এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভোটবাক্স  বিধানসভা-২০২১  ইলেকশন

  • দিমিত্রভ পড়িনি, তবু...

    বিষাণ বসু
    ভোটবাক্স | বিধানসভা-২০২১ | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৮৮৯৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৮ জন)
  • এবারের ভোট অন্য সব বারের থেকে আলাদা, এমন একটা কথা প্রতিবারের নির্বাচনের সময়ে বড় সংবাদমাধ্যমে শুনতে পাওয়া যায়। তাতে একটা স্ববিক্রয়ের দায় থাকে, সত্য কতটা থাকে, বলা মুশকিল। তবে ২০২১ সালের বাংলার ভোটে একটা রকমফের ঘটেছে, তা স্পষ্ট। বিজেপিকে আটকাতে বিভিন্ন মঞ্চ তৈরি হয়েছে, যা সাড়াও ফেলেছে। কোনও নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দল বা ফ্রন্টের ছায়া ব্যাতিরেকে এমন মঞ্চের প্রচার ও প্রসার তীব্র প্রতিক্রিয়ারও জন্ম দিয়েছে, যার জেরে উঠে আসছে বিভিন্ন বয়ান। এই প্রবন্ধ, তেমন সব বয়ানেরই একটি।

    ইতিহাস সাতিশয় বিষম বস্তু। গুছিয়ে ব্যবহার করতে পারলে আপনি যে কোনো পরিস্থিতির পক্ষে কিম্বা বিপক্ষে, দুদিকেই দস্তুরমত যুক্তি দিতে পারবেন। অতীত গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু অতীত নিয়ে পড়ে থাকার চোটে বর্তমানটি গুবলেট হয়ে গেলে মুশকিল।

    এজন্যেই বুদ্ধের বাণীটি মনে রাখাটা কাজের। না বুদ্ধবাবুর নয়, তথাগত বুদ্ধের কথা বলছি। কথাটা হল - অতীত বিগত, ভবিষ্যৎ অনাগত, সুতরাং অজানা - হাতে একমাত্র বর্তমান। অতএব বর্তমানে থাক।

    যেমন ধরুন, জাতীয় কংগ্রেসের ইতিহাস খুঁজলে, বেশিদূর যেতে হবে না - বছর পঞ্চাশেকের মধ্যেই একটা জাজ্বল্যমান জরুরি অবস্থা আছে, ঘরের পাশে বাহাত্তর থেকে সাতাত্তরের ‘জনমুখী’ শাসনের নজির আছে।

    সিপিএম তথা বামফ্রন্টের বিবিধ দমন-পীড়ন অত্যাচারের নজির খুঁজতে অত দূরও যেতে হবে না - দু দশক আগেরই একদম হাতেগরম বিভিন্ন ঘটনা রয়েছে - কলকাতায় যতখানি, প্রচারের অন্তরালে থাকা গ্রামে-মফসসলে তার চাইতে বেশি।

    ইদানিং যাঁরা চমৎকার গণতন্ত্রপ্রেমী এবং সংগ্রামী হোলিয়ার-দ্যান-দাউ হয়ে উঠেছেন, তাঁদের সেই সত্তরের স্বর্ণালি মুক্তির দশকে শ্রেণিশত্রুদের কেমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিধন করা হয়েছিল, সেকথাও মনে করা যেতে পারে। এবং একথাও মাথায় রাখতে হবে, সামান্য কয়েক বছরেই তাঁরা, রাষ্ট্রশক্তির বিন্দুমাত্র সহযোগিতা ছাড়াই, বেশ কয়েক হাজার মানুষ খুন করে ফেলেছিলেন - যাঁদের মধ্যে একটি বড় অংশকে ঠিক কোন মানদণ্ডে শ্রেণিশত্রু ভাবা গিয়েছিল, বোঝা মুশকিল।

    অবশ্য, অভিজ্ঞতা বলে, বিরোধী মাত্রেই শ্রেণিশত্রু কিম্বা দেশের শত্রু, সম্ভবত এটা ডান-বাম নির্বিশেষে রেজিমেন্টেড দলের বয়ান। শত্রুর পেছনে কাঠি করে সব রাজনৈতিক দলই। কিন্তু, যেসব দল নিকেশযোগ্য শত্রুকে এমন একখানা মহৎ বিশেষণ দ্বারা তত্ত্বায়িত করতে পারে না, তারা, সম্ভবত, তেমন রেজিমেন্টেড নয়। তারা ওই পুকুরের জলে বিষ মিশিয়ে দেওয়া কিম্বা বিরোধীদের বাড়িতে ধোপানাপিত বন্ধ করা বা বাড়ি জ্বালিয়ে গ্রামছাড়া করা টাইপের কাজের বেশি এগোতে পারে না - এবং চেপে ধরলে কাজটির দায় অস্বীকার করে, অন্তত গর্ব করে কাজটির পক্ষে যুক্তি সাজিয়ে উঠতে পারে না।

    সচেতনভাবেই এখানে মাওবাদীদের প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলাম - কেননা, তাঁদের আপাত অবস্থান মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে দূরে। অতিবাম কিম্বা দক্ষিণপন্থী, উভয়পক্ষই, ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে হলেও, তাঁদের সঙ্গে চোরাগোপ্তা যোগাযোগ রাখলেও, সে যোগাযোগের কথা মুখে স্বীকার করতে চান না। ইংরেজিতে যাকে বলে ওন আপ করা, তার বড় অভাব ইদানিং। এমনকি, অন্তত এই রাজ্যে, নির্বাচনী জয়ে বড় ভূমিকা থাকলেও, মাওবাদীদের সঙ্গে প্রায় পাড়ার মস্তানদের মতো ব্যবহার করা হয়েছে - তাঁদের ব্যবহার করে বাজে কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে - তবুও, তাঁদের রাজনীতির চূড়ান্ত বিরোধী মাত্রেও মানবেন, তাঁদের আদর্শের প্রতি দায়বদ্ধতা ঈর্ষণীয় - ভোটে ব্যবহারযোগ্য গুণ্ডার সঙ্গে তাঁদের আকাশপাতাল ফারাক রয়েছে।

    কাজেই, মোদ্দা কথাটা হল, অতীত খুঁড়তে চাইলে সবার মধ্যেই বিস্তর ইয়ে পেতে পারেন - ইয়ে, অর্থাৎ সুশীল সমাজের ভাষায় জামায় রক্তের দাগ, আর মেঠো ভাষায় পেন্টুলে হলুদ ছোপ, ইংরেজি বয়ান দেশের মাটিতে টানলে দেরাজে কঙ্কাল।

    কিন্তু, ওই যে বললাম, অতীতের প্রসঙ্গ সরিয়ে বর্তমানে আসুন - কেননা, অতীতের ছাপ বর্তমানে রয়ে গেলেও, অতীতটি অতীতই - বিগত।

    বর্তমান, অর্থাৎ ঘটমান বর্তমান।

    দেশে, জরুরি অবস্থার কথা মাথায় রেখেও বলা যায়, প্রায় অভূতপূর্ব একটি দমনমূলক শাসনব্যবস্থা জারি রয়েছে। নাৎসি শাসনের সঙ্গে এই শাসনের তুলনা কিছুটা দূরের কল্পনা হলেও, মূল সুরে বিশেষ প্রভেদ নেই। প্রভেদ বলতে, ইতিহাসের গতিক্রমে পশ্চিমি মডেলে ফ্যাসিবাদ এদেশে এনে ফেলার কাজটা সহজ নয় - বিশেষত এই বহুস্বরের দেশে। তবে, শাসকদলের সদিচ্ছায় খামতি নেই - হিন্দি-হিন্দু জাতীয়তাবাদের র‍্যাঁদা ঘষে বহুস্বরকে একমাত্রিক করা এবং হিন্দু ধর্মের নামে অ্যাব্রাহামিক হিন্দুত্বের একটি ধর্মীয় মডেল খাড়া করে পশ্চিমি ফ্যাসিবাদের মডেলটি এদেশেও প্রয়োগযোগ্য করে ফেলা - প্রকল্পের কাজ অনেকখানিই এগিয়েছে। সাফল্যের পথে বাধা বলতে, যথেষ্ট সংখ্যক রাজ্যে ক্ষমতার অভাব। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয়, এমনকি মাথাভারি কেন্দ্রের অস্তিত্ব সত্ত্বেও, রাজ্যগুলোকে পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কাজেই, অ্যাজেন্ডা পূরণ করতে হলে, ফ্যাসিস্ট দলের রাজ্যগুলোর সরকারকেও প্রয়োজন। মাঝেমধ্যেই অবশ্য এদেশেও দেশব্যাপী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জরুরি বলে ধুয়ো তোলা হয় - কিন্তু, সে সুদিন তো চট করে এখুনি আসছে না - ততদিন পর্যন্ত নির্বাচনে জিতে রাজ্যগুলোতে ক্ষমতা বাড়ানো বাদ দিয়ে উপায় নেই।

    দু-মাস বাদে এই রাজ্যেও নির্বাচন। ফ্যাসিস্ট দলের গ্র‍্যান্ড প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত এই নির্বাচনও। কাজেই, ফ্যাসিস্ট মডেলটি গ্রহণযোগ্য মনে না হলে, সেই দলটিকে নির্বাচনে ঠেকানো জরুরি।

    আবার রাজ্যের ক্ষমতায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কথাটিও পাড়ার লোককে ডেকে গল্প করে শোনানোর মতো নয়। অগণতান্ত্রিক মানসিকতা সেই দলের প্রতি পদে। সুচিন্তিত কণ্ঠ বা শিক্ষিত স্বরের (ডিগ্রির শিক্ষা নয়, রাজনৈতিক শিক্ষার কথা বলছি) অভাব, সেদলের শিরায়-উপশিরায়। দুর্নীতি ও বিরোধী কণ্ঠকে দমনের মানসিকতা প্রায় মজ্জাগত। পুরোনো খবর কাগজ খুঁজে দেখতে হবে না, একেবারে টাটকা উদাহরণ দিই। দুদিন আগেই চাকরির দাবিতে ছাত্রযুবদের মিছিলে বেপরোয়া লাঠি চালিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী হত্যার ঘটনা - আর গতকালই সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে, যোগ্যতর প্রার্থীকে বঞ্চিত করে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনকে পাইয়ে দেওয়ার হাতে গরম প্রমাণ। আর গ্রামেগঞ্জে স্থানীয় নেতা-গুণ্ডাদের হাতে আমজনতার অতিষ্ঠ হয়ে থাকার কথা তো আছেই। পুরোনো কথা বললে টেট-সারদা-নারদা - আজ যদি মইদুল, তাহলে শাসনের শুরুতেই সুদীপ্ত গুপ্ত, মাঝে আরো কত কত নাম - এককথায় যাকে বলে, গুণে নুন দেওয়ার জায়গাটুকু নেই।

    অর্থাৎ রাজ্যের শাসকও, সরাসরি ফ্যাসিস্ট না হলেও, কোনো অংশে গ্রহণযোগ্য বা কম পরিত্যাজ্য নয়। অতীতের কথা মাথায় রাখলে, এই শাসক দলের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট দলটির সম্পর্ক চিরকালই থেকেছে - কখনও প্রকাশ্য, কখনও অন্তঃসলিলা ফল্গুধারার তুল্য। কিন্তু, আগেই বলেছি, আমরা অতীতের চেয়ে বর্তমানকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছি - এবং অন্তত বর্তমানে, অন্তত প্রকাশ্যে এই দুই পক্ষের সম্পর্ক প্রায় সাপে-নেউলে। তবুও, গত কয়েক মাসে, শাসক দলের এমনকি উঁচুস্তরের নেতারাও যেমন করে দল বদল করে ফ্যাসিস্ট দলে যোগদান করছেন, এবং গিয়েই পুরোনো দলের সঙ্গে ফ্যাসিস্ট দলের আদি ও নিবিড় যোগাযোগের কথা প্রকাশ্যে আনছেন, একমাত্র আচ্ছন্ন প্রেমিক না হলে, সে বক্তব্যের প্রতি অন্ধ উপেক্ষা দেখানো মুশকিল।

    এমতাবস্থায়, রাজ্যের শাসক ফ্যাসিস্টদের তুলনায় কম বিপজ্জনক কিনা, ঠাণ্ডা মাথায় বিচার করা মুশকিল - অন্তত, যাঁরা সরাসরি আক্রান্ত, তাঁদের পক্ষে তো বটেই। রাজ্যের শাসককে যদি লেসার ইভিল তকমা দিতেই হয়, তাহলে, একেবারে শুরুতেই, তাঁদের যে ইভিল তকমাটুকু প্রাপ্য, সেকথা মেনে নিয়েই আলোচনা শুরু হওয়া জরুরি। সেটুকু না মানতে চাইলে, রাজ্যের শাসককে ক্লিনচিট দিতে চাইলে, অত্যাচারিত এবং বিরক্ত মানুষের মন ছোঁয়া যাবে না - এবং তার সঙ্গে তৃতীয় সম্ভাবনাটির নামে যদি লাগাতার গালিগালাজ চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে আপাত-লেসার ইভিলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ ভোট গ্রেটার ইভিলের দিকে সরবে, সরবেই। যেমন ধরুন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার মুহূর্তে ইমাম-পুরোহিত ভাতা কিম্বা ঈদের নামাজে হিজাব পরিহিতা মুখ্যমন্ত্রী অথবা ক্লাবে দুর্গাপুজোর অনুদান যে সরকারি ভুল, সেকথা না বলা গেলে ভাবের ঘরে চুরি করা হয়। আর চুরিটা ভাবের ঘরেই করুন বা অন্যের ঘরে, তেমন মানুষের মুখে নীতির কথা শুনলে, তাকে চোরের মায়ের বড় গলা ভাবাই দস্তুর।

    এমতাবস্থায় মনে করিয়ে দেওয়া যাক, যদি অবস্থান নিতে চান, যদি আগামী নির্বাচনকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্বাস করেন, তাহলে কাকে ভোট নয় বলার পাশাপাশি কাকে ভোট দেবেন, সেকথা জানানোও কর্তব্য। ফ্যাসিস্ট বনাম অগণতান্ত্রিক দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচার - এই বাইনারির বাইরেও এই নির্বাচনে তৃতীয় একটি পক্ষ থাকছে, অতীত অগ্রাহ্য করে বিচার করতে পারলে, আমজনতার ইস্যু নিয়ে আপাতত তাঁরাই একমাত্র সরব। তাঁদের আপনার পছন্দ না-ই হতে পারে, কিন্তু আপনার ঠিক কোনটি পছন্দ, সেকথা স্পষ্ট করে জানানো জরুরি। সন্ধ্যাভাষা কাব্য-দর্শনে যতখানি উপযুক্ত, রাজনীতিতে ততখানি নয় - সঙ্কটকালে তো রীতিমতো বিপজ্জনক। আপনার ডেলিবারেট ইচ্ছে ছাড়াই যদি ঠারেঠোরে রাজ্যের বর্তমান শাসকদলকেই ভোট দেওয়ার বার্তা পৌঁছায়, তাহলে সেই ভুল বোঝার দায় শুধুই পাঠক-শ্রোতার 'পরে চাপাতে চাইলে চলবে না - বার্তা যখন আপনি দিচ্ছেন, সেই বার্তা থেকে কে কী সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছেন, সেটুকুর খেয়াল রাখার দায়িত্ব আপনারই নেওয়া কর্তব্য। ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে যদি ভাসা-ভাসা বার্তা দেন, তাহলে আপনার দায়বদ্ধতা কিম্বা সেই বার্তার সততা নিয়েই সংশয় থাকে। হরলিক্সের বিজ্ঞাপন শুনে ক্রেতা যদি কমপ্ল্যান কিনতে উদবুদ্ধ হন, তার দায় তো ক্রেতার 'পরে চাপানো মুশকিল - তাই না?

    এখন অবশ্যম্ভাবী প্রশ্ন, ভোটটা দেবেন কাকে?

    আমার দিক থেকে উত্তর, বামেদের। আপনি যদি বলেন, বর্তমান শাসকদলকে - সেটাও বলতে পারেন। শুধু বলি, স্পষ্টভাবে বলুন - যা বলতে চাইছেন, দায়িত্ব নিন। উত্তরটি গ্রহণযোগ্য না-ই হতে পারে - সর্বজনগ্রাহ্য তো কখনোই হবে না - তবুও, স্পষ্ট অবস্থান ও উচ্চারণ জরুরি। শুধুই নেতি নেতি করে আধ্যাত্মিক সত্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা থাকলেও, রাজনৈতিক লক্ষ অর্জন মুশকিল। বিরোধিতা করার মুহূর্তে বিরুদ্ধ কোনো একটি দলের পক্ষে বোতাম টেপা জরুরি। আমার পক্ষে সেই বোতাম বামেদের - আপনি সিদ্ধান্ত নিন, সেই বোতাম কাদের। কিন্তু, যাদেরই হোক, আবারও বলি, স্পষ্টভাষায় বলুন। যাঁরা কথা বলতে পারেন, যাঁরা সেই বলার সুযোগ রক্ষার ব্যাপারে সিরিয়াস, তাঁদের বক্তব্য স্পষ্ট হওয়া জরুরি।

    এরই পাশাপাশি মনে রাখা যাক, বর্তমান ভোটের প্রেক্ষিতে এতশত আলোচনা হলেও, ইতিহাস একটা বহমান প্রক্রিয়া। এন্ড অফ হিস্ট্রি বলে একটি সময়কে যাঁরা দাগিয়ে দিতে চান, তাঁদের ঠিক বামপন্থী বলে ভাবতে পারা মুশকিল। ফ্যাসিবাদী শক্তি যখন দুয়ারে কড়া নাড়ে, একটি নির্বাচনে হারিয়ে দিলেই তারা ন্যাজ গুটিয়ে চিরতরে পালায়, এমন তো নয়। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইটা দীর্ঘমেয়াদি হতে চলেছে। অতএব, সেই লড়াই এই নির্বাচনের পরেও জারি থাকবে। লড়াইটা অন্য মাত্রা পাবে এই নির্বাচনেই ফ্যাসিস্ট দল জিতে গেলে - আর এই নির্বাচনে বর্তমান শাসকদল ক্ষমতায় টিকে গেলে, লড়াইটা সেই মাত্রায় পৌঁছাবে মাসকয়েক পরে। ফারাক বলতে এটুকুই। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হতে হবে সব গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ এবং বামপন্থীদেরই - অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারীকে সমর্থন করে ঘরের চালের ফুটোয় কাগজ গোঁজার মতো তাপ্পি সম্ভব, দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাইলে ঘরের চালটিকেই পোক্ত করতে হবে - সেই পোক্ত করার কাজ করতে গিয়ে আপাতত একটু বেশি ভেজার ঝুঁকি থাকলেও কাজটা জরুরি।

    অতএব, অন্তত আমার চোখে, এই মুহূর্তে, সব গণতান্ত্রিক শক্তিরই একই ছাদের তলায় আসা জরুরি। যদি ফ্যাসিবাদের বিপদটিকে সিরিয়াসলি নেন, তাহলে তো বটেই।

    সঙ্কটকাল বলে যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে এই মুহূর্তে একজোট হওয়ার চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই হতে পারে না। অতীতের ব্যাগেজ ভুলেই একত্র হওয়া জরুরি। ক্ষমতাসীন বামদল কখন কীভাবে বাম-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছিল, তার বিচারের চাইতেও জরুরি বর্তমান প্রেক্ষিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। ধনতান্ত্রিক বাজার-অর্থনীতির সময়ে ক্ষমতা এক বিষম বস্তু - আগুনখেকো অতিবাম শ্রমিকনেতাও দক্ষিণপন্থী শাসনের অংশ হয়ে তোলাবাজির মাস্টার হয়ে ওঠেন। আবার দাপুটে "চাষার ব্যাটা", হেলে-কেউটে সংলাপখ্যাত বাম মন্ত্রী, পরবর্তী জমানায় ক্ষমতার আরামকেদারার প্রলোভন এড়াতে পারেন না। কাজেই, ওই যে বললাম, দোষারোপ করতে চাইলে, জামায় রক্ত কিম্বা পেন্টুলে হলুদ ছোপ, কোনোপক্ষেই কোনোটিরই অভাব হবে না। পছন্দ আপনার - দোষারোপই চালিয়ে যাবেন, নাকি সামনের সঙ্কটের মোকাবিলায় হাতে হাত রাখবেন।

    আর দয়া করে যে যেখানে শক্তিশালীর গল্প এখানে টানবেন না। জ্যোতিষচর্চায় আস্থাশীল হলে অন্য কথা, কিন্তু রাষ্ট্রের গোয়েন্দাদপ্তর যখন জনমতের সঠিক আন্দাজ পায় না, আপনি সোশাল মিডিয়ায় বসে সে আন্দাজ পেয়ে যাবেন, এটা একটু বাড়াবাড়ি আশা। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায়, কারা ঠিক কিসের জোরে আপাত সবল রূপে দৃশ্যমান হয়, সে রহস্য কি একেবারেই অজানা? ঢালাও খরচা-কাটআউট-ট্যাবলো-মাসলপাওয়ার যাদের যেখানে বেশি, আপনি যদি তাঁদেরই পক্ষে থাকতে চান, তাহলে আর খামখা ফ্যাসিস্ট দলটির বিরুদ্ধে অভিমান করে থাকবেন না, প্লীজ - এব্যাপারে তাঁরা প্রায় কিংবদন্তিসম। আর আপনি যদি জনসমর্থনের হিসেবই কষতে চান, তাহলে আরেকবার ভাবুন। যারা তথাকথিত দুর্বল, তারা তো আপনার, আপনাদের সমর্থন পায়নি বলেই দুর্বল। আপনারা পাশে থাকলে, সাত শতাংশ সাতচল্লিশ শতাংশে পৌঁছাবে না কেন? ওই যাকে বলে, বিন্দু বিন্দু জলেই ইত্যাদি ইত্যাদি।

    আলোচনার শেষে জানিয়ে রাখা যাক - যাকে বলে ডিসক্লেইমার - আমি বেসিকালি অশিক্ষিত - খুব গভীর পড়াশোনা আমার নেই। আজকাল খুব দিমিত্রভ নামক এক ভদ্রলোকের নাম শুনি - যিনি নাকি, ফ্যাসিবাদ ঠেকানোর জন্যে দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে হাত মেলানোর সদুপদেশ দিয়েছিলেন। হতেই পারে, দিয়েছিলেন। বড়সড় মানুষ, ভালো ভেবে ভালো কথাই নিশ্চয়ই বলেছিলেন। আগেই বললাম, আমি অতদূর অবধি পড়ে দেখিনি। কিন্তু, সেখানে কি তিনি ফ্যাসিস্টদের মোকাবিলার স্বার্থে, দক্ষিণপন্থীদের পাশে নেওয়ার (নাকি থাকার) জন্যে বামেদের নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি কাদা ছোড়াছুড়ি জারি রাখার বার্তাও দিয়ে গিয়েছিলেন??


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ভোটবাক্স | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | ৮৮৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • { | 2620:7:6001::ffff:c759:e657 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৫০102801
  • অতএব, অন্তত আমার চোখে, এই মুহূর্তে, সব গণতান্ত্রিক শক্তিরই একই ছাদের তলায় আসা জরুরি।


    আপনার চোখে "সব গণতান্ত্রিক শক্তি" কারা সেটাও স্পষ্ট করে বলুন।

  • শেখর সেনগুপ্ত | 45.251.233.220 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১২:৫৮102802
  • খুবই  যুক্তিপূর্ণ এবং সময়োচিত লেখা। বক্তব্যের সঙ্গে পূর্ণ সহমত পোষণ করছি।

  • পারমিতা | 14.139.219.113 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৫৫102804
  • দরকারী লেখা।

  • Pinaki | 136.228.209.36 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:০২102805
  • এই বক্তব্যের সাথে যে জায়গাগুলোয় দ্বিমত আছে লিখছিঃ 


    1) তৃতীয় পক্ষ হিসেবে বামেরা আছে ঠিকই, কিন্তু তারা সারা রাজ্যের পরিপ্রেক্ষিতে শক্তিশালী তৃতীয় পক্ষ নয়। সেক্ষেত্রে যে যে সীটে তারা জোরদার প্রতিদ্বন্দিতা করার জায়গায় রয়েছে সেখানে সেখানে তাদের ভোট দেওয়াই যায়। তাদের জেতানোর চেষ্টা করা যায় এবং করা উচিৎ। কিন্তু এমন অনেক জায়গাই থাকবে যেখানে বামেরা প্রতিযোগিতার ধারেকাছে নেই, বরং তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে ক্লোজ ফাইট হবে। সেখানে বামেদের ভোট দেওয়া মানে ভোট কেটে বিজেপিকে জিততে সাহায্য করে দেওয়া। এবার কেউ বলতে পারেন, তৃণমূলকে জিতিয়ে কী হবে, কী গ্যারান্টি যে সেই নেতা আগামী দিনে বিজেপিতে ভিড়বে না? সত্যি কোনো গ্যারান্টি নেই। কিন্তু তারপরেও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে জিততে সাহায্য করার তুলনায় সেইসব সীটে তৃণমূলের মাধ্যমেও যদি বিজেপিকে ঠেকানো যায়, সেই চেষ্টা করা উচিৎ। গ্যারান্টি কিন্তু কংগ্রেস বা আব্বাস বা এমন্কি সিপিএমের লোকাল এম এল এ দের ক্ষেত্রেও দেওয়া যাবে না। বিমান বসু বিজেপিতে যাবেন না এটা যতটা গ্যারান্টি সহকারে বলা যায়, একটা জেলার স্থানীয় সিপিএম এমেলএর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অত গ্যারান্টেড কিছু নয়। এই দলবদলের প্রক্রিয়াটাকে আটকানো যায় একটাই উপায়ে, অনৈতিক দলবদল আর বিজেপির ভয় দেখিয়ে ও টাকাপয়সা দিয়ে কিনে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে যদি সমাজে নিন্দাযোগ্য একটি বিষয় হিসেবে প্রতিপন্ন করা যায়। সেজন্য তীব্র বিজেপি বিরোধী প্রচার দরকার। বিজেপিকে বাংলার জন্য নিন্দিত এবং ঘৃণিত একটি বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে এই দলবদল বা কেনাবেচা থেকে আজ তৃণমূল এবং আগামী দিনে ক্ষমতার ধারেকাছে এলে বাম বা কংগ্রেস কেউই রেহাই পাবে না। 


    ২) এই প্রসঙ্গ থেকেই আমি আমার দ্বিতীয় পয়েন্টে ঢুকব। মোদ্দ বিষয়টা হল বিজেপিকে বাংলার বিপদ হিসেবে প্রতিষ্টা করা। তারপর বাকি সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস, ওসব বাঙালিরা নিজেদের মধ্যে বুঝে নেবে। এই বিষয়টা এস্টাব্লিশ করতে গেলে এই পুরো নির্বাচনী ক্যাম্পেনে যাঁরা সরসারি নির্বাচনে অংশগ্রহণকরী কোনো দলের প্রতিনিধি নন, তাঁদের প্রচারের মূল ফোকাস বিজেপি বিরোধী হতে হবে। 'বিজেপি তৃণমূল একই' - এই কথায় যত না তৃণমূলকে বেশি ক্ষতিকারক প্রতিপন্ন করা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি বিজেপিকে ট্রিভিয়ালাইজ করা হয়। এই ট্রিভিয়ালাইজেশনটাই বাম দলের (সিপিএম) ক্যাম্পেনের মূল সমস্যা। এটা তাঁরা বিগত দুবছর ধরে করে চলেছেন। এটা জনমানসে এই পার্সেপশন তৈরী করেছে যে বাংলায় তাঁরা সত্যিই কী চাইছেন? যেন তেন প্রকারে তৃণমূল হেরে যাক, সেটা বিজেপির হাতে হলেও - এই প্রতিশোধস্পৃহাই কি তাঁদের ক্যাম্পেনকে মূলগতভাবে প্রভাবিত করছে? এই প্রশ্ন উঠে যাওয়ায় একটা বড় অংশের মানুষের চোখে, যাঁরা আলাদা করে সিপিএমএর প্রতি প্যাথলজিকাল বিদ্বেষ পোষণ করেন না এবং ভয়ানক তৃণমূল প্রেমীও নন, তাঁদের কাছে বাংলার বামেদের বাংলার মাটিতে বিজেপি বিরোধিতার সদিচ্ছা নিয়ে একটা প্রশন্চিহ্ন তুলে দিয়েছে। এটাই আমার ধারণা 'নো ভোট টু বিজেপি' ক্যাম্পেন তৈরী হওয়ার একটা বড় কারণ। বিজেপি সবচেয়ে বড় শত্রু এবং তর বাংলায় ক্ষমতায় আসা আতকাতে হবে - এই কমিটমেন্টএর প্রতি সিন্সিয়ারিটির নিদর্শন দেখতে পারা গেলে হয়ত আজ আলাদ করে নো ভোট টু বিজেপি ক্যাম্পেনের প্রয়োজনই হত না। 


    3) বামেদের কংগ্রেসের সাথে এবং আব্বাসের সাথে 'অপর্চুনিস্ট' জোট নিয়ে এক অংশের মানুষের সংশয় এবং দ্বিধা আছে। এটা আর একটা কারণ বামেদের তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ক্লীনচিট না পওয়ার। 


    ৪) চতুর্থ কারণ হল, কর্মসংস্থান নিয়ে বামেরা আন্দোলন করছে ঠিকই, কিন্তু এই বিগত দশ বছরে সিঙ্গুর মডেলের বাইরে অন্য কোনো কর্মসংস্থানের মডেলকে তারা মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য করতে পারেনি। বরং বারবার সেই সিঙ্গুর মডেলই অ্যাসার্ট করতে করতে গেছে। ফলে যে সিঙ্গুর মডেলকে বাংলার মানুষ একবার রিজেক্ট করেছে, সেই মডেল নিয়েই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বিকল্প হয়ে ওঠা যায় কিনা - এই নিয়েও সংশয়ের জায়গা রয়েছে। 


    মোটামুটি এই। পরে আবার লিখব দরকর হলে। 

  • Sharmistha Das | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:২২102806
  • অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লেখা  । 


    ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া অপরিহার্য বলেই ইতিহাস কখনো গুরুত্ব হারায় না । 


    চরম একটা কিছু ঠেকানোর জন্য একজোট হওয়া দরকার 

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:৫৯102808
  • মূলত পিনাকীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই কথাগুলো বলা।


    রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হয়ে থাকে রাজ্যের শাসকের পক্ষে বনাম বিপক্ষে। এবারে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি সত্ত্বেও ব্যাপারটা একই থাকছে। বিজেপি বনাম অবিজেপির চাইতেও বেশী, তৃণমূল বনাম অতৃণমূল। সেক্ষেত্রে বামেদের ভোট বাড়লে বিজেপির সুবিধে তত্ত্বটা ঠিক নয় - সুবিধেটা তৃণমূলেরই বেশী। কিন্তু, সেকথা ভেবে বামেদের ভোট দিতে বলছি না। চাইছি দীর্ঘমেয়াদি লড়াইয়ের স্বার্থে। কেননা, দীর্ঘমেয়াদে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে বামেদেরই - সিপিএম এবং অতিবাম, সবাইকেই।


    সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে মন্ত্রী রেখে কিম্বা ত্বহা সিদ্দিকির সাথে জনসভা করে অথবা মতুয়া রাজনীতি বজায় রেখে যদি ধর্মনিরপেক্ষতার লড়াই করা যায়, তাহলে আব্বাস সিদ্দিকিকে নিয়েও করা যাবে। যদিও, এর প্রতিটিই ভুল পদক্ষেপ বলেই আমার মনে হয়, এবং এই ধরণের রাজনীতিই বিজেপিকে এ রাজ্যে সারজল দিয়েছে।


    বামেদের একাংশ যদি যেকোনো মূল্যে তৃণমূলের পরাজয় চায়, তাহলে এও মেনে নিতে হয়, অতিবামদের একাংশ এখনও তৃণমূল নেত্রীকে সাব-অল্টার্ন মসিহা ভাবা এবং অন্ধ সিপিএম-বিরোধিতার ব্যাগেজ ছেড়ে বেরোতে পারছে না।


    সিপিএমের কর্মসংস্থানের মডেল পাব্লিক রিফিউজ করেছে, মেনে নিলাম। তাহলে কি এই তত্ত্ব খাড়া করা হবে, যে, মোদিজির কর্মসংস্থানের মডেল বা মমতাদেবীর কর্মসংস্থানের মডেল জনগণ খুবই বুকে টেনে নিয়েছে? যদি তা-ই হয়, সেই মডেলগুলো এক্স্যাক্টলি ঠিক কী, সেই খবর পাওয়া গেলে খুবই সুবিধে হয়।


    নির্বাচনের মুখে জোট মাত্রেই অল্পবিস্তর সুবিধেবাদী। বিশেষত, সম-আদর্শের দলের সাথে জোট না হলে তো বটেই। নো-ভোট-টু-বিজেপি-কে যদি জোট বলে ভাবি, তাহলে কি এও তা-ই নয়? অর্থাৎ বিজেপিকে ঠেকানোর সুবিধার্থে একটা মস্ত ছাতা। আর একে যদি কোনো জোট না বলে ধরে স্রেফ একটা স্টেটমেন্ট বলে ধরি, তাহলে তো সেটা দায়-এড়ানো সুবিধেবাদই দাঁড়ায়। ওই যাকে গানের ভাষায় বলে, you're so good with words and keeping things vague... 

  • প্রভাস চন্দ্র রায় | 2409:4060:219c:d650::e42:20ad | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:২২102811
  • প্রথমেই বলে রাখি এই লেখার প্রথমাংশে সত্তর দশক এবং বিশেষ এক বামপন্থী দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে যে কথার উল্লেখ করা হয়েছে, তার সঙ্গে আমি কিছুটা দ্বিমত পোষণ করি। এতো সংক্ষেপে, এত অল্প কথায় সে আন্দোলন সম্পর্কে কিছু বলাটাও হয়তো সম্ভব নয়।


    বস্তুত কথায় কথায় সত্তর দশক বললেও, সেই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল সাতষট্টি সালে, অর্থাৎ ষাটের দশকের শেষার্ধে। তার কয়েক বছর আগেই ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি দ্বিখণ্ডিত হয়। নেতৃত্বের অধিকাংশ থেকে যান সাবেকি দলটিতে। যদিও নিচুতলার বেশিরভাগ কর্মী সমর্থক চলে আসেন মার্ক্সবাদী নামাঙ্কিত দলটিতে। এবং সেখান থেকেই দলের একাংশ মার্ক্সবাদী লেনিনবাদী দলের পত্তন করেন।


    তাঁদের সে আন্দোলন খুব অল্প সময়ের মধ্যে ব‍্যর্থ হলেও সদিচ্ছার অভাব কারো মধ্যেই ছিল না। যদিও সত্তরের প্রথমার্ধে তার রেশ থেকে যায়। তাছাড়া ক্ষমতা দখলের জন্য চূড়ান্ত দক্ষিণ পন্থী দলের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রশ্ন সেই দলের নেতৃত্বের ছিল না। 


    মনে রাখতে হবে সত্তর সালে দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট সরকারের পতনের পর এই রাজ‍্যে রাস্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। তার পর বাংলাদেশ যুদ্ধ --


    ছিন্ন বিচ্ছিন্ন নেতৃত্বের রাশ আলগা হতে থাকে, ঘটে বেনোজলের অবাধ প্রবেশ। সুতরাং অকাতরে শ্রেনীশত্রু নিধনের দায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় এবং সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নির্বাচনে জিতে আসা এক ফ‍্যাসিস্ট সরকারের অঙুলিহেলনে ঘটে থাকাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। আর দায় চাপিয়ে দেওয়ার জন্য তো নন্দঘোষ ছিলই।আজকে যাদের উনসত্তরে জন্ম নেওয়া দলটির উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাদের নীতি আদর্শ তখনকার দলটির সঙ্গে কতটুকু মিল আছে, সেই বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনার অবকাশ থেকেই যায়।


    পরবর্তী অংশগুলোর প্রত‍্যেকটির সঙ্গে সহমত পোষণ করি। সুতরাং সে বিষয়ে আলাদা আলোচনা বাহুল্য মাত্র।

  • dc | 122.183.146.69 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:২৯102813
  • দিমিত্রভ কে? এটা কিলিয়ার না হলে কাকে ভোট দেবো বুঝতে পারছি না। 

  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 117.201.126.13 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৪৯102815
  • ভালো লেখা বলাটা বাতুলতা। নিতান্ত প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় লেখা। আরও গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে লেখক অর্থাৎ বিষাণ নিজের অবস্থানের জন্য কোন সান্ধ্যভাষা ব্যবহার করেনি। আমার অভিনন্দন। 


    তবে সত্তরের দশকের গণহত্যা, সংসদীয় রাজনীতি এবং যৌবনের বিপুল অংশগ্রহণ এত অল্পকথায় শেষ করা যায়না। তার জন্য না হয় আরেক কিস্তি বরাদ্দ থাক।


    আপাতত এই নির্বাচনের জন্য যে বিষাক্ত নিঃশ্বাস আমাদের অন্দরমহলে ঢুকে পড়ছে তাকে থামানোর জন্য বেঁধে বেঁধে থাকতে হবে।

  • জয়র্ষি | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৫৫102816
  • "রাজ্যের শাসকও, সরাসরি ফ্যাসিস্ট না হলেও, কোনো অংশে গ্রহণযোগ্য বা কম পরিত্যাজ্য নয়।"

    একদম সত্যি কথা। সম্পূর্ণ সহমত। তারপরেই কয়েকটি কথা চলে আসে। যেহেতু আদর্শগত কথা না বলে প্র‍্যাক্টিকাল কথা হচ্ছে, তাই প্র‍্যাক্টিকাল কিছু সমস্যা তুলে ধরি।

     

    ১. সাধারণভাবে বামেদের ভোট দেওয়ার কথা যখন বলা হচ্ছে, তখন আমার প্রশ্ন, বামেরা কি ২৯৪ টি আসনে জেতার ব্যাপারে সম্ভাবনাময়? নিদেনপক্ষে ১৪৮ টি আসনে? যদি তা হয়, তাহলে খুব খুশির কথা। কিন্তু জোরের সাথে এ কথা হয়তো বিমান বসুও বলতে পারবেন না। ফলে সর্বত্র একটি দলই বিজেপি ও তৃণমূলকে ঠেকিয়ে দেবে এমন ভাবনার উৎস কী? 

    ২. জেতা পরের কথা, ২৯৪ টি আসনে বামপ্রার্থী আদৌ দাঁড়াবে তো? আমি তো সেই সম্ভাবনা দেখছি না। তাহলে বামেদের নিঃশর্ত ভোট দেওয়া হবে কীসের বেসিসে? দাবীটা অবাস্তব হচ্ছে না? ধরে নিলাম, যে আসনে বামেরা দাঁড়াবে এবং সেই প্রার্থী সমর্থনযোগ্য সেখানে বামেদের ভোট দেওয়া হবে। তার বাইরেও তো অন্তত ১৬০-৭০ টা আসন থাকবে, যা ম্যাজিক ফিগার ১৪৮ এর চেয়েও বেশী।

    ৩. কোন তত্ত্বে আব্বাস বাম হয়, সেটাও জানতে চাই। ইমামভাতা দেওয়া যদি সাম্প্রদায়িক ও বিজেপির উত্থানের কারণ হয় (যদিও সেটা বিজেপিরই প্রচার) তাহলে স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা করা সমর্থন করা আব্বাসের ফলে তো মানুষের আরও প্রো-বিজেপি হওয়ার কথা।

    ৪. বিজেপি যে কোনো ভোটিং অপশনই হতে পারে না, সেটা তুলে ধরাই বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশী কার্যকর নয় কি? যেখানে লেখায় স্বীকার করা আছে, বিজেপির হিটলারী মানসিকতা আছে। তৃণমূলকে ভোট দিতে বলতে হবে না, কিন্তু কাকে ভোট দেবে বলার আজকের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কাকে ভোট দিলে সাড়ে সব্বোনাশ তা বোঝাটা অনেক বেশী জরুরি নয় কি? 

    ৫. অতীতের কথা অল্প করে তোলা হয়েছেই যখন, তখন বলা যাক, লড়াই ভোটে শেষ না। বিজেপিকে রুখে দিলেও আর এস এস থাকবে। যে দলই ক্ষমতায় আসুক, সে রামমন্দিরের রথযাত্রা ঠেকাবে না। কংগ্রেস তো বিজেপির বিরোধিতা করে সহী হিন্দু হিসেবে রামমন্দিরকে সমর্থন করেইছে। সিপিয়াইএমও 'let the trust do their job' বলে দায় এড়িয়েছে। আর তৃণমূল তো বিজেপির রামনবমীর মিছিলের পাল্টা হিসেবে হনুমান মন্দির গড়ে দিচ্ছে। এতে আদৌ RSS কে রোখা যায়? 

    ৬. স্রেফ ভোটে যখন ফ্যাসিবাদকে রোখা যাবেই না, তাহলে ভোটকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার কারণ কী? ভোটের বাইরেও সংগ্রাম, আন্দোলন লাগবে। ভোটে নাহয় ফ্যাসিস্ট RSS এর সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বিজেপিকে ঠেকানোটাই যাক। কেন্দ্রের তো সরকার ফেলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করারও ক্ষমতা আছে, তাহলে স্রেফ দলবদলের ভয় পেয়ে কী হবে? বিজেপিকে যত বেশীদিনের জন্য সম্ভব ঠেকিয়ে আন্দোলনকে মজবুত করাই জরুরি নয় কি?

  • Ranjan Roy | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৩৮102817
  • বুলগেরিয় কমিউনিস্ট জর্জি দিমিত্রভ তৎকালীন কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল বড় নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্যাশিস্ত অক্ষশক্তির বিপদের মোকাবিলার জন্যে রণনীতি হিসেবে সমস্ত বিরোধীদের নিয়ে ব্যাপকতম ফ্যামিলির ফ্রন্ট গড়ার ডাক দিয়েছিলেন,  সব দেশের মধ্যেও  এবং রাষ্ট্রশক্তি গুলির সমন্বয়েও। এ ছিল বিভিন্ন দেশের ভেতরের রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্ট এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও রাশিয়ার যৌথ রণনীতির তাত্ত্বিক ভিত্তি। উনি স্তালিনের প্রতিনিধি বটেন।


    তখন কিন্ত আমেরিকা ব্রিটেন ফ্রান্স অনেক বড় কলোনিয়াল এবং ইম্পিরিয়াল পাওয়ার  । জার্মানির কোমরভাঙা, জাপান এশিয়াতে সীমিত,  ইতালি নগণ্য।  কিন্ত ওদের দুনিয়া দখলের আগ্রাসী রণনীতির মোকাবিলার জন্য বৃহৎ শক্তিগুলোর সঙ্গে হাত মেলানো দিমিত্রভ থুড়ি স্তালিন উচিত ভেবেছিলেন।  স্তালিনের সমাজতন্ত্রের বদলে মাতৃভূমি  রক্ষার ডাক,   ইয়াল্টা   বৈঠক,  ডী ডে এবং শেষে বার্লিন ভাগ এরই ফলশ্রুুতি।

  • এলেবেলে | 202.142.96.231 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৬:৫২102818
  • আচ্ছা বেশ! খোলাখুলিভাবে বাম (পড়ুন সিপিএম, কারণ ফব-আরএসপি-সিপিআইকে শক্তিশালী দূরবীন লাগিয়েও দেখা যাচ্ছে না দীর্ঘদিন)-দের ভোট দেওয়ার ন্যারেটিভ এসে গেল তাহলে? মচৎকার।


    এটি ওই 'নো ভোট টু বিজেপি'-র মতোই একটি আদ্যন্ত শহুরে, সোফিস্টিকেটেড, সোশ্যাল মিডিয়াজাত স্লোগানের মতো একই রকমের আচাভুয়া ন্যারেটিভ।


    বাংলায় ভোটের তীব্র মেরুকরণ ঘটে গেছে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। তাতে বাংলার সঙোস্কিতির প্রেস্টিজে গ্যামাক্সিন লাগলেও লাগতে পারে যদিও তাতে কাজের কাজ কিস্যু হবে না। 


    বিশেষত আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে কং-বাম (হ্যাঁ, বাম-কং নয়) জোট আরও বেশি করে হিন্দু ভোটকে কনসোলিডেট করবে। মুসলমান ভোট কিছু থাকবে তিনোতে, বাকিটা আব্বাস-কং-বাম পাওয়ায় বিজেপি কোনও কোনও বিধানসভায় পাঁচ থেকে সাতশো ভোটে জিতবে। 


    বামেরা মুখে যতই ফ্যাসিবাদ-দিমিত্রভ মার্কা লবেঞ্চুস পাবলিককে গেলাতে চাক না কেন, এখনও তাদের মূল শত্রু তিনো। তাই যেভাবেই হোক এই ভোটে তারা তিনোকে সরকার থেকে হটাতে মরিয়া। তাত্ত্বিক কথা আউড়ে ধনেপাতা দিয়ে তিমিমাছকে ঢাকা যাবে না।


    কং-ও চাইছে তিনোকে ভাঙতে যাতে সে দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হয়ে উঠতে পারে। ফলে বামেদের হাতে থাকবে পেনসিল। গোটা উত্তরবঙ্গের প্রায় ১০০টা সিটে এক অশোক ভটচাজ আর ভিক্টর ছাড়া তিন নম্বর বাম এমেলে হওয়ার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই।


    ফলে বিজেপি যদি না আসে তার কৃতিত্ব হবে তিনোর, আসলে তার দায়ভার চাপবে কং-বামের ওপর।


    ভোট হবে বিজেপি ভার্সাস তিনো। বাকিরা (মুর্শিদাবাদ-মালদহ-উত্তর দিনাজপুর ছাড়া) স্রেফ ধনেপাতার ক্যাশমেমো।

  • Ranjan Roy | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৪102819
  • জয়র্ষির সঙ্গে একমত  হয়ে দুটো কথা। 


    1 কোন কেন্দ্রে কে বিজেপির  হারানোর বেশি সম্ভাবনা রাখে তা আমরা না বুঝলেও স্থানীয় ভোটাররা ভালই বোঝে।   অর্থবল ,  বাহুবল নির্ণায়ক হলে দিল্লিতে আপ জিতল কী করে?


    2 বামফ্রন্টের আব্বাসবাবুর হাত ধরার করুণ চেষ্টার মেসেজ কী যাচ্ছে? নিজেরাই কংগ্রেসের হাত ধরার পরও সমস্ত সীটে যোগ্য প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে সন্দিহান?


    3 সেকেন্ড ইনিংস শেষ না হওয়া অব্দি ম্যাচের লড়াই চলে। এই যুক্তিতে প্রথমেই পূর্ণ শক্তিতে ঝাঁপিয়ে পড়ব না? ফ্যাশিস্ত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই আব্বাসের সাথে হাত মিলিয়ে? 


    অবশ্য আগে জনসংঘের সাথে হাত মিলিয়ে  সিপিএমের ফ্যাশিস্ত ইন্দিরাকে কুপোকাৎ করার সুরজিত--রণনীতি  সফল হয়়েছিল।   দলের সীট ও সংগঠন সবই   বেেড়েছিল।


    এই নীতির প্রতিবাদে সুন্দরাইয়া পদত্যাগ করলেই বা কি!

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৫102820
  • হ্যাজ নামানোর ব্যাপারে এলেবেলেবাবু, দেখছি, প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী - চলচিত্তচঞ্চরি-র ভাষায় যাকে বলে সেকেন্ড-টু-নন।


    এই জ্যোতিষ-ভিত্তিক হ্যাজটি মডেল হিসেবে শিরোধার্য করলুম। পরের দফায় এটিই ফলো করব। অনেকদিন ব্রজদার সাথে দেখাসাক্ষাৎ নেই, ভাগ্যিশ গুরু (সব-অর্থেই) ছিল।

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:২২102821
  • রঞ্জনবাবুর সাথে সহমত।


    আব্বাসের সাথে হাত মিলিয়ে বামেরা ভুল করছে - যে ভুল তৃণমূল করেছে ত্বহা সিদ্দিকির সাথে মিলে, সিদ্দিকুল্লাকে মন্ত্রী করে, ঠাকুরবাড়ির রাজনীতিকে মান্যতা দিয়ে (অথচ, সহি বামেরা এগুলোর মধ্যে তেমন দোষ দেখতে পান না, বা দোষ দেখলেও কিছু বলেন না!!)। 


    ঠিক এই রাজনীতিই বিজেপিকে সারজল দিয়েছে - এবং এই ভোটে ফল যা-ই হোক, বিজেপির নির্ধারিত এজেন্ডাকেই মান্যতা দিয়ে লড়াই হচ্ছে। এর চাইতে বড় ক্ষতি আর কিছুই হতে পারে না। কেননা, আল্টিমেটলি সবাই খেলতে নামছে বিজেপির খেলায় (বিপক্ষে হলেও) - আর সে খেলায় বিজেপির দক্ষতা প্রশ্নাতীত। 

  • নীলাঞ্জন হাজরা | 103.218.171.9 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৩৭102822
  • অর্থাৎ রাজ্যের শাসকও, সরাসরি ফ্যাসিস্ট না হলেও, কোনো অংশে গ্রহণযোগ্য বা কম পরিত্যাজ্য নয়।


    ফাসিবাদ বিষয়ে ধারণা কতো ভ্রান্ত হোলে এই বাক্যটা লেখা যেতে পারে ভাবছি। এটা একটা premise হোলে যুক্তি একেবারে অন্য মোড় নিয়ে নেয় যার সঙ্গে আমার গভীর বিরোধ আছে।

  • Ranjan Roy | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:৪৩102823
  • বিষাণবাবুর সঙ্গে একমত । শেষ প্যারাটি পড়ে মন বিষণ্ন হয়ে গেল। (pun unintended).। আজ বিজেপি এজেন্ডা ঠিক করছে, আমরা রিয়্যাক্ট করছি। আমাদের নিজস্ব এজেন্ডা কোথায়? এটাই আমাদের ট্র্যাজেডি.


    তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধেও আমরা সহযোগী মাত্র।  কিন্ত চার শ্রম আইনের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের আন্দোলন? শ্রমিক শ্রেণীর পার্টির ভূমিকা?

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.5.62 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০৩102825
  • একমত নই। বিজেপি বিরোধী দল গুলির আব্বাসের সঙ্গে কেন যে কোনো মুসলমান দের রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে হাত মেলানো ই জরুরী। কোন একটা দল কে সারা রাজ্যের মুসলমান কোনো দিন ই ভোট দেয় নি, এবারেও দেবে না। আদিবাসী , পাহাড়ি , নিম্নবর্গীয় , শিডিউল ভিত্তিক মান্নুষের সংগঠন, মতুয়া দের সবার সঙ্গে হাত মেলানো যাবে, মুসলমান সংগঠন এর সংগে হাত মেলানো কেনো যাবে না বোঝা গেল না। হিন্দু ভোটার দের একটা অংশ সকলে ভীষণ অপমানিত বোধ করলে কিছু করার নেই। দেশ টা সবার এটা বুঝতে হবে। বোঝা অভ্যেস করতে হবে, পাবলিজ স্পেস শেয়ার করার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সেই বোঝাটা একটা ইলেকশনে হারতেই পারে । বিজেপি র একার ন্যারেটিভে দেশ চলছে না, এখানেও চলবে না। চলতে না দেওয়ার চেষ্টা যে ধর্মনিরপেক্ষ , জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে মুক্তমনা লোক, যেরকম ভাবে পারে তার বিরোধিতা করবে ,  বিজেপি সবার সঙ্গে অ্যালায়েন্স গড়তে পারবে অন্যরা পারবে না কেন, ইল্লি আর কি। যে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে কোনো রাজনৈতিক দল অ্যালায়েন্স করতেই পারে। বিজেপি এন ডি e করতে পারবে, মুসলমান পিডিপির সঙ্গে সরকার চালাতে পারবে, রিপাবলিকান রা আফ্রিকান আমেরিকান হিস্পানিক সমর্থক দের টিভিতে লড়াতে পারবে , টোরি রা হুড পরে আধুনিক আর্বান হবার চেষ্টা করবে, আর প্রকৃত সর্বার্থে সাতরঙা গণতন্ত্রপ্রেমী আর অন্য রা কোন ফ্রন্ট করতে পারবে না :-)))))) কি মিত্তি মাইরি। টোটাল ছুইট। :-)))) 


    তৃণমূল এর সঙ্গে আর কারো অ্যালায়েন্স সম্ভব ই না, কারণ তৃণমূল ইন্টারেস্টেড না, তাদের ধারণা তারা নিজেরাই জিতবে। তো তাদের ভোট কমলে সবটা যাতে বিজেপি না পায়, তার জন্য সিপিএম মনে করেছে অলটারনেটিভ তারা দেবে, কংগ্রেসের সঙ্গে দেবে, তারা ভুল প্রমাণিত হয় কিনা পরে দেখা যাবে। অন্য বামেরা , সেকুলার লোকেরা সিপিএম কংগ্রেস বা তৃণমূল কে বেছে নেবে মিটে গেল। বিজেপির ২০১৯ এর ভোটার রা কেবল পাশের বাড়ির তৃণমূল দাদা বৌদির উপরে রাগ করে এবারো বিজেপিকেই ভোট দেবে, অন্য অলটারনেটিভ থাকা সত্তএও দেবে তাদের গোটা দেশ  টিভিতেই দেখার চোখ, পকেটের অবস্থ বিচার করার জাজমেন্ট সব ই জলাঞ্জলি যাবে , এসব ফাল্তু কথা। যেতেই পারে ধরে নিয়ে কেউ ভোটে লড়ে না। আজে বাজে বিতর্ক। 


    লিবেরাল রা কখনৈ এক জায়গায় আসবে না, সেটাই লিবেরালিজম। প্রশ্ন, সংশয় থাকবে। দার্শনিকতাও থাকবে, সেইটেই সুশিক্ষে। ফ্যাসিস্ট রা প্রশন্হীন আনুগত্য খুঁজছে, পেলে ভালো, সব রকমের বিজেপি বিরোধী রা সেই প্রসেসে সাধ্য মত বাধা দেওয়ার চেষ্টা  করছে করবে। পশ্চিমবঙ্গবাসীর শখ করে  মুর্খামি করার ইচ্ছে হয়েছে বলে যাঁরা বোঝাচ্ছেন, তাঁদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে , অথবা তাঁরা ভীতুর ডিম।  খুব স্বাভাবিক ভাবেই, এই ভোট অন্য কোথাও হলে, যত ধরণের মাইনরিটি আছেন, তাঁদের নিয়ে বিরোধী প্রগতিশীল দল কে চলতে হবে। সর্ব অর্থেই স্পার্টান বিশুদ্ধতাকে প্যাঁক দিয়ে হলদে করে দিতে হবে :-)))

  • এলেবেলে | 202.142.96.231 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০৪102826
  • হ্যাজ নয়, বাস্তব চিত্র। তাই তিনো থেকে কং, বাম থেকে আব্বাস সব্বাই বিজেপির স্ট্রংহোল্ডে খেলতে নেমেছে এবং ধেড়িয়ে একসা করছে। এটা যত হবে তত বিজেপির উইন-উইন সিচ্যুয়েশন। অবিশ্যি মার্কামারা সিপিএম-দের কথা আলাদা। চিরকালই। তাঁরা গুরুতে হপ্তায় হপ্তায় পোবোন্দো নামাতে থাকুন। এই থ্রেড সেভ করে রাখছি। নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা যাবে সবচেয়ে বড় হ্যাজমান কে।

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.5.62 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:০৮102827
  • **অন্য কোথাও হলেও


    ** সমাজে নানা লোক থাকবে , আর নানা অর্গানাইজেশন থাকবে না, হয় নাকি। কংগ্রেস শিক্ষা লাভ করেছে ৮০ নব্বই এর দশকে তাকে অনেক কে নিয়ে চলতে হবে, বিজেপি ও একই শিক্ষে লাভ করবে। আর রাজ্যের বড় দল গুলো কেও এই শিক্ষে ক্রমাগত পেতে হবে। ক্যাপিটালিজম সব সময়েই চেষ্টা করবে নেগোশিয়েশন এর জন্য কম সংখ্যক পোলিটিকাল পার্টনার পেতে, এটাই তাদের ঐতিহ্য, তাদের বাড়া ভাতে ছাই দেওয়া সব দলের সব লোকের ই কাজ হওয়া উচিত। 

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 49.37.5.62 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:২১102828
  • হ্যাঁ এলেবেলে শুধু নন, যে যা পারেন সেভ করে রাখুন, কোন চাপ নেই। চারিদিকে বিজেপির সৌন্দর্য্য দেখতে পাচ্ছেন বলে আমিও কেসি কে এবং এলেকে সেভ করে রাখলাম , ভোটের পরে তাদের পয়সায় হুইস্কি পেঁদানো হবে:-)))) সারা দেশে পর্যুদস্ত হচ্ছে একটা পার্টি, আর শুধু বাংলায় শুধু অভিমানী হিন্দু বাঙালি বিজেপি কে ভোট দেবে, কেন দেবে,  না, মমতা একদা হিজাব পড়েছিলেন বলে আর সিপিএম পার্টি সম্মেলনে পুজো আচ্চা করে না বলে আর বামুনের ছেলেরা কমিউনিস্ট হয়েছে বলে  আর কতগুলো গ্ল্যামার খোঁজা সেলিব্রিটি নৌকো বদলেছে বলে। মানে উপন্যাস রচনা টা মাইরি আর যাই হোক আপনাদের স্ট্রেঁংথ না। :-)))))

  • Chaitali Chattopadhyay | 183.83.146.65 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৩৩102829
  • জানি না, প্রয়োজনীয় পোস্ট,নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট, শুধু জানি বেশিরভাগ মানুষের মাথা এমন ঘেঁটে ঘ হয়ে আছে,এই লেখা মন দিয়ে পড়লে অনেক মরচে-ধরা কলকব্জা।সচল হতে বাধ্য!!!

  • Ranjan Roy | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:১২102831
  • বিতর্ক শেষ। বিজেপি যা করতে পারে তা বামেরা কেন করতে পারবে না? ইল্লি নাকি? লিবারেল আমাদের থেকে অন্যকিছু আশা করে কেন?


    কী বলছেন? আমাদের ডি এন এ বিজেপির থেকে আলাদা? তাই আলাদা এক্সপেক্টেশন?  বলছেন,  বিজেপির যুক্তিগুলোও এইরকম? ওরা পাকিস্তানের নকল করতে করতে ওদের মতই হয়ে যাচ্ছে। তোমরাও ওদের মত হয়ে যাচ্ছ.


    ফালতু কথা। যত্ত কনফিউজড  নেকুপুষু লিবারেল! 


    এইসব বলেই একসময় এই পাতায় গণশক্তিতে লিঙ্গবৃদ্ধির বিজ্ঞাপনের সমর্থন করেছিলে।


    গোলপোস্ট সরাচ্ছেন কেন? আপনারাই লড়াইকে দুর্বল করছেন। এবার ফুটুন। মাই পার্টি রাইট অর রং। আমাদের ফ্রন্ট এখন বাংলার ভরসা। দুমাস পরে মিলিয়ে নেবেন।

  • dc | 122.183.146.69 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:১০102834
  • আচ্ছা দেখুন এতো ঝগড়া করে লাভ নেই। দিমিত্রভ কাকে ভোট দিতে বলেছিলেন, সিপিএম, কং, না বিজেপি? সেই মতো ভোট দিলেই তো হয়! 

  • cd | 37.187.196.70 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:২০102836
  • এটা আবার একটা প্রশ্ন হল? যার নামের মধ্যেই মিত্র আছে,...

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:২৬102839
  • @dc আরে, আমিও তো সেটাই খুঁজছি। কে একটা বলল, দিমিত্রভ পষ্টাপষ্টি তৃণমূলিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। অমনি অন্য কে একটা বলল, না, তৃণমূল নয়, ওরকম অন্য একটা দলকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন, যারা নাকি একদম হুবহু তৃণমূল -  অভিষেক-শুভেন্দু-মুকুল সব আছে - একেবারে সেম টু সেম।


    এই শুনে আমি তো ব্যাপক ব্যোমকে গেলাম। তৃণমূলের মতো আরো দল সাহেবদের দেশেও ছিল!! চটকা কাটিয়ে সামলে উঠতে উঠতেই আর গাইড করার মতো কাউকে পেলাম না।


    তখন এসব আগডুম-বাগডুম কথা মনে এল...


    দিমিত্রভ-ই যদি বলে যান, তাইলে তো তর্কের কিছু থাকে না।

  • এলেবেলে | 202.142.96.113 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৪৪102842
  • খ, আমি মাইরি শ্যামাপোকাকে শুইয়ে দিলাম এখানে আর আপনি বলছেন আমি 'চারিদিকে বিজেপির সৌন্দর্য্য' দেখতে পাচ্ছি। আপনাদের নৈতিক অবনমনটাও।


    আমি বাস্তব চিত্রটা বলছি। এখানে বেকার তত্ত্বকথা নেই, আদর্শবাদের কপচানি নেই, পোবোন্দের নামে প্রোপাগান্ডার বদবু নেই। 


    হুইস্কি প্যাঁদাবেন তো? পয়সা দেব। আর আমার প্রেডিকশন মিললে আমাকে কী খাওয়াবেন? লবডঙ্কা))))))))))))))))))))))

  • Kallol Dasgupta | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৪৮102843
  • বিষাণের বক্তব্য নিয়ে আমার মতপার্থক্য আছে। বিষাণ এই নির্বাচনে ফ্যাসীবাদকে হারাতে তার একটা মত তুলে ধরেছে। সেটা নিয়ে তর্ক করা যেতে পারে, নাও পারে। আমার মতও আগে একটা লেখায় জানিয়েছি। সেই নিয়ে এখানে আবারও লেখার মানে হয় না। আমার সমস্যা লেখাটার শিরোনামে - জীবনানন্দ পড়িনি তবু...... এই শিরনামে রবীন্দ্রপরবর্তি বাংলা কবিতা নিয়ে লিখে দিলেন - সেরকম লাগছে।  প্রসঙ্গান্তরে -  শহীদদের মধ্যে তুলনার প্রশ্নই আসে না - কে বড় কে ছোট। শহীদের মৃত্যু সবসময়ের পাহাড়ের চেয়েও ভারী। মঈদুল আর রোজা লাক্সেমবার্গ দুজনেই শহীদ একজন বিজেপি নয় তৃণমূল সরকারের হাতে, অন্যজন নাৎসী নয় স্যোশাল ডেমোক্রেটিক সরকারের হাতে। 

  • পার্থপ্রতিম মন্ডল | 2405:201:800a:e030:d06a:ef57:7586:9666 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৫৬102844
  • বিজেপিকে দেশের প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত ক'রে ফ্যাসিবাদের  একমাত্র সমাধান হিসেবে বামপন্থী আদর্শের প্রচার সিপিএমের নেতা-কর্মীদের কাছে যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম তার ছিঁটেফোঁটাও তাদের কথাবার্তায় উঠে আসছে না। বাম আর বিজেপির রাজ্যে ভোটের প্রচারটা একইরকম শোনাচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

  • বিষাণ বসু | 2409:4060:21b:2e53:e733:ca6d:d606:6fc6 | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:৪৮102847
  • @এলেবেলে 


    বিজেপির সৌন্দর্য না হলেও বিজেপির পচা দুর্গন্ধ চারপাশেই দেখতে পাচ্ছি। আপনার আগের মন্তব্যের সাথে অন্তত একটা জায়গায় সহমত। গ্রামেগঞ্জে একদম দ্বিমুখী পোলারাইজেশন হয়ে গেছে। সে নিয়ে সংশয় নেই। প্রশ্নটা এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে - সঙ্কট যে আসন্ন, সে নিয়ে নয়। 


    আমার মত, রাজ্যের ভোটে শাসক দলের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটই নির্ধারক। বিজেপির বিপদ সত্ত্বেও, সেই হিসেব থাকবেই। তৃণমূল বিরোধী ভোট একত্রিত হয়ে যদি বিজেপির বাক্সে পড়ে, তাহলে বিজেপি হেসেখেলে জিতবে। শুধু এই হিসেব করলেও, বামেদের ভোট বাড়া জরুরী। আবার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী লড়াইয়ের জন্যেও বামেদের শক্তিশালী হওয়া জরুরী - এই নির্বাচনে ফল যা-ই হোক না কেন, বামেদের পক্ষে জনসমর্থন বাড়াটা দরকার।


    ভোটের পর আপনার কথা সত্যি হতেই পারে। আমি কোনো প্রেডিকশন দিই নি কিন্তু। আমি বলতে চেয়েছি, কী হলে ভালো হয় - কী হলে ভালো হতো - অন্তত আমার মতটুকু।


    @কল্লোলদা


    শিরোনাম আমার দেওয়া নয়। তবু, দায়িত্ব আমারই। লেখাটা প্রকাশের পরেই পড়ে দেখতে গিয়ে বুঝলাম, কথাটা এমন শোনাচ্ছে, যে, সত্তরের দশকের রক্তপাতকে গুণ্ডা-মস্তান-তোলাবাজের সাথে একই করে দেখা হয়েছে। এটা ভয়ানক বড় ভুল। সত্তরের রেফারেন্স টানতে হলে আরেকটু যত্নবান হয়ে কথা বলতে হতো। এটা আমার তরফে ভুল। বড় ভুল।


    কিন্তু, খানিকটা অবাক হয়েই দেখলাম, সেদিকটা কম মানুষই খেয়াল করলেন। অধিকাংশ কথাবার্তা তৃণমূলকে ভোট দেওয়াটা কতখানি জরুরী, সেদিকেই রয়ে গেল। বাম রাজনীতির (সিপিএম কিম্বা অতি বাম, উভয়ই) বক্তব্যও দক্ষিণপন্থী দলের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত হচ্ছে। 


    ভোট গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই। কিন্তু, ভবিষ্যতের দিশা হিসেবে দল-নির্বাচন বাদ দিয়ে আর কী ভাবা হচ্ছে, সেদিকের কথা উঠল কোথায়? বামেরাও তুলবে না!!


    @পার্থদা


    খুবই প্যাথেটিক পরিস্থিতি। এমনকি বাম রাজনীতির বয়ানও দক্ষিণপন্থী দলের পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিক্রিয়া দ্বারা নির্ধারিত হচ্ছে। একেই কি প্রতিক্রিয়াশীল বলে!!!  ঃ)

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:

No Vote to BJP, Vote for left, Naxals for Mamata, CPM for BJP, CPM Against TMC, Vote for TMC, Mamata Bannerjee, BJP CPM Alliance, CPM Congress Alliance, Naxal TMC Alliance
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন