এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • শিবনাথ শাস্ত্রী থেকে আবদুল করীম সাহিত্যবিশারদ: সমাজচেতনার গতিপথ

    gautam roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ১৫ জুন ২০২১ | ২২৪৫ বার পঠিত
  • উনিশ শতকের চারের দশকে জন্মগ্রহণ করা শিবনাথ শাস্ত্রী (১৮৪৭-১৯১৯), আর সেই শতকেরই প্রায় শেষ প্রান্তে সাতের দশকে জন্ম নেওয়া আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের (১৮৭১- ১৯৫৩) মৃত্যু দিনটি কিন্তু ঘটনাচক্রে অভিন্ন, ৩০শে সেপ্টেম্বর। শিবনাথ শাস্ত্রীর জীবনাবসান হয় ১৯১৯ সালে, অর্থাৎ, ঠিক একশত বছর আগে। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জীবনাবসান তার বেশ কিছু পরে, ১৯৫৩ সালে।

    শিবনাথ শাস্ত্রীর জীবনাবসানের সময়কালে উনিশ শতকের নবচেতনার ধারাপ্রকৃতি জাতীয় আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভারতবর্ষ তথা বাংলা ও বাঙালির জীবনে একটি নতুন স্রোতের উন্মেষের শুভ সূচনা করেছিল। আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জীবনাবসান যখন হয়, তখন জাতীয় আন্দোলনের মূল লক্ষ্য, ব্রিটিশ বিতরণ, সেটি সম্ভবপর হয়েছে। ক্ষমতা হস্তান্তরের জেরে ভারতবর্ষ তখন দ্বিখন্ডিত।

    শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর গোটা জীবন ধরে সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে স্ত্রী শিক্ষা বিস্তার, সামাজিক কুসংস্কার ইত্যাদি দূর করবার লক্ষ্যে যে লড়াই করেছিলেন, সেই লড়াইটি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জীবনাবসানের সময়কালে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এগিয়ে গেছে। বিশেষ করে শিবনাথ শাস্ত্রী যে ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, সেই ব্রাহ্মসমাজ ও স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারের অঙ্গনে, মুসলিম জনজীবনের সংস্কার এবং মুসলিম নারীর ভিতরে শিক্ষা বিস্তারের জন্য সেভাবে চিন্তার দিগন্তকে প্রসারিত কিন্তু করে নি।

    আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের জীবনাবসানের কালে মুসলিম মানসের দিগন্ত কিন্তু অনেকখানি উন্মোচিত হয়েছিল। সমাজ সংস্কারক রামতনু লাহিড়ী-কে আমরা শিবনাথের অনুপম সৃষ্টি 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গ সমাজে'-এর ভেতর দিয়ে অনেক নিবিড় করে পাই। বস্তুত একশো বছরেরও বেশি সময় আগে প্রকাশিত গ্রন্থ খানিকে (প্রকাশকালঃ ১৯০৪ সালের ২৫ শে জানুয়ারি) উনিশ শতক এবং আংশিক ভাবে তার আগের শতকেরও বাংলা ও বাঙালির জীবনযাত্রার ও আর্থ-সামাজিক বিবরণের একটি দলিল হিসেবে উপস্থাপিত করতে পারি।
    অষ্টাদশ শতকের সামাজিক ক্ষয়িষ্ণুতার ধারায় আধুনিক শিক্ষা বিস্তারে উনিশ শতকের সামাজিক প্রেক্ষিত কিভাবে একটি নব দিগন্তের দিকে উন্মোচিত হচ্ছে - শিবনাথ শাস্ত্রী তার সার্বিক বিচার বিশ্লেষণ করেছেন। বস্তুত উনিশ শতকের সামাজিক ইতিহাসের গতি প্রকৃতির সঙ্গে রামতনু লাহিড়ীর জীবন ও মননশীলতা যে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গিয়েছিল, শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর অসামান্য সামাজিক দলিলের ভেতর দিয়ে তা উপস্থাপিত করেছেন।

    রামতনু লাহিড়ী আর উনিশ শতকের নব চেতনার উন্মেষকে কার্যত একই বন্ধনীর ভিতরে রেখে অনুধাবন করার চেষ্টা করেছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী। তবে এই অনুধাবনে বাঙালি বলতে কিন্তু সবথেকে বেশি বিবেচনায় এসেছিল 'হিন্দু বাঙালি'র কথা। 'মুসলমান বাঙালি'-কে ঘিরে চিন্তা চেতনা ভাবনা উনিশ শতকের নবজাগরণের প্রতিনিধিদের মধ্যে যেমন অনুপস্থিত ছিল, শিবনাথ শাস্ত্রীর 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' ঘিরে সেইসময়ের বাঙালি সমাজের চিত্র নির্মাণের প্রেক্ষিতেও তার অন্যথা হয় নি।

    উনিশ শতকের নবজাগরণের প্রাণকেন্দ্রের সংলগ্ন অঞ্চলে ভূমিষ্ঠ হওয়ার কাল থেকে শিবনাথ শাস্ত্রী কার্যত অনুভব করেছিলেন আধুনিকতার স্পর্শ। কিন্তু আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তাঁর প্রথম জীবনে কার্যত পানই নি সেই আধুনিকতার পরশ। চট্টগ্রামের এক নিম্নবিত্ত পরিবারে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ প্রবল সংগ্রামের ভেতর দিয়ে তাঁর প্রথম জীবন অতিবাহিত করেছিলেন কেরানীর চাকরী করে। পরিবারের মানুষজনদের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা এই ভাবেই তিনি করেছিলেন।

    সেই রকম সামাজিক অবস্থান থেকে নিজেকে বাংলার সমাজ সংস্কৃতি জগতের একজন কিংবদন্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা - এই জীবন সংগ্রামের কাহিনী এবং অবদান যদি আমরা আমাদের মননের প্রতিটি স্তরে অনুরণিত না করি তাহলে বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতি তে উনিশ শতকের নবচেতনার গতিপ্রকৃতি, সর্বোপরি ভারতবর্ষের সমন্বয়ী চিন্তাপ্রসূত বহুত্ববাদী সংস্কৃতির ধারা উপধারা সম্পর্কে আমরা কার্যত অবিচারই করব।

    শিবনাথ শাস্ত্রীর জন্ম আজকের দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাংড়িপোতা নামক গ্রামে তার মাতুলালয়ে। এই গ্রামটি এখন সুভাষগ্রাম নামে পরিচিত। শিবনাথ শাস্ত্রীর পৈতৃক বাড়ি ছিল মজিলপুরে। শিবনাথের পিতা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ ছিলেন উনিশ শতকের নবজাগরণের অন্যতম প্রতিভূ সংবাদপত্র 'সোমপ্রকাশ' এর সম্পাদক। একটা সামাজিক, পারিবারিক বৈদগ্ধের ভেতর দিয়ে কিন্তু শিবনাথ শাস্ত্রীর মনোলোক খুব শৈশব থেকেই বিকশিত হতে শুরু করেছিল।

    এই সুযোগটি কিন্তু আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের এর জীবনে আসেনি। অবিভক্ত বাংলার চট্টগ্রামের একটি প্রাচীন জনপদ পটিয়া সুচক্রদন্ডী গ্রামে সাহিত্যবিশারদের জন্ম। অনেকেরই অনুমান তিনিই প্রথম বাঙালি মুসলমান, যিনি দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে সংস্কৃত নিয়ে এন্ট্রান্স পাস করেছিলেন।

    প্রথাগত শিক্ষার খুব বেশি সুযোগ-সুবিধা তিনি পান নি। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার বাংলা গীতিকবিতার প্রথম যুগের সাধক নবীনচন্দ্র সেনের ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সাহিত্যবিশারদের নিজের গ্রাম থেকে 'জ্যোতি' নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হত। সেটি প্রকাশক ছিলেন কালিশঙ্কর চক্রবর্তী। সেই পত্রিকায় সাহিত্যবিশারদ পুঁথি সংগ্রহের জন্য একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন।

    এই বিজ্ঞাপন প্রকাশের জেরে তাঁর এবং চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, কবি নবীন সেন চাকরি যাওয়ার উপক্রম পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার করেছিল। প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন পুঁথিতে বাংলার সামাজিক জীবনের যে বারোমাস্যা গ্রথিত আছে, তাকে সংগ্রহ করে, বাংলার সামাজিক ইতিহাসের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র অঙ্কনে যে অসামান্য অবদান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ রেখে গেছেন, সেটিকে কয়েকটি শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

    শিবনাথ শাস্ত্রীর সাহিত্যকীর্তির ভেতর দিয়ে বাংলার সমাজ জীবনের চিত্র অঙ্কনের পাশাপাশি উনিশ শতকের সামাজিক আন্দোলনের অন্যতম দুটি স্তম্ভ ব্রাহ্মসমাজ ও শ্রীরামকৃষ্ণের পরিষদের ভেতরে থেকে সামাজিক চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার অভিজ্ঞান মুখী ভাবনার প্রসারণের যে উদ্যোগ, সেই উদ্যোগের ভেতর দিয়ে রামমোহন, বিদ্যাসাগর বাংলার নারী সমাজের উপর চাপিয়ে দেওয়া নানান ধরনের সামাজিক ব্যাধি দূর করবার জন্য যে নিরন্তর সংগ্রাম করেছিলেন, সেই সংগ্রামকে উনিশ শতক থেকে অতিক্রম করে বিশ শতকের এনে উপনীত করে, সেই লড়াইয়ে একটি সুসংবদ্ধ রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে শিবনাথ শাস্ত্রীর ঐতিহাসিক অবদান -- কয়েকটি শব্দের ভেতর দিয়ে উল্লেখ করলে মনে হয় ইতিহাসের প্রতি সঠিক বিচার বিশ্লেষণ আমরা করবো না।

    ব্রাহ্ম যুবকদের নিয়ে 'ঘন নিবিষ্ট' নামে ১৮৭৭ সালে একটি সংগঠন তৈরি করে পৌত্তলিকতা ও জাতিভেদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন শিবনাথ। তার পাশাপাশি নারী-পুরুষের সমানাধিকার ও সার্বজনীন শিক্ষার পক্ষে ও আন্দোলন শিবনাথ শাস্ত্রী করেছিলেন ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে।

    উনিশ শতকের সামাজিক ব্যপ্তিকে অতিক্রম করে বিশ শতকের সার্বিক প্রেক্ষিত কে অনেকখানি প্রলম্বিত করেছিল সিটি স্কুল এবং স্টুডেন্ট সোসাইটি নামে যে একটি গণতান্ত্রিক সমিতি ১৮৭৯ সালে শিবনাথ শাস্ত্রী প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে ১৮৯৪ সালে নীতি বিদ্যালয় স্থাপন করেন -- সে সবের ভিতর দিয়ে।

    বাংলার সমাজ সংস্কৃতির ইতিহাসে এই সামাজিক আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতের প্রথম কিশোর মাসিক পত্রিকা 'সখা' ১৮৮৩ সালে তিনি প্রথম প্রকাশ করেছিলেন। এই কর্মকান্ডের ভেতরে সমন্বয়ী ভারতের চিন্তার একটা ধারা প্রকাশিত হলেও সেই কর্ম কান্ডের গতিপথ কিন্তু ব্রাহ্ম সমাজের অন্তর্ভুক্ত মানুষজন এবং বাঙালি হিন্দুদের মধ্যেই মূলত সীমাবদ্ধ ছিল।

    বস্তুত উনিশ শতকের নবজাগরণের চিন্তা-চেতনায় মুসলিম মানস যেভাবে অনুপস্থিত ছিলেন, শিবনাথের চেতনার পরিধিতে সেই অনুপস্থিতিই আমরা লক্ষ্য করি।

    অপরপক্ষে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ প্রাথমিকভাবে মুসলিম জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পত্রপত্রিকা, পুথি আবিষ্কারের ভেতর দিয়ে যে কার্যক্রম শুরু করেছিলেন, সেই কার্যক্রম কেবলমাত্র মুসলিম মানসের সীমিত পরিসরে শেষপর্যন্ত আবদ্ধ থাকে নি। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে, ভাষাভিত্তিক বাঙ্গালী ভিত্তিক সংস্কৃতি ভিত্তিক অখণ্ড বাঙালি জাতীয়তাবাদের চিন্তাচেতনার প্রসারে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের চিন্তা এবং বিচার-বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে বহুত্ববাদী সংস্কৃতির প্রতি এক অকৃত্রিম ভালোবাসা ফুটে উঠেছে।

    ৬৫ বছর ধরে যে নিরলস পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে প্রাচীন বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতি অন্বেষণে পুথির খোঁজে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন, আজকের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ঘনায়মান অন্ধকার আবর্তে তার গুরুত্ব অপরিসীম। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সাহায্যে 'গৌরব বিজয়', ' জ্ঞানসাগর' , 'সারদামঙ্গল', 'মৃগবলুব্ধ', 'গৌরাঙ্গ সন্ন্যাস' ইত্যাদি কয়েকটি গ্রন্থ সম্পাদনা ও টিকা নির্মাণের ভেতর দিয়ে হিন্দু মুসলমানের মিলিত সংস্কৃতির সমন্বয়ে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশের যে রেখাচিত্র তিনি অঙ্কন করে গেছেন, বাংলার সমাজ চিত্রের ইতিহাসে তার গুরুত্ব অপরিসীম।

    তাঁর মৃত্যুর পর মনীষী আবুল ফজল লিখেছিলেন:

    তিনি পেশাদার সাহিত্যিক ছিলেন না। সাহিত্য সাধনায় তিনি কোনদিন অর্থোপার্জনের উপায় হিসেবে ব্যবহার করেননি। তিনি ছিলেন খাঁটি সাহিত্য সাধক। সাহিত্যের যেখানে যা কিছু উপকরণ দেখেছেন, পেয়েছেন - তাই সংগ্রহ করেছেন। প্রাণপন যত্নে আগলে রেখেছেন যক্ষের ধনের মতো। নূতন পুরাতন যা কিছু সাহিত্য সম্পদ তাঁর হাতে পড়েছে, তাই তিনি সযত্নে সংগ্রহ করে রেখেছেন। কিছুরই অপচয় হতে দেন নি।

    একথা বোধ করি জোর করে বলা যায়, তাঁর সংগৃহীত গ্রন্থাবলীর সাহায্য ছাড়া বাংলা সাহিত্যের কোনো পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচিত হতে পারে না।

    প্রথাগত শিক্ষার পরিমণ্ডলের সেভাবে প্রবেশের সুযোগ না পেয়েও, আধুনিক ধ্যান ধারণার বিভিন্ন আঙ্গিকের সঙ্গে নিজেকে সেভাবে সম্পৃক্ত করবার সুযোগ না পেয়েও সমাজ সংস্করণে সংস্কারের যে উপকরণঃ গোটা জীবন ধরে নিরলসভাবে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ সংগ্রহ করে গেছেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় তা নিয়ে এপার বাংলা সে অর্থে কোনো আলাপ-আলোচনায় হয়না।

    শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর প্রথম যৌবনে সমসাময়িক কালের আধুনিক চিন্তা ভাবনার যে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, সেই ব্রাহ্ম ধর্মের প্রভাবে বিশেষভাবে প্রভাবিত ছিলেন।

    ব্রাহ্ম ধর্মের প্রতি শিবনাথ যখন ঝুঁকছেন, তা দেখে তাঁর পিতা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ তাঁকে তিরস্কার করে যে কথাগুলো বলেছিলেন, সেই কথার ভিতরে হিন্দু পুনরুত্থান বাদে বিশ্বাসী একাংশের মানুষদের ভেতরে মুসলমান সমাজ সম্পর্কে একটি উন্নাসিকতার যে ধারণা ছিল, সেই ধারণার ছবি পাওয়া যায়।

    এই চিত্র শিবনাথ তাঁর 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' গ্রন্থে নিজেই খোদাই করেছিলেন। ব্রাহ্ম ধর্মের প্রতি অনুরাগ দেখিয়ে উপনিষদ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মধর্মের স্বপক্ষে পিতার সামনে যুক্তি শিবনাথ উপস্থাপিত করলেও পবিত্র ইসলাম ধর্ম সম্বন্ধে তাঁর পিতা যে উন্নাসিক শব্দাবলী উচ্চারণ করলেন, তা নিয়ে পিতার সঙ্গে কোনো রকম তর্কবিতর্কে শিবনাথ যে গিয়েছেন - তার কোন প্রমাণ কিন্তু তিনি 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' গ্রন্থে রেখে যান নি।

    উনিশ শতকের নবজাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায় তাঁর চিন্তা ভাবনার জগতকে প্রসারিত করবার লক্ষ্যে মধ্যকালীন ভারতের সমন্বয়ী চিন্তা-চেতনার প্রতিভূ ইসলামীয় ভাবধারার অংঙ্গীভূত 'মুতাজিলা সম্প্রদায়ে'র যে প্রভাব আত্মস্থ করেছিলেন, উনিশ শতকের নবজাগরণের প্রতিরোধের ভেতরে এই বহুত্ববাদী চিন্তা-চেতনার সমার্থক ভাবনা কিন্তু একমাত্র দেখতে পাওয়া যায় রামমোহনের ভিতরে।

    পরবর্তীতে আধ্যাত্বিকতার ভেতর দিয়েই নিজের জীবনকে প্রতি বাহির অতিবাহিত করা শ্রীরামকৃষ্ণের ভেতরে এই সমন্বয়ী চেতনা সব সময়েই প্রকট থেকেছে।রবীন্দ্রনাথ এই চেতনার সার্থক ধারক বাহক ছিলেন।

    অপরপক্ষে বহু প্রতিবন্ধকতা কে অতিক্রম করে সেই সময়ে বাংলার মুসলমান সমাজের ভেতরে যে ধীরে ধীরে আধুনিকতার চিন্তা চেতনার উন্মেষ ঘটতে শুরু করে, সেই উন্মেষের ভেতরে মুসলিম অস্মিতা থাকলেও সমন্বয়ী চিন্তাচেতনার প্রতি বিদ্বেষ বা অপর ধর্মের প্রতি অসহিষ্ণুতার চিত্র কিন্তু কখনোই সেভাবে প্রকট হয়ে ওঠে নি।

    আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ তাঁর সাধনা এবং গবেষণার ভেতর দিয়ে বাংলা সাহিত্যের আদি কবি হিসেবে জন্মসূত্রে মুসলমান মরদান কে যেমন তুলে এনেছেন, তেমনি তুলে এনেছেন মাগন ঠাকুর কেও।

    বাংলা ভাষাকে প্রথম শালীনতা প্রদানের ক্ষেত্রে কবি আলাওয়ালের ভূমিকা কে প্রথম জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠা করবার ক্ষেত্রে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন তার জন্য বাঙালির তাঁর প্রতি ঋণের শেষ নেই।

    বাংলা সাহিত্যের সৃষ্টি পুষ্টি এবং বৈচিত্র সাধনার মূল হিন্দু মুসলমানের যৌথ প্রয়াসের কথা সম্ভবত আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদই প্রথম সোচ্চার ভাবে উচ্চারণ করেছিলেন। স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেছিলেন;

    ঐতিহ্যের প্রতি অনুরাগই সংস্কৃতি সাধনার আসল সোপান।

    আজ যখন গোটা ভারত বর্ষ তথা ভারতীয় উপমহাদেশ বহুত্ববাদী সংস্কৃতির চর্চার ক্ষেত্রে একটা বড় রকমের প্রতিবন্ধকতার সামনে এসে উপস্থিত হয়েছে, তখন খুব বেশি করে আমাদের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে উনিশ শতকের সমন্বয়ী চিন্তা-চেতনার চর্চা যেসব মানুষ জনেরা করেছিলেন, মধ্যকালীন ভারতের হিন্দু মুসলমানের যৌথ সাধনার ধারাকে যাঁরা বিশ শতকের আধুনিকতার জারকে জাড়িত করে আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার প্রথম প্রয়াস নিয়েছিলেন, সেই সব মানুষদের জীবন, যাপন, চিত্র কর্মপদ্ধতি, অবদান ও সাহিত্য সৃষ্টির সম্যক আলোচনা।
    এককেন্দ্রিক সংস্কৃতির নাম করে ভারতবর্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মৌলবাদ, অপরপক্ষে পাকিস্তান বা বাংলাদেশে সেখানকার সংখ্যাগুরু মুসলিম মৌলবাদ, ভারতীয় উপমহাদেশের হাজার হাজার বছরের হিন্দু মুসলমানের যৌথ সাধনার ধারাকে মুছে দিয়ে, একটি সাম্প্রদায়িক, মানবতাবিরোধী, আত্মঘাতী সংস্কৃতির বীজ পোঁতার চেষ্টা করছে, তাকে যেমন রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে, তাকে তেমনি সামাজিকভাবেও আমাদের প্রতিহত করতে হবে।

    সাধারণ মানুষের মনে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প প্রবাহিত করবার লক্ষ্যে সমস্ত রকমের মৌলবাদী শক্তির প্রবণতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান উপকরণ হলো বহুত্ববাদী সংস্কৃতির সম্যক চর্চা ও বিকাশ। শিবনাথ শাস্ত্রীর মৃত্যু শতবর্ষের সময়ে উপনীত হয়ে আমাদের স্মরণ করতে হবে কুসংস্কার মুক্ত, আধুনিক ধারণার বিকাশে, বিশেষ করে স্ত্রী শিক্ষার বিস্তারে তাঁর ঐতিহাসিক অবদানের কথা।

    ঐতিহ্যের মূল থেকে শতফুল বিকশিত করবার যে প্রয়াস গোটা উনিশ শতক জুড়ে শিবনাথ শাস্ত্রী বা তাঁর সমসাময়িক মানুষজনের করে গেছেন, সেই প্রয়াসেই সার্থক উত্তরসূরী কিন্তু হলেন উনিশ শতকের শেষপ্রান্তে জন্মগ্রহণ করা আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ।

    উনিশ শতকের শেষের অধ্যায় থেকে শুরু করে বিশ শতকের একটা বড় সময় জুড়ে বাংলা তথা বাঙালির হৃদয়াকাশে সংস্কৃতির শেকড় অন্বেষণে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ যে মেধা, শ্রম ,মননশীলতা, অসাম্প্রদায়িক -- সমন্বয়বাদী চেতনাকে গ্রোথিত করে গেছেন, তার সম্যক চর্চার ভেতর দিয়েই আমরা প্রতিহত করতে পারি যাবতীয় সামাজিক অবক্ষয়কে।

    হিন্দু-মুসলিম উভয় ধর্মের নাম করে যে শক্তি রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী ফ্যাসিবাদী চিন্তাচেতনার প্রসার ঘটিয়ে চলেছে সেই অশুভ শক্তিকে কেবলমাত্র রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভেতর দিয়েই ধ্বংস করা কতোখানি সম্ভব তা আলোচনা সাপেক্ষ।

    বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার এই প্রবল প্রলয় রোখা সম্ভব নয় সমাজের সর্বস্তরের মানুষদের আন্তরিক উদ্যোগ ছাড়া। এই ভাবনা কে প্রসারিত করবার জন্য দরকার একটা ব্যাপক সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলন। সেই আন্দোলনকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে উনিশ- বিশ শতকের যুগপুরুষ রামমোহন, বিদ্যাসাগর, শিবনাথ শাস্ত্রী, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বেগম রোকেয়া, কাজী আবদুল ওদুদ আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, আবুল ফজল, অন্নদাশঙ্কর রায়, সুফিয়া কামাল, রেছাউল করীম প্রমূখ মানুষজন, এঁরা যে অসামান্য অবদান রেখে গেছেন, সেই অবদানের সম্যক চর্চা আজ একান্তভাবে জরুরি হয়ে পড়েছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১৫ জুন ২০২১ | ২২৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • এলেবেলে | 202.142.71.198 | ১৫ জুন ২০২১ ১৭:৪৭494967
  • আপনি কেমন হরিদাস পাল যিনি লেখাটার ছত্রে ছত্রে এহেন ছড়িয়ে ছত্তিরিশ করে রেখেছেন? 


    শিবনাথ শাস্ত্রীকে নিয়ে লিখছেন অথচ তাঁর বড়মামা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণকে অবলীলায় বাবা বানিয়ে দিচ্ছেন! তাঁর পিতা হরানন্দ ভট্টাচার্য। শিবনাথ কোন ব্রাহ্মসমাজের প্রতিনিধি? ওটা কি গোল গোল সমসত্ত্ব জাতীয় কিছু নাকি? প্রথমে কেশবপন্থী, পরে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ। তাহলে "সমসাময়িক কালের আধুনিক চিন্তা ভাবনার যে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, সেই ব্রাহ্ম ধর্মের প্রভাবে" শব্দগুলোর কী অর্থ?


    শিবনাথ 'আনন্দবাদী দল' গঠন করেছিলেন কিন্তু "'ঘন নিবিষ্ট' নামে ১৮৭৭ সালে একটি সংগঠন" তিনি যে করেছিলেন তার রেফারেন্স কী? তাঁর 'সমদর্শী' পত্রিকার সম্পাদনার প্রসঙ্গটিই বা অনুল্লিখিত কেন?


    আব্দুল করিমের বানানেই বা এহেন ভিন্নতা কেন?


    আর এগুলো একটু ব্যাখ্যা করুন দিকি ---


    ১. উনিশ শতকের নব চেতনার উন্মেষ


    ২. উনিশ শতকের  নবজাগরণের অগ্রদূত রাজা রামমোহন রায় তাঁর চিন্তা ভাবনার জগতকে প্রসারিত করবার লক্ষ্যে মধ্যকালীন ভারতের সমন্বয়ী চিন্তা-চেতনার  প্রতিভূ ইসলামীয় ভাবধারার অংঙ্গীভূত 'মুতাজিলা সম্প্রদায়ে' র যে প্রভাব আত্মস্থ করেছিলেন,  উনিশ শতকের  নবজাগরণের প্রতিরোধের ভেতরে এই বহুত্ববাদী চিন্তা-চেতনার সমার্থক ভাবনা কিন্তু একমাত্র দেখতে পাওয়া যায় রামমোহনের ভিতরে।


    ৩. পরবর্তীতে  আধ্যাত্বিকতার ভেতর দিয়েই নিজের জীবনকে প্রতি বাহির অতিবাহিত করা শ্রীরামকৃষ্ণের ভেতরে এই সমন্বয়ী চেতনা সব সময়েই প্রকট থেকেছে। 

  • Ranjan Roy | ১৭ জুন ২০২১ ০০:১৪494992
  • "উনিশ শতকের সামাজিক আন্দোলনের অন্যতম দুটি স্তম্ভ ব্রাহ্মসমাজ ও শ্রীরামকৃষ্ণের পরিষদের ভেতরে থেকে সামাজিক চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার অভিজ্ঞান মুখী ভাবনার প্রসারণের যে উদ্যোগ,--"


    রামকৃষ্ণদেবের উনিশ শতকের বঙ্গসমাজে বিশেষ গুরুত্ব অনস্বীকার্য, কিন্তু "সামাজিক চিন্তা-চেতনায় আধুনিকতার অভিজ্ঞান মুখী ভাবনা" ও রামকৃষ্ণদেবকে কেমন করে মেলাচ্ছেন বুঝতে পারছি না। রামকৃষ্ণদেবের জীবনচর্যা ও শিক্ষায় আধুনিকতা? প্লীজ, একটু ভেঙে বলুন কী বলছেন।

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন