ভয়েজার-১ এর কথা ... ...
মৃত্যুর পর মৃতদেহের মমি তৈরীর পদ্ধতি ছিল যথেষ্ট সময় আর খরচ-সাপেক্ষ। তাই ফারাও, তার পরিবার বা বিশিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া মমি বানানোর চল কম-ই ছিল। মৃত্যুর পর মমি তৈরীর পারদর্শী পুরোহিতের তত্ত্বাবধানে মামিফিকেশনের জন্য নির্দিষ্ট বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত মৃতদেহ। সেখানে ‘ইবিউ’ নামক স্থানে দেহ ধুয়ে শুদ্ধ করে নেওয়া হতো। তারপর ‘পার নেফার’ নামক স্থানে শুরু হতো সেই দেহের সৌন্দর্য্যায়ন বা মামিফিকেশন। এর বিশদ বর্ণনা অধিকাংশটাই দিয়ে গেছেন গ্রীক পন্ডিত হেরোডোটাস। প্রথমে সরু আর সামনের দিকে বাঁকানো একটি যন্ত্র নাকের গর্ত দিয়ে ঢুকিয়ে মস্তিষ্ক কুরে কুরে বের করে নেওয়া হতো আর সেই ফাঁকা জায়গায় নল দিয়ে পাঠানো হত ক্ষয়রোধী জৈব রস আর সুগন্ধী। এরপর পেটের বাঁদিক চিরে বের করে নেওয়া হতো ফুসফুস, অন্ত্র, যকৃৎ আর পাকস্থলী, ভালো করে নুন মাখিয়ে সেসব রাখা হতো চারটি আলাদা ঢাকা দেওয়া পাত্রে (ক্যানোপিক জার)। এই চারটি পাত্র আবার চারজন দেবতা রক্ষা করতেন। তাঁরা হলেন দেবতা হোরাসের চার ছেলে – ইমসেতি, হাপি, দুয়ামুতেফ আর কেভসেন্যুফ। ... ...
“ফারাও দ্বিতীয় রামেসিসের রাজত্বকালে …” ফ্ল্যাশব্যাক! ক্লাস সিক্স, প্রাচীন যুগের ইতিহাস পড়াচ্ছেন শঙ্করবাবু, তাঁর উদ্যত ডানহাতের তর্জনী আর মধ্যমার সঙ্গে হাই পাওয়ারের চশমার আড়ালে ঘোলাটে চোখ ঘুরে চলেছে ঘরের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত, বাঁহাতে ধরা বই যা তাঁর তেমন কোনো কাজে আসে না সিলেবাস মিলিয়ে নেওয়া ছাড়া, সবই যেন তাঁর কন্ঠস্থ! আমাদের উৎসুক মনের সঙ্গে পরিচয় করাচ্ছেন সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো এক সভ্যতার, মিশর নামের দেশে যার উৎপত্তি। খুফু, সেতি, রামেসিস, নেফারতিতি, হ্যাৎসেপশুট নামগুলোর সঙ্গে পরিচয় ঘটছে, পরিচয় ঘটছে অদ্ভুত এক লিপির, ফুল, পাখি, সূর্য এসব দিয়েই যার অক্ষর, শব্দ, বাক্য গড়ে ওঠে! তার নাম হায়রোগ্লিফ! ক্লাস শেষ হতে লাইব্রেরী তন্ন তন্ন করে রেফারেন্স বই ঘেঁটে চলেছি যদি কোথাও কোনো সূত্র পাওয়া যায় এই লিপি শেখার আর নিজের নাম লিখে ফেলার, সাংকেতিক অক্ষরে! হায় রোসেটা পাথর, তোমার নাম সে বালখিল্যরা তখনও শোনে নাই, শোনে নাই শাম্পোলিয়ন বা থমাস ইয়াং-এর নাম! তার জন্যে অপেক্ষা আরও প্রায় বিশটা বছর! আর সামনে থেকে সত্যিকারের সেই দেওয়াল-ভরা রঙচঙে লিপি দেখা – আরও বছর দশ! ইতিহাস বই-এর পাতা থেকে সারি দিয়ে তিনটে পিরামিডের সামনে মধ্যমণি হয়ে বসে থাকা স্ফিঙ্কস স্বপ্নের জাল ছিঁড়ে কোনোদিন ঘোর বাস্তবে নেমে এসে চোখের সামনে ধরা দেবে, ছুঁয়ে দেখবো তাদের, ভাবিনি তো! ... ...
গ্যোর......হাঙ্গেরিয়ান রাপসডি ... ...
ট্রেন থেকে কিছুই মরুভূমি দেখা গেল না। স্টেশন থেকে বেরোতেই যেটা সহজেই বোঝা গেল - জায়গাটা বেশ নোংরা। অথচ জয়পুর উদয়পুরের মত এখানেও প্রচুর জার্মান আর অন্যন্য ইউরোপীয় পর্যটকদের ভিড়। সকালবেলা রাস্তাঘাট সরু , নোংরা এবং ঘিঞ্জি। কিছুদূর হেঁটে গেলে যোধপুরের বিখ্যাত ঘন্টাঘর। তাকে ঘিরে যোধপুরের প্রধান বাজার। সকালবেলা পেঁয়াজ কচুরি আর দুধের চা। কচুরির পুরের ভেতর পেঁয়াজ ছড়ানো থাকে বলে এরকম নাম। ... ...
পুরোনো দিল্লির বাকি তিন শহর ... ...
পুরোনো দিল্লির প্রথম পাঁচটা শহর ... ...
ব্রোঞ্জ , মিনিয়েচার ছবি এবং মুদ্রা গ্যালারি ... ...
সিন্ধু সভ্যতা এবং মূর্তি গ্যালারি ... ...
প্রোগ্রেসিভ আর্টিস্টদের সংঘের মাঝেও অনেকে কোনো সংঘে যোগ না দিয়ে নিজেদের মত করে এঁকেছেন। ... ...
ইতিমধ্যে ভারত স্বাধীন হবার পর পাশ্চাত্যের আধুনিকতা , কিউবিজম , বিমূর্ত [abstract] ইত্যাদি ভাবধারা আবার ভারতের শিল্পে ঢুকতে শুরু করে। এই সময় দিল্লি , কলকাতা , মাদ্রাজ এবং বোম্বাইয়ের মত বড় শহরগুলোতে শুরু হল প্রোগ্রেসিভ শিল্পীদের সঙ্ঘ। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করল রঙের ব্যবহার। ছবি অনেক উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ... ...
তিনতলা বাড়িতে প্রদর্শনী সাজানো হয়েছে সময় অনুযায়ী। মানে যত ওপরের দিকে যাবেন তত আধুনিক সময়ের ছবিগুলো দেখা যাবে। একইভাবে দেখা যায় নানা ঘরানা কিভাবে শিল্পীদের মধ্যে গড়ে উঠছে। বদলে যাচ্ছে ছবি আঁকার মাধ্যমও। প্রথমে ছিল তেলরং , তারপর এল ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে আবির মিশিয়ে তৈরী টেম্পেরা এবং জলরং। আরো পরে এল অ্যাক্রালিক। কাগজের ওপর ছবি আঁকা ছেড়ে এল কাপড়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এল প্রিন্টমেকিং। এভাবে নানা মাধ্যম মিশে যেতে থাকল। ... ...
হাঙ্গেরিতে নো হুল্লোড় ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৭ …তৃতীয় শতাব্দীতে গুপ্ত রাজবংশ থেকে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সময় ব্রিটিশ গ্যারিসন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ইস্তক - সুদীর্ঘ ১৫০০ বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে নানা শাসনের দখলে থেকেছে কালিঞ্জর কেল্লা। দুর্গটি কবে নির্মিত হয়েছিল সঠিক জানা যায় না। তবে আগ্রা এবং অউধের ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ারে উল্লেখ আছে গুপ্ত রাজবংশের সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে কালিঞ্জার দুর্গ জয় করেছিলেন। ASIএর প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম কালিঞ্জর কেল্লার প্রাচীনত্ব ও গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন। তাঁর মতে এই কেল্লার নির্মাণ হয় ২৪৯ খ্রিস্টাব্দে। শিবের আর এক নাম কালিঞ্জর (কাল = সময়, জর = ক্ষয়) অর্থাৎ 'সময় ক্ষয়কারী' বা কালজয়ী। কথিত আছে সমূদ্রমন্থনে ওঠা হলাহল পান করে কন্ঠ নীল হয়ে যেতে শিব এখানে এসে সময়কে পরাস্ত করে মৃত্যুকে জয় করেছিলেন। তাই কালিঞ্জর কেল্লা বলতে কালজয়ী কেল্লাও বোঝায়। ... ...
উত্তরাখন্ড বেড়াতে গিয়েছিলাম ডিসেম্বরের ছুটিতে, তারই টুকিটাকি ঘটনা ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৬ … বিলুর সাথে ঘুরতে ঘুরতে যা দেখেছিলাম চিটপ্যাডে শর্টে রানিং নোট নিয়েছিলাম। অনেক জায়গাতেই কিছু লেখা নেই, দিক নির্দেশও নেই। ও না থাকলে বাঁশবনে ডোম কানা হয়ে ঘুরে মরতাম। সন্ধ্যায় লজে এসে শর্টহ্যান্ড নোট থেকে একটু গুছিয়ে লিখে বুঝলাম ও আমায় গোটা তিরিশেক দ্রষ্টব্যস্থানে নিয়ে গেছিল। বিলু না থাকলে বেশ চকমা খেতাম। বিরাট এলাকা, কত কী রয়েছে, ভুলভুলাইয়া টাইপের ব্যাপার। ওর বদান্যতায় মোটামুটি দেখা হোলো। শেষ দ্রষ্টব্য ছিপ মহলে এসে ওকে বলেছিলাম, এবার তুমি গেটে গিয়ে বসতে পারো, এখান থেকে আমি ঠিক চলে যাবো। ওকে কিছু বখশিশ দিই। ও নমস্কার করে চলে যায়। কিছুক্ষণ বসে থাকি বৃষ্টিভেজা নির্জন কেল্লায়। পাঁচটা নাগাদ নামতে শুরু করি নীচে। ... ...
নতুন বছরের শুরুতে মানুষের শুভচেতনার প্রতি উৎসর্গিত ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১৪ …দুপুরে বাস থেকে নেমে আশ্রয়ের সন্ধানে প্রাচীন নগরীর সরু রাস্তা ধরে এসেছিলাম। এখন শহরের বাইরে দিয়ে চওড়া কংক্রিটের বাইপাস ধরে হাঁটতে থাকি। বাঁদিকে শহরের সীমানায় পাঁচশো ফুট পাহাড়ের মাথায় উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত বিশাল কেল্লা। রীতিমতো সমীহ জাগানো সাইজ। লোকবিশ্বাসে অতীতে নরোয়র ছিল মহাভারতে বর্ণিত নিষধরাজ নলের রাজ্য। তখন তা নলপুরা নামে পরিচিত ছিল। আর এক মতে নরোয়র কেল্লা ও জনপদের প্রতিষ্ঠাতা কুশওয়াহা রাজপুত বংশ। সে গড়ের অতীত গৌরব বর্তমানে ম্রিয়মাণ। কিছু অংশ ভগ্নপ্রায়। অনেকাংশেই জঙ্গলাকীর্ণ। তবু মূলতঃ সেই কেল্লার আকর্ষণেই আমার সেখানে যাওয়া। আয়তনে এ কেল্লা গোয়ালিয়র কেল্লার পরে মধ্যপ্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম। কিন্তু প্রচারের অভাবে পর্যটকদের কাছে ব্রাত্য। তাতে অবশ্য ভালোই হয়েছে। নির্জনে মনের আনন্দে ঘুরেছি। ... ...
হল্যান্ডের গাঁ-গঞ্জে, পথে-ঘাটে আমলকীর দেখা না মিললেও স্কিফোল এয়ারপোর্টের বাইরে বেরোলেই ডিসেম্বরের শীতের হাওয়া আপনার শরীরে নাচন লাগাবেই। আর তার সঙ্গে যদি থাকে বৃষ্টি, তবে ষোলো-আনা পূর্ণ! এবার যদিও দিন-দশেকের জন্যে যাওয়া আর কাজের চাপের জন্য খুব বেশী ঘোরাঘুরি হয়ে ওঠেনি, তবুও বাঙালীর পায়ের তলায় সর্ষের তরঙ্গ রোধিবে কে! সুতরাং তার-ই মাঝে ‘হরে মুরারে’ বলে বেরিয়ে পড়া; তবে এবারের ঘোরাঘুরি খুব-ই সংক্ষেপে সারা, তাই এই লেখা অনেকটাই হবে যাতায়াতের পথ আর ছবি-নির্ভর। আগের বার নেদারল্যান্ডস-এর মধ্যে আর আশেপাশের বেশীর ভাগ জায়গাই দেখা হয়ে গিয়েছিল, তাই এবার ভেবেছিলাম সুযোগ পেলে পাশের দেশ বেলজিয়ামে-ও ঢুঁ মেরে আসবো। আর আগেরবার জ্যানসে স্ক্যানসের প্রসঙ্গে কিন্ডারডাইকের কথাও উঠে এসেছিল, তাই মাথায় ছিল সেটাও যদি দেখে আসা যায়। ... ...