এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • টার্মড্রপিং ট্রার্মড্রপিং, তোমার মানে নাই টার্ম ?

    pi
    অন্যান্য | ২০ জুন ২০১৭ | ৭৫০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pi | 57.29.255.93 | ২০ জুন ২০১৭ ২৩:৫৭366319
  • কিছু শব্দ ইদানিং কালে বেশ ব্যবহৃত হতে দেখছি। সেইসব শব্দ, যাদের কিনা বলে টার্ম ,আর যাদের ব্যবহারে কম কথায় বক্তব্যের অর্থ অনেক সহজে পৌঁছে যায়, ওজনও যে বাড়ে সে বলাই বাহুল্য।

    তো সেরকমই কিছু টার্ম, যাদের ব্যবহার এখন সমালোচনার নানাবিধ ডিসকোর্সে নিত্যব্যবহৃত।
    আর সেই ব্যবহার নিয়েই আবার ধন্দে পড়েছি বিস্তর।কারণ ব্যবহারের সাথে সেই টার্মের অর্থের সাযুজ্য যুক্তি অনুযায়ী বিশেষ পাওয়া যাচ্ছেনা।
    টার্মকে এমনিতে উপকারী জিনিসই মনে করি, কিন্তু অর্থ থেকে দূরে চলে গেলে, কমিউনিকেশনের হাতিয়ার হিসেবে তার শান যেমন কমে, ওজনও কিছুটা। বরং ভুল বোঝাবুঝি্র বোঝা বাড়ে বিস্তর।
    আর হ্যাঁ, প্রচলিত অর্থ থেকে অন্য অর্থে ব্যবহার করলে কিন্তু সেই বিষয়ে ডিসক্লেইমার লাগে, বা কোথাও সেই অন্য অর্থে কোন মান্যতা।

    বহুদিন ধরে নানা জায়গায় খুচখাচ প্রশ্ন করে মন্তব্য করে কোন উত্তর পাইনি দেখে আলাদা ক'রেই প্রশ্ন রাখলাম। সদুত্তরের বৃথা আশা মৃতপ্রায় হলেও।

    প্রথমে সেই টার্মটা দিয়ে শুরু করা যাক, যেটা এই গত কয়েকবছর ধরে শুনছি। ভিক্টিম ব্লেমিং । না না, এই শব্দটা মোটে নতুন শুনিনি। কিন্তু যে 'প্রেক্ষিতে' ব্যবহৃত হতে শুনছি, সেটা কিঞ্চিত , না না, বেশ বেশি মাত্রায়ই প্রশ্ন জাগিয়েছে। যা জানতাম, যে কোন রকম আবিউজ, রেপ , মোলেস্টেশন, গৃহহিংসা ইত্যাদি অপরাধের যে ভিক্টিম, সেই ভিক্টিমের আচরণকে অপরাধের কারণ হিসেবে দেখাতে চাইলে, ভিক্টিমের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললে , সেই আচরণে অপরাধের 'প্রেক্ষিত' খুঁজলে সেটাকে বলা হয় ভিক্টিম ব্লেমিং। এবং এটা বলার সাথে সাথেই , ভিক্টিম বলার সাথে সাথেই এটা মেনে নেওয়া হয় যে সে ভিক্টিম, অর্থাৎ অপরাধটি তার সাথে সংঘটিত হয়েছে। সেই নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু নিজের সাথে হওয়া অপরাধের দায়টিও আসলে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ভিক্টিমের, ভিক্টিমের কৃতকর্মের ফল, যে ভিক্টিম বেশিরভাগ সময়েই একটি মেয়ে। খুব চেনাজানা উদাহরণ হল , কোন মেয়ের শ্লীলতাহানি কি ধর্ষণ হলে মেয়েটির ছোট জামা, রাত অব্দি বাইরে থাকা, মদ খাওয়া, বা কোন ক্ষেত্রে গণিকা হওয়া এগুলোকে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের জন্য ব্লেম করা।
    কিন্তু লক্ষ্যণীয়, যে এই সব ক্ষেত্রেই অপরাধটা ( বা তাকে অপরাধ বলে অপরাধী বা সমাজ স্বীকার করতে না চাইলেও সেই ঘটনা সত্যি ঘটা নিয়ে কিন্তু কোন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না।
    এই ভিক্টিম ব্লেমিং অবশ্যই অত্যন্ত আপত্তিকর, নিন্দনীয় ট্রেণ্ড, একথা প্রশ্নাতীত। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে , এই ভিক্টিম ব্লেমিং শব্দবন্ধকেই অন্য প্রেক্ষিতে ব্যবহৃত হতে দেখলে। যেমন কেউ অভিযোগ আনল , আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যদি এই কেউটি কোন মেয়ে হয় , সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত বা অন্য কেউ যদি অভিযোগটার সত্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলে এবং প্রশ্ন তুললে স্বাভাবিক যুক্তিতেই অভিযোগকারিণী মিথ্যা বলছে, এটাও বলা হয়, সেক্ষেত্রে অভিযোগকারিণী মিথ্যা বলে ফাঁসাতে চাইছে বলে ব্লেম দিলে সেটা ব্লেমিং অবশ্যই হবে, কিন্তু ভিক্টিম ব্লেমিং হবে কি ? কারণ ভিক্টিম বলেই , প্রাথমিক ভাবে, আদৌ স্বীকার করা হয়নি। এবার, যে অভিযুক্ত সে যদি অপরাধ করেনি বলে মনে করে আর সেটা বলে আর সেই কথা অভিযুক্তের পরিচিতরাও মনে করেন বা অভিযুক্তের কথায় বা তার দেওয়া বিবরণ বা যুক্তি শুনে অন্যদেরও ঠিক মনে হয় আর তাঁরা অভিযোগের সত্যতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করেন , তাহলে সেটা অভিযোগকারিণীর নামে মিথ্যা অভিযোগ করার ব্লেম দেওয়া হলেও ভিক্টিম ব্লেমিং কী করে হয় ?
    অভিযোগকারিণীর অভিযোগের সত্যতা নিয়ে কেউ সন্দেহ প্রকাশ করলে তাই নিয়ে কেউ আপত্তি, তর্ক করতেই পারেন, তার পিছনে কারণ, যুক্তি দর্শাতেই পারেন, আদালতেও সেসবই চলে, অপরাধ নিয়ে নিশ্চিত হয়ে থাকলে অভিযোগকে মিথ্যা বলা লোকজনকে মিথ্যাবাদীও বলতে পারেন। কিন্তু একে ভিক্টিম ব্লেমিং বলা কেন ? যে শব্দবন্ধ একটা বিশেষ আপত্তিকর মানসিকতাকে বোঝাতে ব্যবহৃত, যেই শব্দের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তোলা হয়, সঙ্গতভাবেই, যেন তেন প্রসঙ্গে সেই শব্দের অপপ্রয়োগ তো সেই আপত্তির জায়গাকে লঘু করে গুরুত্ত্বহীন করবে বই আর কিছুনা। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপালে উদোরই ক্ষতি।

    আপাতত ভিক্টিম ব্লেমিং বলে এই দাগানো নিয়ে প্রশ্নটাই রইল। এইসব প্রশ্ন নাহয় পরে করব যে, এধরণের প্রশ্ন করলে 'ভিক্টিম ব্লেমিং' না বললেও এই সত্যতা সম্বন্ধে প্রশ্ন করার অধিকার কি নেই ? অভিযোগ সত্যি ধরে নিলেও, বিচারের রায় বেরোনোর আগে অব্দি এই প্রশ্নের অধিকার সবারই আছে, অভিযুক্তের তো আছেই। এমনকি বিচারের পরেও। আর এই প্রশ্ন করার অধিকার না থাকলে বা প্রশ্ন করা নিয়ে এইজাতীয় প্রশ্ন তুললে তো বিচারের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। অভিযোগ আসা মাত্র অভিযুক্তকে অপরাধী হয়ে যেতে হয়। এসব প্রশ্ন নাহয় পরেই।

    আর হ্যাঁ এখনো অব্ধি অভিযোগকারিণীই লিখে এসেছি, সচেতনভাবেই, কারণ এই ' ভিক্টিম ব্লেমিং' কেন করা হচ্ছে বলে প্রশ্নটা মেয়েদের অভিযোগের প্রসঙ্গেই হয়।

    আরো ক্রমে আসিতেছে, সঙ্গে থাকুন। কাটুন ,ছিঁড়ুন, নিজেরা জুড়ুন ঃ)
  • Fake Loo | 146.165.153.206 | ২১ জুন ২০১৭ ০২:১৪366320
  • দিৌর্সে টা ইটসেল্ফ একটা টার্ম। বাজারে খাচ্ছে আজকাল । আজকাল পাতি আলোচনা কেউ করে না, সবাই ডিসকোর্স করে। দেখলেন তো, নিজেই ঝুপ করে একটা ড্রপ করে দিলেন ;)
  • Fake Loo | 146.165.153.206 | ২১ জুন ২০১৭ ০২:৩০366321
  • দেখুন। আগে, ওর্কুট আমলে তো বটেই,লিবেরাল স্পেসটা মার্ক্সিস্টরা ডমিনেট করত। সহজ কিছু বুঝতে চাইলেও praxis, class consciousness , superstructure, এই সব টার্ম ড্রপ করে মাথা গুলিয়ে দিত, জেনারালি সদুত্তর না থাকলে।
    এরা গেল, তো এল নানেরা (নারীবাদী নেকড়ে)। এখন দেখবেন, mansplaining , gas-lighting , slut-shaming ইত্যাদি।
    এই প্রথম আর দ্বিতীয় সেটের তফাত কি বলুনতো? প্রথম টার্ম অন্তত যে বলছে সে তার মানে জানত, বা না জানলেও, দুনিয়াতে অন্তত কিছু পাবলিক এগুলোর সঠিক মানে জানত। আর দ্বিতীয় সেটে, কেউই, এমনকি যে টার্মগুলো ইনভেন্ট করেছে, মানে জানে না! কারণ এগুলো বেসিকালি অর্থহীন ভাট।
  • de | 69.185.236.52 | ২১ জুন ২০১৭ ১২:০৭366323
  • বাপরে! এক্কেরে নেকড়ে বানিয়ে দিয়েচে!
  • pi | 57.29.132.137 | ২১ জুন ২০১৭ ১৮:১৭366324
  • গ্যাসলাইটিঙ্গ নিয়েই লেখার আছে। এই উপরে দেওয়া সংজ্ঞা আর কীভাবে তার যত্রতত্র ব্যবহার হচ্ছে।

    ভিক্টিম ব্লেমিঙ্গ এর সংজ্ঞার সাথে মেলাতে পারলে, এখনকার ব্যবহার?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন