এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বারুদ

    Lama
    অন্যান্য | ০৬ এপ্রিল ২০১০ | ২৪৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Lama | 203.99.212.53 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২০:৩৭442079
  • বন্দুক বগলদাবা করে হুঁকোদাদা আপাতত: লাপাতা। সার্কাসের রোমহর্ষক সব খেলার মাঝে মাঝে যেমন জোকারদের তামাশা থাকে, টিভি সিরিয়ালের মাঝে মাঝে যেমন অ্যাড থাকে, তেমতি বন্দুকের টইএর অনুপস্থিতিতে এ অধম হাজির হল বারুদের জ্ঞান বিলাবারে।

    এ প্রসঙ্গে আমার যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। যখন আই টি গাই হয়ে উঠি নি তখন দেশের নানা প্রান্তে পাথর ফাটিয়ে পেট চালাতাম। সুতরাং এখানে বারুদ মানে গান পাউডার নয়, আমার জানামত সব ধরনের বিস্ফোরক ।

    আমার আবোলতাবোল বকার স্বভাবের কারণে অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা এসে গিয়ে যদি একটু আত্মজীবনী লেখার প্রবণতা দেখা দেয় তাহলে একটু ধমকে দেবেন, আবার বারুদে ফিরে আসব।

    প্রথমে বন্দনা করি গুরুর চরণ
    ...
    ...
    গুড়ুম ম্‌ম্‌ম্‌ম্‌ম
  • intellidiot | 61.8.134.18 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২০:৪২442090
  • জ্জিও... হাত চালিয়ে :-)
  • Nina | 66.240.33.46 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২০:৪৪442101
  • আমি একটা প্রশ্ন করতে পারি--(হে হে কেমন যেন সন্তোষ দত্তর মতন শোনাচ্ছে)
    এই গরমে, মাথা-গরমের যুগে এই জ্ঞান আবার উল্টো বিপত্তি আনে যদি :-((

  • Lama | 203.99.212.53 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২০:৪৭442112
  • না না বিপত্তি আনবে না। এ অনেকটা আর্মাডিলোর ডিমের ডালনার রেসিপির মত - উপকরণগুলো জোগাড় করা শুধু মুশকিল হি নেহি, না মুমকিন হ্যায় (যদি না আগে থেকেই গোলমেলে লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকে অথবা মাইনিংএর ডিগ্রি থাকে)
  • Kartuj | 59.93.210.112 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২১:১৩442123
  • বারুদ বললেই যেটা মনে পড়ে -

    "এই !! মটকা গরম করবি না... বারুদের মটকা গরম করলে...'

    (সমস্বরে) ইন দ্য ভোগ অফ মা
               মায়ের ভোগে চলে যাব
  • dipu | 59.164.188.35 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২১:৫৭442129
  • মহাগুরু অভিনীত থ্রিলার। তখন যদুপুরে সেকেন ইয়ার, ভবানীপুরে পাশাপাশি হলে বারুদ আর অগ্নি।
  • Lama | 117.194.226.110 | ০৬ এপ্রিল ২০১০ ২৩:৫৬442130
  • ছোটবেলায় পাড়াতুতো দাদা গোছের কিছু কলেজ পড়ুয়া যুবকের সংস্পর্শে এসেছিলাম, যারা কোন অজ্ঞাত কারণে নিজেদের বড়সড় বোমারু বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন। তাঁরা কোন না কোন ভাবে বোমার প্রসঙ্গ এনে ফেলতেন এবং প্রমান করার চেষ্টা করতেন যে কলেজে তাঁরা পড়শোনা করেন সেখনে যত না ছাত্র এবং অধ্যাপক রয়েছে তার থেকে বেশি রয়েছে বোমা - হোস্টেলের জলের ড্রাম থেকে শুরু করে খাটের তলায় সর্বত্র বোমা - সবই তাঁদের স্বহস্তনির্মিত।

    সর্বৈব মিছা।

    তখন নকশাল যুগ অতিক্রান্ত। কলেজে দুএকটা খুচরো বোমাবাজি হলেও ছুরি-চাকু ট্যাঁকে গুঁজে ক্লাসে যাবার দিন আর নেই। কিন্তু বোমা ব্যাপারটা আমাকে খুব আকর্ষণ করত আর সেটা বুঝতে পেরেই বোধ হয় যে কোন পাড়ার দাদা টাইপের লোক সামান্য সুযোগ পেলেই আমার কাছে বোমার গল্প ঝেড়ে দিত।

    এদের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য দেবুদা। দেবুদার সঙ্গে আমার পরিচয় এন সি সি-র ক্যাম্পে। আমি স্কুলপড়ুয়া, অর্থাৎ জুনিয়ার ডিভিশন ক্যাডেট আর দেবুদা কলেজছাত্র অর্থাৎ সিনিয়ার ডিভিশন ক্যাডেট, তদুপরি পদমর্যাদায় সিনিয়র আন্ডার অফিসার : কাঁধে লাল ফিতের ওপর কালো ডোরা, বুকে কিসব মেডেলটেডেল। আমরা বলাবাহুল্য তাকে খুব শ্রদ্ধাভক্তি করতাম । কিন্তু বড় হয়ে বুঝতে পারলাম লোকটি অতীব শান্তিপ্রিয়, রাইফেল শুটিঙে যতই দক্ষ হোক না কেন, গন্ডগোল পছন্দ করে না। এর পক্ষে আর যাই হোক বোমা বানানো কখনো ই সম্ভব নয়।

    ওহো, বলতে ভুলে গেছি, আমাদের ছোট শহরে একবার বেদেরা শেয়াল মারার জন্য ঝোপেঝাড়ে এক ধরনের বোমা রেখে দিয়েছিল, যার একটা নিয়ে বল ভেবে খেলতে গিয়ে দেবুদা শৈশবেই দুটি আঙুল হারায়। তখন থেকে বোমা জিনিসটাকে রীতিমত ভয়ই পেত।

    এহেন দেবুদার সঙ্গে কিছু কথোপকথন:

    "বুঝলি, এবার পূজোয় একটা টাইট দেখে প্যান্ট বানাতে হবে।'
    "কেন?'
    "ঢোলা ঢোলা প্যান্ট পরতে আর ভালো লাগে না।'
    "ঢোলা প্যান্ট পরো কেন?'
    "যাতে প্রফেসাররা বুঝতে না পারে পকেটে বোমা রয়েছে।'

    ****

    কি কইলেন? বারুদের টইতে বোমার গল্প কেন? এত বাজে ভাটই বা কেন?

    আসছে। আসছে। বারুদ দিয়েই তো বোমা তৈরি হয়।
  • Arya | 203.91.201.56 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ০৯:১৬442131
  • তাড়াতাড়ি
  • Arya | 203.91.201.56 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৪:১৯442132
  • লামা, কোথায় গেলেন? বারুদ তো মিইয়ে গেলো।
  • Kartuj | 125.20.3.146 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৪:৪৩442080
  • তপ্তদিনে ধূলোর মতো
    উড়ছে গোলা বারুদ
    সহস্র লাশে যখন তখন
    হাঁকছে চড়া সুদ

  • Lama | 203.99.212.53 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৫:০০442081
  • তো, যা বলছিলাম: আগেই বলেছি, টইএর নাম "বারুদ' দিয়েছি বটে, কিন্তু আলোচনার বিষয়বস্তু সব ধরণের বিস্ফোরক (আমার জানামত) বা 'এক্সপ্লোসিভ'।

    কথা হচ্ছে, বিস্ফোরক বলে কাকে? গোদা বাংলায়, বিস্ফোরক হচ্ছে সেই জিনিস যাতে বিপুল পরিমাণে শক্তি ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে এবং উপযুক্ত উস্কানি (initiation) পেলে ছাড়া পেয়ে চারদিকে মার মার কাটকাট ফেলে দিয়ে হৃৎকমলে ধুম লাগিয়ে দিতে পারে। মার মার কাটকাট লাগায় কি করে? আসলে, বিস্ফোরণ যখন ঘটে তখন বিস্ফোরক পদার্থ খুব অল্প সময়ের মধ্যে আয়তনে বেড়ে যায়, আর তার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে থাকা শক্তি , যেমন তাপ, চাপ বা আলো হঠাৎ করে মুক্তি পায়। তাতেই যা হবার হয়, একটু পরে বিশদে আলোচনা করব।

    যে সব বিস্ফোরক শব্দের বেগের চেয়েও তাড়াতাড়ি ফাটে, মানে আয়তনে বাড়ে এবং তাপ বা আলোকে মুক্তি দেয়, তারা হাই এক্সপ্লোসিভ, যেমন অ্যানফো (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আর জ্বালানী তেলের মিশ্রণ)। যে সব বিস্ফোরকের ক্ষেত্রে শব্দের বেগের চেয়ে আস্তে এই ব্যাপারটা ঘটে, তারা লো এক্সপ্লোসিভ, যেমন আমাদের পূর্বপরিচিত বারুদ বা গান পাউডার। একদিক থেকে দেখতে গেলে, হাই এক্সপ্লোসিভ "ফাটে", কিন্তু লো এক্সপ্লোসিভ "পোড়ে'।

    খনিতে কাজ করতে গিয়ে অবশ্য দেখেছি, খনি শ্রমিক, সর্দার, মেট এবং ফোরম্যানরা যে কোনো বিস্ফোরককেই "বারুদ" বলেন।
  • SB | 114.31.249.105 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:১২442082
  • লামা ঠিকই বলছেন, বারুদ নিয়ে যেসব প্রফেশনালরা কাজ করেন তাঁরা বোধয় শান্তশিষ্টই হন। আমার এক মামা অর্ডন্যান্স ফ্যাকটরিতে চিফ কেমিস্ট ছিলেন, বারুদ নিয়েই সারাদিন নারাচাড়া করতেন, মানে বোম বানাতেন, অথচ কি শান্ত, পেটে বোম মারলেও রা কারতেন না !!!
  • Blank | 170.153.65.102 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:১৫442083
  • শৈবাল দা মামার পেটে বোম মেরে ব্যপারটা দেখেছে !!! কি ভয়ানক
  • Lama | 203.99.212.53 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:১৯442084
  • এক্কেবারে শ্রীকৃষ্ণের মত
  • SB | 114.31.249.105 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:২২442085
  • ডি:

    আম্মো ঢোলা প্যান্টুলুন পছন্দ করি, তবে পকেটে বিড়ি আর দেশলাই ছাড়া আর বিশেষ কিছু থাকে না, তাই ব্ল্যাংকি ভয় পেও না :)
  • Blank | 170.153.65.102 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:২৩442086
  • কিন্তু কবি বলে গেছেন যে বিড়ি জ্বালাতে দেশলাই লাগে না
  • SB | 114.31.249.105 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ১৬:৩২442087
  • সবাই (দেশলাই দিয়ে বিড়ি ধরায়) ..... কেউ কেউ কবি :-)
  • Biri jalai le | 59.93.208.166 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ২১:৩৭442088
  • আমি তো এখন জীগর দিয়ে সিগারেট ধরাই। দিব্যি জ্বলে ।
  • Nina | 66.240.33.38 | ০৭ এপ্রিল ২০১০ ২২:০৪442089
  • ব্ল্যাঙ্কি , তেমন জীগর পেলি ন বিড়ি খাওয়াই ছেড়ে দিলি :-)))
  • Lama | 203.99.212.53 | ০৮ এপ্রিল ২০১০ ১৩:৫৭442091
  • জিগর = ক্যাসলরক না কি যেন?
  • Hukomukho | 198.184.5.252 | ০৮ এপ্রিল ২০১০ ২৩:১৪442092
  • জ্জিও লামা দারুণ টপিক , চালিয়ে খেলো ভাই। কর্ডাইটের সাথে আমার অনেকদিনের সংসার। তবে আমি বেশীর ভাগটাই জানি না। মানে প্রথাগত ট্রেনিং না থাকলে যা হয় আর কি ? তবে শুধু হাই এক্সপ্লোসিভ কেন ? পটাস মোমচাল , সাল্ফার-চিনি, ক্যাপের মাল এসবের স্যাম্পেল ও একটু আধটু ছেড়ো। পাব্লিক হেভী ডিমান্ডিং বস। হাত চালিয়ে ।
  • de | 59.163.30.6 | ১৩ এপ্রিল ২০১০ ১৭:৩৬442093
  • লামা, টই টাকে তুলে দিলাম -- লিখুন শিগ্গিরি --- নাহলে আবার সেই দেওয়াল বাওয়া জন্তুর গল্পের অবস্থা হবে!

    জিলেটিন স্টিক থেকে পাড়ার পেটো সব নিয়েই জানতে চাই!
  • Lama | 203.99.212.53 | ১৩ এপ্রিল ২০১০ ১৮:৩৮442094
  • আবার গল্প পেয়েছে। একটা গল্প বলি, গল্প নয় ঘটনা-

    রাজস্থানের রামগঞ্জমন্ডির কাছাকাছি দুর্জনপুরা নামে চূনাপাথরের খনিতে কাজ করতাম। কাজ বলতে প্রধানত: ব্লাস্টিং, মানে এক্সপ্লোসিভ (তথাকথিত "বারুদ') দিয়ে পাথর ফাটানো (আমাদের ভাষায় "ওড়ানো', ব্লাস্টিং ব্যাপারটাকে অনেকে "ধামাকা'ও বলে থাকে।

    কাজটা হয় এইভাবে- প্রথমে পাথরের ওপর গর্ত বা "ড্রিল' করা হয়। এটা হয় কয়েকদিন ধরে, পূর্বনির্ধারিত নকশা অনুযায়ী। কম পরিমানে পাথর ওড়ানোর জন্য, বা যথেষ্ট শক্ত নয় এমন পাথর ফাটানোর জন্য হাতে ধর ড্রিলিং মেশিন যথেষ্ট, প্রচুর পাথর একসঙ্গে ওড়াতে বা পরচন্ড শক্ত পাথরের জন্য ব্যবহার করা হয় বড়সড় যন্ত্র ওয়াগন ড্রিল- অনেকটা যুদ্ধ করার ট্যাঙ্কের মত দেখতে, বিশেষত: যন্ত্রটার নিচের অংশ।

    ড্রিলিংএর পর এবার চার্জ করার পালা। পাথরের মধ্যে তৈরী হওয়া এই গর্তগুলোকে এবার বিস্ফোরক দিয়ে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী নানা ধরনের এক্সপ্লোসিভ ব্যবহার হতে পারে- আমি যেদিনের কথা বলছি সেদিন আমরা ব্যবহার করছিলাম অ্যানফো (ANFO বা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট - ফুয়েল অয়েল)

    অ্যানফো আমরা তৈরি করতাম এইভাবে- এক্সপ্লোসিভ কোম্পানীর চাপমারা বড় বস্তায় করে আসত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। শ্রমিকরা (বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহিলা, স্থানীয় ভাষায় "কুলি', পুরুষ হলে "বেলদার') বস্তা থেকে সেই হোমিওপ্যাথিক গুলির মত দেখতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ঢালতেন প্লাস্টিকের গামলায় (ধাতুর গামলা বারণ, ধস্তাধস্তিতে স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি বা স্থির তড়িৎ জনিত ফুলকি তৈরী হয়ে কেলেংকারী হতে পারে)। গামলা থেকে বোরহোল বা গর্তে। তারপর গাড়ির ডিজেল ট্যাঙ্ক থেকে প্লাস্টিকের পাইপে ফুঁ দিয়ে সাইফন তৈরি করে ফুয়েল অয়েল ঢালা হবে সেই একই গর্তে। অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আর ফুয়েল অয়েলের অনুপাতটা নির্দিষ্ট, তবে এখানে উল্লেখ করতে চাই না।

    এবার লাগানো হবে ডিটোনেটর- প্রতি গর্তের জন্য একটা- তামার মাদুলির মত দেখতে। মাদুলির মত অংশটা থাকবে গর্তের ভিতরে, গর্তের মুখে ব্যাঙাচির মত দুটো তার উচু হয়ে থাকবে।

    এবার স্টেমিঙের পালা। স্টেমিং মানে বিস্ফোরক ভর্তি গর্তের মুখটা বন্ধ করে দেওয়া, না হলে ভেতরের বারুদ চার পাশের পাথরে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করবে না। এই স্টেমিংটা করা হায় পাথরকুচি দিয়ে।

    স্টেমিংএর পর গর্তের মুখে বেরিয়ে থাকা ডিটোনেটরের তারের সঙ্গে লাল রঙের রিলে কর্ড (ফোরম্যানদের ভাষায় "আর কর", লাল বা কমলা রংএর তারের মত দেখতে জুড়ে দেওয়া।

    তারপর পুরো এলাকাটা মোটা লোহার পাত, বালির বস্তা আর মোটা দড়ির জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া, যাতে পাথর ছিটকে বেশি দূর যেতে না পারে। বিস্ফোরকের পরিমাণ ঠিকঠাক হলে পাথর ছিটকে পড়ার কথা নয়- শুধু আলগা ভাবে ভেঙ্গে যাবে। কিন্তু অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার: আমি নিজে দেখেছি একটা ওয়াশিং মেশিনের মত বড় পাথর ৩০ মিটার দূরে ছিটকে পড়তে, সেটা অবশ্য এক্সপ্লোসিভের পরিমান বেশি হবার কারণে।

    এবার এলাকা ফাঁকা করতে হবে। পোঁ পোঁ করে সাইরেন বাজবে। কয়েকজন কুলিকে লাল পতাকা হাতে করে পাঠিয়ে দাও সেইসব জায়গায় যেখান দিয়ে লোকজন বিপজ্জনক এলাকায় ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে (প্রচুর লোক অ্যাডভেঞ্চারের লোভে চেষ্টাও করে ঢুকে পড়ার)। সব ঠিকঠাক থাকলে লাল পতাকাওয়ালারা দু হাত মাথার ওপর তুলে দু দিকে নাড়াবে, মানে "অল ক্লিয়ার'।

    তারপর আর কি? রিলে কর্ডের দুটো মাথা নিয়ে এক্সপ্লোডারের (কালো বাক্সের মত দেখতে, ডায়নামো জাতীয় জিনিস) পজিতিভ আর নেগেটিভ টার্মিনালের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া, হেলমেট এঁটে পরে নেওয়া (যাতে ভালমন্দ কিছু হয়ে গেলে পরে কে মোলো জানা যায় অন্তত:), একটা কিছুর আড়ালে আশ্রয় নেওয়া, যেমন পরিত্যক্ত বাড়ির দেয়াল, বা ডাম্পারের তলা।

    তারপর বোতামে হালকা হাতের চাপ আর "গুড়ুম ম্‌ম্‌ম্‌ম্‌ম"

    একটা ফোন এল। বাকিটা পরে লিখছি।
  • Kartuj | 59.93.211.192 | ১৩ এপ্রিল ২০১০ ২১:০৩442095
  • বারুদের মেঝেতে লামা
    শুধু দিয়ে চলেছে হামা
    শঙ্কিত তটস্থ সবাই
    হতভম্ব হয়ে চাই
    ওরে কেউ পারলে থামা
  • Manish | 117.241.229.124 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১১:৩১442096
  • Lamaর লেখা খুব সুন্দর হচ্ছে। শুধু একটু সংজোযন : কান পেতে শুনে গুনতে হবে কটা গুরুম হলো।এখানে একটু চাপের ব্যাপার আছে।সব এক্সপ্লোসিভ না ফাটা পর্যন্ত্য বাইরে বেড়ানো নিরাপদ নয়।
  • Kartuj | 125.20.3.146 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১২:২৫442097
  • বারুদ নিয়ে গবেষণা
    এ তল্লাটে কেউ এসো না
    আগাম দিচ্ছি সতর্কবাণী
    কান দেবে যদিও জানি
    গুড়ুম গাড়াম ফাটছে বোম
    শুনেই খাড়া হচ্ছে লোম
    ফেলে পালা লামার দোকান
    থাকে যদি প্রাণের টান
  • Kartuj | 125.20.3.146 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১২:২৬442098
  • * কান দেবে না যদিও জানি
  • ranjan roy | 122.168.76.29 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১৮:০৮442099
  • কান দেবো না! খুব দেবো।

    সত্তরের দশকের কোলকাতা। সকাল-সন্ধ্যে চারদিকে দুম্‌-দাম্‌-কড়কড়কড়-গুম্‌ম্‌ম্‌। যেন রোজই কালীপূজো।
    আমরা শিখলাম--সাদা আর লাল। পটাশিয়াম ক্লোরেট আর আর্সেনিক সাল্ফাইড বা মোম্‌ছাল।এর সঙ্গে সালফার বা গন্ধক।
    ওই লালটা বোধহয় শব্দের চেয়ে দ্রুতবেগে--। লামা শুধরে দেবেন।এর আওয়াজটা খানিকটা ক্র্যাকিং ধরনের। আর গন্ধকের প্রাধান্য থাকলে বেশ চাপা ভারি গুমম্‌ম্‌ ধরণের আওয়াজ।
    শহুরে সন্ত্রাসের প্রাথমিক দিনগুলোতে এগুলো বাঁধা হত দিলীপের মুস্কিপাতি জর্দার কৌটোয়। মশলা কেরোসিন বা পেট্রোল দিয়ে ভিজিয়ে গোলা পাকিয়ে তাতে গ্রামোফোনের পিন বা লোহার পেরেক splinter হিসেবে গুঁজে দেয়া হত। তারপর আসল কাজ। পাট সুতো দিয়ে ওটাকে টাইট করে উলের গোলার মত করে জড়িয়ে জড়িয়ে বাঁধতে হবে। দাঁতে সুতোর একটি মাথা চেপে ধরে বাঁহাতে গোলা সোজা করে ধরে রেখে ডান হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পেঁচাতে হবে। সাবধান! যেন ঝটকা না লাগে। নইলে যে বাঁধছে সে নিজে উড়ে যাবে। নিদেন পক্ষে হাতটা। তাই পরের দিকে পেটের সামনে বালিভরা এয়ার ব্যাগ রেখে হাতগুলো ব্যাগের ওপাশে রেখে বাঁধা শুরু হল। যাতে ফাটলে তলপেট বুক বাঁচে, খালি হাত বা আঙুলের ওপর দিয়ে যায়।
  • Arijit | 61.95.144.122 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১৮:১৫442100
  • এই ডেটোনেটরে রিকয়েল হয় না তাই না? সেই জন্যে ল্যামি লাইনে পরিণত হয়নি;-)
  • ranjan roy | 122.168.76.29 | ১৪ এপ্রিল ২০১০ ১৮:২৩442102
  • অনেকসময় পোড়োবাড়ি বা নির্মীয়মাণ বাড়ির মধ্যে এগুলো করা হত। নাকতলায় এমনি এক বাড়ির নীচের ঘরে ""বামনা সুভাষ'' ও এক সাগরেদ পেটো বাঁধছিল। দোতলায় অন্য দু' সাগরেদ বাঁধা-ছাঁদা শেষ করে দুহাতে গোটা কয়েক নিয়ে ভারা বেয়ে নামছিলো। পা হড়কালো, একজন নীচে পড়লো মুখ থুবড়ে পেটো শুদ্ধু হাত পেটের তলায়। স্পট ডেড। কিন্তু বিস্ফোরণের ভাইব্রেশনে নীচের তলায় সুভাষের বানানো মালগুলো একযোগে ফাটতে লাগলো। ফলে বামনা সুভাষের একটি চোখ আর হাত গেল। তারপর তার চিকিচ্ছের টাকা তোলার জন্যে জলসা হল, তাতে পাড়ার লতা, বেপাড়ার রফি, উঠতি কিশোর সবাই গইলেন;- সে আরেক গপ্পো।
    এরপরে জানলাম পিকরিক অ্যাসিড। কিনে দেখা গেল এতো লিকুইড! নীচের দিকে কিছু পাউডার, যেমন আগেকার দিনে জ্বর হলে কারমেটিভ মিক্‌চার না কি যেন দিত তেমনি দেখতে।
    তারপর ব্লটিং পেপার দিয়ে ছেনে শুকিয়ে পাউডার জি আই পাইপের ঝালাই করা কৌটো মত বানিয়ে তাতে পোরা হল। একটা বড় পলতে মত লাগানো হল, সেই কাঠকয়লা, সোরা ইত্যাদি মিলিয়ে। তারপর নেতাজিনগর পাড়ার কাছে একটা নারকেল গাছের গুঁড়ির সামনে রেখে আগুন ধরিয়ে অনেকটা দূরে দাঁড়ালাম। খানিক পরে একটা খুব চাপা গুমমম শব্দ, আমরা ভোঁ-কাট্টা। পরের দিন দিনের আলোতে গিয়ে দেখি পুরো জি আই পাইপের কেসিং চাকুর মত ক"টা টুকরো হয়ে নারকোল গাছের ইয়া মোটা গুঁড়ির গায়ে অনেকটা সেঁদিয়ে গেছে!
    পিকরিক অ্যাসিডের ওপর শ্রদ্ধা বাড়লো। কিন্তু এমন ভয় পেলাম যে আর ওসবের ধারে কাছে নেই।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন