এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ডন কুইকহোটের যুদ্ধ

    রৌহিন লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৩ নভেম্বর ২০১৬ | ৭২০ বার পঠিত
  • কালো টাকার বিরুদ্ধে “জাতীয় জেহাদ” চতুর্থ দিনে পা দিল। প্যান্ডেমোনিয়ম অব্যাহত। মানুষ রেগে যাচ্ছেন, আবার অনেকে এটা সাময়িক অসুবিধা যাকে বৃহত্তর স্বার্থে মেনে নেওয়া যায় বলে নিজেদের সংযত রাখছেন। মোদীভক্তেরা ধন্য ধন্য করছেন একটা সাহসী পদক্ষেপের জন্য – আর মোদী এপোলজিস্টরা ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন নতুন কারণ খুঁজে বার করছেন কেন এ কাজ সেরা তা প্রতিষ্ঠা করতে। এই সব নিয়ে চতুর্দিকে আলোচনা হচ্ছে – এখানে আরো একটা সরেস আলোচনা হতেই পারতো – কিন্তু আপাততঃ আমরা কিছু মুখরোচক অংশ বাদ দেব।
    ঘটনা হচ্ছে মানুষ বেশ ভালোমত অসুবিধায় পড়েছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বা আদিবাসী ইত্যাদিদের কথা ছেড়েই দিলাম সাধারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণীও অসুবিধা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। কিন্তু এটাও ঘটনা যে অনেকেই সেই অসুবিধা মেনে নিচ্ছেন কারণ তারা মনে করছেন এর সাথে দেশের বৃহত্তর স্বার্থ জড়িত। কালো টাকা এবং জাল নোট উদ্ধার হলে দেশের অর্থনীতিতে তা একটা বড়সড় জোয়ার আনবে, সেই স্বার্থে এই কষ্টটুকু তারা মেনে নিচ্ছেন। কাজেই এই মূল দাবীগুলি নিয়ে একটু আলোচনা করাই এই লেখার উদ্দেশ্য।
    https://postimg.org/image/j924bg00z/
    ২২শে ডিসেম্বর ২০১৩, লোকসভা নির্বাচনের মাস তিনেক আগে নরেন্দ্র মোদীর টুইট। শুধু টুইট নয়, প্রচারে প্রচারে ভরে গেছিল, দেশের কালো টাকা, যা কোথায় আছে একটা বাচ্চাও জানে অথচ যা ফিরিয়ে আনার সাহস আজ পর্যন্ত কোন সরকারের হয়নি, এই ৫৬ ইঞ্চির মসিহা তা করে দেখাবেন। দেশের অর্থনীতিতে জোয়ার আসবে। প্রত্যেক গরীবের একাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা ঢুকে যাবে না চাইতেই। রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা হবে।
    এরপর সরযু, গঙ্গা এবং যমুনা, রাইন, দানিয়ুব এবং রোন দিয়ে অনেক গ্যালন জল বয়ে গেছে। সুইস ব্যাঙ্কের সেই কালো টাকা নিয়ে এখন আর কেউ কিছু বলে না। ও হ্যাঁ – মাঝে অমিত শাহ একবার জুমলা বলেছিলেন। তা বেশ – কি আর করা। কিন্তু এবার আবার মসিহার ৫৬ ইঞ্চি পেশী ফুলে উঠেছে – ডন কুইকহোটের মতই আবার তিনি যুদ্ধে চলেছেন। এবার কালো টাকা নামক মহাশত্রু নিপাত না হয়েই যায় না। তার জন্য দেশবাসীকে একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে – কী আর করা। সাঙ্কো পাঞ্জারা ঠিক বুঝিয়ে বলবে সব্বাইকে। আজকের কষ্ট কালকের ভালোর জন্যই কে না জানে। দু-দিনের তো ব্যপার – আচ্ছা না হয় পঞ্চাশ দিনই হল। যুদ্ধ চলছে – এসব তো হতেই পারে একটু।
    ডন কুইকহোটের কথাটাই বারবার মনে পড়ে যায়। যুদ্ধটা কার বিরুদ্ধে? কালো টাকা? যে টাকা দেশেই নেই – ওনার নিজেরই স্বীকারোক্তি অনুযায়ী? যাদের অর্থনীতি এবং কালো টাকার ভূমিকা সম্বন্ধে ন্যুনতম ধারণা আছে তারা সবাই জানেন যে কিছু লোকের কমোডে বা বিছানার তলায় যে নোটের বান্ডিল থাকে, যা ইনকাম ট্যাক্স গিয়ে মাঝে মাঝে ধরে থাকে, সে টাকাকে কালো টাকা বলা হয় নেহাৎই গৌরবে, এবং তা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রায় কোন প্রভাবই ফেলেনা। হ্যাঁ আমরা ওটাকেই কালো টাকা বলে ভাবি এবং এই লোকগুলো জব্দ হলে খুশী হই। কিন্তু এই লোকগুলোকে জব্দ করতে গিয়ে নিজেরাই জব্দ হয়েও দিনের পর দিন খুশী থাকতে পারব তো? যারা এরকম জমিয়ে রাখে, তারা কালো টাকার বাজারে মূলতঃ চুণোপুঁটি এবং তারাও কিন্তু অধিকাংশই এই টাকার কোন না কোন ব্যবস্থা করে ফেলেছেন – কিছু লস হলেও পুরোটা যাতে না হয়, তার। এমন কি সরকারও ঘুরপথে তাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা রেখেই দিয়েছেন – যেমন আগেভাগে গোপনে জানিয়ে দেওয়া, মন্দিরে প্রদেয় টাকাকে করের বা অনুসন্ধানের আওতায় না রাখা – এই সব। কারণ এদের টাকায় রাজনৈতিক দলগুলি চলে – এদের একেবারে হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিলে মোদীবাবুদেরও চলবে না। প্রকৃত কালো টাকার সামান্য দেশের বাজারে খাটে – এবং এর অধিকাংশই ক্যাশে নয়। বে-আইনী ব্যবসা, বে-আইনী লেন দেন ইত্যাদির মাধ্যমে বাজারেই রোল হতে থাকে। অর্থাৎ একটা ব্যপারে নিশ্চিত হতে পারি, ডনের ঘোড়া যতই ছুটুক, কালো ধন পকড়না মুশকিল হি নেহি ----
    এবারে জালি নোট। রাতারাতি ১০০০/- ৫০০/- র নোট বাতিল – অতএব এই সব জাল নোটও বাতিল। কী আনন্দ! দাদা একবার ব্যাঙ্কে ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখুন – একটা ব্যাঙ্কেও জাল নোট ধরার মেশিন চালু নেই – এই ভীড়ে জাল নোট ধরতে গেলে জনতার প্যাঁদানি একটাও বাইরে পড়বে না। যার যা খুশী নোট দিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে সে তো গেল ছোটখাটো টেকনিকাল লুপহোল – নীতিটাতেই যে বিসমিল্লায় গলদ রয়ে গেল! কালো টাকা এবং জাল নোট আটকাতে গিয়ে ছোটর বদলে বড় ডিনোমিনেশনের কারেন্সি! মহম্মদ বীন তুঘলকও এটা ভেবে উঠতে পারেন নি! এভাবে উনি জাল নোট আটকাবেন? খানিক হাইপ তোলা হল – নতুন নোটে এই থাকবে, সেই থাকবে, জিপিএস ট্র্যাকার থাকবে – সাঙ্কো পাঞ্জারা বাড়াতে বাড়াতে গপ্পের গরুকে গাছে তুলে দিল। ফল হল এই যে লোকে খোরাক করা শুরু করল এবং সবটাই যে নির্জলা মিথ্যা তা মানুষ আগেই ধরে ফেলল। ফলশ্রুতি, অনেকে এখনো আসল ২০০০ এর নোট দেখেন নি – কিন্তু তার নকল বাজারে বেরিয়ে গেছে। জাল নোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ!
    এখন কথা হচ্ছে এই বালখিল্য ঠাট্টাগুলো জনগণের সঙ্গে করাই যায়, কারণ মানুষ বোকা – নেতা বলছেন যুদ্ধ হচ্ছে অতএব নিশ্চই হচ্ছে – অন্ততঃ সাময়িক ভাবে এটা বিশ্বাস করানো যায় বেশ কিছু মানুষকে। কিন্তু প্রশ্নটা অন্য জায়গায়। প্রথমতঃ মোদী বা বিজেপি কি রাজনৈতিক দল হিসাবে এতটাই কাঁচা যে এই সহজ হিসাবটা তারা বুঝবে না যে এসব ঢপের চপ একদিন না একদিন ধরা পড়বেই এবং তখন মানুষ এই সব ভোগান্তির সুদে আসলে হিসাব বুঝে নেবেন? দ্বিতীয়তঃ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা ভারতীয় অর্থনীতির নিয়ন্ত্রকেরা কি এই বেসিক বিষয়গুলো বোঝেন নি? এই ক্যাওস সৃষ্টি হতে পারে এটা প্রেডিক্ট করতে পারেন নি?
    দুটো প্রশ্নের উত্তর সম্ভবতঃ একই জায়গায় নিহিত – এই ডন কুইকহোট মার্কা যুদ্ধ যে কালো টাকা বা জাল নোটের বিরুদ্ধে নয়, এটা তো সিদ্ধ – কিন্তু তাহলে প্রকৃত কারণটা (বা কারণগুলি) কি বা কি কি? কয়েকটি কারণ অনুমান করাই যায় যেগুলি ওপরের দুটি প্রশ্নেরই জবাব দিতে সক্ষম – অর্থাৎ এনোমালি বিহীন। এই কারণগুলো বিভিন্ন জায়গায় আলোচিতও হয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে। আমরা কারণগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি – প্রথমতঃ রাজনৈতিক দল হিসাবে বিজেপির বাধ্যবাধকতা, দ্বিতীয়তঃ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অর্থনীতিবিদদের বাধ্যবাধকতা এবং তৃতীয়তঃ উভয় পক্ষের (মোদী এন্ড কোং এবং অর্থনীতিবিদ) সাধারণ মোটিভ।
    বিজেপির এবং মোদীর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাঃ মোদী সরকার সামগ্রিকভাবে দেশ চালানোয় ব্যর্থ এটা যত দিন যাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কাশ্মীরে বিগত চার মাস ধরে সাধারণ নাগরিকদের ওপর গুলি, পেলেট চলছে প্রায় রোজ – হতাহতের সংখ্যা নিয়ে এখন আর খবরও হয় না। উরিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফোকর গলে উগ্রপন্থী হানা, এবং তার “বদলা”র নামে সার্জিকাল এটাকের গপ্প ফেঁদে বিশ্বের কাছে মুখ পোড়ানো, ব্রিকস সম্মেলনে পাকিস্তানকে কোনঠাসা করার প্রশ্নে মোদীর কূটনৈতিক ব্যর্থতা, কানহাইয়া কান্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই নাজীবের অপহরণ এবং তাতে এবিভিপির জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা, রোহিত ভেমুলা, মহম্মদ আকলাখ সহ অজস্র মুসলমান ও দলিতের অকারণ মৃত্যু, সিমি সদস্যদের ফেক এনকাউন্টার ঘিরে অস্বস্তিকর প্রশ্ন – তালিকা দীর্ঘতর করাই যায়। এসবের থেকে জনতার মুখ ঘোরাতে হলে দরকার ছিল একটা ড্রাস্টিক স্টেপের – একটা ডেসপারেট মুভের – যাতে পরবর্তী কয়েকদিন, বেশ কয়েকদিন জনতার মনোযোগ এসব থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া যায়। অতএব দেশপ্রেমের নেশায় বুঁদ দেশবাসীকে একটু উত্তেজনার খোরাক দাও – ডন কুইকহোটের মত ঘোড়া ছুটিয়ে। এক্ষেত্রে বিজেপি একটা ক্যালকুলেটেড রিস্ক নিয়েছে। এই মুহুর্তে উত্তরপ্রদেশের ভোটে এটা দিয়ে বাজীমাত করার চেষ্টার পাশাপাশি তারা জানে, এই যুদ্ধ যে নেহাৎই ফাঁকা আওয়াজ, তার পক্ষে যথেষ্ট অর্থনৈতিক এভিডেন্স জোগাড় করতে আরো অন্ততঃ তিন থেকে চার বছর – ইতিমধ্যে তা-না-না-না করে ২০১৯ এর নির্বাচনী বৈতরণী পার করে দেবার একটা ভালো সম্ভাবনা থাকছে। তারপর ধরা পড়লে পাবলিক কত আর খিস্তাবে? নির্বাচিত সরকার আফটার অল। এই সঙ্গে যোগ করুন নরেন্দ্র মোদীর আত্মম্ভরীতা। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে এরকম একটা ড্রাস্টিক পদক্ষেপ নিয়ে তিনি ইতিহাসের পাতায় অমর হতে চান। ইতিহাসে মোদীর নাম থাকবে অবশ্যই। ভিলেন হিসাবে। ভারতের অপদার্থতম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে।
    রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং অর্থনীতির বাধ্যবাধকতাঃ যতই ভারতীয় নেতারা “মেক ইন ইন্ডিয়া”, “স্বচ্ছ ভারত” বা “আচ্ছে দিন” এর বুলি ঝাড়ুন না কেন, ভারতীয় অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা খুব একটা সুবিধার নয়। ব্যাঙ্কগুলো অনাদায়ী ঋণের ভারে জর্জরিত (যার সিংহভাগ হল সেই কালো টাকা যা এদেশে নয়, বিদেশের বাজারে খেলা করে অথবা সুইস ব্যাঙ্কের মর্গে নিদ্রিত থাকে), ফলে প্রত্যেকের ক্যাশ ফ্লো তলানিতে। সরকার ভর্তুকি এবং অনুদান দিয়ে দিয়েও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হচ্ছে না। এই অবস্থায় এরকম একটা মেজার এক ঢিলে একাধিক পাখি মারতে সক্ষম – যেমন এর ফলে সাধারণ মানুষের যে টাকাগুলো ৫০০/- ও ১০০০/- এর ডিনোতে বাজারে খাটছে তার প্রায় সবটাই ব্যাঙ্কে জমা করিয়ে নেবার একটা পথ পাওয়া গেল – ব্যাঙ্কগুলোয় ইমিডিয়েট ক্যাশ ফ্লো সামাল দেবার জন্য। দ্বিতীয়তঃ এর ফলে কয়েকদিনের (প্রকৃত বিচারে কয়েক মাস) জন্য যে ফিনান্সিয়াল ক্যাওস তৈরী হল, তা ক্যাশ ট্রানজাকশনকে ব্যাহত করতে বাধ্য (যা আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছি) এবং এর ফলেও ব্যাঙ্কের ক্যাশ ফ্লো ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তৃতীয়তঃ এভাবে প্রায় জবরদস্তি প্লাস্টিক মানি ও ই-মানির লেনদেন বাড়িয়ে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী স্তরে ক্যাশ ট্রানজাকশন কমিয়ে আনাও সম্ভব (এই শেষ কারণটা কেন খারাপ তা পরে আলোচনা করছি)। ফলে, যা স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ডিসিপ্লিনের সাহায্যে দশ বছরে করা যেত, তা ঘুরপথে প্রায় স্টেরয়েড ইনজেক্ট করার মতই একদিনে করিয়ে দেওয়া গেল মানুষকে দিয়ে। বাধ্য করিয়ে। সরকারী মদতে।
    অর্থনীতি এবং রাজনীতির যৌথ বাধ্যবাধকতাঃ সার্ত্রঁর সেই নাটকটা মনে পড়ে যাচ্ছে। ডানপন্থী হোক বা বামপন্থী, চরম বা নরম, ক্ষমতায় যে-ই আসুক, তাদের একটা মীটিং করতে হত আগে দেশের কর্পোরেটদের সঙ্গে। নীতি নির্ধারণ তারাই করত – সরকারের কাজ শুধু সেগুলোকে এক্সিকিউট করা। এখানেও তাই চলে। প্লাস্টিক মানি, ই-মানি যত দ্রুত চালু হবে, দেশে কর্পোরেটদের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ তত দ্রুত জোরদার করা যাবে। খোলা বাজারে ক্যাশে যে লেনদেন হয় তা অনেক সময়েই সরকারের মত কর্পোরেটদেরও নিয়ন্ত্রণে থাকে না, স্বাভাবিক নিয়মেই। লোকে বারিস্তাতে কার্ডে পেমেন্ট করার বদলে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে কফি খায় হামলে পড়ে, বিগ বাজার থেকে না কিনে দিব্যি সকালবেলা ধাপায় চলে যায় ফুলকপি কিনতে। ক্যাশ ট্রানজাকশন কমে গেলে এই বাইং প্যাটার্ণকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক বেশী সহজ। তার চেয়েও বেশী সহজ পুরো বাজারটাকে সোর্স থেকে কব্জা করা। বিক্রীবাটা না হলে চাষীর সমূহ সর্বনাশ – যে সামান্য টাকা তারা পায় (যে কোন কৃষিজাত পণ্যের বাজার মূল্যের পাঁচ শতাংশেরও কম সাধারণতঃ) সেটুকুও না পেলে একটা সাঙঘাতিক ক্রাইসিস তৈরী হবে – যা থেকে তাদের বাঁচাতে দেবদূতের মত এগিয়ে আসতে পারে দেশী বিদেশী কর্পোরেট সংস্থাগুলি – যারা চাষীকে লাভজনক চাষ করা শেখাবে, তাকে আগের থেকে বেশী দাম দেবে সব্জির (অসুবিধা নেই তো – পাঁচ শতাংশের ডবল হল দশ শতাংশ), এবং সব সবজি তারাই কিনে নেবে। চাষী চাইলেও অন্য কিছু চাষ করতে পারবে না, অন্য কোথাও বেচতে পারবে না, খোলা বাজারের সুবিধা পাবে না। চুক্তিচাষ। এবং যতদিনের চুক্তি, ততদিন মুক্তি নেই – করতেই হবে। জমির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হলে কিছু বলতে পারবে না – চুক্তি শেষ হলে যারা ছিবড়ে হয়ে যাবে তারা পড়ে থাকবে পথে ঘাটে। যারা আনস্কিলড অথবা কোন জমির ওপর ভর করে বিকল্প রোজগার করে (যেমন ধরুন বাড়ির বউরা মুরগি পোষে বা ছেলেরা ছাগল চরায়) তারা নো হোয়ার হয়ে যাবে – চুক্তিচাষের জমিতে এসব কিছুই চলবে না। ই মানি মানে রাস্তার ধারের দোকানে চা খাওয়া ভুলে যান, পাইস হোটেলে আয়েশ করে দুপুরের মাছ ভাত ভুলে যান। এদের কার্ড নেবার ব্যবস্থা নেই। আপনার বাড়ির পাশের বাজারে মাছের জোগান নেই কারণ ক্যাশ নেই – মাছ চলে গেছে স্পেন্সারের ফ্রীজে শোভা পেতে। ১৪০ টাকার রুই ৩০০ টাকা দিয়ে কিনুন – চাপ কি, পয়সা তো পকেট থেকে বেরোচ্ছেই না – কার্ড সোয়াপ করলেই সব সুন্দর। এবং এই কর্পোরেটদের একটা অংশই অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক। অন্যরকম কেউ বললে তাকে সরতে হয়। যেমন রঘুরামণ রাজনকে হয়েছে। কারণ তাকে দিয়ে এই পর্বত প্রমাণ হঠকারিতা করানো যেত না। রঘু আগে বিভিন্ন প্রসঙ্গে ডিমনিটাইজেশন কেন ভারতে বাস্তব সম্ভাবনা নয় সে সম্বন্ধে বলেছেন। সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবার পর তিনি বাজার গরম করতে কোন বিরূপ মন্তব্য করবেন সেটা তাঁর চরিত্রের সঙ্গে যায় না। ফলে তাঁর সংযত মন্তব্যকে তাঁর মতামত বলে ভেবে নেওয়ার কোন কারণ নেই।
    অতএব দাঁড়ালো এই যে আমি আপনি সাময়িক কষ্ট করছি – আমি আপনি মানে তারা, যে ৩৩% মানুষের একটা অন্ততঃ ঠিকঠাক ব্যাঙ্ক একাউন্ট আছে, কোন না কোন পরিচয় পত্র আছে এবং ব্যাঙ্কটা মোটামুটি কষ্ট করে বা না করে পৌঁছানো যায়। আর এর বাইরে থাকা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতা, যাদের অস্তিত্বকেই রাষ্ট্র অস্বীকার করে, তাদের কষ্টটা ঠিক সাময়িক নয় – দীর্ঘস্থায়ী, এবং বহু ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী। কিন্তু কিসের জন্য? দেশপ্রেমের নেশার ঘোর কেটে গেলে দেখবেন, হাতে রইল পেনসিল। ডন কুইকহোট আর সাঙ্কো পাঞ্জা ফাঁকা মাঠে দৌড়চ্ছে। আর আমরা হাততালি দিতে দিতে হাতটাই ক্ষইয়ে ফেলেছি। #আচ্ছেদিন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৩ নভেম্বর ২০১৬ | ৭২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রৌহিন | 233.223.132.150 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৩54788
  • এক বন্ধু ধরিয়ে দিলেন - উচ্চারণটা কুইকহোট নয় - কিহোতে। আমি ছোটবেলায় কুইকজোট পড়েছিলাম - পরে কুইখোটটই জেনে এসেছি - সেটা ভুল। এখানে সংশোধন করতে হলে পুরো লেখাটা মুছে আবার দিতে হয় তাই এখানেই ডিসক্লেইমার দিয়ে রাখলাম। বিদেশী নামের বাংলা উচ্চারণে একটা বেনিফিট অফ ডাউট তো পাওয়াই যায়
  • somen basu | 113.44.157.81 (*) | ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:৪৪54789
  • এইটাই চাইছিলাম। খুব ভালো লেখা। উদ্দেশ্যগুলো ঠিক ধরা না গেলে মনটা খিচখিচ করছিল।
    কৃষি অর্থনীতিটা মেন টার্গেট, এটা বোঝা যাচ্ছে। আর এই অংশটাই ভারতের অর্থনীতির একটা বড় অংশ, এবং প্রায় পুরোটাই অসংগঠিত।
    আচ্ছা, বাই দ্য ওয়ে, আজ দেখলাম, কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কদের এই ৫০০-১০০০ এর নোট বদলাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বারণ করেছে। এর কারণটা বলতে পারেন? মতলবটা?
  • ট্রিডিঙ্গিপিডি | 131.241.218.132 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:০৫54790
  • এনজিসি যে ঢপ সেটা কিন্তু সবাই বোঝেনি। অন্য টইয়ে কমেন্ট দেখলাম, নিজেও কিছু লোকজনের কাছে শুনেছি - এমন লোক যাদের টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান টিভি সুইচ অন-অফ করায় সীমাবদ্ধ। যেহেতু ব্যাপারটা টিভি চ্যানেলে বলা হয়েছে, এবং একাধিকবার এখানে ওখানে তোলা হয়েছে - সেহেতু ব্যাপারটা সত্যিই হবে - এরকম একটা ধারণা। এর মধ্যে টিভিতে দেখানোটা মুখ্য কারণ।

    আরে সাধারণ লোক ছাড়ান দ্যান, আইটি গাই - টেকনোলজিস্ট - তারাও বিশ্বাস করে বসে আছে, অন্ততঃ কয়েকজনকে দেখলাম যারা জোর গলায় অবিশ্বাস করতে পারছে না।
  • ট্রিডিঙ্গিপিডি | 131.241.218.132 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:০৮54791
  • আর অন্য একটা কসমেটিক কমেন্ট - আলাদা কারণগুলোর জন্যে একটু প্যারাগ্রাফ ব্রেক দিলে পড়তে সুবিধা হয়।
  • de | 69.185.236.54 (*) | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৮:৪০54792
  • ভালো লেখা - যথাযথ অ্যানালিসিস!
  • রৌহিন | 113.214.139.217 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৫:৫৬54796
  • ব্যক্তিগতভাবে আমার আপত্তি নেই। আমিও পাই এর সাথে একমত - "গুরুচন্ডা৯ র ব্লগ থেকে" কথাটা উল্লেখ থাকলেই হল।
    দেখতে একটু দেরী হয়ে গেল - আমি আপনাকে মেইল করে দিচ্ছি।
  • B | 127.194.32.59 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:৩৫54793
  • রৌহিন,
    আপনার এই লেখাটি কোন পত্রিকায় আপনার নাম দিয়ে ছাপানো যাবে কিনা দয়া করে জানাবেন। অবশ্যই গুরুচণ্ডালি কর্ত্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে।

    এ পোস্টটি চোখে পড়লে দয়া করে একটু তাড়াতাড়ি জানাবেন।

    ট্রিডিঙ্গিপিডি-র অনুরোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমি আপনার লেখাটিকে কয়েকটি অনুচ্ছেদে ভাগ করে সাজিয়েছি। সেই সাজানো লেখাটির ব্যাপারে অনুমতি দেওয়ার বা না দেওয়ার জন্যও ওটি আপনার একটু দেখে নেওয়া দরকার। আমার মেল আইডি [email protected]এ জানালে আমি আমার মত করে অনুচ্ছেদে সাজানো লেখাটি আপনার কাছে পাঠিয়ে দেব।
    *********
    ঈশান -
    অনুমতি দিলে ব দিলে না কিনা, সেই ব্যাপারে তুমিও তোমার মতামত জানিও দয়া করে। সামনের পাতায় দিলেও অসুবিধে নেই।
    *********
    ধন্যবাদ
  • B | 127.194.32.59 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:৩৬54794
  • বা
  • pi | 37.63.191.106 (*) | ১৭ নভেম্বর ২০১৬ ১০:৩০54795
  • রৌহিন এর আপত্তি না থাকলে দিতেই পারেন। গুরুচণ্ডালির ব্লগে প্রকাশিত উল্লেখ করে দিলে ভাল হয়।
  • আরূ | 116.51.19.86 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১৯54799
  • হরিশঙ্কর পরসাই ১৯৫৭ তে লিখেছিলেন, এই প্রসঙ্গে শেয়ার করা প্রয়োজন মনে হল। -

    "तुम्हारे प्रधानमन्त्री में यह अदा है। इसी अदा पर तुम्हारे यहाँ की सरकार टिकी है, जिस दिन यह अदा नहीं है या अदाकार नहीं है, उस दिन वर्तमान सरकार एकदम गिर जाएगी। जब तक यह अदा है, तब तक तुम शोषण सहोगे, अत्याचार सहोगे, भ्रष्टाचार सहोगे - क्योंकि तुम क्रोध से उबलोगे, तुम्हारा प्रधानमन्त्री एक अदा से तुम्हें ठंडा कर देगा। तुम जानकार आश्चर्य होगा कि तुम्हारे मुल्क की सारी व्यवस्था एक अदा पर टिकी है।

    प्रधानमंत्री ने कहा - 'टैक्स दो'। और तुम देने लगे। प्रधानमंत्री ने कहा - 'बजट ठीक है'। तुमने कहा - 'बिलकुल ठीक है'। उनने कहा - 'दूसरी योजना के लिए त्याग करना पड़ेगा'। तो तुमने कहा - 'लँगोटी उतरवा लो।'

    और अब तुम्हारे प्रधानमन्त्री ने कहा कि दो साल बाद तुम्हारी हालत सुधर जाएगी।

    तुमने बात मान ली।

    तुम अदा पर मरते हो।"
  • B | 127.194.47.248 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০৫:১৮54797
  • ধন্যবাদ আপনাদের।

    "গুরুচণ্ডা৯"র নাম ও ঋণস্বীকারের উল্লেখের পূর্ব্বশর্তের কথা তো আমিই লিখেছিলাম। এই লেখা পুনরায় প্রকাশ করলে ও ব্যাপারটা অবশ্যই মাথায় থাকবে প্রকাশকদের।

    রৌহিন-এর মেল দেখে উত্তর দিচ্ছি।
  • ট্রিডিঙ্গিপিডি | 125.112.74.130 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:২৩54798
  • ওপেন সোর্স, ক্রিয়েটিভ কমনস ইত্যাদি:-p
  • রৌহিন | 238912.66.9003412.61 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:৫২54800
  • একঠ তুল্লাম - একবার ফিরে দেখার সময় এসেছে মনে হয়
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে প্রতিক্রিয়া দিন