরাসরি দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তা থেকে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয় ।

    কিন্তু আধুনিক পুঁজির যুগে পুঁজি তো আর পশ্চিমবঙ্গের মত অন্যতম গুরুত্বপুর্ন এবং বিপুল কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী রাজ্যে কৃষিপণ্য বিপণনের মত লাভজনক ব্যবসা থেকে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেনা । পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান পথ যদি "accumulation through expansion" হয় তাহলে পুঁজি বৃদ্ধির আরেক সহজ পথ "accumulation through encroachment" বটে । এখন পুঁজি সবসময়েই বিভিন্ন বৃহৎ এবং ক্ষদ্র ক্ষেত্রে বর্তমান যখন এই সমস্ত ক্ষেত্রে যেমন রাষ্ট্রীয় উৎপাদন এবং পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার ( আমাদের দেশের কৃষি /হস্তশিল্প যার অন্যতম ) বাইরের ক্ষেত্র গুলিকে বাদ দিয়ে বা তাদের অবস্থানে বিঘ্ন না ঘটিয়ে বিভিন্ন রেটে ,বিভিন্ন সেক্টরে পুঁজির বিকাশ হয় তখন মুল স্রোতের অর্থনীতিবিদেরা সেই ব্যবস্থা কে "accumulation through expansion" বলেন । কৃষি ক্ষেত্রে পুঁজির এই বিকাশ পেছনের দরজা দিয়ে বীজ ,সার ,ট্রাক্টর ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ,বিভিন্ন রাজ্যে বহুকাল ধরে প্রবেশ করছে । কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এতদিন তা উৎপাদন ,বিপণন ক্ষেত্র অধিগ্রহণ করেনি । কিন্তু এর সাথে সাথে পুঁজি বৃদ্ধির একটা বিকল্প এবং সহজ রাস্তা আছে যাকে অনেক অর্থনীতিবিদেরা “accumulation through encroachment" বলছেন । সস্তায় রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি কিনে নেওয়া , দুর্বল ফ্যাক্টারি কিনে নেওয়া , অন্যের উৎপাদনের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণে আনা ,পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার বাইরে থাকা জগতের দখল নেওয়া এবং এই পথে পুঁজির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম পথ । বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রে বিশেষত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে সরকারী ”সম্পত্তির disinvestment" এবং নগণ্য মূল্যে সরকারী সম্পত্তির “ privatization" পাবলিক ইউটিলিটি সমূহের দখল - হসপিটাল ,স্কুল ,জল ,বিদ্যুৎ,খনি ,পোর্ট ,টেলিকম এবং সর্বশেষে বীজ ,সার , কৃষিপণ্য বিপণন , চুক্তি চাষের মাধ্যমে নগণ্য মূল্যে বিপুল জমি অধিগ্রহণ ,কৃষকের স্বার্থ রক্ষার আইন বাতিলের মাধ্যমে পুঁজির “accumulation through encroachment”এর ক্ল্যাসিক উদাহরণ ।

    এখন পশ্চিমবঙ্গে এই বাধা দূরীকরণের অন্যতম উপায় APMC অ্যাক্টের সংশোধন ,আর এই ক্ষেত্রে তৃনমূল সরকার দেশী -বিদেশী সংস্থাগুলির প্রতি দুই বাহু প্রসারিত করতে কার্পণ্য বোধ করেনি । তৃনমূল সরকার তাদের বাস্তব আভিজ্ঞতা থেকে বুদ্ধ বাবুর বা বামফ্রন্টের সময়ের APMC অ্যাক্টের দুর্বলতা বিষয়ে অবগত ছিল । মমতা দেবীর নেতৃত্বাধীন তৃনমূল সরকার জানত যে APMC অ্যাক্ট সংশোধন না করে পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষ , মার্কেট কমিটি নিয়ন্ত্রিত কৃষক মান্ডি ছাড়াও প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি তৈরি করবার অধিকার দেওয়া এবং কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থার কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করবার অধিকার প্রদান করা সম্ভব নয় । আর তাই ক্ষমতায় আসবার মাত্র তিন বছরের মাথায় ,বিভিন্ন দেশীয় এবং ভিনদেশী পুঁজিপতি সংস্থাদের মেসেজ দেওয়ার উদ্দ্যেশ্যে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের মাধ্যমে অত্যন্ত তাড়াহুড়োয় ,অভুতপুর্ব দ্রুততায় ,পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার একটি এক বেলার বিশেষ অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে Agricultural Produce Marketing ( regulation) amendment Act ২০১৪ বিল পাস করা হয় । উল্লেখ্য এই বিল সমস্ত বিরোধী দল বিরোধিতা করলেও বিলটির সমর্থনকারী বিরোধী পক্ষের একমাত্র বিধায়ক ছিলেন বিজেপির শমিক ভট্টাচার্য মহাশয় । কেননা উভয়েরই স্বার্থ একী সূত্রে গাঁথা ।

    এই বিলে চুক্তি চাষের বিষয়ে নীরবতা অবলম্বন করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সমস্ত প্রস্তাব যেমন প্রাইভেট সংস্থাগুলিকে কৃষক মান্ডি তৈরি করবার অধিকার ,কৃষকের থেকে দেশীয় ,বিদেশীয় সংস্থার কৃষি পণ্য প্রত্যক্ষ ক্রয় করবার অধিকার মেনে নেওয়া হয় । এই আইনের বলে সরকার ব্লক পর্যায়ের কৃষিপণ্যের বাজারগুলির নিয়ন্ত্রণ বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দিতে পারবে । বেসরকারি সংস্থাগুলি সরাসরিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে কোন সরকারী নিয়ন্ত্রন ছাড়াই যে কোন পরিমাণ কৃষিপণ্য কিনতে পারবে । বেসরকারি সংস্থাগুলি জেলাস্তরে বৃহৎ কৃষিবাজার খুলতে পারবে । বিনিয়োগকারীরা কমিশন এজেন্ট নিয়োগ করতে পারবে এবং সরকারকে একটি বাৎসরিক ফি’র পরিবর্তে যে কোন পরিমান কৃষিপণ্য কেনা , মজুত করা ,প্রক্রিয়াকরণ এবং বিক্রি করবার অধিকার পাবে । মাত্র অর্ধেক দিবসের এক সংক্ষিপ্ত আলোচনার অবশেষে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জোরে ‘ মা মাটি মানুষের সরকার ‘ ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার ভিত্তি স্থাপিত করেছিলেন ।

    ২০১০ সালে বিধানসভায় দেওয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে আমরা জানতে পারে যে সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বৃহৎ এবং মাঝারি কৃষিপণ্যের বাজার ছিল ৪৮৯টি ,এর মধ্যে APMC আইনের আওতায় বৃহৎ বাজার ছিল ৩৭টি এবং মাঝারি বাজার ছিল ১৮৪টি অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত বাজারের সংখ্যা ছিল ২৬৮টি ,তা ছাড়াও যেখানে কৃষকেরা সরাসরি কৃষিজাত পণ্য বিক্রি করে থাকেন এইরকম গ্রামীণ বাজারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০০এর মত । এই নিয়ন্ত্রিত বা অনিয়ন্ত্রিত দুই ধরনের বাজারেই বহু পারস্পরিক সম্পর্ক এবং বোঝাপড়ার ভিত্তিতে কেনাবেচা ,আদান প্রদান হয় ,অসংখ্য ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই এই ব্যবস্থার মাধ্যমে জীবনধারণ করে । তৃনমূল সরকারের আমলে এই নিয়ন্ত্রিত এবং অনিয়ন্ত্রিত বাজারের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই APMC অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে তছনছ করে দেওয়ার ভিত্তি ইতিমধ্যে স্থাপিত হয়েছে । ২০১৪ সালের APMC অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের বলে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশ পুঁজির “accumulation through encroachment” ক্ষুদ্র চাষি ,কৃষিপণ্য বিপননের ওপর নির্ভরশীল গ্রামের প্রান্তিক মানুষের জীবন ধ্বংস করে দেওয়ার রাস্তা ইতিমধ্যে তৈরি করেছে । যদিও তৃনমূল মন্ত্রী জানিয়েছেন যে কৃষিপণ্যের বাজার কেবলমাত্র দেশীয় পুঁজিপতিদের জন্য খোলা হচ্ছে রাজ্যে বিদেশী পুঁজিকে কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশ করতে দেওয়া হবেনা অথচ আমরা সকলেই জানি যে ওয়ালমার্ট ,টেস্কো ইত্যাদিরা এদেশীয় পুঁজিপতি রিলায়েন্স ,ভারতী ,আদানি ,টাটা ,বিড়লার হাত ধরে কৃষিপণ্যের বাজারে প্রবেশ করবে । বাজারের সেরা অংশ ডিপ পকেটের ক্ষমতায় ঝাড়াই ,বাছাই ,প্যাকেটবন্দি হয়ে ঢুকে যাবে এয়ারকনডিশন্ড শপিংমলে বা রপ্তানির বাজারে । বিক্রি হবে চতুর্গুণ দামে ,কৃষকের এলাকা দখল করে লাভ করবে পুঁজি,বাজারে পড়ে থাকবে ঝরতি পরতি বাতিল কৃষিপণ্য । আর তাই ২০১৪ সালে এই আইন পাস হওয়ার সাথে সাথে রাজ্যের অধিকাংশ জেলায় রিলায়েন্স ১০ একর বা অধিক পরিমান জমি বৃহৎ কৃষিবাজার খোলবার জন্য কিনে রাখতে শুরু করে ।

    ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিধানসভার তৎকালীন বিরোধী দল নেতা এবং বর্তমানের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ বাবু পশ্চিমবঙ্গে খুচরো ব্যবসায় দেশী -বিদেশী বৃহৎ পুঁজির অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনেন ,যাতে সমস্ত কর্পোরেট সংস্থার খুচরো এবং পাইকারি ব্যবসার লাইসেন্স বাতিলের দাবী তোলা হয় অথচ মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে তারই সরকার APMC অ্যাক্ট সংশোধন করে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজারে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশের রাস্তা সুগম করে তোলেন । মা মাটি সরকারের এই দ্বিচারিতা এবং কৃষক বিরোধী অবস্থান নিয়ে বিরোধী দলের হল্লাচিল্লা তো দূরের কথা -উন্নয়নের জোয়ারে ভেড়ার পালের মত দলত্যাগ দেখবার মত ।

    তা ২০১৪ সালে APMC অ্যাক্ট সংশোধনের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজারে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির অনুপ্রবেশের রাস্তা সুগম করে দিলেও ,বা পিপিপি মডেলে ব্লকে ব্লকে হিমঘর তৈরি করে বৃহৎ পুঁজিকে প্রবেশের রাস্তা দেখালেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজার খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়নি । হয়ত তার অন্যতম কারন ছিল কেন্দ্রে এবং রাজ্যে আসন্ন নির্বাচন , রাজ্যে বিরোধী দলের উপস্থিতি এবং তৃনমূল সরকারের কৃষক বন্ধু মুখোশ । আর তা ছাড়াও তৃনমূল সরকার বুদ্ধ বাবুর সরকারের তুলনায় যে যথেষ্ট বিচক্ষণ তা ইতিমধ্যে প্রমাণিত । যদিও খুব ধীরে পরিকল্পিত উপায়ে এই নূতন আইনের বলে বর্তমানে পেপসিকো ,আই টি সি , ইউনিলিভার ইত্যাদি কোম্পানি চুক্তিচাষ বা মান্ডি থেকে ইতিমধ্যে কৃষকের ফসলের অনেকটাই তুলে নিয়ে যাচ্ছে । পেপসিকো’'লেজ’' পোট্যাটো চিপসের জন্য এক বিশেষ ধরনের আলু চুক্তি চাষের মাধ্যমে কৃষকদের থেকে ক্রয় করছে এবং কাঁচামালের সারাবছর সরবরাহ নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গের হিমঘর গুলিতে বিপুল পরিমান জায়গা অগ্রিম লীজ নিয়ে রাখছে এর ফলে সাধারণ চাষি ফসল উঠলে হিমঘরে জায়গা না পেয়ে কম দামে তাদের ফসল বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন । তৃনমূল সরকারের আইনে ভর করে ধীরে ,সকলের দৃষ্টির অগোচরে কিন্তু নিশ্চিত পন্থায় পশ্চিমবঙ্গের কৃষিপণ্যের বাজার এই আইনের বলে ক্রমে মুনাফালোভি বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে ।

    পুঁজিপতিদের চাপে এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় তৃনমূল সরকার তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে দ্রুত কাজ করবার জন্য জমি বিগত দফায় ইতিমধ্যে প্রস্তুত করেছেন । APMC অ্যাক্ট ইতিমধ্যে সংশোধিত । পেপসি ,আই টি সি ইত্যাদি কোম্পানির চুক্তি চাষের ট্রায়াল রান সমাপ্ত। মোদী সাহেবের প্রিয় পাত্র আদানি পশ্চিমবঙ্গে ফর্চউন কোম্পানিকে সামনে রেখে একের পর এক তেলের মিল আর ডাল ভাঙ্গার ফ্যাক্টারি কিনে নিচ্ছে । রাজ্য বিরোধী শূন্য । বিভিন্ন ডোল এবং প্রকল্পের মাধ্যমে জন দরদী ভাবমুর্তি প্রতিষ্ঠিত । সদ্য সিঙ্গুর রায় ভাবমুর্তিতে স্টেরয়েড যুক্ত করেছে । কেবল যা প্রয়োজন ছিল তা হল একজন দক্ষ ,চতুর এবং বিশ্বস্ত ম্যানেজার । যিনি অবলীলায় কেউটেও ধরতে পারেন । আর তাই সুপরিকল্পিত ভাবে রেজ্জাক মোল্লার নিযুক্তি । রেজ্জাক মোল্লা কে মন্ত্রী করবার উদ্দেশ্যও তাই -কৃষকের জমি কি করে এবং কিভাবে হাতাতে হবে এ বিষয়ে ইনি পোস্ট ডক্টরেট । বিগত সরকারের সময়ে তার প্রতিভা প্রমাণিত । আর রেজ্জাক মোল্লা এসেই কাজে নেমে পড়েছেন ,শুরু করেছেন চুক্তি চাষের পক্ষে ,নব্য নীলকরদের পক্ষে দালালী । মাঝে মাঝেই আওয়াজ দিচ্ছেন ,জনতার প্রতিক্রিয়া মাপছেন আর অত্যন্ত দ্রুততায় বৃহৎ কৃষকদের নিয়ে কৃষক গোষ্ঠী সৃষ্টি করছেন যাদের সঙ্গে বৃহৎ কোম্পানিগুলি চুক্তি চাষের আনুষ্ঠানিকতা সমাপ্ত করবে । অতি শীঘ্র রিলায়েন্স যে সমস্ত জমি রাজ্যের প্রতিটি জেলায় কিনে রেখেছে সেই সমস্ত জমিতে পুঁজি নিবেশের ঘোষণা করলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই ।

    চুক্তি চাষের ফলে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে কৃষকের রক্ত নিংড়ে নেওয়ার যে আধুনিক সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত ,পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বাইরে থাকা ভারতের যে গ্রামীণ সমাজ , সেই সমাজের দখল এবং নিয়ন্ত্রণ বৃহৎ পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার যে চক্রান্ত তা আমাদের রাজ্যে রচিত হচ্ছে বিগত দুই বছর ধরে । মুখে কৃষক দরদী কথা কিন্তু অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের কোটি কোটি কৃষিজীবী ও কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবন জীবিকা লুঠের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তৃনমূল সরকার । নীল চাষ ,তামাক চাষ , আফিম চাষের মত চুক্তি চাষের ধারাবাহিকতার গায়ে নূতন জোব্বা পড়িয়ে কঙ্কাল ঢাকবার প্রয়াস আজকে নূতন উদ্যমে শুরু হয়েছে সমস্ত রাজ্যগুলি জুড়ে । আর জি এস টি , শিশুশ্রম বিল সমর্থক সরকারের কাছ থেকে এই পন্থা অস্বাভাবিক নয় । বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিকে সম্পুর্ন আত্মসমর্পন করবার রাস্তা প্রায় সমাপ্ত ।

    একদিকে বিভিন্ন পন্থায় রাজ্য বিরোধী শূন্য করে দিয়ে গণতন্ত্র হত্যার মাধ্যমে একছত্র আধিপত্য কায়েম ,অন্যদিকে কর্পোরেট জগতের কাছে কৃষিকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার এই এজেন্ডা এখন বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদের কাছে পুঁজি বৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ আর এই পথ প্রশস্ত করবার ক্ষেত্রে মোদী এবং মমতা একজোট ।

    অবশেষে পুঁজিবাদ দীর্ঘজীবি হউক ।।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ৯৬৫৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • h | 213.132.214.87 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫২51481
  • কৃষি ভিত্তিক শিল্পের আওয়াজ উঠেছিল সিঙ্গুর বিতর্কের সময়ে। তো আমার যদ্দূর মনে পড়ে, এ কথা আমি তখন বলেছিলাম, যে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং কে এবং নতুন কোল্ড চেন গোছের উন্নত সাপ্লাই চেন কে, কৃষিভিত্তিক শিল্প বলে চালানোর প্রবণতা আসতে বাধ্য। এমনিতেই ফুড প্রসেসিং, বিশেষত আলুর চিপ্স বা জুস/সস ইত্যাদি তৈরীর বড় কারখানায় এটা ভালো ভাবেই চলে থাকে, যবে থেকে, বিরাত আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলো প্যাকেজ্ড কমোডিটি মার্কেটিং এ ঢুকেছে, তবে থেকে এ জিনিস মোটামুটি চলছে।

    সুতরাং এই প্রবন্ধে যে দিকটা মিসিং সেটা হল, এখন কন্ট্রাক্ট ফার্মিং কি ভাবে চলছে, তার একটা চিত্র।

    আর একটা দিক হল, এলাকা বা ক্রপ এর উপরে আসলে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর নেচার ডিপেন্ড করে, এটা রাজনইতিক না হয়ে অর্থনইতিক বিষয়ে জোর দেওয়া প্রবন্ধ হলে, সে দিকটাতেও আমরা কিছু জানতে পারতাম।

    জেনেরালি আমার দেবব্রত র লেখা ভালো লাগে, তথ্য টথ্য থাকে, শুধুই আমার কোমল হৃদয়ের ফিলিং টাইপের মালপত্র না, এই সোশাল নেটওয়ার্কিং এর যুগে কমপ্যাসন টা বড় কারেন্সি ব্যভৃত হয় আনফর্চুনেটলি।

    তবু যাই হোক ভালো ই লাগলো প্রবন্ধটা। রেজ্জাক মোল্লা খুব তৎঅপর না হলেও, বা অফিশিয়াল মোহর না পেলেও, এই এজেন্ডা হবে।

    উন্নত কোল্ড স্টোরেজ তৈরী হচ্ছে নতুন ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে, ইরিগেশনে প্রাইভেট সেক্টর টোলিং এর প্রস্তাব ও আসছে শুনছি, অতএব দিকে দিকে আনন্দ ই আনন্দ।

    সিংগুর এর ঘটনায়, ছোটো জমির সাবসিস্টেন্স ফার্মার দের যে রেজিস্টান্স ছিল সেটা সারা দেশেই অনেক আগে শেষ হয়েছে। এখানেও হবে।
    আরেকটা কথা না বললে, এই বিষয়ে প্রবন্ধ শেষ হয় না, সেট হল কন্ট্রাক্ট ফার্মিং শুধু না, এত নানা কারণে জমির নতুন কনসোলিডেশন হচ্ছে, সেটার একটা আভাস হলে ভালো হত।
  • h | 213.132.214.87 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৫51482
  • এবং এই নীতিন গাদকড়ির বায়ো ফুয়েল সংক্রান্ত প্ল্যান কার্যকরী হলে, কোন দিকে যাবে কেস বলা মুশকিল, গ্রেন প্রোডাকশন হয়তো এমন কমলো, জে এলাকা য় দুর্ভিক্ষ হল, এইটা আফ্রিকায় নাকি হয়েছে, এইটা আমি কাগচে পড়েছি।

    বাই দ্য ওয়ে, একটা খবর প্রায় ই পশ্চিমের কাগজে বেরোয়, চীন সরকারী ট্রেডিং কোমপানীর সাহচর্য্যে, কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করায় আফ্রিকায়। প্রাইভেট ব্যবসায়ী রাও ইনভল্ভ্ড। পশ্চিমে এটা খুব কমন, যে কোনো মিলের থালায় বা পানীয়ের ৮০-৯০% বিদেশ থেকে সোর্স্ড হয়ে সুপারমার্কেটের মাধ্যমে আসে, আমাদের দেশে সে অবস্থা আস্ততে হয়তো দেরি আছে, তবে সব চাল ই আমরা বাংলাদেশ থেকে কিনবো, এখানে সুদু আলু হবে বা সিল্প হবে টা আমাদের দেশে হয়তো হবে না কিন্তু এত ক্রপ ডিসইন্সেন্টিভাইস করতে করতে এমন জায়গায় যায়, যে ক্রপের বারোটা বেজে যায়। পাটের এখন যেটা হয়েছে, ইন্সিডেন্টালি, ভালো পার্টিসিপেটরি মডেল এ কন্ট্রাক্ট ফার্মিং হলে পাট টা বেঁচে যায়, ডিমান্ড কে এই ভাবে প্লাস্টিক খেয়ে না ফেললে ঃ-)
  • dc | 132.174.114.159 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৭51483
  • ভালো সাপ্লাই চেন তৈরি করতে হবে। ভারতে যতো শস্য নষ্ট হয়, তার কিছুটা বাঁচানো যায় যদি ডিপ সাপ্লাই চেন বানানো যায়। সেটা সম্ভব হবে যদি ওয়ালমার্ট বা ক্যারেফুররা ব্যাক এন্ডে বড়ো করে ইনভেস্ট করে, লজিস্টিকস নেটওয়ার্ক তৈরি করে। সেটা করতে পারলে হয়তো চাষী আর কনসিউমারদের মধ্যে ডাইরেক্ট ইন্টারফেসও তৈরি হবে। বা চাষীদের কাছ থেকে অ্যামাজনের মতো কোন অ্যাগ্রিগেটর কিনে নেবে, সেটা কনজিউমারদের সেল করবে। আমার মনে হয় বিগ বাস্কেট ইত্যাদিরা খুব ছোট করে যেটা শুরু করেছে সেটার বিশাল স্কোপ আছে। দেখা যাক আগামী দশ বছরে কিভাবে এগোয়।
  • h | 213.132.214.87 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১১51484
  • অ্যাগ্রিগেটর ও কিনবে, বড় রিটেলার রা ব্যাক এন্ডে ইনভেস্ট ও করবে, উদিকে 'ডাইরেক্ট' ইন্টারফেস তৈরী ও হবে, এটা কি করে হয়, মেডিয়েশন তো থাকছেই। তুমি যদি ইবে তে জিনিস কেন, ইবে কি উড়ে যায় ? একটু বুঝিয়ে বলবে, বিগ রিটেল বিতর্কে এটা আমি কোন দিন বুঝি নি।
  • dc | 132.174.114.159 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৩51485
  • খাবারের থালার কনটেন্ট বেশীর ভাগ সুপারমার্কেট থেকে সোর্সড হয়ে আসবে, এই মডেলটা হয়তো অল্প হলেও বাইপাস হয়ে যেতে পারে। অ্যাগ্রিগেটর পোর্টাল তৈরি হলে (যেমন বিগ বাস্কেট) তারা সরাসরি ডিম্যান্ড বুঝে চাষীদের থেকে সোর্স করে কনসিউমারের ঘরে পৌঁছে দেবে। তবে এর জন্য যে সাপ্লাই চেন দরকার সে বিগ বাস্কেট পারবে না, তার জন্য প্রচুর ইনভেস্টমেন্ট আর টেকনোলজি দরকার। ভারতেও আগের থেকে সাপ্লাই চেন কিছুটা বেটার হয়েছে, তবে আরো অনেক দূর যেতে হবে। অ্যামাজন তো আস্তে আস্তে অল পারপাস রিটেলার হবার চেষ্টা করছে, তবে ফার্ম প্রোডিউসের ব্যবসায়ে যাবে কিনা দেখা যাক।
  • dc | 132.174.114.159 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৬51486
  • অ্যাগ্রিগেটর, ডাইরেক্ট ইন্টারফেস, এগুলো নানান অপশান। কোনটা বেশী চলবে জানিনা, তবে সবদিকেই স্কোপ আছে আর কি। মেডিয়েশান একেবারে চলে যাবে এরকম হয়তো নাও হতে পারে। তবে লেয়ারগুলো কিছুটা কমবে।
  • h | 213.132.214.85 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৭51487
  • নতুন প্লেয়ার এলে হরি লেয়ার কমে না ;-) এই মর্মে বাউল গান লেখা দরকার উইথ অ্যান্ড উইদাউট দেহতত্ত্ব ইনুএন্ডো, এখনি আর তর্ক করছি না, অন্যরা যা মনে হয় লিখুন ;-)))

    একটা কথা বলো, বিগ বাস্কেটের যেটা মডেল, সেটাতে তো শুধু বিগ রিটেল এর কাছে কিনলে ওদের পোশাবে না, মানে ওদের সাপ্লায়ার ভ্যারিয়েশন তো ওদের রাখতেই হবে।
  • dc | 132.174.114.159 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩৬51488
  • আসলে বিগ বাস্কেট স্রেফ উদাহরন হিসেবে বললাম। ভারতে ফার্ম প্রোডিউসের মার্কেট একেবারেই আনডেভেলপড আর আনঅর্গানাইজড অবস্থায় আছে, কাজেই বিগ বাস্কেট কিভাবে ডেভেলপ করবে সেও একেবারেই অনিশ্চিত। তবে কৃষি সাপ্লাই চেন সেক্টরে এফডিআই আর বড়ো ইনভেস্টমেন্ট খুব দরকার।
  • দেবব্রত | 59.32.16.27 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০২51489
  • গুরুর সাইট ডাউন ছিল,একই লেখা তিন বার পোস্ট হয়ে গেছে দেখলাম,নিজগুনে ক্ষমা করে দেবেন (বানান ভুল সমেত)
  • SS | 160.148.14.3 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫২51490
  • এগ্রিকালচারাল কমোডিটির মার্কেটে সম্প্রতি বেশ কিছু বড় ঘটনা ঘটেছে। আমি তো ভাবছিলাম দ্রি আগামীর অবয়ব থ্রেডে পোস্ট করবেন। একটা হচ্ছে চায়নার সরকারি কোম্পানি কেমচায়না সুইস সিড কোম্পানি সিনজেন্টা অধিগ্রহণ করেছে ৪৩ বিলিয়ন ডলারে। এই ডিল পাশ হবার জন্যে সিনজেন্টাকে ইউ এসের সিকিওরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আর ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিওরিটি থেকে পারমিশন নিতে হয়েছে। দু নম্বর হল মনস্যান্টো আর জার্মান কোম্পানি বেয়ারের মার্জার ৬৬ বিলিয়ন ডলারে। যে বেয়ার অ্যাসপিরিন তৈরি করে সেই বেয়ার। এই ডিল এখনো পেন্ডিং। ইউ এসের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট দেখছে এই ডিলের জন্যে অ্যান্টি ট্রাস্ট ল ব্রেক হবে কিনা আর ইউরোপিয়ান কমিশন ও খুব একটা খুশি নয় কারণ অনেকে বলছে এই ডিলের জন্যে ই ইউ তে জেনেটিক্যালি মডিফায়েড সিড ইন্ট্রোডিউস হবে। মনস্যান্টো খুব একটা সুবেধে করতে পারছিল না, তাই এবার বড় জার্মান কোম্পানিকে পাকড়েছে, যাতে ই ইউ সহজে পারমিশন দিয়ে দেয়। দেখা যাক কি হয়।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৫০51491
  • @ h ইচ্ছা করেই এই লেখাটায় অর্থনীতির দিকটায় ঢুকতে চাইনি , লেখাটি মূলত সিঙ্গুর রায় পরবর্তী তৃনমূলের কৃষক দরদী ফোলানো বেলুনের আড়ালে যে নিয়ো লিবারাল ফেস , এবং তার পেছনে যে লম্বা প্রস্তুতি সেই রাজনৈতিক সত্য উন্মুক্ত করবার উদ্দেশ্যে লেখা । তবুও অর্থনীতি এবং জমি চুরির দিকটা কতকটা এই রকম । বিভিন্ন অর্থনীতিবিদরা বলছেন পৃথিবীজোড়া একচেটিয়া খাদ্যদ্রব্য ব্যবসায় খাদ্যদ্রব্য যে দামে বিক্রি হয় তাঁর ৪০% পায় সার,বীজ ,পোকা মারার ওষুধ ইত্যাদি ইনপুট দেওয়ার নামে বহুজাতিক কোম্পানি সমূহ। ৫০% থাকে পরিবহন ,প্যাকেজিং এবং বিপণনকারী সংস্থার হাতে । আর বিক্রয়মূল্যের কম বেশী ১০% পেয়ে থাকেন চাষীরা । আর কৃষিপণ্য যদি প্রসেসড হয়ে বাজারে আসে সেক্ষেত্রে চাষীর ভাগে পড়ে মাত্র ১% বা তার কম । ৮ টাকা কিলো আলু পট্যাটো চিপস হওয়ার পরে সম্ভবত ৪০০টাকা প্রতি কিলো দরে বিকোয় । অর্থাৎ বৃহৎ পুঁজি নিয়ন্ত্রিত এই ব্যবস্থায় কৃষকের হাল শোচনীয় । বাধ্য হয়ে চাষী নিশ্চিত মূল্যের লোভে চুক্তি চাষে ঢুকে পড়ে ,এই অনিশ্চিত কৃষি পণ্যের বাজারে তারা ভাবেন যে অন্তত একজন নিয়মিত ক্রেতা পাবেন । প্রচলিত চাষ এবং কৃষি পদ্ধতি বদলে কেউ টম্যাটো ,কেউ আলু ,কেউ ফুল বা কর্পোরেট সংস্থার সাথে চুক্তি অনুযায়ী চাষ করতে শুরু করেন । প্রথমে কিছুদিন লাভ পেলেও দামী বীজ,সার ,হরমোন ইত্যাদির চাপে ক্রমে লাভের পরিমান কমতে থাকে চাষী ঋণের ভারে জর্জরিত হতে থাকেন । কর্ণাটকে টম্যাটো ,পাঞ্জাবে ধান এবং আলু ,পশ্চিমবঙ্গে আলু’র চুক্তি চাষে একই চিত্র ।

    ১৯৮৯ সালে পেপসিকো -পাঞ্জাবের হোসিয়ারপুরে দেশী -বিদেশী বাজারে উন্নত মানের টম্যাটো পেস্ট /পিউরি সরবরাহের জন্য কারখানা স্থাপন করে, আর সেই কোম্পানির নিয়মিত কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করবার স্বার্থে পাঞ্জাবে টম্যাটো চাষে বিপুল লাভ এই লোভ দেখিয়ে চুক্তি চাষ শুরু করে । পাঞ্জাবের চাষী পেপসিকে নির্দিষ্ট মানের টম্যাটো সাপ্লাইয়ের চুক্তির ধারা অনুযায়ী বীজ, স্যামপ্লিং ,সার নেওয়া শুরু করে । চাষের দেখভাল এবং পরামর্শদাতা হিসাবে পেপসির বিশেষজ্ঞরা গ্রামে গ্রামে ঘুরতে থাকেন । কিছুদিন পরে পেপসি বিভিন্ন কারনে টম্যাটো কেনা বন্ধ করে দেয় -বিপুল টম্যাটো চাষীর মাথায় হাত । ধার দেনায় জমি বিক্রি ইত্যাদি । পাঞ্জাবে এখন ৮০০০০ -৯০০০০ টাকা একর পিছু চাষীর মাথায় ঋণ ।

    তা সেই পেপসি এখন নূতন অবতারে আলুর চুক্তি চাষে মূলত পাঞ্জাব ,পশ্চিমবঙ্গ ,গুজরাট ,উত্তরপ্রদেশ ,কর্নাটক ,বিহার ,মহারাষ্ট্রে প্রায় ২৪০০০ চাষির সাথে চুক্তি চাষের মাধ্যমে তাঁদের পট্যাটো চিপসের জন্য বিশেষ ধরনের আলু সংগ্রহ করে । বর্তমানে পেপসি একাই ২৪০,০০০ টন আলু বিভিন্ন রাজ্য থেকে কিনে থাকে । দামের বিষয়ে অগ্রিম চুক্তি হলেও তা মানার বাধ্যবাধকতা কেবল চাষীর , বাজারে দাম কম থাকলে বিভিন্ন বাহানায় ,কোয়ালিটি ইস্যুতে পেপসি চুক্তিচাষীর আলু রিজেক্ট করে বা কমদামে বেচতে বাধ্য করে । আর দাম বেশী থাকলে চুক্তিবদ্ধ চাষীকে বাধ্য করে অগ্রিম চুক্তি অনুযায়ী আলু বেচতে । দাম বেশী থাকলে কৃষক যে সাইড ট্রেডিং করেনা তা নয় কিন্তু পেপসির এজেন্ট আইন এবং চুক্তি অনুসার মাঠ থেকেই আলু সংগ্রহ করতে পারে ।

    এই ভেতরের গল্প ,সরকারের ক্রমশ বেড়ে চলা ভর্তুকির বিল (আদতে আমার আপনার পয়সা ) ,জমিদখল এই ইতিহাস বলতে গেলে আমাকে আরও গোটা দুয়েক প্রবন্ধ লিখতে হবে তবে জমি চুরির গল্পটি একটু ছোট করে জানা যাক -গুজরাট,মধ্যপ্রদেশ ,অন্ধ্র ,কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যে এগ্রিবিজনেস ফার্মগুলিকে R&D এবং রপ্তানির নামে বৃহৎ জমি ( উচ্চ সীমা ২০০০ একর ) কর্পোরেট ফার্মিং এর নামে নামমাত্র মূল্যে ২০ বছরের জন্য লীজে নেওয়ার অধিকার দিয়েছে । ছত্তিসগড় সরকার ২০ লাখ হেক্টর জমি (আপনার মাত্র ১০০০ একর টাটা কে দেওয়া নিয়ে চেঁচাচ্ছিলেন ) মাত্র ৫০০/- প্রতি হেক্টর ইন্টারেস্ট ফ্রি সিকিউরিটি ডিপসিটের বিনিময়ে 'Jatropha” (বায়ো ফুয়েল ) চাষ করবার জন্য প্রভাবশালী বিজনেস হাউসদের ডেকে ডেকে দিচ্ছে (গডকরি পলিসির ফল ) পশ্চিমবঙ্গে এখনই জমি কর্পোরেট ফার্মিং এর জন্য এইরকম হরির লুঠের প্রভিসন নেই ঠিকই কিন্তু আমরা সেই দিকেই এগোচ্ছি ।

    অন্ধ্র প্রদেশের কৃষির চূড়ান্ত ক্রাইসিসের জন্য কে এবং কি ধরনের পলিসি দায়ী তার একটা রিপোর্ট The commission on Farmer’s Welfare ( 2004 সালে অন্ধ্র সরকারের স্থাপিত সংস্থা ) তৈরি করেছে । dc পড়ে দেখতে পারেন আপনার পুঁজিবাদী পথে কৃষির উন্নতি অন্ধ্রের চাষীদের কোথায় দাঁড় করিয়েছে , তবে ভ্রান্ত ধারনার অবসান হবে বলে গ্যারান্টি নেই তবুও সেই সরকারী রিপোর্টের সামারি এই রকম ঃ-

    Agriculture in Andhra Pradesh is in an advanced stage of crisis. While the causes of this crisis are complex and manifold, they are dominantly related to public policy. The economic strategy of the past decade at both central government and state government levels
    •has systematically reduced the protection afforded to farmers and exposed them to market volatility and private profiteering without adequate regulation,
    •has reduced critical forms of public expenditure,
    •has destroyed important public institutions, and
    •did not adequately generate other non-agricultural economic activities. 
While this is a generalised rural crisis, the burden has fallen disproportionately on small and marginal farmers, tenant farmers and rural labourers, particularly those in dryer tracts. The most extreme manifestation of the crisis is in the suicides by farmers. কৃষকের আত্মহত্যার কাউন্টিং যদি বাড়াতে চান ভারতে চুক্তি চাষ একমাত্র এবং অন্যতম উপায় ।
  • aranya | 154.160.5.103 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৬51492
  • দেবব্রত, মূল লেখা আর আপনার শেষ পোস্ট - দুটো ই ভাল লাগল।
    লেখার নামটাও, নীলকরের দালালি, খুবই অ্যাপ্ট।
    মেইন স্ট্রীম কোন রাজনৈতিক দল কি চুক্তিচাষের বিরোধিতা করছে - পঃ বঙ্গের বাইরে কোন রাজ্যে বা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে?
  • dd | 116.51.29.68 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৭51493
  • ২০০৪ সালে এই কমিশন বসে আর রিপোর্ট বের হয় ২০০৬ সালে। মানে ঐ The commission on Farmer’s Welfare।

    তখন কি অ্যাতো চুক্তি চাষ ছিলো ? বা আদৌ ছিলো ?

    ১৪৬ পাতার রিপোর্ট। প্রথমেই Agriculture in Andhra Pradesh is an advanced state of crisis দিয়ে শুরু - যে প্যারাটি দেবব্রত কোট করেছেন। পুরোটা পড়ার ধৈর্য্য আমার নেই। হু হা চোখ বুলিয়ে (এই মিনিট দশেক) যা দেখলাম তাতেও চুক্তি চাষ নিয়ে কোনো টপিক দেখলাম না।

    ঐ সময়ে,২০০৫'এ আমি হায়দ্রাবাদে চাকরী করতাম। ভয়ানক খরা চলেছিলো পর পর কয়েক বছর। মনে আছে সেই সময়কার কথা। তারপরে বোধ হয় ইরিগেশনে অনেক উন্নতি হয়েছে।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১৪51494
  • ডিডি দা আপনি লক্ষ্য করেছেন আমি লিখেছি " অন্ধ্র প্রদেশের কৃষির চূড়ান্ত ক্রাইসিসের জন্য কে এবং কি ধরনের পলিসি দায়ী তার একটা রিপোর্ট The commission on Farmer’s Welfare ( 2004 সালে অন্ধ্র সরকারের স্থাপিত সংস্থা ) তৈরি করেছে" কেবল চুক্তি চাষ নয় তার সাথে আরও কিছু । রিপোর্ট টি শুরুই হচ্ছে " Agriculture in Andhra Pradesh is in an advanced stage of crisis. While the causes of this crisis are complex and manifold, they are dominantly related to public policy. The economic strategy of the past decade at both central government and state government লেভেলস " কেবল চুক্তি চাষ নয় সাথে আরও কিছু ।

    আর হ্যা অন্ধ্রে ১৯৯০ এর সময় থেকেই চুক্তি চাষ আছে যেমন সেই সময়ের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্র বাবু নাইডুর নির্বাচনী ক্ষেত্র চিতুর জেলার বিখ্যাত এবং কুখ্যাত "Kuppam" প্রোজেক্ট । অন্ধ্রের তিনটে জেলার চুক্তি চাষ নিয়ে Venkateshwarlu and Corta (2001) একটা ডিটেল স্টাডি করেছেন । ক্ষুদ্র চাষির উচ্ছেদ ,চাষের খরচ কমাতে বিপুল পরিমান শিশু কন্যা শ্রমিকের ব্যবহার ,অধিকাংশ ক্রস পলিনেসনের কাজ যা মূলত তুলা চাষের শ্রমের ৯০% তা শিশু শ্রমিকদের মাধ্যমে ,এমনকি ৬-৭ বছরের বাচ্চা কে দিয়ে সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যে ৬-৭টা পর্যন্ত বছরের পড় বছর ধরে করানোর মত ভয়ঙ্কর চিত্রের সামান্য নমুনা তাঁদের স্টাডিতে পাবেন । যেহেতু এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য চুক্তি চাষের অর্থ নীতি নয় তাই আমি ডিটেলে ধুকছিনা । তবে বিরোধী শূন্য পশ্চিমবঙ্গে চুক্তি চাষ বাস্তবে পরিনত হতে চলেছে । তৃনমূল পরিকল্পিত ভাবে ঘুঁটি সাজিয়ে ফেলেছে ।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৩২51495
  • অরণ্য -আপনার প্রশ্নের উত্তরে জানাই " না " ভারতের কোন সংগঠিত দল কৃষিতে এই চুক্তি চাষ বা কর্পোরেট পুঁজির “accumulation through encroachment”এর বিরোধিতা করছেনা , ইতিমধ্যে ভারতের ১৭/১৮টি রাজ্য তাঁদের APMC অ্যাক্ট কেন্দ্রীয় গাইডলাইন অনুযায়ী সংশোধিত করে নিয়েছে । সেই আইনের বলে ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে অতি সামান্য মূল্যে এগ্রিবিজনেস ফার্মগুলি R&D এবং রপ্তানির নামে বৃহৎ জমি ( উচ্চ সীমা ২০০০ একর ) নামমাত্র মূল্যে ২০ বছরের জন্য লীজে নেওয়ার অধিকারি । পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের মুখ নেই -কেননা সরকারে থাকবার সময়ে তারা এই চুক্তি চাষ প্রবর্তন করতে চেয়েছিল , আর যারা বিরোধিতা করেছিল ফরওয়ার্ড ব্লক ইত্যাদি তাঁদের অধিকাংশ এখন তৃনমূলে নাম লিখিয়েছে - ছোট দল - এস ইউ সি আই , সিপিআই এম এল ইত্যাদিরা নিজেদের ক্ষমতায় চেষ্টা করছে । আসলে কৃষি ক্ষেত্র দেশী এবং বিদেশী বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থা গুলির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে ডান -বাম নির্বিশেষে শাসকদলগুলির মধ্যে এক ধরনের ঐক্যমত বর্তমান যা মূলত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও বিশ্বায়নবাদী নীতির দ্বারা নির্দেশিত বলে আমার মনে হয় ।
  • sm | 53.251.91.253 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৫৪51496
  • আচ্ছা দেবব্রত; একটা প্রশ্ন করি। ধরেন, আমার পরিবারে কয়েকজন আত্মীয় মিলিয়ে 40-50 বিঘে মতন জমি আছে। মালিকেরা সকলেই অর্থনৈতিক ভাবে সবল ও গ্রামের বাইরে থাকে। চুক্তির মাধ্যমে চাষ হয়।
    মালিকেরা এক্সট্রা টাকা চাষে দিতে রাজি নয়; ফলত লাভের পরিমান ভীষণ কম।টাকা কম ইনভেস্ট হয় বলে ফসলের উৎপাদনও দৃষ্টিমূলক ভাবে কম।
    এমতাবস্থায় যদি বড়ো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি চাষে যায়; তো দুপক্ষেরই উইন উইন সিচুয়েশন।
    মালিকের কিছু বেশি লাভ হলো; ফসলের প্রোডাকশন বাড়লো আর কোম্পানির পকেট ভরলো তো বটেই।
  • দেবব্রত | 212.142.91.41 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:২৭51497
  • আপনার পন্থাতেই রেজ্জাক ভাবছেন,ভুমি সংস্কারের দরুন আমাদের রাজ্যে এক লপ্তে বড়ো জমির পরিমান কম,গড়ে মাত্র এক একরের মত জমি চাষি পিছু বর্তমান। বৃহৎ কোম্পানির লজিস্টিক খরচাই পোষাবেনা। তাই মুলত গ্রামের তুলনামূলক বৃহৎ জমির মালিক, কমপক্ষে ১০-১৫বিঘা জমি আছে এই রকম চাষি দের নিয়ে এক একটা কৃষক গ্রুপ তৈরি হচ্ছে, রাজ্যে ইতিমধ্যে ১৭০০বৃহৎ চাষিদের নিয়ে ৭০টা গ্রুপ তৈরি হয়েছে।কর্পোরেট কোম্পানি গুলি এই কৃষক গ্রুপের সাথে চুক্তি করবে।পুরো গ্রুপ একই ধরনের চাষ করবে আর কি।এটা কেবল একটা দিক,বাকি কিছু মুল প্রবন্ধে ছুঁয়ে গেছি।
  • h | 212.142.90.202 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৫51498
  • চুক্তি চাষের একটা টিপিকাল কপি যদি পাওয় যেত ভালো হত
  • sm | 53.251.88.202 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৯51499
  • কিন্তু আমার প্রশ্নের পুরো জবাব তো হলোনা। যেহেতু আমার কেস এ মালিক পক্ষ; নন ইন্টারেস্টেড -তাই জমিতে ইনভেস্ট করতে চায় না।ফসল এর উৎপাদন ও কম হয়। ম্যান পাওয়ার ও কম ইউজ হয়।
    অর্থাৎ বেশির ভাগ সময় জমি অনাবাদী পড়ে থাকে।
    এক্ষেত্রে চুক্তি চাষে তো সব পক্ষের ই লাভ।
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৫51500
  • Bengal farmers reap benefits of collaborative farming
    http://www.business-standard.com/article/economy-policy/bengal-farmers-reap-benefits-of-collaborative-farming-112122002041_1.html

    "In West Bengal, there was such a glut of potatoes in March that two kilometre queues of trucks, tractors and carts outside cold storages was a familiar sight. Open market prices had collapsed and the growers of table potatoes were in distress.
    *********The only ones relieved were either those who had not grown potatoes or who had contracted to sell to corporates like Pepsico, the maker of Lays and Uncle Chips wafers.************

    Scenes like these were common in Bardman and Hooghly districts in West Bengal. Persuaded by last year's high price of Rs 8.60 a kg around March, farmers brought more acreage under potato. Favourable weather also boosted the crop, so much so that cold storages ran out of space and prices collapsed to as low as Rs 1.60 a kg as there were no buyers.
    http://www.news18.com/news/india/contract-farming-the-key-to-raising-productivity-1107108.html
  • PT | 213.110.242.6 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৭51515
  • দাঁড়ান, দাঁড়ান..... বুদ্ধবাবুর কোন কিছু আমি গজাল দিয়ে গাঁথার চেষ্টা করছি না। আমি এমন কথাও কোথাও বলিনি যে "চুক্তি চাষ ঠিকই আছে "।

    আমি শুধু আপনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বোঝার চেষ্টা করছি যে ভারতে যে "হাজারে হাজারে কৃষক আত্মহত্যা করছে" তারা চুক্তি চাষের জন্যেই করছে কিনা। আপনি " রিটেলার, হোলসেলার, চাষের খরচ, সার ,বীজ ,কীটনাশক " ইত্যাদি সব কিছু দিয়ে ঘঁটে চচ্চড়ি বানিয়ে ফেল্লেন যে !!
    কেননা চাষ করলে সবাই আত্মহত্যা করছে এমনটা তো মনে হয়্নাঃ
    According to the National Sample Survey, the all-India average monthly surplus over cost per household from agriculture was Rs 3,350. That was a return of 152 percent. The corresponding amount for Punjab was 16,340 a month, or 139 percent of the amount invested. On the basis of actual cost of cultivation of the kharif crop for the three years 2008-2011, a central government agency said cotton gave a surplus of 103 percent over paid out cost and imputed family labour, while that of paddy was 69 percent.

    আর চাষীদের এত সমস্যা যখন তখন চাষের জমিতে শিল্পস্থাপন কারাটাই তো অতি অবশ্য করণিয় কাজ বলেই মনে হয়। কিন্তু সে অন্য আলোচনা.......

    আপাততঃ এটুকুই জানতে চাই যে সারা ভারতের মোট চাষের কতটা এখন চুক্তি-চাষের অন্তর্ভুক্ত? আর সেই শতাংশ দিয়ে হাজার হাজার চাষীর আত্মহত্যার সম্পুর্ণ ব্যাখ্যা পাওয়া যায় কিনা!!
  • dd | 116.51.30.184 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২১51501
  • @ দেবব্রত।
    এই ঘুম থেকে উঠেই নেটে একটু কুপ্পাম প্রজেক্ট নেড়ে চেড়ে দেখলাম। এই মিনিট দশেক। ও টুকুই জ্ঞান।

    যা "পড়ে" বুঝলাম নব্বইএর শেষ নাগাদ খুব অল্প জমি (১৭০ একর) নিয়ে একটা তিন Phaseর প্রজেক্ট করেন চন্দ্রবাবু, একটি ইজরেইলি কোম্পানীর সাথে। তাতে চুক্তি চাষ ছাড়াও ড্রিপ ইরিগেশনের একটা পাইলট প্রজেক্ট নেওয়া হয়।

    পরে আরো দশ হাজার একরে ঐ চুক্তি চাষ করবার প্ল্যান করা হয় কিন্তু চাষীদের আদৌ কোনো উৎসাহ ছিলো না। প্ল্যানের ১০% ও অ্যাচিভ হয় নি। ফলে চাষী, অন্ধ্র গর্মেন্ট ও ইজরেইলি কোং - তিন জনেরই প্রচুর টাকা নষ্ট হয়ে প্রকল্পটি মায়ের ভোগে যায়।

    এটাকে ঠিক কনট্রাক্ট ফার্মিং'র অবশ্যম্ভাবী ফলাফল বলা যায় ?

    অন্ধ্র, করনাটক, ছত্রিশগর, পাঞ্জাব আর এখন পশ্চিম বংগ। এরাই কি একমাত্র স্টেট যারা কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করছে? সেও তো প্রায় ২৫ বছর হয়ে গেলো। এখন পর্যন্ত্য রেজাল্ট কি রকম? সেটা জানা গেলে তো আর শুধু থিওরী নিয়েই ভাবতে হয় না। না কি এটি আরেকটি বিটি কটনের মতন কেস?
  • sm | 53.251.88.202 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৫51502
  • তাহলে, পেপসিকোর সঙ্গে চুক্তি করে ভালো কি বলেন? নীলকর সাহেব দের ও প্রথম প্রথম দয়ালু লাগতো।
    কয়েক বছর পরে-"হামি ঠুমাকে ডাডন দিয়েছি;টুমি নীল চাষই করিবে।"
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৮51503
  • আমাদের রাজ্যে এইরকম চাষযোগ্য জমি আজকাল আর অনাবাদী পড়ে থাকেনা । উল্টে আপনি যদি বাসন্তী হাইওয়ে দিয়ে ক্যানিং এর দিকে যান দেখবেন বিঘার পড় বিঘা ধান চাষের জমি মাছের ভেড়ীতে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে । জমি বুঝে বিঘা প্রতি লীজের টাকা গুনে জমির মালিক হয় অন্য কাজ করছেন অথবা চাষ থেকে আয় কম বলে মাছচাষীদের হাতে ধানের জমি তুলে দিচ্ছেন । প্রতি বিঘা চাষে যদি ৫০টি প্রত্যক্ষ শ্রমদিবস প্রয়োজন হয় তা মাছ চাষে প্রয়োজন হয় ১০-১৫টি ।

    আপনি যদি রাজারহাট/নিউটাউনের সকালের লেবার মার্কেটে একটু সার্ভে করেন -দেখবেন তাঁদের ৯০% এই সমস্ত মাঠের কাজ হারিয়ে শহরে জোগালের কাজ খুঁজতে আসা কৃষি শ্রমিক ।

    আর জমির মালিক যিনি নিজে বাইরে থাকেন ,চাষে ইনভেস্ট করেননা ,চাষে যুক্তও নন অথচ জমিতে নিযুক্ত চুক্তি চাষির থেকে(বর্গাদার টাইপ ) কিছু রেভেনিউ পেয়ে থাকেন তার পক্ষে কর্পোরেটদের সাথে চুক্তি করে লাভ টা হবে কি করে ? প্রথমত তার জমি চাষ করবে কে ? সেই ভাগচাষী ? জমির মালিক থাকবে বিদেশে, চাষ করবে ভাগচাষী , কর্পোরেট ফসলের গুনমান ,ঋণের টাকা ,সময়মত সরবরাহের জন্য কাকে ধরবে ?

    তবে R&D এর নামে কর্পোরেট বিপুল জমি লীজে নিচ্ছে যদিও মাত্র ৫০০/- প্রতি হেক্টরে সরকার ঢালাও সাপ্লাই দিচ্ছে ,তাও সেইখানে দেখতে পারেন ।
  • PT | 213.110.242.8 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪১51504
  • নীলকর সাহেবেদের প্রথমে "দয়ালু লাগত" এমন কোন তথ্য আছে কারো কাছে? আর নীলকর সাহেবদের সময়ে নীলকর সাহেবরাই দেশ চালাত-কাজেই তখন ব্যাপার স্যাপার অন্য রকম ছিল।

    মহারাষ্ট্রে ২০০১-২০১৫ তে ২০,৫০৪ চাষী আত্মহত্যা করেছে।
    এসব কি চুক্তি চাষের জন্যে হয়েছে?

    http://www.thehindu.com/news/national/other-states/maharashtra-saw-3228-farmer-suicides-in-2015/article8103696.ece
  • sm | 53.251.88.202 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৬51505
  • মানতে পারলাম না, দেবব্রত।পব তে 500 টাকা হেক্টর চাষ যোগ্য জমি কেউ ছাড়বে? বহুজাতিক যদি ছত্তিশগড়ে এমন জমি পায়,তাহলে পব তে আসবে কেন? নিশ্চয় ছত্তিশ গড়ে অনেক কিছুই অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
    যদি সিঙ্গুরে আলু চাষ করতে নামে বা ভাঙ্গরে সবজি- তাহলে জমির দাম ও সেইরকম হবে।
    আপনি বাসন্তী হাই ওয়ের দুধারের কথা বললেন।ওখানে ভেরি একটি শিল্প। পব র সব জেলায় এমন ভেরি সম্ভব নয়।
    আমি যদি জমির মালিক হই- চুক্তি পত্রে- চাষ করার টাকা বহুজাতিক কে দিয়েই মেটাবো।তাতে রাজি হলে চুক্তি হবে; নচেৎ নয়।চুক্তি টাই আসল।চাষি খালি শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য মজুরি পাবে।
    আমার মতো বহু লোকের এমন জমি আছে।যেখানে মালিক ও চাষি দুজনেই ইন্টারেস্ট হারিয়েছে।
    কারণ মালিক প্রথম প্রথম লাভ করতো- পরের দিকে স্থানীয় নয় বলে ফসলের ভাগ ও দাম দুই ই নানা বাহানায় কম পেতো/পায়।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:০৬51506
  • ডিডি দা ,আপনার প্রশ্ন ছিল " তখন কি অ্যাতো চুক্তি চাষ ছিলো ? বা আদৌ ছিলো ?" তা সেই প্রশ্নের উত্তরে কুপ্পাম প্রজেক্টের উল্লেখ । যে হ্যা মডেল /ট্রায়াল চলছিল । দেখুন সেই পোস্টেই লিখেছি " অন্ধ্রের তিনটে জেলার চুক্তি চাষ নিয়ে Venkateshwarlu and Corta (2001) একটা ডিটেল স্টাডি করেছেন । তা ছাড়াও The commission on Farmer’s ওয়েলফেয়ার এর ১৪৬ পাতার রিপোর্ট তো থাকলোই । উল্লেখ্য সেই রিপোর্ট কোন ব্যাগরাবাদীর প্রস্তুত করেনি ,উল্টে সরকার নিজে বানিয়েছে আর রিপোর্ট টি থিয়োরিও নয় পলিসির বাস্তব প্রয়োগ এবং তার ফলাফল নিয়ে লেখা ।

    আপনেরা কেবল চুক্তি চাষ এ মনোনিবেশ না করে যদি সামগ্রিক পলিসি চেঞ্জের বিষয়টি দেখেন যেমন

    1, কর্পোরেট কে মার্কেট কমিটির নিয়ন্ত্রণ ছাড়া নিজস্ব মার্কেট খুলতে দেওয়ার অধিকার ।
    2, সরাসরি কৃষকের থেকে যে কোন পরিমান শস্য কেনবার ,বেচবার ,ষ্টক করবার এবং প্রক্রিয়াকরণের অধিকার
    3, চুক্তি চাষের অধিকার
    ৪, বিপুল পরিমান সরকারী ,বেসরকারি জমি নামমাত্র মূল্যে কর্পোরেটদের দেওয়ার অধিকার
    ইত্যাদি ইত্যাদি ,এবং এই ভাবে ভারতের কৃষিক্ষেত্র যা এতদিন পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থার বাইরে ছিল তাকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার গ্র্যান্ড প্ল্যানের সামগ্রিক চিত্র পাওয়া সম্ভব । চুক্তি চাষ কৃষিকে পুঁজির কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়ার একটা দিক মাত্র ।

    ভারতের ১৮টি রাজ্য এই নির্দেশিকা অনুযায়ী ,তাদের APMC অ্যাক্ট এবং জমি আইন সংশোধিত করেছে ,মূলত ২০০৩ সালের পর কেন্দ্রীয় মডেল আইনের বিভিন্ন ধারা বিভিন্ন রাজ্য বিভিন্ন পর্যায় মেনে নিয়েছে । আমাদের রাজ্য সমেত আরও কয়েকটি রাজ্য এই সংশোধন মানেনি -তবে তার ১৪ কলা পুর্ন হয়েছে তৃনমূলের হাত ধরে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে । চুক্তি চাষ এখনই সব রাজ্যে নেই তবে বাকি নির্দেশিকা মেনে বিভিন্ন পর্যায়ে কৃষিকে কর্পোরেটের প্লেটে সাজিয়ে দেওয়ার কাজকর্ম দ্রুততার সাথে চলছে ।
  • dd | 116.51.30.184 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৬51507
  • আচ্ছা, আচ্ছা। আমি আর আপনেকে প্রশ্নো করছি না।

    সবাই মিলে অ্যাতো প্রশ্ন করলে আপনি একা আর কতো উত্তর দেবেন। বাব্বা।
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৮51508
  • ৫০০ টাকা প্রতি হেক্টরে পশ্চিমবঙ্গে জমি পাওয়া যাবেনা ,এ কথা যথার্থ নয় । সিঙ্গুরে পাওয়া যাবেনা কিন্তু পুরুলিয়ায় পাওয়া যাবে । আমার জানা ৩০ টি চা বাগান আছে যেখানে সরকার যদি কেউ লীজ নিতে যায় উল্টে টাকা দেবে । যাই হোক চুক্তি চাষের এগ্রিমেন্ট রাজ্য অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন -একটা টিপিক্যাল এগ্রিমেন্ট থাকলো - দেখুন sm আপনার মনোমত প্রভিসন আছে কিনা । http://coopodisha.gov.in/PDF/pdfs/forms/FormXX0001.pdf (খোলা যাবে কিনা জানিনা )
  • Debabrata Chakrabarty | 212.142.91.41 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:২৩51509
  • h আপনি চুক্তি চাষের একটি টিপিক্যাল এগ্রিমেন্টের ফরম্যাট চাইছিলেন - একটা থাকলো http://coopodisha.gov.in/PDF/pdfs/forms/FormXX0001.pdf
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন