এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বাচ্চাটা

    dd লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ৬৩৪ বার পঠিত
  • বাচ্চাটা

    "একটা বাচ্চা ছেলে। বাচ্চা। চার পাঁচ বছর বয়স। সে ...সে সব সব সময়,মানে আমি তাকে সব সময় দেখি।"

    ডাক্তার সামন্ত চুপ করে থাকলেন। কৈশোরের এই বয়সে হরমোনের উচ্ছ্বাসে ভরে যায় দেহ মন। হ্যালুসিনেসন । এই বয়সে খুব বিস্ময়কর কিছু নয়। রন চুপ করে থাকলে তিনি আবার প্রশ্ন করেন " কোথায় দ্যাখো? কখন ? লাস্ট কবে দেখেছো ...এই সব বলো "

    "লাস্ট? লাস্ট দেখলাম স্কুলে যাবার সময়। পর্শু। চৌমাথার রাস্তা ক্রস করবার সময় পিছন ফিরে দেখি দাঁড়িয়ে আছে। এক ঝলক । রাস্তা ক্রস করে ফুটপাথে উঠে আবার দেখলাম। তখন আর নেই।"

    " আর? আর কখন দ্যাখো?"

    রন চুপ করে থাকে। গুছিয়ে বলতে একটু ভাবে। কত কথা বলার আছে। কোথার থেকে শুরু করবে?

    " মাস ছয়েক হলো। হঠাৎ খেয়াল করলাম একটা বাচ্চা ছেলেকে আমি সব সময় দেখি। নানান যায়গায়। একজনকেই বারবার। খেলার মাঠে খেলছি,মাঠের ধারে অনেক লোক। দেখলাম আবার কয়েক সেকেন্ড পর তাকিয়ে দেখি আর নেই।

    " ইয়েস? "

    তারপর সেন্ট্রাল মলে গেছি বন্ধুদের সাথে। পাঁচতলা থেকে নীচে তাকিয়ে দেখি একতলায় দাঁড়িয়ে আছে -আমার দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। কয়েক সেকেন্ড। তারপরই সৌমিত্র,আমার বন্ধু, ওদের সাথে গেছিলাম, ডাকলো। আর দেখতে পাই নি।

    সিনেমাতে গেছি - বেড়িয় আসছি। ভীড়। হঠাৎ দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এক ভাবে। ভীড়ের মধ্যে ঠেলেঠুলে এগিয়ে গেলাম। আর দেখতে পাই নি। মানে তখন।"

    " আর ? "

    "আরো। বন্ধুর সাথে মটোর সাইকেলে যাচ্ছি। অথবা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। তখনো দেখি অন্য ফুটপাথে। আমার চোখে চোখ। অপলক চেয়ে আছে। আর বাস এসে গেলো। আর দেখতে পেলাম না।"

    ডাক্তার বাবু বুঝলেন রন অস্বস্তিতে পরছে। তার ভয় লাগছে। সে আর বলতে চাইছে না। খুব শান্ত গলায় বললেন " তোমার কেমন লাগে ? যখন ঐ বাচ্চাটাকে দেখো ? কি অনুভুতি হয় তোমার ? "
    " ভয় করে। ভয়। ভীষন ভীষন ভয় " বলতে গিয়েও গলা কেঁপে যায় রনের। "বুক ধড়ফড় করে । মনে হয় হৃৎপিন্ডটা গলা দিয়ে মুখ দিয়ে ছিটকে বেড়িয়ে আসবে।"

    সামন্ত ডাক্তার চিন্তিত হন। "কেনো ভয় করে তোমার ? কিছু মনে হয় ?"

    "সারাক্ষনই মনে হয়। এবার কোথায় দেখবো? কখন দেখবো? আর কিরকম নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে। ও, ও জানে কখন আমি ঘাড় ফিরাবো,কখন আমার ওর দিকে চোখ পরবে। ও জানে।" একনিঃশ্বাসে বলে দম নেয় রন।

    " না। ভয় পেও না। তোমাকে একটা ওষুধ দিছি। এটা তোমার অ্যানক্সাইটি কমিয়ে দেবে। এখন দু সপ্তাহ খাও। আর আরেকটা কথা। বাচ্চাটা কেমন দেখতে,কি পোষাক পরে,একা না কারুর সাথে থাকে ... এইসব মনে রেখো। পরের সিটিংএ আমি জানতে চাইবো।"

    **********************************

    শ্রাবন্তী বড় ভয় পেয়ে যায়। " রনকে ডাক্তার দেখাবো ? মানে সাইক্রিয়াটিস্ট ? কিন্তু শুনেছি এইসব সাইক্রিয়াটিস্টদের দেখালে রোগ অনেক সময় আরো বেড়ে যায় ?"
    অনির্বান বিরক্ত হয় "যে অসুখের যে ডাক্তার। বুঝতেই পারছো এটা রনের মানসিক রোগ। ও ভয় পাচ্ছে। হ্যালুসিনেট করছে। তো সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাবে না তো কি গাইনিকে দেখাবে ? আমিও তো কতদিন প্রোজাক খেলাম ,চাকরীর গন্ডোগোলের সময়।আমি ও তো সামন্তর কাছেই গেছিলাম "
    "ওটা তো ডিপ্রেশন" শ্রাবন্তী বলে।"চল্লিশ পেরোলে সকলের ই হয়। মেল মেনোপজ"

    দুজনেই উচ্চ শিক্ষিত,বড় চাকরী করে। রনের এই সমস্যায় মোটামুটি রোগনির্নয় করতে দু জনকে তাই ওঝা ঝাড়ফুঁক এইসবের কথা চিন্তা করতে হয় নি। প্রথম কদিন শ্রাবন্তী আর অনির্বান দুজনেই রনকে বোঝাতে চেষ্টা করেছিলো।

    "তুই ঠিক জানিস ,ঐ একটাই বাচ্ছাকে তুই দেখিস? কেমন দেখতে ?"

    "না,রোজ দেখিনা। প্রায়ই দেখি। কাল দেখলাম আমাদের বারান্দা দাঁড়িয়েছিলাম যখন তখন ঐ সামনের বাড়ীর ছাদে - যেখানে বাচ্চারা ক্যারাটে শেখে।সেখানে। পাঁচিলের উপর দিয়ে একবার তাকিয়েই চলে গেলো "

    "তুই ছুটে গেলি না কেনো? " অনিরবান জিজ্ঞেশ করে।

    " বাবা, বাচ্চাটা নিমেষে উধাও হয়ে যায়। আমি বাড়ী থেকে নামবো। ওদের বাড়ীর ছাদে যাবো। পাঁচ ছ মিনিট তো লাগবেই। আর গিয়ে কাকে কি বোলবো? "

    " তাও যেতি।"

    "না। ভয় লাগছিলো "।
    শ্রাবন্তী আর অনির্বান দুজনেই চুপ করে যান। আশংকায় তাঁদের গায়ে কাঁটা দেয়। সতেরো বছরের ছেলে - পড়াশুনা খেলাধুলা সবেতে চৌকশ - সে কি দিন দুপুরে ভুত দেখছে ? ভয় পাচ্ছে ? এই মহানগরে ?

    কাঁপা গলায় প্রশ্ন করে শ্রাবন্তী "আর বাচ্চাটা দেখতে কেমন? বল্লি নাতো "

    " কেমন আর দেখতে মা ? এই চার বছর - কি পাঁচ। বুনানের মতন। একটু কেমন খাঁদানাক। পাগ নোসড। বেশ মিষ্টি। রোগা। খুব ফরশা নয়। চুলটাও - যেরকম বাচ্চাদের থাকে। আর চোখদুটো বড় বড়। কেমন নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে। "

    " হাসে ? কথা বলে? বলতে চায় ? "

    " না। না। "

    *********************************

    ডাক্তার সামন্ত বলেন " রাত্রে ঘুম হচ্চে ? "

    " হ্যাঁ। আর ঐ মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে মনে হয় না একটা দারুন আতংক আমাকে চেপে ধরেছে। কিন্তু আমাকে কি ওষুধটা খেয়েই যেতে হবে ? "

    " না। পসিবলি নট। এবার বলো। লাস্ট ফিফটীন ডেতে তুমি কতবার বাচ্চাটাকে দেখেছো ? "

    " চারবার। লাস্ট দেখলাম বাস থেকে - আপনার ভ্চেম্বারে আসবার সময়
    ঠিক নামবার আগে জালনা দিয়ে দেখতে পেলাম একটা অটোর ভিতর থেকে । ঐ। চোখে চোখ রেখে। মিনিট কুড়ি আগে। "

    "আর ঐ অটোতে আর কোনো লোক ছিলো ? দেখেছো ?"

    "ছিলো । নিশ্চয়ই ছিলো। কিন্তু কিছু খেয়াল করতে পারি নি। বাচ্চাটাকে দেখেই বুকের মধ্যে মনে হলো খুব ঠান্ডা ফোয়ারা কেউ খুলে দেয়েছে। ভয় পেলাম "

    " আর কি ,কি মনে পরছে বাচাটার সম্বন্ধে ? "

    " না। আর কিছু নয়। শুধু ঐ একভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। আর কালকে দেখলাম আমার কোচিং ক্লাস থেকে ফিরবার সময়। একটা ছোট্টো কাপড়ের দোকান থেকে - উঁকি মেরেই একটা শোকেসের পিছেনে চলে গ্যালো। আমি দৌড়ে ঢুকলাম। ছোটো কাপড়ের দোকান। বাছাদের ফ্রক শার্ট - এসব বিক্রি করে। দুজন মহিলা ছিলেন। আর দুজন সেলম্যান। আমাকে দেখে বল্লো কি চাই ? আমি অ্যাতো নার্ভাস হয়ে গেছিলাম - কি? কি বোলবো ? তাও বল্লাম একটা বাচ্চা এসেছিলো -। এই দোকানে ? দোকানী ঐ মহিলারা আমার দিকে কেমন অদ্ভুত ভাবে তাকালো। নিশ্চয়ই ভাবলো আমি ড্রাগ ফ্রাগ নেই। বা মাতাল। আমি আবার চলে এলাম"
    বছর দুয়েক আগে অনির্বান আর শ্রাবন্তী সদ্য কিশোর রনের মুখোমুখী বসেছিলেন। যৌন শিক্ষার জন্য যাতে নেট না হাৎড়িয়ে মা বাবার কাছেই জেনে নেয় নতুন জীবনের অজানা দিকগুলি - মা বাবা তাই দুজনেই খুব খোলাখুলি আলোচনা করেছিলেন তদের ছেলের সাথে। লজ্জারুন কিশোরের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে সংকুচিত হন নি দুজনেই।
    কিন্তু আজ সতেরো ব্ছরের এই তরুনের চোখ চোখ রাখতে পারেন না অনির্বান। সমুহ পরাভবের কালিমায় লিপ্ত চোখদুটিতে শুধু ত্রাস।
    " কোনো ড্রাগ নিস নাতো ?" উৎকন্ঠিত এই প্রশ্নে মাথা নাড়ে রন। " না মা, সে সব কিছু নয়।"
    "আর রাতে স্বপ্ন - স্বপ্নেও দেখিস তুই ঐ বাচ্চাটাকে?"
    ">naa<" বলে রন কিন্তু শ্রাবন্তী মাঝ রাতে রনের ঘরে ঢুকে দেখেছে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন রন কোনো অনামা আতংকে শিউড়ে উঠছে। দেখেছে বেতের পাতার মতন থির থির করে কেঁপে কেঁপে উঠছে রনের দেহ।
    কিন্তু ঘুম ভেঙে কিছু স্মরনে আসে না রনের। দেখেছিলো সেই নিষ্পলক নেত্রের শিশুটিকে ? গভীর ঘুমে অচেতনে এসেছিলো - কিছু বলেছিলো ? নাঃ। মনে পরে না।
    কিন্তু এখন সারাদিনই রনের কাটে সেই অজান ভয়ের আবছায়াতে। জালনা দিয়ে তাকাতে ভয় হয়। রস্তা ঘাটে যতক্ষন পারে দৃকপাত না করে হাঁটতে।
    জানে রন, নিশুতি রাতে জালনার কাঁচে মুখ লাগিয়ে থাকবে না সেই বাচ্চাটা। রাত্রে বাথরুম গেলে আয়নায় আলো আঁধারিতে দেখবে না শিশুর মুখ। সে শুধু আসে জনারন্যে। এক পলক এক ঝলক। তারপরি চলে যায় আড়ালে
    ************************
    ডাক্তার সামন্ত বলেন। " আগে তোমার ভয়টা কাটা দরকার। বলো। কেন ভয় পাচ্ছো? ঐ বাচ্চাটাকে?"
    অসহায় তাকিয়ে থাকে রন। এর উত্তর তো তারও জানা নেই।
    "তুমি মনে করো, চেষ্টা করো ভাবতে যে তুমি ই সেই বাচ্চা। এবার চিন্তা করে দেখো তো কেনো তুমি বারেবারে যাও রনের কছে ? কি চাও ? "
    "কিছু চায়। কিছু চায় আমার কাছে .... ঐ বাচ্চাটা। কিন্তু... বলতে পারে না"
    সামন্ত ডাক্তার চুপ করে থাকেন। তিনি চাইছেন রনের অবচেতন থেকে গড়ে তোলা ঐ কল্পনার মুর্তিকে রন নিজে থেকেই বুঝতে শিখুক, জানতে শিখুক। আগে ভয়টা দুর করা দরকার।

    "তুমি চেষ্টা করো বুঝতে কেনো তুমি ভয় পাচ্ছো। ভয়ের থেকেই জন্ম নিয়েছে ঐ বাচ্চাটা। হয়তো কোনো খুব গোপন ভয় তোমার - কোনো ঘটনা নয়। এই বড় হয়ে উঠবার ভয়। তুমি নিজেও টের পাচ্ছো না। কিন্তু তোমার মনের মধ্যে রয়েছে। লুকিয়ে।

    এরপর যখন বাচ্চাটাকে দেখবে তখন তার চোখে চোখ রাখবে। ডাকবে। বলবে - এই এদিকে আয়। কি চাস তুই। সারাক্ষন আমার পিছনে ঘুরিস ? বলবে তো ?"

    "বোলবো " আশ্বাস দেয় রন। "চেষ্টা করবো ভয় না পেতে। পাবো না। ভয় পাবো না। চোখে চোখ রাখবো। কাছে ডাকবো"। বলে রন। কিন্তু টের পায় এই কথা বলতে গিয়ে কেমন তার শরীরে রক্তকনায় শীতল বন্যা বয়ে আচ্ছে। বুঝতে পারে তার গলা কেঁপে যাচ্ছে । তাও বলে। জোর করে সাহস করে বলে। নিজেকেই বলে।

    " শোনো। নিজের সম্বন্ধে ছোটো ভাবনা কোরো না। একটা রিসার্চে বেরিয়েছে যে শতকরা প্রায় ৪০ জন মানুষ জীবনে অন্ততঃ একবার হ্যালুসিনেট করেছে। অলমোস্ট ওয়ান থার্ড,ইয়েস ওয়ান থার্ড ওফ দেম ইন দা ডে টাইম । সুতরাং তুমি যা দেখছো কল্পনায়,সেটা খুব আনকমন কিছু নয়। ও রকম হয়।

    তোমার হ্যালুসিনেসন নিয়ে আমি চিন্তিত নই। কিছুদিন পরেই ওটা চলে যাবে। কিন্তু তুমি এতো ভয় পাচ্ছো - তার একটা রিঅ্যাকশন আছে। সেটা তোমাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

    ওষুধটা খাও, খেয়ে যাও। আর সব সময় মনে রেখো তোমার ভয়ই ঐ বাচ্চাটাকে ক্রিয়েট করেছে। যতো ভয় বেশী পাবে সে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।"

    রন আশ্বাস দেয় " না,ভয় পাবো না "

    "নেকস্ট যখন দেখবে তখন কাছে ডাকবে। বলবে - আয় আমার হাত ধর।বলবে তো ? "

    খুব বিশ্বাসের সাথে রন মাথা ঝাঁকায়। " হ্যাঁ, বোলবো। আর ভয় পাবো না। একটা বাচ্চা ছেলেকে ভয় কিসের? জানেন ডাক্তারবাবু,প্রায় মাস ছয়েক হয়ে গেলো আমি প্রান খুলে হাসি নি। সব সময়েই মনে হয়েছে কোথাও একটা লুকিয়ে আছে। ঐ বাচ্চাটা। আর ভয় পাবো না।"

    " দ্যাট্স দা স্পিরিট। তুমি ভালো হয়ে গেছো। বুঝলে? ইউ আর অল রাইট নাউ।"

    চেম্বার থেকে বেড়িয়ে প্রান ভরে নিঃশ্বাস নেয় রন। চারিদিকে গর্ব ভরে তাকায়। রাস্তার মাঝে লোক জনের মাঝে। না,সেই বাচ্চাটা নেই। মিনিবাসে উঠে খোঁজে। অন্যদিকের ফুটপাথে। কোথও না।

    "ব্যাটা ভয় পেয়েছে" নিজের মনে বলে নিজেই খুব হাসে রন।"শালা,ভুতের বাচ্চা - পালিয়েছে"।

    **********************************

    নিশুতি রাতে ঘুম ভেঙে যায় রনের। বিস্ফারিত চোখে দেখে বাচ্চাটা তার পায়ের কাছে চেয়ারটায় বসে। না,চোখ বন্ধ করবো না। রন ভাবে। চোখ বড় করে দেখে।

    দেখে বাচ্চাটা পায়ের কাছে বসে,চেয়ারে। আর ভয় পাবো না।

    রন বলে। আর ভয় পাবো না তোকে। কি চাস তুই।

    জালনার পর্দার ফাঁক দিয়ে ল্যাম্প পোস্টের আলো। আলো যতো আঁধার ততো বেশী। সেই ছায়ায় আলোয় দেখে বাচ্চাটার চোখ। যেন দুনিয়ার সমস্ত বিষাদ তার চোখে। মনে হলো ঠোঁট দুটো কাঁপছে তিরতির করে। অভিমানে।

    রনের বুক মমতায় ভরে ওঠে। স্নেহে গাঢ় হয় তার স্বর।

    " তুই আয়। আমায় বল। " রন হাত বাড়িয়ে দেয়। রনের মনে হলো বাচ্চাটা জলভরা চোখে একবার মাথা নাড়লো।

    আলোতে ছায়াতে আরো ছায়া বেড়ে ওঠে। রন বুঝতে পারে ছায়ায় ছায়ায় মিশে যাচ্ছে বাচ্চাটা।

    দেখে শুধু চেয়ারটা । ফাঁকা।

    হু হু করে ওঠে রনের বুক। তার চোখ জলে ভরে ওঠে।

    " চলে গেলি?" অস্ফুট বলে রন। আর আবছা রাতের আলো আঁধারিতে আবার ঘুমিয়ে পরে রন। এক সুস্থ মানুষ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ৬৩৪ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    চম - dd
    আরও পড়ুন
    ও শানওয়ালা - dd
    আরও পড়ুন
    দ্রোণ পর্ব - dd
    আরও পড়ুন
    কর্ণসংহার - dd
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • de | 69.185.236.54 (*) | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:০০65905
  • খুব ভালো লাগলো!
  • byaang | 132.171.189.196 (*) | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:১৫65906
  • বাঃ!
  • সে | 204.230.159.184 (*) | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:৪২65907
  • অপূর্ব!
  • I | 192.66.72.19 (*) | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:১৩65908
  • একটু অসমাপ্ত মত লাগলো।
  • | 11.39.96.77 (*) | ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১২:৩৮65904
  • দারুণ লাগল ডিডি
  • kumu | 132.161.8.161 (*) | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৩৯65911
  • খুব ভাল।শেষটা একটু দ্রুত লাগল।রন সুস্থ হওয়ার আগে আরো একটু সময় বা বিন্যাস লাগত কি?অবশ্যইব্যক্তিগত মত।
  • Atoz | 161.141.84.176 (*) | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৩৪65912
  • আমার খুব ভালো লাগলো লেখাটা।
    অপূর্ব এইসব লাইনগুলো,
    " জালনার পর্দার ফাঁক দিয়ে ল্যাম্প পোস্টের আলো। আলো যতো আঁধার ততো বেশী। সেই ছায়ায় আলোয় দেখে বাচ্চাটার চোখ। যেন দুনিয়ার সমস্ত বিষাদ তার চোখে। মনে হলো ঠোঁট দুটো কাঁপছে তিরতির করে। অভিমানে।"
    ফিরে ফিরে পড়ছি।
  • SS | 160.148.14.8 (*) | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:০১65913
  • গল্পটা ভাল তো বটেই। পড়ার পর কিরকম একটা অদ্ভুত অনুভূতি হল। পড়া শেষ করে চারপাশে তাকিয়ে দেখ্লাম আর কেউ আছে কিনা। somewhere it struck a nerve।
  • sosen | 176.137.126.84 (*) | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১২:২৬65909
  • কোথায় যেন একটু আড়ষ্ট
  • Du | 107.79.230.34 (*) | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১২:৫৫65910
  • খুব ভালো লাগলো।
  • de | 69.185.236.55 (*) | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:৪৮65914
  • কন্যার মতে, ডিডিদা গুরুর সেরা লেখক, মানে ও যতগুলো পড়েছে তার মধ্যে আর কি! একটা ভয়ের গল্পের সিরিজও লিখতে অনুরোধ করেছে!
  • dd | 116.51.242.197 (*) | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:০০65915
  • হ্যাঁ হ্যাঁ। ইয়েস ইয়েস। অবশ্যই।

    এও ও ঠিক, তোমার কন্যাই গুরুর সেরাতম পাঠক।

    আর তারে কয়ে দিও, জ্যাঠার কাছে প্রচুর ভুতের গল্পো আছে। ভুত,পরী,ক্ষোক্ষোস। সব গুলোই ধারালো দাঁতালো আর ভয়ালু।
  • de | 24.139.119.175 (*) | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৭:৫৬65916
  • কয়ে দেবো ডিডিদা! ঃ)))
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন