এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  রাজনীতি

  • নির্মোহ সাভারকর চর্চাঃ সবে মিলে - ১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ আগস্ট ২০২২ | ৩৫১৭ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • [ কাল কেসি সায়েবের সাজেশনটি আমার মনে ধরেছে। তাই দুগগা বলে ঝুলে পড়লাম। সবাই হাত লাগান। আমি আলোচনাটিকে কোটেশন-কন্টকিত, ফুটনোট-ভারাক্রান্ত করতে চাই নে। যার ঝুলিতে যা কিছু মণিমাণিক্য রয়েছে এখানে উজাড় করে দিন। তবে কোন বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন হলে নিশ্চয়ই তথ্যসূত্র দিতে হবে। ]

    সাভারকর চরিত্র :

    আমার এই বয়সের প্রতীতি হল সত্যের রঙ সাদা কালো নয় ধূসর। হ্যাঁ বা না ঝগড়ায় অনেক সময় হারিয়ে যায় ঘটনার প্রেক্ষিত, ঐতিহাসিক সময়ের বাধ্যতা এবং সমসাময়িক সমস্যার ফ্যাক্টরগুলো। যেমন সাভারকর, এক জটিল এবং মনস্তত্ত্বের ছাত্রের জন্য ইন্টারেস্টং। তুলনামূলক ভাবে গান্ধীজি অনেক সাদামাটা লিনিয়র এবং বোরিং। দেখুন সাভারকর বড় হয়েছেন শাস্ত্রপাঠ, সংস্কৃত অধ্যয়ন মনুসঙ্ঘিতা পড়ে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ভাবনা চিন্তা, গ্যারিবল্ডি ম্যাজ্জিনির ভক্ত। ম্যাজ্জিনির জীবনী নিজে অনুবাদ করেছিলেন। উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট। অল্প বয়েসে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্য মাথায় রেখে অভিনব ভারত নামের সংস্থার প্রতিষ্ঠা। ছাত্র আন্দোলনের জন্য পুণের ফার্গুসন কলেজ থেকে বিতাড়িত।
    লণ্ডনে বামপন্থী চিন্তার শ্যামজী কৃষ্ণবর্মার বদান্যতায় আইন পড়তে যাওয়া। কিন্তু সেখানে ইন্ডিয়া হাউসের একচ্ছত্র নেতৃত্ব এবং মদনলাল ধিংড়াকে উস্কে দিয়ে জনৈক মাইনর ইংরেজ অফিসিয়ালকে হত্যার সঙ্গে তাঁর নাম ইন্টেলিজেন্স রেকর্ডে ওঠে। ফলে ভালভাবে ব্যারিস্টারি পাশ করলেও লাইসেন্স পেলেন না।

    জন্মসূত্রে চিতপাবন মারাঠি ব্রাহ্মণ। কিন্তু মাছ-মাংসে বিশেষ অনুরাগ। গান্ধীজি যখন দক্ষিণ আফ্রিকায় আন্দোলন রত ভারতীয়দের সাহায্যের জন্য লন্ডন এসে প্রবাসী ভারতীয় ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন তখন সাভারকর চিংড়ি মাছ রান্না করছিলেন। গান্ধীজি সবিনয়ে জানালেন যে তিনি জাহাজে ওঠার আগে মাকে কথা দিয়েছেন যে আজীবন শাকাহারী থাকবেন। উনি খালি পেটে ফিরে গেলেন।

    সাভারকর নাকি মন্তব্য করেছিলেন -- শাকপাতা খেয়ে ইংরেজের সংগে লড়াই!

    সাভারকরের নাস্তিকতা নিয়ে একসময় পুণের (নাসিকের) ব্রাহ্মণরা কমিশনারকে চিঠি লিখেছিল যে নাস্তিক সাভারকরকে অবিলম্বে 'জেলাবদর' করা হোক। নইলে আমাদের ধর্মকর্ম সব গেল বলে!

    জাতপাত মানতেন না, মনে করতেন হিন্দুদের এই বিভেদ দুর্বল করছে।
    গো কে মাতা বলতেন না। উপকারী পশু বলতেন। গো হবে বাছুরের মাতা, আমার নয়।
    অথচ এই ভদ্রলোক হলেন হিন্দুরাষ্ট্র এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের মুখর প্রবক্তা। এছাড়া হিংসা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যক্তিহত্যায় কোন অরুচি নেই, বরং বিশেষ রুচি।
    ওঁর হিন্দুত্ব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক হিন্দুত্ব, ধার্মিক নয়।

    জিন্নার সাথে কী মিল!

    জিন্নাও নাস্তিক, নিষিদ্ধ আহারবিহারে উৎসাহী। নামাজ পড়া নিয়ে । একেবারে কোন মাথাব্যথা নেই। কিন্তু লড়ে গেলেন পাকিস্তান নির্মাণে। একেবারে সাভারকরের অল্টার-ইগো!

    ওদিকে গান্ধীজি গুজরাতি বানিয়া। প্রথম জীবনে স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে কোন মাথাব্যথা ছিল -- মনে হয় না। উনিও বিলেতফেরত ব্যারিস্টার। কিন্তু নিজের দেশে পসার জমল না। তাই অর্থনৈতিক সাফল্যের স্বপ্নে সাউথ আফ্রিকা গেলেন। তারপর কী হইল জানে শ্যামলাল!

    গান্ধীজি নিজেকে বলতেন -- নিষ্ঠাবান সনাতনী হিন্দু। জাতিভেদকে একসময় উপযোগী ছিল বলে মনে করতেন। কিন্তু তাঁর অনীহা সশস্ত্র সংগ্রামে। তিনি ছাগলের দুধ খাওয়া অহিংসার পূজারী। গোহত্যার বিরোধী। অথচ তাঁর কল্পনার স্বাধীন ভারতে সমস্ত ধর্ম এবং সম্প্রদায়ের সমান অধিকার। সর্বদা মাইনরিটির স্বার্থে দাঁড়াতে চাইতেন। এর জন্যে প্রাণ দিলেন।

    কিন্তু একটা কথা। কাকে বীর বলব?

    আমার মতে যে নিজের কৃতকর্মের দায় এড়িয়ে না গিয়ে স্বীকার করে।
    ক্ষমাভিক্ষা করে না। যে বিপদের সময় সামনে থেকে লীড করে।

    গান্ধীজি -- নোয়াখালি দাঙ্গা দেখুন অথবা সিডিশন চার্জে শাস্তি চাওয়া।

    ভগত সিং -- যে মৃত্যুদণ্ড পেয়ে মার্জনা ভিক্ষা চাইতে অস্বীকার করে এবং বলে ফাঁসি না দিয়ে আমায় তোপের মুখে উড়িয়ে দিন।

    সাভারকর -- ওপরের দুটো মাপকাঠিতে কোথায় দাঁড়ান পরে আলোচনা করব।

    তবে সাভারকর নিজেকে জন্মসূত্রে নায়ক ভাবতেন। ভাইকে চিঠিতে লিখেছিলেন -- একদিন ইতিহাসে ভারতের এই সময় "সাভারকর যুগ" বলে অভিহিত হবে। তাই বোধহয় নিজে সামনে না এসে ফুট সোলজারদের এগিয়ে দিতেন।

    এবার কেসি। এবং অন্যেরা ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ? | 2405:8100:8000:5ca1::264:b49c | ২৭ আগস্ট ২০২২ ১২:৩০738267
  • নিজেকে বীর  প্রমাণ করা বেশি জরুরি, না নিজের লক্ষ্যের দিকে এগোনো বেশি জরুরি?  ক্ষুদিরাম থেকে শুরু করে বাংলার অনেক বিপ্লবীই - উপেন্দ্রনাথ, বারীন, হেমচন্দ্র প্রভৃতি - ক্ষমা চেয়েছেন বা রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকার মুচলেকা দিয়েছেন। পি সি যোশীটোশী ছেড়েই দিলাম। গণেশ ঘোষের লেখায় আছেঃ "রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া সম্পর্কে ভারতের ব্রিটিশ সরকারের ঘোষণার মধ্যে যে প্রচণ্ড একটি প্রতারণা ছিল এবং বিরাট একটি ধাপ্পা ছিল তা কিন্তু প্রথম প্রথম আদৌ বোঝা যায়নি; কিছু দিনের মধ্যেই অবশ্য সরকারের এই ঘৃণ্য চক্রান্ত এবং প্রতারণা জনসাধারণের কাছে উদ্ঘাটিত হয়ে পড়ে।

    এই সময়ে ভারতের যে সকল দেশপ্রেমিক যুবকদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে সরকার আন্দামানে আবদ্ধ করে রেখেছিল তাদের মুক্তির জন্য সরকার কতকগুলি শর্ত স্থির করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে আন্দামানের রাজবন্দীদের বলা হয়েছিল যে, যে সকল রাজবন্দীরা এই মুক্তির সুযোগ নিতে চান তাঁদের একটি অঙ্গীকারপত্রে স্বাক্ষর করে বলতে হবে যে মুক্তির পর তাঁরা বেশ কিছু বছর রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করবেন না এবং বিপ্লবী আন্দোলন সংক্রান্ত কোন কাজকর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবেন না। সরকারের আরও বক্তব্য ছিল যে তাঁদের বিরুদ্ধে যদি পুনরায় রাজদ্রোহের অপরাধ প্রমাণিত হয় তা হলে তাঁকে নতুন অপরাধের জন্য শাস্তি ভোগ ব্যতীতও অবশ্যই আবার আন্দামানে এসে বর্তমান যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগের যে অংশ অবশিষ্ট রয়েছে সেই অংশটুকুও ভোগ করতে হবে।

    এই অযৌক্তিক ও বর্বর শর্তের কথা শুনে আন্দামানের রাজবন্দীরা এক বাক্যে ঐ ঘৃণিত শর্ত গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন । সরকার কিন্তু তাঁদের ঐ শর্ত নিয়ে জিদ করে আঁকড়ে বসে থাকে; তাদের ঐ শর্তকে তারা কিছু মাত্র পরিবর্তন করতে রাজী হয়নি। দেশের গণ-আন্দোলন, বিভিন্ন সংবাদপত্রে এই বর্বর শর্তে কঠোর সমালোচনা, দিল্লী বিধান সভায় জাতীয় নেতৃবর্গের প্রচণ্ড বিরোধিতা, কিছুই ইংরেজ সরকারকে কিছুমাত্রও টলাতে পারেনি।

    ইত্যবসরে ১৯২০ সালের মধ্যে ভারতবর্ষে যত রাজবন্দী বিনাবিচারে আবদ্ধ ছিলেন তাঁরা সকলেই দেশের বিভিন্ন জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরে চলে যান । সেই সঙ্গে সীমিত কালের জন্য যাঁদের কারাদণ্ড ছিল তাঁদেরও প্রায় সকলকেই মুক্তি দেওয়া হয় । আন্দামান থেকেও এইরূপ সকল রাজবন্দীকেও অর্থাৎ যাঁদের সীমিত কালের জন্য কারাদণ্ড ছিল তাঁদেরও সকলকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয় । এই সময়ে ক্রমে ক্রমে আন্দামানের কিছু সংখ্যক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রাজবন্দীও ঐ শর্ত মেনে নিয়ে মুক্তি অর্জন করে বাইরে চলে যান।

    আন্দামানে আবদ্ধ প্রবীণ ও নেতৃস্থানীয় কিছুসংখ্যক রাজবন্দীর উপদেশ ও নির্দেশ অনুযায়ী আন্দামানের রাজবন্দীরা শর্তের বিষয়টি নিয়ে পুনরায় গুরুতর আলোচনা আরম্ভ করেন এবং দীর্ঘ সময় আলোচনার পর প্রবীণ বন্দীদের পরামর্শ অনুযায়ী স্থির করেন যে শর্তের বিষয়টি নিয়ে দেশ থেকে বহু দূরে আন্দামানের কারাগারে বৃথা সময় ক্ষেপণ অপেক্ষা কোন প্রকারে বাইরে গিয়ে আসন্ন দেশব্যাপী গণ-আন্দোলনের সুযোগ গ্রহণ করা অনেক ভাল। এই সিদ্ধান্তের পর বহু রাজবন্দীই সরকারের শর্ত মেনে নিয়ে ১৯২০ সালের শেষ ভাগের মধ্যেই মুক্তি পেয়ে বাইরে চলে যান।

    এরপর কেবল মাত্র মহারাষ্ট্রের বিনায়ক দামোদর সাভারকর এবং তাঁর দাদা গণেশ দামোদর সাভারকর প্রমুখ ২৯|৩০ জন রাজবন্দী আন্দামানে আবদ্ধ ছিলেন; কিন্তু তাঁরাও শেষ পর্যন্ত ১৯২১ সালের মধ্যে মুক্তি পেয়ে দেশে চলে যান । ১৯২১ সালের শেষ ভাগে আন্দামানে আর কোন রাজবন্দীই ছিলেন না।"
     
    এই সব বিপ্লবীদের কি কাপুরুষ বলা হবে?

    গান্ধী শাস্তি পেলেন কোথায় যে ক্ষমা চাইবেন? গান্ধী-নেহরুর জেলজীবন কি ছিল সেও গণেশ ঘোষ লিখে গেছেন। দাশু হলে বলতঃ ওরকম মারলে একটুও লাগে না।
  • Ranjan Roy | ২৭ আগস্ট ২০২২ ১৭:৪১738268
  • ১  "নিজেকে বীর  প্রমাণ করা বেশি জরুরি, না নিজের লক্ষ্যের দিকে এগোনো বেশি জরুরি"?
                        --নিঃসন্দেহে  পরেরটি। এখানে একমাত্র সাভারকর নিজেকে "স্বতন্ত্রবীর" বলতে পছন্দ করতেন। অন্যেরা কেউ নিজেকে 'বীর" বলেননি। গান্ধীজি ঠিক এই কাজটিই করেছেন। ক্রমশঃ নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গেছেন। সুভাষ চন্দ্র বসুও তাই। ত্রৈলোক্য মহারাজ , শচীন সান্যালও তাই।
    ২ "দেশ থেকে বহু দূরে আন্দামানের কারাগারে বৃথা সময় ক্ষেপণ অপেক্ষা কোন প্রকারে বাইরে গিয়ে আসন্ন দেশব্যাপী গণ-আন্দোলনের সুযোগ গ্রহণ করা অনেক ভাল। এই সিদ্ধান্তের পর বহু রাজবন্দীই সরকারের শর্ত মেনে নিয়ে ১৯২০ সালের শেষ ভাগের মধ্যেই মুক্তি পেয়ে বাইরে চলে যান।"
         ---দুঃখের বিষয় উপরের কথাটি শুনতে ভাল কিন্তু বাস্তবে কী হয়েছিল? ক'জন ওই শর্ত মেনে নিয়ে বাইরে এসে ফের গণ আন্দোলনে ঝঁপিয়ে পড়েছিলেন?  একজনের নামও  মনে করতে পারছি না। আর ঋষিকেশ কাঞ্জিলাল এবং নন্দগোপাল চিঠি লিখেছিলেন মাফ চেয়ে নয়, আন্দামানে বন্দীদের আইনসম্মত প্রাথমিক সুযোগসুবিধাও দেওয়া হচ্ছে না--এই অভিযোগ করে।
              যাঁরা ওই আবেদনে সাইন করেননি এমন তিনজন ছাড়া পেয়েও আবার আন্দোলনে (গণ এবং সশস্ত্র  ) ঝাঁপিয়ে পড়ে বারবার জেলে গেছেন। তিনটি নাম মনে আসছেঃ ত্রৈলোক্য মহারাজ, শচীন্দ্রনাথ সান্যাল এবং ঝাঁসিওয়ালে পরমানন্দ (ভাই পরমানন্দ নন, দুটোকে ইচ্ছে করে গুলিয়ে দেওয়া হয়)। 
                ত্রৈলোক্য মহারাজ ইংরেজ আমলে তিরিশবছরের ওপর জেল খেটেছেন, ছ'বছর আন্দামানে, তারপর বিশের দশকে ফের মান্দালয়ে (যেখানে সুভাষ চন্দ্র বসু) তাঁর সহবন্দী ছিলেন। শচীন সান্যাল তো দু'বার আন্দামানে গেলেন--৫ এবং ১৪। এঁরও প্রায় তিরিশ বছর। এঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়া হল। মারাও গেলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে গোরখপুর জেলে। 
        এঁরা নিঃসন্দেহে "বীর"।
      
    ৩ " এই সব বিপ্লবীদের কি কাপুরুষ বলা হবে?"
     অবশ্যই নয়। কিন্তু বীরও নয়। সাদা বা কালো ছাড়া অন্য রঙও আচে। 
    এঁরা কিছুদিন কারাবাসের পর আর রাজনীতি করবেন না লিখে দিয়ে বাইরে এসে সত্যিই  বাকি জীবন রাজনীতি থেকে সরে রইলেন। সেটা কোন দোষের নয়। 
    কিন্তু সাভারকরের কেস আলাদা। ১৯১১য় সেলুলার জেলে যাওয়ার পর ছ'মাসের মধ্যে মার্জনা চেয়ে পত্র লিখতে শুরু করেন। সবার মত বাঁধাগতের পত্র নয়, লম্বা লম্বা নানা পত্র। দশ বছরের মধ্যে ৬ খানা। 
      উনি এও লিখেছেন যা করেছি সব ভুল, এখন আমাকে ছেড়ে দিলে বাঈরে এসে আমাকে দিয়ে যে কাজ করাতে চান, আমি করতে রাজি। আর আমার কথা শুনে যে সব যুবকেরা ভুল পথে চলে গিয়েছিল, আমি তাদের ফিরিয়ে আনব।  বাকি জীবন বৃটিশ এম্পায়ারের বিরুদ্ধে কিছু না করে সহযোগিতা করব।
    উনিও বাঈরে এসে সারাজীবন যে কথা দিয়েছিলেন তা পালন করেছেন। 
     
    "গান্ধী শাস্তি পেলেন কোথায় যে ক্ষমা চাইবেন? গান্ধী-নেহরুর জেলজীবন কি ছিল সেও গণেশ ঘোষ লিখে গেছেন।"
    --দুটো কথা।
    রাজনৈতিক বন্দী এবং ইংরেজ হত্যা বা বোমা বানানোর বন্দীদের জেল জীবন অবশ্যই আলাদা।
     জ্যোতি বাবু, স্নেহাংশু আচার্য, নম্বুদ্রিপাদেরা যখন ভারত রক্ষা আইনে বন্দী হন তখন  তাঁরা কি সাধারণ কয়েদিদের মত লপ্সি খান? নাকি বাগানে কোদাল চালান? তাঁদের কিচেন শুধু আলাদাই নয়, জেলে থাকার ভাতাও আলাদা।
    তাতে কি তাঁদের রাজনৈতিক মূল্য কমে যায়?
    গান্ধী যখন বেয়াল্লিশের আন্দোলনে জেলে যান, প্রিন্স আগা খান তাঁর প্যালেসে ঘর ছেড়ে দিয়ে সেটাকে গান্ধীজির জেল বানিয়ে দিতে সাহায্য করেন। সেখানে তাঁর ছাগলের দুধের বন্দোবস্তও হয়। এই নিয়ে কটাক্ষ বিদ্রূপ সমালোচনা অত্যন্ত নায্য এবং উচিত।
    তখন গান্ধীজির স্ট্যাচার বৃটিশের চোখে আলাদা। ওরা টের পাচ্ছে ভারত ছেড়ে চলে যাবার সময় এগিয়ে আসছে। 
    কিন্তু বাকি ৯ বার জেল? যারবেদা এবং সাবরমতী জেল? 
     
    এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকাতেও গান্ধী অনেকবার (৬ বার)   আইন ভেঙে জেলে ঢুকেছেন এবং বেরিয়েছেন। চাইছিলেন লোকের মন থেকে জেলের ভয় ঘুচিয়ে দিতে।
     
    দক্ষিণ আফ্রিকায় ৬ বার। 
    এরমধ্যে  বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয় দু'বার।
    ১৯২২ সালে রাজদ্রোহ আইনে  (ছ'বছর), এবং.১৯৪২ সালে ভারত রক্ষা আইনে (ছ'বছর)। দু'বারই তাঁকে দু'বছর করে  কারাবাসের পর ভগ্ন স্বাস্থ্য অনশন এবং অপারেশনের ব্যাপারে ছেড়ে দেওয়া হয়। 
  • | 117.211.64.105 | ২৭ আগস্ট ২০২২ ১৯:১৮738269
  • গান্ধীকে টানাটা সাঁকো নাড়ানো হচ্ছে না? সাভারকর-এই থাকুন্না।
  • tm | 2405:8100:8000:5ca1::23f:81a9 | ২৭ আগস্ট ২০২২ ২১:১১738270
  • সাভারকরের বারংবার আবেদন ও সেগুলির বারংবার রিজেকশন এটাই প্রমাণ করে যে ব্রিটিশ সরকার জানত সাভারকরের প্রতিশ্রুতিগুলি নিতান্তই কথার কথা। তারা জানত গান্ধীকে তারা বিশ্বাস করতে পারে, সশস্ত্র বিপ্লবীদের আটকাতে গান্ধী তাদের সাহায্য করবেন, কিন্তু সাভারকরকে তারা বিশ্বাস করার কথা ভাবেওনি। গান্ধী তাদের বিশ্বাসের দাম দিয়েছিলেন ও সশস্ত্র বিপ্লবের বিরোধিতায় শাসকের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে সাভারকর আন্দামান থেকে ১৯২১ এ ছাড়া পেলেও ১৯৩৭ অবধি রত্নগিরি জেলায় আটকে থাকতে বাধ্য হলেন।
  • Ranjan Roy | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৩:২৩738271
  • ১.০ 
    "গান্ধীকে টানাটা সাঁকো নাড়ানো হচ্ছে না? সাভারকর-এই থাকুন্না।"
    --সাভারকরকে বা কোন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে কি তাঁদের কালখণ্ড এবং সেইসময়ের অন্য ব্যক্তিত্বদের অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিত বাদ দিয়ে বোঝা সম্ভব? 
     
     
    ২.০ 
    "সাভারকরের বারংবার আবেদন ও সেগুলির বারংবার রিজেকশন এটাই প্রমাণ করে যে ব্রিটিশ সরকার জানত সাভারকরের প্রতিশ্রুতিগুলি নিতান্তই কথার কথা। তারা জানত গান্ধীকে তারা বিশ্বাস করতে পারে, সশস্ত্র বিপ্লবীদের আটকাতে গান্ধী তাদের সাহায্য করবেন, কিন্তু সাভারকরকে তারা বিশ্বাস করার কথা ভাবেওনি"।
     
    --সমগ্র তথ্য কিন্তু উলটো কথা বলছে।
    ২.১  
        গান্ধী তো দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেই "অহিংস " পথের অ্যাডভোকেট। ভারতে যখন ফিরলেন ( জানুয়ারি ১৯১৫) তখনও উনি ভারতের অবিসংবাদিত জননায়ক নন। 
    তখন  গদর পার্টির অভ্যুত্থানের ব্যর্থ  চেষ্টার পর রাজবন্দীতে আন্দামান এবং বিভিন্ন জেল ভরে উঠেছে। অনুশীলন দলের একই অবস্থা।  লাল-বাল-পালের মধ্যে তিলক মান্দালয় জেলে বন্দী। লাজপত রায় আমেরিকায়, তিলক মান্দালয় জেলে বন্দী এবং বিপিন পাল সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছেন।নাগরিকের 
     তখনও গান্ধী ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারতকে স্বাধীন করার ডাক দেন নি। শুধু জানগণকে বলছেন ইংরেজের আইন না মানতে। সরকারকে চিঠিতেও লিখছেন কোন অন্যায় আইন মানতে অস্বীকার করা যে কোন  নাগরিকের জন্মসিদ্ধ অধিকার।
    এবং পরবর্তী জীবনেও ওনার কথায় কনভিন্সড হয়ে কেউ সশস্ত্র সংগ্রামের পথ থেকে সরে এসেছে এমন উদাহরণ নেই,
    ওঁকে সিডিশনের চার্জে বন্দী করে ছ'বছর কারাবাসের সাজা দেওয়া হয় ১৯২২ সালে। আর গান্ধী পন্থার প্রশ্নে অহিংসার পুজারী। কিন্তু কাউকে বলেন নি ইংরেজ বিরোধিতার পথ থেকে সরে আসতে। 
      উলটে গোটা দেশের জনতাকে ডাক দিলেন--করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে' এবং ইংরেজ শাসকের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে অস্বীকার করলেন।
     ২.২  
    সাভারকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ লণ্ডনে ধিংড়ার হাতে এডিকং এর হত্যা এবং পুণেতে ম্যাজিস্ট্রেট  জ্যাকসন হত্যায় অনন্ত কারকারেকে পিস্তল সাপ্লাই দেওয়া, অর্থাৎ উনি এ'দুটো ঘটনার পেছনে মাস্টারমাইণ্ড। শাস্তি হল দুটো যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। মানে তখনকার নিয়মে ২৫+ ২৫= ৫০ বছর।  
    কাজেই উনি যখন নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন  ইংরেজ শাসন  গোড়ায় মনে করেছে  যে এটা বেরিয়ে এসে আবার আন্ডারগ্রাউন্ড গিয়ে লড়াই শুরু করার কৌশল মাত্র। তাই সেলুলার জেল থেকে ভারতে পাঠালেও তাঁকে প্রথমে পুণের যারবেদা এবং পরে ওঁর আবেদন মেনে রত্নগিরি জেলায় নিজের ঘরে থাকতে  পাঠানো হল। এ'ব্যাপারে  সেলুলার জেলের পূর্ব সুপারিন্টেন্ডেন্ট জে এইচ মারে এবং এ মন্টগোমেরির মধ্যে নোট চালাচালির দস্তাবেজ  রয়েছে। তাতে মারে সহানুভূতি দেখিয়েও বলছেন কড়া শর্তের অধীনে সাভারকরকে ছেড়ে দিতে। শর্ত ভাঙলে ফের আন্দামান!
    সাভারকরের সঙ্গে জেলে দেখা করার পর বোম্বাইয়ের গভর্নর জর্জ লয়েড নীতিগত ভাবে ওঁকে শর্তাধীন মুক্তি দেবার পক্ষে বললেন।
    ওঁকে ৬ জানুয়ারি ১৯২৪ জেল থেকে ছেড়ে দিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হল। বলা হল উনি পাঁচবছর প্রোবেশনে থাকবেন এবং কোন রাজনৈতিক কাজকম্মে অংশ নেবেন না। তারপর ওনার আচার-আচরণ রিভিউ করে দেখা হবে। আর রত্নাগিরি জেলার বাঈরে পা রাখবেন না।
    উনি রাজি হলেন। কিন্তু ইংরেজদের সন্দেহ যায় না। 
    বলা হল  আরও দুটো শর্ত আছে, লিখে দাও যে " তোমার ন্যায্য বিচার করা হয়েছে এবং উচিত শাস্তি পেয়েছ" আর " হিংসার পথ নিন্দনীয়"। সাভারকর তাও লিখে দিলেন। (বোম্বে ক্রনিকল, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯২৪)।
    তারপর উনি রত্নাগিরিতে নিজের বাড়িতে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সংসার করতে লাগলেন এবং আন্দামানের স্মৃতিকথা, হিন্দুত্বের থিওরি এবং ছদ্মনামে  হিন্দু সভার জন্য প্রবন্ধ লিখতে লাগলেন। নিজের জেলায় হিন্দু সভা  সংগঠিত করতে লাগলেন। ইংরেজ সরকার বাধা দেয় নি। তবে কোহট এলাকায় দাংগা হলে সরকার তাকে উস্কানিমূলক প্রবন্ধ লেখার জন্যে ওয়ার্নিং দিয়েছিল।
     পাঁচ বছর পরে ১ অগাস্ট ১৯২৯ তারিখে রিভিউ করার পর সরকার তাঁকে মাসিক ৬০ টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু করল(সাভারকরের অধিকৃত ওয়েবসাইট)।
     হ্যাঁ, ১৯৩৭ সাল থেকে ইংরেজ সরকার তাঁর উপর থেকে সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে খোলাখুলি রাজনৈতিক কাজকর্মে সক্রিয় হওয়ার অনুমতি দিল। 
    সাভারকর ইংরেজকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন। বাকি জীবন ইংরেজের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম তো দূর কী বাত, কোন কথাই বলেন নি। 
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন নেতাজি আর তাঁর দাদার সঙ্গে দেখা করেছিলেন শচীন সান্যাল। দুজনেরই বক্তব্য ছিল --এই যুদ্ধের সুযোগে নাজেহাল ইংরেজের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করতে। 
    কিন্তু সাভারকর ভায়েরা তাঁদের হতাশ করলেন।
     সাভারকর চাইছিলেন  হিন্দু যুবকেরা দলে দলে ইংরেজের ফৌজে যোগ দিয়ে যুদ্ধবিদ্যা শিখুক। আগামী দিনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে আসন্ন মহাসমরে কাজে লাগবে। কারণ তখন উনি জিন্নার মত দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রবক্তা হয়ে গেছলেন। 
     
     
  • A | 2405:8100:8000:5ca1::8f:f31c | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৪:১২738272
  • “বিনায়ক সাভারকর তাঁর জীবনের সায়াহ্নেও যে খাঁটি 'বিদ্রোহী' ছিলেন তার পরিচয় এখানে দেব। আমরা জানি, নেতাজি এই বৃদ্ধ বিদ্রোহীর অক্লান্ত তারুণ্য সম্পর্কে নিঃসন্দেহ ছিলেন। তাই তাঁর মতামত জানতে গিয়েছিলেন তিনি দেশ থেকে পালাবার পূর্বে । সাভারকর মন দিয়ে শুনেছিলেন সুভাষচন্দ্রের প্রস্তাব। দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দ্বিতীয়-মহাযুদ্ধের সুযােগ নেবার যে-সংকল্প তিনি করেছিলেন, তা সাভারকরের সাগ্রহ সমর্থন লাভ করেছিল। সাভারকর অনুমােদন না করলেও নেতাজি সে-সুযােগ নিতেন। সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হল যে, অতি প্রাচীন সাভারকর এবং অতি তরুণ সুভাষচন্দ্রের চিন্তাধারা একই গতিবেগে তখনাে প্রবাহিত ছিল। ১৯০৬ সালের সাভারকর ১৯৪০ সালেও ইস্পাতের মত তীক্ষ্ণ’ ঝকঝকে বিদ্রোহী-মনের অধিকারী ছিলেন বলেই তরুণ বিপ্লবী সুভাষ, আগামী কালের বিপ্লবী-মহানায়ক 'নেতাজি' সংগােপনে পরামর্শ চাইতে গেলেন তারই কাছে ভারতের অপর কোন নেতার কাছে নয়।”
    ― ভারতে সশস্ত্র বিপ্লব/ ভুপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত-রায় (অগ্নিযুগের বিপ্লবী)
     
    একা ইনিই নন, অগ্নিযুগের আরো বিপ্লবীদের লেখায় সাভারকরের ভূমিকার সপ্রশংস আলোচনা আছে। গান্ধী বিষয়ে বিরূপতাও আছে। গোপীনাথ সাহার ক্ষেত্রে গান্ধী কি করেছিলেন বহু আলোচিত।  ভগৎ সিংএর কমরেড শুকদেব ফাঁসির আগে গান্ধীকে জেল থেকে লিখেছিলেন যে সংগ্রামের পথ পরিত্যাগ করার জন্য বিপ্লবীদের প্রতি গান্ধী যে প্রকাশ্যে ডাক দিচ্ছেন তার ফলে তাঁদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে এবং দমন করতে সাম্রাজ্যবাদীদের সুবিধা হচ্ছে। তিনি যদি বিদেশী শাসকদের সাথে হাত মেলাতে না চান তবে তাঁর উচিত জেলে বিপ্লবী নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বোঝাপড়ায় আসা অথবা বিপ্লবীদের প্রতি এইসব আহ্বান জানানো বন্ধ করা। গান্ধী এই দুটি বিকল্পের একটিও গ্রহণ না করে শুকদেবের ফাঁসাইর পরে তাঁদের Political assasin বলে অভিযুক্ত করেন।
    .১৯৩১এ গান্ধী স্যার ডার্সি লিন্ডসেকে আশ্বাস দিয়েছিলেন - "সহিংস বিপ্লবী আন্দোলনের বিকাশকে রোধ করার জন্য আমরা অনেকে আমাদের সাধ্যমত সবকিছু করছি।" একই আশ্বাস তিনি ভাইসরয়কেও দিয়েছিলেন এবং ভাইসরয় তার উত্তরে গান্ধীর ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন। চট্টগ্রামে আসানুল্লাকে হত্যার পর গান্ধী ভাইসরয়কে আশ্বাস দেন যে তিনি উন্মাদ তরুণদের রাজনীতির বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছেন।
    দীনেশ গুতের মৃত্যুর পর কলকাতা কর্পোরেশন একটি শোকপ্রস্তাব নিয়েছিল। গান্ধী সেটি নাকচ করতে চাপ দেন। কর্পোরেশনের পরের বৈঠকে মেয়র বিধান রায় বলেছিলেনঃ যেহেতু প্রস্তাবটি মুছে দেওয়া যাবে না, সে জন্য তাঁর মত লিপিবদ্ধ করা হোক যে তিনি মহাত্মার ইচ্ছা অনুসারে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছিলেন। স্টেটসম্যান সোল্লাসে মন্তব্য করেঃ তাঁর অত্যন্ত স্পষ্ট ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে মেয়র রায় প্রস্তাবটির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করেছেন।
     
    আরো উদাহরণ চাইলে দেওয়া যাবে। গান্ধী-নেহরু যে কি জিনিস খোলতাই হবে। আম্বেদকরের গান্ধী বিষয়ে বক্তব্যও খুব স্পষ্ট।
     
    সাভারকর মাসোহারা পেতেন। যাঁদের জীবিকার অধিকার আটকে দেওয়া হয়েছিল (সাভারকরের ব্যারিস্টারশিপ যেমন), সরকার তাদের একটা মাসোহারা দিত। বাঙালী বিপ্লবীদের কেউ কেউ ২০০ টাকা অবধি পেয়েছেন। সাভারকর ৬০ টাকা পেতেন। ওনার হয়তো মাসে তার যথেষ্ট বেশি রোজগারের যোগ্যতা ছিল, যদি ওনাকে সে স্বাধীনতা দেওয়া হত।
     
     
  • Ranjan Roy | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৬:৩৭738273
  • "
    ১.০ "সাভারকর মাসোহারা পেতেন। যাঁদের জীবিকার অধিকার আটকে দেওয়া হয়েছিল (সাভারকরের ব্যারিস্টারশিপ যেমন), সরকার তাদের একটা মাসোহারা দিত। সাভারকর ৬০ টাকা পেতেন। ওনার হয়তো মাসে তার যথেষ্ট বেশি রোজগারের যোগ্যতা ছিল, যদি ওনাকে সে স্বাধীনতা দেওয়া হত।"
     
    --বুঝলাম না। সাভারকর তো সাধারণ মানুষ নন, উনি সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের নেতা বলে ভাবেন। উনি জীবন যাপনের জন্য ইংরেজ সরকারের মাসোহারা নেবেন?
      
    "বাঙালী বিপ্লবীদের কেউ কেউ ২০০ টাকা অবধি পেয়েছেন।
    --যদি দু এক জনের নাম বলে দেন? সেই সব বিপ্লবীরাই কিছু পেয়েছেন যাঁরা একবার জেল থেকে আসার পর বাকিজীবনের মত ইংরেজ বিরোধী রাজনীতি করেন নি। 
    ত্রৈলোক্য মহারাজ , শচীন সান্যাল পান নি। আমার ভুল হলে জানাবেন।
    আর এটা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য যে ইংরেজ সরকার তার বিরুদ্ধে সতত সংগ্রামরত বিপ্লবীদের মাসোহারা দেবেন?  এই ভরসায় যে তাঁরা ইংরেজের মাসোহারা নিয়ে বেঁচেবর্তে থেকে আবার অস্ত্র ধরবেন?
    তাহলে মানতে হয় যে ইংরেজের মতন অমন উদার সাম্রাজ্যবাদী আর দু'টি নেই।
     
    ২.০ 
     ১৯৪০ সাল। সাভারকর তাঁর নজরবন্দী অবস্থান থেকে ছাড়া পেয়েছেন মাত্র তিন বছর আগে।  তখনও তাঁর পরিচয় তিন দশক আগের তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান এবং কালাপানি থেকে ফিরে আসার কারণে সশস্ত্র সংগ্রামের পথিক বলে। তাই সুভাষচন্দ্র তাঁর কাছে গেছলেন। কিন্তু সাভারকর তাঁকে হতাশ করলেন। সেটা সুভাষচন্দ্র এবং রাসবেহারি বোসের জাপান থেকে লেখায় স্পষ্ট। সুভাষচন্দ্রের জাপান গমনে সাভারকরের সমর্থন ছিল?
    তাহলে ১৯৪২ সালের মার্চ মাসে  রাসবিহারী বোস এবং সুভাষচন্দ্র কী লিখছেন দেখুন। নেতাজি তো রাসবিহারী বোসের কাছেই জাপানে গেছলেন।
    রাসবিহারী বসু জাপান থেকে সাভারকরকে এক দীর্ঘ পত্র লিখে অনুনয় করছেন বৃটিশের পক্ষ ছেড়ে ওনাদের সমর্থন করতে। 
     
    "Please do not let your vision  be blurred at the critical moment. -------
    But please do not accept even independence if it would involve India in a war with which she has got nothing to do. --------
    Why not side with Japan and destroy the British power which alone is responsible for the present miserable state of India? (Rath & Chatterjee, Rash Behari Basu, pp.171-74).
     
    সাভারকর ঠিক উল্টোটি করলেন। 
     
    এবার নেতাজির কথা। জুন ১৯৪০ এ নেতাজি গেছলেন সাভারকরের বাড়িতে দেখা করতে। পরে সাভারকর এবং তার শিষ্যরা বলছেন উনিই নাকি নেতাজিকে জাপান যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন!
     
    কিন্তু নেতাজি নিজে ওই সাক্ষাৎকার সম্বন্ধে জার্মানি থেকে একটি বই লিখে কী বলেছেন দেখুনঃ
    "Mr Savarkar seemed to be oblivious of the international situation and  was only thinking how Hindus could secure military training by entering Britain's army in India". (Bose, The Indian Struggle, pp.34)
     
    অন্যের মুখে ঝাল খাওয়ার জায়গায় নেতাজি নিজে সে সময় জাপান থেকে রেডিও ব্রডকাস্টে কী বলছেন শুনুনঃ 
     
    August, 1942
    " I would request Mr Jinnah Mr Savarkar and all those leaders who still think of a compromise with the British to realise once and for all that in the world of tomorrow there will be no British Empire. ----- Supporters of British imperialism will naturally become non-entities in a free India.
    --------------- I will appeal earnestly to all parties and groups to consider this and to think in terms of nationalism and  anti-imperialism, and to come forward and join the epic struggle that is going on". (Bose, Testament of Subhas Bose, pp 21-24). 
     
    সাভারকর নিজে কী চোখে দেখতেন সুভাষচন্দ্র বসুকে? ১৯৩৯ সালের অগাস্টে পুণের এক জনসভায় গান্ধীবাদ, রয়ইজম (মানবেন্দ্রনাথ রায়), এবং বোসইজমের সমালোচনা করে বলেনঃ
    "Bose didi not differ very much from Mahatma Gandhi, except that he went further to woo the Muslims" (Bombay Chronicle, 4 August, 1939). 
  • ♪♪ | 223.29.193.71 | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৬:৫১738274
  • গান্ধী ওভার সাভারকর বা সাভারকর ওভার গান্ধী কখনোই কংগ্রেস ওভার বিজেপি বা বিজেপি ওভার কংগ্রেস নয়। ইডিওলজিকালিও নয়। তুলনা করে করে বাইনারি লড়াইটার পিছনে এই ছুপা রাজনীতিটা আছে। এটার ফাঁদে পড়বেন না। ভেবে দেখুন। 
  • Ranjan Roy | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৮:২৩738276
  • ঠিক বলেছেন  এই  দুজনের তুলনা আপেল ও কমলা লেবু হয়ে যাচ্ছে  ।
    দরকার ওই প্রেক্ষাপট কে তুলে ধরা যেখানে কেউ বীর বা কাপুরুষ নয়,  বরং সময় ও ইতিহাসের কুশিলব  
  • এটাও থাক | 109.70.100.81 | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৮:২৯738277
  • অষ্টম শ্রেণির কন্নড় পাঠ্যবইয়ে লেখা হয়েছে, ‘সাভারকরকে যে সেলে রাখা হয়েছিল তাতে একটি চাবি ঢোকানোর মতো ফাঁকাও ছিল না। কিন্তু সেই সেলে প্রতিদিনই আসত বুলবুলি পাখি। সাভারকর তাদের পিঠে চেপে জেল থেকে বেরিয়ে প্রতিদিন মাতৃভূমি ঘুরে দেখতে আসতেন।’
     
  • Ranjan Roy | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৮:৫২738278
  • সৈয়দ আলাওल এর  पद्मावत হিন্দি কাব্যে সিংহল রাজকুমারী পদ্মার খবর তার পোষা শুক পাখি উড়ে গিয়ে राजस्थान এর মেবারের রানা রতন সিংহ কে পৌঁছে দিল। 
     এটা কাব্যে মানায়,  কিন্তু একে ইতিহাস ভাবলে?
  • dc | 2401:4900:1cd1:a862:fc2c:c136:526:c681 | ২৮ আগস্ট ২০২২ ১৯:৫১738279
  • সে তো এলউইং ও মাঝে মাঝে পাখি হয়ে উড়ে বেড়াত আর সন্ধেবেলা যখন এরেন্ডিল ভিঙ্গিলট এ চড়ে ফিরে আসত তখন এরেন্ডিল এর কাছে উড়ে যেত। বিশ্বাস না হলে টোলকিয়েন এর হিস্টোরি অফ মিডল আর্থ পড়ে দেখুন, সেখানে পস্টো লেখা আছে। তো এলউইং পাখি হতে পারলে সাভারকর পাখির পিঠে চাপতে পারবে, এতে আর আশ্চর্য কি? বীর কি এমনি এমনি হয়েছে? 
  • প্রশ্ন | 2605:6400:30:f49b:e2ee:34f8:c854:6f63 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ০০:২১738280
  • ১। ত্রৈলক্য চক্রবর্তী ও শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কতদিন নজরবন্দী ছিলেন?

    ২। নজরবন্দী থাকাকালীন তাঁদের জীবনধারণ কোন আয়ে চলত?
    ৩। সাভারকার নজরবন্দী দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পেনশন পেতেন?

    সাভারকারের বিরুদ্ধে শচীন্দ্রনাথকে খাড়া করলে শচীন্দ্রনাথের আত্মা শান্তি পাবেন? ইতিহাস কি বলে?

    He (Savarkar) embarked on an extensive tour of the United
    Provinces. Supporters in Lucknow, Agra, Faizabad, Kanpur and Barabanki rose
    in large numbers to welcome him. At Lucknow, he visited his comrade from the
    Cellular Jail times, fellow convict and revolutionary Sachindranath Sanyal. The
    latter threw a party in honour of the distinguished visitor. Sanyal seems to have
    been the active conduit between Savarkar and Rash Bihari Bose in Japan and
    encouraging the two to work more collaboratively. Sanyal and Savarkar had
    been in constant touch since their Cellular Jail days. In fact, in April 1928, when
    Sanyal’s mother Kshirodvasini, who participated in the Kakori conspiracy
    passed away, Savarkar wrote an editorial in her memory, titled, ‘Veer Maa
    Kshirodvasini’, applauding her courage and patriotism

    গান্ধীকে আলোচনা থেকে সরিয়ে রাখাই ভাল কারণ গান্ধীকে দাঁড় করানো খুবই কঠিন কাজ। শচীন্দ্রনাথের খোলা চিঠিতে গান্ধীকে লিখেছিলেন, "I think it is my duty to remind you of the promise you made some time back that you would retire from the political field at the time when the revolutionaries will once more emerge from their silence and enter into the Indian political arena. The experiment with the non-violent non-cooperation movement is now over. You wanted one complete year for your experiment, but the experiment lasted at least four complete years, if not five, and still do you mean to say that the experiment was not tired long enough? ... Further, I would like to point out that you have misjudged the revolutionaries in many respects when you blamed them in your recent presidential address in the 39th Congress. You said that the revolutionaries are retarding India's progress. I do not know what you mean by this word progress. If you mean political progress, then can you deny that every political progress that India has already made, however little that might be, has been made chiefly by the sacrifices and the efforts of the revolutionary party? Can you deny that the Bengal partition was annulled through the effort of the Bengal revolutionaries? Can you doubt that the Morley-Minto reform was the outcome of the Indian revolutionary movement which was mainly though not wholly instrumental in bringing about the Montford reform? I shall not be very much surprised if you will answer these queries in the affirmative but I can assure you that the British government realizes the potentiality of this movement. ..."
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৩:২১738288
  • @ প্রশ্ন
    আপনার দুটো দীর্ঘ ইংরেজি কোটেশনের কোন তথ্যসূত্র দেন নি তো? মানে কার লেখা, কবের কথা বলা হচ্ছে?
    তবু বলছি, প্রথমটি ডাহা মিথ্যে। দ্বিতীয়টি সত্যি। 
     
    দেখুনঃ
    ১ সাভারকর ১৯৩৭ সাল অব্দি রত্নাগিরি  সাল পর্য্যন্ত রত্নাগিরি জেলার বাঈরে পা বাড়াতে পারতেন না। তাহলে ফের জেলে যেতে হত। অতএব ধরে নিতে পারি  সাভারকর তখন উত্তর ভারতে পুরনো সাথীদের (বিশেষতঃ আন্দামান ফেরতদের) সঙ্গে দেখা করছেন। এদিকে শচীন সান্যালও  ১৯৩৭ সাল অব্দি জেলে ছিলেন । কিন্তু কেন?
    সান্যাল অবশ্যই রাসবিহারী বসুর ডান হাত। কিন্তু তিনি সাভারকর ও রাসবিহারী বসুর (জাপানে) যোগসূত্র? এর চেয়ে হাস্যকর মিথ্যে কিছু হতে পারে না। 
    { এব্যাপারে মহারাজের "জেলে তিরিশ বছর" এবং শচীন্দ্রনাথ সান্যালের (তিন ভাগে) "বন্দী জীবন" দেখা যেতে পারে। 
    তখন নেতাজি, ত্রৈলোক্য মহারাজ এবং শচীন সান্যাল একজুট হয়েছেন। নেতাজি দেখা করলেন সাভারকরের সংগে , সমর্থনের আশায়। শচীন্দ্র দেখা করলেন সাভারকরের দাদা বাবা রাও এবং আর এস এস এর প্রতিষ্ঠাতা কেশব হেড়গেওয়ারের সঙ্গে--আশা বিপ্লব প্রচেষ্টায় সমর্থন পাবেন। তিনজনই হতাশ করলেন। সান্যাল এবং মহারাজের লেখাতেই রয়েছে। 
    উপরের পোস্টে দেখিয়েছি --জাপান এবং জার্মানি থেকে রাসবিহারী বোস এবং নেতাজি সেই সময় সাভারকরকে সময় থাকতে  ইংরেজের পক্ষ ছেড়ে জাপানের সমর্থনে স্বাধীনতার লড়াই করতে বলছেন! এ ব্যাপারে নেতাজি জিন্না ও সাভারকরকে একাসনে বসিয়েছেন। 
     
    তারপরও যদি বলতে থাকেন সাভারকরের পরামর্শে নেতাজি এবং রাসবিহারী জাপানে লড়াই করেছেন তো আমি নাচার!
    আরও রয়েছে। আন্দামানে যখন মহারাজ এবং  শচীন্দ্র বন্দী (১৯১৬) তখন সাভারকর, বারীন ঘোষ এবং উপেন্দ্রনাথের ৫ বছর হয়ে গেছে। সবাই অপেক্ষাকৃত আরামে আছেন,  সাভারকর ক্লার্ক -২ হয়েছেন। (ওঁর আন্দামানের স্মৃতি নিয়ে লেখা দেখুন।)  হেমচন্দ্র তেলঘানির চার্জে, বারীন অফিসের দায়িত্ব ইত্যাদি)।  
    মহারাজ ও শচীন্দ্রের আফশোস --এরা কেউ বন্দীদের নির্যাতনের প্রতিবাদের হরতালে যোগ দিলেন না।
     
    কিন্তু দ্বিতীয় কোটেশনটি সত্যি। বিশের দশকে গান্ধীজি এবং শচীন সান্যালের মধ্যে অহিংসা বনাম হিংসার পথ নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ চলে--একের পর এক। গান্ধীজি দুজনের প্রত্যকটি চিঠি ইয়ং ইন্ডিয়া পত্রিকায় প্রকাশ করেন।
     
    ২ 
    ১। ত্রৈলক্য চক্রবর্তী ও শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কতদিন নজরবন্দী ছিলেন?

    ২। নজরবন্দী থাকাকালীন তাঁদের জীবনধারণ কোন আয়ে চলত?
    ৩। সাভারকার নজরবন্দী দশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পেনশন পেতেন?

    সাভারকারের বিরুদ্ধে শচীন্দ্রনাথকে খাড়া করলে শচীন্দ্রনাথের আত্মা শান্তি পাবেন? ইতিহাস কি বলে?
    -------
     
    ১ এবং ২ঃ  দুজনেই ইংরেজ জমানায় জেলেই কাটিয়েছিলেন তিরিশ বছরের মত।ওঁদের লেখা জেলের স্মৃতিগুলো দেখুন। বাংলা, ইংরেজি এবং শচীন্দ্রেরটি হিন্দিতে উপলব্ধ।
     প্রথমজন তো আন্দামানে পাঁচ এবং মান্দালয়ে চার বছর তারপর বঙ্গের বিভিন্ন জেলে। নজরবন্দী হয়ে নিজের জেলার বা ঘরে থাকার সুযোগ কোথায়? এই ছাড়া পাচ্ছেন ফের কোন না কোন কারণে কয়েক মাস বা দুএক বছরের মধ্যে ফের জেলে। 
    বিয়ে করেননি। একটা পেট চালিয়েছেন বন্ধুবান্ধব এবং অনুশীলন সমিতির সহযোগিতায়। কোলকাতার একটি স্কুলে ক'মাস পড়িয়েছিলেন, মাইনে নেন নি।
     শচীন সান্যালের কয়েক ভাই , বৌ বাচ্চা ও মা। চাকরির চেষ্টা করলেন, কিন্তু কোনদিন আন্দোলনে যাবেন না লিখে দেওয়ার শর্ত থাকায় যোগ দিলেন না। ওঁর এক ভাই, সরকারি চাকুরে, পরিবারের দায়িত্ব তুলে নিলেন। ইনিও বারবার গ্রেফতার হলেন। দ্বিতীয় বার ফের কালাপানির শাস্তি পেলেন । ওঁদের বসতবাটি সরকার বাজেয়াপ্ত করে নিল। 
    জেলেই টিবি হয়ে মারা গেলেন।
    আমি ওঁদের দুজনের লেখায় কোথাও ইংরেজ সরকারের থেকে মাসোহারা পাবার কথা পাইনি, যদ্দূর জানি, মুচলেকা না দিলে ওটা পাওয়া যায় না।
    আপনি কোথাও উল্লেখ পেলে জানাবেন। তখন আমার ভুল শুধরে নেব।
     
    ৩ আমি জানি না। কোথাও পাইনি। তবে ওনার নজরবন্দী থাকার সময়েই ওঁর জন্য সাহায্য সমিতি বানিয়ে কিছু চাঁদা (প্রায় ১৪,০০০ টাকা)  তোলা হয়েছিল। সেটা সেই সময়ের হিসেবে অনেক টাকা। ( বিক্রম সম্পতের লেখা সাভারকরের জীবনী "এ কন্টেস্টেড লিগ্যাসি", প্রথম অধ্যায়)।
     আর ছোট ভাই ডঃ নারায়ণ রাও সাহায্য করতেন।
     সাভারকর সঞ্চয়ী ছিলেন। খামোখা খরচা করতেন না। নিজের পরিচিতদের মধ্যে সুদে টাকা ধার দেওয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরে অনেকে তাঁড় টাকা মেরে দেয়। তখন প্রয়াসটি বন্ধ হয়ে যায়। (সূত্রঃ সাভারকরের অধিকৃত ওয়েবসাইট)।
     
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৩:২৬738289
  • বলতে ভুলে গেছি সাভারকর কস্তুরবা গান্ধী মারা গেলেও শোকপত্র লিখেছিলেন। 
     
    আর শচীন্দ্রনাথ সান্যালের মা ক্ষীরোদবাসিনী দেবী কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলায়  যুক্ত ছিলেন? এটা কোত্থেকে লেখা হল? আমি কাকোরি মামলার কাগজপত্র যা দেখেছি বা ঘটনার যা বিবরণ পেয়েছি তাতে এটি অতিরঞ্জিত বলেই মনে হয়।
  • j | 2405:8100:8000:5ca1::df:c499 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৭:৪৩738292
  • রঞ্জন বিক্রম সম্পতের সূত্র দিচ্ছেন, আবার বিক্রম সম্পতের লেখাকে ডাহা মিথ্যেও বলে দিচ্ছেন।
    তাহলে ত্রৈলোক্য চক্রবর্তী বা শচীন্দ্র সান্যাল নজরবন্দী থাকেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে মাসিক ভাতার প্রশ্নটা অপ্রাসঙ্গিক। তাই তো?
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:১৩738293
  • ভাই j, 
    এক,  আপনারা কোথাও বলেন নি যে ওটা সম্পদের বই থেকে নেওয়া।  ওঁর দু'টো খন্ড আমার কাছে  আছে। চেক করে নেব। 
    দুই,  sampat থার্ড person।  যেখানে অন্য কোন contrary view নেই,  সেখানে ওর কথা মেনে নেব। 
    কিন্তু যেখানে ফার্স্ট person,  অর্থাৎ নেতাজি,  रासबिहारी , শচীন সান্যাল,  त्रैलोक्य মহারাজ নিজেরাই sampat এর উল্টো কথা বলছেন তাহলে কার কথা माना উচিত?
    Hearsay evidence is always inferior to first person statement। 
    তিন,  এটা দেখেছেন যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বেশ কিছু historian  England এর ইতিহাসের রয়্যাল সোসাইটি কে  চিঠি লিখে ওর বিরুদ্ধে plagiarism এর অভিযোগ এনে সদস্যপদ খারিজ এর দাবি করেছেন। 
    যথেষ্ট উদাহরণ দিয়ে। 
    সম্পদের আরো মিথ্যে দেখাবো পরের माफ़ीनामा পর্বে। 
  • বেতাল | 2405:8100:8000:5ca1::302:7c47 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৮:৩৩738294
  • বিক্রম মৌচাকে ঢিল ছুঁড়ে দিয়েছে, তাই লেখকদের নাম acknowledge করা সত্তেও plagiarism এর অভিযোগ আনতে হয়েছে সরকারি ঐতিহাসিকদের তরফে। কিন্তু সেই অভিযোগের পরিণামটা? :)
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৯:২২738295
  • আপনি বলুন। 
    বিক্রম দিল্লির আদালত এ  গিয়ে  stay আনার চেষ্টা করে পারেন নি। 
    Plagiarism এর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট international guide লাইন আছে। 
    খালি নাম acknowledge করলে হয় না। 
    কোন ঢিল মারেন নি।  খাসা মিথ্যে কথা লিখেছেন। 
    একটা উদাহরণ ওপরে দিয়েছি। 
     
    নেতাজি নিজে লিখে গিয়েছেন সভারকরের সংগে আলোচনায় ব্যর্থতার কথা।  বিদেশ থেকে apeal করেছেন जिन्ना ও  সভারকর কে  একইসঙ্গে রেখে। 
    সেগুলো চেপে গিয়ে বাণী দিতে হবে সভার করের পরামর্শে रासबिहारी ও নেতাজি  বিপ্লব করছেন!!
    এটা ইতিহাস চর্চা?
    गांधीजी  নাকি  সভারকরের  পিটিশন এর গুরু?
     
  • ## | 2405:8100:8000:5ca1::2e5:a1b6 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৯:৫৬738297
  • Interestingly, Sachin Sanyal was released after he submitted his petition, but Savarkar was not. Sanyal mentioned it as: “मैने जवाब में यह कहा था कि “विनायक दामोदर सावरकर ने भी तो अपनी चिट्ठी मे ऐसी ही भावना प्रकट की थी जैसे कि मैंने की है तो फिर सावरकर को क्यों नही छोड़ा गया और मुझी को क्यों छोड़ा गया?”
    *”दुसरी बात सावरकर के न छूटने मे यह थी कि सावरकरजी और उनके दो-चार साथियों की गिरफ्तारी के बाद महाराष्ट्र में क्रांतिकारी आंदोलन समाप्त-सा हो गया था इसलिये सरकार को यह डर था कि यदि सावरकर इत्यादि को छोड दिया जय तो ऐसा ना हो की फिर महाराष्ट्र में क्रांतिकारी आंदोलन प्रारंभ हो जाए।”*
     
    That is, “I said in response that Vinayak Damodar Savarkar had also expressed the same sentiments in his letter as I did, then why Savarkar was not released and why was I released?
    The second thing in Savarkar’s absence was that after the arrest of Savarkarji and his two or four companions, the revolutionary movement in Maharashtra had ended, so the government was afraid that if Savarkar, etc. Then the revolutionary movement should start in Maharashtra.”
  • Ranjan Roy | ২৯ আগস্ট ২০২২ ২০:৪৫738298
  •  
    ১  
    বিক্রম ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি হাইকোর্টে  ২ কোটি টাকার মানহানির মামলা করলেন তিনজন আমেরিকা স্থিত অ্যাকাডেমিশিয়ানের বিরুদ্ধে।  আর চাইলেন পার্মানেন্ট ইঞ্জাংকশন। কোর্ট সেটা না দিয়ে   এ নিয়ে বিক্রমের বিরুদ্ধে টুইটারে  আর কিছু লিখতে ওই তিনজনকে মানা করল।
    হাইকোর্ট ফেব্রুয়ারি ২৪ তারিখে  টুইটারকে অড্রে টুশ্চকের ৫টি টুইট নামিয়ে দিতে বলল।
     
    ওরা না শুনে আরও লিখতে লাগল এবং পভিযোগের সমর্থনে বিশ্বের  ৭৫ জনের দস্তখত নিল।
     
    বিক্রম ৪ মার্চে হাইকোর্টে ওই সামুহিক পিটিশনে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বললেন। 
    হাইকোর্ট  অস্বীকার করে বলল-- " you cannot curtail discussion in the academic world.  Your cause of action is only qua the defendandts who are allegedly defaming you, so for that the court has passed an order but if the academicians of the world are of the view that you had plagiarized or something, you cannot get an injunction against 1000 people who are talking about this", said justice Amit Bansal.. 
    বিক্রম চাইলেন ঐতিহাসিক অড্রের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করিয়ে দিতে।
    জাস্টিস বনসাল বললেন -- কিছু অ্যাকাডেমিশিয়ান are of the view that you have plagiarized--see ultimately you vcannot stop the world.  --- I am not going to pass any order.আমি এটায় কোন অন্যায় দেখছি না। তুমি পালটা কিছু অ্যাকাডেমিশিয়ানের দস্তখত নাও। ফলে ২৮ জুলাই বিক্রমের  মানহানির মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। ( ৫ই মার্চ, ২০২২, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)
     
    ২ 
    ঐতিহাসিক জানকী বাখলে বিক্রমএর লেখা সাভারকরে জীবনীর প্রথম খন্ডএর কয়েক বছর আগে সমীক্ষা করেছিলেন।
     কিন্তু ২০১৭ সালে উনি বিক্রমের ২০১৭ সালে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন জার্নাল প্রকাশিত সাভারকরের উপর একটি পেপার পেয়ে দেখলেন  বিক্রম বেশ কিছু অংশ তাঁর পেপার ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে সোশ্যাল হিস্ট্রির খন্ড ৩৫, নং ১ (পৃঃ ৫১-৭৫) থেকে উপযুক্ত ঋণ স্বীকার না করে উদ্ধৃত করেছেন। 
    "Sampath has used my words in 4 of the 5 pages of his essay (pp 37, 38, 39 and 40). In this five -page essay, ent ire sentences of mine appear without quotation marks around them, a footnote, or citation". 
     
     জানকী আরও বলছেন যে ওই প্রবন্ধের নীচে ১৩ টি ফুটনোট রয়েছে, কিন্তু কোথাও জানকী বাখলের নাম নেই। পড়লে মনে হবে যেন এগুলো সম্পতের নিজের বক্তব্য। জানকী   "Turntin"  প্রোগ্রাম দিয়ে চেক করে পেয়েছেন যে সম্পতের লেখাটির ৫২% বিনা ঋণ স্বীকার করে ওঁর এবং অধ্যাপক বিনায়ক চতুর্বেদীর লেখা থেকে নেওয়া। 
    বিক্রম বলছেন উনি পেছনে যে বিবলিওগ্রাফির লিস্ট দিয়েছেন তাতে জানকীর বইয়ের নাম রয়েছে।
    জানকী বলছেন এটা সঠিক পদ্ধতি নয়। বিক্রম যা করেছেন অ্যাকাডেমিক ওয়ার্ল্ডের যে কোন মাপকাঠিতে এটা বিশুদ্ধ প্লেজিয়ারিজম। (ফ্রন্টলাইন , ১৮ই মার্চ)।
  • :) | 2605:6400:30:f414:42ce:c612:dab8:1337 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ২১:২১738299
  • কোর্ট হঠাৎ ঔরঙ্গজেবের নাতনির টুইট নামিয়ে দিতে বলল কেন? বিক্রম টুকেছে বলে?
  • ক্রোনোলজি | 2405:8100:8000:5ca1::135:75fc | ৩০ আগস্ট ২০২২ ১০:০১738300
  • সাভারকার উনিশশো একুশে আন্দামান থেকে ছাড়া পেলেন। এবার রত্নগিরি জেলে বন্দী।
    নো পেনশন।
    উনিশশো চব্বিশে রত্নগিরি জেল থেকে ছাড়া পেলেন। ৫ বছরের জন্য রত্নগিরি জেলায় নজরবন্দী।
    নো পেনশন। (পেনশনের আবেদন প্রত্যাখ্যাত)
    উনিশশো উনত্রিশ। ৫ বছরের মেয়াদ বেড়ে ১৩ বছর।
    পেনশন চালু। (১০০ টাকা পেনশনের আবেদন, সরকার মঞ্জুর করল ৬০ টাকা)
    উনিশশো সাঁইত্রিশ। মুক্তি।
    পেনশন বন্ধ।
  • পলিটিশিয়ান | 2603:8001:b143:3000:36e0:b699:a387:9ffc | ৩০ আগস্ট ২০২২ ১০:০৭738301
  • Bulbuli | 2405:8100:8000:5ca1::110:79f6 | ৩০ আগস্ট ২০২২ ১০:১১738302
  • Yes, speaking of birds, I am reminded of bulbuls, the Indian nightingales, in the
    Andamans. Their melody was a real joy to my heart. They are very beautiful birds
    indeed. Tiny, well-proportioned, and alert. How playful and how sweet is their music,
    how quick their movements. Swarms of them hovered over the heaps of coconut fruit and
    swooped down upon them. They picked and ate the pieces to their fill. They continuously
    chirped round and about our chawls. The bulbuls entertained me when there was nothing
    else to entertain. I could even know their language and that of the jay or maina. The ten to
    fifteen notes of the maina I could clearly follow. So soon as the note fell upon my ears, I
    at once recognised it. The notes were different for different moods. A simple note; a note
    of hide and seek; a note of deep yearning; a note of alarm and fear; a note of deep
    happiness and peace; a note of passionate love; of motherly love and affection; of invitation
    to the mate; of ultimatums; and last of fierce fight and finale—I had learnt and
    mastered them all. They were regular like words of human speech. I could not teach them
    my language but they taught me theirs, Prisoners, were not allowed to cage a bird as
    their companion. It was an offence. Or else I could have kept them in my room. I would
    have taught them songs of patriotism. And then! Why, other prisoners would have
    directed enquirers to my room as the great Shankaracharya was directed to the house of
    the learned Mandan Mishra, by pointing it as a house that had in its window a parrot and
    a maina discussing Vedanta! If a bulbul came in search of my cell, the prisoners would
    have guided it by saying, "Behold the room at the bar of which the maina and bulbul sing
    their songs of patriotism and freedom, and know that it is the cell of the revolutionary
    Savarkar."
  • Ranjan Roy | ৩০ আগস্ট ২০২২ ২০:০৪738304
  • আরে মোবাইলে পড়তে গিয়ে কিছু পোস্ট মিস করে গেছি।
    এক এক করে।
    @##
    "Interestingly, Sachin Sanyal was released after he submitted his petition, but Savarkar was not. Sanyal mentioned it as: “मैने जवाब में यह कहा था कि “विनायक दामोदर सावरकर ने भी तो अपनी चिट्ठी मे ऐसी ही भावना प्रकट की थी जैसे कि मैंने की है तो फिर सावरकर को क्यों नही छोड़ा गया और मुझी को क्यों छोड़ा गया?”
     
    --আবার সেই সোর্স উল্লেখ না করে উদ্ধৃতি এবং অর্ধসত্য়। এর  চাষ মিথ্যার থেকে খারাপ।
    বোঝা যাচ্ছে আপনি শচীন্দ্রনাথ সান্যালের "বন্দী জীবন" বইটি পড়েন নি। আগা মাথা ছেঁটে প্রেক্ষিত বাদ দিয়ে চেরি পিকিং করলে এই ভুলটা হয়। যদি ক'টা পাতা আগে এবং  ক'টা পাতা পড়ে দেখতেন তাহলে বুঝতেন-- শচীন্দ্রনাথ সান্যাল আদৌ কোন মাফ চেয়ে পিটিশন জমা দেন নি।
     দেখুন, আসলে শচীন কী বলেছেনঃ
    ১.০ প্রথম বিশ্ব মহাযুদ্ধ শেষ হলে একদিকে মন্টেগু চেমসফোর্ড কন্সটিট্যুশনাল রিফর্ম ঘোষণা হল। আরেকদিকে  ইংলণ্ডেশ্বর সম্রাট উপনিবেশের বিভিন্নজেলে আম মাফি ঘোষণা করতে লাগলেন। বর্মার জেলে অনেক বন্দীদের ছাড়া হল। আন্দামানের জেলার বললেন তোমরাও ছাড়া পাবে। (পৃঃ ২৩১ থেকে দেখুন)। 
       শেষে পাঞ্জাবের মার্শাল ল'র ১৮ জন বন্দী এবংলাহোর ষড়যন্ত্র মামলারে শচীন সান্যাল আর মুরারিপুকুর বোমার মামলার বারীন্দ্র, উপেন্দ্র এবং হেমচন্দ্র একসঙ্গে ছাড়া পেলেন।  ছেড়ে দেওয়ার সার্টিফিকেটে লেখা হল ছাড়ার কারণ সম্রাটেরে আম ঘোষণা। (পৃঃ ২৩২)।
     
    ছাড়া পাওয়ার পর কোলকাতা পৌঁছে দেখা করলেন বিখ্যাত ব্যারিস্টার বি সি চ্যাটার্জির সঙ্গে।  উনি রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জির জামাই। 
    উনি অহিংস পথে বিশ্বাসী কিন্তু অল্পবয়েসী বিপ্লবীদের ভালবাসতেন এবং বিনে  পয়সায় তাঁদের মামলা লড়তেন। আর বোঝাতেন যে হিংসার পথ থেকে সরে এসে আন্দোলন কর।
     চ্যাটার্জি তখন তাকে একটি চিঠি দেখালেন যেটা শচীন নিজের ভাইকে লিখেছিলেন। তাতে বলেছিলেন যে যেমন শুনছি মন্টেগু রিফর্ম হলে আমরাও ফ্রান্স ইত্যাদির মত  দেশের উন্নতির জন্যে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ পাব। সত্যি যদি অমন হয় তাহলে ইংলন্ডের উচিত রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়া। কারণ আমরা তো আর পাগল নই যে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পেলে বোমা-বন্দুক নিয়ে লড়াই করতে যাব।
      চ্যাটার্জি সেই ভাইকে লেখা চিঠিটি নিয়ে সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জিকে দেন। সেটি দেখিয়ে সুরেন্দ্রনাথ অ্যাসেম্বলিতে রাজবন্দীদের মুক্তির জন্যে জোরদার বক্তৃতা করেন। (পৃঃ ২০৬)।
     
     তারপর ইউপির মেইনপুরীতে একটি মামলায় ওকালত করতে গেলে ওনার বড় পুলিশ অফিসার স্যান্ডার্সের সঙ্গে দেখা হয়। উনি বিপ্লবীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতেন। ঠিক সেই সময় ইংলন্ডের সম্রাটের রাজবন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা প্রকাশিত হয়। 
    তখন চ্যাটার্জি সেই প্রেক্ষিতে ভাইকে লেখা সান্যালের  চিঠিটি তাকে দেখালে তিনি বলেন যে এতে ছাড়া যাবে না।  ওঁর মাকে দিয়ে একটা পিটিশন লেখাতে বল। তার উপর তুমি ত্রেকমেন্ডেশন লিখে দাও, আমিও কিছু লিখব। 
     এসব কথা সান্যাল ছাড়া পাওয়ার পর চ্যাটার্জির অফিসে শুনলেন। (পৃঃ ২১৬)।
     
    এদিকে সান্যালদের সম্স্ত সম্পত্তি বসতবাটি সরকার দখল করে নিয়েছে (পৃঃ ২১৪)। 
     সান্যাল নাগপুর কংগ্রেসে গিয়ে অন্য রাজবন্দীদের মুক্তি চেয়ে মঞ্চ থেকে হিন্দিতে মর্মস্পর্শী ভাষণ দিলেন। বসে ছিলেন সাভারকরের ছোট ভাই ডাক্তার নারায়ণ রাও  সাভারকরের সঙ্গে। 
    আবার গান্ধীজি ওই চুক্তির বিরোধিতা করে এটা চলাকি বলে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। পাবলিক তখন
      রাজবন্দীদের মুক্তি নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয়। (পৃঃ  ২১৮)।
     
    কোলকাতায় ব্যারিস্টার বি সি চ্যাটার্জি শচীনকে বললেন --ছাড়া তো পেয়েছ, এবার হিংসার পথ ছেড়ে মন্টেগু -চেমসফোর্ড রিফর্মের হিসেবে দেশের জন্যে কাজ করতে লেগে যাও।
    তখন শচীন সান্যাল  বি সি চ্যাটার্জিকে বললেন বিনায়ক সাভারকরের মুক্তির জন্যে কিছু করতে। যুক্তি হিসেবে বললেন-- আমি ওই চিঠিটাতে  যা বলেছি, সাভারকরো তাঁর চিঠিতে প্রায় তাই বলেছেন। আমি যখন মুক্তি পেয়েছি তাহলে তাঁকে কেন ছাড়া হবে না? (পৃঃ ২২৬)।
     
    শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কোন পিটিশন দেন নি। ভাইকে চিঠি লিখে নিজের রাজনৈতিক মত জানিয়েছিলেন।
    সাভারকর ছ'টা পিটিশন দিয়েছিলেন। ইংরেজ সম্রাটকে । আর পিটিশনের ভিত্তিতে কেউ ছাড়া পায় নি।  পেয়েছে  সম্রাটের বিশ্ব যুদ্ধ শেষ হোয়ার সেলিব্রেশনে আম মাফি ঘোষণার ফলে।  ঠিক যেমন মোদীজি এবার ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসের অমৃত মহোতসবে আম মাফির ঘোষণা করলেন এবং অনেকে মুক্তি পেল।
    কিন্তু মোদীজির পলিসিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে রেপ ও মার্ডারের চার্জ থাকলে তাদের এতে মাফ করা যাবে না।
     সাভারকরের বারবার ছাড়া না পাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে শচীন লিখেছেন-- ওঁর বিরুদ্ধে চার্জ হল লন্ডনে এবং মহারাষ্ট্রে দুই ইংরেজ রাজপুরুষের হত্যার চক্রান্ত এবং অস্ত্র জোগান দেওয়া। তাই ঠিক মোদীজির মত ইংরেজ সরকারও ওনাকে ছাড়ে নি। এবং বিশ্বাস করে নি। ভাবত ছাড়া পেলে মহারাষ্ট্রে আবার কিছু না করে!
  • | ৩০ আগস্ট ২০২২ ২১:৫৮738305
  •  
    @j | 2405:8100:8000:5ca1::df:c499 | ২৯ আগস্ট ২০২২ ১৭:৪৩
    "রঞ্জন বিক্রম সম্পতের সূত্র দিচ্ছেন, আবার বিক্রম সম্পতের লেখাকে ডাহা মিথ্যেও বলে দিচ্ছেন।
    তাহলে ত্রৈলোক্য চক্রবর্তী বা শচীন্দ্র সান্যাল নজরবন্দী থাকেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে মাসিক ভাতার প্রশ্নটা অপ্রাসঙ্গিক। তাই তো"?
    --একেবারেই না। আমি কোথায় সম্পতের সূত্র দিয়েছি? দেখান তো!
     আপনারা ধরে নিচ্ছেন কেন ? 
    ওপরে যিনি সূত্র না বলে কারও লেখা কোট করেছেন--মনে হচ্ছে হয়ত সম্পত--যাতে শচীন্দ্রনাথের পিটিশনের ভুয়ো  গল্প ছড়ানো হচ্ছে। 
     
    আমার সাভারকরের উপরে আকর গ্রন্থ হচ্ছে বৈভব পুরন্দরের লেখা " Savarkar, The true story of the father of Hindutva" , দিল্লির Juggernut প্রকাশন থেকে ২০১৯ সালে প্রকাশিত। বইটির প্রশংসা করেছেন বর্তমান নীতি আয়োগের ইকনমিক অ্যাডভাইসার বিবেক দেবরায়, বাজারপন্থী ইকনমিস্ট গুরুচরণ দাস এবং লাল্কৃষ্ণ আডবাণীজির প্রাক্তন সহকর্মী সুধীন্দ্র কুলকার্ণি।  লেখক বৈভব কুলকার্ণি টাইমস আফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ডেপুটি এডিটর। বইটিতে প্রচুর অরিজিনাল মারাঠি দস্তাবেজ এবং অন্য রেফারেন্স দিয়ে এক ব্যালান্সড অ্যাপ্রোচ নেওয়া হয়েছে। সেই সময়ের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। এবং সবার কথা অন্য ক্রস রেফারেন্স দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। 
     এছাড়া আমার রেফারেন্স হল সাভারকরের মূল লেখা -- হিন্দুত্ব; হিন্দু-পাদশাহী, সিক্স গোল্ডেন ইপোক অফ ইন্ডিয়ায় হিস্ট্রি। তারপর বারীন ঘোষ , উপেন্দ্রনাথ, --এই দু'জনের আন্দামানের স্মৃতি এবং শচীন্দ্রের 'বন্দী জীবন'। 
    তারপর রয়েছে ধনঞ্জয় কীরের লেখা সাভারকরের বিশাল এক জীবনী, প্রায় ভক্তের ্রচোখ দিয়ে দেখে লেখা। বিনা প্রশ্নে সাভারকর পঞ্চাশ বছরের পুরনো  ঘটনা যা বলছেন মেনে নেওয়া। অবশ্যই বিক্রম সম্পতের দুই ভল্যুম। 
    আরও রয়েছে সদ্য প্রকাশিত ড ঃ বিনায়ক চতুর্বেদীর সাভারকরকে নিয়ে  বইটি--হিন্দুত্ব অ্যান্ড ভায়োলেন্স। অশোক কুমার পাণ্ডের হিন্দিতে সাভারকর চর্চার বইটি। 
    মাসিক ভাতার প্রশ্ন?
     
    পরে পোস্ট  করেছি।
  • হেহে | 2405:8100:8000:5ca1::356:760e | ৩০ আগস্ট ২০২২ ২৩:৪২738306
  • এদিকে গণেশ ঘোষ জানাচ্ছেন সবাইকেই মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেতে হয়েছিল। সরকার সেই শর্তই দিয়েছিল সে সময়। কাকে বিশ্বাস করবেন বলুন? তবে মুক্তির পরেও দেশে এনে প্রথমে জেলে তিন বছর আবার নজরবন্দি করে তের বছর রাখা মানে সে লোক সরকারের পরম বশ্য তো বটেই।
  • স্বাতী রায় | 117.194.43.128 | ৩১ আগস্ট ২০২২ ০০:৩৪738307
  • শচীন্দ্রনাথ সান্যালের বন্দীজীবনের কোন বাংলা বা ইংরাজি অনুবাদ আছে? আমি অনেকদিন ধরেই খুঁজছি আর খালি হিন্দি ভারসনটা পাচ্ছি। এদিকে আমি হিন্দি পড়তে মোটেই স্বচ্ছন্দ নই। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন