টাইম মেশিনে চড়ে এই পৃথিবীর কোন শহরে ফিরে যেতে পারি, যাবো বার্লিনে । ঝরিয়া, পাইকপাড়ার বাড়িতে বসে বাল্য, যুবা কাল থেকে গত শতাব্দীর ইতিহাসের যে পর্ব এবং স্থানটি আমাকে আকৃষ্ট করে রেখেছে সেটি তিন দশকের বার্লিন। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে পতন ও অভ্যুদয়ের ঘনঘটা আর কোথাও চোখে পড়ে নি । ওয়ান্স আপন এ টাইম নয়, এই সময়কালকে যেন ধরা ছোঁয়া যায় , এই তো সেদিনকার কথা! নিতান্ত ভাগ্যক্রমে ইতিহাসের এই ঘুরন্ত রঙ্গমঞ্চের সেট, উইংস,তার পিছনের দৃশ্য পট শুধু চোখে দেখি নি , মঞ্চের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছি –কথা বলে ইতিহাস , ভিলহেলমস্ত্রাসেতে বিসমার্কের অফিস যেখানে বসে তিনি আফ্রিকা খণ্ড খণ্ড করছেন, হিটলার ওই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মশাল যাত্রা দেখছেন , তিরিশে জানুয়ারি ১৯৩৩, এক নম্বর ঊনটার ডেন লিনডেনে আডলন হোটেল , পারিসার প্লাতস, গ্রুনেভালডের পথ যেখানে রাথেনাউ প্রাণ হারালেন, ফ্রিডরিখস্ত্রাসে স্টেশন, আপোলো থিয়েটার, আলেক্সান্দার প্লাতস , কুডামে সুবেশ নরনারী : বার্লিন অলিম্পিক স্টেডিয়াম এখনও দাঁড়িয়ে , এই তো আজকের সন্ধ্যায় বিসমার্ক আলেতে জ্বলবে আলবার্ট স্পেয়ারের ডিজাইন করা পথবাতি। ... ...
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রবাসী বাঙালিরা কটা অনুষ্ঠান করে, এবং বাংলাদেশের প্রবাসী বাঙালিরা কটা অনুষ্ঠান করে? তুলনা করলে স্তম্ভিত হয়ে যাবেন। ... ...
বাংলাদেশ কেন বিজেপির টার্গেট? কারণ, বাঙালিদের মধ্যে ওরা ঘৃণা, বিভেদ, ও শত্রু তৈরী করার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। ... ...
মিটিং বহুবিধ । ব্যাঙ্কের ভেতরে নিজের টিম মিটিং আপনার কন্ট্রোলে থাকতে পারে। বিভিন্ন দলের সরদার সেটির প্রযোজক ও পরিচালক । সমান লেভেলের মানুষের মিটিং একটু অন্যরকম , সেখানে গল্প গুজব অবশ্যই চলতে পারে। আমি সেখানে প্রধান হলেও এক ডজন সহকর্মী নিয়ে আমার টিম মিটিঙ ছিল অনেকটা ইনফরমাল । খোস মেজাজে বসে , বাঁধাধরা গতের বাইরে গিয়ে অনেক কিছু জানা শোনা হয়ে যায়, ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা যায়, আইন বাঁচিয়ে। সবাই সেখানে চেয়ারে আসীন কিন্তু কেউ বিশেষ কিছু বলতে চাইলে ( খবর কাগজের ভাষায় বক্তব্য রাখতে গেলে) বলতাম, দাঁড়িয়ে বলো ! তার একটা আলাদা ইমপ্যাক্ট আছে। কলকাতায় বা ফ্রাঙ্কফুর্টের স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতে টিম মিটিং হতো না । আমাদের মতন পদাতিকদের সঙ্গে সেনাপতিরা ট্যাকটিকস আলোচনা করতেন না, নির্দেশ দিতেন। । কর্তার ইচ্ছায় কর্ম । কর্পোরেট জগতে আমরা প্রত্যহ মিটিং ডেকেছি বা সেখানে অংশ নিয়েছি দিনে একাধিকবার, কিন্তু জুলিয়ানের টেকনিক সব ধারার বাইরে। কেন তিনি কাউকে বসার অনুমতি দেন না এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন চেয়ারে আরাম করে বসলে তারা ইতি উতি তাকাবে, এটা ওটা ভাববে , মূল বিষয়ের ওপরে ফোকাস থাকবে না। তার চেয়েও বিপদের কথা উঠতে চাইবে না এবং পায়ের ওপরে পা তুলে বসে বেশ খানিকক্ষণ ভেবে চিন্তে এক সময়ে এমন একটা উটকো প্রশ্ন করে বাহাদুরি দেখাবে যার জবাব আমার কাছে নেই ! ... ...
রালফ আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স তো এদেশের ? তাহলে নির্ঘাত জানেন থিওরেটিকাল ট্রেনিঙের সময়ে পথের নিয়ম কানুন শেখানোর সঙ্গে শিক্ষকরা আরও একটি সতর্কতা বাণী দিয়ে থাকেন- মনে রাখবেন জার্মানিতে বহু নারী পুরুষ অনিদ্রায় ভোগেন এবং জানলার পাশে বসে দুনিয়ার খবরদারি করে থাকেন । তেমনি একজন সে রাতে পুলিশকে ফোন করে জানিয়েছেন অমুক নম্বর প্লেট ওলা পরশে গাড়ি থেকে একজন টলোমলো পায়ে নেমে উলটো দিকের এত নম্বর বাড়িতে ঢুকেছেন। পথে ঘাটে নয় , নিজের বাড়িতে বসে ড্রিংক ড্রাইভিং টেস্টে ফেল করেছে মাথিয়াস! বিস্মিত হবেন না । শিব ঠাকুরের না হোক কান্ট হেগেল মার্কসের আপন দেশে পার্ক করা গাড়িতে বসেও ড্রাইভিং লাইসেন্স হারানো সম্ভব । পরবর্তী ভ্রমণের সময়ে মনে রাখবেন। ... ...
বাস্তবে অনেকেরই ভবিষ্যতে পাঁজায় শুয়ে আগুনে সেঁকার অনেক আগেই জীবন থেকে বিদায় নেয় ফাগুন হাওয়া। যারা সোমেন বা রণেনের অবস্থায় নেই, তারাও অজান্তে বা স্বেচ্ছায় মনের ওপর লাগাম পরিয়ে হয়ে যায় রসকষহীন, সবজান্তা। উপভোগের বদলে উপেক্ষা ও বিদ্রুপ তখন তাদের হয়ে দাঁড়ায় প্রিয়। চৈতি পবনেও তাদের মনে জমাট বাঁধে পৌষালী শীতার্ততা। আমি এখনও অবধি এমন হতে চাই না। তাই এখনও আমার পৌষালী বয়সের লেখাতেও হামেশাই খেলা করে চৈতালী হাওয়া। আর সেসব দেখে কুঁচকে যায় সংস্কারী ভুরু। ... ...
ভূমিকা ম্যাথু আর্নল্ড বলেছিলেন একাকিত্বের সঙ্গে সাহচর্যের যোগ সাধন করে পত্রলেখা। লিখি বটে একা কিন্তু সেটি স্বগতোক্তি নয় , এমনকি একাকি গায়কের গানও নয়, এ যেন কারো সঙ্গে কথা বলা। প্রত্যুত্তর শুনতে পাই না তৎক্ষণাৎ কিন্তু জানি পাবো ! ঠিক সেই অভিলাষে আড্ডার এই ধুনিতে ধোঁয়া দেওয়া । ফরাসি অনুই , ইংরেজি স্মার্ট অথবা জার্মান গেম্যুটলিখকাইটের বাংলা হয় না। অভিমানের প্রতিশব্দ অন্য কোন চেনা ভাষায় পাই নি । বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সময়ে দেশটার পরিচয় করাতে গিয়ে টাইম ম্যাগাজিন লিখেছিল বাঙালি ( তখনও বাংলাদেশি শব্দটা চালু হয় নি) আড্ডা নামক এক বস্তুর প্রেমে আবদ্ধ , তাঁদের মতে এ শব্দের অনুবাদ হয় না । * আড্ডা আমাদের একান্ত আপন- সেখানে কোন নির্দিষ্ট বিষয় নেই , স্থান কাল পাত্র নেই : কেউ গুরু সেজে টঙে চড়তে চাইলে তাকে তৎক্ষণাৎ মাটিতে আছাড় দেওয়া, লঘুকে লঘুতর করাই প্রত্যহের আনন্দ । আড্ডা নিয়ম বর্জিত । তার চার ইয়ারি বা বারো ইয়ারি হতে কোন বাধা নেই। আড্ডার নেই কোনো সিলেবাস , ইতিহাস, ভূগোল, অতীত , বর্তমান । এখানে কেউ কিছুই হয়ে ওঠেন না তাই এখানে বসে কি হনু কি হনু ভাবার সুযোগ নেই ! আড্ডার শুরু বা শেষ খোঁজা বাতুলের কর্ম । আড্ডায় আছে খোলা হাওয়ার স্বাধীনতা , তাই দিয়ে শুরু করি বৈঠকি আড্ডার আসর । * Bengalis are given to a passion known as Adda which they claim couldn’t be translated in to any other language! ... ...
রোমানিয়া শেঙ্গেনে ঢুকে যাচ্ছে মার্চ মাসে। এখন প্রতিনিয়ত আমাকে শুনতে হয় যে আমি কেন ফিরে যাচ্ছি না! আমি যে সমস্যায় পড়ে ফিরে এসেছি তার কোন সমাধান হয়নি। তাই ফিরে যাওয়ার আশা করা দুরাশা আমার জন্য। আমার খালাত বোন যে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, সে আমাকে বিসিবির যে প্রধান ডাক্তার ডাক্তার দেবাশিষের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি এই সব ব্যাপারে সেরা ডাক্তারের মধ্যে একজন। জ্যোতির সাহায্য ছাড়া উনার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাইতে অন্তত দুই মাস অপেক্ষা করতে হত আমার। তিনি আমাকে অনেকখন সময় নিয়ে দেখছেন। একটা থেরাপি দিয়েছিলেন। তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। এবং তিনি আমাকে শেষ কথা বলে দিয়েছেন যে আমার পক্ষে লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থাকা হার্ড ওয়ার্ক ইত্যাদি কাজ আর করা সম্ভব না। পায়ের অবস্থা তিনি দেখে চমকে গিয়েছিলেন। উনি স্টেরয়েড দিতে চেয়েছেন কিন্তু আমি এখনও ওইটা দিব কি না সিদ্ধান্ত নেই নি। বাড়িতে থেকে ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে, যার কারণে পায়ের ব্যথাও বেড়েছে! ব্যায়াম দিয়েছি কিছু, ওইটা করলেই একটু আরাম হয়, কুশন দেওয়া জুতা পরতে হচ্ছে। এই ভাবেই চলতে হবে আমাকে। আমি অপারেশনের কথা বলে ছিলাম। তিনি এক বাক্যে না করে দিয়েছেন। এই না আমাকে রোমানিয়ান ডাক্তারও করে দিয়েছিল। আমি দেশে চিকিৎসার জন্য চলে আসব শুনে উনি বলেছিলেন যে আমি জানি না তোমার দেশের চিকিৎসার অবস্থা কেমন, কিন্তু আমি তোমাকে সাবধান করে দিচ্ছি যে কোনমতেই তুমি অপারেশনের দিকে যেয়ও না। আর আমি আসলে দেশে অপারেশনের জন্যই আসছিলাম। মনে করছিলাম বিদেশিরা এগুলা করতে ভয় পায়, আমাদের এখানে ঠিকই করে ফেলবে কিছু একটা। তো, এই হল আমার সর্বশেষ অবস্থা। আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা অনেকেই আমার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, তাদেরকে এই সুযোগে জানিয়ে দিলাম আমার অবস্থা। ... ...
জীবন থেকে, রাজনীতি থেকে ধর্ম, স্পিরিচুয়ালিটিকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করলে রক্ষণশীলতার প্রতিক্রিয়া কীভাবে সমাজকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে, তার প্রমাণ এই রামমন্দির। ... ...
আমেরিকায় ভোরবেলায় শাঁখ বাজেনা। কখনোই বাজেনা। আমার পুরোনো শহর কলকাতায় বাজে। এখানেই আমি থাকি। এসেছি আবার। ... ...
আমেরিকায় নিজের দেশে বাড়িঘর ধ্বসে পড়ছে, ব্রিজ ধ্বসে পড়ছে, পাবলিক স্কুল কলেজের জন্যে টাকা নেই, জেলে পচছে লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ। ... ...
আমাদের রক্তের দাম এখন সস্তা মনে হয় অনেকের কাছে। অবলীলায় স্বাধীনতা, শহীদের সম্পর্কে হাস্যকর নানা কথা বলি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এখন কিছু বললেই কারো গায়ে ফোস্কা পরে যায়। চেতনা ব্যবসায়ী বলে তেড়ে আসে একদল। রক্ত কত সস্তা এই দেশে যে এমন কাণ্ড ঘটে এই দেশে? লন্ডন টাইমস লিখেছিল - “If blood is the price of independence then Bangladesh has paid the highest price in history" দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফরাসী লেখক - দার্শনিক আন্দ্রে মালরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বলেছিলেন, "আমি সম্ভবত এমন এক প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে কথা বলছি যেখানে মৃতের সংখ্যা জীবিতদের থেকে বেশি!!" এমন আর কোথাও নাই, এমন আর কোথাও হয়নি! আহা! এর মূল্য যদি বুঝত সবাই! এত এত শহীদ, এত এত স্বজন হারার হাহাকার, সব কিচ্ছু না? আমরা কেমনে পারি? ... ...
কলকাতার কলেজ ষ্ট্রীটে বাংলাদেশ বই মেলা চলছে। আগামীকাল শেষ হবে দশদিন ব্যাপী এই বই মেলা। বাংলাদেশের বই কলকাতায় মেলা করে বিক্রি হচ্ছে এইটা দারুণ একটা ব্যাপার। উদ্বোধনের দিন প্রধান অতিথি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, "বইয়ের চাহিদা চিরন্তন। সেই চাহিদা চিরদিন জেগে থাকবে আমাদের হৃদয়ে। আর এই বইতো আমাদের দুদেশের মধ্যে এক নতুন সেতু গড়ে তুলেছে।" কোন সন্দেহ নাই, সেতু তৈরি করে দিচ্ছে। মুশকিল হচ্ছে সব হচ্ছে এক তরফা! বাংলাদেশের বই কলকাতায় মেলা করে, আয়োজন করে বিক্রি করছেন অথচ ভারতীয় বই এখানে আসতে দিচ্ছেন না। একুশে বই মেলায় ভারতীয় বই প্রবেশ নিষেধ। বেশ, ভাল, একুশে বই মেলাকে যদি শুধু মাত্র বাংলাদেশি প্রকাশকদের জন্য নির্ধারিত বই মেলা করে রাখতে চাই আমরা তাতে কোন সমস্যা নাই। তাহলে অন্য সময় ভারতীয় বইয়ের জন্য আলাদা করে বই মেলার আয়োজন করা হোক। এখন যেমন কলকাতায় বাংলাদেশ বই মেলা হচ্ছে তেমন করে, এতে সমস্যাটা কই? ... ...
যন্ত্রসভ্যতার চরম সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে কিছু মানুষ ভুতের বেগার খেটে চলেছেন দিবারাত্র। তাদেরই সূত্রে আপনার সামাজিক মাধ্যম, তাদেরই হাত ধরে আমরা যন্ত্রের অসাধারণ ম্যাজিকে বিভোর হই, অথচ তাঁরা থেকে যান "বিজ্ঞানে উপেক্ষিত"। আসুন, এই অদ্ভুত দুনিয়াটাকে দেখি। ... ...
সময় গেলে সব সহজ হয়ে যাওয়ার কথা। মন্ত্রীরা অভিজ্ঞ হবে, কাজকর্ম আরও সুচারু হবে, সুন্দর হবে। অথচ বর্তমান সরকারের কাজকাম দেখলে মনে হয় যে নবিস দিয়ে মন্ত্রণালয় চালাচ্ছে সব। দুই একজন বাদে সবাই কী করতেছে কেন করতেছে তা নিজেরাও জানে কি না সন্দেহ। অর্থনীতির বারোটা বেজে তেরোটার ঘণ্টা বাজতে চলছে অথচ আমাদের অর্থ মন্ত্রী কই ঘুমায় আছে কেউ জানে না! কে চালাচ্ছে মন্ত্রণালয় কে জানে। ঘটা করে নতুন এক শিক্ষা নীতি নিয়া আসল। এবং নতুন শিক্ষানীতির জন্য সরকার শিক্ষা খাতের বরাদ্দ কমিয়ে দিল! চলতি অর্থবছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ হচ্ছে জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। থাকার কথা জিডিপির ৬ শতাংশ! কোন পরামর্শ না, শিক্ষকদের প্রস্তুত করা নাই, দুম করে বলা হল এইটাই সেরা কলা, বিসমিল্লাহ বলে খেয়ে ফেল! সবাই কলা খেতে থাকল, যে প্রশ্ন করল তাঁকে প্রশ্ন করা হল দেশপ্রেম নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে, উন্নত বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে! ফলাফল এখন পর্যন্ত এর সমাধান হল না, পক্ষ বিপক্ষ তুমুল বিতর্ক করে যাচ্ছে। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে, শিক্ষকদের ভাল বেতন দিলে, ভাল যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে পারলে আমাদের সময়ের বা তার আগের শিক্ষা পদ্ধতি দিয়েও ভাল কিছু করা সম্ভব। কিন্তু আমাদের মন্ত্রীরা শুধু চমক দেখাতে চায়! তাকালেই যেন ঝকমক করে সব! তা এর মান যেমনই হোক! ... ...
বছর কয়েক আগে এমনই এক শীতের মরসুমে পুরুলিয়ার গড় পঞ্চকোট থেকে ফিরে এসে উপলব্ধি করেছিলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত কেন লিখেছিলেন, "মণিহারা ফণি তুমি রয়েছ আঁধারে।" দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এক দশকও হয়নি। টেলিফোন, ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়ার এই তাৎক্ষণিক দুনিয়ায় বসে কল্পনা করাও কঠিন সে সময়ের পরিস্থিতি। পরিবেশ এবং হেরিটেজ-সংরক্ষণ, জনজাতির জীবিকা ও ঐতিহ্য রক্ষার মতো বিষয়গুলি জনপরিসরের চর্চায় তখন উঠে আসেনি। সংবাদমাধ্যমের এই নজরদারিও তখন ছিল না। সেই কারণেই উত্তরকাশী জেলায় চারধাম মহাসড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গ ধস বা তারও আগের বছরগুলিতে উত্তরাখন্ডে ক্রমাগত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে যে আশঙ্কা ও শোরগোল তৈরি হয়েছে তার ছিঁটেফোঁটাও ছিল না যখন এই তথাকথিত উন্নয়নের দাপটেই আমাদের এই বাংলার পুরুলিয়াতেই কার্যত নিশ্চিহ্ণ হয়ে গেল এক প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহাসিক সব নিদর্শন। উন্নয়নের অজুহাতে আধুনিক ভারত তার পুরাতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় সম্পদ যে ভাবে ধ্বংস করেছে বিশ্বের ইতিহাসে সম্ভবত তেমন নজির নেই। পাঞ্চেত বাঁধ দেখলে তার সীমাহীন মাসুলের কাহিনীও যেন আমাদের মনে পড়ে। পাঞ্চেতের ঘটনা যে দেশের রাজনীতিবিদ ও নীতিনির্ধারকদের মোটেই লজ্জিত করেনি তার প্রমাণ পাওয়া যায় আরও একটি বাঁধ নির্মাণে। দামোদরের পরে সুবর্ণরেখা। পাঞ্চেতের ৫০ বছরের মধ্যেই তৈরি হল চান্ডিল বাঁধ। সেক্ষেত্রে অধুনা ঝাড়খন্ডের পাতকুমেও আরও বহু জনপদ এবং জৈন মন্দির ঠিক একই ভাবে জলের তলায় চলে গেছে। লক্ষণীয় ব্যাপার হল, স্বাধীনতার পর থেকে প্রকৃতির বিরুদ্ধে, পরিবেশের বিরুদ্ধে তথাকথিত উন্নয়নযজ্ঞের এই ধ্বংসলীলা কিন্তু একই ভাবে অব্যাহত রয়েছে। ... ...
নোম চমস্কির ৯৫-তম জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালাম। ... ...
ছয় ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে কিছু ব্যক্তিগত কথা। ... ...
মোদীর "হ্যাটট্রিক" প্রোপাগাণ্ডা রাজনীতির মনস্তাত্ত্বিক চেহারাটা সবার কাছে তুলে ধরা এখনই খুব দরকার। ... ...
মানুষের জীবন, সম্মান, বাঁচার অধিকার, কথা বলার অধিকার আদৌ আর ভারতে থাকবে কিনা, আজ আমরা সেই প্রশ্নের সম্মুখীন। ... ...