MistBorn-এর লেখক Brandon Sanderson-কে নিয়ে পরে বিশদে আলোচনা হবে (প্রচণ্ড ইন্টারেস্টিং ক্যারেকটার মশাই – লালমোহন থাকলে হয়তো ‘হাইলি সাসপিশাস’-ও বলতেন), কিন্তু ওঁর একটা ক্ষমতা নিয়ে অল্প-কথা এই জায়গায় বলতেই হচ্ছে – তা হল ওঁর অসাধারণ ম্যাজিক-সিস্টেম তৈরি করার ক্ষমতা। এই বিশেষ বইটিতে যে সিস্টেমটা ব্র্যান্ডনবাবু বানিয়েছেন, তার নাম অ্যালোমেন্সি। ব্যাপারটা ঠিক কি, তা নিয়ে একটি শব্দও আমার খরচ করার দরকার নেই – বইয়ে বিশদে আছে। এতটাই ডিটেলে, যে এই ধরণের সিস্টেমের অন্তর্গত সামঞ্জস্য সম্পূর্ণ ঠিকঠাক আছে কিনা, তা নিয়ে এদের জন্যে নিবেদিত রেডিট-পাতায় মাইলের পর মাইল তক্কো চলে। ... ...
লিখবটা কি? অনেক ভেবে মাথায় এল – ‘ফ্যান্টাসি’। ওসব ‘কুয়াশানগরীর উপাখ্যান’-মার্কা কবিতা-কবিতা গপ্পো নয় (লেখার এমন বেগ – কি না কি বলে চলেছি), গভীর Genre-fiction, বিশেষ করে – হাই-ফ্যান্টাসি। আপনি যদি কেবলমাত্র ওই চন্দ্রিলবাবুর ‘কিছু Dystopia’ দেখে সায়েন্স-ফিকশন সম্পর্কে, আর গেম অব থ্রোন্স/লর্ড অব দ্য রিংস দেখে ফ্যান্টাসি সম্পর্কে ধারণা তৈরী করে থাকেন, তা হ’লে হবে না – ঐসব রোগের উপসর্গ মাত্র। এই ছড়ানো জঁরাগুলির বিস্তৃতি বহুদূর। সেই বিখ্যাত কুম্ভকার-সন্তান, যিনি পেশাদার জাদুকর হওয়ার চেষ্টায় বংশের মুখে চুন-কালি লেপেছিলেন, আর যাঁর কৈশোর-অ্যাডভেঞ্চারগুলি লিখে ফেলে ওই বয়স্কা, আপাত-trans-phobic মহিলা এখন টাকার স্তূপের ওপর ‘রোলিং’, তাঁর গপ্পোগুলিও পড়ে এর আওতায়। আরও কত কি-ই না আছে এই জঁরায়! ... ...
বিলাসপুর সেন্ট্রাল জেল। দুটো রাত কেটে গেছে। ঘুম হয় নি। দেয়ালে পিঠ দিয়ে বসে ছিলাম। দিদি আমার কাঁধে মাথা রেখে একটু ঝিম মেরে রয়েছিল। আমরা খুনি নই, নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখেছি -- এটা সত্যি না ব্যাড ড্রিম। আনফরচুনেটলি সত্যি। একেবারে কাফকা মার্কা। পিজি ক্লাসে কাফকার ‘দি ট্রায়াল’ পড়াই। কখনও ভেবেছি এইরকম কাফকেস্ক অভিজ্ঞতা আমাদের দু’বোনের কপালে জুটবে? আমরা দুই বোন, সংস্কৃত সাহিত্য ও ইংলিশ লিটারেচারে ডক্টরেট, তাও শান্তিনিকেতন থেকে — আমরা আজ ছত্তিশগড়ের জেলে আন্ডার ট্রায়াল প্রিজনারদের সেকশনে বন্দী! খুনের দায়ে, ভাবা যায়? আমাদের মোবাইল পর্য্যন্ত চালাকি করে বুড়ারে সেই মোটা মত লোকটা পরীক্ষা করার অজুহাতে সীজ করে নিয়েছে। ... ...
করোনা দ্বিতীয়বার ফিরে আসার পর ভারতবর্ষের কিছু জায়গায় কিছু চরিত্র কিছু ঘটনা। ... ...
ভাবলাম, বাঁচা গেল। কারণ, ছোড়দি মানে কুন্দনন্দিনী যে আমাকে উপেক্ষা করছেন তা আমার একেবারে ভালো লাগছে না। আমার কী দোষ? অথচ উনি একবারও আমার দিকে তাকাচ্ছেন না। আমার কাছে মোবাইলটা জমা রাখবার সময়ে হোক বা স্টেটমেন্ট সাইন করে কলম ফেরৎ দেবার সময় – ওঁর দৃষ্টি রঞ্জন রশ্মির মত আমাকে ভেদ করে আরপার হয়ে পেছনের দেয়ালে গিয়ে ঠেকেছে। ... ...
বুড়ার গেস্ট হাউসে জায়গা নেই, কারণ দুটো মাত্র ঘর। সে দুটোয় আমি এবং দুই বাঙালি দিদি আগে থেকেই রয়েছি। তাই আমার বস কোসলে স্যার আর বিলাসপুরের এসপি মিঃ শ্রীবাস্তব রাজবাড়িরই একটা ঘরে আস্তানা গেড়েছেন। ওঁরা সন্ধ্যেবেলা পৌঁছে আগে কুমারসাহেব এবং থানেদার ঈশ্বর পান্ডের সঙ্গে কথা বলে সব শুনে নিয়েছেন। জবানবন্দীর ফাইলের এক সেট কপি এখন ওনাদের কাছে। বডি রয়েছে বুড়ারের সরকারি হাসপাতালের মর্গে। সেখানে পাঠানোর আগে থানেদার ঈশ্বর পান্ডে বডি যে অবস্থায় মাটিতে পড়ে ছিল তার ছবি তুলে নিয়েছেন। হাসপাতালের ডাক্তার রক্তের স্যাম্পলও নিয়েছে। ... ...
কোত্থেকে যে শুরু করব বুঝতে পারছি না। গত ৪৮ ঘন্টা, মানে পরশু বুড়ার স্টেশনে নামার সময় থেকে এখন অব্দি যেন একটা ঘোরের মধ্যে কেটেছে। এইটুকু বলে দিই যে ছিন্নমস্তা দেবীর পুজো তো নয় যেন দক্ষযজ্ঞ! তাতে বলি চড়েছে একাধিক প্রাণী। যেমন আমি, যেমন ওই দুই বাঙালি দিদি। আমাদের টিকিট ফিকিট গেছে চুলোয়। বুড়ার থানার ওসি’র নির্দেশে আমরা তিনজন আগামী আদেশ পর্য্যন্ত বুড়ারের বাইরে যেতে পারব না। বলতে গেলে একরকম নজরবন্দী। কারণ যুবরাজ বীরেন্দ্রপাল প্রতাপ সিংহ হত্যায় আমরা তিনজনই স্থানীয় পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। ... ...
একটা রক্তজমানো চিৎকার অন্ধকারকে খান খান করে দিল। আবার, আবার! তারপর সব চুপ। দু’সেকেন্ড। পকেট থেকে রিভলবার বের করে আমি দৌড়ুতে থাকি যুবরাজের আবাসের দিকে। চিৎকারটা ওদিক থেকেই আসছে, প্রথম আওয়াজটি স্পষ্টতঃ কোন নারী কন্ঠের। ... ...
দরজার গুমগুম আওয়াজ থামল। আমি কান খাড়া করে রয়েছি। ওপাশে একটু ফিসফিস কথাবার্তা। তারপর উঁচুগলায় — আমরা, সৌরভবাবু। দরজা খুলুন। ডাইনিং হলে গিয়ে একসঙ্গে চা খাব। আমি চটপট রিভলবার আমার এয়ারব্যাগে চালান করে দিয়ে দরজাটা খুলি। প্রায় ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়েন দুই বোন - শৈবলিনী ও কুন্দনন্দিনী। ... ...
হ্যাঃ, এই নাকি যুবরাজ। সঙ্গে গতকাল পরিচয় হওয়া রাজবাড়ির ড্রাইভার শান্তিরাম না থাকলে বুশশার্ট ও প্যান্ট পরা বছর চল্লিশের ভদ্রলোকটিকে যুবরাজ বলে ভাবতে কষ্ট হত। প্ল্যাটফর্মে বেশ ভীড়, তবে ফার্স্টক্লাস কোচের সামনে তেমন কিছু না। কালো কোট গায়ে কন্ডাকটরের সঙ্গে শান্তিরাম টিকিট দেখিয়ে কিছু কথা বলছিল। তারপর দেখি ঢোলা খাকি ইউনিফর্ম পরা ... ...
বাবা আমার নাম রেখেছিল কুন্দনন্দিনী, বিষবৃক্ষের নায়িকা। কিন্তু আমার বয়ে গেছে অমন ন্যাকাবোকা মেয়ে হতে। আমি একেবারে রোহিণী, হ্যাঁ, ‘কৃষ্ণকান্তের উইলে’র রোহিণী। আমি যা চাই তা আদায় করে নিতে পিছপা হই না।আমি দিদির মত অত ভাবের ঘোরে থাকি না। বেশি সংস্কৃত সাহিত্য আর বৈষ্ণব পদাবলী পড়লে অমন হয়। দিদির ওই ‘মথুরা নগরে প্রতি ঘরে ঘরে যাইব যোগিনী হইয়ে’ ভাব আমার পোষায় না। আসলে ওই যারা অমন ‘ধরি ধরি মনে করি ধরতে গেলে আর পেলাম না’ ভাবে থাকে তারা হয় নিজেকে ঠকায়, নয় হিপোক্রিট। ... ...
ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর শহরের পেনসনবাড়া এলাকায় সরকারি কোয়ার্টারের সারি। এফ ব্লকে শুধু কলেজের প্রফেসারদের দুই বেডরুমের আবাসন, সঙ্গে একটু বাগানের জায়গা। একটির গেটে লেখা - এফ/৪, শৈবলিনী চট্টোপাধ্যায়, সংস্কৃত বিভাগ। ভেতর থেকে টিভির আওয়াজ আসছে। ... ...
দলগঞ্জন সিং কোসলে বা ডি এস কোসলে রিটায়ার হওয়ার আগে বিলাসপুর জেলার ক্রাইম ব্র্যাঞ্চের বড়কর্তা ছিলেন। র্যাঙ্ক ছিল ডেপুটি সুপারিন্ডেন্ট অফ পুলিস, সংক্ষেপে ডিএসপি। উনি আইপিএস ন’ন; খেটেখুটে সারাজীবন পরিশ্রম করে রিটায়ার হবার তিনবছর আগে ডিএসপি র্যাংক পান। চাকরি আরম্ভ হয়েছিল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর হয়ে। কোসলে রিটায়ার করেছেন বছর পাঁচ, কিন্তু এখনও ‘ডিএসপি স্যার’ সম্বোধন শুনতে ভালবাসেন। ... ...
একমাস আগের কথা।তারিখটা স্পষ্ট মনে আছে - মার্চের ২৬। সেদিন ঠিক বেলা একটার সময় আমার কাছে একটা ফোন এসেছিল।- ওয়াচ অ্যান্ড সিকিউরিটিজ? বিলাসপুর, লিংক রোড?-জী হ্যাঁ, বোল রহা হুঁ। - মিঃ কোসলে? ডায়রেক্টর?- না, আমি ওঁর অ্যাসিসট্যান্ট বিশ্বাস বলছি।উনি একটা কাজে একটু বাইরে গেহেন। কাল রাত্তিরে ফিরবেন।-- সৌরভ? সৌরভ বিশ্বাস? বাবুমোশায়? জাস্ট দ্য ম্যান আই ওয়ান্ট!--জী হ্যাঁ, আপ কৌন?-- কাজের কথাটা আগে শুনে নিন। আগামীকাল আপনাকে ইন্দোর এক্সপ্রেসে বুড়ার যেতে হবে। বুড়ার হোল জবলপুর লাইনে শাহডোলের আগের স্টেশন। পরশুদিন বিকেলে একই ট্রেনে করে ফেরতের ব্যবস্থা। টিকিট, অন্য খরচা এবং কিছু অ্যাডভান্স একটু পরে আজ রাত্তির আটটার মধ্যে আপনাদের ... ...
ভূত আছে না নেই, এই নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো ধন্দ রয়ে গেছে। আগে একসময় ধন্দ ছিল না, সবাই মোটামুটি শিওর ছিল ভূত হয়। এখন এমন একটা সময় আসছে যখন মানুষ শিওর থাকবে - মোটামুটি - যে ভূত হয় না। এর মাঝামাঝি সময় চলছে এখন।... ... ...
ধারাবাহিক - ওয়ার্ক ফ্রম হোম ইজ ওভারওয়ার্ক অ্যাকচুয়ালি। সকাল। দুপুর। রাত। যে কোনো সময় মিটিং বসছে। অ্যাকাউন্টস। মার্কেটিং । ম্যানেজমেন্ট । সকাল। দুপুর । রাত। অন্তহীন মিট টু প্রোমোট কনসিউমারিজম। ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন ত্রিদিব । ... ...
করোনাকালীন ধারাবাহিক - সাদাটে একটা আলো ঘুরছিল। গোল করে ঘুরতে ঘুরতে মিলিয়ে যাচ্ছে।কোথা থেকে শুরু কোথা থেকে শেষ, কিছুই বোঝা যায় না। তীব্রতা মাঝেমাঝেই বেড়ে যাচ্ছে ।আবার খুব কমে যাচ্ছে।একটা ঝিঁঝির ডাকের মত যেন।সামনে কী ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।মাঝেমাঝে বিদ্যুতের চমক যেন।চিড়িক দিচ্ছে মাথার ভিতর। সঙ্গে সঙ্গে চোখে যন্ত্রণা ।হাত পায়ে জোর নেই কোনো। পাশ ফেরার ক্ষমতাহীন। ... ...