প্রাগ প্রবেশ ... ...
ফেলে আসা সেই সব দিনের কথা এমন দিনেই বলা যায়। ... ...
রেখাদি সামনে দাঁড়িয়ে ওকে বকছেন রাতের খাবার হজম না হওয়া সত্ত্বেও সকালের খাবার খাওয়ার জন্য, স্বাস্থ্যকর খাবারদাবার না খেয়ে মুখরোচক খাবার খাওয়ার জন্য। উনি জানতেন না কল্পনার বেশীরভাগ দিনই রাত্রে খাওয়া হয় না, সকালেও না। ওর মা দুপুরের পর এসে রান্না করলে ওরা সবাই বিকেলের দিকে একবার খায়। কল্পনার মা যেসব বাড়ী কাজ করে তারা কেউ কোনওদিন রুটি বা মুড়ি দিলে রাত্রে ওরা একগাল খায়, নাহলে আবার সেই পরেরদিন বিকেলে। উনি জানতে চানও নি অবশ্য। মিনুদি কোত্থেকে একঠোঙা মুড়ি এনে ওর হাতে দিয়ে বলে 'তুই আস্তে আস্তে একটু করে জল দিয়ে দিয়ে খা দিকিনি'। রেখাদির দিকে তাকিয়ে বলে 'আপনি ক্লাসে যান দিদিমণি, এই মুড়িটুকু খাইয়েই আমি ওকে ক্লাসে দিয়ে আসছি'। আমরা চুপি চুপি ফিরে আসি। আমি জানি অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে পেটে খুব ব্যথা হয়, বাবা বলত রাত্রে না খেলে অনেকক্ষণ পেট্খালি থাকবে, পেটে খুব ব্যথা হবে। ... ...
আজ ভূত চতুর্দশী - মানুষের মতো ভূতদেরও চতুর এবং নানা দোষে দোষী হতে কোন অসুবিধে নেই - তাই আজ ভূত চতুর্দশীতে তাদের স্মরণ করা যাক। ... ...
গণিতের সঙ্গে লেখকের প্রেম ও অপ্রেমের এক বর্ণময় ব্যক্তিগত আখ্যান — যার পর্বে পর্বে উন্মোচিত হবে হাজারো জিজ্ঞাসা, ফিরে ফিরে আসবে নানান স্মৃতিভার। সুপাঠ্য ঝরঝরে ভাষায় গণিতের আলো-আঁধারি পথে এ এক নতুন পদচারণার অভিজ্ঞতা। ... ...
ছৌনাচ বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী নৃত্য। দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে হোটেলগুলি তাদের ন্যূনতম দক্ষিণায় হোটেল নর্তক বানাচ্ছে, এটা বুঝতে পেরে ভালো লাগলনা। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শিল্পীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা কিছু করেছে। একেবারে শিশুকাল থেকে শিল্পীরা এই নাচ শিখছেন এবং নিয়মিত অভ্যেস করেন, তাই শান বাঁধানো মেঝেতে আছড়ে পড়েও আঘাত লাগেনা। পরে সকলে ভাবলাম, যদিও শিল্পের দাম টাকা দিয়ে হয়না, তবুও এই অনুষ্ঠানে কতটাকা পেলেন, এই প্রশ্নটা লজ্জার মাথা খেয়ে করে ফেললেই হত। ... ...
একঘন্টা ধরে নাকের ডগায় লাইভ যুদ্ধ সহ্য করা কি চাট্টিখানি কথা! যা হোক, শেষে এক ভয়ানক যুদ্ধের মাধ্যমে মহিষাসুর অক্কা পেল। মা দুর্গা ব্যালান্স করে সেই বিশাল সিংহের পিঠে উঠে পড়লেন, আর অমনি তাঁর ঝলমলে ছেলেমেয়েরা আর তাঁদের বাহনরা পজিশন নিল। আমার ছেলেমেয়েরা থুড়ি ছাত্রছাত্রীরাও হৈ হৈ করে উঠোনে নেমে পড়ল। ওরা মনে হয় এতক্ষণ আমার ভয়েই চুপ করে চেয়ারে বসেছিল। ... ...
কৈশোরে গম্ভীর স্থানীয় রাজার পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিলেন। একজন শিল্পীর বড় হওয়ার পিছনে ভাত কাপড় যোগানোর একটা হাত খুব জরুরী, যেটা আজকের শিল্পীরা পাচ্ছেন না। ছৌনাচ যিনিই সামনে থেকে দেখেছেন, তিনিই বুঝবেন, এ আসলে একধরণের প্রাচীন সিনক্রোনাইজড জিমন্যাসটিকস। কোন আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়া ছৌ নৃত্যশিল্পীরা কীভাবে এই বিদ্যা করায়ত্ব করেন সে এক বিস্ময়। ... ...
চড়িদা গ্রামটি হোটেল থেকে বেশি দূরে নয় - আন্দাজ তিন কিলোমিটার দূরে হবে। রাস্তার ধারে ধারে ছৌ মুখোশ বিক্রির দোকান। পথে কয়েকটি বিদ্যালয়ও চোখে পড়ল। কুড়ি বছর আগেও একবার এ গ্রামে এসেছিলাম, তখনকার থেকে এখনকার দৃশ্যপট আমূল পরিবর্তিত হয়ে গেছে। তখন এমন রাস্তা ছিলনা। হেঁটে উঠতে হয়েছিল। ইতিউতি বাড়িঘরের মধ্যে দোকানঘর ছিল অল্প। এখন পাকা রাস্তায় হু হু করে গাড়ি করেই এসে পড়লাম। সামনে অগুন্তি দোকানঘর। ... ...