এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপর বাংলা

  • ইউনুস বিতর্ক (ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়)

    রেহনুমা আহমেদ লেখকের গ্রাহক হোন
    অপর বাংলা | ১৩ এপ্রিল ২০১১ | ৬১১ বার পঠিত
  • গত সপ্তাহেই গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে নোবেল বিজয়ীর অপসারণ নিয়ে লেখার কথা ভাবছিলাম। এমন সময় পড়লাম জ্বরে। আমার জ্বর সেরে গেলেও, ইউনুসের প্রতি সরকারের ঈর্ষার জ্বর কমবার কোন লক্ষণ নেই। সরকার ও শাসকদলের উচ্চ পদাধিকারীরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে ড: ইউনুসের নানা অনিয়মের কথা বলে চলেছেন।

    ড: ইউনুস দেশের অবসর সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করেছেন। এটাই বক্তব্য। অবসরের বয়সসীমা ষাট বছর আর ইউনুস সত্তর ছুঁয়ে ফেলেছেন। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অধিকর্তা হিসেবে ইউনুসের বয়স বড্ড বেশী - মন্তব্য অর্থমন্ত্রীর। বেআইনিভাবে পদ আঁকড়ে না থেকে ড: ইউনুসের দশ বছর আগেই সরে যাওয়া উচিত ছিল - জানাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক।

    হাইকোর্টে দাখিল করা রিট পিটিশনে ইউনুসের কৌঁসুলিরা বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের নির্দেশনামাকে বাতিল করার আর্জি জানিয়েছিলেন। অপসারণের আগে ইউনুসকে শো-কজ নোটিস দেওয়া হয় নি। অবৈধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে সরিয়ে দেওযা হয়েছে। এক সপ্তাহ পরে, ৮ মার্চ, হাইকোর্ট ইউনুসের আবেদন খারিজ করে দেন। হাইকোর্ট তার রায়ে জানান, ইউনুস কোনও আইনি বৈধতা ছাড়াই এতদিন কাজ চালিয়ে এসেছেন। রায়দানের সময অবশ্য আদালতে ইউনুস বা তাঁর কোনও আইনজীবি হাজির ছিলেন না। বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে গত কয়েকমাস ধরেই প্রশ্ন উঠছে।

    হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ড: ইউনুস ও তাঁর বোর্ডের সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য কোনই রুলিং জারি না করেই এই রায় দেওয়া হয়েছে। ইউনুস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড অফ ডিরেক্টরের নয় জন সদস্য হাইকোর্টের রাযের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে আবেদন করেছেন। ১৫ মার্চ সুপ্রীম কোর্টের ফুল বেঞ্চের সামনে এই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা।

    স্থানীয়, জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক স্তরে ড: ইউনুসের সমালোচক বা সমর্থক উভয় দলই সংখ্যায় বেশ ভারী। ৫ মার্চ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এজেন্সি, মানবাধিকার সংগঠন, মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তর ও অন্যান্যদের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পাঠানো একটি ইমেইলে হাসিনা তনয় সজীব ওয়াজেদ লিখছেন যে বাংলাদেশে ইউনুসের একমাত্র পরিচিতি নোবেল পুরষ্কার প্রাপক হিসেবে। রাজনৈতিক ভাবে তাঁর কোনও অস্তিত্ব নেই। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে বিশাল আর্থিক দুর্নীতি, কর ফাঁকি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ এনে সজীব জানাচ্ছেন এর প্রত্যেকটিই ফৌজদারি অপরাধ হওয়া সত্বেও বাংলাদেশ সরকার ইউনুসের বিরুদ্ধে কোনওরকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হল ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের আরও শোষনের হাত থেকে বাঁচানো।

    ইমেইলটি পড়তে পড়তে মনে পড়ল, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এই সুপুত্রটির বিরুদ্ধেই শেভ্রনের কাছ থেকে ২ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সংবাদে প্রকাশ, এই ডিলটির মধ্যস্থতা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শক্তি jalani উপদেষ্টা এবং "উইকিলিকস খ্যাত' ড: তওফিক-ই ইলাহি চৌধুরি ("পিপলস' রেজিস্ট্যান্স টু গ্লোবাল ক্যাপিটাল অ্যান্ড গভর্নমেন্ট কোলাবোরশন ভিন্ডিকেটেড', উইকিলিকস বাংলাদেশ ১, নিউ এজ, ২৭ ডিসেম্বর ২০১০)। ১৭ ডিসেম্বর এই খবরটি ছাপবার জন্যই কি "আমার দেশ'-এর সম্পাদককে জেলে পোরা হয়নি? অন্তত:, সেভাবেই কেউ কেউ দুটি ঘটনার যোগসুত্র খুঁজে পান।

    অপব্যবহার নিয়ে সরকারের দুশ্চিন্তার কথা সজীব লিখেছেন ঠিকই কিন্তু এটি ধোপে টেকে না যখন পত্রিকার খবরের দিকে তাকাই, শাসক দলের অঙ্গ-সংগঠনের সদস্যরা ইউনুসের সমর্থনে আয়োজিত মানব বন্ধনের উপর বারে বারে হামলা চালিয়েছে। কিশোরগঞ্জে বাংলাদেশ ছাত্র লীগ এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের কর্মিরা মানব বন্ধনের অংশগ্রহণকারীদের হাত থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন ছিনিয়ে নিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয় ( (The Daily Star, March 12, 2011). বরিশালে BCL কর্মিরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কর্মচারি ও সুবিধাপ্রাপকদের কাছ থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে তাদের ভাগিয়ে দেয় (The Daily Star, March 12, 2011)।

    সজীবের ইমেইলের প্রাপকেরা তার বক্তব্যে কতখানি প্রভাবিত হয়েছেন জানা নেই। তবে দৃশ্যতই আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইউনুসের সমর্থন ক্রমশ: জোরাল হয়ে উঠছে। মার্কিন সেনেটর জন কেরি একটি বার্তায় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থেকে ইউনুসের অপসারনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের স্বাতন্ত্র্য ও কার্যকারিতা অক্ষুন্ন রেখে উভয় পক্ষই একটি সমঝোতায় আসতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিন্টন টেলিফোনে ইউনুসের প্রতি তার সমর্থন ও চলতি ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। দেশের বাইরে ইউনুসের সহমর্মী আইনজীবি, শিক্ষাবিদ, প্রাক্তন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা তাঁর ও গ্রামীণ বাংকের সমর্থনে সংগঠিত করেছেন "ফ্রেন্ডস অফ গ্রামীণ"। এতে রয়েছেন প্রাক্তন আইরিশ প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসন বা বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জেমস উলফেনস্টাইনের মত ব্যক্তিরা। উলফেনস্টাইন জানাচ্ছেন ইউনুসের সন্মান এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্কের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করাকে তারা তাদের নৈতিক দায়িত্ব হিসেবেই ভাবছেন। "রোল মডেল' হিসেবে ইউনুসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, উন্নয়ন পরিচালিত হওয়া উচিত স্থানীয় মানুষের দ্বারা এবং স্থানীয় স্তরে যারা খুব ভালো কাজ করেছেন তাদের পুরস্কৃত করা উচিত।

    গত বছরের নভেম্বর মাসে নরওয়ের একটি তথ্যচিত্রে অভিযোগ করা হয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য নরওয়ের ফান্ডিং এজেন্সি নোরার্ডের কাছ থেকে পাওয়া অর্থ একটি সংস্থা থেকে আরেকটিতে স্থানান্তর করেছে। পরবর্তীকালে নরওয়ে সরকারের একটি তদন্তে গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে যাবতীয় অভিযোগের থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলেও বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের পরিবর্তন হয় নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে গরীব মানুষের রক্তচোষা বলে অভিহিত করেছেন। অথচ একই সাথে সরকারি বা বেসরকারি স্তরে বিভিন্ন ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পে সরকারি উৎসাহদানের খামতি নেই।

    এ এক অদ্ভুত বৈপরীত্য। অর্থনীতিবিদ অনু মহন্মদ প্রশ্ন করেছেন ইউনুস এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্ক যদি রক্তচোষাই হবে তাহলে সরকার গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ঋণদানের পদ্ধতি নিয়ে বিশদ তদন্ত করাচ্ছেন না কেন? কেনই বা গ্রামীণ ব্যঙ্কের অডিট রিপোর্ট বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক চেপে রেখে দিয়েছে? যদি ক্ষুদ্রঋণ মডেল বা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত অনুপুঙ্খ তদন্ত করে সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে না নিয়ে আসা হয় তবে এটা মনে হতে বাধ্য যে সরকারের এই পদক্ষেপ আসলে ব্যক্তিগত সংঘাত থেকে উদ্ভুত। এর উদ্দেশ্য আর কিছুই নয়, গ্রামীণ ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রনক্ষমতা অন্য কোনও গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া। ("ক্ষুদ্রঋণ মডেল হ্যঁ¡, ইউনুস না -- কেন?", bdnews24.com, ১০ মার্চ ২০১১)

    নুরুল কবীর যেমন একটি লাইভ টক শো তে প্রশ্ন তুলেছেন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী অবস্থান নেওয়াই যদি সরকারের লক্ষ্য হয়, তবে সরকার অন্যত্র সেই ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কেন? কেনই বা সরকার দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের উপর বহুজাতিক কোম্পানি ও তাদের দেশীয় সহযোগীদের অবাধ কর্তৃত্বের অধিকার তুলে দিচ্ছেন।

    সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে "ব্যক্তিগত সংঘাত' -- এই ভাবনায় ইন্ধন জুগিয়েছে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের সাম্প্রতিক মন্তব্য। হাইকোর্টের রায় বেরনোর পরে ইনি বলেন -- বাংলাদেশে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তি যদি কেউ থেকে থাকেন তবে তারা হলেন শেখ হাসিনা ও সন্তু লার্মা। এরা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। নিজেদের কাজের যোগ্যতাতেই এরা পুরষ্কারের দাবিদার, ইউনুসের মত কোনও সংস্থার পদাধিকার বলে নয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং রাতারাতি গজিয়ে ওঠা বিশেষজ্ঞের দলও এই ধরনের জনপ্রিয় তত্বের পেছনে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন। যেমন লস এঞ্জেলস টাইমসে বাংলাদেশের জনৈক শিক্ষাবিদকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে যে হিংসা, ঈর্ষা ও প্রতিশোধপরায়নতা বাংলাদেশের রাজনীতির বৈশিষ্ট। আমার যতদূর জানা আছে, এইটি অপব্যাখ্যা। আমার দৃষ্টিতে, ফালতু কথা; তার কারণ, যেমনটা আমি উইকিলিক্‌স বাংলাদেশ ১-এ আর্গু করেছি, উন্মুক্ত কয়লাখনি প্রসঙ্গে তথাকথিত যুদ্ধরত বেগমদের পারস্পরিক হিংসা ভুলে গিয়ে মার্কিনি রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবে এক কাতারে দাঁড়াতে এক লহমাও লাগে নি।

    অন্য অনেকে ২০০৭-২০০৮ সালে ফকরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ইউনুসের রাজনৈতিক দলগঠনের ব্যর্থ প্রচেষ্টাকে সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমের সাথে যুক্ত করবার চেষ্টা করছেন। সেই সময় "মাইনাস টু' ফর্মুলা ("যুযুধান বেগম' ও তাঁদের রাজনৈতিক দলদুটিকে বাদ দিয়ে) বাজারে চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। আপাতদৃষ্টিতে পশ্চিমি দুনিয়া ও আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলির এতে মদত ছিল। বিশ্বব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফুল সি প্যাটেলের কথায় এর স্বীকৃতি পায়, ঢাকা সফরকালে তিনি বলেন, "আগে যা সম্ভব মনে হয়েছিল, যেমন কিনা "মাইনাস টু অ্যাপ্রোচ, এখন আর তা মনে হচ্ছে না' ("রিকনস্ট্রাক্টিং দি নেশন। ইম্পেরিয়াল ডিজাইনার্স অ্যাট ওয়ার্ক', নিউ এজ, ২২ ডিসেম্বর ২০০৮)। এই মতটি যদি সত্য হয়, হাসিনা পুরোন ঝাল মেটাচ্ছেন জেনে আমি খুবই আশ্চর্য হব। ড: ইউনুসের প্রকাশ্য বেইজ্জতি কি সেই পুরোন ঘটনার জের নাকি ইতোমধ্যে নতুন কিছু ঘটেছে। এই বিষয়টি যারা জানেন তারা যতক্ষন না প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা মুশকিল।

    ক্ষুদ্রঋণ মহিলাদের স্বনির্ভরতা দিয়েছে। গ্রামীণ ব্যাঙ্ক বলে থাকে গরীব মহিলাদের হাতে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং পরিবারের উপার্জনবৃদ্ধির চাবিকাঠি আসার ফলে তাদের ফলে দারিদ্র ও পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর থেকে বেরিয়ে আসা সহজ হয়েছে। "ঢাকায় ইদানীং যা ঘটছে', তার বিরুদ্ধে সবাইকে লড়বার আহ্বান জানিয়ে ভিভয়ান নরিস সম্প্রতি লিখছেন - "How many of us in the so callled "developed" nation know what feels like to be considered less valuable than a cow? How many of us hide our faces and stare at ground because we have never been spoken to, nor asked our advice or point of view?" (Huffington Post, March 9, 2011)।

    এই প্রসঙ্গে ক্ষুদ্রঋণ ও গ্রামীণ ব্যাঙ্ক নিয়ে নৃতত্ববিদ লামিয়া করিমের গবেষণার উল্লেখ করা যেতে পারে। লামিয়া তার ডক্টরাল থিসিসে দেখাচ্ছেন গ্রামীণ ব্যাঙ্ক যেমন গ্রামের মহিলাদের এক ধরণের স্বতন্ত্র "আইডেন্টিটি' তৈরি করতে পেরেছে য়েটা অনেকক্ষেত্রে প্রচলিত সামাজিক কাঠামোয় সম্ভব ছিল না, একইসাথে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও অনুরূপ এনজিওরা মহিলাদের "সন্মান' ও "লজ্জা'র ("women's honor and shame") ধারনাকে কৌশলীভাবে নিজেদের পুঁজিবাদী স্বার্থে ব্যবহার করে থাকে। গ্রামীণ দাবি করে থাকে মহিলাদের নন?-কোল্যাটারাল ঋণ দেওয়া সত্বেও (গ্রামীণের ঋণগ্রহীতাদের ৯৭ শতাংশ মহিলা) ঋণ পরিশোধের হার ৯৮ শতাংশ।

    লামিয়া লিখছেন বাস্তবে মহিলাদের সন্মান ও লজ্জার চিরাচরিত ধারণা এখানে ঋণের কোল্যাটারাল হিসেবে কাজ করে। একজন দরিদ্র মহিলা অন্যজনের উপর নজরদারি করেন। উপার্জন কমে যাবে এই ভয়ে দরিদ্রতর মহিলাটিকে গোষ্ঠী থেকে বার করে দেওয়া হয়। ঋণ পরিশোধে অক্ষম মহিলাটির বাড়ি চড়াও হয়ে তাকে ও তার স্বামীকে হেনস্থা, মাহিলাটির নথ (এয়েতির চিহ্ন) থেকে পরিবারের চাল, ডাল, গোরু, হাঁস-মুরগী কেড়ে নেওয়া হয়। বড় অঙ্কের ঋণ অনাদায়ী থাকলে মহিলাটির ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয় -- গ্রাম সমাজে যা চরম অবমাননা।

    আলফ্রেড নোবেলের সৌভাগ্য ফিরেছিল ডাইনামাইট আবিষ্কার করে। সেকালে হোক কিংবা একালে -- ডাইনামাইট শান্তি ফেরানোর কাজে কখনও সহায়ক হয় নি।

    নিউএজ পত্রিকায় ১৪ মার্চ, ২০১১ প্রকাশিত।

    অনুবাদ : পূর্ণেন্দু চক্রবর্তী
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপর বাংলা | ১৩ এপ্রিল ২০১১ | ৬১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন