এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • দেশভাগঃ পশ্চিম বঙ্গের মুসলমান এবং ধারাবাহিক অবক্ষয় - দ্বিতীয় পর্ব

    দেবব্রত চক্রবর্তী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৮ জুলাই ২০১৬ | ৬২০৪ বার পঠিত
  • প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় পর্ব

     দেশভাগ,দাঙ্গা এবং বাঙলার বাস্ত্যুচুত মুসলমান 


    কিন্ত ইতিমধ্যেই বাঙলায় মুসলমান এবং হিন্দু উৎখাত  শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশভাগের অনতিপূর্বে এবং পরে কুখ্যাত কোলকাতা কিলিং এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা  পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের  নিজগৃহ এবং নিজভূমী থেকে উৎখাত করা শুরু করে। তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসি সরকার  মুসলমানদের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তারক্ষায়  পূর্ণ রূপে ব্যর্থ প্রমাণিত হন। ঘন ঘন মুসলমান বস্তিতে আগুণ, হত্যার ঘটনা এই ব্যর্থতা এবং উদাসীনতার অন্যতম উদাহরণ। প্রকৃত অর্থে এ কোন সাম্প্রদায়িক  দাঙ্গা ছিলোনা বরং মুসলমানদের ওপর একতরফা আক্রমণ এবংসরকারী নিস্ক্রিয়তার ইতিহাস। এই ক্রমাগত দাঙ্গার ফলে এবং ভয়ঙ্কর ভয়ের পরিবেশে পশ্চিমবঙ্গের বিপুল পরিমাণ মুসলমান প্রাণ বাচাতে গৃহত্যাগী, দেশত্যাগী হতে বাধ্য হতে থাকে।দেশভাগের পরে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধিষ্ণু মুসলমান সম্প্রদায় নিরাপত্তার খাতিরে হয় শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে অথবা সদ্য গঠিত পূর্ব পাকিস্তানে দলে দলে চলে যেতে থাকেন। এদের মধ্যে সকলেই যে দাঙ্গা পীড়িত এমনটা নয়,এপারের অনেক মুসলমান সরকারী কর্মচারী সদ্য গঠিত পূর্ব পাকিস্তানে উচ্চ এবং নিরাপদ পদের আশায় স্বেছায় সম্পত্তি বদল করে চলে যেতে থাকেন।   পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু শরণার্থীদের বিষয়ে যেমন অসংখ্য তথ্য বর্তমান ঠিক তার উল্টোটা এই এপারের মুসলমানদের উল্টোমুখে যাওয়ার ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য। সাহিত্য, প্রবন্ধে এই বিপরীত প্রবাহের  বিবরণ সম্পূর্ণ রূপে অনুপস্থিত। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের  আউট মাইগ্রেসন  বিষয়ে দেশভাগের ইতিহাস রচয়িতাগণ প্রায় নীরবতা অবলম্বন করেছেন। যদিও এই বিচ্ছেদ, গৃহত্যাগ,নিরাপত্তার  অভাব এবং পূর্ব পাকিস্তানে এই বাঙলার মুসলমান সম্প্রদায়ের নোঙ্গর ফেলার লড়াই দেশভাগের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য বিষয় হওয়া উচিৎ ছিল কিন্তু সম্ভবত  তীব্র মুসলমান বিদ্বেষ  এই উদাসীনতার পেছনে অন্যতম কারণ।  অতি সম্প্রতি এই ইতিহাস খুব অল্প সংখ্যায় লেখা পত্তর হচ্ছে। 


    পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার প্রথম ঢেউ শুরু হয় কোলকাতা  কিলিং এর পরবর্তী সময় থেকে।  ১৯৪৬ এর শেষের দিকে বিহারে ৩০০০০ এর ওপর মুসলমান হত্যার    পরে বিহারী মুসলমান এবং বাঙ্গালী মুসলমানেরা  ক্রমে দাঙ্গার কেন্দ্র থেকে পূর্বের দিকে সরে আসতে থাকে। বিহারী মুসলমানেরা কেউ কেউ ধানবাদ, বর্ধমান, হাওড়া, এবং বেশির ভাগ পূর্ব পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। বাংলার উর্দুভাষী অভিজাত মুসলমানেরা পূর্ব পাকিস্তানে পালাতে থাকেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের জনপ্রিয় প্রফেসর কুদরৎ ই খুদা,বিখ্যাত চিত্রকর জয়নাল আবেদিন সমেত  সেই সময়ের গণ্যমান্য মুসলমানেরা  কোলকাতা ছাড়তে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, মধ্যবিত্ত, বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কারিগর এমনকি বস্তিবাসী মুসলমানেরাও দেশ ত্যাগ  করতে শুরু করেন নিরাপত্তা হীনতার কারণে। ১৯৪৬-৪৭ সালে কলকাতায় মুসলমান জনসংখ্যা ছিল ২৩-২৪% অথচ  ১৯৫১ সালের সেন্সাসে দেখা যাচ্ছে  সেই সংখ্যা নেমে এসেছে  মাত্র ১২%এ অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তুদের সংখ্যা গণ্যে রেখেও কলকাতার প্রায় অর্ধেক মুসলমান এই সময়ের মধ্যে দেশত্যাগ করেন ভয়ে এবং নিরাপত্তার অভাবে। 


    পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার দ্বিতীয়  ঢেউ শুরু হয় ১৯৫০ এর সময়ে। সেই সময়ের সব থেকে ভয়ানক দাঙ্গার ঘটনা  ঘটে হাওড়ায়, ১৯৫০ এর মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে হাওড়ার চটকল গুলীতে মুসলমান শ্রমিকদের নির্বিচারে কোতল করা হয়। এই দাঙ্গায় কমপক্ষে শতাধিক মুসলমান শ্রমিক মারা যান। অশোক মিত্র সেই সময়ে সেন্সাস কমিশনার ছিলেন তার বিভিন্ন বিবরণীতে সেই সময়ে  হাওড়া থেকে আতঙ্কিত মুসলমান পলায়নের চিত্র বর্তমান। এমনকি অপেক্ষাকৃত অসাম্প্রদায়িক বর্ধমানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পরে। মুসলিম লীগ নেতা আবুল হাসিম যিনি শরৎ বসুর সাথে একসাথে স্বতন্ত্র অখণ্ড বাংলার দাবী তুলেছিলেন দেশভাগের পরে তিনি দেশত্যাগী হননি বর্ধমানেই থাকতেন, তার বাড়ি আক্রান্ত হয়। এই ঘটনায় বিস্মিত আবুল হাসিম পরবর্তীতে পরিবার সহ পূর্ব পাকিস্তানে  চলে যেতে বাধ্য হন। সাথে সাথে তার বিপুল পরিমাণ আত্মীয়ও বর্ধমান ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তান চলে যান। আবুল হাসিমের পুত্র বিখ্যাত লেখক বদরুদ্দিন উমর এক ইন্টারভিউতে পরবর্তীতে বলেছিলেন যে ওই দাঙ্গার ঘটনা না ঘটলে তার পিতা এবং তাদের বিপুল পরিমাণ আত্মীয় পশ্চিমবঙ্গের ভীটে মাটি ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তানে  হয়ত যেতেন না। নদীয়ার সীমান্ত অঞ্চলে মুসলমান এবং হিন্দুদের মধ্যে প্রকৃত অর্থে এক্সচেঞ্জ চলতে থাকে। নমশূদ্রদের ওপার থেকে খেদানো হয় আর এপার থেকে মুসলমানদের। নদীয়ার সীমান্ত অঞ্চল থেকে ২০০,০০০ এর ওপর মুসলমানদের ওই পারে ভাগিয়ে দেওয়া হয়।  ১৯৫১ এর সেন্সাস চলাকালীন কেবলমাত্র কলকাতা থেকে ১৩১০০০ মুসলমান ওপারে চলে যান। পরিস্থিতির চাপে এপারের ব্যবসাদার মুসলমানেরা কাগজে বিজ্ঞাপন  দিয়ে ব্যক্তিগত স্তরে বিনিময়ের মাধ্যমে পাগলের মত নিরাপত্তার খোঁজে পূর্ব পাকিস্তানে চলে যেতে শুরু করেন।  ১৯৫০-১৯৫১ সালের সরকারী তথ্য অনুসার ৭ লাখ মুসলমান সেই সময়ে দেশত্যাগী হন যদিও পরবর্তীতে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিত হলে অনেকে  আবার ফিরেও এসেছিলেন। 


    মুসলমানদের পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ার তৃতীয়  ঢেউ শুরু হয় ১৯৬৩-৬৪ সালের বিভিন্ন দাঙ্গার সময় থেকে। সেই সময়ে কাশ্মীরের হজরত বালের ঘটনায় খুলনায় হিন্দুদের ওপর শুরু হওয়া দাঙ্গা পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে আগুণের মত ছড়িয়ে পরে। যশোর, ঢাকা, ফরিদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা এই সমস্ত অঞ্চলে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণের খবরে ততদিনে পূর্ববঙ্গ থেকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তুদের সংখ্যাগুরু অঞ্চল কলকাতা, বারাসত, চাকদা, তেহট্ট, বেলেঘাটা, এন্তালি, হাবড়া,শ্রীরামপুর ইত্যাদি অঞ্চলে ১৯৬৪ সালের ১০ই জানুয়ারি দাঙ্গা শুরু হয় এই দাঙ্গা চলতে থাকে  ১৫ই জানুয়ারি  ১৯৬৪ পর্যন্ত। ততদিনে মুসলমান সম্পত্তি, বস্তি, দোকান ভস্মীভূত। এই তীব্র আক্রমণ এবং তার প্রভাবে প্রায় ৮ লাখ ভারতীয় মুসলমান পশ্চিমবঙ্গ  এবং উত্তর পূর্ব ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তানে চলে যেতে বাধ্য  হয়। 


     দাঙ্গা’র কারণ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত, সরকারী অফিস,এবং বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত বাঙ্গালী মুসলমান স্বেছায়, বেশি সুযোগের উৎসাহে এবং নব্য গঠিত পাকিস্তানে তাদের নূতন স্বীকৃতির  স্বার্থেও চলে গেছেন।  সেই সময়ের পশ্চিমবঙ্গের ১৯ জন মুসলমান সিভিল সার্ভিস অফিসারের মধ্যে ১৮ জন পাকিস্তানে চলে যান  , তাদের মনে হয়েছিল  যে এই পারে হিন্দু প্রাধান্য তাদের কর্মক্ষেত্র সঙ্কুচিত করবে। তবে সব থেকে দুর্ভাগ্য জনক পরিস্থিতি  হয়েছিল নদীয়া,মুর্শিদাবাদ  এবং মালদার মুসলমান অধিবাসীদের - তারা ধরেই নিয়েছিল যেহেতূ তাদের অঞ্চল মুসলমান প্রধান স্বাভাবিক ভাবে এই অঞ্চল পাকিস্তানে  চলে যাবে  তাই তারা আর দেশত্যাগের ঝামেলা নেয় নি।কিন্তু তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ করে এই তিন মুসলমান প্রধান জেলা ভারতেই থেকে যায় ক্রমে হিন্দু প্রাধান্য গ্রাস করে নেয়  তাদের পেশা, অর্থনীতি এবং সামাজিক পরিধি। অন্যদিকে এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা সম্পদ এবং শিক্ষার দিক থেকে হিন্দুদের তুলনায় পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়, সবে বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে মুসলান মধ্যবিত্তের সৃষ্টি হচ্ছিল তায় দেশভাগের ফলে অধিকাংশ পশ্চিম বঙ্গের শিক্ষিত মুসলমান নূতন দেশে বেশি সুযোগের আশায় স্বেছায় এবং বলপূর্বক দেশত্যাগ সাথে পূর্ববঙ্গ  থেকে আগত শিক্ষিত হিন্দু মধ্যবিত্ত উদ্বাস্তুদের চাপে সন্মান জনক চাকরী পাওয়াই পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের কাছে দায় হয়ে পরে। পূর্ব বঙ্গ থেকে দেশভাগের প্রথম দিকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তুদের অধিকাংশ ছিল শিক্ষিত, অভিজাত হিন্দু বাঙ্গালী, তারা যে কেবল মুসলমানদের তুলনায় শিক্ষিত ছিল তাই নয় অধিকাংশ এপারের হিন্দু মধ্যবিত্তদের তুলনাতেও  বেশি শিক্ষিত ছিল। এই উচ্চ শিক্ষিত পূর্ব বঙ্গের উদ্বাস্তু স্রোত পশ্চিমবঙ্গে  মুসলমানদের চাকরীর বাজার আরও সঙ্কুচিত করতে থাকে। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত হিন্দুর ওদেশ থেকে এদেশে চলে আসা কেবল মাত্র এদেশের মুসলমানদের পক্ষে চাপের তাই নয় বরং তাদের এই দেশত্যাগ সদ্য গঠিত পাকিস্তানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং চাকুরির জগতে বিপুল শুন্যতার সৃষ্টি করে। পশ্চিম বঙ্গের চাকুরির বাজার তখন  ভীষণ প্রতিযোগিতামূলক এবং এই প্রতিযোগিতায়  টিকতে না পেরে এপারের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমান ওপারের চাকরীর বাজারের বিপুল শূন্যতা পূর্ণ করার চাপে এবং লোভে দলে দলে স্বেছায় ওপারে চলে যেতে থাকেন। এই বিপুল পরিমাণ পশ্চিমবঙ্গের  শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমানের দেশত্যাগের  এর ফলে সৃষ্ট সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা কেবলমাত্র এপারের মুসলমানদের কাছে বিরাট ক্ষতি তা নয় বরং সারা পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি। হিন্দু মুসলমান ভারসাম্যের চ্যুতি এবং প্রায় রাতারাতি পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের প্রান্তিক অবস্থানে চলে যাওয়ার  সূত্রপাত। 


     শিক্ষিত মধ্যবিত্ত মুসলমানদের দেশত্যাগের সাথে সাথে প্রায় সমস্ত প্রথমসারির মুসলিম লীগ নেতৃত্বের দেশত্যাগ পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রায় শূন্য করে দিতে থাকে। দেশভাগের পূর্বে পাকিস্তানের স্বপক্ষে মতামত সৃষ্টিকারী মুসলিমলীগের নেতৃত্বের পক্ষে এদেশ থাকা তখন  লজ্জার ব্যাপার। দেশভাগের সাথে সাথে প্রায় ৯০ শতাংশ মুসলিম  লীগ নেতৃত্ব দেশত্যাগী  হন। যদিও অখণ্ড বাংলার সমর্থক সুরাবর্দি, আবুল হাসিম এবং আরও অনেকে এদেশেই থেকে গিয়েছিলেন  -পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে কিছু দিনের ব্যবধানে সুরাবর্দি, আবুল হাসিম সহ ৪০ এর দশকের প্রভাবশালী বিভিন্ন মুসলিম নেতাগণ  পূর্বপাকিস্তানে চলে যান। এই দেশত্যাগী মুসলমান নেতা গনের মধ্যে  পরবর্তীতে ফজলুল হক পূর্ব পাকিস্তানে  অ্যাডভোকেট জেনারেল,সুরাবর্দি প্রথমে আইনমন্ত্রী পরে পূর্ব পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।  


    দেশভাগের ফলে এই যে উচ্চ পর্যায়ের  মুসলিম রাজনৈতিক নেতৃত্বের দেশত্যাগ - নিঃসন্দেহে পূর্বপাকিস্তান তার লাভ পেয়েছিল। কিছু দিনের মধ্যেই ভাষা, সংস্কৃতি নিয়ে রাজনীতি এবং পাকিস্তানি আধিপত্য বিরোধী ৭০ এর দশকে বাংলা জাতীয়তাবাদ এই রাজনীতির  ফল হলেও - এই গণ দেশত্যাগের ফলে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজে বিপুল রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।   পশ্চিমবঙ্গে যে সমস্ত মুসলমান রয়ে গেলেন তার হটাৎ রাজনৈতিক অভিভাবকহীন হয়ে পড়লেন। সংখ্যালঘু মুসলমানদের স্বার্থ, দাবী এবং রাজনৈতিক অধিকার রক্ষা করার নেতৃত্ব দেওয়ার মত সক্ষম নেতৃত্ব আর অবশিষ্ট রইলনা। অন্যদিকে এপার থেকে পাকিস্তানে চলে যাওয়া মুসলমানদেরও  জীবন খুব একটা রঙ্গিন  কিছু ছিলোনা, তাদেরও নূতন দেশে শিকড় গাড়ার পরিশ্রম,হার্ডসিপ কিছু কম ছিলোনা। 


    পশ্চিমবঙ্গ থেকে পূর্ববঙ্গে চলে যাওয়া মুসলমান সংখ্যায় পূর্ববঙ্গ থেকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তু দের তুলনায় আনুপাতিক হারে কম হলেও মুসলমান সমাজে এই দেশত্যাগ সামাজিক, অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব অসীম। এই মুসলমান দেশত্যাগীদের অধিকাংশ মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত,প্রফেশনাল ক্লাস এবং তাদের মধ্যে অনেকেই অবিভক্ত বাংলার প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। এই প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বদের  দেশত্যাগ এপারে থেকে যাওয়া মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি করল এক সামাজিক- সাংস্কৃতিক শূন্যতা। যারা এপারে রয়ে গেলেন তার মধ্যে অধিকাংশ দুর্বল,গরীব, সম্পদহীন  ,মূলত কৃষিজীবী,যোগাযোগ হীন এক সংখ্যালঘু জন সম্প্রদায়। যাদের  ওপারে গিয়ে খুব একটা কিছু উন্নতির আশা বা স্কিল নিয়োগ করে নূতন জীবন তৈরি করার উপায় ছিলোনা। যদিও কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই ছিল যাদের মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে যোগাযোগ,অথবা পাকিস্তানের দাবীর প্রতি সমর্থন কোনটাই ছিলোনা, এদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গে কেউ বা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে।  যারা দেশভাগের পরেও নিজেদের ভূমিতে রয়ে গেলেন তাদের নিজস্ব যুক্তি ছিল, এমনকি যারা পাকিস্তানের সমর্থনে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই দেশত্যাগে অনিচ্ছুক ছিলেন। অন্যদিকে সেই সমস্ত হিন্দু এবং হিন্দুমহাসভা’র নেতাগণ যারা বাংলা ভাগের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই আবার পশ্চিমবঙ্গে  চলে আসতে চাননি।  এই প্রসঙ্গে বিখ্যাত সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক যিনি বর্ধমানের জাবগ্রাম থেকে রাজশাহী তে মাইগ্রেট করেন বলেন যে তার কোন কোন কাকা এবং আত্মীয়রা  যদিও পাকিস্তানের দাবীকে সমর্থন করেছিলেন কিন্তু অবশেষে পাকিস্তানে যাননি। 



    মুসলমানদের আভ্যন্তরীণ উচ্ছেদ 


     দেশভাগের পরে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের সেটেলমেন্ট  প্যাটার্ন বিপুল পরিমাণে পরিবর্তিত হতে থাকে। ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট কিছু পকেটে মুসলমান সম্প্রদায় বসবাস করতে বাধ্য হতে থাকে। ১৯৪৬ এর কলকাতা দাঙ্গার সময়ে এবং তার পরে ভীত  সন্ত্রস্ত  মুসলমান পরিবার নিরাপত্তার  সন্ধানে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বাধ্য  হয়।  পার্ক সার্কাস, রাজাবাজার  এবং এইধরনের মুসলিম ঘন বসতি অঞ্চলে মুসলমান’রা ক্রমশ সরে যেতে থাকেন। স্বাধীনতার পরে মূলত বড়বাজারের মারোয়াড়ী এবং হিন্দু অভিজাতদের মদতে শহরের প্রাইম এলাকা থেকে মুসলমান উচ্ছেদের এক কর্মযোগ চলে প্রায় ১৯৬০ -১৯৬২ সাল পর্যন্ত। মূল উদ্দ্যেশ্য  ছিল মুসলমানদের দোকান এবং ব্যবসায়িক  প্রতিষ্ঠানগুলির  দখল নেওয়া। অন্যদিকে হিন্দু বস্তি মালিকেরা এই সুযোগে  তাদের বস্তি  থেকে মুসলমান উচ্ছেদের সমর্থনে এবং হিন্দু উদ্বাস্তুদের কাছ থেকে উচ্চ ভাড়ার আশায় এই দলে নাম লেখায়। বেছে বেছে মুসলমান বস্তি আক্রমণ করা শুরু হয়। মুসলমানেরা মিয়াবাগান, বেলেঘাটা, মতিঝিল, শ্যামবাজার,   রাজাবাজারের কাছে সাহেব বাগান এবং এন্তালির বস্তিগুলি থেকে উচ্ছেদ হন। শহরের মুসলমান সেটেলমেন্ট প্যাটার্ন পরিবর্তিত হতে থাকে  দ্রুত, মুসলমানেরা ঘেটোবন্দী জীবন  যাপন করতে বাধ্য হয়ে পরে। সেই সময় থেকে মুসলমানেরা হিন্দু এলাকায় সম্পত্তি, ফ্লাট কেনা দূরের কথা হিন্দু এলাকায় বাড়ি ভাড়াতেও পাননা।  দেশভাগের ফলে এই যে সৃষ্ট হওয়া ফাটল, অবিশ্বাস, অলঙ্ঘনীয় দূরত্ব তার মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ না সংখ্যাগুরু হিন্দু বাঙালি করছে না সংখ্যালঘু মুসলমান। সেই অশান্ত সময়ে যে সমস্ত মুসলমান পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন ক্রমশ  ঘেটোবন্দি জীবন হয়ে দাঁড়ায় তাদের সারভাইভাল স্ট্রাটেজি। 



    পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের নিরাপত্তা,পরিচিতি এবং ন্যায় এর সন্ধান


    স্বাধীনতার পরবর্তী সময় পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের পক্ষে এক অতি দুর্যোগপূর্ণ সময়। প্রথমত জীবন  ,সন্মান এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।  নিজস্ব ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক পরিচিতি বজায় রাখার তাগিদ এবং সংখ্যাগুরুর হিন্দুসম্প্রদায়ের  সাথে একই শর্তে নিজেদের প্রতিস্থাপনের লড়াই। যদিও ভারতের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার পথ অবলম্বন করে এবং সেকুলার ভারতবর্ষ সর্ব ধর্মের প্রতি সহনশীল এবং সংখ্যালঘুর নিরাপত্তার নিশ্চিত করন তার অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সংখ্যালঘু বিশেষত মুসলমানদের  অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে ইতিহাস এবং আমাদের জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাজকর্ম সর্ব ধর্মের প্রতি সহনশীলতার  বিষয়ে প্রশ্ন ওঠায়। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের ফলে হিন্দু উদ্বাস্তুরা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তাদের ছায়া ততদিনে দীর্ঘায়িত  করতে শুরু করেছে। সংখ্যালঘুদের সম্বন্ধে গড়ে উঠছে এক অসূয়া জনিত মনোভাব। মুসলমান'রা ততদিনে ঘেটোর বাসিন্দা, তাদের বিশ্বস্ততা  ইতিমধ্যে সন্দেহর বস্তু,  জাতীয় রাজনীতি তাদের সাথে এক দরকষাকষির অবস্থানে। কংগ্রেস নেতৃত্বের পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৫২ থেকে ১৯৬৪ এর মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দাঙ্গায় মুসলমানদের নিরাপত্তা দিতে চূড়ান্ত ব্যর্থ  প্রমাণিত। তার সাথে ১৯৬৫ এর ভারত পাক যুদ্ধের সময়ে  সাধারণত মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখা হতে শুরু হয়। পাকিস্তানের  চর সন্দেহে বিপুল পরিমাণ মুসলমান সেই সময়ে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হয়। অন্যদিকে কংগ্রেস মুসলমানদের নিরাপত্তা দেওয়ার ডিল হিসাবে মুসলমান ভোট তাদের পক্ষে এক কাট্টা করতে থাকে, কিছু বিশিষ্ট মুসলমান নেতৃত্ব কে নিজেদের দলে স্থান দিয়ে চলতে থাকে এই দু মুখো নীতি।সংখ্যালঘু নিরাপত্তা ততদিনে এক সুবিধাবাদী চুক্তিতে পরিণত, কংগ্রেস এবং কমিউনিস্ট  উভয়ের কাছেই  ধর্মনিরপেক্ষতা সেই চুক্তির রাজনৈতিক মুখ।  ১৯৬২-১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই দুমখো নীতি কাজে দিলেও ১৯৬৭ এর নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে এবং আরও আটটা  রাজ্যে কংগ্রেস ধরাশায়ী হয় - বিপুল পরিমাণ মুসলমান ভোট পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে জমা হতে থাকে।  ১৯৬৭ সাল পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের পক্ষে এক ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্ত - দাঙ্গার ভয় থেকে মুসলমান ততদিনে বেরিয়ে আসতে থাকে এবং অর্থনৈতিক স্বাবলম্বতা  অর্জন হয়ে দাঁড়ায় তাদের অন্যতম লক্ষ্য। 



    পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের প্রতি সমদর্শিতার  প্রশ্ন 


    তত্ত্বগতভাবে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী সমস্ত নাগরিক আইনের চোখে এক হলেও মুসলমানদের ক্ষেত্রে এই তাত্বিক অবস্থান বাস্তব অর্থে যে ভিন্ন ছিল  তা প্রমাণিত হয় সাচার কমিটির রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে। মুসলমানদের যেন ধরেই নেওয়া হয়েছে যে তারা এদেশীয় নন। তাদের আনুগত্য বিষয়ে সদা সন্দিহান মনোবৃত্তির ফলে ভারতের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস মুসলমানদের জন্য প্রায় নিষিদ্ধ ***(পাদটীকা )। ভারতের এবং পশ্চিমবঙ্গের সরকারী অ্যাডমিনস্ট্রেসানের উচ্চ পদে মুসলমান সংখ্যা অতি নগণ্য। শিক্ষা ক্ষেত্রের উচ্চ পদে মুসলমান অবর্তমান।  ভারতীয় রেলে যত সংখ্যক মুসলমান কর্মরত তার  ৯৭ % চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা ঐতিহাসিক সময় থেকে হিন্দুদের তুলনায় সম্পদে, রাজনৈতিক ক্ষমতায় এবং শিক্ষায় পিছিয়ে থেকেছে। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে হিন্দুরা ছিল জমিদার আর মুসলমানেরা রায়ত এবং ভাগচাষী। কেবলমাত্র ১৯২০ থেকে ১৯৪৭ এর সময়ে অবিভক্ত  বাঙলায় মুসলমান মধ্যবিত্ত শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী হিন্দুদের কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে দাঁড় করাতে পেরেছিল। মুসলমানদের জন্য সংরক্ষিত কেন্দ্র এবং ব্রিটিশ প্রবর্তিত  কিছু সংরক্ষণের সুবিধা,সাথে মুসলিম লীগের রাজনীতি তাঁদের রাজনৈতিক ক্ষমতার কিছুটা পুনর্বিন্যাস করতে সক্ষম হয়েছিল, কিন্তু দেশ ভাগের পরে সমস্ত প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং শিক্ষিত মুসলমান সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের সাথে সাথে  স্বাধীন সেকুলার ভারতবর্ষে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের পরিবর্তে চলে আসে জাতির  ভিত্তিতে সংরক্ষণ। 


    যেহেতু মুসলমানরা তাত্বিক ভাবে তাঁদের ধর্মে জাতি বিভেদের অস্তিত্ব স্বীকার করেনা তাই এদেশে থেকে যাওয়া বিপুল পরিমাণ দরিদ্র মুসলমান সংরক্ষণের আওতার বাইরে চলে যায়। তার ওপর পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শিক্ষিত হিন্দু উদ্বাস্তু এবং চাকরীর জন্যে তাঁদের মরিয়া প্রয়াস পশ্চিমবঙ্গে  রয়ে যাওয়া তুলনামূলক কম শিক্ষিত মুসলমান যুবকদের কাছে চাকরীর বাজার ক্রমশ কঠিন করে তোলে। হিন্দু উচ্চ পদস্থ কর্মচারীদের  হিন্দু প্রীতি বা সূক্ষ্ম মুসলমান বিদ্বেষ মুসলমানদের উচ্চ পদে উন্নীত হওয়ার এবং নূতন নিয়োগের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। 


    যেমন পশ্চিমবঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের পূর্বে সরকার অনুমোদিত স্কুলে নিয়োগের দায়িত্ব থাকতো স্কুল ম্যানেজিং কমিটির হাতে। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নিয়ন্ত্রণ ছিল হিন্দুদের হাতে এবং সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে মুসলমান ছাত্র থাকলেও মুসলমান শিক্ষক প্রায় ছিলইনা। যদিও পশ্চিমবঙ্গে সরকারী এবং বেসরকারি চাকরীর ক্ষেত্রে মুসলমানদের অনুপাত খুবই কম ছিল এবং বাকি সমস্ত সামাজিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মুসলমানেরা পিছিয়ে ছিলেন  কিন্তু না কংগ্রেস না বামফ্রন্ট কেউই সাচার কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পূর্বে পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের জন্য কোন রকমের সংরক্ষণ নিয়ে  মাথা ঘামাননি**(পাদটীকা )। কিন্তু অন্যান্য রাজ্য যেমন কেরালায় মুসলমান জনসংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় কম  হওয়া স্বত্বেও ভারতের সংবিধানের আর্টিকেল ১৫(৪) এবং ১৬(৪ ) ধারা অনুসার তাদের রাজ্যে মুসলমানদের জন্য চাকুরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয়নি। কেরালায় পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ১২% মুসলমান কোটা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ৫০% মুসলমান এবং খ্রিস্টান কোটার কারণে সারা পশ্চিমবঙ্গের সরকারী চাকুরিতে যখন মাত্র 2.1% মুসলমান কর্মরত  তখন কেরালায় সরকারী চাকুরিতে মুসলমানের সংখ্যা 10.4%।  পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত PSU তে একজনাও গ্রুপ এ পোস্টে মুসলমান না থাকলেও কেরালায় ৯,৫% মুসলমান PSU গুলিতে গ্রুপ এ তে কর্মরত। পশ্চিমবঙ্গের আইন বিভাগে মাত্র ৫% মুসলমান অথচ কেরালায় ১2.3% মুসলমান আইন বিভাগে কর্মরত। যদিও কেরালার এই মুসলমান সংরক্ষণের পেছনে সেখানকার  মুসলিম লীগের ( IUML) মত রাজনৈতিক দলের চাপ বর্তমান ছিল কিন্তু আমাদের রাজ্যে মুসলমানদের প্রতি এই ভয়ঙ্কর বৈষম্যের অন্যতম কারণ সংখ্যালঘু বিষয়ে আমাদের রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের বিপুল উদাসীনতা। ভদ্রলোক বাঙালীর  সুপ্ত হিন্দু সাম্প্রদায়িক মানসিকতার উত্তরাধিকার বহন করে আসার ধারবাহিকতা। উদ্বাস্তু রাজনীতির প্রভাব,উচ্চ বর্ণের হিন্দু প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত রাজনৈতিক দলের মুসলমানদের প্রতি অসংবেদনশীলতা  এবং মুসলমান স্বার্থ আদায় করার ক্ষেত্রে মুসলমানদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতি। 



    অতএব... 


    দেশভাগ  প্রকৃত অর্থে বাংলার মুসলমানদের কাছে  ভীষণ ক্ষতিকর এবং বিধ্বংসী প্রভাব।  দেশভাগের ফলে শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী মুসলমানদের দেশ ত্যাগ, রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা এবং বাকি যারা রয়ে গেলেন তাদের প্রতি তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলগুলির  ধারাবাহিক উদাসীনতা এবং  বঞ্চনা। স্বাধীনতার পরের দুই দশক পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা  ভোগ করেছেন করেছেন চূড়ান্ত সাম্প্রদায়িক  দাঙ্গা।  হিন্দু বিশেষত পূর্ববঙ্গ থেকে এদেশে আসা হিন্দু - মুসলমানদের সম্বন্ধে প্রচার করেছে এক তীব্র ঘৃণা। পূর্ববঙ্গ থেকে উচ্ছেদের কারণ হিসাবে উদ্বাস্তুরা দায়ী করেন মুসলমানদের, তাদের এই মুসলমান বিষয়ক ঘৃণার সমবেত স্মৃতি অজান্তে চারিত হয়ে গেছে পরবর্তী প্রজন্মে। পশ্চিমবঙ্গে এই মুসলমান বিদ্বেষ সুপ্ত কিন্তু ভীষণ শক্তিশালী। আমাদের গর্বের  শহর কোলকাতায় হিন্দু প্রধান এলাকায় মুসলমানদের বাড়িভাড়া,,ফ্ল্যাট,সম্পত্তি পাওয়ার  সম্ভাবনা প্রায় শূন্য অন্যদিকে কলকাতারই মুসলমান প্রধান এলাকাগুলি বিষয়ে হিন্দুদের বিভিন্ন অজ্ঞতা প্রসূত ধারনা। এই সমস্ত অভিজ্ঞতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের স্বাধীনতার পরবর্তী দুই দশকের প্রাথমিকতা ছিল নিজেদের প্রান এবং সম্পত্তি বাঁচানো। কলকাতার মত শহরে তারা বাধ্য হয়েছে কিছু নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে বসবাস করতে। মুসলমানদের এই ঘেটো বন্দী জীবন,সামাজিক,সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক পরিসর থেকে ক্রমশ গুটিয়ে নেওয়া এবং বিচ্ছিন্ন জন সম্প্রদায় হিসাবে বেঁচে  থাকা দেশভাগ পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে এক দুঃখজনক কিন্তু কঠিন বাস্তব। দেশভাগের পরবর্তী বাঙলার মুসলমানেরা মোকাবিলা করতে থাকে আত্মপরিচয়ের জটিল সমস্যা।  নূতন পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাদের কি অবস্থান হবে, কেই বা তাঁদের দাবী দাওয়া তুলে ধরবে, অধিকারের স্বপক্ষে লড়াই করবে -এই দ্বন্দ্ব এবং সমস্যাকে সামনে রেখে  বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করলেও মুসলমানেরা রয়ে যায় ক্রমে বিচ্ছিন্ন,প্রান্তিক এবং খণ্ডিত জনসমাজ হিসাবে।  একই রাজ্যের মধ্যে সম্পূর্ণ আলাদা জগত মুসলমানদের -দেশভাগ পশ্চিম বঙ্গের মুসলমানদের কাছে মূলত ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা এবং তাদের প্রান্তিক স্তরে পরিণত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। 


    বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ওপর বীতশ্রদ্ধ উত্তরবঙ্গের চা বাগানের আদিবাসীরা যেমন নিজেদের দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে গড়ে তুলেছেন ‘ আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’। শত দুর্বলতা স্বত্বেও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা যেমন নেপালি সংখ্যালঘুদের স্বার্থে এক প্রেশার গ্রুপ হিসাবে কাজ করছে  অথবা কেরলে’র মুসলিম লীগ মুসলমানদের দাবীর সমর্থনে কখনো সিপিআই(ম ) কখনো কংগ্রেসের সাথে মিলে নিজেদের দাবী আদায়ে চাপ সৃষ্টি কারি এক রাজনৈতিক সংগঠন। হয়ত ঠিক তেমনই পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা দীর্ঘ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানে সুবিধাবাদী এবং উদাসীন সুপ্ত সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণ্যবাদী কংগ্রেস এবং সিপিআই (ম ), তৃনমূলের ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ছাতার বাইরে বেরিয়ে এসে গড়ে তুলবেন নিজেদের সক্ষম রাজনৈতিক সংগঠন। হয়ত কোনদিন  স্বাধীনতা পূর্ব বাঙলার মত পশ্চিমবঙ্গের ২৭-২৯% মুসলমান এবং ২৩% নমশূদ্রদের জোটের রাজনীতি  সাম্প্রদায়িক ব্রাহ্মণ্যবাদী উচ্চবর্ণ নিয়ন্ত্রিত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।  কিন্তু ততদিন তহ্বা সিদ্দিকি,ইমাম ভাতার সস্তা রাজনীতি একটি কি দুটি পূর্ণ বা প্রতিমন্ত্রীর টোপ  এবং বিবিধ কুনাট্য পশ্চিমবঙ্গের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বাসিন্দাদের  দুর্ভাগ্য জনক ভবিতব্য হিসাবে রয়ে যাবে। 




     *** হুমায়ুন কবির মুসলিম লীগের পাকিস্তানের ফর্মুলায় বিশ্বাসী ছিলেন না,তিনি চেয়েছিলেন সেকুলার ভারতবর্ষ, এই খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ,পার্লামেন্টারিয়নের নাতি সমস্ত যোগ্যতামান পার করা স্বত্বেও কেবলমাত্র মুসলমান হওয়ার কারনে RAW'র এয়ার উইং তার নিয়োগ বাতিল করে। ১৯৬৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত RAW'র ১০০০০ কর্মী এবং NTRO'র ৭৫০০ কর্মী'র একজনাও মুসলমান নয়। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো'র ১২০০০ কর্মীর 0.5%এর কম কর্মী মুসলমান। ভারতে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো স্থাপিত হওয়ার ১২৫ বছর পরে ২০১২ সালে সৈয়দ আসিফ ইব্রাহিম প্রথম মুসলমান যিনি ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হতে পেরেছেন। স্বাধীন সেকুলার ভারতবর্ষ এই বিষয়ে ব্রিটিশ লিগ্যাসি'র সফল উত্তরাধিকার বহনকারি। 



    ** ২০০৬ সালে সাচার কমিটি পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের হাল স্পষ্ট করার পরে ২০১০ সালে রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বামফ্রন্ট সরকার এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গে  মুসলমানদের জন্য ১০% ওবিসি কোটার ব্যবস্থা নেন,অথচ কেরল স্বাধীনতার পূর্বে মুসলমানদের জন্য বর্তমান বিভিন্ন কোটা স্বাধীনতার পরেও বজায় রাখে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ১২% মুসলমান কোটা সেখানে প্রায় স্বাধীনতার পর থেকেই বর্তমান। ( দেখুন ঃ- A History of Reservation ঃ- R.Krishnakumar)



    দেখুন ঃ- 


    Bengal Divided :- Hindu Communalism and Partition 1932-1947 :- Joya Chatterji  


    Sachar Commeitee  Report


    Bengal Pact :- Frontline 


    ABUL HASHEM HAD A POINT :- Ashok Mitra  Telegraph June 22 2009 


    The Partion & Muslim Minority :-  Tridib Kundu  Indian Journal of Politics, Vol. XLII, No.1 & 2 (January-June 2009)


     আমার জীবনে ঃ- ১৯৩১-১৯৫০ বদরুদ্দিন উমর  



    লেখাটির সংক্ষিপ্ত রূপ 'দুর্বার ভাবনা'য় প্রকাশিত হয়েছিল।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় পর্ব
  • আলোচনা | ০৮ জুলাই ২০১৬ | ৬২০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • amit | 230.245.41.192 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৩81563
  • অন্ধের হস্তিদর্শন দিতীয় ভাগ উপস্থিত। হিট হলে তৃতীয়, চতুর্থ পর্ব ও আসবে, কিন্তু হাতির পুরো শরীর আর দেখা যাবে না , সেই শুঁড়ে হাত বোলানোই চলবে।

    "পূর্ববঙ্গ থেকে উচ্ছেদের কারণ হিসাবে উদ্বাস্তুরা দায়ী করেন মুসলমানদের" অসাধারণ পর্যবেক্ষণ !!!!! অন্য কি কারণ দেখানো উচিত ছিল যদি কেও দয়া (বা দোযা) করে বলেন ?
  • দেবব্রত | 233.191.25.251 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৫81564
  • প্রশ্ন কে ধন্যবাদ লেখাটি খুঁটিয়ে পড়বার জন্য কিন্তু ‘কারেকশন ‘ টি ঠিক নয় তার কারেকশনে

    আসিফ ইব্রাহিম IB প্রধান হিসাবে তার কার্যকাল ছিল 1st জানুয়ারি ২০১৩ থেকে ১২ই জুন ২০১৪ পর্যন্ত ,IB প্রধান হিসাবে তার নিয়োগ ঘোষিত হয় ২০১২ সালের শেষের দিকে তে ,কাগজে খবর প্রকাশিত হয় নভেম্বর ২০১২ সালে দেখুন ঃ- Syed Ibrahim set to be first Muslim chief of IB http://timesofindia.indiatimes.com/india/Syed-Ibrahim-set-to-be-first-Muslim-chief-of-IB/articleshow/17366073.cms via @timesofindia IB গঠিত হওয়ার ১২৫ বছর এবং ভারতের স্বাধীনতার প্রায় ৬৫ বছর পরে প্রথম একজন মুসলমান IB প্রধানের পদে আসীন হলেন ।

    প্রশ্ন বলছেন ঃ- "১৯৬৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত RAW'র ১০০০০ কর্মী এবং NTRO'র ৭৫০০ কর্মী'র একজনাও মুসলমান নয় " - আপনার তথ্যের প্রামাণ্য সূত্র জানাবেন । তথ্য সূত্র হিসাবে দেখুন ঃ- “ From 1969 till today—RAW’s current staff strength is about 10,000—it has avoided recruiting any Muslim officer. Neither has the National Technical Research Organisation (NTRO), a crucial arm of external intelligence. The Intelligence Bureau (IB) with 12,000 personnel has been a little more open. It has a handful of Muslim officers, the senior-most is a joint director.” Muslims And Sikhs Need Not Apply: http://www.outlookindia.com/magazine/story/muslims-and-sikhs-need-not-apply/233087
  • দেবব্রত | 233.191.25.251 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৪81565
  • প্রশ্ন কে অনুরোধ এই অংশটি পড়ুন "দেশভাগের অনতিপূর্বে এবং পরে কুখ্যাত কোলকাতা কিলিং এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের নিজগৃহ এবং নিজভূমী থেকে উৎখাত করা শুরু করে । তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসি সরকার " ১৯৪৬ সালে কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় ছিলোনা ছিল দেশভাগের পরে সুতরাং এখানে সেই সময়ের কথাই বলা হচ্ছে । আর স্বাধীনতার পরে ১৯৫০ থেকে ১৯৬৪ সালের ক্রমাগত দাঙ্গা কংগ্রেস সরকারের আমলেই ঘটেছে ।

    কংগ্রেস সরকার এবং সেকুলার ভারত সরকার " এখন মুসলমানদের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তারক্ষায় পূর্ণ রূপে ব্যর্থ প্রমাণিত হন। ঘন ঘন মুসলমান বস্তিতে আগুণ , হত্যার ঘটনা এই ব্যর্থতা এবং উদাসীনতার অন্যতম উদাহরণ । প্রকৃত অর্থে এ কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছিলোনা বরং মুসলমানদের ওপর একতরফা আক্রমণ এবংসরকারী নিস্ক্রিয়তার ইতিহাস " ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত স্বাধীন ভারতে এবং পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গার ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে কি করে ? সে তো সব রেকর্ডেড ।
  • দেবব্রত | 233.191.25.251 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩০81566
  • "পূর্ববঙ্গ থেকে উচ্ছেদের কারণ হিসাবে উদ্বাস্তুরা দায়ী করেন মুসলমানদের" অসাধারণ পর্যবেক্ষণ !!!!! অন্য কি কারণ দেখানো উচিত ছিল যদি কেও দয়া (বা দোযা) করে বলেন ? সমস্ত লেখাটি কি পড়েছেন ? পূর্বের বা পরের বাক্য সমেত ? স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী চাকরীতে 2 ,1% মুসলমান কেন ? হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা - উন্নত সেকুলার বাঙ্গালির ব্যাথা লাগে আর ব্যাথা লাগলে উঃ আঃ হতে পারে । কিন্তু তাহাই সত্য ।
  • amit | 230.245.41.192 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৪81567
  • অবশ্যই সত্য। অন্ধরা হাতির শুঁড় কে যদি আস্ত হাতি মনে করে থাকে, অন্ধের কাছে সেটাই সত্য। এবার তাদের আপাত সত্যিটা সবার কাছে পুরো সত্যি নাও হতে পারে। যে যেভাবে হাতি দেখে শান্তি পায় পাক।
  • kallol | 233.190.6.33 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৬81568
  • দেশভাগের জন্য মুসলমানেরা দায়ী? কঙ্গ্রেস, মুসলিম লীগ ও ব্রিটিশরা একদম দয়ী নয়? হিন্দুরা দেশভাগ চায় নি?
  • dd | 116.51.31.120 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৪:৪৯81569
  • দেবব্রত outlook ম্যাগটির যে লিংক দিয়েছেন সেটি দশ বছরের পুরোনো।
  • Rouhin | 233.191.52.104 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৫:১০81570
  • আমিত বিক্রমে শু^ড় নয় লেজটাই হাতি প্রমণের চেষ্টা চলছে। তবে সেটা আপাততঃ ইগনোরই করছি। রাজাবাজার নিয়ে আগে কোথাও লিখেছিলাম - মানে হিন্দু বাঙ্গালির মধ্যে রাজাবাজার নিয়ে যে অদ্ভুত সব মিথ চালু সেই নিয়ে। নিয়ে আরো কিছু লেখর ই্চা রইলো
  • অয়ন | 233.191.41.144 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৭:১৬81571
  • একটি প্রশ্ন ছিল , আপনি তৃণমূল আর বামফ্রন্টের জন্য মিলিতভাবে একটি মাত্র লাইন ব্যয় করেছেন , কিন্তু বামফ্রন্ট আরও স্পেসিফিকালি বললে সিপিএমের ১৯৬৭ বা সেই সময় থেকে কি বঙ্গীয় মুসলিম সমাজের জন্য কোনো অবদান নেই ? ভুমিসংস্কার ও অপারেশন বর্গা তো নিসন্দেহে ভুমিহীন কৃষকদের, যাদের একটা বড়ো অংশ মুসলিম , অন্নবস্ত্রের সংস্থান করেছিল ... একটু বিশদে বললে ভালো হতো
  • অয়ন | 233.191.41.144 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৭:১৬81572
  • একটি প্রশ্ন ছিল , আপনি তৃণমূল আর বামফ্রন্টের জন্য মিলিতভাবে একটি মাত্র লাইন ব্যয় করেছেন , কিন্তু বামফ্রন্ট আরও স্পেসিফিকালি বললে সিপিএমের ১৯৬৭ বা সেই সময় থেকে কি বঙ্গীয় মুসলিম সমাজের জন্য কোনো অবদান নেই ? ভুমিসংস্কার ও অপারেশন বর্গা তো নিসন্দেহে ভুমিহীন কৃষকদের, যাদের একটা বড়ো অংশ মুসলিম , অন্নবস্ত্রের সংস্থান করেছিল ... একটু বিশদে বললে ভালো হতো
  • PT | 213.110.242.7 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৮:১৯81573
  • এ ব্যাপারে অবস্থানটি অন্যান্য নিবন্ধের মতই পূর্ব-নির্ধারিত। কাজেই ঐ এক লাইন যে পাওয়া গিয়েছে তাই যথেষ্ট!!

    "স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরে পশ্চিমবঙ্গের সরকারী চাকরীতে ২ ,১% মুসলমান কেন ?"
    কেন? কেন? উত্তরটা শুনি একবার।
    বেসরকারী চাকরীতে এই সংখ্যাটা কত?
    আবাপ, ২৪ ঘন্টা তারা বাংলা ইত্যাদি মিলিয়ে মুসলমান সাংবাদিকের সংখ্যা কত?
    এই সব টইগুলোতে যারা লেখে তাদের মধ্যে কতজন মুসলমান?
    (পব-তে এত কম সংখ্যক মেয়েরা physics পড়ে কেন? নিশ্চয় বাঙালী "মেল সভেনিস্ট পিগ" দের জন্যে!!)
  • kaushik | 125.113.187.3 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ০৯:১৭81561
  • এই পর্বটার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।
  • প্রশ্ন | 190.179.142.51 (*) | ০৮ জুলাই ২০১৬ ১১:৪৮81562
  • correction
    আসিফ ইব্রাহিম 12 ই জুন 2014 সালে IB চিফ হন,রিটায়ার করে উনি এখন আফগানিস্তানে স্পেশাল এনভয় ।
    http://www.hindustantimes.com/delhi/asif-ibrahim-takes-over-as-intelligence-bureau-chief/story-MvszqD7r4HpPEZtzwAc7uO.html;jsessionid=CA804A50044A65AEAC09634DED532603

    "১৯৬৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত RAW'র ১০০০০ কর্মী এবং NTRO'র ৭৫০০ কর্মী'র একজনাও মুসলমান নয় " - আপনার তথ্যের প্রামাণ্য সূত্র জানাবেন ।

    "দেশভাগের অনতিপূর্বে এবং পরে কুখ্যাত কোলকাতা কিলিং এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের নিজগৃহ এবং নিজভূমী থেকে উৎখাত করা শুরু করে । তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসি সরকার মুসলমানদের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তারক্ষায় পূর্ণ রূপে ব্যর্থ প্রমাণিত হন। ঘন ঘন মুসলমান বস্তিতে আগুণ , হত্যার ঘটনা এই ব্যর্থতা এবং উদাসীনতার অন্যতম উদাহরণ । প্রকৃত অর্থে এ কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছিলোনা বরং মুসলমানদের ওপর একতরফা আক্রমণ এবংসরকারী নিস্ক্রিয়তার ইতিহাস " - 1946 কুখ্যাত কলকাতা কিলিং এর সময় বাংলাতে মুসলিম লীগের সরকার যার প্রধান সুরাবর্দি ।
    আর 1946 কলকাতা কিলিং - ডাইরেক্ট একশন ডে - মেটিয়াবুরুজ কেশোরাম কটন মিল হত্যাকান্ড এগুলোর ইতিহাস ,কারা ভিকটিম ছিল এগুলো বহুলিখিত । আপনার প্রিয় ঐতিহাসিক জয়া চ্যাটার্জী ও সুরাবর্দির দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়া ও দাঙ্গা চলাকালীন সাঙ্গপাঙ্গ সমেত লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ঢুকে পুলিশ কে নিষ্ক্রিয় করে রাখা মেনে নিয়েছেন - "Suhrawardy himself bears much of the responsibility for this blood-letting since he issued an open challenge to the Hindus and was grossly negligent ... in his failure to quell the rioting "
  • | 127.194.9.95 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৬81574
  • PT ঠিক বলেছেন।
    পব-তে এত কম সংখ্যক মেয়েরা physics পড়ে কেন?
    বাংলায় মেল শভিনিজম-এর সুদীর্ঘ ইতিহাস-এর জন্যে।
    আন্তর্জাতিক মেল শভিনিজম ফিজিক্সে মেয়েদের অনুপস্থিতি কমিয়েছে কিনা, তার সঙ্গে বাংলার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ কতোটুকু, সে সব রিলেটেড বিষয়।
    ফিজিক্স, ইঞ্জিনীয়ারিং, সার্জারি, ইত্যাদিতে মেয়েদের সংখ্যা কেন কম, তার উত্তর -- বাংলায় মেল শভিনিজম।

    কেবল, পরের ঐ বিস্ময়বোধক চিনহগুলো মুছে দিতে পারলেই হয়।
    যাকগে, আপাতত অপ্রাসঙ্গিক একথা। তবে অন্ধ চিনতে কাজে লাগতে পারে।
  • debbrot | 212.142.91.20 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৯:৩৫81575
  • @ অয়ন বাবু আপনি এই লেখাটির প্রথম পর্বে দেখবেন " পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের এই ধারাবাহিক অবক্ষয়ের চিত্র প্রথম প্রকাশ্যে আসে সাচার কমিটির রিপোর্টের মাধ্যমে । জম্মু কাশ্মীরে ৬৭% , আসামে ৩০% এর পরেই পশ্চিমবঙ্গে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বাসস্থান , পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা প্রায় ২৭-২৯% । দীর্ঘকাল সংখ্যালঘু দরদী বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন যে রাজ্যে বর্গাদার আইন , ভূমিসংস্কার এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কাজকর্ম হয়েছে সেই রাজ্যে মুসলমানদের অবস্থা ভয়ঙ্কর এমনকি তফশিলি জাতি উপজাতি এবং আদিবাসীদের তুলনাতেও খারাপ । ২০০৬ সালে প্রকাশিত সাচার কমিটির রিপোর্ট প্রকাশের পরে অতি সম্প্রতি অমর্ত্য সেন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের বর্তমান আর্থ সামাজিক অবস্থান নিয়ে আরেকটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন , সেই চিত্রও সাচার কমিটির রিপোর্ট এর থেকে উন্নত কিছু অবস্থানের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করায় না উল্টে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবস্থা ২০০৬ সালে প্রকাশিত সাচার কমিটির উল্লেখিত অবস্থার থেকেও খারাপ । পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা ২৭-২৯% হলেও সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুসার সরকারী চাকুরিতে তাদের অনুপাত ছিল মাত্র ২,১%! " বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন পশ্চিমবঙ্গে বর্গাদার আইন , ভূমিসংস্কার এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য কাজকর্ম হয়েছে কিন্তু তৎ স্বত্বেও অবস্থা ভীষণ খারাপ ছিল ২০০৬ এ আর এখনো প্রায় সেই অবস্থা । @ অয়ন বাবু এই লেখাটির শুরুতে (প্রথম পর্বের পর ) অংশে ক্লিক করলে প্রথম পর্বে যাওয়া যাচ্ছে দেখেছি । অনুগ্রহ পূর্বক পড়ুন এবং যা প্রশ্ন মনে হয় করুন আমি চেষ্টা করব যথাসাধ্য উত্তর দিতে ।
  • দেবব্রত | 212.142.91.20 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৯:৪৫81576
  • dd আপনি ঠিক বলেছেন যে আউটলুকের লিংক ২০০৬ সালের , কিন্তু সেই লিংক প্রশ্নের , ফ্যাক্ট চেক জনিত প্রশ্নের উত্তরে । আসলে RAW /SPG/NSG RTIএর আওতার বাইরে ,এবং গোপনীয়তা বিভিন্ন কারনে জরুরী তাই রিসেন্ট কংক্রিট কোন লেখা পত্তর নেই -যেমন NSG/SPG তে শিখ এবং মুসলমান নেই - শিখ কেন নেই তার কারন স্পষ্ট কিন্তু মুসলমান কেন নেই ?RTI করেছিলেন গুরগাওয়ের এক ব্যক্তি SPG উত্তর দেয়নি । তবে ২০০৬ সালের আউটলুকের তথ্য যদি সত্য বলে মেনে নি তাহলে তা আমার লেখার বক্তব্য প্রমাণ করে এবং তথাকথিত সেকুলার ভারতবর্ষের ক্রেডেন্সিয়াল কে রীতিমত চ্যালেঞ্জ করে । ভারতের সিকিউরিটি এজেন্সিগুলিতে এত নগণ্য মুসলমান কেন ? ভারত কি হিন্দু রাষ্ট্র ?
  • দেবব্রত | 212.142.91.20 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৯:৫৪81577
  • @অয়ন বাবু ঃ- বর্তমান তৃনমূল সরকারের সময়ে কি হাল দেখুন ঃ- ২০১০ সালে ভোটের আগে রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশ কে সামনে রেখে ১০% মুসলমানদের ওবিসি কোটার মধ্যে আনা হয় যাতে তারা সরকারী চাকুরী এবং অন্যান্য সুবিধা পেতে পারে । ২০১০ সালের পরে ইতিমধ্যে ৬বছর অতিক্রান্ত ,এই সময়ের মধ্যে রাজ্যের ক্ষমতায় পালাবদল হয়েছে এমনকি রাজ্যস্তরে পালাবদলের পূর্বে কলকাতা কর্পোরেশনের ক্ষমতা এসেছে তৃনমূল নেতৃত্বের অধীনে কিন্তু মুসলমানদের অবস্থার কি কিছু পরিবর্তন হয়েছে ? সাচার কমিটির রিপোর্ট বা রঙ্গরাজন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার কতটা সংবেদনশীল , সরকারী চাকুরীতে এবং সরকার অধীন বিভিন্ন সংস্থায় মুসলমানদের অনুপাত কি বৃদ্ধি পেয়েছে ?
    এক কথায় উত্তর “ না “ ।

    স্বাধীনতা পরবর্তী মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা সেই ধারাবাহিকতা মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার সুচারু রূপে বহন করে চলেছে । ২০১২ সালের জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগের জন্য ৬৫১ জন সফল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে তাদের মধ্যে মাত্র ২৩ জন ছিলেন মুসলমান অর্থাৎ সমস্ত সফল প্রার্থীর মাত্র 3.5% । পশ্চিমবঙ্গের সরকারী নিয়ম অনুসার ১৭% সিট ( ৭% বি ক্যাটিগরি ওবিসি এবং ১০% এ ক্যাটিগরি ওবিসি ) ওবিসি দের জন্য সংরক্ষিত। এই ৬৫১ জন নিয়োগযোগ্য প্রার্থীর মধ্যে সমস্ত ওবিসি প্রার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৯ অর্থাৎ 10.59% এবং তার মধ্যে মুসলমান ওবিসি’র সংখ্যা মাত্র ২ জনা অর্থাৎ 0.3% ।

    কলকাতা পুলিশের ২৭,৩৮৮ জন কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ২৫৮৫ জন মুসলমান কর্মচারী নিযুক্ত হয়েছেন , যা নিযুক্ত কর্মচারীর মাত্র 9.43%,। কলকাতা কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে এই চিত্র আরও ভয়ঙ্কর ,২০০৭ সালে তৃনমূল যখন কর্পোরেশনের ক্ষমতা দখল করে তখন ৩৪,৭৩১ জন কর্মচারীর মধ্যে মাত্র ১৫৫৫ জন ছিলেন মুসলমান অর্থাৎ 4.47% বর্তমানে ২৭১২৫ জন কর্মচারীর মধ্যে ১৩০১ জন মুসলমান নিযুক্ত হয়েছেন যা নূতন নিযুক্তির মাত্র 4.79%। অর্থাৎ সংখ্যালঘু দরদী তৃনমূল বিগত ৯ বছরে কলকাতা কর্পোরেশনে মুসলমান কর্মচারী নিযুক্তি’র অনুপাত বৃদ্ধি করেছে মাত্র 0.32%

    পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা বর্তমানে ২৯% , সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের জমানায় পশ্চিমবঙ্গের সরকারী চাকুরীতে মুসলমানের অনুপাত ছিল ৮% এর মত , দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানায় চূড়ান্ত উদাসীনতার ফলে সরকারি চাকুরীতে মুসলমান জনসংখ্যার অনুপাত নেমে আসে ২% । বর্তমানে সরকারী চাকুরীতে মুসলমানদের জন্য ১০% ওবিসি কোটা থাকলেও সরকারের উদাসীনতা , গাফিলতির কারনে মাত্র 0.3% সেই কোটার সুবিধা পায় , কলকাতা কর্পোরেশন দীর্ঘ ৯ বছরের সময়কালে চাকুরীর ক্ষেত্রে মুসলমানদের অনুপাত 4.47% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র 4.79% এদিকে সংখ্যালঘু দরদে তৃনমূল সরকারের কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণে বিরতি নেই ।
  • দেবব্রত | 212.142.91.20 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৩81581
  • @Ekak " ক " আপনি দুটি পর্বে প্রকাশিত "দেশভাগঃ পশ্চিম বঙ্গের মুসলমান এবং ধারাবাহিক অবক্ষয় " শিরোনামের প্রবন্ধতে " অবসার্ভেশনের একটাই রুট কস হতে হবে এরকম রাজনৈতিক পিতৃদায় " দেখতে পারলেন বলে । তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন " স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পেরোনো মুসলিম বেকারের সংখ্যা কত, এবং অমুসলিম দের সঙ্গে অনুপাত কত সেটা একটু লিখুন প্রবন্ধকার" সেটা সাচার কমিটি খানেক লিখছে । অদ্ভুত- একটা সেকুলার দেশে একটা পিছিয়ে পরা জনজাতি শিক্ষা থেকে অর্থ প্রায় সমস্ত সামাজিক দিক থেকে কোণঠাসা , দু দশক ধরে দাঙ্গার সাক্ষী , তার পরেও এখানে ওখানে দাঙ্গা লেগেই আছে - সেখানে বলছেন " স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পেরোনো মুসলিম বেকারের সংখ্যা কত, এবং অমুসলিম দের সঙ্গে অনুপাত কত " স্নাতক হবে টা কোথা থেকে ? তপসিল জাতি /উপজাতিদের তাও সাংবিধানিক নিরাপত্তা ছিল তাও স্বাধীনতার ৭ দশক পরে তাদের মধ্যে মাত্র ৩-৪% গ্রাজুয়েট আর মুসলমানদের মধ্যে হবে কিভাবে ? আর হয়েই বা কি লাভ - চাকরি কে দেবে ? এই লেখাটির শেষে ফুটনোট হিসাবে হুমায়ুন কবিরের নাতির গল্প টি আছে -সেটাই মুল গল্প । তাই লেখাপড়া শেখার থেকে জরির কাজ শিখে নেওয়া ভালো ।

    আচ্ছা বাদ দেন, সাধারণ সৈনিক হতে তো বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগেনা -দৈহিক সামর্থ্য লাগে -তা ভারতীয় সামরিক বাহিনী ,আভ্যন্তরীণ সিকিউরিটি বাহিনী ,RAW , স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ(SPG) ,ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড ,(NSG) ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (NTRO) ,ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (IB) তাতে মুসলমান নেই কেন ? ভারতে প্রায় ১৫ কোটি মুসলমান বাস করলেও ১৯৬৯ সালে RAW গঠিত হওয়ার পর থেকে থেকে ১০০০০ সদস্যের RAW তে আজ পর্যন্ত একজনও মুসলমান নেই । সব অপদার্থ ? ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশনে (NTRO) ৬০০০ কর্মচারীর মধ্যে একজনও মুসলমান নেই ।সব বেইমান ? ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ১২০০০ কর্মচারীর মধ্যে মুসলমান কর্মচারীর সংখ্যা মাত্র 0.5%। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো স্থপিত হওয়ার ১২৫ বছর পরে এবং ভারতের স্বাধীনতার ৬৫ বছর পরে ২০১২ সালে মাত্র ২বছরের কম সময়ের জন্য প্রথম মুসলমান প্রধান নিযুক্ত হওয়া সম্ভব হয়েছিল । ভারতের সামরিক বাহিনীতে মুসলমান সদস্যের সংখ্যা মাত্র ২৯০০০ সাকুল্যে ৩% এর থেকেও কম । কেন মুসলমানেরা কি প্যাঁকাটি কাঠির তৈরি ? ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ কে রক্ষা করার জন্য গঠিত স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপ(SPG) একজনও মুসলমানও নেই এমনকি শিখও নেই কেন ? সন্ত্রাসবাদী হামলা থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য গঠিত ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড ,(NSG) তে একজনও মুসলমান নেই কেন ?

    তাও তুলনা যখন চাইলেনই (যদিও এই নিবন্ধের সাথে সম্পর্ক নেই এবং এই দীর্ঘ লেখায় মুসলমানদের অবস্থার কারনের পেছনের কাহিনীর বিষয়ে লেখা হয়েছে ) তখন এইটা দেখুন " But, does better education lead to better jobs? The NSSO reports reveal a mixed picture. Between 1993-94 and 2004-05 the proportion of employed who had studied beyond secondary level increased much more for Hindus than for Muslims. In rural areas the increase was about 6% for Hindus, but only by about 3% for Muslims among men, and around 3% for women from both communities. In urban areas, among men, the increase was about 7% for Hindus compared to 5% for Muslims while among women it was 8% for Hindus and 6% for Muslims.

    This is starkly reflected in unemployment rates, especially among educated persons. In rural areas, while 7% of Hindu graduates were unemployed, among Muslims this was more than double at 15%. In urban areas too the unemployment rate among Muslim graduates was double that of Hindus.

    This means that despite more and more persons getting educated, they are not finding jobs at the same rate ��� a share of the educated are remaining out of the workforce. It also indicates discrimination ��� your religion can make all the difference in getting a job, even if you have the same educational qualification. This is starkly reflected in the shares of educated among those employed. " More Muslims studying, but can't find jobs http://toi.in/iPABKa via @timesofindia রাজনৈতিক পিতৃদায় এবং হল্লাবাজী বলে মনে হচ্ছে ? অপূর্ব আপনার অবলোকন ক্ষমতার ভরসা বিষয়ে কনফিডেন্স দ্বিগুণ হয়ে গেল ।
  • π | 24.139.209.3 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৫81582
  • সাচার কমিটির তথ্যগুলো একটু আসুক না।
  • PT | 213.110.242.6 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪২81578
  • The overall figure of Muslims in the judiciary in the 12 high-Muslim population states stands at only 7.8 per cent as an average percentage. Again, Left Front-ruled West Bengal features as the lowest performer with only 5 per cent of Muslims in the higher positions of the state judiciary (percentage of Muslims in the state is 25.2 per cent). The position in neighbouring Assam is also quite similar. While the state has a Muslim population percentage of 30.9 per cent, the percentage of Muslims in the judiciary is only 9.4 per cent. The percentage of Muslims in the judiciary in Jammu and Kashmir, the state with the highest Muslim population (66.97 per cent), is only 48.3 per cent.

    এই জুডিসিয়ারিতে নিয়োগের ব্যাপারে "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" ইত্যাদির কি যোগাযোগ আছে কেউ একটু ব্যাখ্যা করবেন? জুডিসিয়ারিতে নিয়োজিত হওয়ার ব্যাপারে যে যোগ্যতা লাগে সেই যোগ্যতাসম্পন্ন মুসলিম ক্যান্ডিডেট আছে তো?

    আমি সম্প্রতি একটি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগের তালিকা স্ক্যান করেছি যাতে ২০০+ জনের নামের তালিকায় ৬-টি নামও দেখেছি বলে মনে করতে পারছি না।

    যে প্রশ্নটা আগেও করেছি সেটা রিপিট করি। যেখানে "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" ইত্যাদি ততটা ম্যাটার করেনা সেই সব জায়গায়, যেমন লেখক, চিত্রশিল্পী, গায়ক, খেলোয়ার ইত্যাদিতে মুসলমানদের ৩০%-এর কাছাকাছি রিপ্রেসেন্টেশন আছে পব-তে? না থাকলে কেন নেই?

    আর একটা ব্যাপারে ছদ্ম নিরপেক্ষতা দেখানোর কোনো-ই প্রয়োজন নেই। পব-র মুসলমানরা "ব্রাহ্মন্য বাদী" তিনো সরকারের কাজ-কম্মে বেজায় খুশী। তারাই তিনোদের সরকারে রাখার ও ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে অন্যতম শক্তি হিসেবে কাজ করে চলেছে।
  • দেবব্রত | 212.142.91.20 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৩81583
  • PT বুঝতেই পারছেন না " এই জুডিসিয়ারিতে নিয়োগের ব্যাপারে "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" ইত্যাদির কি যোগাযোগ আছে কেউ একটু ব্যাখ্যা করবেন? জুডিসিয়ারিতে নিয়োজিত হওয়ার ব্যাপারে যে যোগ্যতা লাগে সেই যোগ্যতাসম্পন্ন মুসলিম ক্যান্ডিডেট আছে তো?" না নেই - কারন পিছিয়ে পরা জনজাতিকে সামনের সারীতে তুলে আনার ক্ষেত্রে ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা তার জন্য দায়ী বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে । সাংবিধানিক নিরাপত্তার কারনে , সংরক্ষণের কারনে তপসিল জাতি /উপজাতি কিছুটা উঠে এলেও আমাদের রাজ্যে ২০১১ সাল পর্যন্ত মুসলমানদের জন্য কোন সংরক্ষণ ছিলোনা অথচ দেশের অন্যপ্রান্তে কেরলে যেখানে বামপন্থী এবং কংগ্রেস পালাবদল করে ক্ষমতায় ছিল সেখানে মুসলমান জনসংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় কম হওয়া স্বত্বেও ভারতের সংবিধানের আর্টিকেল ১৫(৪) এবং ১৬(৪ ) ধারা অনুসার তাদের রাজ্যে মুসলমানদের জন্য চাকুরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয়নি । কেরালায় পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ১২% মুসলমান কোটা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ৫০% মুসলমান এবং খ্রিস্টান কোটার কারণে সারা পশ্চিমবঙ্গের সরকারী চাকুরিতে যখন মাত্র 2.1% মুসলমান কর্মরত তখন কেরালায় সরকারী চাকুরিতে মুসলমানের সংখ্যা 10.4% । পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত PSU তে একজনাও গ্রুপ এ পোস্টে মুসলমান না থাকলেও কেরালায় ৯,৫% মুসলমান PSU গুলিতে গ্রুপ এ তে কর্মরত । পশ্চিমবঙ্গের আইন বিভাগে মাত্র ৫% মুসলমান অথচ কেরালায় ১2.3% মুসলমান আইন বিভাগে কর্মরত ছিল - এইটাই কারন আমাদের রাজ্যে বিচার বিভাগে , শিক্ষা বিভাগে মুসলমান অনুপাত কম হওয়ার । এখন কেরল যদি এই বিষয়ে সচেতন প্রয়াস নিতে পারে ,সংবিধানের আর্টিকেল ১৫(৪) এবং ১৬(৪ ) ধারা ব্যবহার করে রাজ্যে মুসলমানদের অবস্থার উন্নতির চেষ্টা করতে পারে তাহলে আমাদের রাজ্যে -কংগ্রেস -বামফ্রন্ট -তৃণমুল পারেনা কেন ? কারন" বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের উদাসীনতা এবং নির্লিপ্ততা সাথে সুপ্ত হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা -আর কোন যোগাযোগ খুঁজে পেলে জানাবেন।

    বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা"-র কারণেই মুসলমানদের পিছিয়ে থাকার পূর্ব-নির্ধারিত তত্বটি খারিজ হয়ে গেল না আরও বিস্তারিত ভাবে প্রতিষ্ঠিত হোল ? তবে অন্য কোন যোগাযোগ খুঁজে পেলে বা ব্যাখ্যা থাকলে জানাবেন।
  • Ekak | 53.224.129.61 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫৯81579
  • এতো খাবলাখাবলি না করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পেরোনো মুসলিম বেকারের সংখ্যা কত, এবং অমুসলিম দের সঙ্গে অনুপাত কত সেটা একটু লিখুন প্রবন্ধকার । এক্সট্রাপোলেশনেরও কিছু প্রসেস থাকে । এখানে সব ছাড়িয়ে যাচ্ছে ।

    মাঝখান টা ধরুন । তারপর সেখান থেকে আগে পিছে আইটারেট করলেই বোঝা যাবে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব কম থাকার কারণের মধ্যে কতটা কোন কারণ জড়িয়ে আছে । পুরো অবসার্ভেশনের একটাই রুট কস হতে হবে এরকম রাজনৈতিক পিতৃদায় নিয়ে বসে থাকলে সেটা ভালো প্রবন্ধ হয়না , হাল্লাবাজি হতে পারে বড়োজোর ।
  • PT | 213.110.242.6 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৪:১১81580
  • এইজাতীয় যুক্তিবাদী পদ্ধতি প্রয়োগ করলে "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা"-র কারণেই মুসলমানদের পিছিয়ে থাকার পূর্ব-নির্ধারিত তত্বটি খারিজ হয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা আছে!!!
  • হিন্দুফোবিয়া | 47.48.80.101 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৪:৪২81584
  • মুসলমান সমাজ যত সংখ্যায় বাড়ছে তত শিক্ষায় পেছোচ্ছে - এটাই বক্তব্য?
  • PT | 213.110.242.24 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৬:২৭81585
  • যে প্রশ্নটা আগেও করেছি সেটা রিপিট করি। যেখানে "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" ইত্যাদি ততটা ম্যাটার করেনা সেই সব জায়গায়, যেমন লেখক, চিত্রশিল্পী, গায়ক, খেলোয়ার ইত্যাদিতে মুসলমানদের ৩০%-এর কাছাকাছি রিপ্রেসেন্টেশন আছে পব-তে? না থাকলে কেন নেই?

    "বিভিন্ন ব্রাহ্মন্য বাদী রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" লেখার বদলে "বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে উদাসীনতা ,নির্লিপ্ততা" লিখলে আলোচনাটা এগোতে পারত। ঐ "ব্রাহ্মন্য বাদী" বিশেষণটির প্রয়োগ পূর্ব-নির্ধারিত-বোধহয় জয়া চ্যাটার্জীর বইটির দ্বারা মস্তিষ্ক প্রক্ষালিত হয়ে। আর ঐ "ব্রাহ্মন্য" বাদের কারণেই মুসলমান সমাজ পিছিয়ে আছে এমন সিদ্ধান্তে নেওয়ার বিশেষ কোন যৌক্তিকতা নেই।
  • PT | 213.110.242.24 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৬:৩৭81586
  • একটি সমান্তরাল কনস্পিরেসি তত্বঃ- শুধু মুসলমান নয়, বাঙালী আর গুজরাটিরাও নাকি সংখ্যায় কম ভারতীয় মিলিটারিতে!! অন্ততঃ লরেন বাবুর উত্থানের পরে তো মিলিটারিতে গুজরাটির সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকা উচিত!!

    Haryana, which has only 2.2% of India’s population, contributes 7.82% to the armed forces; an over representation of 255%. Similarly, Himachal Pradesh has only 0.6% of India’s population, yet contributes 4.68% of the armed forces; an over representation by 680%! Statistically though, none can match Punjab, whose corresponding figures are 2.4% and a whopping 16.6%; an over representation of 538%.

    Just for comparison’s sake, the same figures for Orissa is 3.65% to 1.27%, Bengal is 7.8% to 3.63%, Maharashtra is 9.8% to 7.64%, Bihar is 10.8% to 5.13%, Andhra Pradesh is 7.45% to 4.08%, and Tamil Nadu is 6.2% to 5.09%. At the bottom of the under-represented states are those stereotyped for their business acumen; Gujarat with a percentage of 4.5% of the Indian population and only 1.48% of the armed forces, has an under-representation of 70%.

    This discrepancy is noted even in the selection of officers. The figures for intake of officer cadets into the Indian Military Academy during the period 1983-87 by region shows a whopping 12.32% of officers from the Punjab, and a further 10.90% from Haryana and Chandigarh. That is almost 1/4th of the total officers. If one adds Delhi (9.21%), the figure is more than 30%. As expected, at the bottom of the list are West Bengal (2.47%), Gujarat (0.52%), Maharashtra (4.22%) and Tamil Nadu (2.3%). Statistically, the North-Eastern states are almost nonexistent."
    https://morningmedia.wordpress.com/2012/05/20/the-shadow-of-the-martial-race-theory-in-the-indian-army-does-it-still-exist/
  • দেবব্রত | 37.63.155.37 (*) | ১১ জুলাই ২০১৬ ০১:৪০81591
  • "উদাসীন" মানলেও মানতে পারি ঠিক আছে - কিন্তু উদাসীন কেন ? হওয়ার তো কথা নয় -সরকারি দল না হয় হোল তাই বলে বিপক্ষ কেন হবে ? আর এই উদাসীনতার কারনই বা কি । দেখুন কেরল সংবিধানের ধারা কে ব্যবহার করল আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গুলি কেন তবে পারলনা? নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দল নয় মূলত সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে উদাসীন কেমন অদ্ভুত নয় ?
  • PT | 213.110.242.5 (*) | ১১ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫০81592
  • উত্তরটা আমার জানা নেই। কিন্তু কিসের তাড়নায় মুসলমানদের সরকারী চাকরী না পাওয়ার সঙ্গে "ব্রাহ্মন্য বাদ" জড়িত সেটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না।

    তবে আংশিক উত্তর আগেই দেওয়া আছেঃ "যদিও কেরালার এই মুসলমান সংরক্ষণের পেছনে সেখানকার মুসলিম লীগের ( IUML) মত রাজনৈতিক দলের চাপ বর্তমান ছিল"।

    পব-র মুসলমানেরা আগে বাম এখন তিনো নিয়েই খুশী। হয়্ত তারা সরকারী চাকরী না পেয়েই খুশী (আমি জানিনা)। তাই তারা আলাদা করে নিজেদের দল করেনি। আর করার যে বিশেষ বাসনাও নেই সেটা সিদ্দিকুল্লা-রেজ্জাক-নজরুল এদেরকে দিয়েই বোঝা যাচ্ছে।

    তাহলে খামাখা এই "ব্রাহ্মন্য বাদ" ব্যাপারটিকে জোর করে আলোচনার ঘাড়ে চাপানোর এত চেষ্টা কেন?
  • দেবব্রত | 233.191.19.133 (*) | ১১ জুলাই ২০১৬ ০৭:৪৪81587
  • " একটি সমান্তরাল কনস্পিরেসি তত্বঃ- শুধু মুসলমান নয়, বাঙালী আর গুজরাটিরাও নাকি সংখ্যায় কম ভারতীয় মিলিটারিতে!! " না ঠিক কন্সপিরেসি নয় বরং ভারতীয় মিলিটারিতে নিয়োগের পেছনে ব্রিটিশের 'যোদ্ধা জাত ' কন্সপেট ইত্যাদি'র প্রভাবের ধারাবাহিকতা বলতে পারেন । সেই কারনে ভারতের সামরিক বাহিনীতে গোর্খা সেনা /শিখ /জাঠ তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে অধিক । এখনো নেপালে'র বিভিন্ন প্রান্তে ভারতীয় মিলিটারির জন্য রিক্রুটমেন্ট সেন্টার এবং পেনসন ডিসবার্স্মেন্ট সেন্টার বর্তমান । ১৮৫৭ সালের পরে ভারতের সৈন্যবাহিনীতে এবং গোয়েন্দা দপ্তরে মুসলমান নিযুক্তি বন্ধ হয়ে যায় । আর বাঙ্গালিদের না রিক্রুট করার পেছনে ব্রিটিশের "যোদ্ধা জাতি " কনসেপ্ট এবং উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে বাঙ্গালির ভূমিকা হয়ত দায়ী । তবে BSF এবং CRPF এর নিচু স্তরে বাঙ্গালি কম নয় । ভারতবর্ষের মিলিটারি নিয়োগ সেই ব্রিটিশ লিগ্যাসি বহন করে চলেছে তাই মুসলমান নগণ্য এবং গোয়েন্দা দপ্তরে প্রায় শূন্য । তাছাড়া পাঞ্জাবি /জাঠ লবি স্বাধীন ভারতে মিলিটারি নিয়োগের পেছনে আরেক কারন বলা যেতে পারে । কিন্তু শিখেরা মিলিটারিতে থাকলেও SPG তে নেই /NSG তে নগণ্য -ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যু তার অন্যতম কারন ।
  • PT | 213.110.242.20 (*) | ১১ জুলাই ২০১৬ ০৮:২৯81588
  • গুজরাটিরা বোধহয় ব্যব্সায়ী জাতি বলে আর তামিলদের নিলে বোধহয় ইড্লি-সম্বর খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে বলে মিলিটারিতে নেওয়া হয়না।

    আগের তক্কে আরেকটু যোগ করি। যে দুটি দল কেরালা ও পব-তে সব চাইতে লম্বা সময় ধরে ক্ষমতায় ছিল তারা পব-তে "ব্রাহ্মন্য বাদী" আর কেরালায় প্রগতিশীল এরকম একটা তত্বেরও বোধহয় গোঁফ দেখা যাচ্ছে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন