এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রান্নাঘর ও রাজ্যপাট

    Durba Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৭৩২৫ বার পঠিত
  • কিছুদিন যাবৎ চেষ্টা করছিলাম লিঙ্গভিত্তিক শ্রমবন্টনের চিত্রটা বুঝতে।

    যত পুরোনো হচ্ছি কাজের বাজারে তত দেখছি ওপরের দিকে মহিলাদের সংখ্যা কমতে থাকছে। কর্পোরেট সেক্টরে প্রায়শই সংখ্যা দিয়ে দেখানো হয় অনেক মেয়ে কেরিয়ার শুরু করলেও মাঝপথে ছেড়ে যাচ্ছেন বা কোনো রকমে চাকরি বজায় রাখতে পারলেই সন্তুষ্ট থাকছেন। নতুন কিছু করার চেষ্টা করছেন না বা বাড়তি দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। ফলে কর্মক্ষেত্রে তারা পিছিয়েই থাকছেন।

    এদিকে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। গত কয়েক বছরে যৌন হেনস্থা নিয়ে মহিলারা মুখ খোলায় চারিদিকে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ক্ষমতাবান পুরুষরা তাতে আতঙ্কিত হয়ে মহিলাদের প্রায় একঘরে করে দিতেও উঠে পড়ে লেগেছেন। প্রায় শাঁখের করাত অবস্থা।

    মহিলা কর্মীদের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। আমরা মহিলারা শুধু টাকার লোভে কদিন অন্তর চাকরি বদলাই না। আমরা পুরুষদের চেয়ে কম কর্মক্ষমও নই। স্থায়ী কর্মী হিসেবে মহিলাদের নিয়োগ সেক্ষেত্রে লাভজনক হবার কথা। আর কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে যে কোনো বিষয়কে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ করে দেয়। তাই ইদানিং কর্মীদের মধ্যে বৈচিত্র্য বাড়াতে সংস্থাগুলিও মহিলাদের নিয়োগ বাড়াতে তৎপর হয়েছে।

    কিন্তু মহিলাদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ দেবার জন্য নিয়ম কানুন বা ব্যবস্থাপনায় কিছু রদবদল ঘটানো প্রয়োজন। সংস্থা ব্যাপী বদল ঘটাতে গেলে যারা এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন, তাদের মধ্যে মহিলাদের থাকা প্রয়োজন। বা বলা ভালো নেতৃত্বে মহিলাদের জোরালো উপস্থিতি প্রয়োজন। কিন্তু ওপরের দিকে মহিলাদের সংখ্যা ভীষণ কম হওয়ায় এই কাজটা হচ্ছে না। ফলে বহু মহিলা ভুগছেন।

    শুধু তাই নয়, বিশ্বব্যাপী যে ছবিটা পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে একই কাজের জন্য একই রকম কর্মক্ষম মহিলারা পুরুষদের চেয়ে কম পারিশ্রমিক পান। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয় যে মহিলারা নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে পা রাখতে চান না, বাড়তি দায়িত্ব নিতে চান না, বাড়তি সময় দিতে চান না, কোনো রকম ঝুঁকি নিতে চান না ইত্যাদি। মোদ্দা কথা হল কর্মক্ষেত্রে অগ্রসর হতে তেমন আগ্রহ দেখান না। আচ্ছা সত্যি কি তাই?

    আমার ষোলো বছরের কর্মজীবনে আমি যা দেখছি তা খানিকটা আলাদা। বেশির ভাগ মহিলাকেই পেশার বাইরে এতো বেশি দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হয় যে তারা আর পেরে ওঠেন না। আমি আমার নিজের ক্ষেত্রে দেখে আসছি গত দশ বছর ধরে আমার সঙ্গে একই প্রজেক্টে যারা কাজ করছেন তারা সবাই পুরুষ। তারা সবাই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসেন। বাড়িতে থাকা মহিলারা তাদের খাবার গুছিয়ে দেন। সন্ধের পরেও দীর্ঘ সময় অফিসে থাকতে তারা তেমন দ্বিধাবোধ করেন না। অফিসের পরে তারা জিমে যান, কখনো খেলতে, খেতে বা মদ্যপান করতে যান। কারণ তাদের কাউকেই বাড়িতে কোনো কাজ করতে হয় না। রান্না বা শিশুদের দেখাশোনা ইত্যাদি সবটাই তাদের গৃহ কর্ম নিপুণা স্ত্রীরা সামলান। এদের সহকর্মী হিসেবে এদের সঙ্গে তাল মেলাতে আমি হিমশিম খেতে থাকি। সন্ধে বেলা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য ছটফট করি। কারণ আমায় বাড়িতে এসে রাঁধতে হয়, বাচ্চার লেখাপড়া দেখতে হয়।

    আমার কিন্তু পুরুষ সহকর্মীদের চেয়ে নতুন কাজ শেখার বা করার আগ্রহ এতটুকু কম নয়। কিন্তু সব সময় মাথায় রাখতে হয় সংসার আর সন্তান সামলে তবেই কাজ করতে হবে। কর্মসূত্রে বেশ কিছু মেয়েকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তারা সবাই প্রায় আমার মতোই অতিরিক্ত পরিশ্রমে ক্ষয়ে যেতে যেতে নিজেদের স্বপ্ন গুলোকেই মেরে ফেলছে। প্রতিনিয়ত। দক্ষিণ ভারতে দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে দেখেছি নিচুতলার কর্মীদের প্রায় ৫০% মেয়ে। তারা যথেষ্ট শিক্ষিত, ভালো রোজগার করে, একাই একটা সংসার চালানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু তার পরেও বাড়ির লোকের মন জোগাতে রাত থাকতে উঠে বাড়ির সব কাজ, রান্না নিজের হাতে সেরে তবে অফিসে আসে। তাই অফিসে একটু সেজেগুজেও আসতে পারে না। শুধু তাই নয়, এর পরেও পান থেকে চুন খসলে তাদের ওপর অত্যাচার হয়।

    বিয়ের বাজারে এখনো পুরুষরা বড়লোক বাবার গৃহ কর্ম নিপুণা মেয়েকেই পছন্দ করেন। বিয়ের যৌতুক হিসেবে অনেক টাকা আর বিনা পারিশ্রমিকে খাটানোর মত বৌ পেলে ভালোই লাগার কথা। বৌ স্বনির্ভর হলে তার নিজস্ব মতামত থাকে। তাকে অত সহজে যা ইচ্ছে বোঝানো বা করানো যায় না যে।

    নেহাত মন্দা আর মূল্যবৃদ্ধি ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে, তাই আমরা কিছু মেয়েকে রোজগার করতে কাজে বেরোতে দেখছি। কিন্তু তাতেও কর্মক্ষেত্রে উন্নতিতে তাদের বাড়ির কেউ বিশেষ উৎসাহ দেন না। তার চেয়ে তাদের হাতের রান্নার সুখ্যাতি করেন। যে মহিলা সংসারে উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন, তাতে বাড়ির স্বার্থপর পুরুষরা মহত্ত্বের শিরোপা দিয়ে অন্য মেয়েদের বোঝাতে চান, মেয়েদের ঠিক এই রকম হওয়া উচিত।

    তাতে যদি আমার মত সমাজের সব নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখানো মহিলার সামনে পড়তে হয়, আঁতে কিঞ্চিৎ ঘা লাগে বইকি। আমার কিছু সহকর্মী আমায় সোজাসুজি বলেছেন, আমি ভারী পুরুষালি। তাই আমার বিয়ে যে টেঁকেনি, সেটাই স্বাভাবিক। অবশ্য আমার বিয়েটা টিঁকে গেলে আমিই হয়তো আর টিঁকতাম না। শুধু তাই নয়, প্রায়শই আমার সামনে তারা আলোচনা করেন, কেন মেয়েদের বাড়িতে থাকা ভাল ইত্যাদি। সুখী সংসারী মহিলারাও আমায় কিছু কম কথা শোনাননি। ঘরে ও বাইরে। কিন্তু এত কিছুর পরেও এই জীবনটা বেছে নেবার জন্য আফসোস হয়নি কখনো। রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়,

    "স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?
    দাসত্ব-শৃঙ্খল কে পড়িবে পায় হে, কে পড়িবে পায়?"

    বেশ কিছু মহিলাকেও দেখি বিষয়টাকে এই ভাবেই আত্মস্থ করে নিয়েছেন। তারা স্বামীকে ঘরের কাজ করতে দিতে চান না, রাঁধতে দিতে চান না, কারণ পুরুষরা নাকি ভালভাবে এই কাজ গুলো পারেন না। যারা পারেন না, তারা করতে করতে শিখে নেবেন। আমরা শিখতে পেরেছি, তারা পারবেন না কেন? আবার কিছু মহিলা নিজেরাই বাড়ির বাইরে রোজগার করতে যেতে চান না। মূলত তিনটি কারণে | ১. স্বামীর রোজগারে বাড়ির কাজ করানোর জন্য তিনি লোক রাখতে পারেন, তাই বাড়িতে থেকে আরাম আয়েশ করতে পারেন। ২. ঘরে আর বাইরে দুই শিফটে কাজ করাটা তারা পেরে ওঠেন না। ৩. আর কিছু মহিলা আছেন যারা সম্ভবত আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন

    পুরুষতন্ত্রে পুরুষ তার ক্ষমতা আর সুবিধার জায়গা এত সহজে ছেড়ে দেবে এমন আশা আমরা করি না। কিন্তু মেয়েরা? তারা তো ভুক্তভোগী। তারা কবে বুঝবেন? কবে বাড়ির বিনা পারিশ্রমিকের কাজের সমান বন্টনের জন্য আওয়াজ তুলবেন? আমরা চাইলেই হবে। আস্তে আস্তে হলেও হবে। তবু হবে। অন্তত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মেয়েদের আমাদের মত এত কষ্ট করতে হবে না।

    তথ্য সূত্র:

    https://www.payscale.com/data/gender-pay-gap

    https://www.ilo.org/asia/media-centre/news/WCMS_633284/lang--en/index.htm

    https://www.washingtonpost.com/posteverything/wp/2017/04/05/why-would-millennial-men-prefer-stay-at-home-wives-race-and-feminism/?noredirect=on&utm_term=.d95f51aa5a28

    https://www.cnbc.com/2018/04/10/heres-what-women-could-earn-if-household-chores-were-compensated.html
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৭৩২৫ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • স্বাতী রায় | 781212.194.5645.125 (*) | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৯65300
  • ব্রাভো - এই বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য। কি আলোচনা হয় শোনার অপেক্ষায় রইলাম।
  • Deera | 6789.15.456712.55 (*) | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৫০65301
  • এও একেবারে মনের কথা । আমি ও প্রায় আমার কলীগ দের সাথে কাজের পর পন ইত্যাদী তে যাই না, কারন আমাকে ঘরের কাজ ও করতে হয়।তবে ভারতের বাইরে ছেলেরাও সঙ্গসারে কাজে সমান হাত লাগায়, আর আমার পুরুষ সহকর্মী দের টিফিন আমি তাদের নিজেদের ই করে নিতে দেখেছি, তাদের অনেকের স্ত্রী রাই কিন্তু গৃহবধূ বা সেরকোম কোনো কাজ বাইরে করেন না। মানসিকতার পরিব্র্তন হয় বোধহয়। অনেক বানান বুল্ল হোলো, মাপ করবেন
  • deera | 6789.15.456712.55 (*) | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৫০65302
  • কাজের পর পাব
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৬65303
  • পুরোটাই পড়লাম। ইন্টারেস্টিং অবসার্ভেশন। কেবল শেষ অংকটা ঘেঁটে গেল। যৌক্তিকভাবে, মেয়েরা "ভুক্তভোগী" কেন? ভারতের ক্ষেত্রেই বলা হচ্ছে ধরে নিলাম, অধিকাংশ বিবাহিত মহিলাই তো গৃহবধূ। লেখিকার বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁরা ব্যাপারটা আত্মস্থও করে নিয়েছেন। তাহলে "ভুক্তভোগী" তো মহিলাদের সামান্য একটা অংশ। সামগ্রিকভাবে মহিলারা তো নন। তাঁরা তো বর্তমান ব্যবস্থাটা আত্মস্থই করে নিয়েছেন।
  • Amit | 9003412.218.7812.4 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৮65304
  • সে তো এক কালে মহিলারা সতীদাহ বা চির বৈধব্য কেও আত্মস্থ করে নিয়েছিলেন । তাহলে সেগুলোর প্রতিবাদ টাও ভুল ছিল রামমোহন বা বিদ্যাসাগর এর । তেনারা অন্য ভাবে ভাবতে বা ভাবাতে চেয়েছিলেন। তাই তো ?
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩১65305
  • আমি ভুল বলিনি তো। শুধু বলছি, যে, একটা ব্যবস্যথায় দি কেউ নিজেকে ভুক্তভোগী না মনে করে, সে ব্যবস্থাটা বদলাতে উদ্যোগী হবে কেন? নেহাতই লজিকাল প্রশ্ন। ঠিক ভুলের ব্যাপারই নয়।

    তবে কথা এল বলে সতীদাহ বা বিধবাবিবাহের তুলনাটাও করি। সতীদাহ ঠিক কতটা বিস্তৃত ছিল, সেই নিয়ে স্লাইট বিতর্ক আছে। সেটা বাদ দিয়ে যদি ধরে নিই সতীদাহের বিস্তার বিরাট ছিল, তাহলে, সেটাকে আত্মস্থ করা, এমনকি ধর্মীয় প্রভাব থাকলেও বেশ কঠিন। তীব্র উন্মাদনা না থাকলে অধিকাংশ মানুষই মরতে চায়না। ১৮০০ সালের মহিলারাও চাইতেননা, আন্দাজ করা যায়। ফলে, তুলনা করা মুশকিল।
  • Amit | 9003412.218.7812.4 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫১65306
  • ঠিক আছে । সতিদাহ ছেড়ে দেওয়া যাক। মূল পয়েন্ট যেটা বলতে চাইছি একটা জগদ্দল সমাজে বেড়ে ওঠা গেলে অনেকেই সিস্টেম কে মেনে নেয় লড়াই না করে। যেমন গৃহবধূদের গ্লোরিফাই করা, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, দলিত দের দাবিয়ে রাখা ইত্যাদি । এ সমস্ত ক্ষেত্রেই মানিয়ে নেওয়া মানেই কাজটা ঠিক অথবা তারা ভুক্তভোগী নন , এটা ভুল ধারণা । অন্য ভাবে ভাবাটাই বেশি দরকারি যাতে সিস্টেম টাকে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে এক সময় পাল্টানো যায়।
  • pi | 7845.29.343412.43 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৪65307
  • আমার তো মনে হয় গ্লোরিফিকেশন বন্ধ হওয়া নিয়ে কথা বলাটা খুব জরুরি। এনিতে কমফোর্ট জোনে থাকা নিয়েও, নইলে সেটাই আত্মস্থ বলে প্রোজেক্টেড হয়ে যায়, যেতেই পারে।
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১০65308
  • এটা কমপ্লিকেটেড ব্যাপার। ধরুন ডিভোর্সের মামলা। বাচ্চাকাচ্চা কার কাস্টডিতে যাবে, ইউনিভারসালি, বাই ডিফল্ট, মায়ের কাছে। কেন? অন্তর্নিহিত যুক্তিটি হল, সন্তানপালন মা ভাল পারে, বা মায়ের বেশি অধিকার। এটা যে গৃহকর্মে মেয়েদের বেশি দখল, এই ধারণার এক্সটেনশন, তাতে সন্দেহ নেই। এটার বিরুদ্ধেও কি লড়া দরকারমন্ করেন?
    একই কথা খোরপোশ ইত্যাদি নিয়েও। মানে ডিভোর্সের ক্ষেত্রে। সেটার বিরুদ্ধেও কি লড়া দরকার?

    লড়তে গেলে মুশকিল। বেশিরভাগ অংশকেই সংগে পাবেননা। আবার না লড়লে, একই কারণে গৃহবধূদের নিয়েও কিছু বলা যায়না। এবং সেখানে বললেও বেশিরভাগ অংশকেই পাবেননা।
  • Amit | 9003412.218.7812.4 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৩65309
  • তাহলে আপনার মত কি দাঁড়ালো ? যা চলছে সেটাই ভাল ? যেহেতু বেশির ভাগ প্রতিবাদী নন?
  • Amit | 9003412.218.7812.4 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৬65310
  • হ্যা । বাচ্চার কাস্টডি কেন শুধু মা পাবে , সেটাও জেনেরিক হওয়া উচিত নয় বলেই মনে করি । প্রতিটি কেস আলাদা । Not one size fits all scenario
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:২০65311
  • আমার মতে রাশিয়ান সিস্টেমটা ভাল ছিল। ক্রেশ, যৌথ রান্নাঘর, আট ঘন্টার কাজ।
    সন্ধ্যার পর দীর্ঘসময় কাজ করা, কর্পোরেট কালচার, গৃহশ্রমের গ্লোরিফিকেশন, কোনোটাই ভাল মনে হয়না। কিন্তু তাতে কী গেল আর এল। কোনোভাবেই কোনোটা আশু বদলাবে বলে তো মনে হয়না।
  • Amit | 9003412.218.7812.4 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৩২65312
  • আরে কেও কি আশা করছে এই হাজার বছরের জগদ্দল সিস্টেম পাল্টে যাবে রাতারাতি ? প্রশ্নগুলো তো তোলা যাক। ধাক্কা দেওয়া শুরু তো হোক । বদলাবে না এই ধারণা নিয়ে থাকলে হয়তো কিছুই বদলাতো না , কিন্তু পাল্টাচ্ছে ।
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:২০65314
  • নাঃ। ডিসপিউট হলে ডিফল্ট মাকে বাচ্চার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ইউনিভার্সালি। মানে সৌদি আরব টারব জানিনা, তা বাদে। খোরপোশ ও মোটামুটি ইউনিভার্সাল। উন্নত দেশ টেশ ধরে। নারীবাদীরা অনেকেই এগুলোর পক্ষে বলেন শুনেছি।

    আওয়াজ তোলায় কোনো সমস্যা নেই। সবাই কাজ করবে, সবাই পারিশ্রমিক পারে, সম্মানের সঙ্গে বাঁচবে, এ তো খুব জেনেরিক ব্যাপার। সমস্যা হচ্ছে, কর্পোরেট স্টাইলকে চমৎকার ধরে নিয়ে স্রেফ বাকিটা নিয়ে আওয়াজ তোলায়। কর্পোরেট তো প্রফিট ম্যাক্সিমাইজ করবে। সেখানে যে বেশি আউটপুট দেবে, বেশি সময় দেবে, তার বেশি উন্নতি হবে, আইডিয়ালি। এই লেখা অনুযায়ী, পুরুষরা বেশি সময় ইত্যাদি দিচ্ছেন, মহিলাদের উপরে ওঠা তাই থমকে যাচ্ছে।

    পুরুষরা বেশি সময় কেন দিচ্ছেন? কারণ বাড়িতে তাঁদের কোনো কাজ করতে হয়না (এই লেখা অনুযায়ী আর কি)। কেন? কারণ, বাড়ির স্ত্রীরাই সেসব ঝক্কি সামলে দেন। পুরুষরা তাই অন্য কাজে বেশি মনোনিবেশ করতে পারেন। তাই উন্নতি, কর্পোরেটের ডগায় পুরুষদের ছেয়ে থাকা, ইত্যাদি।

    মহিলারা কেন বাড়ির কাজ বেশি করছেন? এই লেখা অনুযায়ী, 'বাধ্য' হয়ে। অন্য একটা কারণও বলা আছে। "স্বামীর রোজগারে বাড়ির কাজ করানোর জন্য তিনি লোক রাখতে পারেন, তাই বাড়িতে থেকে আরাম আয়েশ করতে পারেন"। কিন্তু পরবর্তীর কথোপকথনে মনে হচ্ছে, সেটা মূল কারণ নয়। আসল কারণ, 'বাধ্য' হওয়াই।

    যদি বাধ্য হওয়াটাই মূল কারণ হয়, তাহলে থিসিসটির দুটো দিক আছে। ১। মহিলারা গৃহবধূ হন মূলত চাপে পড়ে বা বাধ্য হয়ে। ২। পুরুষরা কাজে বেরোন নিজের চয়েসে এবং উন্নতি করতে চান।

    তা, এইটায়, যৌক্তিক সমস্যা দুটো।

    ১। মহিলারা বাধ্য হয়ে গৃবধূ হচ্ছেন। বেটার চয়েস (লেখায় বর্ণিত "আরাম আয়েশ" একটু বেশিই ক্রুড, ওই কয়েনেজটা বাদ দিলাম) বলে নয়, এটা কিকরে বোঝা যাচ্ছে? বেটার মানেই আইডিয়াল চয়েস নয় কিন্তু। বেটার মানে, এই পরিপ্রেক্ষিতে অন্য অপশনের চেয়ে ভালো আর কি। অর্থাৎ, কর্পোরেটে বা কাজে তো চাপ থাকেই, সেটা পুরুষটি সামলাক, আমার পক্ষে সহজতর চয়েস হল বাড়িটা সামলে নেব। কর্পোরেটও রইল ওভারটাইমও রইল, সংসারও রইল, সবই খাপেখাপ থাকল। এইরকম বা অন্য কোনো ধরণের চয়েস কোনো কোনো ক্ষেত্রে কাজ করছেনা, এটা কিকরে বোঝা গেল?

    ২। পুরুষদের কাজ করা, বা ইঁদুর দৌড়ে নাম লেখানো, এটাই 'চয়েস', 'চাপ' নয়, সেটাই বা কি করে বোঝা গেল?

    এই দুটোই হল লেখার মডেলটা নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন। লেখার ইনটেনশন নিয়ে নয়।
  • Durba Mukherjee | 900900.239.0145.252 (*) | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৭:৩৬65313
  • আত্মস্থ করে নিয়েছেন মানে ভবিতব্য ভেবে মেনে নিয়েছেন, বাধ্য হয়ে, আনন্দে নয় | স্বনির্ভর মহিলারা খোরপোষ চান না | বেশির ভাগ পুরুষ তো বাচ্চার দায়িত্ব নিতে চান না | মা বাচ্চা মানুষ করতে বাবার চেয়ে বেশি ভালো পারে, এইটা পুরুষতন্ত্রের প্রচার মাত্র | বিদেশে জয়েন্ট কাস্টডি দেওয়া হয় |
  • dc | 232312.164.45900.118 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৫65337
  • ইন ফ্যাক্ট হোমমেড মিল আর ডেলিভারি কিন্তু এখন অনেক মহিলারাই করেন, আর আবাসনগুলোতেও করেন। তাঁদের সবাই যে আর্থিক কারনে করেন তা নয়, অনেকেই করেন নিজে কিছু করবেন বলে, বা বসে থাকতে ভালোবাসেন না বলে (এরকম এক দুজনের সাথে কথা বলে সেরকমই মনে হয়েছে)। তাছাড়া অনেক মহিলাকেই দেখি যাঁরা বাড়িতে থেকেও নানারকম বয়বসা করেন, ফলে নিজেদের ইন্ডিপেন্ডেন্ট একটা আর্নিংও থাকে, আর পুরুষের ওপর নির্ভরও করতে হয় না। এদিক থেকে দেখলে আগের থেকে খুব অল্প হলেও পরিবর্তন হয়েছে, তবে এই পরিবর্তন হয়তো শুধু শহরাঞ্চলেই হয়েছে, আধা শহর বা গ্রামে হয়তো এখনো হয়নি (ঠিক জানিনা)। তবে আরও অনেক পরিবর্তন হওয়া বাকি বা দরকার, এতে কোন সন্দেহ নেই।
  • pi | 7845.29.125623.37 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২০65338
  • খালি একটা পয়েন্ট চট করে জুড়ে দিয়ে যাই, আগেও বলেছি। রান্নাবান্না কি সন্গ্সার করা, বাচ্চা সামলানো ভালবাসেন, বাই চয়েজ এগুলৈ করতে চান এরকম কেউ হলে বেবিসিটিং, কি হোম ডেলিভারি বা এরকম সংক্রান্ত ব্যবসা কাজ কারায় পুরো একমতও, আগেও এনিয়ে ঐ ঘরকন্যার কাজকম্ম লেখায় লিখেছিলাম মনে হয়, একক ও লিখেছিল। কিন্তু ঐ, স্বাতীদির অথ বিবাহ কথার নিচে তর্কে যা লিখেছিলাম, সেই লাইনেই বলি, এইসব কাজকর্মের চয়েজের বেলাতেও সেই কেবল মেয়েরাই কেন, এগুলো ছেলেদের চয়েজ হিসেবেও আসুক! আসে না, তার কারণ ও কিন্তু পিতৃতন্ত্রের নির্মাণই!
  • | 2345.106.8990012.43 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৩65339
  • হ্যাঁ পুনের আবাসনগুলোতে খুবই কমন রন্নাবান্না বা ওকেশান অনুযায়ী বাচ্চাদের ড্রেস বানানো, হোম ওয়ার্ক করানো ইত্যাদি।

    মধ্যবিত্ত পাড়াগুলোতেও এটা চালু হলে ভাল হবে মনে করি। বিভিন্ন দিকে লেখালেখি হতে থাকলে অনেকে অ্যাওয়ের হবেন, হয়ত শুরু করলেন।
  • Durba Mukherjee | 900900.239.0145.252 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৫65315
  • লেখার সঙ্গে কিছু লিংক ও দিয়েছিলাম, আপনি সেগুলোর একটাও খুলে দেখেননি বোঝাই যাচ্ছে । কাস্টডি ল টা একটু জেনে নেবেন । আমি আমেরিকা, নেদারল্যান্ডস, কানাডা এই দেশ গুলোতে বন্ধু থাকার দরুন ভালো ভাবেই জানি by default মাকে কাস্টডি দেওয়া হয় না ।

    পুরুষরা "চাপে" পড়ে পণ নিয়ে গৃহ বধূ বিয়ে করেন? কিছুদিন আগে বিবিসি একটা লেখা ছেপেছে যে আমাদের দেশ মহিলাদের জন্য সব চেয়ে বিপজ্জনক । তারপরেও মেয়েরা নিজেদের "ইচ্ছেয়" স্বনির্ভর হতে চাইছেন না !!! আপনি এগুলো নিজে বিশ্বাস করেন তো? পারলে একটু পরিসংখ্যান দেবেন যাতে আমরাও বিশ্বাস করতে পারি।

    https://medium.com/s/jessica-valenti/the-woke-men-who-still-want-housewives-debb2ad46aa0
    https://www.livemint.com/Money/wO2YtuIGogatn8N1DQvEIP/Why-Indian-women-dont-want-to-work.html
  • | 2345.106.8990012.43 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৬65341
  • ও আরো একটা জিনিষ পুনের আবাসনগুলোতে বেশ চালু। সেটা হল খুব ছোট বাচ্চা যারা নিজেরা স্কুলে যাওয়া আসা করতে পারে না, তাদের স্কুল বাস না এলে বা বিশেষ দিনগুলো যেমন পাল্কি বা দহি হান্ডির দিনে মা বাবাদের বেশ কটি বাচ্চাকে বাই রোটেশান আনা নেওয়া করা।
  • | 2345.106.8990012.43 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:২৬65340
  • ও আরো একটা জিনিষ পুনের আবাসনগুলোতে বেশ চালু। সেটা হল খুব ছোট বাচ্চা যারা নিজেরা স্কুলে যাওয়া আসা করতে পারে না, তাদের স্কুল বাস না এলে বা বিশেষ দিনগুলো যেমন পাল্কি বা দহি হান্ডির দিনে মা বাবাদের বেশ কটি বাচ্চাকে বাই রোটেশান আনা নেওয়া করা।
  • dc | 232312.164.45900.118 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৭65342
  • পাই ম্যাডামের 18:50 এর পোস্টের সাথে একমত, সামাজিক নির্মান এখনও কয়েকটা পেশা ছেলেদের আর কয়েকটা মেয়েদের আলাদা বলে চিহ্নিত করে রেখেছে। তবে এটাও ঠিক, আমার আশেপাশে কয়েকটা হোম ডেলিভারির ব্যব্সা যেগুলো দেখি তার দুয়েকটায় কিন্তু বাড়ির পুরুষও মহিলাটিকে বেশ কিছুটা হেল্প করেন। হয়তো আস্তে আস্তে একটা স্পেকট্রাম অফ এনগেজমেন্ট তৈরি হচ্ছে যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো বেশী করে বাউন্ডারিগুলো মুছে যাবে। জানিনা হবে কিনা, তবে অ্যাওয়ারনেস বাড়াতে পারলে হয়ে যেতেও পারে।
  • pi | 2345.110.564512.205 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৮65317
  • গৃহবধূ হতে অনেক মেয়েকেই যেমন বাধ্য করা হয়, অনেকেরই আবার চয়েজও।
    এমনিতে পিতৃতন্ত্রের প্রথা হিসেবে এটাই স্বাভাবিক বলে মেনে নেওয়া, তাতে আপত্তি সেভাবে না থাকা আরো বড় অংশ তো আছেই।

    সেসবও লোকে নানা লেখায় ডকুমেন্ট করে রেখেছেন।
  • pi | 2345.110.9004512.105 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪৯65343
  • পুরুষের হেল্প করা আমাদের বাড়ির কাছেও দেখেছি। ইন ফ্যাক্ট ভদ্রলোক সাইকেলে ঘুরে ঘুরে বাড়ি বাড়ি দিয়ে যান, বাজার করে কাটাকুটি করেন, স্ত্রী রান্না করেন, এই রোলগুলোও ব্যক্তিচয়েজ অনুযায়ী বেছে নিতে পারলে আর তারফলে অনেক রোল রিভার্সাল দেখা গেলেও খুশি হব। জেন্ডার অনুযায়ী শ্রমবিভাজনের স্টিরিওটাইপিং এর চেয়ে সেক্সিস্ট আর কিছু হয়না, আগেও বলেছি।
  • dc | 232312.164.45900.118 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৯65344
  • একমত।
  • pi | 2345.110.015612.216 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৪৩65345
  • ভাল

    https://trib.al/Ey3RIwK
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪65318
  • দেখুন, এর কোনোটাই গোপন তথ্য নয়। ফলে না দেবার কিছু নেই। আর আমার বিশ্বাস অবিশ্বাসের ব্যাপারও না। ফ্যাক্ট বলছি মাত্র। এক এক করে লিখি।

    ১। আমেরিকার কাস্টডি সংক্রান্ত তথ্য। এর পুরোটাই সরকারি ওয়েবসাইটেই পাওয়া যায়। সেখানে কাস্টডিপ্রাপ্ত বাবার সংখ্যা ১৮%। মায়ের সংখ্যা তাহলে ৮২%। ৭০ এর দশকে তথাকথিত জেন্ডার নিউট্রাল আইন হবার পরে এই অবস্থা। এই ডেটা তো রেটোরিক দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যায়না।
    https://www.census.gov/content/dam/Census/library/publications/2016/demo/P60-255.pdf -- এটা বোধহয় ২ বছর আগের তথ্য।

    ২। ভারতে গৃহহিংসা। যে লিংক গুলো দিয়েছেন, সেগুলো সরকারি সমীক্ষা ন্যাশানাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে থেকে নেওয়া। সেটা ভুল হবার বিশেষ কারণ নেই। হলেও নিশ্চয়ই ছোটোখাটো মার্জিন অফ এররের মধ্যেই থাকবে। ফলে গৃহহিংসা নিশ্চয়ই হয়। কিন্তু সেটা এখানে প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন হল গৃহহিংসাকে কীভাবে দেখা হয়। যদি ওই একই রিপোর্ট খতিয়ে দেখেন, দেখবেন, ভারতের ৫২% মহিলাই মনে করেন নানা কারণে বৌকে স্বামীর দুঘা দেওয়া যথেষ্টই উচিত কাজ। সারপ্রাইজিংলি পুরুষদের মধ্যে যাঁরা এরকম মনে করেন, তাঁদের সংখ্যা কম। ৪২%। মনে রাখবেন, প্রশ্নটা "আপনার স্বামী আপনাকে ঠ্যাঙায় কিনা" নয়। প্রশ্নটা সাধারণ ঔচিত্যমূলক। "স্বামীর স্ত্রীকে দু-ঘা দেওয়া উচিত কিনা"। "ঠ্যাং ভেঙে দেওয়া উচিত কিনা" প্রশ্ন করলে নিশ্চয়ই এই উত্তর আসতনা। সংখ্যা কম আসত।
    তা, মানুষের (মহিলা এবং পুরুষ) চেতনার এই স্তর দেখে আমাদের খুবই দুঃখ হতে পারে। হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরও তথ্য তথ্যই। এই তথ্য দেখে কি মনে হয় ছোটোখাটো গৃহহিংসা গড় ভারতীয় মেয়ে এবং (পুরুষদেরও) চোখে খুব একটা বড় ব্যাপার? তথ্য মানলে বড় ব্যাপার নয়।
    http://rchiips.org/NFHS/NFHS-4Reports/India.pdf -- এইটা খুলে ৫১৪ পাতায় চলে যান।

    ৩। বিবিসি। এটা নিয়ে কথা বাড়ানোর মানে নেই। ওটা খুব সামান্য কিছু মহিলার ইমপ্রেশন নিয়ে কথা। সার্ভে হিসেবে কোনো ভ্যালিডিটি নেই।
  • Ishan | 89900.222.34900.92 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০১65319
  • আরেকটা ইন্টারেস্টিং জিনিস বলতে ভুলে গেলাম। যেহেতু অধিকাংশ মহিলাই মনে করেন, যে, বৌকে ঠ্যাঙানো উচিত কাজ, কাজেই পুরুষদের উপরেও, যৌক্তিকভাবে বললে, নির্ঘাত একরকম চাপ থাকে বৌকে ঠ্যাঙানোর। নইলে যথেষ্ট 'পুরুষ' হওয়া মুশকিল। এই ব্যাপারটা আমাদের ভাবনা, রেটরিক, এবং সদিচ্ছার প্যারাডাইম দিয়ে বোঝাই সম্ভব নয়। আমরা "বৌয়ের গায়ে হাত তুলেছে = শয়তান" এরকম একটা সমীকরণে বিশ্বাস করি। আমাদের পরিমণ্ডলে সেটা ঠিকও বটে। কিন্তু এটা ইউনিভার্সাল ট্রুথ নয়। "দোষ করলে বৌয়ের চুলের মুঠি ধরত্ পারেনা কীসের মরদ" (এটা যেন কোথায় পড়েছিলাম?) -- এটাই প্রিভেলিং স্কুল অফ থট। আপাতত মহিলাদের উপরেই এর প্রভাব বেশি।
  • dc | 232312.164.45900.118 (*) | ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৩65320
  • লেখাটা ভাল্লাগলো, লেখকের মতামতও যথাযথ মনে হলো।

    "কর্পোরেট সেক্টরে প্রায়শই সংখ্যা দিয়ে দেখানো হয় অনেক মেয়ে কেরিয়ার শুরু করলেও মাঝপথে ছেড়ে যাচ্ছেন বা কোনো রকমে চাকরি বজায় রাখতে পারলেই সন্তুষ্ট থাকছেন। "

    সঠিক অবসার্ভেশান। এরকম অনেক স্টাডি পড়েছি যেখানে চাকরি বা কেরিয়ায়ের প্রত্যেক স্টেজে জেন্ডার গ্যাপ দেখানো হয়েছে। কিছু ইন্টারভিউও পড়েছি যেখানে সামান্য দুয়েকজন যে ব্যতিক্রম আছেন, যেমন ইন্দ্র নুই, বলেছেন যে সংসারের অনেক দায়িত্ব নিয়েই ওনাকে কর্পোরেট সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়েছে, যেসব দায়িত্ব পুরুষ হলে হয়তো নিতে হতো না।

    আমার মনে হয় এই নর্মটাকে চ্যালেঞ্জ করা উচিত যে ছেলে হলেই "বাইরের" সব দায়িত্ব সামলাবে আর মেয়ে হলেই "সংসারের" সব দায়িত্ব সামলাবে। যে ভাবনা আস্তে আস্তে গড়ে ওঠা উচিত, সেটা হলো স্বামী-স্ত্রী বা পুরুষ-মহিলা যৌথ ভাবে ঘরে-বাইরের সমস্ত দায়িত্ব সামলাবে। কে কোনটা সামলাবে বা কে কতো বেশী, সে অবশ্যই নিজেরা মিলে ঠিক করবে, কিন্তু ওভারল ডিভিশান অফ লেবার আর যৌথ দায়িত্ব অবশ্যই থাকবে। একজন যদি ১০-১২ ঘন্টা চাকরি বা অন্য কারনে বাইরে থাকেন তাহলে অন্যজন তাঁকে সাপোর্ট দেবেন, ছেলে বা মেয়ে যেই হোক না কেন।

    এমন না যে অবস্থা আগের থেকে একেবারে পাল্টায়নি, চারপাশে যেটুকু দেখি তাতে মনে হয় মেয়েরা চাকরি বা কেরিয়ারের ক্ষেত্রে আগের থেকে বোধায় সামান্য একটু ভালো আছেন। তবে এখনো পরিবর্তন হওয়া অনেকটাই বাকি। ছেলে আর মেয়ের সংসারে সমান দায়িত্ব আর সমান অধিকার, এই সেন্সটা আরও বেশী করে আনতে হবে। দুজনের ইনকামে দুজনেরই সমান হক থাকবে, জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থাকবে, আর ফিনান্স্সিয়াল সব ডিসিশান দুজন মিলে একসাথে নেবে - এগুলো হওয়া খুব দরকার। এগুলো হলে হয়তো চাকরি ক্ষেত্রেও জেন্ডার গ্যাপ আস্তে আস্তে আরও কিছুটা কমবে। এই যে মিটু মুভমেন্ট, এটা হওয়া অত্যন্ত জরুরি ছিল। মেয়েদের স্বাধীকার আছে, মেয়েরা স্রেফ ছেলেদের খেলনা না, অফিসেও না আর ঘরেও না, এই বোধটা হয়তো মিটু আন্দোলনের ফলে আরও বেশী করে আসবে।

    "পুরুষতন্ত্রে পুরুষ তার ক্ষমতা আর সুবিধার জায়গা এত সহজে ছেড়ে দেবে এমন আশা আমরা করি না" - একমত। তবে অবস্থা আগের থেকে অল্প একটু পাল্তেছে বলে মনে হয়। আরও তাড়াতাড়ি পাল্টাতে পারলে ভালো হয়।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে প্রতিক্রিয়া দিন