এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপার বাংলা

  • না, আর লিখবোনা

    ওয়াশিকুর বাবু লেখকের গ্রাহক হোন
    অপার বাংলা | ৩০ মার্চ ২০১৫ | ১৫৭৬ বার পঠিত
  • ফেসবুকের এই পুরোনো নোটটি পুনঃপ্রকাশ করা হল, অবিকল যেমনটি ছিল ঠিক সেইভাবে। শিরোনাম লেখক দেননি, আমাদের দেওয়া। অনুমতি নেওয়া যায়নি। কারণটা সবাই জানেন, লেখক আর সত্যিই লিখবেন না।

     ওয়াশিকুর বাবু

    November 20, 2014 · 

    না, আর লিখবোনা যুদ্ধাপরাধ, মৌলবাদ,দেশ, রাজনীতি নিয়ে। এমনিতেও লিখলে কিছুই হয়না শুধু মনের ঝালটা মিটাই। কিন্তু তাতেও নাকি অনুভূতি আহত হয়, 'শান্তি' বিনষ্ট হয়, উন্নয়ন ব্যাহত হয়। তাই এমন কিছু নিয়ে লিখতে হবে যাতে কারোই সমস্যা না হয়।

    আচ্ছা গাছ-পালা নিয়ে লেখা যাক। আমাদের দেশে প্রয়োজনের তুলনায় গাছের পরিমান অনেক কম। বিভিন্ন কারনে নিয়মিত বৃক্ষনিধন তো হচ্ছেই। গত বছর হেফাজৎ-শিবির আন্দোলনের নামে প্রচুর গাছ কেটেছিলো। সম্ভবত মরুভূমি তাদের পছন্দ বলেই গাছের প্রতি ক্ষোভ। তার উপর রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করলে সুন্দরবনের ঝুঁকি...

    ... একি, এসব কী লিখছি! না না এ লেখা চলবে না। শান্তি বিনষ্ট হবে, উন্নয়ন ব্যাহত হবে। অন্য কিছু নিয়ে লিখতে হবে...

    ...হুম শিক্ষা নিয়ে লেখা যায়। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। প্রতিবছর পাশের হার বাড়ছে কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার কী অবস্থা! ব্যাপক ভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। যেনতেন ভাবে পাশ করাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মেধা মূল্যায়নের বালাই নেই। দেশে ত্রি স্তরের শিক্ষা ব্যাবস্থা প্রচলিত...

    ...দূর, এ নিয়েও লেখা ঠিক হবে না। শিক্ষার হার তর তর করে বাড়ছে। এই অবস্থায় এমন লেখা মানে শিক্ষার উপর আঘাত...

    ...বরং ভ্রমন কাহিনী লিখি। কয়েকবছর আগে সীতাকুন্ডু গিয়েছিলাম। সেখান থেকে পার্বত্য চট্রগ্রামের পাহাড়গুলো দেখা যায়। দেশের আদিবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশই সেখানে বাস করে। যদিও সেটেলার আর সেনাবাহিনীর আগ্রাসনে তারা বিপর্যস্ত।এছাড়াও অনেক আগে কাপ্তাই জলবিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের সময় বিশাল এলাকা তলিয়ে গিয়েছিলো...

    ...সর্বনাশ, এসব লিখলে নির্ঘাত বিচ্ছিন্নবাদী রাষ্ট্রদোহী হয়ে যাবো! থাকুক আদিবাসীরা তাদের মতো। আমি নিরাপদ কিছু...

    ...পেয়েছি চলচ্চিত্র। আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা খুবই বেহাল। যদিও গুটিকয় মানুষ এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন তারেক মাসুদ। দুর্ভাগ্য বসত তাঁকে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি। দেশের একটা শ্রেণী তাঁকে পছন্দ করে না। কারন তার চলচ্চিত্রে ধর্মীয় গোঁড়ামি, জঙ্গিবাদ স্থান পেয়েছিলো। তাঁর পরিচালিত মাটির ময়না 'কান চলচ্চিত্র উৎসবে' পুরস্কৃত হলেও তৎকালীন বিএনপি-জামাত জোট সরকার প্রথমে মুক্তি দিতে চায়নি ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে। পরে...

    ...অসম্ভব! আমার ঘাড়ে ক'টা মাথা যে ধর্মীয় গোঁড়ামি নিয়ে লিখবো? বরং...

    ...প্রেম, হ্যাঁ প্রেম-ভালোবাসা সবচেয়ে নিরাপদ বিষয়। কে না আছে জীবনে একবার হলেও প্রেম করে! অনেক ছেলে আছে যারা একের পর এক প্রেম করে। কিন্তু প্রতিবারই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার পরই সম্পর্ক ভেঙে দেয়। অনেকে আবার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। এসব ক্ষেত্রে শুধু মেয়েদেরই দোষারোপ করা হয়। ওই ছেলেগুলো ঠিকই বিয়ের ক্ষেত্রে অক্ষতযোনির মেয়ে খুঁজে। কিন্তু ওই মেয়েরা পরবর্তীতে খুব কমই স্বাভাবিক জীবন যাপন...

    ...নাহ; নারী অধিকার, নারী স্বাধীনতা এসব নিয়ে টু শব্দও করা যাবে না। সমাজ নষ্ট হয়ে যাবে, ছেলে-মেয়েরা সব উচ্ছন্নে যাবে। সমাজ ঠিক থাক আমি...

    ...নিজেকে নিয়েই কিছু লেখা যাক। আমার জন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য সুবিধাবাদিতা, দোদুল্যমানতা, স্বার্থপরতা সবই আমার মধ্যে আছে। তবু ভালো নিম্নবিত্ত বা কৃষক-শ্রমিক শ্রেণীতে জন্মাইনি। কৃষকরা পায়না ফসলের ন্যায্য মূল্য, শ্রমিকরা পায় না ন্যায্য মজুরী। সবচেয়ে বৃহত শিল্প খাত গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তাও নেই। কখনো ভবন ধ্বস, কখনো আগুন লেগে তারা গণহারে মারা যায়। তারপর লোক দেখানো উদ্ধার তৎপরতা, নামকাওয়াস্তে তদন্ত কমিটি, ক্ষতিপূরনের ভুয়া আশ্বাস, বিচারের নামে অভিযুক্তকে আড়াল করা এগুলো...

    ...উফ, আমার দ্বারা আসলেই লেখা সম্ভব না। কী সুন্দর করে তরতর করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর আমি কিনা বাগড়া দিতে বসেছি! এসব তো লেখে ষড়যন্ত্রকারীরা যারা দেশের শিল্প খাত ধ্বংস করতে চায়, কৃষি উন্নয়ন নশ্চ্যাৎ করতে চায়। বাস্তবতা ছেড়ে নাহয়...

    ...গল্প লিখি। এক যে ছিলো রাজা। এখন তো আর রাজার যুগ নেই। সর্বশেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজিত ও নির্মম ভাবে নিহত হয়েছিলেন। অবশ্য মীরজাফর তার কৃতকর্মের শাস্তি ভোগ করেছিলো অচিরেই। কিন্তু মীরজাফরের চেয়ে শতগুন ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধীরা অনেক বছর এ দেশে শান্তিতে বসবাস করেছে। ক্ষমতার স্বাদও নিয়েছে। বর্তমানে যদিও তাদের বিচার চলছে কিন্তু ধীর গতির ট্রাইব্যুনাল, যে কোন দিন রায়, সরকারের সাথে আঁতাতের অভিযোগ, শাহবাগ আন্দোলন...

    ...মাথা খারাপ! এসব নিয়ে লিখলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যাহত হবে। স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকারের দোসর তিলক পড়বে!

    তাহলে কী নিয়ে লিখবো আমি! কেউ কি বলতে পারবেন কী নিয়ে লিখতে সরকার, রাজনৈতিক দল, মৌলবাদী, জনগণ, স্বাধীনতা পক্ষ-বিপক্ষ সব গোষ্ঠী শান্ত থাকবে? আছেন কি কেউ বুদ্ধি দেওয়ার মতো?

    হ্যালো...

    *রিপোস্ট সামান্য পরিবর্তিত


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপার বাংলা | ৩০ মার্চ ২০১৫ | ১৫৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • বাবুরাম সাপুড়ে | 127.194.231.200 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৫:৫৩87092
  • সত্যি, কি নিয়ে যে লেখা যায়.................. না লেখাই ভাল
  • ankan | 59.248.68.67 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৬:৩৯87093
  • Awsadharon lekha. bhabteo kharap lage priyo bangladesh ajke ei obostha...obosyo kharap lagar ki achhe, amader poschimbongo o to eki pother pothik.

    kintu lekhok na likheo je sotti kotha ta likhe gelen, ebong jeebon diye ja amader chokh e angul diye dekhiye dilen, eta ki kono kaj e asbe? ajker dineo bangladesh e majority manush ei khunkharapi ke somorthon koren na. ami asha korbo tara abar pothe namben...abar ekta shahbag asuk..arekta bosonto dorkar ...
  • Tim | 101.185.30.63 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৮:০০87094
  • এই নিয়ে দুটি লেখা পড়লাম এই লেখকের। ভালো লেগেছে জানানো হলো না..

    ওয়াশিকুর বাবুর এই সাম্প্রতিক লেখাটি, অভিজিত রায়ের শেষ ফেসবুক স্ট্যাটাস, যার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে খুন করা হবে, এইগুলো খুব মনে পড়ছে/পড়বে থেকে থেকেই।
  • riddhi | 60.59.58.110 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৮:১২87095
  • এটা একটা দারুন লেখা।
  • pi | 192.66.13.83 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৮:৪৮87096
  • এনাদের জন্য যদি সত্যি শাহবাগ হত !
  • নির | 230.226.2.57 (*) | ৩০ মার্চ ২০১৫ ০৯:১৪87097
  • ওয়াশিকুর বাবু কে আমি খুব বেশিদিন চিনতাম না। তবে কয়েকমাস আগে তার বিখ্যাত দাঁত-ভাঙ্গা-জবাব সমগ্রের সঙ্গে পরিচিত হই। তারপর থেকে তার পোস্টগুলোকে ফলো করেছি। 'নাস্তিকদের কটুক্তির বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব সমগ্র-ওয়াশিকুর বাবু স্মরনে'- সার্চ করে এখনো পড়তে পারেন ফেসবুক থেকে। বাবুর মত এরকম সেন্স অফ হিউমার অনলাইনে খুব কম লেখকেরই আছে। সরি, ছিল।
    অভিজিতের মৃত্যুতে খুবই বিচলিত হয়ে পড়েছিলাম। যদিও কখনো তাঁকে চোখে দেখিনি, তবু রোজ সকাল বিকেল যাঁর কথা শুনি সেরকম একজনের মৃত্যু- এইরকমই বোধ হয়েছিল। ফেসবুকেও অনেক চিত্কার করেছি তা নিয়ে। এখন বাবুর মৃত্যুতে আর সেরকম চিত্কার করছিনা, যদিও ধাক্কাটা অভিজিতের মৃত্যুর মতই লেগেছে। এই নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্নও করছেন দেখলাম, কেন এখন মানুষ আগেরবারের মত অতটা ফুঁসে উঠছে না। আমার নিজেরটা বলতে পারি, বাবুর মৃত্যুর পর এখন আমি অজান্তে মেনেই নিয়েছি যে এরকমই চলতে থাকবে, কেউ কিছু করতে পারবে না। কয়েকদিন পর এইভাবেই আবার কেউ খুন হবে। তার কয়েকদিন পর আবার, লিস্ট ধরে ধরে।
    আমি ভুল প্রমাণিত হলেই খুশি হব।
  • aka | 80.195.65.206 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ০২:২২87098
  • বাঙ্গলাদেশে ব্লগার খুনের মধ্যে ইনিই কি লেটেস্ট? না হলে একান্ত খমাপ্রার্থী, কিন্তু এরকমই পড়লাম মনে হল, কেউ কনফার্ম করবেন?
  • aka | 80.195.65.206 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ০২:২৫87099
  • ও ওপরের ডিসক্লেমারটা পড়লাম। রিডিকিউলাস। একটা ধর্ম এত মৌলবাদী জন্ম দেয় কি করে?
  • subrata chowdhury | 24.99.28.169 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ০২:২৫87103
  • অসাধারণ লেখা ভালো লাগলো, ধন্যবাদ গুরু চান্দালি কে ইটা পোস্ট করার জন্য
  • update | 85.137.13.237 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৩:৪৫87100
  • name: সিকি mail: country:

    IP Address : 166.107.82.66 (*) Date:30 Mar 2015 -- 05:21 PM

    তানিমের মত অমানুষরা যে সব হুজুরের কথা শুনে চলেন, সেই সব হুজুরের কথা মত - http://www.banglanews24.com/fullnews/bn/381126.html
  • Salil | 213.147.88.10 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৭:৩৩87101
  • আমাদের প্রতিবাদের ভাষা খুব সুন্দর, কিন্তু প্রতিরোধের আগুন খুব লেলিহান নয়। আসুন আমরা বিজেপি (লোক দেখানো ম্মতা-মার্কা নয় সুবিধাবাদী মসনদী বাম-মার্কাও নয়) আর জামাত উভয়েরই বিরোধিতা করি একসুরে, একযোগে। ধর্মান্ধতা নিপাত যাক। ওয়াশিকুর বাবুর কথা মনে রাখার সেটাই হবে শ্রেষ্ঠ উপায়।
  • Biplob Rahman | 212.164.212.20 (*) | ৩১ মার্চ ২০১৫ ১০:০৫87102
  • অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে সদেশ। আসুন, হেফাজতি বাংলায় আমরাও ভোটের রাজনীতি করি; বলি অভিজিৎ নামে কোথাও কেউ ছিলো না, অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, "নাস্তিক ব্লগার" রাজিব আহমেদ ও ওয়াশিকুর বাবু ইন্তেকাল ফার্মাইছেন মাত্র। জিও পাকিস্তান!

    ‪#‎iamavijit‬
  • maximin | 127.194.254.188 (*) | ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫৩87105
  • এই লেখাটা আজকের এই সময় ছেপেছে। একটা এডিশনে ভূমিকাসমেত ছেপে দিয়েছে। গুরুচন্ডালি থেকে নিয়েছে, সেটা উল্লেখ করা উচিত ছিল বলেই মনে করি।

    ওয়াশিকুর বাবুর লেখাটা অনবদ্য।
  • সত্য সন্ধানী | 212.142.77.10 (*) | ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৯87106
  • পোস্ট তা আমার চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল। সত্যিই তো গাছ- শিক্ষা- উপজাতি সমস্যা- চলচিত্র- প্রেম- নারী অধিকার- শ্রমের মূল্য- যুদ্ধাপরাধ নিয়ে লেখা যাবে না। গাছ শুন্য হয়ে যাচ্ছে দেশ। কিছু বলা যাবে না। একসময় যশোর রোডে প্রচুর মেহগনি গাছ ছিল। যশোরের আকিজ গ্রুপ একবার এই গাছ কেটে নতুন করে গাছ লাগানোর বরাত পায়। কিন্তু গাছ কাটা ঠিক ঠাক হলেও গাছ কত গুলো লাগানো হয়েছে তা তো ওই রাস্তা দিয়ে গেলেই বোঝা যায়। ত্রি স্তর মানে মাদ্রাসা- সাধারন শিক্ষা আর ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে দেশে। আমরা সেই প্রথম থেকে বলে এসেছি বাংলাদেশে কোন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে না। সবার জন্য সাধারন শিক্ষাই যথেষ্ট। ২৫/৩০ বছর আগে সেটা করা যেত। আজ আর সম্ভব কিনা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। উপজাতি সমস্যা ধীরে ধীরে যে দিকে মোড় নিচ্ছে তাতে আমার মনে হয় দেশ থেকে হিন্দুর সংখ্যা যে ভাবে দিন দিন কমছে সেই একি দশা হবে উপজাতিদের। তারেক মাসুদের " মাটির ময়না " দেখেছিলাম শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরী অডিটোরিয়ামে। প্রথম দিন। প্রচুর ভিড় ছিল। কিছু দিন আগে " মনপুরা " বলে আরও একটা চলচ্চিত্র বেরিয়েছে সেখানেও গোঁড়ামিকে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু কয়দিন আর এসব সম্ভব হবে ? জানা নেই। আমি ১৯৮৬ থেকে ঢাকা তে। তখন খুব কম দেখা যেত বোরখা পরা মেয়েদের। কিন্তু ইরাক ইরান যুদ্ধের পর থেকে দেশে বাড়তে থাকে বোরখার প্রচলন। আর আজ তো বেড়েই চলেছে। ঢাকা আজ মসজিদের শহর। মোড়ে মোড়ে মসজিদ। আবার প্রধানমন্ত্রী ৫০০ টা আধুনিক মসজিদ বানাবেন। বুঝি কাদের মন রক্ষা করতে সরকারের এই প্রয়াস। তবে আমার মনে হয় এখনও পর্যন্ত মৌলবাদী রা গার্মেন্টস এর মহিলা শ্রমিক দের কে নিয়ে কিছু বলবে না। কারন গার্মেন্টসের ৯০ % শ্রমিক মহিলা। তবে বলবে। যুদ্ধাপরাধী দের বিচার ? মনে হয় না সব অপরাধীর বিচার করতে পারবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা কোন সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়। তবুও হাসিনা সরকার কিছু টা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মুসলিম বিশ্বের বিশেষ করে সৌদি আরবের চাপের কাছে মাথানত করতে হচ্ছে। কারন সৌদি আরবে প্রচুর বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করে। ওদের কথা না শুনলে শ্রমিক দের ফেরত দেবে। বাংলাদেশ থেকে ৮০ লাখ লোক বিদেশে কাজ করে। তার বেশির ভাগ মধ্য প্রাচ্যে। পেট্রো ডলার আসছে দেশে। রিজার্ভ বাড়ছে। গত প্রায় ৬/৭ বছর ডলারের বিপরীতে টাকা একই জায়গায়। কিন্তু বাড়ছে সন্ত্রাস। মৌলবাদের সমর্থনে। প্রকৃত শিক্ষা কোন দিন বাংলাদেশী দের দেয়া হবে না। তাহলে মৌলবাদী রা কি নিয়ে থাকবে ? আগে দেখতাম বামপন্থী অনেক লোক। এখন আর তাঁদের দেখা যায় না। যারা আগে বামপন্থী ছিলেন আমি তাঁদের অনেক কে দেখেছি পুরো ডান পন্থী হয়ে যেতে। রাশেদ খান মেনন যেমন এখন হাজী সাহেব। আমার অনেক বন্ধু উদীচী করত। এখন তারা জাকির নায়েকের ভক্ত। উদীচী করেনা। বলে গান শোনা হারাম। কি মুশকিল। এক সময় তো জাতীয় সংগীত নিয়ে কথা উঠেছিল। একজন মালাউনের গান কেন গাওয়া হবে জাতীয় সংগীত হিসেবে। আমার মনে হয় সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন জাতীয় সংগীত ও পাল্টে যাবে। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল উদার পন্থীরা। এঁদের শেষ করে দেয়া। পাকিস্তানিরাও তাই করেছে ১৯৭১ সালে। তারই পথ ধরে প্রতিক্রিয়াশীল রা কাজ করছে। রাজীব- অভিজিৎ- ওয়াশিকুর দের হত্যা তারই অংশ। আমাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত শিবির এর লোক দের দেখা যেত না। আর এখন ? বাংলাদেশের পতাকা আজ ওদের হাতে। একঝাক শকুনের হাতে আজ বাংলাদেশের পতাকা।
  • সত্য সন্ধানী | 212.142.77.10 (*) | ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৯87107
  • পোস্ট তা আমার চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিল। সত্যিই তো গাছ- শিক্ষা- উপজাতি সমস্যা- চলচিত্র- প্রেম- নারী অধিকার- শ্রমের মূল্য- যুদ্ধাপরাধ নিয়ে লেখা যাবে না। গাছ শুন্য হয়ে যাচ্ছে দেশ। কিছু বলা যাবে না। একসময় যশোর রোডে প্রচুর মেহগনি গাছ ছিল। যশোরের আকিজ গ্রুপ একবার এই গাছ কেটে নতুন করে গাছ লাগানোর বরাত পায়। কিন্তু গাছ কাটা ঠিক ঠাক হলেও গাছ কত গুলো লাগানো হয়েছে তা তো ওই রাস্তা দিয়ে গেলেই বোঝা যায়। ত্রি স্তর মানে মাদ্রাসা- সাধারন শিক্ষা আর ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে দেশে। আমরা সেই প্রথম থেকে বলে এসেছি বাংলাদেশে কোন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকবে না। সবার জন্য সাধারন শিক্ষাই যথেষ্ট। ২৫/৩০ বছর আগে সেটা করা যেত। আজ আর সম্ভব কিনা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। উপজাতি সমস্যা ধীরে ধীরে যে দিকে মোড় নিচ্ছে তাতে আমার মনে হয় দেশ থেকে হিন্দুর সংখ্যা যে ভাবে দিন দিন কমছে সেই একি দশা হবে উপজাতিদের। তারেক মাসুদের " মাটির ময়না " দেখেছিলাম শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরী অডিটোরিয়ামে। প্রথম দিন। প্রচুর ভিড় ছিল। কিছু দিন আগে " মনপুরা " বলে আরও একটা চলচ্চিত্র বেরিয়েছে সেখানেও গোঁড়ামিকে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু কয়দিন আর এসব সম্ভব হবে ? জানা নেই। আমি ১৯৮৬ থেকে ঢাকা তে। তখন খুব কম দেখা যেত বোরখা পরা মেয়েদের। কিন্তু ইরাক ইরান যুদ্ধের পর থেকে দেশে বাড়তে থাকে বোরখার প্রচলন। আর আজ তো বেড়েই চলেছে। ঢাকা আজ মসজিদের শহর। মোড়ে মোড়ে মসজিদ। আবার প্রধানমন্ত্রী ৫০০ টা আধুনিক মসজিদ বানাবেন। বুঝি কাদের মন রক্ষা করতে সরকারের এই প্রয়াস। তবে আমার মনে হয় এখনও পর্যন্ত মৌলবাদী রা গার্মেন্টস এর মহিলা শ্রমিক দের কে নিয়ে কিছু বলবে না। কারন গার্মেন্টসের ৯০ % শ্রমিক মহিলা। তবে বলবে। যুদ্ধাপরাধী দের বিচার ? মনে হয় না সব অপরাধীর বিচার করতে পারবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে তা কোন সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় বলে আমার মনে হয়। তবুও হাসিনা সরকার কিছু টা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মুসলিম বিশ্বের বিশেষ করে সৌদি আরবের চাপের কাছে মাথানত করতে হচ্ছে। কারন সৌদি আরবে প্রচুর বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করে। ওদের কথা না শুনলে শ্রমিক দের ফেরত দেবে। বাংলাদেশ থেকে ৮০ লাখ লোক বিদেশে কাজ করে। তার বেশির ভাগ মধ্য প্রাচ্যে। পেট্রো ডলার আসছে দেশে। রিজার্ভ বাড়ছে। গত প্রায় ৬/৭ বছর ডলারের বিপরীতে টাকা একই জায়গায়। কিন্তু বাড়ছে সন্ত্রাস। মৌলবাদের সমর্থনে। প্রকৃত শিক্ষা কোন দিন বাংলাদেশী দের দেয়া হবে না। তাহলে মৌলবাদী রা কি নিয়ে থাকবে ? আগে দেখতাম বামপন্থী অনেক লোক। এখন আর তাঁদের দেখা যায় না। যারা আগে বামপন্থী ছিলেন আমি তাঁদের অনেক কে দেখেছি পুরো ডান পন্থী হয়ে যেতে। রাশেদ খান মেনন যেমন এখন হাজী সাহেব। আমার অনেক বন্ধু উদীচী করত। এখন তারা জাকির নায়েকের ভক্ত। উদীচী করেনা। বলে গান শোনা হারাম। কি মুশকিল। এক সময় তো জাতীয় সংগীত নিয়ে কথা উঠেছিল। একজন মালাউনের গান কেন গাওয়া হবে জাতীয় সংগীত হিসেবে। আমার মনে হয় সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন জাতীয় সংগীত ও পাল্টে যাবে। তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হল উদার পন্থীরা। এঁদের শেষ করে দেয়া। পাকিস্তানিরাও তাই করেছে ১৯৭১ সালে। তারই পথ ধরে প্রতিক্রিয়াশীল রা কাজ করছে। রাজীব- অভিজিৎ- ওয়াশিকুর দের হত্যা তারই অংশ। আমাদের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাত শিবির এর লোক দের দেখা যেত না। আর এখন ? বাংলাদেশের পতাকা আজ ওদের হাতে। একঝাক শকুনের হাতে আজ বাংলাদেশের পতাকা।
  • Ishan | 202.43.65.245 (*) | ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩১87109
  • লেখাটা দেখলাম। এই লেখাটা সর্বত্র যাওয়া দরকার, সে হিসেবে এই সময় খুবই ভালো কাজ করেছে। কিন্তু যেহেতু গুরুর সাইট থেকে হুবহু কপি-পেস্ট, তাই সূত্রটা দিলে ভালো হত। এইটুকু সৌজন্য গুরুচন্ডালি প্রত্যাশা করে। আশা করি সংশোধন করে নেওয়া হবে।
  • buchan | 127.99.51.232 (*) | ০১ এপ্রিল ২০১৫ ১২:২৪87104
  • Badha dile badhbe laraai..lorte habe... Path jure ki korbi borai..sorte habe... Abhijit..Washikur..apnader sathe achhi..thakbo..
  • একক | 24.99.133.150 (*) | ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩০87111
  • চায় না। মন্ত্রীরা অভিজিত এর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন লুকিয়ে লুকিয়ে । এতো ভয় । এটাই কী স্পষ্ট করে দিচ্ছেনা দেশ টার পরিস্থিতি ? যেকোনো ভাবে নাস্তিকের মৃত্যু ধামাচাপা পরলে সবাই বাঁচে ।
  • Biplob Rahman | 129.30.38.248 (*) | ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০৪:৩৭87110
  • এই হত্যা নিয়েও সেই পুলিশী ধানাই পানাই সুরু হয়েছে।

    হুমাউন আজাদকে মনে পড়ছে। আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেn, সায়দিইকে রিমান্ডে নিলেই প্রকৃত খুনি ধরা পড়বে।

    আর এখন বাবু হত্যায় তেতুল হুজুরকে রিমান্ডে নিলেই সব ফেনাটিক ফারাবিরা ধরা পড়বে।

    কিন্তু পুলিশ এসব হত্যার বিচার চায় তো??
  • রিফাত রাব্বি | 190.211.191.242 (*) | ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৬:৫৫87113
  • না বাংলাদেশে ব্লগার হত্যায় ও্য়াশিকুর বাবু লেটেস্ট না।উনি ৮ম খুন।
  • d | 24.97.167.84 (*) | ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৭:০২87114
  • ওয়াশিকুর বাবু লেটেস্ট না???? বলেন কী? ওঁর পরে আবার কে খুন হলেন? কবে হলেন?
  • সিকি | 132.177.65.73 (*) | ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৭:০৩87115
  • লেটেস্ট মানে শেষতম। অষ্টম হোক না।
  • স্মিতা ঘোষ | 122.79.35.83 (*) | ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৯:৪৭87116
  • আমি আর মর্মাহত হই না । প্রতিবাদী এবং চিন্তাশীল মানুষের এমন মৃত্যুই তো প্রাপ্য । দেশ কাল ভেদে শাস্তিটা কিন্তু বদলায় না ।
  • dc | 132.164.198.234 (*) | ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ১০:১১87117
  • মৌলবাদীদের ভয়েসটা যেন চাপা না পড়ে সেদিকে নজর রাখবেন। পুলিশ অযথা ধড়পাকড় করবেনা, এই আশা রাখি। চাপাতির সাপ্লাই যাতে কম না পড়ে,সেটাও বাংলাদেশী সরকারকে দেখতে হবে।
  • pi | 192.66.1.2 (*) | ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৪:০১87121
  • বাংলাদেশের একজনের লেখা , কেনিয়ার ছবির সাথে।

    'ছবিটি কেনিয়ার গারিসাতে আল শাবাবের হামলার পরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে তোলা হয়েছে। এই হামলাতে ১৪৭ জন ছাত্রছাত্রী নিহত হন।

    চিন্তা ভাবনা করে দেখুন তো। ধরে নিন এই দৃশ্যটা বুয়েট, ঢাবি বা অন্যকোনো ভার্সিটির দৃশ্য। সহ্য করতে পারবেন তো? ব্লগার হত্যার মাধ্যমে জঙ্গীরা যে নিজেদের জন্য ইমোশনাল জনসমর্থন আদায় করে নিচ্ছে সেটা মাথায় ঢুকছে তো? একসময়, কিন্তু আর ব্লগার মরবে না। প্রেম করার অপরাধে, ছেলে মেয়ে একসাথে পড়ার অপরাধে, বিজ্ঞান শিক্ষার অপরাধে মরবে আপনার মতই মুসলিম। আপনার নিজের অনাগত সন্তানও হতে পারে উপরের ছবিটার মতই কেউ। ভাবুন। সময় নিয়ে ভাবুন।

    তবে কিন্তু যদি বলে হত্যা জাস্টিফাই করে জঙ্গীবাদকে স্পেস দিবেন? নাকি একটা প্রগতিশীল, উন্নত সোনার বাংলা গড়বেন? সময় আছে। চিন্তা করুন। সময় গেলে সাধন হবেনা।'
  • Biplob Rahman | 129.30.39.73 (*) | ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৬:২৯87119
  • শিখন্ডি লাবন্যকে সেল্যুট জানাই, অসীম সাহসিকতায় তিনি বাবুর দুই খুনিকে জাপ্টে ধরেছেন।

    হিজড়ারা বরাবরই সমাজে উপেক্ষিত। মিডিয়াতে তো বটেই। কিন্তু এই প্রথমবারের মতো মিডিয়ায় লাবন্য প্রসংশিত হচ্ছে। হঠাত করেই মূলধারায় উঠে এসেছে ঊন মানুষের কথা।

    প্রকৃত খুনি চক্র তথা জংগী গোষ্ঠী সদলবলে হয়তো কোনোদিনই ধরা পড়বে না। হয়তো এইসব হত্যার সুবিচারও হবে না। চাপাতির নীচে আবারো গলা কাটা যাবে আমার বা আপনার, তবু এইটুকু তো আপাত প্রাপ্তি!
  • | 24.97.90.85 (*) | ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৭:৫৬87120
  • পরিচিত একজনের স্ট্যাটাস থেকে

    "আইসিসের মানুষ খুনের কারণগুলি পড়লাম, একটা তালিকা বানাই। ঠিক কি কি কারণে আপনি বিনা বিচারে সবার সামনে এই খুন হয়ে যেতে পারেন। তালিকার কারণ গুলি হলঃ

    ১। আপনি হিন্দু, বৌদ্ধও, খ্রিস্টান, ইহুদি, অথবা অন্য যেকোনো ধর্মাবলম্বী।
    ২। আপনি শিয়া, অথবা আহামদিয়া।
    ৩। সমকামী, উভলিঙ্গ, বা নাস্তিক।
    ৪। আপনি তাদের নির্দেশিত আকিদা ছাড়া অন্য যে কোন আকিদা মেনে ধর্ম করেন।
    ৫। আপনার ঘরে মেয়ে আছে ( আইসিসের মুখপাত্র ম্যগাজিন "দাবিক" অনুসারে, যে কোন মেয়ের বয়েস ৮ বছরের উপরে হলেই তাকে বিয়ে দিতে হবে পিতামাতার, এবং এক্ষেত্রে কোন "মুজাহিদ" যিনি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেছেন, তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের উপযুক্ত কারণ দর্শানো না হলে সেই পিতা-মাতা এবং পরিবারের সকল কে হত্যা করার ঘটনার প্রমাণ ভিডিওসহ আছে।)
    ৬। মেয়েরা ঘরের বাইরে পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বের হলে, তারা ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া অন্য কোন শিক্ষাতে শিক্ষিত করা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, এবং ১৬ বছর পর্যন্ত তারা লেখাপড়া করতে পারবে (সূত্রঃ দাবিক)
    ৭। মেয়েরা ঘরের বাইরে এমন কোন পোশাক পরে গেলে, যা উজ্জ্বল রঙ্গের। এই ক্ষেত্রে কমপক্ষে একটি ঘটনা রয়েছে, যাতে ৫০ ঊর্ধ্ব এক মহিলাকে লাল রঙ্গের জ্যাকেট পরার জন্য শাস্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটে এবং পরবর্তীতে তার সাথে কোন পুরুষ সঙ্গী না থাকাতে তাকে প্রকাশ্য রাস্তায় বিচার করে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।
    ৮। যে কোন মানুষ, যারা আইসিস কে রাষ্ট্র হিসেবে কর দেবে না।
    ৯। তাদের নির্দেশিত কোন নিয়ম না মানলে।
    ১০। সিগারেট খেলে।
    ১১। অন্য যে কোন ধরণের নেশা জাতীয় দ্রব্য কিনলে বা ব্যবহার করলে।
    ১২। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাতে পরিচয় পত্র সাথে না রাখলে।
    ১৩। যেকোনো আন্তর্জাতিক বা অভ্যন্তরীণ দেশি বিদেশি সংস্থা বা এনজিও তে কাজ করার প্রমাণ পাওয়া গেলে।
    ১৪। পুরুষ এবং নারীকে ঘরের বাইরে কোন স্থানে এক সাথে দেখা গেলে, সাথে সাথেই হত্যা করা হবে।
    ১৫। অতিতে বা বর্তমানে কোন সামরিক সংস্থায় কাজ করলে এবং পরবর্তীতে যদি তাদের সাথে যোগ না দেন, তাহলে হত্যা করা হবে।
    ১৬। গণতন্ত্র মেনে চলে, বা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পক্ষে অতীতে ওঠা বলেছে, কিন্তু তারপরে ক্ষমা চায়নি , অথবা বর্তমানে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এমন যে কেউ। এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য যে, সিরিয়ার অপর জঙ্গি সংগঠন "ফ্রি সিরিয়ান আর্মি" এর সাথে প্রথমে এদের সখ্য থাকলেও পরবর্তীতে তাদের কে গণতন্ত্রপন্থী কুফর দল হিসেবে আখ্যা দিয়ে সিরিয়া সীমান্তে এদের সাথেও যুদ্ধে লিপ্ত হয় আইসিস।
    ১৭। যে কেউই, যে কোন ধরণের অস্ত্র ধরেছে তাদের বিরুদ্ধে।
    ১৮। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত শত্রু বা বিধর্মীদের পরিবারের সকল সদস্য।
    ১৯। আইসিসের ইমাম আবু বকর আল বাগদাদির প্রতি আনুগত্য অস্বীকারকারী যে কোন ব্যক্তি।

    গত দুই বছরে উপরোক্ত কারণে তারা ঘোষণা দিয়ে জনসমক্ষে মানুষকে হত্যা করেছে। এই তালিকা প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যনেলগুলির ভিডিও, ব্রিটিশ পত্রিকা দা গার্ডিয়ান, বিবিসি, ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যনেল প্রেস টিভির ডকুমেন্টারি, তাদের প্রকাশিত টুইট এবং তাদের ম্যগাযিন দাবিক কে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

    ***
    বর্তমানে বাংলাদেশ, এর ইতিহাসে ১৯৭১ সালের পরে সব থেকে বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছে। মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের সাথে আইসিস, আল কায়েদা এবং বাংলাদেশে অবস্থিত অন্যান্য দল গুলির বৈঠকের খবর এখন প্রকাশিত হয়েছে।

    এই মুহূর্তে আরও একটি পুরনো তথ্য যোগ করতে চাই, তা হলও, বর্তমানে তিন পার্বত্য জেলা এবং কক্সবাজারে কম পক্ষে ছয়টি রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন অবস্থান করছে, এবং তাদের প্রত্যেকেরই লক্ষ্য একটি- চার জেলা নিয়ে একটি স্বাধীন রোহিঙ্গাল্যান্ড গঠন করা।

    দেশের অভ্যন্তরে সক্রিয় রয়েছে ৭০টি জঙ্গি গোষ্ঠী (সূত্রঃ রহমান এবং কাশেম,ঊন্দের্স্তন্দিঙ্গ Rেলিগিঔস ইলিত্য অন্দ টের্রোরিস্ম ইন অন্গ্লদেশ,২০১১)। আফগানিস্তান থেকে ফেরত আসা যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার (সূত্র; ডয়শে ভেলে, মার্চ ১৯, ২০১৩)। আনসারউল্লাহ বাংলাটিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রহমানি গ্রেফতার হওয়ার পরে স্বীকারোক্তিতে বলেন, তিনি আরাকানে তরুণদের লড়াই করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন ( প্রথম আলো, আগস্ট ১৭, ২০১৩)।

    এইখেত্রে উল্লেখযোগ্য যে, বিডিআর বিদ্রোহে নিহত হওয়া প্রায় সব সেনা অফিসারের স্পেসালাইজেশন ছিল জঙ্গিবাদে। অর্থাৎ কাউন্টার টেরোরিজমের উপরে তারা দক্ষ ছিলেন, এবং এদের মধ্যে অধিকাংশই কোন না কোন ভাবে জেএমবি এবং হরকাতুল জিহাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানগুলিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে এই মুহূর্তে এমনকি সেনাবাহিনীর পক্ষেও এই ধরণের জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ে বড় ধরণের অভিযানে যাওয়াটা বেশ কঠিন।

    ***
    এত টুকু পড়ার পরে আপনার অনুভূতি কি হবে, তা আমি ঠিক করে দেব না। তবে এটা বলতে পারি, আস্তিকতা-নাস্তিকতা এই সম্পূর্ণ বিষয়টিরর অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটা অংশ, টপ অফ এন আইসবারগ। ২০২০ সালের "ইসলামিক বাংলাদেশ" গড়বার এই প্রচেষ্টা এবং পরিকল্পনা অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে, এবং সেটা এই মুহূর্তে গতি পাচ্ছে ইরাকে আইসিসের অগ্রগতি দেখে।

    সারা বিশ্বে মধ্যপ্রাচ্যের পরে যদি কোথাও এই যুদ্ধের সূচনা হয়, তাহলে সেটা বাংলাদেশে হবে, আরও স্পেসিফিক করে বললে চট্টগ্রামে হবে। আপনি নিজেই ঠিক করে দেখুন, আপনি উপরের কোন তালিকা এড়াতে পারবেন কিনা।"
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন