এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • যাদবপুর- একটি ব্যক্তিগত গল্প

    I লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ | ৬০৪ বার পঠিত
  • কলেজ স্ট্রীটের পাশে বসে আছে ছেলেধরা বুড়ো।
    পুরোনো অভ্যাসবশে দুচোখ এখনও খুঁজে ফেরে
    যেসব ধমনী ছিল এ পথের সহজ তুলনা
    ঈশান নৈঋত বায়ু কখনো বা অগ্নিকোণ থেকে
    যেসব ধমনী ছুঁয়ে পৃথিবীও পেত উত্থান
    রূপের ঝলক লেগে সে কি এত মিথ্যে হয়ে গেল?
    উপমার মৃত্যু হল এই নবদুর্বাদল দেশে?
    বুড়ো তাই গান গায়, থেকে থেকে বলে "আয় আয়"
    লোকেরা পাগল ভাবে লোকেরা মাতাল ভাবে তাকে
    ঢিল ছুঁড়ে দেখে তার গায়ে কোনো সাড় আছে কি না
    সে তবু গলায় আনে নাটুকে আবেগ, হাঁকে "এই
    শিশুঘাতী নারীঘাতী কুৎসিত বীভৎসা পরে যেন-"
    আর সেই মুহূর্তেই বৃষ্টি নেমে আসে তার স্বরে
    চোখের কুয়াশা ঠেলে দেখে তার চারপাশে সব
    যে যার দিনের মতো ঝাঁপ ফেলে চলে গেছে ঘরে
    পুরোনো অভ্যাসে শুধু বুড়োর পাঁজরে লাগে টান-
    যদিও বধির , তবু ধ্বনিরও তো ছিল কিছু দেনা
    সবই কি মিটিয়ে দিয়ে গেল তবে রণবীর সেনা?
    ( ছেলেধরা বুড়ো-শঙ্খ ঘোষ)

    ----

    আমাদের মত বুড়োটে আর ন্যাকাচৈতন কিছু লোকের বেশ একটা বদ অভ্যেসই আছে সব কিছুতেই শঙ্খ ঘোষকে টেনে আনা। কেননা কোনকালে কোথায় যেন আগুন জ্বলেছিল, আর আমরা তাতে হাত-পা সেঁকে ভেবেছিলাম এই সেই চিরপ্রণম্য অগ্নি, আমরাই তাকে মশালে মশালে বয়ে নিয়ে যাচ্ছি দেবী হেরার মন্দির থেকে কাছে -দূরে, ঘাটে-আঘাটায়। সেই সব সময়ে আমরা শঙ্খ ঘোষ পড়তাম খুব, মিছিলে-ময়দানে আমাদের মুখে শঙ্খ ঘোষের কবিতার খই ফুটত। তারপর তো যথারীতি আমাদের যার যার বিপ্লবের ব্যক্তিগত যাত্রাপালা শেষ হলে দাঁতে নিমপাতা কেটে লোহা ছুঁয়ে ঘরে ঢুকে বাধ্য ছেলের মত পড়তে বসলাম।

    আমাদের সেইসব আগুনটাগুন কবে নিভে গেছে; সেসব কথা নতুন করে মুখ ফুটে বলতেও অসম্ভব ইয়ে লাগে। তবে বলবার কথা এই যে আগুনের সেই জ্বলুনির মত ঈষৎভাবে পেছনে লেগে আছেন শঙ্খ ঘোষ। তাই কারণে হোক, অকারণে হোক, মুখ খুললেই ফস করে বেরিয়ে পড়েন শঙ্খ ঘোষ। আর তাছাড়া একদিক থেকে বেদম সুবিধে করে দিয়ে গেছেন ভদ্রলোক। ভাবা প্র্যাকটিস না করার এমন সহজ সব ছুতো রেখে গেছেন যে মহায়কে প্রণাম করতে ইচ্ছে যায়। এই যেমন এক্ষুনি ঝড়াকসে একপিস শঙ্খবাবু নামিয়ে দিলাম, তাতে কত কথাই ওঁর মুখ দিয়ে বলে ফেলা গেল-নিজের তো পেটে বোমা মারলেও এসব কথা এমনি করে বেরোতো না।

    ----

    কেউ যেন বলেছিল। যত খচ্চরই হই না কেন, যতই গাছ-হারামজাদা হই, দিনের শেষে গামছায় মুখ মুছতে মুছতে হঠাৎ করে বাথরুমের জানালায় আগুনের আভা দেখে চমক একদিন না একদিন লাগবেই। কেননা, আগুন তো আবার একদিন না একদিন লাগবেই।আর তাছাড়া, "যতই খারাপ ছেলে হই না কেন"-নিরঞ্জন রায় মেঘে ঢাকা তারায় যেমন বলেন-"আমার তো একটা আদর্শ আছে!" যা শুনে ঐ বুক -মুচড়োনো ব্যথার মধ্যেও কুলকুলিয়ে একটা হাসি পায়। কালো রংয়ের হাসি।

    ভাবি , বুড়োর খপ্পরে একদিন আমরাও পড়েছিলাম। তারপর মতের অমিলে-স্বভাববশে বুড়োকে রাস্তার মোড়ে ফেলে চলেও এলাম। কিন্তু এখনো তার জন্য মনের কোণে একটু একটু কষ্ট হয়। লোকেরা পাগল ভাবে তাকে, লোকে ঢিল ছোঁড়ে তার দিকে। বুড়ো, তখন একটু মন কেমন করে তোমার জন্য। তোমাকে মনের মধ্যে নিয়ে বেড়াতে বেড়াতে আমিও কিছুটা বুড়ো হয়ে উঠেছি। শুধু গান গাই না,গলায় আনি না কোনো নাটুকে আবেগ। স্বাভাবিক থাকি, লোকে যাকে স্বাভাবিক বলে থাকে। খাই দাই, চকচকে ব্লেডে দাড়ি কামাই, কাজ করি, ঘুমোই। ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যাই।
    হাসি পাচ্ছে? আপনারাও হাসুন। কুলকুলিয়ে কালো রংয়ের হাসি। আমিও আপনাদের হাসিতে যোগ দেবো, অপ্রস্তুত। বোকার মত।
    -----
    আগস্ট মাসের শেষদিকে "সংস্কৃতি" চলাকালীন যখন মেয়েটির প্রতি ঐ অত্যাচার চলেছিল, তখন আমরা অনেকেই কিছুই জানতে পারিনি। যাদবপুরের ভেতরকার লোকজন ছাড়া। তারপর, এখন রেট্রোসপেক্টিভলি দেখছি, একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলে। ভিসি কিছুই করেন না। পুলিশ কিছু করে না। এই আজকে, অর্চনাদি'র সঙ্গে দেখা হল, লিবারেশন দিতে এসেছিলেন, বললেন- আঈআ যাদবপুর থানায় একটি ডেপুটেশন দিয়েছিল। পরে টাইমলাইন খতিয়ে দেখলাম, ঠিক। আর কোনো গণসংগঠন নড়েচড়ে বসে নি। এই ছেলেমেয়েরাই পুরো সেপ্টেম্বর মাসটা জুড়ে (মানে আজ অবধি) ধর্না-প্রতিবাদ চালিয়ে গেছে। খবরের কাগজে কোথাও হয়তো কোণেখাঁজে কিছু বেড়িয়ে থাকবে, লোকে সেসব চেয়েও দেখে নি। ষোলো রাতে জানতে পারি, কিছু একটা ঘটছে। কিছু একটা বড়সড় ঘটতে চলেছে। তারপর সতেরো সকালে কাগজ খুলে যথারীতি কিছু নেই, থাকা সম্ভব নয়, অত রাতের ব্যাপার। গুরুচণ্ডালীতেই জানতে পারলাম। সন্ধ্যেয় বাড়ি ফিরে এসে ফুটেজ দেখা। রক্তমাখা মুখে ছেলেটি বেরিয়ে আসছে। কার হাত ভেঙ্গে গেছে, কার কলারবোন। মেয়েদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফর্দাফাই। মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে গেছে, তার চোখেমুখে জলের ছিটে দিচ্ছে বন্ধুরা। সপাটে কিল-চড়-ঘুষি চালাচ্ছে, ছেলেমেয়েদের ধরে ধরে পোকামাকড়ের মত ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছে "রাজকুমার" ও তার কম্যান্ডোবাহিনী। হয়তো লাঠি চলেছিল। হয়তো চলেনি। তার দরকারও পড়ে না।

    নেট খুলে দেখি অজস্র , অজস্র প্রতিবাদী, রাগী গলা। রাগ গরগর করে , নিষ্ফল রাগ, শেকলে বাঁধা রাগ ল্যাজ আছড়ায় মনের ভেতরে। এর কী প্রতিবিধান হবে এই দানবের রাজত্বে? কত কী-ই তো ঘটে যায়, কামদুনি ঝিমিয়ে আসে, অনুব্রত-মনিরুল বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তাপস পালের কুটোটি কেউ নাড়তে পারে না। উল্টে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বকা খেয়ে যান। পারুই-মামলা মাথা কুটে মরে আদালতে- আদালতে। বছর ঘুরে যায়, সারদা'র সুরাহা হয় না।

    ----

    সম্প্রতি যে বইটি পড়ছি , সেটির নাম অ্যান্টহিলস অফ সাভানা। চিনুয়া আচেবের বই। একটি কাল্পনিক আফ্রিকান দেশে একনায়কের পায়ের তলায় মানুষ কিভাবে বেঁচে থাকে ও মরে যায়, তাই নিয়ে বই। বইটার একটা গল্প, একটি আফ্রিকান লোককথা মনে পড়ে যায়।খরায় জরোজরো আবাজন প্রদেশ থেকে জনজাতিদের একটি প্রতিনিধি দল রাজধানী বাসায় এসেছে হিজ এক্সেলেন্সী'র সঙ্গে দেখা করতে। প্রতিনিধি দলের সেই সর্দারের মুখে গল্পটি শুনছে আবাজনের ভূমিপুত্র , রাগী এক পত্রিকা-সম্পাদক ইকেম ওসোদি।

    এক ছিল চিতাবাঘ। আর এক ছিল কচ্ছপ। চিতাবাঘের অনেকদিনের সাধ, সে কচ্ছপের মাংস খেয়ে মুখ বদলায়। কিন্তু কচ্ছপকে বাগে পাওয়া যাচ্ছে না কোনোমতেই। একদিন চিতা চড়তে বেড়িয়েছে; রাস্তার ওপরেই দেখে গুটগুট করে হাঁটছে কচ্ছপ। "এইবারে বাগে পেয়েছি তোকে ! আজ আমার হাতে তোর নিশ্চিত মরণ !"-বলল চিতা।
    কচ্ছপ দেখে, শিয়রে শমন। আজ আর নিস্তার নেই। মরার আগে চিতার কাছে একটি শেষ আর্জি জানায় সে।
    -"নে, শেষ প্রার্থনা-টার্থনা যা করবার, তাড়াতাড়ি সেরে নে। আমি আবার খিদে সইতে পারি না একদম!" চিতা বলে।
    কচ্ছপ কিন্তু প্রার্থনার ধারকাছ দিয়েও যায় না। রাস্তার পাশের জমিতে সে চার হাত-পা দিয়ে দ্রুত বালি খুঁড়তে থাকে, খুঁড়তেই থাকে। আরে, করছিসটা কী ! হতভম্ব চিতা বলে।

    কচ্ছপ উত্তর দেয় ঃ"এউসে এভেন অফ্তের ঈ অম দেঅদ ঈ ৌল্দ ন্ত অন্যোনে পস্সিঙ্গ ব্য থিস স্পোত তো সয়, য়েস, অ ফেল্লো অন্দ হিস মত্চ স্ত্রুগ্গ্লেদ হেরে"।

    জাত পেসিমিস্ট তো ! এই গল্পটাই মনে পড়ে।

    ---
    কিন্তু আমার বুড়োহাবড়া সিনিক পেসিমিজম এর পরের ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিল না। আমাদের এই নতুন গল্পের খরগোশরা চিতা ও খরগোশের ঐ পুরনো গপ্পোকথাটি পড়ে নি বলেই মনে হয়। পড়লেও তারা তাতে বিশ্বাস করেনি একদমই। কেননা, এই ছেলেমেয়েগুলো, এই সোনার টুকরো ছেলেমেয়েগুলো, রাস্তার পাশে নেমে যায় না, হাত -পা দিয়ে বালি খুঁড়ে তোলে না। তারা, বিপুল দাসের সেই কবিতার প্রাণীটির মত মার খায়, আপাদমস্তক মার। এমন মার , যাতে ওদের মারের পালা শেষ হলে তাদের দেখায় ঠিক যেন ডোরাকাটা বাঘের মত। বাঘের মত তারা ঘুরে দাঁড়ায়, রাস্তায় নামে ঠিক তেমন গর্বিত পায়ে। তাদের গর্জন তারা ছুঁড়ে দেয় পৃথিবী বরাবর।
    ----
    কুড়ি তারিখের ঐ মিছিলে আমি কিছুতেই গিয়ে উঠতে পারিনি, হাজার চেষ্টা সত্বেও। নানাধরণের কমিটমেন্ট থাকে, এই বয়সে সেসব এড়িয়ে যাওয়া যায় না সব সময়। কিন্তু দুপুরবেলা বেরোনোর আগে টিভিতে চোখ রাখতে ভুলি নি। অঝোরে বৃষ্টি নেমেছে সেদিন সকাল থেকে, তার আগের কদিন ছিল রোদ্দুরজ্বলা। সেই বৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে ছেলেমেয়েগুলো হাঁটছে নির্ভয়। তাদের সর্বাঙ্গ দিয়ে টুপিয়ে জল পড়ছে, তাদের পোষাক ভিজে সপসপে। প্ল্যাকার্ডগুলো , ব্যানারগুলোর লেখা একটু একটু জলে ধুয়ে গেছে। থোড়াই কেয়ার তাতে। বুক ফুলিয়ে তারা শ্লোগান দিচ্ছে, গলার শিরা ছিঁড়ে গাইছে গান। লাঠির মুখে তাদের গীটার ও স্যাক্সোফোন বেজেছে, সেই গান তারা আর বন্ধ করবে না। অনেক ছেলেমেয়ে হয়তো এই প্রথম মিছিলে হাঁটল, আগেরদিন অবধি হয়তো তারা মিছিলের নাম শুনলে মুখ বেঁকিয়ে চলে যেত। স্বতঃস্ফুর্ততা তবে একেই বলে? নন্দীগ্রাম বাদ দিলে এমন কোনো র্যালি আমার চল্লিশোর্ধ জীবনে আর কখনো দেখেছি কি? আর মূলতঃ ছাত্রছাত্রীদের র্যালি? এমন একটাও দেখেছি? ভারী কোনো নাম নেই, বড় কেষ্টবিষ্টু নেই(কয়েকটি মান্য ব্যতিক্রম ছাড়া) , লোকে যাঁদের বুদ্ধিজীবী কিম্বা বিদ্বজ্জন বলে থাকেন নিজের নিজের অভিরুচি অনুসারে। অজস্র, অজস্র শ্লোগানের ঢেউ, একটা আরেকটার ওপর আছড়ে পড়ছে, ভাঙ্গছে, ফেনিয়ে উঠছে, মিশে যাচ্ছে আশ্লেষে। একটি ৪০৭-এ করে একদল ছেলে -হোক হোক হোক কলরব ! বলতে বলতে চলে গেল। হাজার কণ্ঠে হোককলরব গর্জে উঠল। আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। বলতে লজ্জা নেই।

    আর কী অভিনব সব শ্লোগান! পুলিশ তোমায় জাপটে ধরে/ গান শোনাবো বিশ্রী সুরে !! নন্দীগ্রাম মিছিলের সেইসব পোস্টারের কথা মনে পড়ে যায়- পুঁজির ঘোড়া খেপেছে/ বুদ্ধ তাতে চেপেছে/ অলরাইট ভেরি গুড/ আমরাও প্রস্তুত । খ্যাক খ্যাক করে হাসি পায়। কালোটালো নয়, পরিষ্কার সাদা রংয়ের ঝকঝকে হাসি। মনের ময়লা কেটে যায়। এরা মিছিল করছে, গাইছে (নেচেছিলও নাকি?) পাক্কা কার্নিভালের মেজাজে। শোকযাত্রা তো নয় ! আর , যেমন কিছুদিন আগে লিখেছিলাম-হাসি-গান-উল্লাসে শাসকের গা পুড়ে যায়, মোমের পুতুলের মত। যেমন ইরানে, তেমনি পশ্চিম বঙ্গে। এরা সব আজকের নন্দিনী আর রঞ্জন , রাজাকে গান শোনাতে এসেছে-পৌষের গান ! "না না গান নয়, গান নয়" বলতে রাজা পালিয়ে যাচ্ছেন কান চেপে ( এই নিয়েও চমৎকার প্যারডি হয়েছে, হোকঘেউঘেউ পশ্য)।

    সন্ধে সাতটা। তখনো অন্ধকারের মধ্যে মেয়ো রোড জুড়ে ছেলেমেয়েরা বসে আছে। তালি দিচ্ছে, গান গাইছে। আটজনের প্রতিনিধি দল গেছে রাজ্যপালের সাথে দেখা করতে। আমাদের তুমুল হৈ-হল্লা চলছে-চলবে। বহু, বহুদিন বাদে প্রাণ খুলে হাসি।বলি- বুড়ো, তোমার পাশে আজ অনেক ছেলেমেয়ে।তারা সবাই এই 'শিশুঘাতী নারীঘাতী কুৎসিত বীভত্সা'কে ধিক্কার জানাতে এসেছে। নতুন নতুন ছেলেমেয়ে সব। আহ, কতদিন বাদে কমরেড শব্দটা কেউ গর্বের সঙ্গে চীৎকার করে বলছে। প্রতিবাদে-প্রতিরোধে-প্রতিশোধে কমরেড / গড়ে তোলো তোলো তোলো ব্যারিকেড!
    ----

    মাঝেমধ্যেই আটষট্টির দুনিয়া-কাঁপানো পারীর ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এর তুলনা এসে পড়ছে। হয়তো এখনই ফার-ফেচড সেসব তুলনা। কিন্তু বহুদিনের বন্ধ্যা মাটিতে নতুন জল এসে পড়লে মানুষের উচ্ছ্বাসটা একটু বেশীই হয়। পারীর ছেলেমেয়েরা দুনিয়াটাকেই বদলে দিতে চেয়েছিল। গোটা দুনিয়া জুড়ে, ফ্রান্স জুড়ে তো বটেই,তারা একটা শক ওয়েভ পৌঁছে দিয়েছিল। ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়েছিল। কম্যুনিষ্টরা তাদের "বড়লোকের লাল্টু ছেলেমেয়ে" বলে ব্যঙ্গবিদ্রুপ করেছিল। বলেছিল ড্যাডি ডাকলেই সুড়সুড় করে সরে পড়ে যে যার বাবার ফ্যাক্টরির মালিক হয়ে শ্রমিক শোষণ শুরু করে দেবে। তারপর নেহাতই ব্যাজার মুখে, বাধ্য হয়ে পরিস্থিতি মেপে আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। শ্রমিকরা সরকারী শ্রমিক সংগঠনগুলির দর-কষাকষির রাজনীতি ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। মজুরিবৃদ্ধি নয়, তারা দখল করতে চেয়েছিল গোটা কারখানাটাই। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখনো অত দূর হাঁটে নি। হাঁটবে কিনা, ভবিষ্যতই বলবে। না হাঁটলেও কোনো অভিযোগ নেই। ওরা যথাসাধ্য করেছে। এবার দায়িত্বটা আমাদের-আমাদের রাজনীতিকদের, আমাদের সাধারণ মানুষদের, আপনার-আমার। আমাদের মধ্যে যাঁরা গান-গল্প-কবিতা লেখেন-ছবি আঁকেন। যাঁরা কারখানার মানুষদের মধ্যে কাজ করেন, যাঁরা গ্রামের মানুষদের মধ্যে কাজ করেন। আর ছাত্রছাত্রীরা যদি সত্যি সত্যি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়িয়ে বেড়িয়ে এসে বড় পৃথিবীটায় মেশেন , তাহলে তো সোনায় সোহাগা। এঁদের মধ্যে অনেকেই তা করেন, আমি জানি। আমরা যখন রাজনীতি-রাজনীতি খেলা করতাম, তখন কী-ই বা করেছি। কিন্তু এই অরুমিতা-কস্তুরী (কস্তুরী অবশ্য ছাত্রী নয় আর), এরা যে কোনো সংগঠনের সম্পদ।

    কিন্তু দুই আন্দোলনের মধ্যে মিলটা এই স্বতঃস্ফুর্ততায়। সহমর্মিতায়। যে , আমাদের বন্ধু মলেস্টেড হয়েছে, আমাদের বন্ধুরাই মার খেয়েছে, আমরা আর ব্যাকট্র্যাক করবো না। পুলিশ মারবে? কেরিয়ারের বারোটা বাজিয়ে দেবে? থানায় ডায়েরি করে ভিসা নিয়ে ঝামেলা করবে ? করুক ! আমি ফিরছি না। যে ইস্পাত এই কুড়ি-পঁচিশ বয়সই দেখাতে পারে।

    আর একটা মিল হয়তো এদের আর্বানিটিতে। ছোটখাটো পোষাকের মেয়েরা পিঠে-পিঠ ঠেকিয়ে লড়ছে, কোনো কনভেনশন্যাল মিছিলে যাদের কখনো দেখা যাবে না। এবং তাই নিয়ে এদের কোনো পাপবোধও নেই, ভাগ্যিস !

    ও হ্যাঁ, আর একটা অ্যানেকডোটাল মিল খুঁজে পেলাম। কোহন বেন্ডিটকে যখন দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে "অ-ফরাসী" বলে," জার্মান জ্যু" বলে, তখন মিছিলে শ্লোগান উঠছে- আমরা সবাই জার্মান জ্যু। মিল পাচ্ছেন? আমরা সবাই বহিরাগত !
    -----
    এখনো অবধি এই ছেলেমেয়েরা চমৎকার ঠাণ্ডা মাথার পরিচয় দিয়েছে। হিংসায় বিশ্বাসী নয় তারা, জানিয়েছে। মেয়েটির বাবার সম্বন্ধে কেউ যেন কোনো অসম্মানজনক মন্তব্য না করে, তার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। রাজ্যপালের কথায় সাড়া দিয়ে অবস্থান থেকে সরে এসেছে।বলেছে- এ অরে জুস্ত সোিঅল অ্তিভিস্ত্স ্হো অরে ফিঘ্তিঙ্গ হেরে ফোর অ িদের অইম। আমি সিনিক নই। আমি এদের বিশ্বাস করতে চাই। বিশ্বাস করতে চাই একটা নতুন সামাজিক-সাংস্কৃতি-রাজনৈতিক আন্দোলনের শুরু হবে এদের হাত ধরে। যে আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখিই দাঁড়াবে না, লিঙ্গবৈষম্য-পিতৃতন্ত্রর বিরুদ্ধেও দাঁড়াবে। নারী আন্দোলন-পরিবেশ আন্দোলন এদের থেকে প্রেরণা পাবে।সরবোন এসে দাঁড়াবে যাদবপুরের পাশে।ভবিষ্যতে কী হবে, তা ভবিষ্যতই বলবে। এরা সব নষ্ট হয়ে যাবে, ভিসির পদত্যাগ অবধি এদের দৌড়, এই ভেবে আমি এখনি নাক কোঁচকাবো না। যদি তাও হয়, তাহলেও নাক কোঁচকাবো না।কিন্তু ভুল করুক, ঠিক করুক, আমি চাইবো-যা করবার এই ছাত্ররাই করুক। কোনো রাজনৈতিক দল যেন এদের ছাঁচে ফেলবার চেষ্টা না করে। আমি , হ্যাঁ, ঘোষিতভাবে স্বতঃস্ফুর্ততায় বিশ্বাস রাখলাম।

    চন্দন সেনের প্রতি আমার গভীর প্রণয় আছে, এমন অপবাদ আমাকে যারা চেনে কেউ দেবে না। কিন্তু সেদিন চন্দন সেনের একটা কথা আমার খুব ভালো লেগে গেল, সত্যি, সময় কী অদ্ভুত ! যে, আমরা বুড়োরা যদি এই ছেলেমেয়েদের সামনে -পেছনে ব্যারিকেড করে না দাঁড়াই, তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।

    আমাদের দরকার একজন জাঁ পল সার্ত্রর। পারীর রাজপথে যিনি নিষিদ্ধ সোস্যালিস্ট পত্রিকা বিলি করে বেড়াবেন। রেনল্ট কারখানার গেটে হাতে মাইক নিয়ে ব্ক্তৃতা দেবেন।
    --
    আবার সেই পেসিমিস্ট মোডে ফিরে যাই। পেসিমিস্ট বলেই এই মুহূর্তের ছোট ছোট জয়গুলো আমাকে এখন আনন্দ দেয় বেশ। অনেক বড় বড় পরাজয়ের পাশে এই ছোট জয়গুলোও আছে-নবারুণ বলেছিলেন। এই আন্দোলন সফল যদি নাও হয়, তবু সে মরুপথে তার ধারা হারাবে না। ফল্গুনদী হয়ে সে বেঁচে থাকবে কারো কারো মনে। ছাইচাপা হয়ে থাকবে আগুন। তারপর আবার একদিন দপ করে সে জ্বলে উঠবে কখন, কোথায়, রাষ্ট্রের সে কথা জানতে ঢের বাকি আছে এখনো। আমার পরিচিত এক ডাক্তার, আমার থেকে সিনিয়র অনেকই। তাঁকে দক্ষিণপন্থী বলে জানতাম। হোককলরব শুরু হওয়ার পর থেকে ফেসবুকের পোস্টে পোস্টে তাঁর সমর্থন যেন উপচে পড়তে থাকল। স্মৃতিআক্রান্ত তিনি মনে করলেন তাঁর ছাত্রবেলার কথা। এ বি জে ডি এফ আন্দোলনে তাঁর গলা মেলানোর কথা। আজ অনেকদিন বাদে সেই প্রথম মিছিল প্রথম প্রেমিকার সিপিয়া টোনে রাঙানো ছবির মত ফিরে এসেছে তাঁর কাছে। এই ছেলেমেয়েরাও এই মিছিলের কথা মনে রাখবে হয়তো আজীবন, পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাক না কেন। নন্দীগ্রামের মিছিল যেমন একটু হলেও বদলে দিয়েছিল আমাদের অনেককেই। ফুলেশ্বরে ভিখারী পাসোয়ানের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর লিবারেশনের ডাকে আমার সেই প্রথম মিছিল -আজো মনের মধ্যে টাটকা। তারপরে তো কত মিছিলে হাঁটলাম, সব কি মনে পড়ে ! মনে থেকে যায় শুধু আইসার দিল্লী র্যা লির সময় চন্দ্রশেখরের হাসিমুখ। তার কিছুদিন পরেই চন্দ্রশেখর খুন হবেন সিওয়ানে।

    ----

    শেষ করি তাহলে আবার একটু শঙ্খ ঘোষ দিয়ে? ( ওঃ, শঙ্খবাবু, এত যে ধার জমিয়ে তুলছেন, শুধবো কবে!)

    আমাদের ইতিহাস নেই
    অথবা এমনই ইতিহাস
    আমাদের চোখমুখ ঢাকা
    আমরা ভিখারী বারোমাস
    পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে
    পৃথিবী হয়তো গেছে মরে
    আমাদের কথা কে বা জানে
    আমরা ফিরেছি দোরে-দোরে।
    কিছুই কোথাও যদি নেই
    তবু তো কজন আছি বাকি
    আয় আরো হাতে হাত রেখে
    আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি।
    (আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ | ৬০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • I | 24.99.96.191 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৯:২৯72419
  • ঘেঁটে গেছে। কচ্ছপ বলেছিল-Because even after I am dead I would want anyone passing by this spot to say, yes, a fellow and his match struggled here."
    আর হোককলরব টীমের পক্ষ থেকে-
    We are just social activists who are fighting here for a wider aim.
  • Blank | 69.93.254.24 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৯:৩৮72420
  • পড়ে ফেল্লাম সবার আগে। বাকিটা চুপ
  • siki | 132.177.12.110 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০০72421
  • ঘুম থেকে উঠে আজ অনেকদিন বাদে ইন্দোদাদার লেখা পড়লাম।

    চুপি চুপি বলে যাই, কাল জীবনে প্রথমবার এমন সমাবেশে গেলাম। আমি এর আগে কোনও সমাবেশে বসি নি, কোনও মিছিলে পা মেলাই নি।
  • aranya | 154.160.98.31 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫২72422
  • 'আবার যেদিন তুমি সমুদ্র স্নানে যাবে, আমকেও সাথে নিও, নেবে তো আমায়'

    - আজ সমুদ্র স্নানে যাচ্ছে অনেকেই
  • আবির | 76.215.181.252 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৪:৫৫72428
  • পড়ে ফেললাম। চোখের কোনে বাষ্প জমল। যে কথাটা হরবখত মনে হয় - কি করছি - সেই কথাখানাই আরো প্রবলভাবে মনে হতে লাগল। একদিন, একদিন ঠিক ভোর হবে। ফেসবুকে শেয়ার করলাম।
  • ~ | 212.79.203.43 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৫:৪৫72423
  • এমনভাবে মারো বিপুল চক্রবর্তী না? অনুশ্রী - বিপুল ...
  • তাপস | 233.29.204.178 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৫:৫০72424
  • এ ইন্দো
  • b | 135.20.82.164 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৭:৩৮72425
  • ফে বু তে শেয়ার করলাম।
  • de | 69.185.236.51 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১১:৫১72427
  • অপটিমিস্টিক লেখা - ভালো লাগলো পড়ে!
  • Saswata Banerjee | 159.169.127.73 (*) | ০২ অক্টোবর ২০১৪ ১১:২৩72429
  • খুব ভালো লাগল। এই যে "বিশ্বাস করতে চাওয়া", বারবার চাওয়া, এই চাওয়াটুকুই সংক্রাম চিরকাল রয়ে যায়।
  • q | 208.7.62.204 (*) | ০৩ অক্টোবর ২০১৪ ০৭:৫০72430
  • কিন্তু অন্দোলনটা কি ম্যাদামেরে গেল? কোথায় সেই আটষট্টির দুনিয়া-কাঁপানো পারীর ছাত্র আন্দোলন আর কোথায় জাঁ পল সার্ত্র! এখন তো প্যান্ডাল হপিং করতে করতে ঝালমুড়ি চেবাতে চেবাতে ম্যাডক্সে এসে রিভলিউশন ঠেকেছে! আর শ্রমিকশ্রেনী? মারুতির থেকে পুরো একজন শ্রমিক এসে কবিতা পড়ে গেল বটে, তারপরে তো আর কারুর দেখা পাওয়া গেলনা।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন