এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • গেল যে খেলার বেলা

    ইন্দ্রনীল ঘোষদস্তিদার লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ৩১ মে ২০১৩ | ৪৭৭০ বার পঠিত
  • এমনিতে রবীন্দ্রকবিতা আজ বহুকাল হল তেমন করে পড়া হয় না। তেমন টানে না বলে পড়ি না, নাকি পড়া হয় না বলেই টানে না-জানি না। তিনজোড়া লাথির ঘায়ে রবীন্দ্র রচনাবলী তো কবেই লুটায় পাপোষে, আর এই ২০১৩তে  এত আভাঁ গার্দ ছেড়ে রবীন্দ্রনাথ পড়বার তেমন কারণই বা কী আছে-এইসব হয়তো আবছা করে ভেতরের মন ভাবে।

    কিন্তু এমন দিন তো হয়, যেমন আজকের এই দিন-খুব গরমের পর হঠাৎ  করে মেঘ ঘনিয়ে আসার মত কালো দিন, ভেজা। যখন ঐ জাব্বাজোব্বা-আলখাল্লা-দাড়িগোঁফের  ভেতরের প্রবল প্রতাপী, প্রেমিক ও দুঃখী মানুষটি হঠাৎ করে সামনে এসে দাঁড়ান।  গান নিয়ে নয়, গান তো হামেশাই আসে,- কবিতা হাতে নিয়ে দুঃস্বপ্নের মধ্যে চমকে দিয়ে বুকে হাত রাখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজকে যেমন।

    স্কুলে পড়তে আমাদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন দেববাবু। সেই দেববাবু, একদিন  সকালে স্কুলে গিয়ে শুনলাম -মারা গেছেন। খুব হঠাৎ করে।  মানে আছে দেববাবুর স্মরণসভায় আমাদের আর এক জন শিক্ষক এই রবীন্দ্রকবিতাটি আবৃত্তি করেছিলেন-দ্বিধা।  সেদিন থেকে "দ্বিধা''  আমার সঙ্গে সঙ্গেই থাকে, মনের ঘুমের মধ্যে। আজকে এই ভেজা দিনে সে আবার জেগে উঠল। ঋতুপর্ণ ঘোষের শেষ যাওয়া দেখতে দেখতে। মাথায় খয়েরি পাগড়ি, গায়ে কালো আলখাল্লার মত পোষাক পরিয়ে ভালো করে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেমন করে সাজতেন আজকাল ঋতুপর্ণ। কে তোমারে এ বেশভুষা/পরাইয়া দিল শুনি-লালন গেয়েছিলেন। কিন্তু সে তো জ্যান্তে মড়া মানুষজনকে নিয়ে। আমাদের ঋতুপর্ণ ঘোষ আর জীবিত নেই। জ্যান্তে মড়া ছিলেন কি না, থাকা ওঁর পক্ষে সম্ভব কিনা, লালনের গান ওঁর বেঁচে থাকাকে বিদ্ধ করত কিনা জানি না। লালনের এই গান, ওঁর মৃত্যুকে অন্ততঃ  বিদ্ধ করল না। ঋতুপর্ণর সকালবেলার মৃত্যু, আর এই সেজেগুজে চলে যাওয়ার পথের ধারে এসে দাঁড়িয়েছেন লালন নন, রবীন্দ্রনাথ । ঋতুপর্ণ'র  পরম সুহৃদ ছিলেন। নানান ইন্টারভিউয়ে শুনেছি।

    বাহিরে যার বেশভূষার ছিল না প্রয়োজন

    হৃদয়্তলে আছিল যার বাস

    পরের দ্বারে পাঠাতে তারে দ্বিধায় ভরে মন

    কিছুতে হায়, পায় না আশ্বাস......

    .....চন্দনের গন্ধজলে মুছালো মুখখানি

    নয়নপাতে কাজল দিল আঁকি

    ওষ্ঠাধরে যত্নে দিল রক্তরেখা টানি

    কবরী দিল করবীমালে ঢাকি

    ভূষণ যত পরালো দেহে

    তাহারি সাথে ব্যাকুল স্নেহে

    মিলিল দ্বিধা, মিলিল কত ভয়

    প্রাণে যে ছিল সুপরিচিত

    তাহারে নিয়ে ব্যাকুল চিত

    রচনা করে চোখের পরিচয় ।

    --

    প্রথম উনিশে এপ্রিল দেখা। প্রথম দেখায় চমকে ওঠা।  এই যে, সত্যজিত রায়ের ঝাণ্ডা বয়ে নিয়ে যাওয়ার লোক এসে গিয়েছে। তারও বেশ কিছুকাল পরে হীরের আংটি দেখলাম। ভালোই লেগেছিল। ডেবিউ ফিল্ম হিসেবে যথেষ্ট ভালো।  মনে আছে আমরা  এন আর এসের বন্ধুরা অনেকে মিলে হই হই করতে করতে  ছবিঘর-এ গিয়ে উনিশে এপ্রিল দেখে এসেছিলাম। ঋতুপর্ণ'র প্রিয় সার্কিট প্রিয়া-মিত্রা'য় ছবি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হতে তখনো অনেক দূর।  এর অনেক পরে টিভিতে সম্প্রচারিত অপর্ণা সেনের সঙ্গে আলাপের সময় শুনেছিলাম সেসময়কার ঋতুপর্ণ  নাকি  বলেছিলেন-যেসব দর্শক আমার সিনেমা দেখতে আসবেন, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসন মেজে দিয়ে আসতেও রাজী। কিন্তু এতটা দুর্ভাবনার কিছু ছিল না। দর্শক প্রচুর এলেন। বুদ্ধিমান নাগরিক যুবতী ও যুবকরা  আবার বাংলা সিনেমা দেখতে ফিরে এলেন। যদিও তখনো বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত রয়েছেন, মৃণাল সেন আরো ফিল্ম বানাবেন। কিন্তু সে জৌলুষ  ফিকে হয়ে আসছে। গৌতম ঘোষ মধ্যমানে আটকে গেছেন। উৎপলেন্দু বেঁচে আছেন কিনা তাই মনে পড়ছে না।

    তারপর এক সময় মধুচন্দ্রিমা শেষ হয়। আমরা ধীরে ধীরে ঋতুপর্ণ'য় অভ্যস্ত হয়ে উঠি। ঋতুপর্ণ সত্যজিত রায় নন, এই কথাটা  ভারী পাথরের মত মনের ঘোলাজলে একটু একটু করে  সিংক ইন করে। অজস্র ফিল্ম তৈরী হতে থাকে। কুড়ি বছরের ডিরেকটোরিয়াল কেরিয়ারে  কুড়িখানা  ফিল্ম,  গড়ে বছরে একটা।  খুব খুঁতখুঁতে ও যত্নবান পরিচালকের পক্ষেও এতগুলো ফিল্মের প্রতি সমান জাস্টিস করা সম্ভব  নয়। কিছু ফিল্ম ভালো লাগে, কিছু মাঝারি, কিছু বেশ খারাপ। কোনো ফিল্ম দেখে  আবার চমকে উঠে বসি-চেনা ঋতুপর্ণ আবার ফিরে এসেছেন। ইস্পাত আবার জং ঝেড়ে ফেলে  তার নীল ফিরে পেয়েছে। এক্ষুণি মনে পড়ে যাচ্ছে বাড়িওয়ালী ফিল্মের সেই শুরুর  মনসার গীতি। কোমল গান্ধারের আমের তলায় ঝামুর ঝুমুর মনে করিয়ে দিয়েছিল। উৎসব মনে থাকে। তিতলি। শুভ মহরত।শুভ মহরতে সুমন্তর মুখের খিস্তি আর রাখীর মুখে-ফের যদি চোপা করবি... শুনে আশা হয় , একটু যদি ঘুরে দাঁড়ান ! একটু যদি অন্যরকম হয় চেনা ঋতুপর্ণর মধ্যবিত্ত-উচ্চ-মধ্যবিত্ত'র গণ্ডী কাটা সিনেমার জগৎ !

     সব ফিল্ম তো দেখাও হয় না, অসুখ কিম্বা অন্তরমহল যেমন। চোখের বালি দেখতে দেখতে ঘুম পেয়ে যায়। হল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তার মধ্যেও গান নিয়ে ঐসব যাদুর ছোঁয়া- ও জীবন রে, ছাড়িয়া যাস না মোরে; কিম্বা শেষে দুই রবীন্দ্রগানকে মিশিয়ে ঐরকম মারাত্মক নির্মাণ-এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম আর আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে। হয়তো মুকুটটা দেবজ্যোতি মিশ্ররই প্রাপ্য, কিন্তু কোথাও ভাবতে ভালো লাগে, এর একটুখানি ভাগীদার ঋতুপর্ণ ঘোষও। হয়তো পার্শিয়ালিটি। কৃতজ্ঞতাবোধ।

    মনে হয়, আর একটু যদি কম গল্প বলতেন ! যদি আর একটু পরাবাস্তবের দিকে ঝুঁকে যেত ওঁর সিনেমা ! যদি চেনা সেটের বাইরে , ইনডোরের  বাইরে বিশাল নীল আকাশের নীচে, বিশাল মাঠের মধ্য দিয়ে দিগন্তের দিকে হেঁটে যেত ওঁর সিনেমা ! পর্দাজোড়া নদীর মধ্যে বিশাল জালের ফাঁক দিয়ে চিক চিক করে উঠত জলের রূপোলী শস্য,আর পাগলের ভাঙা মুখ! যদি কেউ বলে উঠত-কে মা ! মুখখান তো দ্যাখলাম না ! এত রক্ত ঝরে যাচ্ছে দান্তেওয়ারা-বস্তার-জঙ্গলমহলে, এত লাঠি উঁচিয়ে উঠছে  নিয়মগিরি-কন্ধমাল-পারাদ্বীপে, সে সব কোথায় ওঁর সিনেমায় ! কিম্বা এই যে কাছের কলকাতা কেমন রাগী আর অন্তর্ঘাতী হয়ে উঠছে আমাদের নিশ্চিন্ত ঘুমের ঠিক নিচে, হাইরাইজের নিচে-কোথায় তারা? কোথায় স্থানীয় সংবাদ? ফ্যাতাড়ুরা কোথায়?

    আসলে সব উইশফুলফিলমেন্ট। আমরা এই যারা অনেক কাল হল কাজের মাসি আর বাজারের দোকানী ছাড়া আর কোনো ছোটলোকের সঙ্গে মিশি না, আমরা যারা এককালে রাস্তায় দুয়েকপা ঝাণ্ডা হাতে মিছিলে হাঁটতাম, যারা পাহাড়ে চড়ার স্বপ্ন দেখেই কাটিয়ে দিলাম আর বচ্ছরান্তে এক হপ্তার ছুটি নিয়ে দার্জিলিং-কালিম্পং-নেওড়া ভ্যালির ইকো হাটে ঘুরে বেড়িয়ে এলাম,তারা কি একজন রেনম্যান চেয়েছিলাম ? ঋতুপর্ণ'র কি দায় রয়েছে  নিজের জীবনটাকে  -ও সেই সঙ্গে সিনেমাকে-উল্টে দিয়ে নতুন রাস্তা খুঁড়ে চলবার? ঋতুপর্ণর কি দায় ছিল কোনো আমাদের কাছে?

    হয়তো ছিল। দর্শকের কাছে না হলেও, নিজের কাছে। হয়তো ক্লান্ত লাগছিল খুব। সেইজন্যেই  নিজেকে লেখা চিঠিতে নিজেকে  নিয়ে ঐরকম বিরক্তি। ঋতুপর্ণ'র সিনেমায় রোদ্দুর বলতে  পর্দার আড়াল কিম্বা চিকের ফাঁক দিয়ে এক চিলতে আলো, সেখানে সারাক্ষণ মানুষেরা গম্ভীর চিন্তা করে , কাঁদে,  ঝগড়া করে উঁচু গলায় অথবা মনে মনে;  প্রাণের হুল্লোড় নেই কোনো; ঋতুপর্ণ পালিয়ে যেতে চাইছিল,পর্দায় রুমাল বের করবার খসখস অথবা কান্নার শব্দ থেকে,ঋতুপর্ণ পালিয়ে যেতে চাইছিল ঋতুপর্ণ'র থেকে।

    কিম্বা ফার্স্ট পার্সন-এর কলামে। এতগুলো পুরস্কার, আলোর ঝলকানি আর গাদা গাদা সিনেমার মাঝখানে সার্থক পরিচালক ভাবছেন-জীবন বয়ে গেল। সময় পেরিয়ে গেল। যে সিনেমাটা করার কথা ছিল, সে আর হল না। সময়ের অভাব নয়। অক্ষমতা।

    ---

    তারপর ধীরে ধীরে বাঁক নিতে থাকে ওঁর জীবন ও শিল্প। শুরুর সেই রোগাটে মুখের সুদর্শন যুবক, একমাথা কোঁকড়া চুল, তাঁর বয়স বাড়ে। চুল কমে আসে। মেদ জমে   মুখে ও শরীরে।  কথায় ও ভঙ্গিতে মেয়েলীভাব বাড়ে। পোষাকে  মেয়েলীভাব বাড়ে। আমরা যারা বদল চেয়েছিলাম, ঘাবড়ে যাই। আমাদের মধ্যবিত্ততা আর চেনা বিপ্লবীয়ানা দিয়ে এই বদলকে অ্যাকোমোডেট করতে পারা যাবে না, জানা কথা।কিন্তু সব জানা উত্তরই  তো সহজ  নয়।  আমরা মানুষটাকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ি,ইন্টেলেকচুয়াল  পরিচালক আবার এমনি হয় নাকি! সে হয় গাদা গাদা বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকবে, পাইপ চিবোবে, নয়তো পর্দায় মদ ঢেলে দেবে।  এ কেন মাথায় পাগড়ি পরে, ভ্রু প্লাক করে, এত চড়া প্রসাধন করে,কানে দুল পরে। অস্বস্তি ঢাকতে আমরা হাসাহাসি করি কিম্বা রেগে যাই। আমাদের সাংবাদিক লেখেন- জয়া বচ্চন  মঞ্চে উঠে একটু হেসে ঋতুপর্ণকে বললেন-বটুয়াটা ধর ! লিখে মুখ টিপে হাসেন। আমরা , খবরের কাগজ পড়ুয়ারা মনে মনে কিম্বা সোচ্চারে হাসি।  আমাদের ক্যারিকেচার শিল্পী ছুরির ধারের মত ক্যারিকেচার করে দেখান। আমরা  চিত্রাঙ্গদা'র পোস্টারে ঐ রূপান্তরকামী   তৃতীয় যৌনতার মানুষকে   দেখে মুখ বেঁকিয়ে নিই। আমরা, হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা মৃত্যুর দিনেও বলাবলি করি-আচ্ছা, ও কবে থেকে ছক্কা হল , বলো তো ! ঋতুপর্ণ প্রমাণ করে দেন, আমাদের চোখের চামড়া টেনে তুলে প্রমাণ করে দেন- সম্মান-যশ-প্রতিপত্তি-সাফল্য এই সব অর্জনকে ঢেউয়ে ঢেউয়ে মরা আগাছার মত, মৃত জলজন্তুর মত পাড়ে ফেলে রেখে জীবনের সমুদ্র দূরে চলে যায়। বহুদূরে। প্রান্তিকের জন্যে, ছক ভাঙা বিদ্রোহীর জন্যে তার সহানুভূতি নেই এক ফোঁটাও। কাঙাল ও একলা তৃতীয় মানুষটি বিকেলবেলার সমুদ্রের পাড়ে বসে থাকেন। একা।  সামনে তাঁর ঝুড়ি ভর্তি বাতিল খেলনা।তাদের নাম সাফল্য। আর  খ্যাতি।

    ----

    সব চরিত্র কাল্পনিক দেখে এক সময় আমায় বোঙায় ধরেছিল। সে কথা এই মায়াপাতার লোকজন কিছু কিছু জানেন।  তারও আগে রেইনকোটের ভেজা  বিষাদ। কিম্বা দোসর-এর সেই সাদা -কালোর নিষ্ঠুর  মায়া। মৃত্যু-অপ্রেম আর ভালোবাসার বেঁচে থাকার  গিঁট-পড়া কাটাকুটির মধ্যে বিষাদ তার থাবা নামাচ্ছে। বিষাদ, স্নেহময় , তার নখ বসাচ্ছে।কর্তব্য,পূর্বনির্ধারিত। পৃথিবীর কোনো গানের সুর-কোনো জলের স্বাদ,পাতালের  কোনো ভোগবতীর ধারা, ফলের রসালতা, পৃথিবীর কোনো ওষুধ, কোনো অ্যালপ্রাজোলাম-ফ্লুওক্সেটিন-সিটালোপ্রাম এই মহৎ বিষণ্ণতার  শালপ্রাংশুমহাভুজ শরীরে একটি আঁচড়ও কাটতে পারে না।  এই বিষণ্ণতার রাস্তা ধরে ঐ তৃতীয় মানুষটি হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছেন। পাহাড়ী রাস্তার মেঘ-কুয়াশা-তিস্তাজলের মধ্য দিয়ে। সখী হাম মোহন অভিসারে যাঁউ...

    শুধু আমরা যারা পড়ে থাকি, যাদের পালাবার রাস্তা অথবা সাহস নেই কোনো, যাদের পরদিন সকালে উঠে রোগী দেখতে যেতে হয় কিম্বা কোড লিখতে, রাতে ক্লান্ত হয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে ফিরে আসতে হয়, সন্তানের সঙ্গে যাদের স্নেহময় কথকতার দিনগুলি সীমিত, নারীর সঙ্গে ভালোবাসার কথা বলা যাদের অনেক কাল হল ফুরিয়ে গেছে, সব জল যাদের শুকিয়ে আসছে, তারা আজকের এই কয়েকটা ঘন্টা থম মেরে বসে থাকি। যেন মৃত্যু  এসে সজোরে  পাঞ্চ করেছে নাকের ওপরে।  তারপর নাম্বনেস কেটে গেলে পুরনো জল ফিরে আসতে থাকে আবার। রবীন্দ্রনাথ ফিরে আসেন আবার। প্রবল, প্রেমিক ও দুঃখী।

    শ্রাবণের মেঘ কালো হয়ে নামে বনের শিরে,

    খর বিদ্যুৎ রাতের বক্ষ দিতেছে চিরে,

    দূর হতে শুনি বারুণী নদীর তরল রব-

    মন শুধু বলে অসম্ভব, এ অসম্ভব।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ৩১ মে ২০১৩ | ৪৭৭০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • siki | 132.177.209.250 (*) | ৩১ মে ২০১৩ ০৭:০৯76522
  • লেখাটার জন্য থ্যাংকিউ, ইন্দোদাদা।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ৩১ মে ২০১৩ ০৭:১৮76523
  • 'অসম্ভবের মত অবাক করা' এই জীবন। আর কলম ধরা এই হাত।
  • কৃশানু | 213.147.88.10 (*) | ৩১ মে ২০১৩ ০৭:২০76524
  • আর এটাও রেজিস্টার্ড থাকা উচিত, সব চরিত্র কাল্পনিক এর লেখক কৃত সমালোচনা পড়ে সিনেমাটা আবার দেখেছি। নতুন করে ভেবে দেখেছি। না ভালো লাগা থেকে পরম ভালো লাগাতে পৌছেছি সেই সমালোচনার হাত ধরেই।
  • kk | 78.47.250.76 (*) | ৩১ মে ২০১৩ ০৯:৫০76525
  • ভালো লাগলো।
  • pinaki | 56.17.190.22 (*) | ৩১ মে ২০১৩ ১০:০২76526
  • মায়া, মায়া।
  • arindam | 69.93.240.78 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০১:৩৪76527
  • খুব ভালো লগল
  • Blank | 122.79.36.94 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০২:০৪76533
  • ইন্দো দার লেখা খুব ভালো লাগলো
  • sosen | 125.241.16.178 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৪:৩৩76528
  • "ঋতুপর্ণ পালিয়ে যেতে চাইছিল ঋতুপর্ণ'র থেকে" । এই পালিয়ে যাওয়াটা শেষ হলনা, কোথাও গিয়ে পৌঁছল না, সে প্রসেসটাই চলছিল-আক্ষেপ রয়ে গেল।
  • জিগীষা | 127.194.103.4 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৪:৪২76534
  • খুব ভাল লাগল!
  • শ্রী সদা | 132.176.98.243 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৪:৪৮76529
  • এই লেখা পড়ার পর আর কিছু বলার থাকতে পারে কি? সংক্ষেপে বলে যাই, মুগ্ধ হলাম।
  • san | 24.98.30.107 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৪:৫৫76530
  • মুগ্ধ হলাম , আমিও।
  • গান্ধী | 69.93.247.27 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৫:০০76531
  • পড়লাম
  • Diptayan | 24.99.137.117 (*) | ০১ জুন ২০১৩ ০৯:৫৩76532
  • ইন্দো দা - সমানভাবে প্রাসঙ্গিক এবং যথাযত।
  • kumu | 52.109.107.77 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৩:৩৩76535
  • ইন্দো কেমন করে এমন লেখে।সব চরিত্র কাল্পনিক ইন্দৈ তো চিনিয়ে দিল ঐ অসধারণ নির্মানকে।
    লেখক ও সম্পাদক ঋতুপর্ণকে নিয়েও একটু লিখুক কেউ।
  • kumu | 52.109.107.77 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৩:৩৫76536
  • সব চরিত্র কাল্পনিক - ইন্দো ই
  • nina | 78.34.162.175 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৪:২০76539
  • অসম্ভব ভাল লেখা !! মুগ্ধতা জানাই একরাশ চুপকথায়---
  • papon | 127.201.100.255 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৫:৪৪76540
  • ইন্দ্রনীল,
    আপনার লেখা পড়ে ভরসা পেলুম। একটা আহত বিপন্ন সময়ের মানুষ আমরা। আমাদের বাংলা বাজারের লেখায় যদিও তার আভাস সব সময় মেলে না। তাই আপনার লেখাটা পড়ে এক ধরনের বিধুরতার জন্ম নেয়। আবার মনে হয় সব্বাই ত এখনও মাথায় বহরে ২৬ ইঞ্চি হয়ে ওঠেনি। ধন্যবাদ আপনাকে।
  • Pragati | 126.68.74.42 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ০৬:০৭76537
  • ভাবা যায়না, এমন লেখা!
  • রূপঙ্কর সরকার | 126.203.223.183 (*) | ০২ জুন ২০১৩ ১১:২১76538
  • দেরী করে পড়লাম। অসম্ভব ভাল লেখা। অসম্ভব তো হতে পারেনা, তাহলে হ'ল কীকরে। মানে, অন্য কারও পক্ষে অসম্ভব।
  • শঙ্খ | 118.35.9.186 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০২:৪৭76544
  • লেখাটায় এত ভালো দৃশ্যকল্পের ব্যবহার, ভাবা যায় না। আর সেই সঙ্গে সংযম। নিবিড় প্যাশনকেও কতটা পরিমিতি দিয়ে প্রকাশ করতে হয়, নিক্তি মেপে, দেখলুম। ভালোলাগাটুকু জানিয়ে গেলুম।
  • KallolB | 131.241.218.132 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৬:১৫76541
  • অনেক দিন আগেকার সেই দেববাবুর স্মরণসভা আর কিছুদিন আগেকার "সব চরিত্র কাল্পনিক" আবার একাকার হয়ে গেল।পুরোনো নস্ট্যালজিয়া ফিরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ ডাক্তার-বাবু।
  • ranjan roy | 24.99.232.245 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৬:৪০76545
  • মাঝে মাঝে ইন্দোর এমন সব লেখা আমাদের বাধ্য করে নিজেদের নাড়ি দেখতে- বেঁচে আছি কি না!
    অথবা ভিতর থেকে উঠে আসে সেই হাহাকার-- কিছুই তো হল না!
  • শিবাংশু | 127.201.164.176 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৭:০০76542
  • ভালো লিখেছো ডাক্তার। প্যাশনেট, বিজড়িত ও মুগ্ধ বিবরণ। তার অন্য মাত্রার বেঁচে থাকা, তার নিজস্ব হাতকড়া ভাঙতে চাওয়ার আকুল আর্তি, তার জীবনের অহেতুক অপচয়, শেষ পর্যন্ত শুধু বিষাদঋতু হয়ে ... দেখিতে না পাও, ছায়ার মতন...
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.215.151 (*) | ০৩ জুন ২০১৩ ০৭:১১76543
  • লেখাটা ভালো লাগল খুবই।
  • Pramit | 169.53.46.143 (*) | ০৪ জুন ২০১৩ ০৭:২০76546
  • এক অসাধারণ মুগ্ধতা ছুয়ে গেলো। এক অদ্ভুত ভালোলাগা আর খারাপলাগার দোলার অনুভূতি অনুভব করলাম।
  • de | 190.149.51.68 (*) | ০৪ জুন ২০১৩ ০৭:৩৩76547
  • মনখারাপ করা বিষাদে ছেয়ে যায় চরাচর -- ডাগদারের লেখা পড়লে!
  • jhumjhumi | 127.194.246.152 (*) | ০৬ জুন ২০১৩ ০৭:৩৫76548
  • পড়লাম। ভালো লাগলো।
  • i | 147.157.8.253 (*) | ০৭ জুন ২০১৩ ০৪:৪৬76549
  • ইন্দ্রনীল,
    তোকে যে সেই চিঠি লিখেছিলাম সব চরিত্র কাল্পনিক দেখে-লিখেছিলাম অ্যাকোরিয়ামের সেই সব শৌখিন মাছ আমরা-অগভীর ক্লোরিন জল সাঁতরে ফিরি-ঘাই দেওয়ার সাহস নেই- প্রাচীন দীঘির গভীরে বাঁচতেও ভয় হয়-দমবন্ধ হওয়ার ভয়-শ্যাওলার ভয়, গুল্মের ভয়, শিকড়ের ভয়।
    এই অগভীর ক্লোরিন জল, পরিশ্রুত হাওয়ার বুড়বুড়ি, নিচে হাল্কা বেগুণি গোল পাথর - অভ্যস্ত হয়ে গেছি। পথঘাট-শপিং মল-এই সব ফেস বুক, চ্যাটিং-চেনা মানুষজন-খুব ভালো আছি অভ্যস্ত জীবনে।
    কিন্তু কোথাও একটা ভঙ্গুর গোলক নিয়ে সমস্তদিন কেউ লোফালুফি খেলে - ডান হাত থেকে বাঁ হাত, বাঁ থেকে ডান - খুব সাবধানে খেলে সারাদিন - হয়তো সারাজীবন-মাটিতে পড়তে না পায় -পড়ে গেলেই ভেঙে চুরচুর হয়ে যাবে, ভেতর থেকে বেরিয়ে আসবে এ যাবৎ জমাট বাঁধা কুয়াশা , মেঘ, জলকণা -ঘিরে নেবে চারদিক- এই আকাশ, এই গাছপালা, এই সব পথঘাট-

    তোর এই লেখাটা তেমন, ঋতুপর্ণর চলে যাওয়ার মতই-যেমন লিখলি তুই-ঋতুপর্ণয় আমারা অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছিলাম যখন, তখনই কাচগোলক চৌচির হল। তোর লেখাটা এল সঙ্গে সঙ্গেই। এখন গোলক ফেটে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে কুয়াশা-ঘিরে নিচ্ছে এই অভ্যস্ত বসবাস। সমস্ত কাননভূমি কূজনহীন এখন -অনন্ত কুয়াশায় পাকদন্ডীতে একলা দাঁড়িয়ে আমি-সামনে খাদ।

    লিখেছিলাম, ঘাই দিতে ভয় করে। ঘাই তো দেব না। সাঁতার তো কেটেই যাব অগভীর জলে, দানা খুঁটে খাবো।
    তবু, এর মধ্যেই এই একলা হয়ে যাওয়া মুহূর্তটার খুব দরকার ছিল রে আমার। খুব দরকার ছিল। জলের কাছে কথা বলার-দুটো এলোমেলো অগোছালো কথা বলার খুব দরকার ছিল।

    তোর লেখাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
  • I | 24.99.190.232 (*) | ০৮ জুন ২০১৩ ০৩:০৪76551
  • ইন্দ্রাণীদিকে ধন্যবাদ দেওয়া যায় না। শুধু অজস্র ভালো লাগা জানালাম।
    পাঠককে কৃতজ্ঞতা। মিঠুকে ভালোবাসা জানাই কবিতাটি মনে জাগিয়ে দেওয়ার জন্য।
  • nina | 78.34.162.175 (*) | ০৮ জুন ২০১৩ ০৫:৫৭76550
  • উফ! এই " I & I " যুগলবন্দী হয় যখন তখন সব কিছু থেমে যায়--শুধু থাকে রাশি রাশি মুগ্ধ্তা !!!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন