এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • পুস্তক পর্যালোচনা

    Krishna Malik (Pal) লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৬ মে ২০২২ | ৭৫৭ বার পঠিত
  • রক্ত আর অশ্রুস্রাবের ভেতর কবিতার কায়ায় যিনি প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন‌‌ ‌।।
    যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা

    এ এমন এক বই যার আলোচনা করতে গেলে আগে তাকে হজমিয়ে গুলি বানিয়ে ফেলতে হবে। তারপর দরকার মতো চুষে খুঁটে তার হকিকতি রীত-প্রকরণ। তবে কিনা একজন কবির মনোজগতে ঢুকে পড়া অত সহজ হয় না। কোনো শব্দ তিনি কেন ব্যবহার করছেন, বাক্যের কোন অংশে ব্যবহার করছেন - কবিতায় যা বলছেন তার হাড়মজ্জা পাঠকের পক্ষে পুরোপুরি জানা যে সম্ভব নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না সম্ভবত। উদাহরণ দিই একটা। ধরুন রবীন্দ্রনাথের কোনো একটি কবিতা। বিশারদেরা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে কবির জীবন দর্শন, সমাজ চিন্তা ইত্যাদির জাঁকে বসিয়ে বুঝিয়ে দিলেন কবি কবিতাটিতে কী বলেছেন। কিন্তু তাই বলে কখনই তো আর সেটা শেষ কথা নয়? তিনি কী ভেবে কী লিখেছেন কেউ পুরোটা বলতে পারেন না। তা যদি হতো তবে সমালোচক ও বিশেষজ্ঞ থাকতেন কবির উপরে, তাঁরাই তবে হতেন শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা। এতো আর এমন নয়, পরতে পরতে খোসা খুলে থোড়ের শাঁসটুকু বের করে ফেললেন, তারপর কপালের ঘাম মুছে ঝেড়ে ফেলে হাত ধুয়ে ফেললেন। তারপর তার ঘন্ট রান্না এবং খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা। উঁহু! আমাদের ভুল হচ্ছিল, মশায়! মহৎ কবিতাকে (আমি মহৎ শব্দটা সচেতনভাবেই ব্যবহার করলাম) কখনই ছালছাড়ানো মুরগী করতে পারবেন না।

    আমরা সাধারণ পাঠকেরা কবিতার উপর উপর একটা মানে বুঝলে খুশি হই একথা খুব সত্যি বটে! নিজেকে বেশ বোদ্ধা বোদ্ধা মনে হয়। আবার কোনো একটা জায়গা ধরতে না পারলে বলি, এই জায়গার লেখাটা ঠিক হয় নি। “অর্থটা ঠিক বুঝে লেখে নি” এমন কথা কত কবিতাবোদ্ধাকে বলতে শুনেছি। আরে! কবিতাটা লিখেছেন কে? তুমি বুঝতে পারো নি সেটা তোমার অক্ষমতা।তার দায় কবির উপর খবরদার চাপাবেন! যিনি লিখছেন, তিনি সেটাই বলতে চাইছেন। ফরাসী কবি রেঁবো তাঁর মাকে যেমন বলেছিলেন, এর সেটাই মানে, যা এতে লেখা আছে। কারণ তাঁর মা তাঁর কবিতা বুঝতে না পেরে রেগে গিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, এসবের মানে কী? তখন তিনি ততোধিক ক্রুদ্ধ হয়ে ও-ই উত্তর দিয়েছিলেন।

    “খোয়াহিশের ধূন” নামক বইটির কমলা আর সাত্ত্বিক সাদা রঙের সঙ্গে যাপন করেছি প্রতিটি রাত, তারপর বালিশের পাশে। আর চোখ মুছেছি কুড়চি ও কুসুমের গন্ধবর্ণ অক্ষর দিয়ে। তারপর দিনের সময়টুকুও গড়িয়েছে এই বইএর সঙ্গে সংগোপনে।সাবধানেও।তার যথেষ্ট কারণ আছে। যেহেতু আমিও কবিতার মতো দু-চার লাইনের একটুআধটু কসরতে আছি। না হলে ও বই কখন অজগরের মতো নিশ্চিহ্ন করে গিলে মুখ মুছে মুখে মুখশুদ্ধি পুরে দেবে তার ঠিক আছে নাকি? আগুনে হাত দিচ্ছি, হাত পোড়ার সমূহ সম্ভাবনা। আমার দু’আনা চারআনার কবিতা শেষে তার জাদুকরী মোহে পড়ে বিগড়ে যাক আরকি! শুনেছি অজগরের চোখের দিকে তাকালে মানুষ সম্মোহিত হয়ে পড়ে, আর তার গ্রাসে চলে যায়। সে বিষয়ে মটকামারা ঘুমের ভান বজায় ছিল প্রথমাবধি। তাই অজগরের করাল গ্রাসে পড়ি নি, পুড়িনি এক বিন্দুও। সেই আগুন সঙ্গে নিয়ে ফিরেছি পথে প্রান্তরে, গিরি কান্তারেও! সত্যি, আক্ষরিকভাবেই! বইটা দুমাসের মধ্যে একদিনও কাছছড়া হয় নি।

    যাইহোক এত ঘ্যানরঘ্যানর করার দরকার নেই। এই বইএর পেপারব্যাকের বিবলিও, না কী লিও জানি না, তার দু-লাইনে আমার তিসরি নজর সর্বদা গোপন অনুসরণ করেছে। – “যেতেও একা, আসতেও একা॥ এতো শুধু পথের দেখা”। হুঁ! দর্শন একখানা আছে বটে! তবে আমার আবার আসলের থেকে সুদের লোভ।তাই বলে কিন্তু মহাজনী কারবার করি না। “মহাজনে”র সঙ্গে কাব্যপথে দু-চার কদম ফেলার সৌভাগ্য পেলে আমি লুফে নেবার ধোনি।

    নিরাসক্ত দর্শনের পরত ছাড়িয়ে লালন-লালন আর্তি আমাকে যেন গেঁথে ফেলে এই বইএর মুখবন্ধ হয়ে।দু-মলাটের ভেতেরের অনেক কবিতাই ওই আর্তির সংক্রমনে গুঙিয়ে ওঠে। মধ্যরাতে – তার ছিঁড়ে গেছে কবে, একদিন কোন হাহারবে --- গাইতে গাইতে যখন রক্ত ঝরতে থাকে দেবব্রত বিশ্বাসের গলা থেকে এই কবিও যেন বন্ধ চোখে আকাশমুখী, আর চোখের গঙ্গোত্রী থেকে গড়িয়ে আসা রক্ত ও অশ্রুস্রাবের ভেতর কবিতার কায়ায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা করছেন – অসৈ প্রাণা প্রতিষ্ঠন্তু অসৈ প্রাণাঃ ক্ষরণ্ত্তু চ অসৈ দেবত্ব সংখ্যায়ৈ স্বাহা ---। আমি মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের বলিষ্ঠ উচ্চারণের ভেতর নিবেদনে ব্যথাকাতরতা টের পাই।

    এ সময়ের হাতে গোনা কয়েকজন কবি ছাড়া আর কেউ তাঁদের কবিতায় আমাকে এতটা জাড়িত করতে পারেন নি। কবিতাগুলির পাঠ নিতে হয়েছে অতি যত্নে, আলতো দু-হাতের ভেতর সদ্যোজাত শিশুকে নেবার মতো। অল্প অল্প করে, আর সেই দু-চার পংক্তির পৌনপুনিকতা মধ্যযামে জলের ঘূর্ণির কল্লোল তুলে বেজেছে। এর অর্থ এই নয় যে কব্যের পাঠ আমার সম্পূর্ণ হয়েছে। সারা জীবন ধরে পড়তে হয় যেসব বই, এ তাদেরই একটি হয়ে রইল আমার আলমারিতে জীবনের সঞ্চয় হয়ে।

    আমার সম্পূর্ণ অচেনা এক কবি তিনি, দু’মাস আগেও নাম জানতাম না। বইএর নামটিই  আমার প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমাকে ঘাড় ধরে বইটি সংগ্রহ করতে বাধ্য করে। এই বইএর পাঠ প্রতিক্রিয়া না দিলে অপরাধ হয়।

    ভাসা ভাসা মুগ্ধতা প্রকাশের থেকেও এর গভীর পর্যালোচনা জরুরি বলে মনে হয়েছে আমার।যোগ্যতম ব্যক্তির দ্বারাই তা হতে পারে। আমি নগন্য এক পাঠকমাত্র। তবু কিছু আলোচনার চেষ্টা করছি নিজেরই তাগিদে। বইটির শুরুতে একটি প্রাককথনের মতো নামহীন কবিতা আছে।সেই অংশটুকু তুলে ধরা দরকার।কারণ আমার মনে হয়, এটাই গোটা বইটির “মুড” ধরে রেখেছে। –

    শিকার ও শিকারীর মাঝে একটি দীর্ঘ ‘ঈ’-র উড়ান। সেও নত হয়।
    আর আমরা অবনত। সে ছাতা হয়ে ওঠে আমরা ছায়া খুঁজি অবিরত।
    যতদিন শিকার ছিলাম ছাতার আয়োজন ছিল বৃথা। রক্তের স্রোত
    থিতু হয়ে এলে কিংবা বলা যায় চিরন্তনের পর সাময়িকের ডালে
    প্রতিসরণের পথে ছাতা এনে ধরে দীর্ঘ। অথচ আমরা আসতেও জানি
     না, যেতেও না! তখন ইবলিশ এসে হাত ধরে আর আমরা পরস্পর
    পরস্পরের শিকারী হয়ে উঠি।

    এবার বইএর প্রথম কবিতা ‘রূপান্তরের বাক্স ২’ এ আসি। কবিতাটি প্রথম বার পড়ে আমার একটুও ভালো লাগে নি। খুব খোলামেলা বললাম। মনে হয়েছিল, কী প্রেমের মেদিনীপুর-টুর বলছেন, এ যেন শিস দিয়ে গান গেয়ে ফেরা  কোনো ফাজিল ফক্করের মধ্যমানের ফাজলামি। কিন্তু পরের কয়েকটি কবিতা পড়ে প্রথম কবিতাটির সমে ফেরা দরকার অনুভব করলাম। তারপর যতবার কবিতাটি পড়লাম ততবার পাপস্খালন করতে নিজের নাককান মলার সাথে সাথে নতুন নতুন দিগন্ত খুলে গেলো। যারা বইটি পড়বেন তাঁদের জন্য কয়েকটি রূপক বা সংকেতময় শব্দ আগাম ভাগ করে নিচ্ছি। “আলোর নোঙর” ও “বন্দর”। “জল” ও “আগুন”। “নোয়ার নাও”। “দেহাতি হিরো”। “লাস্ট ট্রেন”। “দুজনেই রোজ সময়ের মান লিখি জিরো” - এই পংক্তিতে “দুজন” ব্যক্তি কে কে? বলছেন “প্রেমের মেদিনীপুর”। মেদিনী ও পুর ব্যাসবাক্যে ভেঙে অর্থ করুন। এবার কবিতাটা পড়ুন। বেশ কয়েক বার।

    আমি যেভাবে পড়েছি সেটুকু বলি। প্রেমের মেদিনীপুর পার্থিব জগৎ। যেখানে প্রেম ও মায়া যাবতীয় দুঃখ বেদনা ও নশ্বরতা আছে, অমরত্ব বলে কিছু নেই। মায়া আছে বলে তার টানে বারবার এসে পড়ি, কারণ আমাদের নিবৃত্তি হয় না। সেটাই “অভিসম্পাত”। বুদ্ধদেবের বানী, মায়া না কাটলে জন্মান্তরের বেদনা নিরসন হয় না, মুক্তি ঘটে না। বার বার ফিরে আসতে হবে আর বার্ধক্য জরা মৃত্যু ও রোগভোগের যাতনায় জর্ররিত হতে হবে। “ভেসে যাচ্ছে আমাদের নিরলস ব্যাধি, ভেসে যাচ্ছে তোমার আরোগ্য, / ছড়িয়ে পড়ছে আমার নির্বাণ আর ছড়িয়ে পড়ছে তোমার ঝিনুক ঝিনুক কথারা” (কালকুঠরির চাবি ১১)।

    লালনের হাহাকার মনে করি, “পড়শি যদি আমায় ছুঁত যমযাতনা যেত দূরে”। যম যাতনা আমাদের ভবিতব্য। বারে বারে তাই নোঙর ফেলা। আলোচিত গ্রন্থের কবি বলছেন “আলোর নোঙর”। আলোকিত পথে আমাদের ফিরে যাওয়া, আর সেই আলোকেও পাঠান্তরে বলছেন “নৈর্ব্যক্তিক আলো”। তবে অন্ধকার পথই বেয়ে আমাদের যে পিছলে পড়ে নতুন জন্মলাভ তা সম্ভবত তিনি বিশ্বাস করেন না। অন্ধকার পথ বলতে যদি জরায়ু থেকে মাতৃযোনি হয়ে আভূমির চিরন্তন এক ভাবদৈর্ঘ্যকে বুঝি তাহলে আবার সময়ের মান জিরো হতে পারে না। সময় যখন জিরো, তখন সবই শূন্য, সবই নমিত ও নিমজ্জিত এক অপরিসীম ডেড সি। কৃষ্ণগহ্বর - ব্ল্যাকহোল বলতে পারি তাকে, যেখানে সাদা কালো আলো অন্ধকার ইহজন্ম পরজন্ম সব একাকার।
    এই ব্যাখ্যায় তাই আলোর নোঙর বন্দর পায়, কৃষ্ণগহ্বর সকল আলোকেই গ্রাস করে, ফেরৎ পাঠায় না কিছু। কবির সেই বন্দরই কাম্য, সেখানে আনন্দ নিরানন্দও ভেদহীন। আশা পারেখের সিঁদুরচর্চিত সৌন্দর্য ও সৌন্দর্যহীনতা সবই খেলা করে গ্র্যাভিটিহীন সেই কালো গহ্বরে। সব দার্শনিক ও সুফি সন্ত বাউল ফকির দরবেশ আর আরাধিকা রাধাও শাম সমান ওই সময়ের চেতনাহীন গহ্বরের দিকে যেতে চেয়ে অনন্ত অমৃতের সন্ধানে খ্যাপার মতো ঘুরে চলেছেন। কবির শামও তাই লাস্ট ট্রেনে প্রেমের মেদিনীপুরেই ফেরে।

    কবি ও সন্তরা চিরকাল বলেছেন মানবজীবন বেদনার যোগফল।বিষাদের ভেতর আমরাও এই কবির কবিতায় বারবার নিমজ্জিত হই, আর সজল মেঘভার বুকে নিয়ে হেঁটে যাই কবিতার পথ ধরে।শুধু বলি, অজস্র কাব্যগ্রন্থের ভীড়ে হারিয়ে যাবার নয় “খোয়াহিশের ধূন”। তার দর্শন আর কাব্য চমৎকার মেলবন্ধনে হাত ধরাধরি করে পাঠককে এগিয়ে নিয়ে যাবে কবিতার সফলকাম তীর্থের দিকে। বুঝতে পারি না একে ‘ডিভাইন কমেডি’র সঙ্গে তুলনা করব কিনা। হয়তো বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে, তবে আমি কোনো বিশেষজ্ঞ নই, অকিঞ্চিৎকর এক পাঠক – “চাক্ষিক মাত্র”।তাই বাড়াবাড়ি করে ফেললেও কারও কাছে খুব একটা জবাবদিহি করার নেই। বরং আমি নির্দ্বিধায় দান্তের রসসংক্ষেপের আভাস ভোগ করি কবিতাগুলিতে। কারণ সম্পূর্ণ কেন, এক কণা দান্তেতেও দাঁত ফোটানো আমার কম্ম নয়।অ ন্তর্জাল থেকে সুচারু বাকবিন্যাসে লিখিত ডিভাইন কমেডির মূলাভাসটুকু ধার করলাম, “মৌলগতিচক্রকল্প এক আশ্চর্য শ্বেতগোলাপ যা জাগতিক ও মহাজাগতিক সকল বস্তুকে গতিশীলতা দান করলেও এক অনাদ্যন্ত স্থিতিশীলতায় স্তব্ধ অনড় হয়ে থাকে নিজে, মৃত্যু ও হতাশার মহাশূন্যতায় চিরভাসমান সাক্ষাৎ আশামৃতস্বরূপ”। এই মহাজিজ্ঞাসাও “খোয়াহিশের ধূন”এর ভেতর রয়েছে বলে আমার উপলব্ধি। এই তুলনা করার ধৃষ্টতার কারণে কবি স্বয়ং চ্যালাকাঠ নিয়ে আমাকে তাড়া করলেও আমি নাচাড়। যদিও আমাদের “লালনীয় আর্তি” বা বুদ্ধদেবের “নির্বাণ” চরিত্রগতভাবে ডিভাইন কমেডির সঙ্গে যায় না। একটাতে মৃত্যু পরবর্তী খোঁজ আর অন্যগুলোয় ইহজাগতিক জীবনের স্বরূপ, উদ্দেশ্য এবং গন্তব্যই প্রধান।সেকারণেই প্রথমটি ছুঁয়েও শেষোক্তটির সঙ্গেই “খোয়াহিশ” ধূন তুলেছে অধিক।

    বইএর ছাপ্পান্নটি কবিতা বিশ্লেষণ এই লেখায় সম্ভব নয় একেবারেই। লিখতে গেলে রামায়ণের অষ্টম কান্ড হয়ে যাবে।পাঠক যদি আগ্রহী হ’ন তাঁকে সংগ্রহ করতে হবে এই বই। নিজে নিজে রসাস্বাদনই কাম্য হওয়া উচিত।

    আবার একটু বিষয়-আলোচনায় ফিরে যাই। বইটিতে অনেক কবিতাই আছে, যেগুলি পড়লে মনে হবে আদ্যন্ত প্রেমের কবিতা। নিশ্চয় প্রেম। তবে তা কেবলই সাধারণ নরনারীর প্রেমের সংজ্ঞায় বন্ধনীকৃত নয়।ও ই যে শিকার ও শিকারী! এই শিকার ও শিকারী কি তবে জীবাত্মা ও পরমাত্মার নতুন পরিভাষা? সেই পরমাত্মা ছাতা হয়ে ওঠে, আর শিকাররূপী জীবাত্মা ছায়া খোঁজে তার তলে! আবার এই দুই চরিত্র ব্যক্তি মানুষেরই  দুই সত্তা হতে পারে নাকি? নিজেরই অন্দর আর বাহিরের সংঘর্ষ, আমার স্তিমিত অবনত সত্তা আর তাকে ছাপিয়ে যেতে চওয়া শক্তিমান এক যুযুধান। আসলে বহুমাত্রিক ছাঁচওয়ালা এক একটা হীরকখন্ড, অথবা শিশমহল একএকটি কবিতা।

    ক্ষুদ্র আমি আর বড়ো আমির চিরকালের দ্বন্দ্বের সাময়িক বিরতিতে ইবলিশ লড়িয়ে দেয়। মুখবন্ধ কবিতায় নিজের নিজেকে অতিক্রমের চেষ্টা, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফললাভ হয় না। প্রকারান্তরে বিষয়টা অনেকটা সিসিফাসের পাথর ঠেলে তোলার মতো। পাহাড়ের চূড়া থেকে গড়িয়ে নেমে আসবে জেনেও তা ঠেলে তুলে চলা। অবিরত। এই কবি বলছেন তাঁর নিজস্ব রূপকে, “কচ্ছপে আরোহন করছি আর পিছলে যাচ্ছে শক্ত পাকড়”। এই রঙ্গ জগৎ জুড়ে। তারই চিত্রপট কবিতায় কবিতায়। সামান্য মনোযোগে আমরা রত্ন খুঁজে পাব এই বইএর ভেতর। এক আজনবী বাস করছেন এখানে। গালিবীয় জখম জীবনকে যেভাবে অভিজ্ঞতায় সালটিয়ে শায়েরির ফুল ফোটায়, এই কবিও জীবনকে এত অল্প বয়সেই সালটে সাপটে দেখে নিয়ে কবিতায় ধূন তোলেন।প্রসঙ্গক্রমে বলি, মধ্য যৌবনের এই কবির অধিকাংশ কবিতা প্রায় আট-দশ বছর আগে লেখা। তাই অত অল্পবয়সে রাত্রির নিস্তব্ধ বাঁকে, ঘটমান বর্তমানের দোলায় দোলায় যখন অস্তিত্ব আর অনস্তিত্বের বেদনার বোধ কবিকে জীবনের স্বরূপ জানতে আকুল করে তোলে তখন আমি বিস্ময় চেপে রাখতে পারি না।

    জীবন ও মরণ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর আজ পর্যন্ত কোন দার্শনিকই বা নিশ্চিত করে সংজ্ঞায় বাঁধতে পেরেছেন? জীবন কি জলের মতো নয়? জলের মতোই কি? তার স্বরূপ, জগতের সঙ্গে তার সম্পর্ক কী?  কেন আসি আমরা, আর কেনই বা চলে যাই? এই সকল প্রশ্ন যে কবির তিনি তো দার্শনিক। যেতে হয় কেন? আসার জন্য? আসাও কি তাহলে যাবার জন্য? এই ঘুরে ঘুরে চলা জলের মতো, নদীর মতো। নদীর উৎস থেকে মোহনাতেই তো তার যাত্রা শেষ নয়। আবার তাকে উৎসে ফিরতে হয়। তাহলে শ্বাশ্বত সত্য কী?

    ভীষণ কৌতুহলে কবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলাম। ফোন নাম্বারও পেলাম।কিন্তু কবিতা নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা হয়, আবহাওয়া সম্পর্কে দু’চার কথা হয়। কিন্তু তাঁর খোয়াহিশের ধূন নিয়ে তিনি ততটা আগ্রহী নন, যতটা আমি কবির জীবনের ভেতর সত্যসন্ধানীর মতো “ক্লু” খুঁজতে আগ্রহী। কবির ভাবনার মূলটুকু জানতে হবে। কথায় কথায় জানলাম তাঁর পূর্ব পুরুষদের রক্তে বাউল, রক্তে পথের টান। এক জন্ম জীবনের ভেতর জীবনের বহুত্ব নিয়ে প্রশ্ন তাঁদেরকে বোহেমিয়ান করেছিল। চাকুরে বাবার ভেতর এক দার্শনিকের বাস। বুঝলাম তাঁর এইসব পংক্তি লেখার উৎস কোথায় –

       “যাও খুলেই দিয়েছি জানালা কোলাজ
        বাঁধনের নাম মুক্তবিকেল
         এ উদ্বাস্তুর তাঁবুতে হোক পুনর্বাসন ---
         হাওয়ার শাসন
         আর একটি আপেল” ‌‌‌।।
           
    চার্বাক ২ কবিতায় কী তীব্র অর্থবহ এই পংক্তিগুলি –

    “জোব্বার বোতাম আঁটতে আঁটতে
    বললাম “আমি যাবো,
    যাব সেই পথে”
    আলতো হেসে –
    চশমার কাচ মুছে পরিয়ে দিল আবার, দেখি –
    আমি, তিনি, তারা সব আছে শুধু আলোর দ্যাখ্যা নাই
    ফরাসে ফরাসে ছড়িয়ে পড়ল জহরতি হাসি
    আর ফাঁকা মেলে ধরা তার দৃষ্টিকলস
    এসে বসল  জলছোঁয়া জোব্বার গায়ে।”  

    কবিতাভাবনার পাশাপাশি এর কাব্যভাষা, শব্দবয়ন, আঙ্গিক, বিন্যাস ইত্যাদি ছিবড়ে ঘেঁটে ব্যবহারযোগ্যতা নয়; বরং নিজস্ব চলন, ধরন, ছিরি ও ছাঁদ। গানের লাইন, শের-শায়েরির ব্যবহার বাংলা কবিতায় বিষয়বস্তুর ভেতরে ঢুকে তার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে ওঠা খুব সম্ভব এই কবি প্রবর্তনা করলেন। তার প্রযোগ পরিমিতি ও জ্যামিতিজ্ঞানে যথাযথ ও সঠিক তালমাফিক। শব্দ চয়ন সম্পর্কেও তিনি খুব খুঁতখুঁতে। ঠিক মাপসই উপযুক্ত শব্দটির সন্ধান সতত জারি রাখেন, বা বলা ভালো রেখেছিলেন কবিতাগুলি লেখার সময়। অতীতকালের ক্রিয়াপদ ব্যবহার করার কারণটি পরে জানাচ্ছি। আনকোরা শব্দ তিনি খুঁজেছেন।সেজন্য আঞ্চলিক শব্দের পাশাপাশি উর্দু ও হিন্দি শব্দও ব্যবহার করেছেন নির্দ্বিধায়। এ নিয়ে বাংলা কবিতা ও সাহিত্যের পন্ডিতেরা নাক কুঁচকোতে পারেন, তবে সেইসব শব্দই অভ্রান্ত প্রযোগের সাথে সাথে কবিতার রূপ খুলে দিয়েছে আরও। যেমন, “---মেহমানখানার নরম আলোয় / দেখি আমার মৃত চাঁদেরা নামে আমারি দেহলিজ পেরোনো পিলপে গাড়ির ছায়ার/ শার্সি খুলে।দেখি আর দেখি, এক একটি মীনকন্যা আর তাদের শরীরে জড়ানো সেই/ না তোলা শাড়ির জীবন্ত খোলস ---”।

    কিছু পংক্তি উল্লেখ করছি।

    ১)“নৈর্ব্যক্তিক আলোর উদ্গীরণ করে মেহমান
                                                                    পিহু পিহু আলো”

    ২) বোধি বৃক্ষেরা এখন একে একে ভিক্ষায় যাবে আর
          ভিক্ষাপাত্রে জমে উঠবে চার-আনি ছ-আনির সময়খন্ড

    ৩) অবগাহন শেষে বুঝলাম সে আসলে ওয়ানওয়ে

    ৪) বিন্দুর দেহে হারিয়ে যাচ্ছি ক্রমশ ক্রমশ চেনা আমি

    ৫) ঘড়ির কাঁটা বেয়ে / উঠে আসি সংখ্যার খোঁজে; এখানে আরও কিছু হিডন্ লেন
    …একটা স্ক্রু পয়েন্ট – ঢুকে পড়ি অর্ধপাপ –
    ঢুকেই খুঁজে চলি মোহের মগজ
    কিন্তু কী খুঁজি? জনি না তো ; ফ্ল্যাশব্যাকে দেখি একখানা কলিংবেল।

    --- ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যদি। দৃষ্টান্ত বাড়িয়ে লাভ নেই। বইএর প্রায় সকল পংক্তিই উল্লেখযোগ্য। এই বইএর বিভিন্ন কবিতায় কালচেতনা ফিরে ফিরে এসেছে। কবিতায় যেসব পংক্তি ও শব্দ ইমেজারি, যেগুলোকে “ক্লু”ও বলা যেতে পারে, যার ধাপে ধাপে পা রেখে গুপ্তধনের কক্ষের বারদরজায় পৌঁছতে পারি। তবে পাঠককে খুঁজে নিতে হবে ‘কি-ওয়ার্ড’টি, যার সাহায্যে খুলে যাবে কক্ষের দ্বার, আর পাঠক পৌঁছে যাবেন রত্নরাজিখচিত কবিতাপ্রতিমার সমগ্রতার সামনে।

    কথোপকথনের সময় একদিন জানালেন, কবিতা লিখে চলার থেকেও বড়ো কথা ঠিক সময়ে কবিতা লেখা ছেড়ে দেওয়া। কবিতা আর তিনি লিখতে চান না। এর কারণ হিসাবে আমার মনে হয়েছে তিনি জানেন এই গ্রন্থই তাঁর মাস্টারপিস। কিংবা কে জানে, হয়তো তিনি বিরতি নিচ্ছেন। বাহির ডাকলে আবার পায়ে পায়ে নতুন পথ খুলে দেবেন! কাব্যদেবির কাছে প্রার্থনা করি তাই যেন হয়। এক অগ্রজ শ্রদ্ধেয় লেখক বলেন “সাহিত্যে গোল গোল কথা আর কতদিন?” আমার মনে হয় বাংলা কবিতারও “গোল গোল” কথার আদিখ্যেতা থেকে মুক্তি ঘটা দরকার। এই কবি সেই কাজ করতে সম্পূর্ণ সক্ষম!

    চার ফর্মার কবিতার বইটি থেকে আরও কিছু নিদর্শন উল্লেখ করবার লোভকে প্রশ্রয় দিলাম।

    কালকুঠরির চাবি ২৯
    ----------------------
    ধরা যাক আমি আছি কিন্তু কোনোভাবেই আমি
    প্রমান করতে পারছি না তা।যেভাবে রুমাল
    উল্টে বেরিয়ে আসে ঝাঁক ঝাঁক বেড়াল
    তেমনই আমি হয়ে উঠলাম আহাম্মকের অনু-বিম্ব।
    বলা বাহুল্য সে অনু-বিম্ব কিন্তু আমি নই।না, আমার
    সহধর্মিনী বা প্রেমিকাও নয়।যেমন এই মাত্র
    অনুভব করলুম সেসব হতে গ্যালেও একটা শরীরের প্রয়োজন।
    অথচ আমি আছি কিন্তু আমি নেই।
    ---

    ম্যাজিক
    ----------
       মঙ্গলা বলত আমি নাকি বাউলছানা, মাথায় নাকি ভুদুরভুঞ্যার ভ্রূণ
       কেমন করে বোঝাতাম আর –
       মাোর সাঁইয়া চিতচোর
                      ছুমুক ছুমুক জাঁউ তোহরা অঙ্গন মে
                                       এনা জানু পিয়া সুবহা কি ভোর!
                                                                    মোর সাঁইয়া চিতচোর ---
    তারপর দোল গেছে সহরায় যাবে আবার উঠোনে খাটিয়া পাতা রাত
    প্রতিদিনই ঘুমোতে যাই এমন, ঘুমের শেকল ধরে টান দিই
    আর টুকরো সময় ঝাঁপিয়ে আসে আমার ভেতর –
    এখন বুঝি এক একটা রোমের নীচে জমা আছে কত
    নিঃসঙ্গতা দেখে যাও – মুগ্ধপুরুষ , ওহে যাদুকর
    ঘোরাও আবার জাদুছড়ি সেজে থাক আমার স্ট্যাটাস
    শুধু আজও সেই টইটই ঘুমের ভেতর খুঁজে যাই মঙ্গলার মায়ের বৃষ্টিতে
    খোয়া যাওয়া  
                                               সেই পলকরতন।

    চক্রবাক ২
    -----------
    হাড়ের সেতু পেরিয়ে ওপারে রঙিন দোতারা শহর।প্রায় শোনা যাচ্ছে ঘূণের গান।
    ঘিসাপিটা মেঘ এসে বলে গ্যালো কাল আজানের পর নৈঋত কোণ জুড়ে বাতায়ন
    খোলা হবে।আমার নিহত রুহ-এর বাইরে হ্যালোজেনপোস্ট শরীরে ক্রমাগত আলো
    ফেলতে ফেলতে শৈশব কুড়িয়ে নিচ্ছে যেভাবে, মনে হয় নিঃসঙ্গ বীজের শাঁস তোর
    ধারালো নাখুনে।কত বুদবুদ ওঠে, কত মরে যায় আবদ্ধ বাথটবে। কে রাখে বলো
    কার খোঁজ! কে নেয় প্রাচীন শরীর।দু’হাতে উঠে আসা কাঠ যদি সাম্পান হয়ে যেতে
    পারে তবে ওপারে শহরের সাথে যোগাযোগ সাবলীল হয়।
        জানো!! দাদুর একটি ইজিপ্সিও কৌটো ছিল।সেটা সে পেয়েছিল কোনও
    এক বাউলের কাছে।দাদু বলত –
              ঘুম আছে ।আছে নিরাময় সাঁঝ।দু’চার কলি গানও বেরোতে পারে তবে
    সে গান নিহত ছায়াদের গান।
       ওই যে দূরে রোদ্দুর বয়ে চলে যাচ্ছে সুরঙ্গম সাম্পান ---

    শহুরে মেয়েটির কাজে ভুল হয়।আমি আগাপাশতলা মেঠোমাঠা স্মৃতি তুলে এনে
    পাতে রেখে বসি, আহা গো জলাহার, আহা গো জলজ আহার, তোমাদের ভুখ মেটে
    আশ মেটে কি!! মাথা জুড়ে খাবি খায় কত কত আলো।যার স্মৃতি বলে কিছু নেই
    সে আর যাই হোক তার ডানা হবে না কোনোদিন।
        তাই হাড়ের সেতু পেরিয়েই ওপারে যেতে হবে রঙিন দোতারা শহর।আর
    শোনা যাবে ঘূণের ঘুঙুর

    ---
     
    বই পাঠঃ খোয়াহিশের ধূন
    কবি – গৌতম মাহাত
    প্রকাশক – দারুহরিদ্রা
    উপস্থাপক - বইলেন
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন