এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো  summer24

  • মহারাজ ছনেন্দ্রনাথ ও মার্কণ্ডেয়র চিঠি

    রমিত চট্টোপাধ্যায়
    গপ্পো | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | ৬৮৩ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৫ জন)

  • অলংকরণ: রমিত চট্টোপাধ্যায়



    এক ঝিমধরা চৈত্রের আধবিকেলে ভুরুদুটো কুঁচকে ও মুখটা গোমড়া করে মহারাজ ছনেন্দ্রনাথ ওরফে ছেনু একলা ছাদে উঠে বসেছিলেন আর মাঝেমাঝে আকাশের দিকে তাকিয়ে কি জানি কি ভাবছিলেন। হাওয়ায় এখনো গরম তেমন নেই, সূর্যটা ঝাপসা মেঘে ঢাকা কিন্তু চারদিকে একটা গুমোট ভাব চেপে বসেছে। এমনি সময় কাঁধে কেউ একটা এসে হাত রাখায় মহারাজ পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলেন, এ হল তাঁর পেয়ারের কোটাল বেনারসিপ্রসাদ যাকে তিনি আদর করে বেনা বলে ডাকেন।
    -কি হল বাবু, একলা ছাদে এসে বসে আছো, যাও যাও খেলোগে যাও।
    -আমার আর ভাল্লাগে না।
    -ভাল্লাগেনা? কেন কি হয়েছে?
    -এই দ্যাখো, একটা নতুন বছর আসছে, চারদিকে সবাই কত রকম আনন্দের জিনিস করছে, হুল্লোড় পাকাচ্ছে, মেলাও হচ্ছে কত। আমায় কেউ কোত্থাও নিয়ে যায়না।
    -আচ্ছা তোমায় এবার মেলা ঘুরতে নিয়ে যাবখন।
    -শুধু তাই নয়, দ্যাখো লালবাড়িতে কি সব খাওয়া দাওয়া, হইচই কত কিছু হবে, ওরা ম্যারাপ বাঁধছে, কোত্থেকে সব রসুইকর, হালুইকর ডেকে এনেছে, কি জমজমাট কান্ড ! আমাদের বাড়িতে কোনো আনন্দ আছে? মনেই হচ্ছে না নতুন বছর আসছে।
    -আঃ, লালবাড়ির সব ইয়াব্বড়ো ব্যপার, ওদের সাথে মেলালে হবে?
    -কেন হবে না! বদ্দি তো বলতো, আমাদের বাড়িতে নাকি আগে নতুন বছরে খুব ধুমধাম হতো, কত্ত খাওয়া দাওয়া, দূর দূর থেকে লোক আসত, বাড়ির সবার নাকি তিনটে করে জামা হত, সেসব কি তালে মিথ্যে?
    -তখন তো বাবুজি ছিলেন, (বাবুজির নাম করলেই বেনা একবার করে মাথায় হাত ঠেকায়), তখন আলাদাই ঠাটবাট ছিল, তখনকার ব্যাপার স্যাপার অন্যরকম।
    -এখন নেই কেন? আমি কি চলে যেতে বলেছি, বলো? খুব বাজে লোক।
    -অমন করে বলে না, দোকানটা থাকলে বাবুজি কি আর যেতেন, অত সাধের দোকান, কত লোক খেতে আসত জানো? সারাক্ষণ গমগম করত। তার পাশে লালবাড়িও ফিকে হয়ে যেত। দোকানটা চলে যাওয়ার দুঃখেই তো বাবুজি চলে গেলেন এত তাড়াতাড়ি। শরীর আর দিচ্ছিল না।
    -বেনা, কেন হল এইসব, বলোনা। বাড়ির কেউ আমায় তো কিছু বলেই না। দোকানের অতগুলো লোক কোথায় গেল।
    -তারা সবাই তো নানান জায়গায় কাজে লেগে গেছে। কিন্তু একটা লোক রয়ে গেছে, এই যে আমি। আমি বাবুজিকে কথা দিয়েছিলাম, তোমাদের পাশে সবসময় থাকব।
    ছেনুর গলায় কি একটা দলা পাকিয়ে আসতে থাকে, তবু ঢোক গিলে বলে, আচ্ছা বেনা, দোকানটা থাকলে আমাদের এত কষ্ট হতো না তাই না? তখন যা ইচ্ছে তাই খেতে পারতাম। আমি গিয়ে বলতাম, আর তুমি চট করে বানিয়ে নিয়ে আসতে?
    -আমি কি করে বানাব বাবু, আমি তো রেস্টুরেন্টের কেয়ারটেকার ছিলাম, রাঁধুনিরা খাবার বানাত।
    -তাহলে কি আমি কোনদিন একটুও ভালোমন্দ খেতে পারবো না? রোজ ওই ট্যালট্যালে ঝোল আর আলু পটলের ঘ্যাঁট? নতুন বছরেও?
    -এ তো ভারী অন্যায়! বাবুর হুকুম যখন, তাহলে তো এর একটা বিহিত করতেই হবে। আচ্ছা দাঁড়াও, আমি দেখছি কি করা যায়। তুমি আর একলা ছাদে বসে থেকো না, যাও একটু খেলেধুলে এসো।

    ছেনু সেই আশ্বাসবাণী শুনে উদাস মনে কি একটা ভাবতে ভাবতে সেদিনের মতো সিঁড়ি দিয়ে নেমে খেলতে চলে গেল।

    দুদিন পর সন্ধ্যেবেলা এদিক সেদিক থেকে ঘুরে আর খেলে এসে ছেনু যখন ক্লান্ত হয়ে খাটে শুয়ে পড়েছে, এমনি সময় বেনা এসে হাজির, "বাবু! জবরদস্ত খাওয়ার খোঁজ এসেছে, জলদি ওঠো!"

    খাবারের নাম শুনেই ছেনু তড়াক করে উঠে বসে, কই কই? বেনা এসেই একটা কাপড়ের ব্যাগ খাটের উপর উপুড় করে দিল। গাদা গাদা রঙবেরঙের চিঠিতে বিছানা ভরে যাওয়ার জোগাড়। ছেনু চমকে উঠে বলে, এত চিঠি! কে পাঠিয়েছে?

    বেনা মুচকি হেসে বলে, পড়ে দেখই না। ছেনু চট করে একটা খাম তুলে পড়তে শুরু করে, ইংরেজিতে কিসব লেখা, ইংরেজি এখনো কিছুটা খটমট ঠেকে, তাই একটুখানি পড়ে, আরেকটা বাংলা চিঠি খুঁজে পড়া শুরু করল। কি একটা জয়লক্ষ্মী পেপার ট্রেডার থেকে পাঠিয়েছে। আরেকটা তোলে, নিরুপমা জুয়েলারি হাউস। একটাতে মুখার্জী ফ্যাশন তো আরেকটায় পেয়ারেলাল এন্ড সন্স। এরকম আরো বহু বহু চিঠি এসে জমা হয়েছে, দত্ত জুয়েলার্স, পাল বুক শপ, সি সরকার জহুরী, পূর্ণচন্দ্র চন্দ্র, কাত্যায়নী পুস্তক ভান্ডার, এইচ সি লাহা, হরিসাধন স্যুটিং শার্টিং, ছায়াবাণী পাবলিশার্স এরকম নামী ও অনামি বহু বহু দোকান থেকে। প্রেরক নানান জন হলেও প্রাপকের নাম সব চিঠিতেই এক। মার্কণ্ডেয় না মার্ক অ্যান্টনী কি একটা লেখা।

    ছেনু ভুরু কুঁচকে বলে, এ তো খালি চিঠি! খাবার কোথায়? আর এত চিঠি তুমি পেলেই বা কোত্থেকে?
    -আরে সবকটাই হলো নেমন্তন্নের চিঠি, সবাই আমাদের খেতে ডেকেছে পয়লা বৈশাখে।
    -সেতো মার্কণ্ডেয়কে না কাকে একটা ডেকেছে, আমাদের কই ডেকেছে? দুম করে গেলে যদি বের করে দেয়!
    -অ্যাঁ! কি বললে? মারকাণ্ডে টা আবার কে? মারকাণ্ডে না, ওটা মার্কেন্টাইল ব্যাংক। এরা সব মার্কেন্টাইল ব্যাংক মানে, তোমাদের বাড়ি থেকে ঢিল ছুঁড়লেই যে মস্ত বড় বাড়িটা, আগে যেখানে তোমাদের দোকান ছিল, সেই ব্যাংকেরই কাস্টমার। সবাই তাই পয়লা বৈশাখে ব্যাংকের ম্যানেজারকে নেমন্তন্ন করেছে।
    -সে চিঠি তোমার কাছে এল কী করে ?
    -আরে বাবা, ভুলে গেলে! আমি তো ওই ব্যাংকেরই পিওন। ম্যানেজার বাবু আর ব্যাংকের লোকেরা তো ওদিন দোকানে টোকানে অত যায় না, তাই সব চিঠি আমাকে দিয়ে দিয়েছে। আর বলেছে পারলে কিছু প্যাকেট ওদের জন্য আনতে।
    -আমরা যাবো?
    -হ্যাঁ, যাবো না, এত ভালবেসে নেমন্তন্ন করেছে, না গেলে হবে, বলো?
    -দারুণ দারুণ খাওয়া দাওয়া হবে ?
    -সেদিন গিয়ে দেখতেই পাবে।

    সেই থেকে ছেনুর মনটা খালি লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে। ভাবছে, যাক নতুন বছরে অন্তত একটা জম্পেশ খাওয়া তো হবে, কথায় বলে 'ভোজ কয় যাহারে'। এমনি করে লাফাতে লাফাতে ক্যালেন্ডারের নিয়মে কিছুদিনের মধ্যেই চৈত্রের শেষ দিন এসে হাজির হল, সেদিন ছেনু থেকে থেকেই শুনতে পাচ্ছে নতুন বছর যেন একেবারে দরজায় এসে কড়া নাড়ছে আর রকমারি খাবারের লোভ দেখাচ্ছে। মা, বদ্দি আর ছোদ্দি মিলে আলমারির পুরোনো জামাকাপড়গুলো বের করে গোছাচ্ছে। বড়দা গেছে কোনো একটা বন্ধুর বাড়িতে। ছোড়দা আজকেও মুখে একইরকম নিঃশ্চুপ এক্সপ্রেশন নিয়ে একটা ঢাউস বই খুলে পড়ছে। (ছোড়দা কে পাঠকদের মনে আছে নিশ্চই, আর না থাকলে নো চিন্তা, চট করে ছনেন্দ্রনাথের আগের পর্বটা একবার পড়ে নেবেন গিয়ে) ছেনু ভাবে নতুন বছর, দোল, পুজো কিছুই কি এর মনে কোনো দাগ ফেলে না! এ কি মানুষ? সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে একবার সত্যি সত্যিই কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনতে পেল, প্রথমে অতটা গা করেনি, তারপর দরজা খুলে দেখে কোটাল বেনারসিপ্রসাদ স্বয়ং এসে উপস্থিত। ছেনু তো অবাক, আজকেই যাওয়া নাকি? বেনা হেসে বলে, না না, সে তো কাল। আজ চলো তোমায় চড়ক দেখিয়ে আনি।
    -চড়ক কি জিনিস?
    -সে কি! চড়ক দেখোনি, ওই যে খুঁটির মাথায় লোকে বনবন করে ঘোরে। দোলনা মাঠে হচ্ছে তো, চলো দেখে আসি।

    ছোড়দা বই থেকে চোখ না সরিয়েই আলগা গলায় ফুট কাটল, তুই আবার চড়ক দেখবি? পারবি? তুই যা ভয় পাস। ওখানে কিন্তু শিক ফোটানো, রক্তারক্তি এসব হয়। ভয় পাবিনা তো? আচ্ছা যা, দেখে আয়।

    ব্যস, তাতেই যা হওয়ার হয়ে গেল। ছেনু অন্যান্য বিষয়ে ভীষন সাহসী হলেও, ওর একটাই বিষম ভয়ের জায়গা - তা হলো ভয় পাওয়ার ভয়। কেউ যদি বলে এখানে গেলে ভয় পেতে পারো, বা ওটা দেখলে ভয় লাগবে, নিমেষে ছেনু মহারাজ সেখান থেকে চোঁ চাঁ। ছেনুকে কিছুতেই আর সেদিন চড়ক মেলায় নিয়ে যাওয়া গেল না, বেনার শত বোঝানোও বিফলে গেল। শেষমেশ রণে ভঙ্গ দিয়ে ও কাল বিকেলের খাদ্য অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে বেনা বিদায় নিল। ছোড়দাও মুচকি হেসে আবার বইতে মনোনিবেশ করল।

    যাইহোক, পরের দিন সকাল হতেই চড়কের সম্ভাব্য ভীতির কথা ভুলে ছেনুর মনে আবার কাড়া নাকাড়া বেজে উঠেছে। সকালে অল্প একটুখানি মুড়ি ছাড়া কিছুই খেল না, আবার অন্যদিন যাকে ডেকে ডেকে চানে পাঠানো যায় না, টক করে বাধ্য ছেলের মতো চানে চলে গেল। চানে যাওয়ার আগে মা আবার কি একটা সবজেটে বাটা মতো ধরিয়ে ভালো করে গায়ে ঘষে চান করতে বলে দিয়েছে। ওটা আসলে নিম পাতা আর কাঁচা হলুদ বাটা, কিন্তু পেছনেই একটা গাছ থাকার সুবাদে হলুদের তুলনায় নিম পাতা বেশি হয়ে গিয়ে ওরম কালচে সবুজ বর্ণ ধারণ করত। তা ছেনু সেসব গায়ে খুবসে ঘষে চান করে ফেলল। চান করে, চুল টুল আঁচড়ে এবার কি পরবে? আগের বার পুজোয় তেতলার দাদা ছেনুকে একটা ভারি সুন্দর জামা দিয়েছিল, মায়ের বকুনিতে ছেনু ওটা তোলা তোলা করে পরতো। সেইটাই আজকের জন্য মনোনীত হল, সাথে একটা আপাত শোভন হাফ প্যান্টুল। দুই দিদিও একে একে চান করে নিয়েছে, বদ্দি আজ পরেছে শাড়ি, ছোদ্দি একটা পরিষ্কার দেখে ফ্রক। বড়দার অফিস কলিগের বাড়িতে আজ সকাল থেকেই পুজো, তাই সে আজকেও বাড়ি নেই। ছোড়দা বলে বছরের আবার নতুন পুরোনো কি, এটা আরেকটা দিনমাত্র, তার এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথাই নেই। তাই সে কালকের গেঞ্জি আর পাজামাটাই গায়ে চড়িয়ে নিয়েছে আবার। এসব ব্যাপারে কারোর কোন কথা সে কানে তোলে না। বদ্দির যাওয়ার তো প্রশ্নই নেই, মাঝখানে ছেনু একবার জানতে চেয়েছিল, ছোদ্দিকে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে কিনা, মায়ের তাকানো দেখে ছেনু দৌড়ে তেতলায়। বিকেলের দিকে বেনা এসে জোরসে হাঁক পাড়ল, বাবুউউউ! তৈরি তো? ছেনু তাড়াতাড়ি চটি টটি পড়ে নিচে নেমে এসে দেখে বেনা হাতে দুটো ঝোলা নিয়ে আর ধুতির ওপর সাদা শার্ট চাপিয়ে একেবারে ফিটফাট হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ছেনু একগাল হেসে মাকে আসছি বলে বেরিয়ে পড়ল বেনার হাত ধরে।
    -বেনা, চিঠিগুলো সব নিয়েছ তো?
    -হ্যাঁ হ্যাঁ, ও নিয়ে চিন্তা নেই বাবু, সব গুছিয়ে নিয়েছি। কিন্তু একটা মুশকিল হয়েছে বুঝলে।
    -মুশকিল আবার কিসের?
    -ম্যানেজার বাবু তো যাবে না বলেছিল, কিন্তু কোন একটা বইয়ের দোকানের মালিকের মেয়ের সাথে ম্যানেজারবাবুর বিয়ের কথা চলছে, খালি সেইটাতে যাবেন।
    -তালে আর চিন্তা কি, ওটায় না গেলেই হল।
    -ওটাই তো মুশকিল, সেটা যে কোন দোকান, ম্যানেজার বাবু আমায় বলেছিল, আমি এক্কেবারে ভুলে গেছি।
    -তাহলে?
    -তাহলে আগে দেখে নেব, যে দোকানে উনি গেছে, সেটায় আর ঢুকব না।
    -তোমাদের ম্যানেজারবাবুকে দেখতে কেমন?
    -ফর্সা রং, মাথায় ঘন চুল আর ঝোল্লা ঝোল্লা গোঁপ।
    একটা গভীর হুম বলে ছেনু চুপ করে হাঁটতে থাকল। আজ তাদের পুরো ট্যুরটাই পদব্রজে। তাই মার্কেন্টাইল ব্যাংকের খদ্দেররা কোলকাতার যে কোনাতেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, ছেনুদের ভ্রমণ পরিকল্পনা আজ শেয়ালদা আর বৌবাজারেই সীমাবদ্ধ। কিছুদূর হাঁটতেই প্রথম দোকান এসে পড়ল। ছেনু ভাবছিল, ঢুকতে গেলে আবার চিঠি পত্তর বের করে দেখাতে হবে কিনা। দেখা গেল, তা নয়, এরা বেনাকে ভালোই চেনে। ওরা যেতেই একগাল হেসে ওদের ভেতরে নিয়ে গেল। একজন আবার ঢোকার মুখে গায়ে কি একটা ছিটিয়ে দিল। ছেনু লাফিয়ে পিছিয়ে আসতে যাচ্ছিল, কিন্তু দেখল ওখান থেকে বেশ ভুরভুর করে মিষ্টি গন্ধ বেরোচ্ছে। বেনা কানে কানে বলল, ভয় নেই, ওটা গোলাপজল। গয়নার দোকান, আরো অনেক লোকজন এসেছে, ছেনু অবাক চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে, আগে কখনো কোনো গয়নার দোকানে ঢুকে ভেতরটা দেখেনি। হঠাৎ দোকানের এক কর্মচারী দুটো বড় বড় মিষ্টির প্যাকেট এনে ওদের হাতে ধরিয়ে দেওয়ায় ছেনুর ঘোর কেটে গেল। দোকান থেকে বেরিয়ে ছেনু বেনার কাছে অনুযোগ জানাল, এরা কিরম গো ? বসিয়ে খাওয়ালো না ?
    না না এরা ভালো প্যাকেট করে, খুলে দ্যাখো, বেনা হাসে।
    ছেনু আর গিঁট খোলাখুলির চক্করে না গিয়ে বাক্সটা হাতে করে ঝাঁকিয়ে দেখল, বেশ ভর্তি।
    পরের দোকানে, পাশেই বেঞ্চি পেতে খাওয়ার জায়গা করেছে। ছেনু আনন্দ করে চটপট বসে পড়ল। ওমা, খাবার কোথায়, পিতলের উঁচু দুটো কাপে করে কি একটা ওদের সামনে রেখে গেল, সাথে চামচ। ছেনু তাড়াতাড়ি কাপে হাত দিয়ে দেখে, ঠান্ডা! এটা কি গো? আস্তে আস্তে মুখে রেখে রেখে খাও বাবু, এ হল আইসক্রিম। ছেনু দেখে তার চেনা কাঠি বরফ আইসক্রিমের থেকে এটা পুরোপুরি আলাদা। এই অদ্ভুত খাবার ছেনুর ভারী মনে ধরল। বেশ তারিয়ে তারিয়ে খেয়ে শেষে ভাবছিল এরকম উঁচু মতো কাপের একটা বাড়ির জন্য নিয়ে যাওয়া যায় কিনা, সবাই দেখে বেশ অবাক হবে। আরেক কাপ খেতেও ইচ্ছে করছিল, কিন্তু বেনা বলল আরো অনেক খাবার নাকি বাকি পড়ে আছে।

    পরের দোকানটা আরেকটু দূরে, এটা একটা বইয়ের দোকান। পড়ার বইয়ের ব্যাপারে ছেনুর একটু বিরক্তি থাকলেও, ছোড়দার কিছু গল্পের বই, ও না থাকলে নেড়ে চেড়ে দেখেছে মাঝে মধ্যে, নেহাৎ মন্দ না! এখানেও অনেক লোকজন এসেছে। ছেনু ঢোকার আগে প্রথমেই তাকিয়ে ভালো করে দেখে নিয়েছে ওরকম ঝোল্লা গোঁপের কেউ এসেছে কিনা, তারপর নিশ্চিন্ত হয়ে ঢুকেছে। এখানেও বেনার ভালোই খাতির। ওরা পাশে প্যান্ডেল টাঙিয়ে বসাচ্ছে। ছেনু জগের জলে হাত ধুয়ে বসে পড়ল। চলে এল প্যাকেটে করে গরমা গরম রাধাবল্লভী আর আলুর দম। ফাটাফাটি স্বাদ। তবে এখানেও বেনার সাবধানবাণী, পেটে জায়গা রেখে খাও, আরো দোকান বাকি কিন্তু। তা যাই হোক, রাধাবল্লভী সাঁটানোর পর সাথের শনপাপড়ি আর দানাদারটাও খেয়ে ফেলল টপ করে। খেয়েদেয়ে ছেনুর মেজাজ খুশ।

    এরপর ঝোলা থেকে চিঠিগুলো নেড়েচেড়ে বেনা বলল, চলো এবার একটা গয়নার দোকানে যাই। দোকানটা প্রথম গয়নার দোকানটার থেকেও বড়। কিন্তু বড় হলে কি হবে, এরা ভারী কিপ্পুস, এইটুকু ছোট্ট প্যাকেট করেছে। তা যাই হোক, ঝোলায় ঢুকিয়ে নিয়ে আবার পরের দোকানের দিকে হাঁটা দিলো। এদের পেপার রিলের ব্যবসা, এরাও সুন্দর খাতির করল, প্যাকেটটাও গরমা গরম। খুলে দেখে ভেজিটেবল চপ আর খাস্তা কচুরি, সাথে মিষ্টি। ভেজিটেবল চপটা খপাত করে তুলে খেয়ে নিয়ে বাকিটা আবার ঝোলায়। এর পরেরটা আবার গয়নার দোকান, বসে খাওয়া, এরা সামনে এনে রাখল কোল্ড ড্রিংক। এটা ছেনুর চেনা সিলেবাস, আগে একবার খাইয়ে ছিল বড়দা। তবে সেবারের মতো এবারও খেতে গিয়ে ভীষণ ঝাঁজে বিষম টিষম খেয়ে অস্থির। তারপর আরও নানা জায়গায় মিহিদানা, মিষ্টি দই, সন্দেশ, আবার কোল্ড ড্রিংক, সিঙ্গাড়া, ভেজিটেবিল চপ এসব খেয়ে টেয়ে ওদের দুজনের প্রায় গলাঅব্দি ভর্তি হয়ে গিয়েছে। তারপর আর বসে খাওয়ার ব্যাপার থাকলে ছেনু উল্টে অনুযোগ জানাচ্ছে এরা কিরম গো, প্যাকেট করতে পারে না? ওরা এর মধ্যে যে প্রায় বিশ পঁচিশটা দোকানে ঢুকেছিল, তার মধ্যে যে কটা বইয়ের দোকান পড়েছে, সবকটাতেই ঢোকার আগে ছেনু খুব ভালো করে দেখে ঢুকেছে। কোথাও ম্যানেজারবাবুর দেখা পায়নি। এতক্ষণের হাঁটায় ক্লান্ত হয়ে ছেনু এবার প্রস্তাব দিলো আর কোনো বইয়ের দোকানে না যাওয়াই ভালো, ওগুলো নয় ম্যানেজার বাবুর জন্যই তোলা থাক। এরপর আরও তিন চারটে গয়না, পেপার আর জামা কাপড়ের দোকান ঘুরে টুরে ওরা যখন বাড়ির পথ ধরেছে, ছেনু রীতিমতো হাঁপাচ্ছে, দু হাতের ঝোলা তো ভর্তিই, সাথে বগলদাবা করে আরও গোটা সাতেক প্যাকেট আর ক্যালেন্ডার, জামাতে বিভিন্ন জায়গায় বিচিত্র সব ছোপ, রসের নদীর তিন-চারটে ধারা নেমে এসে গোটা জামাকে অববাহিকা বানিয়ে ফেলেছে, এমনকি কোনো নদীধারা প্যান্ট অব্দিও পৌঁছে গেছে। এত ঘুরে, এত খেয়েও মনে একটাই দুঃখ রয়ে গেল, কোথাও মোটে মাছ মাংস কিচ্ছু করেনি। আসলে দোকানে পুজোর ব্যাপার তো, সেইজন্যই নাকি আমিষ মানা।

    যাই হোক, ছেনু তো বাড়ি ফেরার সময় মনে মনে ভাবছিল এত খাবার দেখে আজ বাড়ির সবাই এক্কেবারে চমকে যাবে, মাকেও খাওয়ানো যাবে, ছোদ্দিকেও খাওয়ানো যাবে, খালি ছোড়দাকেই না দিতে পারলে সবচে ভালো হত, কিন্তু কি আর করা। কিন্তু কোথায় কি! বাড়িতে ঢুকে দেখে গোটা বাড়ি ধু ধু করছে ফাঁকা, কেউ কোত্থাও নেই, শুধু ছোড়দা একটা সাদা পাঞ্জাবি পরে চেয়ারে বসে বসে সকালের সেই ঢাউস বইখানা পড়ছে। ওদের দেখে উঠে দাঁড়িয়ে মিষ্টি করে বলল, আহা তোরা এতক্ষণে এলি, তোদের জন্যই তো বসে ছিলাম। চল চল।
    -কোথায় যাব? মা, দিদিরা সব কই?
    -কেন লালবাড়িতে, তুই জানিস না!
    -না তো!
    -ওমা, জানিস না! আজ তো ওখানে বিশাল অনুষ্ঠান, আর আমাদের সবার নেমন্তন্ন তো। মাছ, মাংস, কালিয়া, পোলাও কত কি হয়েছে। শিগগির চ। ওহো অবশ্য তুই জানবিই বা কি করে। তোদের বেরোনোর কিছুক্ষণ পরেই তো ডাকতে এসেছিল লালবাড়ি থেকে।

    এসব শুনে টুনে ছেনু দাঁত কিড়মিড় করে যে দৃষ্টিটা হানলো ছোড়দার দিকে, সত্যযুগ হলে ছোড়দা নির্ঘাৎ ভস্ম হয়ে যেত।


    পুনশ্চ : এর পরের দিন ছেনুদের বাড়িতে আর রান্না টান্না হয়নি। বেশ কিছু প্যাকেট ব্যাংকের কর্মচারীদের দিয়েও যে গাদা প্যাকেট রয়ে গেছিল, সেসবের তো একটা সদগতি করতে হবে নাকি।




    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | ৬৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪২530607
  • মিত্তি মিত্তি গপ্প। 
  • Kishore Ghosal | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪৩530608
  • আহা, ওই গোলাপজলের ফিসফিস, ঝাউপাতার সঙ্গে গোলাপের কলি, "কোলডিংক"-এর  বোতল (যদ্দূর মনে পড়ছে নামটা ছিল VIMTO),  ক্যালেণ্ডার, প্যাকেট, আর সবার ওপরে থাকত বাবার হাত ধরে চলা...  আর থাকত প্যাকেট-অভিযানে বেরোনোর আগে নতুন জামা-প্যান্ট পরা, গাল আর থুতনি চেপে মায়ের চুল আঁচড়ে দেওয়া...।  
     
    কলকাতা শহরে আমাদের ছেলেপুলেরা এই আস্বাদ আর আনন্দটা পেলই না - মফস্বল শহরে তাও কিছুটা আছে...।
     
    খুব ভালো লাগল বলেই এতকথা লিখে ফেললাম...মন খুলে মন্তব্য করলে অনেকে হেভি খচে যায় - আশা করি আপনি তেমন না।  
    শুভ  নববর্ষ । 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫৩530609
  • থ্যাঙ্কু :-) 
    আপনারা মন্তব্য করলে তো ভীষন খুশি হই, রাগ করব কেন। উল্টে অনেক অনেক উৎসাহ পাই আরও ঘটনা লিখে ফেলার।
  • Amit Chatterjee | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১২:০৮530613
  • ছেলেবেলার নববর্ষের না ভোলা স্মৃতি এমন রসসিক্ত ভঙ্গিতে পরিবেশনের জন্য লেখককে আন্তরিক সাধুবাদ। ছেলেবেলার স্মৃতি আবার জীবন্ত হয়ে উঠল লেখকের সরস কলমে থুড়ি কম্পিউটারে।
  • Somnath Pal | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০৪530620
  • খুব সুন্দর
  • সমরেশ মুখার্জী | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:১৯530622
  • "ওর একটাই বিষম ভয়ের জায়গা - তা হলো ভয় পাওয়ার ভয়" - laugh
  • kk | 172.56.3.116 | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৪530623
  • এই গল্পটা আমার অতি পছন্দ হয়েছে। আর হবে নাই বা কেন? এত সব খাবারের নাম আছে :-D
    ছবিও যথারীতি দারুণ! সুখলতা রাও এর একটা বই ছিলো 'ছোট্ট ছোট্ট গল্প' বলে। তাতে সত্যজিৎ রায় অলংকরণ করেছিলেন। সেই ছবিগুলোর কথা মনে পড়ছে।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৯530626
  • @ অমিতাভ বাবু, অমিতবাবু ও সোমনাথবাবু অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পটা পড়ে ও মন্তব্য করে উৎসাহ দেওয়ার জন্য। :-)
     
    @ সমরেশবাবু, এই জায়গাটা ধরেছেন এটা ভীষন ইন্টারেস্টিং, ভয় পাওয়ার ভয় নিয়ে কোনো এক পর্বে বিশদে লেখার ইচ্ছে আছে, অনেক মজার মজার কান্ড রয়েছে এই নিয়ে।
     
    @kk অনেক অনেক থ্যাঙ্কু আপনাকে :) 
    আপনি লাকি, কারণ আগে যারা পড়ে ফেলেছেন, তারা ছবিটা দেখতে পাননি, ছবিটা আপলোড করতে দেরি হয়ে গেছে আজ। 
  • হীরেন সিংহরায় | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০২:৪৩530635
  • খুব ভাল লাগলো রমিত। হুতোমের উত্তর সুরি তুমি । 
  • :|: | 174.251.160.171 | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:১১530640
  • উত্তরসূরী। 
    ফাটাফাটি সিরিজ। 
    "চান করে, চুল টুল আঁচড়ে এবার কি পড়বে? আগের বার পুজোয় তেতলার দাদা ছেনুকে একটা ভারি সুন্দর জামা দিয়েছিল, মায়ের বকুনিতে ছেনু ওটা তোলা তোলা করে পড়ত। সেইটাই আজকের জন্য মনোনীত হল, সাথে একটা আপাত শোভন হাফ প্যান্টুল। দুই দিদিও একে একে চান করে নিয়েছে, বদ্দি আজ পড়েছে শাড়ি, ছোদ্দি একটা পরিষ্কার দেখে ফ্রক।"
    মহারাজ আপাতত ছোট্টটি বটেন; তবু মহারাজ কিনা তাই তাঁকে সব ঠিকঠিক জানতে হবে। বই পড়া আর পোষাক পরা। 
  • Aranya | 2601:84:4600:5410:c832:e12c:de9:1461 | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৪৫530643
  • সুন্দর 
  • Anirban M | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৩৬530646
  • খুব ভালো হয়েছে! 
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫৯530652
  • @হীরেনবাবু, আপনি যে মহাত্মার সাথে তুলনা করলেন, জানিনা কতটা পৌঁছতে পারবো, এতটা উৎসাহ দিলেন, এটা আমার কাছে অনেক। আপাতত ওনার সাথে আমার একটিই মিল, মহাভারত আমারও অন্যতম একটি প্রিয় বিষয়।
     
    @চতুর্মাত্রিক, আপনার মতো নিবিষ্ট পাঠকরা আছেন বলেই লিখতে ভরসা পাই। ভীষণ লজ্জাজনক ব্যাপার, দ্রুত লেখার সময় এটা চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। অকুন্ঠ ধন্যবাদ আপনাকে, লক্ষ্য করার জন্য। সিরিজটা আপনার ভালো লাগছে জেনে খুব আনন্দ পেলাম
     
    @অরণ্য ও অনির্বাণবাবু, আপনাদের আন্তরিকধন্যবাদ, লেখাটা পড়ে ভালবাসা জানানোর জন্য। খুব ভালো লাগল। :-)
  • :|: | 174.251.160.171 | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০০:০৭530661
  • অনেক ধন্যবাদ। খুবই অস্বস্তি লাগছিলো। একলাইনের সাধুবাদ দিতে গিয়েও ভুল উল্লেখ করতে। আপনি পজিটিভ ভাবে নেওয়ায় স্বস্তি পেলুম। আবারও, অনেক ধন্যবাদ।
  • যোষিতা | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:০৩530662
  • দারুণ স্মৃতি।
    ঐ ব্যাংকটায় আমি বহুবার গেছি ছোটবেলায়।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৫530674
  • সেই ব্যাংক পরে বদলে হয়ে গিয়েছিল হংকং ব্যাংক। আর এখন সেটাও উঠে গেছে, অন্য কিসব ব্যবসাপাতি চলে।
  • Prativa Sarker | ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৬530700
  • এই লেখাগুলো খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছি। অনেক স্মৃতি মনে জেগে উঠছে। সেগুলো সব যে আনন্দময় তা নয়। ছোটদেরও অপমানবোধ থাকে, বোধহয় সারল্যের কারণে একটু বেশিই থাকে। 
    মনের গতি বড় বিচিত্র, এই আনন্দময় লেখা একলা বৈশাখের সেই স্মৃতিগুলোকে অকারণে  উসকে দিচ্ছে। 
     
    হয়ত কোনওদিন লিখব, হয়তো কোনওদিনও না।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৮530710
  • অসংখ্য ধন্যবাদ, এই লেখাটায় আপনার মন্তব্য পেয়ে ভীষণ ভালো লাগল।
  • dc | 2a02:26f7:d6c1:680d:0:6545:f5c7:329d | ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৩৭530711
  • এই পর্বটাও খুব ভালো লাগলো। তবে যদ্দুর মনে পড়ছে, বেশীর ভাগ দোকানে খাবারের প্যাকেট দিতো, বসিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকতো না। অবশ্য আমি পাড়ার ছোট ছোট দোকানেই বেশীর ভাগ সময়ে যেতাম, বড়ো দোকানে যাওয়া হয়ে উঠতো না :-)
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৪৭530712
  • বসিয়ে অল্প কিছু খাওয়াতো, মানে খুচরো খাবার যাকে বলে, কোল্ড ড্রিংকস, আইসক্রিম, সিঙ্গারা, মিহিদানা, সীতাভোগ সন্দেশ, মিষ্টি টিস্টি এইসব। বেঞ্চে বসিয়ে হাতে কাগজের প্লেট ধরিয়ে। ফুল কোর্স কিছু না। তবে বেশিরভাগ জায়গায় প্যাকেটই করত।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:৫৩530714
  • তবে এখন খুচরো খাবার বলছি, ছনেন্দ্রনাথ ভীষন ক্ষেপে যাবে, তখন এসব ভারী ভালোবাসত। :-)
  • dc | 2a02:26f7:d6c1:680d:0:917a:f4eb:8994 | ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০০:২৭530716
  • সে তো বটেই laugh
  • r2h | 134.238.15.50 | ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৩530719
  • কী দারুন!
    বেনারসিপ্রসাদ চরিত্রটিকে খুব ভালো লাগলো।

    এই সিরিজটা- খুব সম্ভাবনাময়। মিষ্টি গল্প এইসবের বাইরে, প্রতিটি চরিত্র আলাদা করে আগ্রহ জাগায়। বড়দির কেন যাওয়ার প্রশ্ন নেই, ছোড়দা পরবর্তী জীবনে কী করলো, বাবুজির জমজমাট রেস্তোঁরার কী হল, লালবাড়ির লোকজন...
    লেখককে সেসব লিখতেই হবে তা না, পাঠকের জন্য এই জায়গাগুলি কল্পনার বড় খোলা জানালা।
    এই সিরিজের পাঠকের এক অংশ যদি কিশোর কিশোরী ভাবি, তাহলে এই জায়গাটা খুব বড়।

    বিটিডাব্লিউ লাল বাড়িতে কালিয়া খাওয়ানো হলেও ছনেন্দ্রনাথের যে দোকানে ঘুরে ঘুরে অ্যাডভেঞ্চার হল তা লা জবাব!

    চলুক! ২০২৫ এর বইমেলায় ছনেন্দ্রনাথের প্রকাশের অপেক্ষায় রইলাম। সম্পাদকীয় দপ্তর ও রোবটগন নজর রাখুন।
  • r2h | 134.238.15.50 | ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১৯530720
  • প্রতিভাদির কমেন্টটা, "ছোটদেরও অপমানবোধ থাকে, বোধহয় সারল্যের কারণে একটু বেশিই থাকে।... হয়ত কোনওদিন লিখব, হয়তো কোনওদিনও না।"
    হ্যাঁ...

    কখনো লিখলে পড়বো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন