এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সীমান্ত থেকে

    সোমনাথ রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ জানুয়ারি ২০১৪ | ২৬২৪ বার পঠিত
  • গ্রামের নাম তেঘড়িয়া,পাথরঘাটা। এইসময়-এর প্রতিবেদন থেকে খবর পেয়েছিলাম সেইখানকার জমি অধিগ্রহণ ও তৎসংক্রান্ত অসন্তোষের কথা। ২৭/১২/২০১৩ শনিবার সকালে সেই গ্রামে গেলাম। এর আগের সপ্তাহে এমনি-ই খানিকটা অবকাশ পেয়ে ঘুরছিলাম রাজারহাটের সিটি সেন্টারের পেছন দিকটায়। একটা বড়ো অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের গা ঘেঁষে পিচের রাস্তা গ্যাছে, তার পাশে খাল, খালের ওপারে একটা গ্রাম, যেটা আজ অবধি অধিগৃহীত হয় নি। হাঁটাপথটা নো-ম্যানস্ ল্যান্ডের মতন। শহরের উদ্বৃত্ত যেমন সিটি সেন্টারের ফেলে দেওয়া প্যাকেট ইত্যাদি, ম্যাকডির উচ্ছিষ্ট হাড্ডি, সিসিডির কাপ সব জড়ো হয়ে আছে খালের ঐ পাড়টায়। এ-পারে তকতকে আবাসন, কিম্বা একটু এগোলে মাটি গুঁড়ো করে নতুন কন্সট্রাকশন উঠছে, সিমেন্টের ধুলো এসে পড়ছে অন্যপারের গ্রামে। গাজা স্ট্রিপের তুলনা মাথায় এলো, নিজভূমে উদ্বাস্তু কিছু মানুষ আর ঘিনঘিনে আবর্জনার নো-ম্যানস্ ল্যান্ড। একটা পুকুর মতন জায়গায় কিছু লোক কাজ করছে। খাল পেরিয়ে এগিয়ে যেতে এক প্রবীণের সঙ্গে কথা শুরু হল। শুনলাম যেটাকে পুকুর ভেবেছিলাম সেটা এক কালে মাঠ ছিল, শীতের সময় সবজি ইত্যাদি চাষ হত। নিউটাউন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খালের মুখ গুলো বুজে যায়। ‘বুঝলে এখানে আগে এক গোড়ালি জল দাঁড়াত না, এখন বৃষ্টি হলেই হাঁটুজল’।ওই মাঠে এখন পানিফল চাষ হচ্ছে। ভদ্রলোকের জমি ছিল সিটি সেন্টার থেকে একটু এগোলেই। খুব বেশি না, তবে সম্বৎসরের খোরাকি আসত ওই জমি থেকে। তারপর ‘তোমার মত চেহারার কিছু লোকজন এসে বলল, জমি দিয়ে দিতি হবে। বাড়ির লোককে চাকরি দেবে ওরা।’ বলাবাহুল্য আবাসনে গ্রামের সবার চাকরি হতে পারে না। জমির জন্য ২০০১ সাল নাগাদ কাঠা প্রতি ৬০০০ টাকা হারে পেয়েছেন ওনারা। চাষ না থাকা এবং নোংরা আর নিকাশি বিপর্যয়ে ভদ্রলোক নিশ্চিত এখান থেকে ওনাদেরও কিছুদিনের মধ্যে চলে যেতে হবে। ৬০০০ টাকা স্কোয়ার ফিট অবশ্য এখনো নিউটাউনে জমির দাম ওঠে নি। তবে ওনাদের থাকার জায়গা এ চত্বরে জুটবেনা বলেই মনে হয়। ওনার সমস্ত রাগ সিপিএমের ওপর। তৃণমূল নিয়ে বললেন এরা আর কী করবে, মাজা তো ভাঙা হয়েই গ্যাছে। খটকাটা এখানেই লাগে, ধ্বংসের এমন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের ভ্যানগার্ড হওয়ার তাত্ত্বিক মঞ্চ যে বৃহত্তম বাম দলটি, এনাদের কাছে চিহ্নিত প্রধান শত্রু শেষে তারাই।
     
    মাঠে ১০০ দিনের কাজ চলছে বহুতল প্রকল্পের গা বেয়ে চাষের মাঠ
     
     
    যাই হোক, পাথরঘাটা তেঘড়িয়ার কথায় আসি। গ্রামটা সত্যিই সীমান্তে, এরকম নো-ম্যানস ল্যান্ড গড়ে ওঠে নি বলে সীমান্তটা প্রকট ভাবে চোখে পড়ে। নিউটাউনে টাটা মেডিকেলের পর ডিএলএফ-টু ছাড়িয়ে গোল আইল্যান্ড থেকে ডানদিকে ঘুরে ইডেন কোর্ট নামের বিশাল নির্মীয়মান আবাসনের গায়ে এসে পিচের রাস্তা শেষ হয়ে যায়, গাড়ি আর এগোতে পারে না। বুলডোজার-ক্রেনগুলো পেরোলেই পাঁচিল। পাঁচিলের ওপারে অন্য দেশ, যে দেশে আমরা রাজারহাটে পিকনিক করতে যেতাম। আমবাগান-ছাওয়া মাঠ, টিউবওয়েল, ইঁটের রাস্তার দুপাশ দিয়ে বিভিন্ন ধরণের ক্ষেত, তার মধ্যে সর্ষে তার ফুল নিয়ে প্রকট।  মাঠে লোকজন একশ দিনের কাজে পুকুর কাটছে, কবরস্থান বাঁধাচ্ছে। লোকে অটোর বদলে সাইকেলে যাতায়াত করে। ক্লিশের ব্যবহার এনে বলা যায় ইন্ডিয়া ও ভারতের সীমান্তে ঐ পাঁচিলটি। গ্রামে ইতিউতি খোঁজ নিচ্ছিলাম জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কী চলছে- হাল্কা টাক পড়া এক ভদ্রলোক বললেন, গোটা রাজারহাটেরই তো এই অবস্থা, ওনার চুলের মত এক খাবলা আছে তো এক খাবলা নেই। কখন নোটিশ বেরোচ্ছে কেউ জানে না, হঠাৎ করে শোনা যাচ্ছে জমির দাম আদালতে পড়ে আছে। এখনকার অধিগ্রহণ আন্দোলনে যাঁরা আছেন, এরকম একজনের খোঁজ পেলাম, সাইজুদ্দিন ঢালি। সাইজুদ্দিন ও তাঁর ভাইদের সঙ্গে কথা হল এই নিয়ে। ওনারা কত পুরুষের বাসিন্দা তার ইয়ত্তা পেলাম না। সাইজুদ্দিন আমাকে বাড়ি জমির দলিল দেখালেন, অজস্র পুরুষের উত্তরাধিকারের খতিয়ান সেখানে। এই মুহূর্তে এক্সটেন্ডেড ঢালি পরিবারের প্রায় ২৫০ জন সদস্য। প্রায় সকলেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন জমিতে চাষ করেন। এনাদের জমির ২৪০ বিঘে ইতিমধ্যে অধিগৃহীত হয়ে গ্যাছে। সবচেয়ে বেশি অংশ গ্যাছে কলকাতার নবতম আকর্ষণ ইকোপার্কের পেটে। ২০০০-এর শুরুর দিকে, তখন পেয়েছিলেন কাঠাপ্রতি ওই ৬০০০। পরে সেটা বেড়ে ১৩০০০ হলো। এখন ক্ষতিপূরণের দাম অবশ্য তুলনায় ভালো, কাঠা প্রতি ৬০০০০ এর কাছাকাছি। অবশ্য, ঢিলছোঁড়া দূরত্বে ৬ লাখ টাকা কাঠাপ্রতিতে নাকি খোলা বাজারে জমি বিক্রি হচ্ছে। ‘আচ্ছা, ওরকম দাম পেলে আপনি জমি দেবেন?’প্রশ্ন করলাম।সাইজুদ্দিনের জবাব ‘আর এক ইঞ্চিও দেব না, আগে হলে দিতাম।এখন যা প্রতারণা হয়েছে; আমি কিন্তু গ্রামের ছেলে।’ প্রতারণার ঘটনাগুলো শুনছিলাম- ‘তৃণমূল ভোটে জিতল, দিদি বললেন আর কোনও জমি অধিগ্রহণ হবে না। আমরা সবুজ আবির মেখে ঢোল বাজিয়ে ঘুরলাম। তারপর বছর ঘুরতেই এই জমি নিয়ে টানাটানি। তৃণমূলরা এখন বলে উন্নয়নে বাধা দিও না।’ সাইজুদ্দিনের জমির ওপর টাটাবাবুদের নজর আরও আগের। ‘২০০৮-এ বামফ্রন্টের সময় নোটিশ আসে। আমাদের বেশির ভাগ জমি ততদিনে চলে গ্যাছে। আমরা কোর্টে যাই। তারপর টাটারা আসে, খোলামাঠে বেশ কয়েকবার মিটিং হয়। বলে আমাদের কাজের ব্যাপারটা দেখবে। গ্রামের উন্নয়ন করে দেবে। রাস্তা আলো স্কুল ইত্যাদি। তারপর চুপচাপ। ২০১৩য় আবার আসে জমি নিতে। আমি কোর্টে যাই, এবার স্টে অর্ডার দ্যায় কোর্ট। আমাকে থানা থেকে ডেকে পাঠায়। অফিসার প্রথমেই বলেন আমি বে-আইনি ভাবে জমি আটকে রেখেছি। স্টে অর্ডার দ্যাখাতে চুপ করেন।’ কাগজপত্রগুলো সব দ্যাখাচ্ছিলেন সাইজুদ্দিন, ২০০৮ এর বর্তমানের পেপার কাটিং থেকে শুরু করে ২০১৩-র স্টে অর্ডার। ‘এর মধ্যে টাটারা কমপ্লেন করে ওদের ইঞ্জিনিয়ারকে কিডন্যাপ করেছি আমরা। এখনও বোধ হয় কেস ঝুলিয়ে রেখেছে। এ জমি দেওয়া এখন ইজ্জতের ও প্রশ্ন কিন্তু।’ ... ‘আগের সরকার যা করত সামনা-সামনি করত। পুলিশ পাঠিয়ে জমি ঘিরে নিত। কিন্তু এ করে লুকিয়ে, মাঝরাতে জমিতে গুন্ডা নামায়, ফসল নষ্ট করে, খুঁড়ে দ্যায়।’‘জমি থেকে আপনাদের চলছিল কেমন?’ ‘২৫০ জনের মত লোক, তারপর ভাগচাষীরা সব তো খেয়ে-পরে বাঁচছিল। পড়াশুনোও তো শেখাচ্ছিলাম বাচ্চাগুলোকে। এই চাষের জমি থেকে আমরাও তো কিছু পড়াশুনো করেছি। কোর্ট-কাছারি টুকু করতে পারি। চলে গেলে কী চলে তাও তো দেখছি।’–‘নগরায়ণ হলে তো আরও উন্নয়ন হবে, আপনাদের এখানে শিক্ষা-স্বাস্থ্যের হাল কেমন?’ সাইজুদ্দিনের এক ভাই জানালেন- ‘হাইমাদ্রাসা আছে, স্কুল আছে একটু দূরে। তো সেসব তো কিছু করল না। আগে একগ্রাম লোকের সামনে অনেক কথা দিয়েছিল ওরা। জানেন, এখান থেকে কোনও প্রসূতিকে আরজিকরে নিয়ে যেতে চার ঘন্টা লাগে। তো করত রাজারহাটে একটা সরকারি হাসপাতাল। আমরা হেসে হেসে জমি দিতাম।’ জানতে চাই, যাঁদের অলরেডি জমি চলে গ্যাছে, তাঁদের কী হল? ‘বসতবাটিও তো গ্যাছে। রাজারহাটে বেশিরভাগ লোকই জমি দিয়েছে ৬০০০ টাকা করে। তো সে দামে তো সুন্দরবনের বাইরে কোথাও থাকার জায়গাও পাওয়া যাবে না। নয় তো কলকাতার ফুটপাথে আছে।’‘ওদের আর দেখিনি।’ ‘পাশ থেকে মন্তব্য করলেন একজন। সাইজুদ্দিন বিতর্কিত মাঠটাতে নিয়ে চললেন। ওঁদের ছবি তুলতে গেলেন। অল্পবয়স্ক একজন ছবিতে থাকতে চাইলেন না। ‘সরকারি চাকরির চেষ্টা করছি দাদা, কেস-এ আমাকেও ঝুলিয়ে দেবে ওরা।' 
    সাইজুদ্দিন ও তার ভাইয়েরা দলিলপত্র দ্যাখাচ্ছেন দুশ বছরের দালান যিনি এখন চাষ করছেন
     
     
    বেরোনোর মুখে সাইজুদ্দিনরা বললেন ‘এই বাড়িটার ছবি তুলে নিন দাদা। ২০০ বছরের পুরোনো বাড়ি।’ পুরোনো ভারতে একটা সাটেনেবেল সিস্টেম ছিল যেখানে রাজারহাটের একটা গ্রাম মানুষকে অন্ততঃ দুশো বছর একটা জমি-বাড়ির ওপর দিয়ে টিকিয়ে রেখেছিল- শাইনিং ইন্ডিয়ার নিউটাউন দুশো বছরের শহরজীবন পাবে কি? আমরা অবশ্য ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ফাঁকে ফাঁকে সাস্টেনেবিলিটি শব্দটা গুঁজে দিয়ে ফান্ডিং চাইছি আজকাল। সাস্টেনিবিলিটির আরেক নমুনা দেখলাম সাইজুদ্দিন ঢালির ক্ষেতে এসে। অসাধারণ চাষের বাহার। এক জায়গায় বেগুন হয়েছে তো পাশে কুমড়ো, কিছুটা সর্ষের ক্ষেত। একটা ধানের বীজতলা। আর টাটাদের পাঁচিলের গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে রজনীগন্ধার গাছগুলি। জিগেশ করলাম ‘চাষে এখন খরচা কেমন? জল পান কোথা থেকে?’ সাইজুদ্দিন বললেন ‘শ্যালো আছে আমার, জল তুলে নিই’ওয়াটার রিসোর্সের ক্লাস করা আমি এবার আঁতকে উঠি- ‘জলসেচ ছিল না এখানে?’ – ‘ছিল তো। বাগজোলা থেকে জল আসত। তো ২০০০ সাল নাগাদ সে সব পুরো রাজারহাটে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই নোটিশ বেরোনোর কিছু আগে। যাদের পাম্প কেনার পয়সা নেই, তারা এমনিই চাষ ছেড়ে দ্যায়।’ কী ভয়ংকর! মাটির তলা থেকে জল তুলে চাষ করা কতটা ক্ষতিকর তা নিয়ে এখানে আলাদা করে লিখছিনা। কিন্তু সত্যিই শিউরে উঠি আমি, কয়েক বছর আগে সেচ বন্ধ করে তারপর জমি দখল করে বাড়ি তোলার ধান্দা যাদের, তারা তো আক্ষরিক অর্থে নিজের মাকে বিক্রি করে দিতে পারে! জমিতে চাষ করছিলেন যে চাচা, তিনি বললেন- ‘আমি তো চাষ ছাড়া আর কিছুই জানিনা। জমি চলে গেলে এই বয়সে খাবটা কী?’ এ প্রশ্ন অনেকবার আলোচনা-টোনায় শুনেছি। কিন্তু এখন যিনি খাবটা কী বললেন, ওই বীজতলার ধান ছড়িয়ে বড় করে আমার অন্ন তিনিই হয়তো সংগ্রহ করেন। সাইজুদ্দিননে জিগেশ করলাম, ওই যে বড় বাড়িগুলো, একসময়ে আপনার, আপনার ভাই বন্ধুদের মাঠ ছিল। এখন পিচ-কংক্রিট। কেমন লাগে? উত্তর দিলেন- ‘কী বলব দাদা, ওখানে এখন তো আমাকে ঢুকতেও দ্যায়না, দেখতেও দ্যায়না ভেতরে কী আছে। কিন্তু একটা হাসপাতাল যদি হত। দরকারে অদরকারে আমিও যেতে পারতাম।’
     
    ওনাদের টাটা করে বেরিয়ে পড়লাম শহরের দিকে, টাটাদের বিশাল ইডেন আবাসন, সেখানে আমাকেও ঢুকতে দেবেনা ভিজিটর্স বুকে সই না করে, পরিচিত নাম না দেখিয়ে। সঙ্গত কারণেই দেবে না। হিডকোর জমি তো আর সাইজুদ্দিনের ক্ষেত বা  ২০০ বছরের বাড়ির চত্বরের মত দখলযোগ্য নয়। ক্রমশঃ এগিয়ে গেলাম শহরের অ্যালিয়েনেশনের দিকে। সেখানে কোনও বহুতল ২০০ বছর টেকানোর ডিজাইনে তৈরি হয় না,  মাটির গভীর থেকে পাম্প দিয়ে জল তোলা হয়, হাঁটা-পথ পেরোনো হয় গাড়িতে-অটোতে পেট্রো-রাজনীতির বৈদেশিক নীতিকে সমীহ করতে করতে। বাড়ির সামনের জমিতে গাছ লাগানোর অধিকার থাকে না বহুতলের বাসিন্দার। শহরের রাস্তায় নো-সাইক্লিং বোর্ড লাগিয়ে রেখে যায় কলকাতা পুলিশ। দেশের ডিপ্লোম্যাট কাজের মাসিকে কম পয়সায় খাটিয়ে কেস খান। যেখানে রাজারহাটের  উদ্বাস্তুরা শহরের ফুটপাথে আশ্রয় ন্যান। আবর্জনা ফেলে আসা হয় সিটি সেন্টার টু এর পাশের গ্রামে।
     
    পাঁচিলের ওপারে পড়ে থাকল ফেলে আসা হাজার বছরের গ্রাম্যতা মাখা সেলফ-সাস্টেইন্ড ‘জড়’-ভারত। আর সীমান্ত রক্ষার শেষ প্রহরীদের কয়েকজন।
     
    টাটার প্রস্তাবিত প্রকল্পের ভিতর সর্ষে চাষের জমি রজনীগন্ধা ক্ষেতে ঢুকে পড়তে চাইছে আবাসন ইডেন কোর্ট আবাসন- প্রস্তাবিত প্ল্যানে

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ জানুয়ারি ২০১৪ | ২৬২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • শুদ্ধ | 127.194.236.136 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৪ ০৭:১১88770
  • উন্নয়ণ খুব দরকার আমাদের। টাটাদের। টাটাদের চাই মানে আমাদেরও চাই। এর জন্যে সরকার বলে একটা দারোয়ান রাখা আছে। তারা ব্যবস্থা করবে, আমরা উন্নত হব। সাইজুদ্দিনরা কোনোদিন আমাদের লোক ছিল না, হয়নি। আমাদের জাতীয় শিক্ষা পাটের, আফিমের ও নীলের দালালি।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:০৩88804
  • ফার্মিং অর্থাৎ চাষ জীবিকার মানুষের সংখ্যা পৃথিবী জুড়ে কমছে।

    * As of 2011, the International Labour Organization states that approximately one billion people, or over 1/3 of the available work force, are employed in the global agricultural sector. Global population at this point stood at about 6 billion, double of what was in 1967.

    *Agriculture constitutes approximately 70 percent of the global employment of children

    *in many countries Agriculture employs the largest percentage of women of any industry

    *The service sector overtook the agricultural sector as the largest global employer in 2007.

    *Between 1997 and 2007, the percentage of people employed in agriculture fell by over four percentage points, a trend that is expected to continue

    *The number of people employed in agriculture varies widely, less than 2 percent in countries like the US and Canada and over 80 percent in many African nations

    *During the 16th century in Europe, between 55 and 75 percent of the population was engaged in agriculture. Today, the figure is less than 10 percent

    গত ৫০ বছরেই তো ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ডাবল হয়ে গেল - ভারতের হয়ে গেল প্রায় তিনগুণ। তাতিনের হাজার বছরের রেফারেন্স তো লাগানো মুশকিল।
  • sch | 126.203.197.101 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০২:২৭88771
  • খুব অবাক লাগে একটা শহরের থাবা বেড়ে যাচ্ছে কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়া। কি হবে প্রান্তিক মানুষগুলোর ভবিষ্যত আর কি -ই বা হবে এই গজিয়ে ওঠা শহরের বিপুল পরিমাণ সলিড ওয়েস্ট ফেলার ব্যবস্থা। শুধু ভোটের রাজনীতি। অবাক লাগে কোনো আন্দোলন হয় না এই নিয়ে - বিশাল জনতা আটকায় না শহরের পথ - সিঙ্গুর কি এ সবের থেকে আলাদা ???? তাহলে কেন এই উদাসীনতা
  • bip | 78.33.140.55 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৩:১৮88772
  • জমি বেচা কেনাটা ত ব্যবসা। মার্কেট ঠিক করে দেবে। বিক্রেতা না বেচতে চাইলে, কেও তাকে দিয়ে বেচাতে পারবে না। এটা মার্কেটের প্রথম বক্তব্য। কিন্ত জমি ত এখন খনি। খনি বেচব না বললে চলে-লাঠি দিয়ে বেচাতে হবে।

    জমি অধিগ্রহনের ওপর কোন রেগুলেশন, কোন আইন নেই। ফলে জোর যার মুলুক তার। ২০০০ বছর আগেও যেভাবে লোকে জমির দখল পেত-এখনো সেই ভাবেই পাচ্ছে। সভ্যতা আর কি এগিয়েছে?

    কোলকাতাও কি একটা শহর? মনে হয় না। এটা না শহর পরিকাঠামোর দিক দিয়ে, না মননশীলতার দিক দিয়ে। শুধু মায়ভয়স্কি আর চেকভের অনুবাদ নাটক করে শহর সভ্যতা গড়ে ওঠে না। দরকার সংবেদনশীল হৃদয়ও। ফ্লাটের যখন দখল নিই-কেও কি জানতে চেয়েছি-কিভাবে রিয়ালটররা জমিটা পেয়েছে? কোলকাতায় আমার যেখানে ফ্লাট, জানলা দিয়ে নীচে তাকালে চোখে পড়ে বস্তির ছেলে মেয়েরা ছেঁড়া জামা কাপড় পড়ে খেলছে। চারিদিকে বস্তি। তার মধ্যে বহুতলের দ্বীপ। সেই জানালায় দাঁড়িতে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে অসভ্যলোক বলে মনে হয়। করিমপুরে থেকেছি ছোটবেলায়, এখন আমেরিকাতে থাকি। কখনো নিজেকে অসভ্য বর্বর বলে হয় নি, অন্তত বাসস্থানের কারনে। কিন্ত এই বহুতলগুলোর জানালা দিয়ে তাকালেই ধরা পরে এক অসভ্য শহর, আর তার অসংবেদনশীল নাগরিক।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:৫৬88773
  • এনারা তো তবু কোর্ট অবধি গিয়েছিলেন - চীনে লক্ষ লক্ষ একর নিয়ে নিয়েছে, কোর্ট কাছারির ব্যাপারই নেই।
    ২০০ বছর ধরে এক জমিতে চাষ করে একটা কম্যুনিটির চলে না, যদি না ঐ কম্যুনিটির পপুলেশন কমতে থাকে। পপুলেশন বাড়বে আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে একই পরিমাণ জমিতে চাষের উৎপাদনও বাড়বে (তোমরা তো আবার জেনেটিক্যালি মডিফায়েড বীজের চাষ করবে না) - সবাই সুখে থাকবে - হয় না, হয় না। লোকজন বেরিয়ে কমে না গেলে হয় না।
    তার মানে এই নয় যে গাজোয়ারি করে জমি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে - আফটার অল, এটা তো চায়্না নয়...।

    আর, পাশাপাশি আপস্কেল নেবারহুড আর স্লাম/ঘেটো- এ কোথায় নেই? নিউইয়র্ক, লন্ডন থেকে দিল্লি, কলকাতা - চাদ্দিকে গিজগিজ করছে অসব্য।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:০৬88774
  • এনাদের মুখে যা শুনলাম যে পপুলেশন-চাষের সঙ্ঘাত সেভাবে হয় নি। একচুয়ালি মধ্যচাষীদের অনেকের থেকেই শুনেছি সেটা। বিহার-এর গ্রামের দিকেও চাষ সাস্টেনেবেল এখনও হয়ে ওঠেনি। আর একটা জিনিস হালকা করে মনে হচ্ছে, পপুলেশন এক্সপ্যানশনটা কৃষি-গ্রামের থেকে আধা-শহর গ্রামে বেশি ঘটেছে।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১১88775
  • তার কারণ হচ্ছে আর্বান মাইগ্রেশন।
    যে রেটে মানুষ গ্রাম থেকে শহর বা আধাশহরে মাইগ্রেট করেছে, এবং, এখনও করছে -- সেটা না হলে গ্রামে খাদ্যাভাব দেখা দিত।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৩88776
  • *বিহার-এর গ্রামের দিকেও চাষ আনসাস্টেনেবেল এখনও হয়ে ওঠেনি।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৪88777
  • বিহারের গ্রাম থেকে মাইগ্রেশন রেট আরো বেশী
  • sch | 132.160.114.140 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৪88778
  • tatin - বিহারে মাইগ্রেশান রেট কি খুব লো?
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৫88779
  • না, মাইগ্রেশন সর্বত্র হচ্ছেনা। বিশেষতঃ যেখানে সেচ আছে এবং গাঙ্গেয় অববাহিকায় সব জায়গায় মাইগ্রেশন হচ্ছেনা। তবে ডেটা দেখতে হবে। আমি নেহাৎই কিছু গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি ইদানীং কালে। চাষ করে চলছে না- এইটা অনেক ক্ষেত্রেই মিথ বলে মনে হচ্ছে। অন্ততঃ খাওয়াপরার লেভেলে অনেক জায়গাতেই চলছে, আমার ধারণা ব্ররহত্তর ভারতবর্ষে চলছে।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:১৭88780
  • আমি যে কয়েকটা জায়গায় গেছি- স্পেশালি নালন্দা, বিহার শরিফ, বিহটা ইত্যাদি অঞ্চলে কিছু গ্রামে, মাইগ্রেশন সেরকম নয় আর লোকে চাষ করেই খাচ্ছে এরকম মনে হয়েছে।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:২৪88781
  • এবং র‍্যাম্প্যান্ট নগরায়ণের কারণ মাইগ্রেশন টু আরবান এরিয়া নয়, বরং এক্সপ্যানশন অফ আরবান জোন। আবার যদি আমি বিহারের কথা ভাবি, পাটনার কথাই। এখানে শিল্প বলে কিছু নেই। পাটনায় লোকের হাতে যা পয়সাকড়ি তার সোর্স মূলতঃ চাষের জমিই। ভূমি সংস্কার না হওয়ায় এখানে কিছু লোকের হাতে প্রচুর পয়সা। এবং গ্রাম-নির্ভর অর্থনীতি থেকে আসা পয়সায় শহর এক্সপ্যান্ড করে গ্রামে ঢুকছে এখানে।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:৩২88782
  • ১৯৫১ সালে ভারতে আর্বান পপুলেশন ছিল ১৭%, ২০১০-এ হয়েছে ৩২% (২০২৫-এ এস্টিমেট ৪৩%)।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:৪০88783
  • বিহার রুরাল লাইভলিঅহুড প্রোমোশন (BRLP) এর সাইট থেকে। নালন্দা অঞ্চলএর মাইগ্রেশন নিয়ে ---
    Migration in Nalanda increased sharply after 1995. In Nalanda the land is owned mainly by the upper castes: Brahmin, Bhumihar, Rajput and Kayasth.
    Migration is especially high among the SC castes (Ravidas, Paswan, Pasi, Dhanuk, Dom,
    Rajak and Musahar). These castes are landless, near landless or marginal farmers who work
    as labourers. Within the broad category of SC the Paswan and Harijan have more land, are
    better educated and some have gone into government jobs. Migration for manual work is
    relatively low among these two groups.
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৫:৪৮88784
  • প্রবলেমটা হল জমির দাম নিয়ে। খোলা বাজারে ৬ লাখ টাকা কাঠা, অথচ জামির মালিক ২ লাখও পাচ্ছে না। আর সরকার নিজেই জমি কেনাবেচার এজেন্ট।
  • ddt | 135.20.82.164 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৭:২১88785
  • বিহার বা অন্য গ্রামাঞ্চলেও চাষ আনসাস্টেনেবল হয়ে উঠছে; এভিডেন্সঃ গত ২০ বছরে কৃষির বৃদ্ধি কমে এসেছে।
    তবে, তার কারণ অন্যখানে; চাষের খরচ যে হারে বাড়ছে শস্যের দাম তার থেকে কম হারে বাড়ছে। পেছনে রয়েছে সরকারি নীতি। সরকার সারফেস ইরিগেশন বা চাষের অন্যান্য খাতে খরচ করছে না, ডিজেল বা বিদ্যুতে ভর্তুকি উঠিয়ে দিচ্ছে, চাষিকে পরামর্শ, সাহায্য করার দফতরগুলোর অবস্থা করুণ।

    এসব নীতির সাথে নগরায়নের একটা পজিটিভ যোগ আছে, যার ফায়দা রাজারহাটের চাষিরা শহরের পাশে থাকার দরুণ তুলতে পারত । কিন্তু দেখা যাচ্ছে এক্ষেত্রে আর বাজারের 'ভলান্টারি' প্রক্রিয়ার ওপর ভরসা রাখা হচ্ছে না। পাতি গায়ের জোর খাটিয়ে জমির দখল নেওয়া হচ্ছে।

    ভাল লাগল প্রবন্ধ।
  • ddt | 135.20.82.164 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৭:২৯88786
  • তাতিন,
    মাইগ্রেশন সচরাচর সিসনাল হয়। হুট করে জমি বিক্রি করে দেয় না গ্রামের লোক। বছরে ৩-৪ মাস গ্রামে থাকে, রুপনি কটনির সময়টা। বাকিটা বাইরে। যেখানে ঘুরেছ চাষিদের জিগিয়েছ পুরো বছর গ্রামেই থাকে কিনা? বা কতখানি জমি আছে, জাত কী। মাইগ্রেশনের সাথে আর্থিক অবস্থার নেগেটিভ কোরিলেশন থাকে।
  • siki | 131.241.127.1 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৭:৩৭88787
  • লেখার মাঝামাঝি একটা বিশাআল ফাঁকা স্পেস কি আমিই কেবল দেখছি না সবাই দেখতে পাচ্ছেন?
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫৭88788
  • এঁরা সুখে ছিলেন চাষ করে, এরকম নয়। কিন্তু ওই একটা স্কিল ছিল। একটা আধা গ্রাম্য স্থিতিশীল অবস্থান ছিল। এখন এঁরা নেই-মানুষ। নিজেরা ঠিক কি করবেন জানেন না। ছেলেমেয়েরা জমির দালালির চেষ্টা করে বেড়ায়। শুধু জমি নয় ইঁট সুরকি স্টোন চিপসের দালালি। রাজনৈতিক পার্টি পয়সা দিয়ে জমি নষ্ট করাতে, বাড়িতে ইঁট ছুড়তে, কলা বাগান কেটে দিতে যে সব ছেলেপুলেকে রিক্রুট করছে তারা এঁদের-ই ছেলে মেয়ে। এই আর কি। চাষ করেও অনেক সমস্যা ছিল, কিন্তু বাড়ি তুলে দিয়ে তার সমাধান হলো বললে ঘুড়ায় হাসব। সমাধান হলো, অন্যদের কিছু সমস্যার--এঁদের কি হলো?
  • অমিতাভ গুপ্ত | 220.18.60.65 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:০১88789
  • লেখাটা ভাল। কিন্তু কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল না। প্রথম কথা, কলকাতার এত কাছে কোনও অঞ্চল কি সত্যিই এ রকম কৃষি-অর্থনীতি নিয়ে টিকে থাকতে পারে? শহর আয়তনে বাড়বে, এবং সেই জমির জোগান আশেপাশের এলাকা থেকেই আসবে। আমি দমদম পার্ক অঞ্চলে থাকি। ১৯৪৭-৪৮ সালে এই রিফিউজি কলোনি গড়ে ওঠে। তার আগে এখানে ভেরি ছিল। তার ওপর নির্ভরশীল মত্স্যজীবী মানুষরা ছিলেন। তাঁদের উচ্ছেদ করে, তাঁদের জীবিকা কেড়ে নিয়েই তো আমাদের বসতি তৈরি হয়েছে। সল্ট লেকও সেই একই গল্প। বস্তুত, গোটা কলকাতা শহরটাই গ্রাম থেকে উচ্ছেদ-দখলদারির মাধ্যমে শহর তৈরি করার গল্প। রাজারহাট নিয়ে প্রতিবাদ করলে তো এই উচ্ছেদ-দখল নিয়েও প্রতিবাদ করা উচিত।

    আসল কথা হল, শহর বাড়বে, পাশের এলাকা গিলবে। সেই অঞ্চলের বাসিন্দারা স্বভাবতই আর্থিক ভাবে সেই নতুন পরিবর্ধিত শহরের অংশী হতে পারবেন না। তাঁরা আরও সরে যাবেন। এ ভাবেই নগরায়ণ হয়। এখানে মূল প্রশ্ন জমি দেওয়া-না দেওয়ার নয়। মূল প্রশ্ন ক্ষতিপূরণের অঙ্কের, পুনর্বাসনের ব্যবস্থার। উচ্ছেদের বিরোধিতা যথার্থ রাজনীতি নয়, বরং ন্যায্য ক্ষতিপূরণ অর্জনের রাজনীতি ঠিক।

    আমাদের রাজ্যে, দুর্ভাগ্যক্রমে, সেই রাজনীতি কখনও তৈরি হয়নি। হবেও না। তার কারণ সন্ধান করতে হলে একেবারে তেভাগা আন্দোলন, বা তারও আগের ঘটনাক্রমের দিকে তাকাতে হবে। তা বড় আলোচনা। এখানে সেই অবকাশ নেই।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:১০88790
  • অমিতাভ, আমার ময়তে প্রশ্নটা সার্বিক ভাবে নগরায়ণ নিয়ে, শিল্পবিপ্লবের উত্তরাধিকার নিয়ে। সেটাকে অস্বীকার করলে অন্যান্য প্রশ্নের উত্তর খোঁজা যেতে পারে। তবে সেটা একটা সমস্যাকে ঢাকতে আরেকটাকে নিয়ে আসবে।
    যেমন, সল্টলেক- আজ ২০১০+ সালে কি সম্ভব ছল অতবড় ওয়াটার বডি বুজিয়ে বাসস্থান বানানো? পরিবেশ সংক্রান্ত কেস-এ আটকে যেত না?
    নগরায়ণ করতে গেলে পরিবেশ, মানবসম্পদ, দুর্নীতি -- কোনও না কোনও জায়গায় দুনম্বরি করেই করতে হবে।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:১৩88791
  • চাষকে আনসাস্টেনেবল করে তোলার প্রকল্প নগরায়নেরই অংশঃ
    " ‘জলসেচ ছিল না এখানে?’ – ‘ছিল তো। বাগজোলা থেকে জল আসত। তো ২০০০ সাল নাগাদ সে সব পুরো রাজারহাটে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই নোটিশ বেরোনোর কিছু আগে। যাদের পাম্প কেনার পয়সা নেই, তারা এমনিই চাষ ছেড়ে দ্যায়।’"

    আর কী কী ভাবে কোথায় কোথায় হচ্ছে আমরা থোড়ি জানতে পারছি। শুধু জানছি চাষ করে টেকা যায় না আজকাল।
  • রোবু | 177.124.70.1 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:১৮88792
  • ভালো লাগলো।
  • sosen | 24.139.199.11 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:২৩88793
  • দম দম পার্কের, ও তৎসংলগ্ন অঞ্চলের ভেড়ি কি এরকম দ্রুত বন্ধ হয়েছিল? অনেকগুলো ওয়াটার বডি তো ছিলই , ১৯৯৪-৯৫ এও সম্পন্ন ভেড়ির মালিকেরা ছিলেন ওই অঞ্চলের বাসিন্দা। উচ্ছেদ হয়েছিল কি? বা তাঁরা এই অঞ্চলের থেকে অন্য জায়গায় সরে গিয়েছিলেন কি?
  • b | 24.139.196.6 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৮:২৫88794
  • আগের সল্টলেকের-ও প্রতিবাদ করতে হবে, এই যুক্তিটা বুঝলাম না। ধরুন বন্যপ্রাণী। এক সময়ে ইচ্ছেমত বন্দুক দিয়ে মেরে উজাড় করে দিতো, এখন ট্রেনের ধাক্কায় একটা হাতি মারা গেলেও খবরের কাগজে তোলপাড় হয়, রেলের লোকেরাও নড়েচড়ে বসেন। সেখানে কি আগে-র প্রিসিডেন্সের কথা তোলা হয়?
  • Blank | 180.153.65.102 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৯:১৭88795
  • ভাল লেখা।
    আর সোসেন্দিকে ক
  • কালাপাহার | 113.24.85.179 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ০৯:৩৪88796
  • আমি এতশত তথ্য বা কচকচি করতে পারবো না... শুধু বলি আমাকে এই লেখাটা বেশ ভাবালো... কিন্তু কিছু বল্বার মতো বিদ্যাবুদ্ধি আমার পেটে নেই...
  • অমিতাভ | 220.18.60.65 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:০০88797
  • দমদম পার্কে দখল এর চেয়েও দ্রুত হয়েছিল, এবং সে অঞ্চলের আদি বাসিন্দারা অন্যত্র, সম্ভবত রাজারহাটের দিকেই, পাড়ি দিয়েছিলেন।
    দ্বিতীয়ত, আমি সল্ট লেক বা কলকাতা গড়ে ওঠার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে বলিনি। বলেছি, এটাই নগরায়ণের একমাত্র পথ। কাজেই এই পথ অস্বীকার করা মানে বালিতে মুখ গুঁজে থাকা।

    কিন্তু সোমনাথ আমার আগের মন্তব্যের উত্তরে যে মন্তব্যটি করেছে, সেটা নিয়ে বিস্তারিত তর্ক সম্ভব। নগরায়ণের বিরুদ্ধে, শিল্পবিপ্লবের উত্তরাধিকারের বিরুদ্ধে তুমি অবস্থান নিতেই পারো। কিন্তু তা হলে বিকল্প পথ কি? তুমি সম্ভবত একটা অ্যানার্কিস্ট পোজিশন নেবে। ভেবে দেখতে বলব, অ্যানার্কি দিয়ে কি একটা সমাজ চলতে পারে?

    শিল্প চাই, না, চাই না? কৃষি দিয়ে কি একটা অর্থনীতি টিকিয়ে রাখা সম্ভব? কী ভাবে? না কি, অন্য কোনও পথ আছে? এই নিয়ে আলোচনা হতে পারে...
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:১১88798
  • কৃষি দিয়েই তো কয়েকহাজার বছর অর্থনীতি টিকে ছিল। আমরা আজকেও যে সমাজ সভ্যতা দেখছি, তার অধিকাংশ আচরণ ও মূল্যবোধ কৃষি-অর্থনীতির। গোটা ভারতের অর্থনীতির বড়ো অংশটাই কৃষিকেন্দ্রিক, এখনও।

    কৃষি ও কুটিরশিল্প ভিত্তিক অর্থনীতির পক্ষে ভারতবর্ষে লিটারালি প্রচুর কাজ হয়েছে। ভারতের বাইরেও বিভিন্ন কমিউনিটি সাম্প্রতিক অতীতে সেই প্রচেষ্টা চালিয়েছে/চালাচ্ছে। তবে আমি খুবই কম জানি, তর্ক করার মতন তো জানিই না। শুধু মনে হয় পরিবার,সমাজ,পরিবেশ ঘিরে যে যৌথসত্ত্বা মানুষের, তাকে অসাধারণ ভাবে বহন করেছিল কৃষি-অর্থনীতি। তবে অনেক খামতি তো তাতেও ছিল, কিন্তু সেটাকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে যেদিকে হাঁটছি আমরা, সেখানে এই সার্বিক সাটেনেন্সের জায়গাটা নেই।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন